তুমি ছুঁয়ে দিলে এ মন পর্ব-২৫

0
34

#তুমি_ছুঁয়ে_দিলে_এ_মন

পর্ব ২৫

#জান্নাতুল_মাওয়া_লিজা

চাঁদোয়া রাতে নৌকাভ্রমন কোনোদিন করেনি ত্রিশা।
বান্ধবীরা যখন আলোচনা করতো, “এটা দেখেছিস নাকি? ওটা দেখেছিস নাকি? ওখানে গিয়েছিস নাকি? সেখানে গিয়েছিস নাকি?

“বন্দিনীর মতো জীবন যাপন করেছে যে নন্দিনী সে আর কি দেখেছে?”
বান্ধবীদের শুনিয়ে শুনিয়ে নিজেকেই ত্রিশা মাঝে মাঝে মাঝে এভাবে বলে, সাথে ফেলতো একটা দ্বীর্ঘশ্বাস। বান্ধবীরা ওকে স্বান্তনা দিতো, ” দেখিস একদিন তুই বিশ্ব দেখবি রে নন্দিনী!”

শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পূরবী নদীতে একটা খেয়া পারাপার ব্যাবস্থা আছে। নদীর ওপাশে ছোট্ট কতগুলি গ্রাম থেকে এ নদীপথেই মানুষ শহরে আসে যায়। এ শহরের প্রেমিক প্রেমিকা যুগলের মিলনমেলাও এ নদীকে কেন্দ্র করেই। নদীর দুপাশের বিস্তীর্ণ বালুকায় বেড়ে ওঠা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য-প্রকৃতি পূজারীদের যেমন মনোরঞ্জন করে আসছে, তেমনি মানব প্রেমীদেরও মিলনমেলা।
কনকচাপার অনুরোধে ত্রিশাকে নিয়ে বাইরের হাওয়া গায়ে লাগাতে আহনাফ সে স্থানটাই বেছে নিলো।

“কদিন বাদেই দুজনের বিয়ে, মেয়েটা এখনো ছেলেটাকে স্যার স্যার ই করে, আর কথাও বলে না বেশি, ভয় পায় বলে, ওদের একটু একা ঘুরতে দিলে, কিছুটা জড়তা কাটবে। তাছাড়া কনকচাপা নিজের সাথে হাজার অনুরোধ করা স্বত্তেও ত্রিশা বের হয়নি!” এসব ভাবনা থেকেই কনকচাপা আহনাফকে অনুরোধ করেছে ত্রিশাকে নিয়ে বাইরে কোথাও যেতে।
আর বাসায় ডেকেছেও তো সে এ কারনেই। পড়তে পড়তে যদি মাথাই খা’রাপ হয়ে যায়, তাহলে সে পড়ার কি কোনো দাম আছে? আর একটা ঘন্টা বাইরে ঘুরে আসলে তো আর তেমন ক্ষতি হয়ে যাবে না। আর এ একটা ঘন্টা ওকে আহনাফ বুঝাতেও পারবে যাতে পরীক্ষা সামনের এ দিনগুলোতে ও সামান্য রিলাক্স যেনো হয়।

ছবি দেখার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুজনে কিছুমুহূর্ত একান্তে কাটিয়ে আহনাফ বসার ঘরেই বসলো।

গৌরবর্ণা ত্রিশার চোখের নিচে মোটা কালির আস্তর দেখে আহনাফ চমকে উঠেছিলো।
” না ঘুমাতে ঘুমাতে চেহারার কি হাল করেছে মেয়েটা? ”
আহনাফের খুব মায়া হলো মেয়েটার জন্য। নিশ্চয় পরীক্ষার জন্য অতি বেশি চিন্তা করে? আহনাফ এক কাপ চায়ে চুমুক দিতে দিতে ভাবলো, মেয়েটাকে একটু ভালো করে বুঝিয়ে যেতে হবে যে, নিজে অতিরিক্ত প্রেশার নেওয়া ভালো পরীক্ষা দেওয়ার সহায়ক কখনোও নয়।

কনকচাপা একবার বলাতেই তাই আহনাফ রাজি হয়ে গেলো। কারন ত্রিশার সাথে কিছু সময় কাটানোর জন্য তার অন্তরেও হাহাকার করছে। যদিও এ হাহাকারের পরিসমাপ্তি বিবাহের মাধ্যমে ত্রিশাকে একান্ত আপন করে পাওয়ার মাধ্যমেই সম্ভব, তবুও সাময়িক প্রশান্তির জন্য সামান্য সময় খুবই দরকার ছিলো আহনাফের।
কতদিন যাবত পরিবারের উপর যাওয়া ঝুট ঝামেলা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই এখন আবার বিভার ঝামেলা যুক্ত হয়েছে। এসবে আহনাফ যেনো একেবারে হাঁপিয়ে উঠেছে, সামান্য একটু শ্বাস মুক্তভাবে নেওয়ার জন্য। আর তা যদি মনের মানুষটাকে দেখতে দেখতে নেওয়া যায়, তবে তার আমেজ টাই আলাদা।

কিছুক্ষণের মধ্যেই ত্রিশা তৈরি হয়ে এলো একটা বেগুনি ও গোলাপি রংয়ের গোলজামা পড়ে। আর গোলাপি শিফনের ওড়নাটা মাথায় ও গলায় পেঁচিয়ে নিচে ছেড়ে দিয়েছে। পনি টেইল করা লম্বা চুলগুলো কোমড় ছাড়িয়ে আরো নিচে নেমে গিয়েছে। চোখে কাজল আর ঠোঁটে হালকা লিপগ্লস।

আহনাফ একদৃষ্টে কতক্ষণ চেয়ে থেকে বললো, ” বাহ! চোখের কালি সহযোগেও যে কোনো রমনী এত সুন্দর হতে পারে, তার জলন্ত উদাহরন হচ্ছো তুমি!”

ত্রিশা লজ্জা পেলো। কিন্তু কি বলবে উত্তর তার জানা নেই। এই জাতীয় প্রশংসা সে জীবনেও পায় নি। তার অন্য বান্ধবী হলে হয়তো জিজ্ঞেস করতো

” এটা প্রশংসা নাকি নিন্দা তা বুঝা যাচ্ছে না তো!”

আহনাফই উলটো বলে দিলো, ” হবু মিসেস আহনাফ, ডোন্ট ওরি! ইটস আ কমপ্লিম্যান্ট!”

ত্রিশা এবারে বড় করে হেসে দিলো।

বাইকে চড়ে বসলো ত্রিশা৷ এই বাইকই ওদের দুজনকে সর্বপ্রথম এতো কাছাকাছি আসার সুযোগ করে দিয়েছিলো রাত্রির বড়বোনের বিয়ের রাতে৷ তাই আহনাফ মনে মনে বাইকটাকে প্রায় সময়ই ধন্যবাদ দেয়!

বাইকে ত্রিশার চুলগুলো বরাবরের মতো আবারো আহনাফের মুখে উড়ে চলে এলো।
আহনাফের চোখ দুটি বন্ধ করে চুলের ঘ্রাণ নিতে মন চাইলো। স্বর্গীয় সে অনুভূতি! তবে এতে বাইক এক্সিডেন্ট করে এখনি স্বর্গে চলে তারা অবর্ণনীয় সে অনুভূতি।
বাইক চলে এলো খেয়া ঘাটে।

আহনাফের অতি ভক্ত এক ছাত্র ছিলো। ছাত্রটাকে আহনাফ বহুদিন কোনো পারিশ্রমিক ছাড়াই পড়িয়েছিলো। মেডিক্যালে কোচিং করতে পারেনি সে ছেলে। কিন্তু আহনাফ গোটা ম্যাডিক্যালে ভর্তি কোচিং এর সব নোট পাতিই জোগাড় করে নিজেই পড়িয়েছিলো। এক গরীব মাঝির ছেলে থেকে আজ সে ম্যাডিকেলে পড়ছে। সেই ছেলেরই বড়ভাইয়ের নৌকায় আহনাফ ও ত্রিশা চড়ে বসলো।
মাঝি ত্রিশাকে দেখে ভাবি বলে লম্বা সালাম ঠুকলো।
হাসিমুখে নৌকার উপর চড়ে বসতে বললো।

চাঁদোয়া রাত, আকাশভর্তি তারা। শান্ত পরিবেশে শুধু বৈঠা দিয়ে পানিতে আঘাত করার ছপাৎ ছপাৎ শব্দ। মৃদুমন্দ হাওয়া বইছে নৌকার অনুকূলে।

ত্রিশা লাজুক মুখে নৌকায় চড়ে বসলো। আর আহনাফ বসলো সামনাসামনি, ত্রিশার একটা হাত নিজের মুষ্টির মধ্যে। ত্রিশা লজ্জা পেয়ে ছাড়াবার চেষ্ঠা করলো একবার। কিন্তু আহনাফ ছাড়তে নারাজ।

এত সুন্দর প্রকৃতিকে দেখা বাদ দিয়ে দুজনে দুজনার দিকে তাকিয়ে রইলো। মাঝি নৌকার গতি সামলাতে ব্যস্ত। ত্রিশা, আহনাফ দুজনেই চুপ।
আহনাফ মিটিমিটি হাসছে।
” ত্রিশা, তুমি কি আমাকে এখনো ভয় পাও?”

ত্রিশা নিতজানু হয়ে বসে বলছে,
” ন..ন..না তো!..”

” তাহলে সংকোচ?”

” সংকোচ কি স্বাভাবিক নয়?”

” তোমার বান্ধবীদের দেখো না, তাদের কাপলদের সাথে কতটা স্বাভাবিক, আর তুমি?”

” আমি একটু বোকাসোকা, ওদের মতো চালাক নই যে!”

” তুমি, মোটেও বোকাসোকা নও, বোকা সেজে থাকো তুমি, আমি প্রথম যেদিন প্রপোজ করলাম, সেদিন কিছু বললে না , আমাকে কতদিন ঝুলালে!…তুমি চালাক দেখেই তো আমাকে ঘুরিয়েছো, বোকা হলে আগেই বলে দিতে যে, তুমিও আমাকে ভালোবাসো”

” না, আমি বোকা বলেই আগে মনের কথাগুলো বলিনি, চালাক হলে মনের মধ্যে কথা লুকিয়ে রাখতাম না।”

“তো, আমার কোন গুণাবলি দেখে তুমি আমাকে পছন্দ করেছিলে?”

” এটা তো আমার প্রশ্ন করা উচিত আপনাকে? ক্লাশের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষ্যাত মেয়েকেই আপনি ভালোবাসলেন কেনো?”

আহনাফ ত্রিশার দিকে তীব্র দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে,

” ক্লাশের কেনো? দুনিয়ার কোনো মেয়েই যা পারেনি তা তুমি পেরেছিলে, ক্লাশের শেষ বেঞ্চে বসে, আড়ালে আবডালে থেকেও আমার মনটা তুমি ছুঁয়েছিলে শুধুমাত্র তোমার সরলতা আর লজ্জাশীলতা দ্বারা। ওভার কনফিডেন্ট বা ওভার স্মার্ট বা চাটুকার বা ঢংঙ্গী মেয়ে আমি কোনোদিন পছন্দ করতাম না। তুমি সবার থেকেই আলাদা বলে আমি তোমাকেই ভালোবেসেছি, এবং আমি তোমাকে পেয়ে গর্বিত”

প্রিয়জনের মুখে নিজের এত প্রশংসা শুনে ত্রিশা মুখে হাত দিয়ে হাসলো।
তারপর আহনাফ সেই হাত টেনে নিলো নিজের বুকে,

” ধুক্ ধুক্ শব্দ শুনতে পাও?”

ত্রিশা দেখতে পেলো আহনাফের বুকের ভেতরে হৃদপিন্ডটা খাঁচায় বন্দি পাখির মতো লাফাচ্ছে।

আহনাফ ত্রিশার কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো,

” এ ছটফটানি বন্ধ হবে শুধু তোমাকে পেলে!”

এই বলে সে ত্রিশাকে বুকে টেনে নিলো।

সাথে সাথে আহনাফের ফোন বেজে উঠলো।
একগাদা বাজে এস এম এস দিয়ে গোটা মোবাইলের স্ক্রিন ভরে উঠলো। মেসেঞ্জার ওপেন করার সাথে সাথেও একই অবস্থা।

আহনাফের মেজাজ চড়ে গেলো।
মন চাইলো ফোনটা আছাড় মে’রে পানিতে ফেলে দিতে। এতদিন কম করলেও এখন কে বা কারা তাকে আবার জ্বা’লাতন করা শুরু করেছে?

” কাল থেকে আর ফোনই নিবো না, একটা ভালো সময়ে মুডটাই ন’ষ্ট করে দিলো! ”

আহনাফ রেগে গিয়ে একথা বলে ফোঁস করে উঠলো। দ্রুত ফোনটা সাইলেন্ট মুডে নিয়ে নিলো। পরক্ষণেই আবার ত্রিশার দিকে চেয়ে রাগ পড়ে গেলো।
আকুতিমিশ্রিত কন্ঠে সুধালো,
” মাই ডিয়ার লেডি, কোথায় যেনো ছিলাম আমরা?”

বলেই পুনরায় আবার ত্রিশাকে বুকে টেনে নিলো।

.
.

এইচ এস সি পরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে। আহনাফের ডিউটি থাকায় সে সকাল সকালই বের হয়ে যায়। তাছাড়া সে ত্রিশাকেউ কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়ে যায় বাইকে করে। তাই সকাল সকাল ই বের হতে হয়। ত্রিশার পরীক্ষা বেশ ভালো হচ্ছে, আহনাফ অনেক আশাবাদী ওর ব্যাপারে। ক্লাশের সবাই পরীক্ষা দিলেও বিভা এবার পরীক্ষা দিচ্ছে না এটা সবারই জানা।
এদিকে আহনাফদের বাড়িতে হঠাৎ বিভার সমাগম অনেক বেড়ে গেছে। যা আহনাফের সম্পূর্ণ অগোচরে। আহনাফ কলেজে বের হয়ে যাওয়ার পর, সকাল সকাল অনেক কিছু রান্না করে সে চলে আসে শায়লার কাছে। এসব মূলত শায়লা আর আশফিককে নিজের প্রতি কনভিন্স করার চাল! শায়লা আর আশফিক যায় আহনাফেরও পরে, তাই বিভার সাথে তাদের দেখা হয়। তারপর বিভার তৈরি খাবার খেয়ে তারা ঘন্টাখানেক বিভাকে স্তুতিবাক্য শুনিয়ে নিজেরাও নিজেদের কর্মস্থলে চলে যায়। অহনার এসব অসহ্য লাগে। সে কোনোদিনই বিভাকে সহ্য করতে পারেনা। মুখেও তোলে না বিভার খাবার।

বাবা মাকে বরাবরই সে শাসায়, ” দেখো, ভাইয়ার এংগেইজমেন্ট হয়ে গিয়েছে ত্রিশার সাথে, আর তোমরা কিনা বিভাকে এভাবে কাছে ভিড়াচ্ছো?”

শায়লা অভয় দিয়ে বলে,

” মেয়েটা মেন্টালি উইক রে মা! ওকে এখন হার্ট করা ঠিক হবে না, মেয়েটার মানসিক রোগের অসুধ চলছে, ও সম্পূর্ণ সুস্থ্য হয়ে নিক, তারপর ও একাই বুঝবে যে, আহনাফ ওকে চায়না। আর যে চায়না তার কাছে জোর করলেই কি? এখন ও মূলত একটা পাগল, আর পাগলের সাথে পাগলের মতোই ট্রিট করতে হয়। এখন ওকে যদি বকাবকি করে এখান থেকে অপমান করে বের করে দিই, ও কোনোদিনই সুস্থ্য হবে না, আর ওর প্রতি তো আমাদের একটা কর্তব্য আছে, তাই না? ওর বাবার প্রতি আমরা চিরদিনই কৃতজ্ঞ থাকবো, আর ওর জন্য আমরা এটুকু করতে পারবো না?”

শুনে অহনা আবার হুংকার ছাড়ে,

” ঠিক আছে, করো ওর জন্য, তা ঠিক, তবে আবার কোনোদিন আমার ভাইয়াকে বলো না ত্রিশাকে বাদ দিয়ে বিভাকে বিয়ে কর বাবা! খবরদার যদি এ কথা বলো আমার ভাইকে, তাহলে আমার ভাই তো এ বাড়ি ছাড়বেই, সাথে আমিও বাড়ি ছাড়বো”

শুনে শায়লা হেসে বলে,

” না রে মা! তোরা আমার সন্তান, তখন মাথা ঠিক ছিলো না বলে আহনাফকে হয়তো একবার বিভাকে বিয়ে করার প্রসঙ্গ তুলেছিলাম, এখন আর না, তোদের পছন্দই আমার পছন্দ, তোদের আমি কষ্ট দিবো না, তবে বিভা রাহুল চৌধুরীর মেয়ে, আর রাহুল চৌধুরী আমাদের একজন বিশ্বস্ত বন্ধু, তার মেয়েকে সামান্য একটু সিমপ্যাথি কি আমরা দেখাতে পারি না?”

” হ্যাঁ, সিমপ্যাথি দেখাতে পারো, দেখাও, কিন্তু তোমার অতি সিমপ্যাথি যেনো আমার ভাইয়ের বিপদের কারন না হয়! জানো না তো বিভা কেমন!”

শায়লা হেসে মেয়েকে বলে,
” না রে মা, ও একটু সুস্থ্য হলে ওকে আমি বুঝাবো ভালো করে, দেখিস আহনাফ আর ত্রিশার বিয়েতে ওও তোদের মতো নাচবে, গাইবে! দেখিস। জোর করে যে কারো ভালোবাসা পাওয়া যায়না ও সেটা বুঝবে। ”

বলে শায়লা হাসতে থাকে।

মেয়ের সাথে এসব গোপনে আলোচনা করে শায়লা চলে যায় স্কুলে, আর অহনাও চলে যায় প্রাইভেটে। এভাবে গোটা বাড়িতে বিভা কয়েকদিন যাবৎ ই একা একা থেকে যায়। টাইম স্পেন্ড করে, বসে বসে টিভি দেখে বা বই পড়ে। আবার দুপুরে যখন শায়লা বাড়িতে লাঞ্চ করতে আসে, তখন শায়লার সাথে লাঞ্চ করে নিজের বাড়ি চলে যায়। আহনাফ যার কিছুই জানে না।

(চলবে)