#বিষাদ_বৃক্ষ
#নূপুর_ইসলাম
#পর্ব- ১৫
ইব্রাহিম পুকুর ঘাটের সামনে এসে দাঁড়ালো। রাতের অন্ধকারে চাঁদের আলোয় পুকুরের পানি চিকচিক করছে। এই পুকুরটা অনেক পুরোনো। তার বাবা যখন এখানে এসে জমি কিনেন, তখন ঘরের ভিটে করার জন্য মাটি কাটা হয়। তখন থেকেই পুকুর। আগে অবশ্য এতো বড় ছিল না। পরে কেটে বড় করা হয়েছে। আগে তাদের অবস্থা বলতে গেলে ছিল শূন্যের কোঠায়। তার মধ্যে বাবা মারা গেলেন। বিধমা মা আর তার দুই সন্তান। সেই দুই- সন্তানের মাঝে বড় সন্তান ইব্রাহিম। যে তার কচি হাতে দু- মুঠো ভাতের জন্য কোদাল তুলে নিয়েছিল। ভালোই তো ছিল। যাদের পেটে ক্ষুদার আগুন থাকে, তাদের অন্য কোন আশা – আকাঙ্খা থাকে না। তাদেরও ছিল না। প্রতিদিন ঠিকমতো উনুন জ্বললেই তারা খুশি।
তখনি যুদ্ধ শুরু হলো। কি ভয়াবহ অবস্থা। নিজের দেশ, নিজের গ্রাম, নিজের ঘরে পরের জন্য লুকিয়ে থাকতে হয়।
ভাইজানের সাথে সেও চলে গেল, ফিরেও এলো। এই যুদ্ধে কি শুধু দেশ বদলে ছিল? না! বদলে ছিল পুরো ইব্রাহিম। তার পরে কালো এক ভয়াল রাত। যে রাতে সে পারি জমালো শহরে। সেই যে গেল আর ফিরে আসেনি। এসেছে অনেক পরে। তখন সে শুধু এক বিধবা মায়ের ইব্রাহিম না।সে ইব্রাহিম খলিল। সে আস্তে করে চোখ বন্ধ করল।
টিনের চৌচালা বাড়ি, ঝকঝকে তকতকে উঠান। তার মধ্যে শুভ্র একটা মুখ। যার টানা টানা চোখ, খাড়া নাক, দুধে আলতা গায়ে রং। সেই দুধে আলতা রঙের শুভ্র মুখটা চোখের সামনে স্পষ্ট হতে হতেই নীল শাড়ির আঁচলে মোড়া একটা মুখ স্পষ্ট হলো। ইব্রাহিম সাথে সাথেই চোখ খুললো।
কিছুক্ষণ সেভাবেই নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে রইল। তারপর ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল। নেমে গেল এক পা, দু-পা করে পুরো হাটু পানিতে। তখনি জামিল এসে দাঁড়ালো। জামিল ইব্রাহিমের ছায়া সঙ্গী। ইব্রাহিম যেখানে জামিলও সেখানে। হাসিখুশি ছোটখাটো মানুষ। অনবরত পান খাওয়ার অভ্যাস। অথচো ইব্রাহিম ছাড়া কেউ জানে না। এই হাসিখুশি, ছোটখাটো মানুষটা হেসে হেসেই কি নির্মম ভাবে মানুষকে গায়েব করে ফেলতে পারে।
সে এসেই পুকুর ঘাটে পা ছড়িয়ে বসলো। বসে এক গাল হেসে বলল, — ভাইজানের গরম বেশি লাগছে নি?
ইব্রাহিম উত্তর দিলো না। জামিল ছাড়া এতো সাহস কারো নেই। যে ইব্রাহিমের সামনে বিনা অনুমতিতে এসে এভাবে সস্তা ফাজলামি করবে। সে উত্তর না দিলেও উঠে এলো। ভেজা শরীর নিয়েই তার সামনে বসলো।
জামিল পা গুটিয়ে নিলো। হাটুর উপরে হাত মেলে চেঁচিয়ে বলল, — ওই কে আছিস। ভাইজানের জন্য গামছা আন।
তারপর ইব্রাহিমের দিকে তাকিয়ে বলল, — জমির ঝামেলা শেষ। কাজে কবে হাত দিবেন বলেন। সব রাস্তা ক্লিয়ার।
ইব্রাহিম হালকা হাসলো! হেসে শান্ত ভাবে বলল, — কোন ব্যবসার উন্নতির প্রধান ধাপ কি জানো জামিল?
— জানি ভাই কঠোর পরিশ্রম। মানে জান প্রাণ মাটিতে মিশাইয়া খাটা।
ইব্রাহিম আবারো হাসলো। হেসে বলল, — উঁহু! প্রতিদ্বন্দ্বীকে দুমড়ে মুচড়ে ফেলা।
জামিল পান খাওয়া দাঁত নিয়ে নিজেও হাসলো! হেসে বলল, — এটাও খারাপ না। আগেরটার চেয়ে এইটা কার্যকর বেশি।
— তো ব্যবস্থা কর।
— ব্যবস্থা চলছে ভাইজান। তবে কোন কূল কিনারা পাইতেছিনা না । ঐ যে ছোকরা। কি যেন নাম। পাগলা কিছিমের।
— আজাদ।
— হ! আমার কাছে তারে গরবর লাগে ভাইজান।
— আমার চেয়েও বেশি?
জামিল আবার হাসলো! হেসে বলল, — ঐ যে বললাম কূল কিনারা পাইতেছিনা না। আগে পাই, তারপরে বোঝা যাইবো।
— আর ডাক্তার।
— হেয় বেটা তো আরো খবিশ। সে যেই থালির নুন খেয়েছেন সেই থালি নাকি ছেদ করবেন না। এই জীবন থাকতে না।
— ভালো! এমনিতেও আগের সব বাতিল জামিল। সব নতুন করে করবে। আমি যেভাবে বলল, ঠিক সে ভাবে।
জামিল ভ্রু কুঁচকে তাকালো! তখনি একজন কাজের লোক গামছা হাতে দৌড়ে এলো।
ইব্রাহিম গামছার দিকে ফিরেও তাকালো না। সে উঠল! উঠে যেতে যেতে কাজের লোককে বলল, — এই পুকুর সবার জন্য নিষিদ্ধ। নিষিদ্ধ মানে নিষিদ্ধ। অন্য কোন কাজ তো ভালোই, পানি যেন কেউ স্পর্শও না করে। আর শহর থেকে আমার যাবতীয় সব দরকারি জিনিস আনার ব্যবস্থা কর। আমি কিছুদিন এখানেই থাকবো।
ইব্রাহিম যেতেই জামিল অবাক হয়ে একবার পুকুরে একবার ইব্রাহিমের যাওয়ার দিকে তাকালো। পুষ্কোনির পানি আবার কি দোষ করল।
আনতারা বিছানায় শুয়ে আছে চুপচাপ। ঘরে অল্প পাওয়ারের বাতি জ্বলছে। এটাও নতুন। আগে ছিল না। আগে বাতি বন্ধ করলেই অন্ধকারে তলিয়ে যেত। অনেকটা পরে ধীরে ধীরে বাহিরে জ্বালানো বাতির মৃদু আলোয় ঘরে সামান্য রেখা দেখা যেত। এই সামান্য রেখার জন্যই আনতারা থাকতে পেরেছে, তা না হলে খবর ছিল। এই অগোছালো রুমটা ধীরে ধীরে তার হচ্ছে। অবশ্য এতে তার বিন্দুমাত্র হাত নেই। বলতে গেলে এই যে পাশে শোয়া মানুষটা তাকে করে দিচ্ছে।
সে চোখ বন্ধ করেই একটু নড়েচড়ে শুলো। এমন ভাব যেন ঘুমের মধ্যেই নড়ছে চড়ছে। অথচো তার দু- চোখের এক চোখেও ঘুমের ছিটেফোঁটা নেই। ভালো লাগছিল না। তাই সে ঐ বাসা থেকে এসেই দিয়েছে এক লম্বা ঘুম। তার শাশুড়ি সন্ধ্যায় ডেকে তুলেছে। ভর সন্ধ্যায় শুয়ে থাকা নাকি অলুক্ষণে।
আজাদ এসেছে সন্ধ্যার পরে। ঐ বাসায় থেকে আর বাসায় আসেনি। ঐখান থেকেই গায়েব। বাসায় ফিরে সে কখনো তেমন কিছু করে না। খায় দায়, মাঝে মাঝে টেবিলের বসে হিসাব টিসাব করে আর বাকি সময় ঘুম। আজকেও একই অবস্থা। খেয়ে দেয়ে আরামছেই সে শুয়েছে। ঘুমিয়ে না জেগে অবশ্য আনতারা বুঝতে পারছে না। তবে এই মটকা মেরে পরে থাকতে থাকতে তার বিরক্তি লাগছে।
তখনি আজাদের কন্ঠ শোনা গেল। আগের মতোই হেঁয়ালি মাখা কন্ঠ, — ঘুম না আসলে, না ঘুমাও। এভাবে নিজের উপরে অত্যাচারের মানে কি? যতদূর মনে পরে আমি তো কাওকে জোর করে ঘুমানোর নির্দেশ দেইনি।
আনতারা প্রথমে চমকে উঠল! চমকে আজাদের দিকে তাকালো। আজাদের চোখ অবশ্য এখনো বন্ধ। বুঝেছে কি ভাবে কে জানে? সে উত্তর দিলো না। আবারো চোখ বন্ধ করে ফেলল। এমনিতে সমস্যা নেই। কিন্তু রাতে যখন এভাবে পাশে শুয়ে থাকে, অজানা একটা ভয় আনতারাকে ঘিরে রাখে।
আজাদ ডাকলো! এবার অবশ্য হেঁয়ালি নেই, স্বাভাবিক কন্ঠ, — আনতারা।
আনতারা টু শব্দও করল না। আগের মতোই চুপচাপ চোখ বন্ধ করে শুয়ে রইল।
আজাদ তাকালো! আনতারার চোখ বন্ধ, তবুও বুঝল। কিভাবে বুঝল সে নিজেও জানে না। জানে না বলেই তার গলা শুকিয়ে এলো।
— ডাকছি আনতারা।
— আনতারা এবারো উত্তর দিলো না। সে আগের মতোই মটকা মেরে পড়ে রইল। এই গাধী জানেও না। তার চোখ পিটপিট করে নড়ছে, ঠোঁট তিরতির করে কাঁপছে।
তখনি আজাদ ঝট করে আনতারাকে টেনে কাছে আনলো। টেনে উপরে ঝুকলো। গায়ের সাথে অবশ্য গা লাগেনি। আজাদের পুরো ভর আজাদের দু- হাতের উপরে।
আনতারা আবারো চমকে উঠল। এবারের টা অবশ্য তার জন্য খুবই ভয়ংকর। আর এতোটাই ভয়ংকর যে, তা চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। মুখ আপনা আপনিই হা হয়ে গেছে। সে মুখ হা করে বড় বড় চোখে আজাদের দিকে তাকিয়ে রইল।
আজাদ সেই বড় বড় চোখের দিকে তাকিয়ে বলল — ডাকছি কথা বলছো না কেন?
আনতারা মুখ বন্ধ করে ঢোক গিললো। তার পুরো শরীর কাঁপছে। সে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে কিছু বলতে চাইল। তবে তার কন্ঠ দিয়ে টু শব্দও বের হলো না।
আজাদ আনতারার সেই ভয় দেখলো। দেখে ঠোঁট টিপে হাসলো। হেসে বলল, — সেই দিন শরবত চাইলাম খবর নেই। তখন ভেংচি কেটেছো এখন আবার কথার উত্তর দিচ্ছো না। সমস্যা কি ?
আনতারা কি বলবে ভেবে পেল না। সে ভেবেছিল এই লোকের হয়ত কিছু মনেই থাকে না। এখনতো দেখা যাচ্ছে পেটে সব জমা করেছে।
— কি? এখন এতো কাঁপাকাঁপি কেন? যখন ভদ্র ভাবে ডাকলাম। তখন তো খুব ভাব নিলে। এতো ভাব আসে কোথা থেকে বল?
আনতারার চোখে এবার পানি চলে এলো। ভয় করছে তার।
আজাদ সেই টলমলো ভরা চোখও দেখল। দেখে তেমন ভাবান্তর হলো না। আগের মতোই বলল, — আমাকে এতো হালকা করে নেওয়ার কোন কারণ নেই মেয়ে। আমি পুরো মানুষটাই বাঁকা। বাঁকা বলেই এই ফরং ফরং করে উড়তে পারছো। তা না হলে এতদিনে হালাল হয়ে হজম হয়ে যেতে। তাই আর কোন ডান- বাম না। এর পরে থেকে সাবধান। যখনি কিছু বলবো, ডাকবো দিন দুনিয়া এক সাইডে আজাদ সাইডে। বুঝেছেন আজাদের তারা বেগম?
আনতারা এবারো উত্তর দিলো না। তবে তার চোখ থেকে বৃষ্টির ফোঁটার মকো টুপটাপ করে পানি পড়তে লাগলো।
আজাদ খুব ধৈর্য্য নিয়ে সেই বৃষ্টির ফোঁটা দেখলো। দেখে ধমকে বলল, — কাঁদছো কেন?
আনতারার ফুঁপানি আরো বাড়লো। আজাদ বড় এক হাফ ছেড়ে সরে গেল। নিজের জায়গায় শুতে শুতে বলল, — এই একটা অস্ত্র ছাড়া তোমাদের আর আছে কি ? কিছু বললেই, পদ্মা, মেঘনা ঢালা শুরু। ধুর!
বলেই আজাদ চোখ বুঝল। একটু নড়ে চড়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিলো। অযথা সময় নষ্ট। আর আনতারা! তার ফুঁপানি চলতেই থাকলো, চলতেই থাকলো।
কিছুক্ষণের মধ্যে আজাদ মাথা চেপে ধরল। কোন দুঃখে সে এই মেয়েকে কিছু বলতে গেছে। এ তো প্যানপ্যানানির মহারাণী। আজাদরে তুই শেষ।
সে বিরক্ত মাখা কন্ঠে বলল, — থামবে?
থামার কোন লক্ষণ আনতারার মধ্যে দেখা গেল না। বরং আরো যোগ হলো। আজাদ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো! ফেলে নরম গলায় আবার ডাকলো — আনতারা।
আজাদ ভেবেছিল এবারো আনকারা কিছু বলবে না। কিন্ত তাকে অবাক করে আনতারা ফুঁপানির মাঝে বলল, — হুম।
আজাদ হাসলো! সে তার শক্তি বুঝাতে চেয়েছিল। এই মেয়ে তার শক্তি দেখিয়ে দিলো। আজাদের ডাকে আনতারা না। আনতারার ইচ্ছায় আজাদ। সে হেসেই বলল, — ঘুরতে যাবে?
আনকারা সাথে সাথেই দু- পাশে মাথা নাড়লো।
— কেন?
— আপনি ভালো মানুষ না।
আজাদ আবার হেসে ফেলল! হেসে বলল,– একদম সত্য কথা। প্যানপ্যানানির মহারাণী হলেও তোমার বুদ্ধি ভালো। তা না হলে আজাদকে এতো তাড়াতাড়ি কেউ চিনেছে বলে মনে পড়ে না।
— আমি নানাভাইকে বিচার দেবো। সে বলেছে আপনি উল্টো পালটা কিছু করলে তাকে বলতে।
আজাদ আনতারার দিকে ঘুরলো। হাতের তালুতে মাথা রেখে বলল, — উল্টা পাল্টা কিছু করেছি নাকি ?
আনতারা উত্তর দিলো না। তবে তার ফুঁপানি কমেছে। কাঁদতে গিয়ে সে লাল টমেটু হয়েছে। আজাদ এক পলকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল। তারপর বলল, — আমি ভালো থাকি আর খারাপ। আপনার অতি পেয়ারের নানা ভাই ‘ই আমাদের বেঁধেছেন। তাই যতই বিচার শালিশ বসাও। ঘুরে ফিরে এই ভালো না মানুষের কাছেই আসতে হবে।
আনতারা চোখ তুলে তাকালো। আজাদ আগেই তাকিয়ে ছিল। চোখে চোখ রেখে আবার বলল, — আমি এখন একটু বাইরে যাব। যদি তোমার ইচ্ছে হয় চলে এসো। বলেই আজাদ উঠল। উঠে মশারির ভেতর থেকে বেরুলো।
আনতারা কিছুক্ষণ নিশ্চুপ রইল। তারপর ধীরে ধীরে উঠে বসলো। এমনিতেও তো ঘুম আসছে না তার। তাই মুখে কিছু না বললেও সেও বেরিয়ে আজাদের পেছনে গিয়ে দাঁড়ালো।
আজাদ হালকা হাসলো। হেসে আনতারার সামনে হাত বাড়িয়ে দিল।
আনতারা কিছুসময় দাঁড়িয়ে কাঁচুমাচু করল। তার পর আস্তে করে একটু হাত বাড়াবে তার আগেই আজাদ হাত বাড়িয়ে মুঠো করে ধরল। ধরে এগিয়ে গেল আর যে ছেলে ধারাম ধরুম ছাড়া কোন কাজই করতে পারে না। সে আনতারার হাত আগলে নিঃশব্দে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলো।
নিঃশব্দে বের হলেও আসাদ দেখলো। সে বাথরুমের জন্য বের হয়েছিল। তাদের দেখে আবার ভেতরে ঢুকে গেল। শবনম ধ্যান জ্ঞান লাগিয়ে রুমাল সেলাই করছে। আসাদ যে বাইরে না গিয়ে আবার ভেতরে চলে এসেছে সে খেয়াল করেনি। সে দরজার শব্দ পেয়ে ভেবেছে আসাদ যাওয়ার সময় দরজা টেনে গেছে। সে সাথে সাথেই মুখ বাঁকালো । বাঁকিয়ে বিরবির করে বলল, — বুইড়া ভাম।
আসাদের রাগ হওয়ার কথা তবে সে হেসে ফেলল! হেসে নিজেকে সামলে এগিয়ে এসে বলল, — বুইড়া তো বিয়ে করেছো কেন? যতদূর মনে পরে কেউ তো জোর করে নি।
শবনম চমকে গেল। চমকে হাতে সুইয়ের খোঁচা খেল। সে চোখ মুখ কুঁচকে ফেললো।
আসাদ সাথে সাথেই দিল এক ধমক। ধমক দিয়ে হাত টেনে চেপে ধরল। বিরক্ত মাখা কন্ঠে বলল, — যা পার না, তা করতে যাও কেন?
শবনম আসাদের হাত থেকে নিজের আঙুল টেনে সরালো। তার চোখে পানি এসেছে। সে সামলে খাট থেকে নামতে গেল। আসাদ আবারো ধমকে বলল,– কোথায় যাচ্ছো?
শবনম ঢোক গিলে বলল, — বাথরুমে। বলেই যেতে লাগলো। আসাদ টেনে ধরল। শবনম কিছু বলল না। শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।
আসাদ কিছুক্ষণ সেই অভিমানী বউর মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। তারপর ছেড়ে দিয়ে বলল, — যাও।
শবনম বেরিয়ে গেল। আসাদ দীর্ঘশ্বাস ফেলল। সে ভালো করে জানে শবনম এখর বাথরুমে যাবে না। যাবে খাবার ঘরে। সেখানে টুপ করে বসে থাকবে। আসবে একেবারে ভোরে। যখন বাড়ির সাবাই উঠতে থাকবে।
চলবে……