প্রতাপ গড়ের অভিশাপ পর্ব-০৮

0
4

#প্রতাপ_গড়ের_অভিশাপ
#লেখায়_জান্নাতুন_নাঈম
#পর্ব_৮

বীর প্রতাপ হৈমুর কথায় রাজি হয়ে যায়। এমনিতেই রোদের মধ্যে মাইলের পর মাইল পথ হেঁটে এসেছে।তাও একা নয় হৈমুকে কোলে নিয়ে এতগুলো পথ হেঁটে আসতে হয়েছে।হৈমু একটু হাঁটার পরেই পা ব্যথায় আর হাঁটতে পারে নি।তাই বীর প্রতাপের বাধ্য হয়ে হৈমুকে কোলে নিয়ে নিতে হয়।বীর প্রতাপের পা ফুলে গেছে।ব্যথায় টনটন করছে।হৈমু ঘাসের উপর একটা চাদর বিছিয়ে তাতে বসে পড়লো।হৈমুর কাছে অল্প পানি আর খাবার আছে।আলীর বাড়ি থেকে রওনা দেয়ার সময় নিয়ে এসেছে।হৈমু তার স্বামীকে হালকা খাবার আর পানি খেতে দিল।শুকনো রুটি আর পানি।
বীর প্রতাপ শুকনো রুটিতে কামড় দিয়ে বলল, “পা খুব ব্যথা ।এতদুরের পথ কোনদিন হেঁটে আসিনি।”

আরাফ বলল, “আপনি তো আপনার স্ত্রীর সাথে অনেক সময় পালকিতে বসে ছিলেন।আমরা তো তখন হেঁটেছি। আপনার থেকে অনেক বেশি হাঁটতে হয়েছে আমাদের।আগে তো ঘোড়ার গাড়ি ছাড়া কোথাও যাইনি”

হৈমু আফসোস করে বলল, “বেচারা চাকররা আজ কতগুলো দিন গরমের মধ্যে পালকি বহন করে চলেছে। ওদের তো অনেক কষ্ট হচ্ছে তাই না”

হৈমু চাকরদের কিছু পানি আর রুটি খেতে দিল।

ছয় ঘন্টা পর জাহাজ বন্দরে এসে পৌছাল।সবাই এক এক করে জাহাজে উঠে পড়লো।বীর প্রতাপ দুটো বড় কেবিন ভাড়া নিয়ে নিল।একটায় বীর প্রতাপ, হৈমু ও তার দুই সহকারী আর অন্যটায় চাকরদের জন্য।কেবিনের মধ্যে একটা খাট ,একটা সোফা ,একটা খাবারের টেবিল আর কাপড় রাখার জন্য একটা বড় আলমারি রাখা ছিল।খাটের সাথে একটা বড় জানালা।হৈমু খাটের উপর উঠে বসলো। জানালার বাইরে সমুদ্রের নীল স্বচ্ছ পানি দেখা যাচ্ছে।

বীর প্রতাপ বলল, “আমার এই প্রথম বাড়ি এত দুরে আসা। আমি সর্বোচ্চ আট দশদিন বাড়ির বাইরে থাকতাম‌। তাছাড়া আমার রাজ্যের মধ্যেই ।‌রাজ্যের বাইরে এত দূরে এতগুলো দিনের জন্য এই প্রথম”

রুদ্র বলল, “কখনো জাহাজে চড়েছেন?”

বীর প্রতাপ বলল, “এই প্রথম।”

রুদ্র বলল, “আমার এই নিয়ে সাত বার হলো। আমি অনেক বার সমুদ্রে এসেছি”

আরাফ বলল, “আমরা এই জাহাজে কয়দিন থাকবো ?”

বীর প্রতাপ বলল, “প্রায় উনিশ দিন। তবে ভয় পেয়ো না। এখানে তোমরা জমিদারের মতো থাকতে পারবে। এখানে আমরা উনিশ দিন থাকা খাওয়ার সব খরচ দিয়ে দিয়েছি। তাছাড়া ওরা জানে আমরা জমিদার। এখানে থাকা খাওয়ার ঝামেলা হবে না। সাথেই গোসল খানা আছে।সবাই এক এক করে গোসল করে নাও। অনেক দিন ধরে ঠিকমতো গোসল করা হয়নি। শরীর থেকে বিশ্রী গন্ধ আসছে”

রুদ্র বলল, “এইরকম কেবিন তো জমিদাররাই নিবে তাই না”

বীর প্রতাপ বলল, “এখানে তিন শ্রেণীর মানুষ আছে।প্রথম শ্রেণীর হলো জমিদার কিংবা অনেক ধনী পরিবারের জন্য। দ্বিতীয় হলো জমিদার নয় তবে খুব ধনী ও নয়। কিন্তু মোটামুটি টাকা কড়ি আছে। তৃতীয় হলো মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত। এঁদের মধ্যে বেশিরভাগই বাকি দুই শ্রেনীর সেবা যত্ন করবে।জাহাজ চালানোর আলাদা লোক। খাবার রান্না থেকে শুরু করে জাহাজ পরিষ্কার করা সবকিছুর জন্য লোক আছে।জাহাজের উপরের অংশে ধনীরা ।মাঝের জায়গায় দ্বিতীয় শ্রেণীর। তৃতীয় শ্রেণী পাবে নিচের অংশে”

আরাফ বলল, “এখানে একটাই বিছানা”

রুদ্র বলল, “হৈমু আর জমিদার সাহেব খাটে ঘুমাবেন।আমরা ফ্লোরে ঘুমাব”

বীর প্রতাপ বলল, “নিচে ফ্লোরে সরাসরি ঘুমানো যাবে না। আমি ওদের বলেছি ।ওরা ব্যবস্থা করে দিবে।তোমরা গোসল করে নাও।একটু পর খাবার দিয়ে যাবে। অনেক দিন ভালো খাবার খাওয়া হয়নি। কোনরকম শুকনো খাবারের উপর বেঁচে আছি”

আরাফ বলল, “হ্যা”

হৈমু বলল, “আচ্ছা এই জাহাজ থেকে নামলেই তো সেই দ্বীপ তাই না। যেখানে আমরা বই খুঁজে পাব”

বীর প্রতাপ বলল, “না। আমরা যেখানে যাব সেখানে কোন মানুষ থাকে না।এই জাহাজ থেকে নামলেই বড় নৌকা গুলো করে ওই দ্বীপে যেতে হবে”

হৈমু বলল, “কতদিন লাগবে?”

বীর প্রতাপ বলল, “জানি না।সব মিলিয়ে এক বছরের যাত্রা।বই খুঁজে পেলেও আমাদের বইয়ে থাকা ঔষধ খুঁজতে বের করতে হবে। এর জন্য বিভিন্ন জায়গায় যেতে হবে। তারপর সেই ঔষধ নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে। ঔষধের পরিমান ও কম হলে চলবে না। মহামারীতে অনেক অনেক মানুষ মারা গেছে।সবার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে”

হৈমু বলল, “অনেক লম্বা সময়”

বীর প্রতাপ বলল, “মাঝে মাঝে মনে হয় এই যাত্রায় তোমাকে আনা উচিত হয়নি।মনে হয় ভুল করে ফেলেছি। আবার মনে হয় তোমাকে এনে সঠিক কাজ করেছি। আমার একাকীত্ব অনুভব হচ্ছে না তুমি আছো বলে”

আরাফ বলল, “এই যাত্রায় আমরা ও আছি। শুধু বউ নিয়েই পড়ে আছো কেন?”

বীর প্রতাপ বলল, “তোমরা তো আমার বউ না।বউয়ের মতো ভালোবাসতে পারবা না”

কথাটা বলেই বীর প্রতাপ গোসল খানায় চলে গেল।একটু পরে দুইজন লোক দরজার সামনে এসে কড়া নাড়লো।হৈমু দরজা খুলে দিলো। দুইজন চাকর বিশাল বড় একটা চলন্ত টেবিলে করে অনেক খাবার নিয়ে এলো। খাবার গুলো এক এক করে টেবিলের উপর সাজিয়ে দিয়ে দুজনে আবার চলে গেল।হৈমু কিছু না ভেবেই খেতে বসে গেল।বীর প্রতাপ গোসল খানা থেকে বেরিয়ে এসে দেখতে পায় হৈমু ,রুদ্র আর আরাফ তিনজন মিলে খাবার খাচ্ছে।

বীর প্রতাপ বলল, “খাবার দিয়ে গেল কখন?”

হৈমু বলল, “একটু আগেই । আপনি ও খাবার খাওয়া শুরু করুন”

বীর প্রতাপ বলল, “ফ্লোরে ঘুমানোর জন্য বিছানা দিয়ে গেছে?”

রুদ্র বলল, “বিছানা একটু পর দিবে বলল”

বীর প্রতাপ আর কোন কথা বলল না। খাবার টেবিলে বসে খাবার খাওয়া শুরু করে দিল। অনেক দিন পর ভালো খাবার খাওয়ার সুযোগ হয়েছে।

সন্ধ্যায় হৈমু বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকে। কেবিনের সাথে একটা ছোট বারান্দা আছে।রাতের বেলা সমুদ্রের অপরূপ দৃশ্য দেখা মিলে।বীর প্রতাপ হৈমুর পাশে গিয়ে দাঁড়ালো। জাহাজ সমুদ্রের মাঝখান দিয়ে যাচ্ছে।যেদিকে চোখ যায় কেবল পানি আর পানি।রাতের তারা পানিতে পড়ে পানি গুলো বেশ সুন্দর লাগছে। রাতের আকাশে পুর্নিমার বড় চাঁদ উঠেছে।বীর প্রতাপ মুগ্ধ হয়ে সেসব দৃশ্য দেখে।

জাহাজের ভেতর দিনের পর দিন চলে যেতে থাকে।প্রায় পনেরো দিন চলে গেছে।সবাই বেশ ফুরফুরে মেজাজেই আছে। হঠাৎ জাহাজ খুব জোরে কেঁপে উঠলো।যেন ভারী কোন কিছুর সাথে ডাক্কা খেয়েছে। জাহাজের সবাই ভয়ে আঁতকে উঠলো। হঠাৎ জোরে জোরে মানুষের হাঁটা চলার আওয়াজ শোনা গেল। চারদিকে খুব হইচই শোনা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে আশেপাশে অনেক মানুষের কান্নার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে।বীর প্রতাপ জানালার বাইরে তাকিয়ে দেখলো তাদের জাহাজের পাশেই একটা জলদস্যুর জাহাজ দাঁড়িয়ে আছে।এই জাহাজের সাথেই তাদের জাহাজের ধাক্কা লাগে।বীর প্রতাপে বুঝতে বাকি থাকে না জাহাজে ডাকাত এসেছে।ডাকতরা খুব ভয়ংকর ছিল।অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই পুরো জাহাজ দখল করে নেয়। জলদস্যুরা এক এক করে সবাইকে জাহাজে বন্দী করে ফেলে।বীর প্রতাপ ও তার সঙ্গীদের ও বন্দি করে রেখেছে। জলদস্যুদের সর্দার আব্রাহাম তাদের জাহাজ নিয়ে একটা দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। যেখানে জলদস্যুরা থাকে।বীর প্রতাপ বেশ চিন্তিত হয়ে পড়ে। এভাবে জলদস্যু তাদের বন্দি করে রেখেছে।তারা তাদের হয়তো মেরেও ফেলতে পারে। তাছাড়া তাদের সাথে আছে হৈমু।হৈমুকে যদি ওরা কোন কিছু করে বসে।হৈমু একজন অল্পবয়সী সুন্দরী মেয়ে।

জাহাজ একটা দ্বীপে এসে থামলো। জাহাজ থেকে এক এক করে বন্দি নামাতে শুরু করলো। ছেলেদের একটা কারাগারে বন্দি করে রাখা হলো।আর মেয়েদের অন্য আরেকটা কারাগারে রাখা হলো। জলদস্যু সর্দারের হৈমুর প্রতি নজর পড়তেই বেশি সময় লাগলো না।লাল বেনারসী শাড়ি পরা সুন্দরী হৈমুকে দেখেই আব্রাহামের পছন্দ হয়ে যায়।তাই তাকে আলাদা করে রাখা হয়।

হৈমু একটা বন্ধ কামড়ায় বসে আছে। এখানে বসেও তার স্বামীর জন্য খুব চিন্তা হচ্ছে।যদি জলদস্যু গুলো তাদের মেরে ফেলে তাহলে তার কি হবে।এমন একটা অচেনা জায়গায় চলে এসেছে তারা‌। তারমধ্যে এত বড় একটা বিপদে পড়েছে।
পরদিন সকালে জলদস্যু সবার থেকে দামী জিনিস পত্র রেখে দিয়ে সবাইকে ছেড়ে দেয়।বীর প্রতাপ, রুদ্র ও আরাফ কে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।বীর প্রতাপ অনেক খুঁজে কিন্তু হৈমুকে খুঁজে পায় না।হৈমুর চিন্তায় বীর প্রতাপের হাত পা কাঁপছে।কোন উপায় না পেয়ে বীর প্রতাপ জলদস্যুর সর্দার আব্রাহামের কাছে যায়।বীর প্রতাপ তার কাছে হৈমুর খোঁজ চায় কিন্তু জলদস্যুর সর্দার তো তার ভাষা বুঝতে পারছে না। আব্রাহাম বাংলা বোঝে না। আবার লেখাপড়া ও করেনি যে ইংরেজি বুঝবে। বীর প্রতাপ অনেক বোঝানোর চেষ্টা করে কিন্তু ব্যর্থ হয়।

হৈমুকে এই অচেনা অজানা জায়গায় রেখে কোথাও যাবে সেটাও সম্ভব না।একটা বাচ্চা মেয়েকে বিপদের মধ্যে কীভাবে ফেলে রেখে যাবে।হৈমু তার বিয়ে করা বউ।বীর প্রতাপ হৈমুকে ভালোবাসে।

রুদ্র বলল, “হৈমু অনেক সুন্দরী ।তার জন্য বিপদের আশঙ্কা বেশি।তার উপর তার শরীরে অনেক দামী অলঙ্কার আছে। জলদস্যুদের বুঝতে অসুবিধা হবে না যে হৈমু একজন জমিদারের স্ত্রী”

বীর প্রতাপ বলল, “তার জন্যই তো আমার বেশি ভয় হচ্ছে।ওকে খুঁজে না পেলে আমি মনে হয় মরেই যাব”

আরাফ বলল, “মরার চিন্তা পরে করো। এখন ওকে খুজতে হবে”

বীর প্রতাপ তার কথায় সম্মতি জানালো। তিনজন মিলে হৈমুকে খোঁজা আরম্ভ করলো। খুঁজতে খুঁজতে চাকরদের সাথে দেখা। চারজন এক জায়গায় বসে আছে।এই অচেনা জায়গায় টাকা পয়সা ছাড়া কোথায় বা যাবে”

রুদ্র তাদের কাছে গিয়ে বলল, “হৈমুকে দেখেছ?”

চাকরদের একজন বলল, “গিন্নি মা আমাদের সাথেই ছিল। জলদস্যু সর্দার ওকে আলাদা করে একটা জায়গায় নিয়ে গেছে। শুনেছি জলদস্যু সর্দার আজ রাতে কাউকে বিয়ে করবে। আমার মনে হয় জলদস্যুর সর্দার আমাদের গিন্নি মাকেই বিয়ে করতে চায়”

কথাটা শুনে বীর প্রতাপ খুব রেগে গেল।বলল, “আমার স্ত্রীকে বিয়ে করতে চায়। করাচ্ছি ওকে বিয়ে”

রুদ্র বলল, “আপনি শান্ত হোন।রাগের বশবর্তী হয়ে কোন কিছু করবেন না।আমরা মাত্র সাতজন। এতগুলো লোক ও তাদের অস্ত্রের সাথে আমরা পারবো না। আমাদের বুদ্ধি দিয়ে কাজ করতে হবে।সে জানে না আমরা জমিদার। এখানে শক্তি দিয়ে কিছু হবে না। এখানে আমাদের জমিদারি কাজে আসবে না”

আরাফ বলল, “আমাদের খুঁজে দেখতে হবে হৈমু কোথায় আছে। এরপর ওকে নিয়ে পালিয়ে যাব”

বীর প্রতাপ বলল, “ঠিক আছে। তোমরা যা ভালো মনে করো।ওর কিছু হয়ে গেলে কিন্তু…”

আরাফ বলল, “আপনি চিন্তা করবেন না।সব ঠিক হয়ে যাবে”

রুদ্র বলল, “হৈমু কোথায় আছে তোমরা দেখেছ?”

চাকর বলল, “হ্যা একটা তাঁবুতে রাখা হয়েছে। এখন ও মনে হয় ওখানেই আছে”

রুদ্র বলল, “রাতে তাহলে”

আরাফ বলল, “না।রাতে ওরা বিয়ে করার ব্যবস্থা করেছে। আমাদের জমিদার গিন্নির অন্য কারো সাথে বিয়ে হতে পারে না।একটু ঝুঁকি নিতেই হবে। দুপুরে যখন খাবার খেয়ে সবাই ঘুমাবে ঠিক সেই সময়ে আমরা হৈমুর কাছে যাব। এরপর হৈমুকে নিয়ে পালিয়ে যাব।আজ রাতে কোথাও লুকিয়ে থাকবো।হৈমুকে নিয়ে পালিয়ে গেলে ওরা ঠিক আমাদের খুঁজতে বের হবে”

বীর প্রতাপ বলল, “দিনের আলোয় অনেক ঝুঁকি আছে। আবার রাতের জন্য অপেক্ষা করতে পারি না। তুমি আমাদের তাবু কাছে নিয়ে যাও।সবাই যখন খেতে যাবে তখন আমরা তাঁবুর ভেতরে যাব।এর আগে আমাদের কিছু অস্ত্রের দরকার। নিজেদের নিরাপত্তার জন্য”

আরাফ বলল, “আপনি এখানে থাকুন । আমি আর রুদ্র অস্ত্র চুরি করতে যাচ্ছি।”

বীর প্রতাপ বলল, “তোমরা পারবা?”

রুদ্র বলল, “পারবো।আপনাকে বিপদের মধ্যে নিতে চাই না। আপনি চিন্তা করবেন না। আমরা হৈমুর কোন ক্ষতি হতে দিব না”

বীর প্রতাপ মনে মনে বলল তার তো কোন ক্ষতি হবে না। ক্ষতি হবে আমার। আমি বউহারা হবো।হৈমু তো নতুন জামাই পেয়ে যাবে। তাকে বিয়ে করার জন্য জলদস্যুর পাগল হয়ে আছে।হৈমু হয়তো গরীব ঘরের মেয়ে কিন্তু অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ও প্রেমে পড়াতে বাধ্য।তারা সৌন্দর্যে যে কোন পুরুষ মানুষ প্রেমে পড়ে যেতে বাধ্য।কি পাপ করে যে এমন সুন্দরী বউকে সাথে করে নিয়ে এসেছে।বীর প্রতাপ নিজেকে মনে মনে গালি দিথে থাকে।

এইদিকে আরাফ আর রুদ্র চলে যায় অস্ত্র আনতে। অস্ত্রাগারে দুজন লোক বসে আছে। রুদ্র আর আরাফ পিছন থেকে দুইজন দুইজনকে মাথায় কাঠের টুকরা দিয়ে আঘাত করে। এরপর শক্ত দড়ি দিয়ে দুজন কে বেঁধে রাখে। অস্ত্রাগার থেকে বেশ কিছু অস্ত্র লুকিয়ে নেয় শরীরের ভেতর।খুব সাবধানে আবার বেরিয়েও আসে।আরাফ ও রুদ্র কে দেখে বীর প্রতাপ হাফ ছেড়ে বাঁচে। দুপুরে সবাই খাবার খাওয়ার জন্য চলে গেল।

(চলবে)