নীরদ ক্লেশের অন্ত পর্ব-৩৫

0
54

#নীরদ_ক্লেশের_অন্ত
[পর্ব-৩৫]
লেখিকা-নামীরা অন্তিকা

বিপুল রায়ের এককথায় উৎসকে ভালো লেগেছে। এমুহূর্তে ওনার মুখশ্রী পর্যবেক্ষণ করলে যে কেউ বুঝতে পারবে উনি উৎসকে পছন্দ করেছেন এবং উৎসের প্রস্তাবে তিনি রাজি। তবে কল্যাণী ভাবুক হয়ে চেয়ে আছেন উৎসের দিকে। উৎসের নজর তখন মেঝের দিকে। কানন দেবী অধীর আগ্রহে ওনার আর বিপুল রায়ের মুখশ্রী পানে চেয়ে আছেন উত্তরের আশায়। কল্যাণী পাশে তাকালেন বিপুল রায়ের মুখশ্রী পানে। বিপুল রায়ের মৃদু হাসি আঁকা মুখশ্রী দেখেই তিনি বুঝলেন বিপুল রায় খুশি হয়েছেন এবং রাজি আছেন উৎসের প্রস্তাবে। কিন্তু তিনি যে রাজি হতে গিয়েও হতে পারছেন না। যতই হোক, কক্সবাজারের সেই আচরণ এবং স্নিগ্ধাকে না বলে তুলে নিয়ে যাওয়া বিষয় গুলো মানতে পারছেন না তিনি। যতই উৎস ভালো হোক, এই কাজ গুলো উৎসকে কল্যাণীর কাছে স্পষ্ট করতে পারছেনা। কল্যাণী বিপুল রায়ের কথা ভাবলেন, তিনি তো আর জানেন না যে উৎস স্নিগ্ধাকে না বলে তুলে নিয়ে গিয়েছিলো! জানলে উৎসকে দেখা মাত্রই ক্রোধে ফেটে পড়তেন। দীর্ঘশ্বাস ফেললেন কল্যাণী। কানন দেবীর দিকে চেয়ে মৃদু স্বরে বললেন,,

“আমার মেয়ে এখনো প্রাপ্তবয়স্ক হয়নি। সবে সতেরো বছর। আমি ওকালতি করি, আইনের বিরুদ্ধে গিয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে কিছুতেই বিয়ে দিতে পারবোনা। আরও বছর দুয়েক যাক, আমার মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হোক এরপর নাহয় বিয়ের ব্যাপারে আগানো যাবে।” (মৃদু স্বরে)

কল্যাণীর কথা শুনে উৎস নজর তুলে কল্যাণীর দিকে তাকাল। অতঃপর নজর সরিয়ে কানন দেবীর দিকে তাকালো। কানন দেবীর হাসি মাখা মুখ নিভে আসলেও পরক্ষণে তিনি মুখে পুনরায় হাসি ফুটিয়ে স্নিগ্ধার দিকে তাকিয়ে বললেন,,

“এদিকে আসো মা।”

হুট্ করে স্নিগ্ধাকে ডাকতে স্নিগ্ধা খানিকটা ভরকালো। অতঃপর ভদ্রতার সহিত কানন দেবীর কাছে গেলো। কানন দেবী নিজের ব্যাগ থেকে একটা বক্স বের করলেন। সেখানে স্বর্ণ এর দুটো বালা ছিল। তিনি তা স্নিগ্ধার হাতে পরিয়ে দিতে দিতে বললেন,,

“আজ অব্দি যত উপার্জন করেছি তার থেকে একটু একটু টাকা জমিয়ে এই বালা দুটো গড়েছিলাম আমার উৎসের স্ত্রীয়ের জন্য। তুমি যেহেতু আমার উৎসের স্ত্রী হতে যাচ্ছো সেহেতু এগুলো তোমার, আজ থেকে তোমার কাছেই এগুলো থাকবে।”(মিষ্টি স্বরে)

স্নিগ্ধা হা হয়ে হাতের দিকে তাকিয়ে আছে। কি অদ্ভুত তাইনা! বিয়ের কথা পাকা না হতেই মহিলা তাকে এসবের ভার হাত তুলে দিয়েছে! কি আশ্চর্যজনক ব্যাপার! এদিকে কল্যাণী চোখ খানিকটা বড় করে তাকালেন কানন দেবীর দিকে। তিনি ভেবেছিলেন ওনার এই কথায় কানন দেবী হয়তো নারাজ হবেন, কিন্তু এ তো উল্টো কান্ড! তিনি তো খুশি মনে মেয়েকে আজ থেকেই ছেলের বউ ভাবা শুরু করে বালা অব্দি হাতে পরিয়ে দিয়েছেন! বিপুল রায় মৃদু হাসলেন, বললেন,,

“হোক বিয়ে দু বছর পর, আমার মেয়ে জামাই তুমি-ই হবে উৎস। যেহেতু সম্পর্ক ঠিক করা হয়েছে সেহেতু মিষ্টি তো খাওয়াই যায়।”(মৃদু হেসে)

বিপুল রায়ের কথাতে মিতালি উঠে রান্না ঘরের দিকে যেতে নিলে উৎস বাধা দিলো, মিনমিনে স্বরে বললো,,

“একটু অপেক্ষা করুন, আমি মিষ্টির জন্য আমার মামাকে বলেছি। উনি আসছেন মিনিট দুয়েকের মধ্যেই। যেহেতু বিয়ের প্রস্তাব আমরা রেখেছি, সেহেতু মিষ্টি আমাদের তরফ থেকেই খাওয়া হোক।”(মিনমিনে স্বরে)

উৎসের কথা বলার মাঝেই কলিংবেল বাজালো কেউ। মিতালি একবার উৎসের দিকে চেয়ে আগত হলেন দরজার দিকে। দরজা খুলতেই অপরিচিত দুজন নর, নারীকে দেখতে পেলেন। লোকটার দু হাতে মিষ্টির হাড়ি সেই সাথে মহিলাটিরও। তারা দুজনেই হাসি মুখে তাকিয়ে আছেন, মিতালি বুঝলেন এরা হয়তো উৎসের মামা মামী। তিনি ভেতরে আসাতে বলে ভেতরে আসার জন্য জায়গা দিলেন। ওনারা নমস্কার বলেই ভেতরে ঢুকলেন। উৎস ওনাদের দিকে চেয়ে উঠে দাঁড়ালো। এগিয়ে গিয়ে ওনাদের থেকে মিষ্টির হাড়ি নিয়ে টি টেবিলে রাখলো। ওনাদের সোফায় বসার জন্য বলে বিপুল রায়ের দিকে তাকিয়ে বলল,,

“ওনারা আমার মামা আর মামী।”

বিপুল রায় আর কল্যাণী ভদ্রতার খাতিরে মাথা নাড়লেন। কিন্তু বিপুল রায় ভাবলেন উৎসের কথায় যেটুকু তখন তিনি বুঝতে পেরেছিলেন তা হচ্ছে কানন দেবীর পৃথিবীতে কেউ নেই। তাহলে ওনার ভাই আর বৌদি কোথা থেকে আসলো। উৎস হয়তো ওনার মনোভাব বুঝতে পেরেছিল তাই মৃদু হেসে বললো,,

“পৃথিবীতে আমার আর মায়ের কেউ যখন ছিলোনা তখন ওনারা ভাই আর বৌদির মতো আমার মায়ের আর আমার খেয়াল রেখেছিলেন। রক্তের সম্পর্ক না হলেও আমার মা ওনাদের ওনার আপন ভাই আর বৌদি ভাবেন আর আমিও আমার আপন মামা মামী ভাবি।”(মৃদু হেসে)

বিপুল রায় খানিকটা হাসলেন, ছেলেটা দারুন। দায়িত্বশীল, গুছিয়ে কথা বলতে পারে, শ্রদ্ধার সহিত কথা বলে, বড়দের সম্মান করে এমন একটা ছেলেই তো মেয়ে জামাই হিসেবে সবাই চায়। সবটা ভেবে আবারও খানিকটা হাসলেন তিনি। কল্যাণী এবার যেন একটু খুশি হলেন উৎসের প্রতি। গতবারের তুলনায় বেশ ভদ্র আচরণ, মার্জিত ভাবে কথা বলছে উৎস। তখন ঐরকম করলেও উনি বুঝলেন উৎস খারাপ না।
মিষ্টি খাওয়ার পর্ব চুকতেই কানন দেবী বললেন,,

“তাহলে আজ আমরা আসি। বিয়েটা দু বছর পরই নাহয় হবে, তবে স্নিগ্ধা কিন্তু আজকে থেকেই আমার উৎসের স্ত্রী, আমার মেয়ে।”

কানন দেবীর মুখে “উৎসের স্ত্রী” “আমার মেয়ে” শুনে স্নিগ্ধার হৃদপিন্ড তড়িৎ গতিতে ছুটা শুরু করে দিয়েছে। পিটপিট চোখের পলকে বার কয়েক উৎসের দিকে তাকালো স্নিগ্ধা। উৎস মেঝের দিকে চেয়ে আছে, স্নিগ্ধা বিষয়টা লক্ষ্য করেছে উৎস তার দিকে মাত্র বার দুয়েকই তাকিয়েছে। সেই বার দুয়েকে উৎসের নির্লিপ্ত চাহনি দেখে হৃদপিন্ড তড়িৎ গতিতে ছুটেছে আবার হুট্ করে থেমে গিয়েছে। ইশ, কি অদ্ভুত অনুভূতি।
এদিকে কানন দেবীর মুখে একথা শুনে কল্যাণী বললেন,,

“আজকে আমাদের এখানে থেকে যান। কাল নাহয় যাওয়া যাবে।”

“আরে নাহ, আরেকদিন নাহয় থাকা যাবে। বাড়িতে বাচ্চারা একা রয়েছে। আমাদের যেতে হবে।”(মৃদু হেসে)

কানন দেবীর কথা শুনে কল্যাণী ভ্রু কুঁচকে বললেন,,

“ওদের একা কেন রেখে এসেছেন? নিয়ে আসতে পারতেন। শুভ একটা কাজে এসেছেন, বাচ্চারা শুভ হয়, তাঁদের নিয়ে আসতেন। একা কিভাবে রয়েছে তারা।”

উৎসের মামা অমর বললেন,,

“আছে, হয়তো পড়তে বসেছে নাহয় টিভি দেখছে। আর ওরা এতটাও বাচ্চা নয়। আমার বড় মেয়ে এবার ইন্টারে পড়ে, বড় ছেলে দশম শ্রেণীতে আর ছোট ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণীতে।”

কল্যাণী শুনে মৃদু হেসে মাথা নাড়লেন। উৎসদের যাওয়ার পালা। স্নিগ্ধা আড়চোখে বারকয়েক উৎসের দিকে তাকিয়েছে কিন্তু উৎস একবারও তাকায়নি। স্নিগ্ধা বিষয়টা নিয়ে ভাবুক হলো। অদ্ভুত ভাবে ভাবতে লাগলো বিড়াল সামনে মাছ পেয়েও একবারও তাকায়নি! দুধারে মাথা ঝাকিয়ে স্নিগ্ধা তার হাতের বালা জোড়ার দিকে তাকালো। এই বালা জোড়া উৎসের নামে পড়া। আনমনা হয়ে নিজের কক্ষের দিকে পা বাড়ালো স্নিগ্ধা।


রাতে খাবার টেবিলে,
“আমার সাথে একবার আলোচনা করলেনা! হুট্ করে রাজি হয়ে গেলে উৎস চৌধুরীর সাথে স্নিগ্ধার বিয়ের!” (কীয়ৎ রেগে)

বিপুল রায় ভ্রু কুঁচকে আদিতের দিকে চেয়ে বললেন,,

“বিয়েটাতো আর এখন হচ্ছেনা! আরও বছর দুয়েক পরে হবে! আর ছেলেটা খারাপ কোথায়? আমার কাছে সবদিক দিয়ে ভালো লেগেছে। এছাড়া ছেলেটা আর কানন দেবীর সাথে যা অন্যায় হয়েছে, উনি একা ছেলেকে মানুষ করেছেন, ছেলেটাও ভালো সে সাথে প্রতিষ্ঠিত। ছেলেটা ভালোবাসে স্নিগ্ধাকে, আমি যা বুঝেছি আমার স্নিগ্ধা মাকে অনেক ভালো রাখবে।”(ভ্রু কুঁচকে)

বিপুল রায়ের কথার উপর আদিত কি বলবে খুঁজে পেলোনা। এমনি ধরতে গেলে উৎসকে ভালো লাগার মতোই, কিন্তু ঐযে উৎসের করা কিছু কাজ! এই কিছু কাজের জন্যই আদিত নারাজ উৎসের উপর। আদিত কিছু বলতে নিবে তখন ওর নজর গেলো কল্যাণীর দিকে। তিনি ইশারায় তাকে চুপ থাকতে বলছেন। আদিত ফোঁস করে একটা নিঃশ্বাস ফেললো।

“শেরহাম, সারুর এডমিশন টেস্ট তো শুরু হতে আর অল্প কিছু দিনই আছে। ওর উপর অনেক প্রেসার পড়ছে পড়ালেখা নিয়ে। এই অবস্থায় এতো প্রেসার নেওয়াটা কি ঠিক হবে?”

মিতালির এহেন প্রশ্নে শেরহাম মৃদু হাসলো, হাতে থাকা পানির গ্লাসটা টেবিলে রেখে মৃদু স্বরে বললো,,

“সারু সবটা সামলাতে পারবে আমি আশা রাখি।”(মৃদু স্বরে)

মিতালি কিছু বললেন না, অতঃপর খাবার টেবিলে পিনপন নীরবতা বিরাজ করলো। একটা সময় পিনপন নীরবতার অন্ত করে কল্যাণী বললেন,,

“ইলা খেয়েছিলো?”

আদিত মায়ের দিকে চেয়ে বললো,,

“খেতে নাকচ করছিল, জোর করে খাইয়ে ওর ওষুধ খাইয়ে দিয়েছি। জ্ঞান ফেরার পর থেকেই ও খুব আপসেট হয়ে আছে কৌশিক চৌধুরী আর প্রমীলা চৌধুরীর করা কাজের জন্য।”

“বুঝেছো মানুষকে কখনই উপরের অংশ দেখে বিচার করা উচিত নয়। পৃথিবীতে কিছু মানুষ এমন আছে যারা পাপ করলেও ভদ্রতার মুখোশ পড়ে নিজেকে এমন সাধু সাজায় যেন পাপ কাকে বলে তারা জানেনা। আবার কিছু মানুষ এমন আছে যারা সবাইকে দেখিয়ে বেড়াবে তারা খুব খারাপ কিন্তু একটু তার হৃদের মধ্যে প্রবেশ করলে বুঝা যায় তার মন কতটা পবিত্র এবং নরম।” (শান্ত স্বরে)

বিপুল রায়ের কথা আদিত মন দিয়ে শুনলো। আসলেই মানুষকে কখনো উপরের অংশ দেখে বিবেচনা করা উচিত নয়। যেমন সমাজে কৌশিক চৌধুরী কতই না সুশীল বেশ ধরে চলেন অথচ উনি কতবড় পাপ কাজ করেছেন। খোঁজ নিলে দেখা যাবে এমন অনেক কৌশিক চৌধুরী ও প্রমীলা চৌধুরীর মতো নারী পুরুষ আছে, যারা মোহকে ভালোবাসা বলে অতঃপর বুঝতে পারে এটা ভালোবাসা না ক্ষনিকের আকর্ষণ তখন ময়লার মতো ছুঁড়ে ফেলে দেয়। আদিত কিছু বললোনা আর। এখন তার প্রধান কাজ হচ্ছে ইলাকে এই দুঃখ থেকে বের করে আনা ভালোবাসা দিয়ে।


সময় স্রোতের মতো বয়ে চলে, সময় কখনো কারো জন্য থেমে থাকেনা। মানবজীবন থেমে থাকলেও সময় থেমে থাকেনা এটা চিরন্তন সত্য। এ সত্যকে মস্তিষ্কে রেখে প্রতিটি কাজ, পদক্ষেপ নিলেই আমরা সাফল্য পাই। সারুও সাফল্য পাওয়ার পথে। সারু শেরহামের সাপোর্ট, নিজের আগ্রহের ফলে অসুস্থ শরীর নিয়েও দিনের প্রায় সময় পড়ালেখার মধ্যে ব্যয় করেছে। সময়কে কাজে লাগালে আমরা এর মিষ্টি একটা ফল পাই, সারুও পেয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রিটেন পরীক্ষা হওয়ার ফলে আজ এডমিশন টেস্টের একমাস পর রেজাল্ট দিয়েছে। সারু চান্স পেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমানে রায় পরিবারে একটুখানি দুঃখের পরিবর্তে সুখের আভাস এসেছে সারুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার দরুন। শেরহাম সারুর খুশিতে ভীষণ খুশি। সে কীয়ৎক্ষন পর পর ড্রাইভিং থেকে মনোযোগ কিছুটা ক্ষুন্ন করে ঠোঁটের কোনে মৃদু হাসি নিয়ে তাকাচ্ছে সারুর দিকে। সারুর মুখ খুশিতে লাল হয়ে আছে, উজ্জ্বল লাগছে শেরহামের কাছে। সারু গাড়ির জানালার বাহিরে তাকিয়ে আছে খুশি মনে। হুট্ করে সারু নজর সরিয়ে শেরহামের দিকে চেয়ে বললো,,

“আপনি না থাকলে আমার এতদূর আগানো হতোনা। আপনি আমার হয়ে, আমার পাশে ছিলেন বলেই আমি এতটা আগাতে পেরেছি। আপনাকে আমি বলে বুঝাতে পারবোনা আমার ঠিক কতটা খুশি লাগছে এমুহূর্তে। আমার ইচ্ছে করছে আপনাকে জড়িয়ে ধরি।” (ঠোঁট টিপে হেসে)

সারুর বলতে দেরী কিন্তু শেরহামের গাড়ি এক সাইড করতে দেরী হলোনা। গাড়ি সাইডে দাঁড় করিয়ে শেরহাম বের হলো গাড়ি থেকে। ঘুরে সারুর সাইডে গিয়ে দরজা খুলে নিজের ডান হাত বাড়িয়ে বলে উঠলো,,

“ম্যাডাম আপনার সব আবদার, ইচ্ছে পূরণ করতে সবসময় আপনার হয়ে, আপনার কাছেই থাকছি কিন্তু। যেহেতু আমায় জরিয়ে ধরার ইচ্ছে পোষণ করেছেন সেহেতু ইচ্ছে না পূরণ করি কিভাবে। নেমে আসুন আমার হাত আঁকড়ে ম্যাডাম। আমার হৃদপিন্ড ও বক্ষ আপনার অপেক্ষায়।” (মৃদু হেসে)

সারু খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো, হাত বাড়িয়ে শেরহামের হাত স্পর্শ করে বেরিয়ে আসলো। শেরহামকে দুহাতে আঁকড়ে জরিয়ে ধরলো। রোডটাতে যানবাহন চলাচল খুব কমই, সেক্ষেত্রে আপাতত তিন চারটে গাড়ি মাঝে মধ্যে যাওয়া ছাড়া গাড়িদের কোনো ভিড় নেই এই রোডে। তাই নিঃসংকোচে রাস্তার ধারে সারু শেরহামকে জরিয়ে ধরেছে। সেকেন্ড পাঁচেক যাওয়ার পর বৃষ্টির বর্ষণ শুরু হলো। আকাশ সকাল থেকেই মেঘলা হয়ে ছিল, যেকোনো সময়েই বৃষ্টি আসত। সারু এই মুহূর্তে বৃষ্টি চেয়েছিলো, আর চাওয়াটাকে পূর্ণ করে বৃষ্টির আগমন ঘটলো।

“দেখুন ম্যাডাম আমাদের আজকের খুশিতে বৃষ্টিও খুশি। বৃষ্টিকে শুনিয়ে ও সাক্ষী রেখে আপনাকে বলছি ম্যাডাম, ভীষণ ভালোবাসি আপনাকে। আমার ভালোবাসা আপনার জন্য অন্তহীন। আমার একটাই আবদার আপনার কাছে, মানুষ যেমন ভৃঙ্গরাজ ফুল দেখে আনমনে মুগ্ধ হয় তেমনি আপনিও আমার ভালোবাসায় আনমনে মুগ্ধ হবেন।” (ঠোঁটের কোনে হাসি এঁকে)

সারু শেরহামের বক্ষ থেকে মুখ তুলে ফিক করে হেসে দিলো। শেরহামের গালে দুহাত স্পর্শ করে বলে উঠলো,,

“আপনার আবদার গৃহীত হলো জনাব, আপনিও জেনে রাখুন সারু আপনাকে খুব ভালোবাসে। যে ভালোবাসা কখনো পরিমাপ করা যাবেনা এবং আপনার প্রতি তা কোনোদিনও ফুরোবেনা।” (হেসে)

চলবে..