সীমাহীন পর্ব-১০+১১+১২

0
5

সীমাহীন
#Meherika_Ayat (আরাধ্যা)
পর্ব ১০
সারা ঘর বেলুন দিয়ে সাজানো। বিভিন্ন কালারের জরি সারা রুমে ছিটিয়ে আছে। ব্যাপার টা কি?
এতো আয়োজন কিসের?
রুম থেকে বের হতেই দেখলো দরজার সামনে ইমোজি বেলুন কতোওওওও গুলো। এতোওওওওওও কিউট বেলুন গুলো। সারা সিড়িতে জরি আর বেলুন ছড়ানো।
আরাধ্যাঃ রিধিইইইইই রিধিইইইইই। কইইইই তুইইই দেখ কি সুন্দর বেলুন কতো গুলো।
আল্লাহ হাওয়াই মিঠাই এতো গুলো সোফায় কে রাখছে? সাদা গোলাপি লাল এতো কালেরের হাওয়াই মিঠাই। উফফফফ আমি তো আজ খুশীতে পাগল হয়ে যাব। বাসার সবাই কইইই?
আল্লাহ ঘড়িতে ১২ টা বাজে। এতো লেট হলো কেন যে আজ উঠতে,
এলার্ম টা কে যে অফ করে দিছিলো। আর বাসায় সবাই কইই?
ফোন টাও খুজে পাচ্ছি না।
কি যে করি? চকোলেট? ওওও ডেইরি মিল্ক, কিটকাট, গেলাক্সি🍫🍫🍫 উমমমম আর কতো কি যে পাবোওওও?
ফ্রিজের ডিফের উপর ওটা কি লেখা?
এটা খোলো?
ওওওওমাআয়ায়ায়ায়াইই
আল্লাহ 😮😮😮😮😮😱😱😱😱😱😱 আইসক্রিম
কিন্তু বাসার কেউ নেই কেন?
যাই হোক।
চকোলেট গুলো কেমন আমার দিকে চেয়ে আছে 😥 আইসক্রিম গুলোও তাই।
আগে এগুলো খেয়েনি।
পরে অন্য সব ভাবা যাবে।
উফফফ ফ্রেশ ও তো হলাম না। আগে ফ্রেশ হয়েনি।
চকোলেট গুলো সাথে নিয়ে গেল ভালো৷ আর যদি বিড়াল এসে নিয়ে যায়।
আরাধ্যা উপরে নিজের রুমে চলে গেল।
ফ্রেশ হয়ে নিল।
টিভি অন করে চকোলেট হাতে নিয়ে বসলো। চকোলেট খেতে খেতে টিভি দেখতে লাগলো।
এভাবে ঘুম এসে গেল আরাধ্যার।
সন্ধায় হঠাৎ হৈচৈ শুনে ঘুম ভেংগে গেল আরুর।
রুম থেকে বের হতেই দেখলো একটা বক্স।
আরাধ্যা বক্স টা খুলে দেখলো একটা সাদা গাউন। হাতা থেকে গলার অর্ধেক নেটের। গলায় উপর ছোট ছোট লাল গোলাপ বসানো। নিচে দিয়েও সেরকম কাজ।
একটা কাগজও পেল বক্সে। গাউন টা পরে নিচে আসো।
আরাধ্যা গাউন টা পরে সাথে হালকা লাল লিপ্পি। কানে লাল সাদা পাথরের ঝুমকা পরলো৷ দেখতে তাকে পরির চেয়ে কম লাগছে না। নিচে নামতেই লাইট আফ হয়ে গেল। হঠাৎ লাইট জ্বলে উঠে। আর সবাই এক সাথে উঠলো হ্যাপি বার্থডে আরাধ্যা।
আজ আমার বার্থডে। আর আমার মনেই ছিল না। ইসসস,
মনে মনে বলল আরাধ্যা।
সাবাই আছে কিন্তু আরাধ্যার দুই চোখ শুধু আরিয়ানাকেই খুজছে। কই স্যার? সাবাই আছে তাও স্যারের জন্য এমন অস্থির লাগছে কেন আমার। মনে মনে বলল আরাধ্যা। এর মাঝেই অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এলো আরিয়ান হাতে কেক নিয়ে। হ্যাপি বার্থডে মাই কুইন। মেনি মেনি হ্যাপি রিটার্নস অফ দা ডে।
এবার কেক টা তো কাট।
আরাধ্যার উদ্দেশ্যে কথা টা বলল আরিয়ান। কেক কাটার পর্ব শেষ হলো। সবাই উইস করলো আরুকে। গিফট দিল।
সারপ্রাইজ কেমন হলো?
আরুউউউ। বলল রিধি।
আরুঃ দারুউউউউউণ
তুই করছিলি সব?
রিধিঃ আমি তো জাস্ট ভাইয়াকে হেল্প করছি। কাল রাত থেকে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত সব প্ল্যান কিন্তু ভাইয়ার। সব ভাইয়া করছে।
আরুঃ সত্যিইইই???
রিধিঃ হুমমম
আরুঃ গলাটা একদম শুকিয়ে গেছে। একটু জুস খাই চল।
রিধিঃ তুই যা। আমি একটু রাজের সাথে কথা বলি।
আরুঃ ওওও প্রেম হপ্পে বুঝি? 😎😉😉😉
রিধিঃ যা তো।
আরাধ্যা জুস খেতে চলে গেল। স্যার কোথায় স্যারকে একটা থ্যাংকস বলা দরকার। মনে মনে ভাবলো আরু। এদিক ওদিক তাকাছে আর একটা জুস নিয়ে এক ঢোকে খেয়ে নিল৷ ইইইই কেমন যে ছিল?
যাক গলা টা তো ভিজলো।
.
.
.
রাজঃ এই যে মিস? কই ছিলে তুমি? খুজতে খুজতে পাগল হয়ে গেছি।
উফফফসস আজকে তো তোমাকে অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে। ইসসস ইচ্ছে করছে আজই বিয়ে করে বাসর করে ফেলি। সবার আগে গল্প পড়তে আমাদের নীল ক্যাফের ভালোবাসা পেজের সাথেই থাকুন
রিধিঃ যাও তো ফাজিল।
খালি বাজে কথা।
রাজঃ আসো না একটু রুমে যাই।
রিধিঃ উমম, যাবা?
রাজঃ এতো ভাবার কি আছে? চলো না পাখিইইইই
.
.
.
পার্টি প্রায় শেষ। সবাই বাসায় চলে যাচ্ছে। আরাধ্যার সাথে কথা বলে।
মাথাটা এমন ঘুরছে কেন আমার? কি যে হয়েছে? বলল আরাধ্যা। সবাই চলে গেছে।
.
.
.
আরাধ্যা ভাবছে স্যার কোথায়? স্যারের সাথে তো কথাই বলা হলো না।
খুজতে খুজতে আরিয়ানের রুমে চলে গেল৷
আরুঃ স্যার।
আরিয়ান পিছনে ফিরে দেখলো আরাধ্যা দাঁড়িয়ে আছে। ভেতরে আসো বলল আরিয়ান।
আরাধ্যা আরিয়ানের রুমের ভেতর ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিল।
আরিয়ানঃ ওই কি হইছে তোমার? দরজা বন্ধ করলে কেন?
আরুঃ আজ অনেক কথা আছে তোমার সাথে। ঢুলতে ঢুলতে।
চলবে………..

সীমাহীন
#Meherika_Ayat (আরাধ্যা)
পর্ব ১১
আরাধ্যা ঢুলতে ঢুলতে বলল আজকে অনেক কথা আছে তোমার সাথে।
আরিয়ানঃ কি বলতেছো এগুলো? তুমি মানে?
এই তুমি ড্রিংক করছো?
আরাধ্যাঃ আমি ওগুলো খেতে চাইনি। কি না কি খাইছি।(কেঁদে কেঁদে)😭😭
আরিয়ানঃ হইছে। আর কান্না করতে হবে না,
যাও অনেক রাত হইছে ঘুমাও।
আরাধ্যাঃ আজকে আমি এখানে ঘুমাবো 😁😁
তোমার সাথে।
আসো আমরা সেলফি নি।
আরিয়ানের ফোন হতে নিয়ে বলল আরু।
টাচ লেগে কখন ভিডিও হতে লাগলো কেউ খেয়ালি করে নি।

জানো তোমাকে আমার অনেএএএএএএএক কিছু বলার আছে। তুমি নাকি সব প্ল্যান করছিলা আমার জন্য? তুমি কি আমাকে ভালোবাসো?
আরিয়ানঃ কেন? তুমি বাসো নাকি?
আরাধ্যাঃ একদম,
খুব ভালোবাসি।
আরিয়ানঃ তাই নাকি?
তা কখনো বললে না যে?
আরাধ্যাঃ কেমনে বলতাম?
তুমি তো সারাক্ষণ আমাকে বকা দাও( মুখ ফুলিয়ে) 😔
আরিয়ানঃ তা তো তোমার ভালোর জন্য৷ তোমার পাশে যে আমার কাউকে সহ্য হয় না। কি করবো বলো? ভালোবাসি তো খুব।
ওকে আর বকবো না।
আরাধ্যাঃ সত্যিই? তাহলে আমাকে আদর করো।
আরিয়ানঃ কিইইইইইহ?
আরাধ্যাঃ হুমম। এখোনি,
না হয় আমি কিন্তু কান্না করবো। বলেই জোরে জোরে কাঁদতে লাগলো৷
আরিয়ানঃ ওরে আল্লাহ। এই মেয়ে আমার ইজ্জত রাখবে না। শুন প্লিজ চিল্লাইও না। তুমি যা চাইবা তাই হবে৷
আরাধ্যাঃ সত্যিই? আসো আদর করবো। বলেই আরিয়ানকে খাটের উপর ফেলে দেয়। তারপর আরিয়ানের উপর উঠে যায়, আর ওর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। দুজন দুজনকে শক্ত করে জড়িয়ে আছে। ওরা যেন এক ঘোরের মধ্যে আছে। আরিয়ান আরাধ্যার জামার পিছনে হাত দিয়ে চেইন টা খুলে ফেলে,
জামা টা কাধ থেকে একটু নিচে নামিয়ে দেয়।
আরাধ্যাকে নিজের উপর থেকে সরিয়ে, নিজের ভর টা আরাধ্যার উপর দেয়।
আরাধ্যার ঘাড়ে গলায় পাগলের মতো আদর করতে থাকে।
আরাধ্যা চোখ বন্ধ করে নেয়। আরিয়ানকে আরো শক্ত করে ধরে রাখে। নখ দিয়ে আরিয়ানের গলায় খামচে ধরে। আস্তে আস্তে আবার আরাধ্যার ঠোঁটের কাছে চলে যায় আরিয়ান।
আরাধ্যা আরিয়ানের ঠোঁটে আদর করতে করতে কামড়ে দিলেই। আরিয়ানের ঘোর কাটে।
আরিয়ানঃ উফফফফ কি করছো? আরাধ্যা কে ছেড়ে এক লাফে উঠে যায়।
আরাধ্যাঃ উমমম,
আদরই তো করছি।
আরিয়ানঃ আরু,
প্লিজ তোমার রুমে চলো৷ অনেক রাত হইছে
তোমার ঘুমানোর দরকার,
সকালে কথা হবে।
আরাধ্যাঃ না। আমি এখানেই থাকবো। তোমার বুকের মধ্যে ঘুমাবো। 😘
আরিয়ান মনে মনে ভাবলো এখন এখানেই ঘুমিয়ে যাক আরু। ঘুম এসে পড়লে রুমে দিয়ে আসবো। এখন কোনো কথা শুনবে না মেয়ে টা।
আরিয়ানঃ ওকে।
আরাধ্যাঃ আসো,
ঘুমাই।
আরিয়ানের বুকের উপর শুয়ে পড়লো আরু। আরিয়ান ওর চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে। পাঁচ মিনিটেই ঘুমের দেশে ডুব দিল আরু।
এভাবেই চেয়েছি সব সময় আমার আরাধ্যাকে। ভালোবাসে ও আমাকে। কালই বলল বিয়ের কথা।
মনে মনে ভাবলো আরিয়ান।
দেখলো আরাধ্যা ঘুমিয়ে গেছে।
কি মায়া লাগছে ওকে ঘুমের মধ্যে। আর বেশী দিন নয় আমরা এভাবেই ঘুমাবো প্রিয়তি।
আরুর দিকে চেয়ে বলল আরিয়ান। আলতো করে ওর ঠোঁট ছুঁয়ে দিল আরাধ্যার গালে।
তারপর আস্তে কোলে করে ওকে রুমে নিয়ে গেল। খাটে শুইয়ে দিল।
ওকে বুঝতে দেওয়া যাবে না,
রাতের কথা।
শুধু শুধু নিজেকে দোষ দিবে। মনে মনে বলল আরিয়ান।
না। ফার্ম হাউসে গিয়ে একটু একা থাকি ভালো লাগবে।
.
.
.
রাত বার টা বাজছে।
রাজের সাথে ফোনে কথা বলছে রিধি।
রিধিঃ আজ একটু বেশি হয়ে গেছে।
রাজঃ বেশি আর কই হলো?
শুধু আদরই তো করলাম।
মানুষ আরো কতো কিছু করে।
রিধিঃ আগে ভাইয়াকে আমাদের কথা বলো।
তারপর সব।
রাজঃ তোমার ভাইয়া সব জানেও। কথা টা মনে মনেই বলল।
আচ্ছা বলবো।
রিধিঃ আচ্ছা। গুড নাইট।
অনেক রাত হয়েছে।
রাজঃ ওকে বেবি,
লাভ ইউ।
.
.
.
আরিয়ান ফার্ম হাউসে আসলো।
আরিয়ানঃ একটু ফ্রেশ হয়ে নি। ওয়াশরুমে গিয়ে শার্ট খুলতেই নিজেকে আয়নায় দেখলো আরিয়ান। বুকে গলায় অসংখ্য নখের আঁচড়। ঠোঁট টা ফুলে লাল হয়ে আছে। নিজেকে বেশ ভালোই লাগছে আরিয়ানের।
সব ভালোবাসার দাগ।
.
.
.
সকাল হয়ে গেছে।
মাথাটা এমন ঝিম ঝিম করছে কেন আমার। রাতে তো নিচে ছিলাম উপরে এলাম কেমনে?
নিজেই হয়তো এসছি।
খাটের উপর বসে বসে ভাবছে আরাধ্যা।
গুড মর্নিং আরু।
আরাধ্যাঃ রিধি,
ভেতরে আয়।
রিধিঃ কিরে তুই এখনও চেঞ্জ করিস নি?
আরাধ্যাঃ না রে। ঘুমাই গেছিলাম।
আচ্ছা ফ্রেশ হয়ে নিচে আয়। আমি যাচ্ছি বলল রিধি।
আরাধ্যাঃ হুম।
.
.
.
সবাই খাবার টেবিলে বসে আছে।
ফাতেমা বেগম বলে উঠলো সবাই আছে আরিয়ান কোথায়?
জানিনা আম্মু।
ভাইয়া রুমে নেই সেই সকালেই খুজতে গেছিলাম। রুমে ছিল না।
মায়ের উদ্দেশ্যে বলল রিধি।
আরাধ্যা ভাবছে।
কোথায় গেল স্যার?
থ্যাংকস টা ও বলা হয়নি।
মনের কথা টা আজ বলেই দিব স্যারকে।
.
.
.
গুড মর্নিং।
বাসায় ঢুকতে ঢুকতে বলল আরিয়ান।
ফাতেমা বেগমঃ কোথায় ছিলি তুই?
আয় খেতে বস।
ভাইয়া তোর ঠোঁটে কি হইছে? অমন লাল হয়ে আছে কেন রে?
আরিয়ানের উদ্দেশ্যে বলে উঠলো রিধি।
আসোলে
.
.
.
তার মানে স্যার কালকে রাতে ওনার গফের সাথে ছিল? আর আমি কতো কিছুই না ভেবে ফেলছি।
ভাবতেই আরাধ্যার চোখে পানি চলে আসে।

সীমাহীন
#Meherika_Ayat (আরাধ্যা)
পর্ব ১২
কিরে বলছিস না কেন কি হইছে তোর ভাইয়া।
আল্লাহ তোর ঘাড়ে কে আঁচড় কাটছে কে ভাইয়া?
আরিয়ানঃ ও আর বলিস না।
কালকে রাতে অর্জুনদের বাসায় গেছিলাম।
একটু আড্ডা দেওয়ার জন্য।
ওখানেই ঘুমাইছিলাম যে,
রাত্রে ওয়াসরুমে যাওয়ার সময় দরজার সাথে ধাক্কা লাগে ঠোঁট টার এই হাল হইছে।
আর ওদের বাসায় প্রচুর মশা, চুলকাতে চুলকাতে ঘাড়ের কি হইছে দেখছিস তো।
.
আর কতো মিথ্যা বলতে পারেন স্যার। আসোলে আমারই ভুল ছিল আপনাকে ভালোবাসা।
আপনার তো গফ থাকতেই পারে। মনে মনে ভাবতে থাকলো আরাধ্যা।
.
রিধিঃ ও আমি তো ভাবছিলাম কি না কি।
আরিয়ানঃ তুই তো সব সময়ই বোকা।
রিধিঃ ভাইয়া 😠
আম্মু ভাইয়াকে কিছু বলো।
আরিয়ানঃ আম্মু কি বলবে
যা সত্যি তাই বলছি।
.
তোর কি একটু চুপ করবি?
সকাল সকাল কি শুরু করে দিছিস এসব?
.
আরু তুই আবার কাঁদছিস কেন? আরাধ্যার দিকে তাকিয়ে বলল রিধি।
আরাধ্যাঃ কই না তো।
চোখে কি পড়ছে হয়তো।
রিধিঃ ও আচ্ছা নাস্তা সেরে নে।
.
আরাধ্যার দিকে তাকিয়ে আছে আরিয়ান।
একটু ওয়েট করো বাবুন।
আজই বলবো সবাইকে আমাদের বিয়ের কথা। মনে মনে বলল আরিয়ান।
.
রিধিঃ কিরে কলেজ যাবি না?
আরাধ্যাঃ হুম চল।
কোনো কলেজে যাওয়ার দরকার নেই আজ। বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে খুব, বলে উঠলো আরিয়ান।
.
বৃষ্টি? ভিজবো আমি,
বলেই দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেল আরাধ্যা।
.
আসবো রেশমি আপু?
রেশমিঃ আরে আরু আসো।
আরাধ্যাঃ আপু তোমার একটা শাড়ি দিতে পারবে প্লিজ?
রেশমিঃ প্লিজ বলার কি আছে।
তোমার যে টা ইচ্ছে নাও।
কিন্তু শাড়ি দিয়ে কি করবে?
আরাধ্যাঃ শাড়ি পরে বৃষ্টিতে ভিজবো।
রেশমিঃ ঠান্ডা লেগে যাবে না?
আরাধ্যাঃ আরে একদিনে আর কি হবে?
আলমারি থেকে একটা সাদা সিল্কের শাড়ি বের করে নিল আরাধ্যা। পিন পিনে পাতলা শাড়িটা। সাথে গোল্ডেন কালারের মেকি হাতার ব্লাউজ। ব্লাউজটার পিছনে শুধু ফিতা দেওয়া। পিঠের জায়গা দিয়ে পুরো খালি।
আরাধ্যাঃ আপু আমি এটা নিচ্ছি৷
রেশমিঃ আচ্ছা।
শাড়ি টা পরে নিল আরু। সাথে হালকা লাল লিপ্পি।
হাতে সাদা কাচের চুড়ি।
আর খোলা চুল।
.
ছাদে চলে গেল আরাধ্যা।
বৃষ্টিতে ভিজতে লাগলো।
ভিজে শাড়িটা ওর গায়ের সাথে লেপ্টে আছে। চুল গুলো সামনে এনে এক পাশ করে রেখেছে।
সাদা পিঠের থেকে গড়িয়ে গড়িয়ে পানি পড়ছে।
.
পিছন থেকে আরিয়ান দাঁড়িয়ে সব দেখছে।
পাগল হয়ে যাচ্ছি আমি।
এতো ভালো লাগে কেন তোমাকে? আরাধ্যা দিকে তাকিয়ে নিজে নিজে কথা গুলো বলতে থাকে আরিয়ান। আর কয়েকটা ছবি আর ভিডিও করে নেয়।
সন্ধায়ই সবাইকে জানাতে হবে। আর ওয়েট করতে পারবো না। মনে মনে বলল আরিয়ান।
.
.
.
রুমে এসে মাথাটা মুছতে মুছতে আরাধ্যা ভাবছে।
স্যারের যদি গফ থেকেই থাকে তাহলে কাল আমার বার্থডে তে এতো কিছু করলো কেন?
হয়তো রিধিই বলেছে।
তা নয়তো আর কি?
ভাবতে ভাবতে কেদে দিল আরাধ্যা। উফফফফ আমি কাঁদছি কেন?
আমার আগেই ভাবা উচিৎ ছিল এসব।
.
.
.
কি ভাবে বলবো বিয়ের কথা? বাসার সবাই তো জানেই আমি আরুকে ভালোবাসি। আরাধ্যাকে প্রপোজ করলে কেমন হয়?
আগে সবাইকে জানিয়ে দেই আবার। আরুকে এখন কিছু বুঝতে দেওয়া যাবে না। মনে মনে ভাবছে আরিয়ান।

.
.
.
বিকেলে কলিং বেলের শব্দ শুনে দরজা খুলে দিল শাহিদা।
দেখলো বাইরে একটা মেয়ে দাড়িয়ে আছে।
আরাধ্যা আপ্পি আছে?
আমি ওনার কাছে এসেছি।
মেয়েটি বলল।
শাহিদাঃ আছে।
মেয়েটিঃ আমাকে একটু ওনার রুমে নিয়ে যেতে পারবেন?
.
.
.
আসবো?
আরাধ্যাঃ কে?
আমি পাশের বিল্ডিয়ে থাকি আপু। তোমার কাছে এসেছি।
আরাধ্যাঃ ভিতরে আসো৷
কি নাম তোমার
মিথিলা মেয়েটি বলল।
আরাধ্যাঃ মিষ্টি নাম।
তা আমার কাছে কেন এলে?
মিথিলাঃ আপু আম্মুর কাছে তোমার অনেক প্রশংসা শুনছিলাম।
বাসায় একা একা ভালো লাগে না। তাই তোমার সাথে গল্প করতে চলে এসেছি।
আরাধ্যাঃ আচ্ছা।
ভালো করছো৷
.
.
.
অনেক্ক্ষণ কথা বলার পর মিথিলা বলে উঠলো আমি আজকে উঠি। আপু তোমার ফোন নাম্বার টা দিলে ভালো হয় মাঝে মাঝে কথা বলতে পারবো?
ফেবু আছে তোমার?
আরাধ্যা ওর ফোন নাম্বার টা আর ফেবু দুটোই দিল মিথিলাকে।
.
.
.
ফোন টা নিচে রেখে চলে এসছে আরাধ্যা। নিজের রুমে বসে বসে পড়ছে।
.
অফিস থেকে এসেছে আরিয়ান। সোফায় বসে আছে। হঠাৎ আরাধ্যার ফোন বেজে উঠল।
ফোনের শব্দ শুনে উঠে ফোন টা রিসিভ করে আরিয়ান।
চলবে……