মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব-১৮+১৯

0
5

#মায়াবতীর_ইচ্ছা
#পর্ব_১৮
#ইশরাত_জাহান
🦋
গাড়ি এসে থামলো আশ্রমের সামনে।গাড়ির ব্যাক সাইট থেকে বের হয় মায়া ও রাজ।তার পিছনে থেকে আরো একটি গাড়ি আসে।সেখান থেকে বের হয় মৌ ও পিয়াশ।সবাই এসে আশ্রমের মেইন গেটে থেমে যায়।ছোট ছোট বাচ্চারা মন্ত্রীর জন্য স্বাগতমের ব্যাবস্থা করে রেখেছে।রাজ একটি ছাই রঙা ব্লেজার পড়েছে।মায়া নীল রঙের টাতের শাড়ি।রাজ ও মায়ার দিকে তাকিয়ে সবাই তাদের খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে থাকে।আশ্রম কর্মী এসে একটি ফুলের তোড়া দেয় রাজের হাতে।রাজ হাসিমুখে তোড়াটি নেয়।সবাই মিলে একসাথে আশ্রমের ভিতরে ঢুকলো।প্রথমে রাজ ও মায়া তার পিছনে পিয়াশ ও মৌ।সবাই আশ্রমের চারপাশ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে থাকে।মৌ এসে মায়ার পাশে দাড়িয়ে পড়ে।রাজ ও পিয়াশ আশ্রম কর্মীদের সাথে কথা বলে।তারা রাজকে আপ্যায়নের স্থানে নিয়ে বসিয়ে দেয়।কিছু নাস্তা পানি করতে দেওয়া হয় রাজকে। মায়াকেও ডাকা হয়েছে।কিন্তু মায়া একটু পর আসছি বলেছে।মৌ মায়ার পাশে দাড়িয়ে সবকিছু দেখতে দেখতে বলে,”সবার সবকিছু পূরণ হয়।শুধু আমাদের উদ্দেশ্য বাদে।”

মায়া মৌয়ের কাধে হাত রেখে বলে,”ওটাও পূরণ হবে বোন।”

“কিভাবে আপু?আমার জন্মের পর না পেলাম মায়ের ভালোবাসা না পেলাম বাবার।অথচ ওদিকে যার জন্য আমাদের এই অবস্থা তারা সুখে।”

বলতে না বলতেই মৌয়ের চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে।মায়া মৌয়ের চোখের পানি মুছে বলে,”বড় বোন হয়ে আমি এখনও স্ট্রং।তোমাকেও এমন হতে হবে।আমাদের বাবা নামক নরপশুর শেষদিন হবে।খুব শীঘ্রই হবে।শিরায় শিরায় ভোগ করবে সে।”
দাত কটমট করে বলে মায়া।মৌ শান্তি পায় মায়ার কথায়।মোহন সরদার ও সোনালী এই দুই বোনের জীবনের কাল ছিলো।এখন এই দুই বোন বড় হয়ে তাদের জীবনের কাল।মৌয়ের গ্র্যাজুয়েশন শেষ।মায়া চেয়েছিলো একটা ফ্যাক্টরি মৌয়ের দায়িত্বে দিতে।কিন্তু মৌ না করেছে।তার কথা মতে,”আমি পিয়াশের সাথে সুখে আছি।আমার ছোট সংসারে সবার সাপোর্ট ও ভালোবাসা আছে।বেশি উপরে যেতে গেলে আমি এগুলো পাবো না।”

মায়া যেমন ভালোবাসার কাঙাল মৌ নিজেও তেমন।তাই মায়া মৌকে পরিপূর্ণ ভালোবাসায় পূর্ণ রেখেছে। পিয়াশ ছেলে ভালো মনের।সে নিজেও মৌয়ের জন্য পাগল। পিয়াশের সামনে একমাস বন্ধুত্বের রূপ নিয়ে ঘুরতে না ঘুরতেই পিয়াশ মৌকে ভালোবেসে ফেলে।তারপর পিয়াশ মৌকে বিয়ে করে।

আশ্রমের একটি বাচ্চা মেয়ে এসে মায়ার হাত ধরে ঝাকিয়ে বলে,”ম্যাম ম্যাম।আপনাকে খেতে ডাকছে,আসুন।

মায়া বাচ্চাটির দিকে তাকিয়ে থাকে।কি সুন্দর ফোকলা দাঁতের একটি গুলুমুলু মেয়ে।মায়ার হাত ঝাকিয়ে ঝাকিয়ে হাসতে থাকে।মায়া হাঁটু গেড়ে বসে বাচ্চাটির সামনে।বলে,”তোমার নাম কি?”

মেয়েটির ফোকলা দাত দিয়ে খিলখিলিয়ে বলে,”হাসি।আমাকে আশ্রমের সবাই হাসি বলে।কারণ আমি সারাদিন হাসতে থাকি।”

মায়া হাসির দিকে তাকিয়ে বলে,”জানো আমার একটা হাসি মা আছে।কিন্তু তোমার মত হাসে না।”

মেয়েটি তিন আঙ্গুল দিয়ে ঠোঁট ঢেকে অবাক হওয়ার ভাব করে বলে,”হোওও!একটু হাসে না।না হেসে মানুষ থাকে কিভাবে?আমার তো মজার কিছু দেখলেও হাসি পায়।”

মায়া বাচ্চাটিকে জড়িয়ে ধরে।কল্পনা করে নিজের ছোটবেলার স্মৃতি।মায়া ছোটবেলায় প্রচুর শাহানা পারভীনের শাড়ি পড়তো।একদিন মোহন সরদার আসার আগে শাহানা পারভীনের শাড়ি পরে আয়নায় ফোকলা দাত নিয়ে হাসতে থাকে।বাচ্চা মানুষদের কাজই কারণে অকারণে হাসতে থাকা।মোহন সরদার মায়াকে দেখে বলতেন,”আমার মোহ মা।”

“আমি এখন বউ সেজেছি বাবা।আমাকে বউ লাগছে?”

“হ্যাঁ হ্যাঁ খুব বউ বউ লাগছে।”
বলেই জড়িয়ে ধরতেন মায়াকে।শাহানা পারভীন এদের বাবা মেয়ের ভালোবাসার ভিতর ঢুকে বলতেন,”আমার মা এত বউ সাজে কেনো?বরের তো ঠিকানা নেই।”

মায়া বউ সাজ নিয়ে কোমরে হাত রেখে বলতো,”আমি এখন বিয়ে করবো না।বিয়ে করলে তোমাদের থেকে দূরে যেতে হবে।”

শাহানা পারভীন মেয়েকে কাছে নিয়ে বলতেন,”তোমাকে আমাদের কাছে রাখার ব্যাবস্থা করবো মা।তুমি আমাদের থেকে দূরে থাকবে না।তোমার বর নিজে তার সিংহাসন তোমার রাজত্বে চালাবে।”ল

মায়া খুশি হয়ে বলে,”হ্যাঁএএ! সত্যি বলছো মা?আমার বর আমাকে নিয়ে যেতে আসবে না।এখানেই থেকে যাবে।”

শাহানা পারভীন মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বুঝিয়ে দিতেন।মায়া অরুপে তখনকার মোহনা মোহন সরদারের দিকে তাকিয়ে বলতো,”আমি তোমাদের কাছে থাকবো বাবা।কি মজা কি মজা।”
বলেই বাবা মাকে চুমু খেতো মায়া।দৃশ্যগুলো চোখের সামনে ভাসতেই মায়া কান্না করে দেয়।হাসি নামের বাচ্চা মেয়েটিকে বলে,”ছোটবেলাটা সুন্দর রে হাসি।তখন না চাইতেও হাসি পায়। আর তারপর যত বড় হবি লোকজন চিনতে থাকবি তত বেশি কষ্ট পাবি।হাসির কিছু দেখলেও আর হাসতে ইচ্ছা করবে না।”

বোকা হাসি কিছুই বুঝতে পারলো না।মৌ এমনি বাবা মায়ের ভালোবাসা পায়নি তাই কষ্ট লাগছিলো তার।এখন আবার মায়ার কষ্ট দেখে আরো বেশি কষ্ট পাচ্ছে।হাসি মায়াকে সোজা করে মায়ার চোখের পানি মুছে বলে,”তুমি কান্না করছো কেনো?তোমার কাছে কি চকলেট নেই?আমি তো চকলেট কিনতে পারি না কিন্তু তুমি এই সুন্দর সুন্দর জামা কাপড়ের মতো চকলেট কিনতে পারবে।”

মায়া ফোঁস করে হেসে দেয়।হাসি মেয়েটি মায়া ও মৌকে টানতে টানতে বলে,”চলো চলো।ওরা সব খাবার খেয়ে নিবে।আমরা কিছুই পাবো না তো।তাড়াতাড়ি আসো।”

মায়া ও মৌ হাসির টানাটানিতে দৌড়াতে থাকে।রাজ ও পিয়াশ এটা দেখে হেসে দেয়।মৌ নিজেও শাড়ি পরেছে।দুই শাড়ি পড়া নারীকে এক ছোট বাচ্চা দুই হাতে টেনে দৌড়ে নিয়ে আসছে এটা সবাইকে মিষ্টিমধুর দৃশ্য তৈরি করে দেয়।মায়া ও মৌ একে অপরের দিকে চেয়ে মিষ্টি হেসে বলে,”এই জীবনটাই তো আমরা চাই।”

দৌড়ে এসে মায়া ও মৌকে এক জায়গায় বসিয়ে দেয় হাসি।মায়া হাসিকে হাত ধরে টেনে নিজেদের মাঝে বসিয়ে দেয়।নাস্তায় থাকা রসমালাই হাসিকে খাইয়ে দেয়।সবাইকে বলে,”বাচ্চাদের এখানে নিয়ে আসুন।আজ আমি তাদের খাইয়ে দিবো।”

আশ্রম কর্মী বাচ্চাদের নিয়ে আসে।ভিন্ন ভিন্ন বাচ্চা হাজির হয়।কিছু কিছু বাচ্চাদের পা নেই।তারা হুইল চেয়ারে করে আসছে।কিছু কিছু প্রতিবন্ধী বাচ্চা তো কিছু বাচ্চা বোবা কালা।আবার হাসির মতো সুস্থ কিছু বাচ্চার জীবন এমনিতেই বাবা মাহীন।মায়া ও মৌ সবাইকে চকলেট দেয়।রাজ ও পিয়াশ মিলে সবাইকে শীতের পোশাক ও কিছু খাতা কলম দেয়।মায়া তার আশ্রমে সরকারি শিক্ষা ব্যাবস্থা করে রেখেছে।এখন রাজ থাকাতে আরো বেশি উপকার হলো।

নাস্তা খেয়ে সবাই আশ্রমের সামনে বড় ফাঁকা মাঠে এসেছে।এখানে খেলাধুলার ব্যাবস্থা করা হয়েছে।বাচ্চারা প্রতিদিন বিকেলে এখানে খেলাধুলা করে।আজ এখানে বাস্কেট বল খেলার ব্যাবস্থা করা আছে।শুধু আজকের জন্য না।এই ব্যাবস্থা এখানে রেডিমেট করাই থাকে।রাজ এটা দেখে বলে,”তোমরা বাস্কেট বল খেলো?”

বাচ্চারা চিল্লিয়ে বলে,”হ্যাঁ।আমরা সব ধরনের শিক্ষা অর্জন করি।”

রাজ বাচ্চাদের উৎসাহিত করতে বলে,”চলো আমরাও খেলি।”

বাচ্চারা উৎসাহ পায়।বলে,”হ্যাঁ হ্যাঁ খেলবো। চলো চলো।”

মায়া না করে বলে,”এটা বাচ্চাদের খেলার জায়গা।কোনো বুড়োদের না।”

রাজ ভ্রু কুচকে বলে,”মায়াবতী কি ভয় পাচ্ছে?”

“এক্সকিউজ মি!আমি না বাঘকেও পোষ মানাই।এটা তো বাস্কেট বল।”

“তাহলে চলো খেলা শুরু করি।”

“চ্যালেঞ্জ করছেন?”

“চ্যালেঞ্জ ধরতেই পারো।পিয়ু বেবী তোমরা সবাই লাইন দিয়ে দেখতে থাকো।আজ আমি আর আমার মায়াবতী বাস্কেট বল খেলবো।”

পিয়াশ বলে ওঠে,”ওকে বস।”

বাচ্চারা মৌ ও পিয়াশ মিলে চারপাশ ঘিরে থাকে।আশ্রম কর্মী বাবুর্চিদের কাছে।রান্নার দিক দেখছে।রাতের খাবার রান্না হচ্ছে ওদিকে।সবার মুখে এখন ফুটছে হুররে।
তারসাথে সবাই মিলে হাততালি দিতে থাকে।
এদের মাঝখানে মায়া ও রাজ সামনা সামনি মুখ করে দাড়িয়ে আছে।মাঝখানে বল রাখা।রাজ তার এক পা দিয়ে বলে কিক দিয়ে ছুটতে থাকে বলের পিছনে।মায়া নিজেও দৌড়াতে থাকে।কিন্তু মায়া তো শাড়ি পরা সে কি আর রাজের মতো তড়িৎ গতিতে যেতে পারবে?কখনোই না।

রাজ বল নিয়ে দ্রুত এগোতে থাকে।মায়া হার মানার পাত্রী না।তাই সেও ছুটছে।অবশেষে মায়া বলের কাছে আসতেই রাজ বল হাতে নিয়ে মাটির দিকে আপ ডাউন করতে থাকে।মায়া তাকিয়ে দেখছে।সুযোগ খুঁজছে কখন বল নেওয়া যায়।মায়া একবার রাজের থেকে বল নেওয়ার চেষ্টা করতেই রাজ বলটি বাস্কেটে ঢুকিয়ে দেয়।তিন রাউন্ডের খেলা হবে।প্রথমবার রাজ জিতে যায়।মৌ বাদে সবাই হাততালি দেয়।বাস্কেট থেকে বল পড়তেই মায়া তাড়াতাড়ি করে বল নিয়ে নেয়।বল নিয়ে পা এদিক ওদিক করছে তারপর বল মাটির দিকে আপ ডাউন করতে থাকে।মায়ার শাড়ির আঁচল ছেড়ে দেওয়া ছিলো।বাম হাতে পুরোটাই আচল।এদিকে মায়ার কাধ অব্দি মাঝারি চুলগুলো ছেড়ে দেওয়া।হেলতে দুলতে থাকার সময় চুলগুলো মায়ার নাকে মুখে এসে পরে।রাজ মাজায় হাত দিয়ে আবার হাতদুটো উপরে করে ঘাড় কাত করে মায়াকে দেখতে থাকে।মায়া বল নিয়ে যেই একটু এগোতে যাবে ওর আচল উড়তে শুরু করে। যার ফলে মায়া হাত উচু করে আচল ঠিক করতে চায় আর সেই সুযোগ কাজে লাগায় রাজ।মায়ার ডান হাত থেকে বল নিয়ে নিজে বাস্কেটে ঢুকিয়ে দেয়।মায়া অগ্নি দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে আছে রাজের দিকে।রাজ চোখ টিপ দিয়ে বলে,”নাও ইউ হেব অন চান্স,মায়াবতী।”

মায়া রেগে মেগে তাকিয়ে থাকে রাজের দিকে।অতঃপর কিছু ভেবে শাড়ির আচল পেচিয়ে কোমড়ে গুঁজে নেয়।চুলগুলো ছোট খোঁপা করে নেয়।নিজেকে প্রস্তুত করে মায়া চোখ ছোট ছোট করে তাকায় রাজের দিকে।মুখে মিষ্টি হাসি ঝুলিয়ে রাখে।রাজ তাকিয়ে থাকে মায়ার এই দৃষ্টিতে।রাজ নিজেও তার ছোপ ছোপ দাড়ির মাঝে শুষ্ক এক হাসি দেয়।মায়া ভেবে নেয় রাজ তার মায়ার জালে ফেসেছে।সুযোগ বুঝে মায়া ঠিক রাজের হাত থেকে বল নিয়ে নেয়।কিন্তু মায়াকে অবাক করে রাজ জোরে চিল্লিয়ে বলে ওঠে,”বাচ্চারা চোখ বন্ধ করো।তোমাদের মন্ত্রী মশাই এখন প্রেম করবে।”

বাচ্চারা একটু চাওয়া চাওয়ি করে নেয়। পিয়াশ ও মৌ বলে দেয়,”চোখে হাত দিয়ে বন্ধ করো।”

সবাই সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে।মায়া বল হাতে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে থাকে রাজের দিকে।এখন আবার কিসের প্রেম?ভাবনার মাঝেই রাজ মায়ার কাছে এসে মায়ার মুখপানে চেয়ে থাকে।তারপর মায়ার ললাটে একটি ভালোবাসার চিহ্ন দেয়।মায়া কেপে ওঠে।রাজ সেই সুযোগে মায়ার থেকে বল নেয়।মায়ার থেকে বল নিয়ে মায়ার কানের কাছে নিজের মুখ নিয়ে এসে বলে,”দুষ্টুমি করতে নেই,মায়াবতী।”

বলেই মায়ার ছোট খোঁপা খুলে চুলগুলো ছেড়ে দেয়।তারপর বলে,”এসব টেকনিক আমাদের ফার্স্ট নাইটের জন্য জমা রেখো।এখানে তো বাস্কেট বল খেলবো।আমার প্রেম ভালোবাসা তো এখানে না।”

রাজের এমন কথা শুনে মায়া আড়চোখে তাকিয়ে রাগ দেখাতে থাকে।রাজ মায়ার থেকে দূরে যেতে যেতে সবাইকে বলে,”বাচ্চারা চোখ খুলো।”

সাথে সাথে সবাই চোখ খুলে আর রাজ বাস্কেটে তৃতীয়বারের মতো বল রেখে দেয়।সবাই হাত তালি দিয়ে হাসতে থাকে।রাজ ও মায়া যেই জিতুক না কেন এরা তো সবাই কাছের।যে কোনো একজন জিতেছে মানেই খুশি।

খেলাধুলা শেষ করতে করতে আশ্রম কর্মী এসে ডাক দিতে থাকে।খাবার রান্না হয়ে গেছে ।গরম গরম শীতকালে খাবার খেলে ভালো লাগবে আর বাচ্চারা ঘুমিয়ে যাবে।সবাই চলে যায়।মায়া ঠায় দাড়িয়ে আছে সেখানে।হুট করে রাজ এসে মায়ার কোমড় থেকে শাড়ির আঁচল ছেড়ে দেয়।মায়ার গায়ে ছোয়া না লাগলেও আচল সরে যাওয়াতে অনুভব করলো তার শাড়িতে রাজ হাত দিয়েছে।এমনিতেই রাগ চেপে বসেছে মায়ার মাথায়।হেরে যাওয়াটা যেনো একটা বড় ব্যর্থতা মায়ার কাছে।সে হারতে চায় না।সে চায় জিততে। আর এই রাজ তাকে হারিয়ে দিচ্ছে।এখন আবার তার গায়ে হাত দিলো।একটু আগে তার কপালে ভালোবাসা দিলো। সহ্য করতে না পেরে মায়া রাজের কলার চেপে নিয়ে গেলো আশ্রমের পিছনে।দেওয়ালের সাথে রাজকে চেপে ধরে…….

চলবে…?

#মায়াবতীর_ইচ্ছা
#পর্ব_১৯
#ইশরাত_জাহান
🦋
“নিজেকে কি ভাবেন আপনি?একটা খেলায় জিতেছেন শুধু।কিন্তু আপনাকে চিরতরে হারিয়ে দিবো এই আমি।”

রাজ মায়ার দুই কাঁধ ধরে মায়াকে উল্টো ঘুরিয়ে দেওয়ালে চেপে ধরে বলে,”হারতেই তো চাই মায়াবতী।তোমার মায়ায় হেরে গেছি আমি।এর থেকে আর কোনো হার আছে কি এই জগতে?”

মায়া তাকিয়ে থাকে রাজের চোখের দিকে।বলে,”এভাবে আমাকে আপনার দিকে আকর্ষিত করতে চাইবেন না।আপনার জারা বেইবী আছে আপনার জীবনে।”

“আমার জারা বেইবী তো আর আমার মায়াবতী না।”

“শাট আপ।আমাকে আপনার ওই হেংলা জারা বেইবী ভাববেন না।”

“পাগল নাকি!আমার জারা বেইবী ওয়ান পিস।সে তো খালি চেষ্টা করতে থাকে আমার সান্নিধ্য পাওয়ার।কিন্তু আমার মায়াবতী হলো মাইনাস ওয়ান পিস।যাকে পুরো পৃথিবী জুড়ে খুঁজলেও পাওয়া যাবে না। যার সান্নিধ্য পেতে ছুটতে থাকে এই মন্ত্রী মশাই।”

“আপনার এই আবেগকে ক্ষত বিক্ষত করে দিবো আমি মন্ত্রী মশাই।”

রাজ মায়ার মুখের উপর তার বুড়ো আংগুল দিয়ে স্লাইট করতে করতে বলে,”আমার ক্ষতে মলম দিয়ে সরিয়ে তুলবে আমার জারা বেইবী। আর তারপর আবারও তোমার কাছে ক্ষত নিতে আসবো আমি।”

বলেই রাজ হো হো করে হেসে দেয়।মায়া রাজের সাথে কথা বাড়াতে চায় না।তাই সেখান থেকে আশ্রমের ভিতরে যেতে নেয়।পিছন থেকে রাজ বলে,”আব্বে এই মায়াবতী।”

মায়া দাড়িয়ে পড়ে।পিছনে তাকিয়ে দেখে ঘাড় কাত করে রাজ তার দিকেই তাকিয়ে আছে।মায়ার তাকানোর পরপরই রাজ তার হাতের দুই আঙ্গুল দিয়ে ঠোটের কাছে স্পর্শ করে মায়াকে একটি ফ্লাইং কিস দেখিয়ে দেয়।মায়া দেখে কিছু না বলে উল্টো ফিরে চলে আসে।রাজ সেখানে দাড়িয়ে বিড়বিড় করে,”এই জীবনে দুই নারী আসলো।একজন পুরো বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়েই নাটক করে আমার জারা বেইবী।আরেকজন দূরত্বের নাটক দেখায় আমার মায়াবতী।”
অবশেষে বাচ্চাদের সাথে খাবার খেয়ে বিদায় নিলো সবাই।

সরদার বাড়িতে,
রাতের খাবার খাওয়া শেষ করে রুমে এসে নাইট ড্রেস পরে ঘুমের প্রিপারেশন নিতে থাকে সোনালী।বয়স বাড়লেও শরীরে তার নেই কোনো বয়সের ছাপ।কিভাবে থাকবে?এই যে এত মেইনটেইন করে চলে।আবার অনেক হাই লেভেলের ড্রিংক করেছে জীবনে। তাই তো রূপ যৌবন এখনও টিকে আছে তার। হ্যাঁ আগের থেকে একটু ডেমেজ এসেছে।মুখের লাবণ্য কমে গেছে।কিন্তু তাকে দেখলে বোঝাই যাবে না যে সে এত বড় দুই সন্তানের মা।মোহন সরদার ঘরে এসে স্ত্রীকে আয়নার সামনে দাড়িয়ে এমন লুকসে দেখে একটু রসিকতা শুরু করেন।সোনালীর কাছে এসে তাকে পিছন থেকে আলিঙ্গন করে বলে,”আমার মিষ্টি বউ।”

সোনালী পিছনে ঘুরে মোহন সরদারকে বিছানায় ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন।মোহন সরদার চিৎ হয়ে শুয়ে পড়েন বিছানায়।সোনালী দূরে আয়নার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে।মোহন সরদারের দিকে তাকিয়ে বলে,”রক্ষিতাদের সাথে প্রেমলীলা শেষ হয়ে গেছে বুঝি?”

মোহন সরদার উঠে বসে বলেন,”আরে কি বলো এসব?আমার জন্য তো তুমি আছো।”

“কি মনে করো তুমি?তোমার কুকর্ম আমি জানি না।তোমার পিএর সাথে যে সম্পর্ক ওগুলো আমি খুব ভালো করেই জানি।”

“জানোই যখন তখন এত বলার কি আছে।তুমিও তো এক সময় আমার পিএ ছিলে এখন ঘরের বউ।ওরা তো আর বউ হতে পারবে না।”

“হ্যাঁ,সেই তোমাকে বিয়ে করে হয়েছি এক পুতুল।কোন দুঃখে যে তোমার মত এক বিবাহিত পুরুষকে বিয়ে করতে গেলাম?”

মোহন সরদার ভ্রু কুচকে বলেন,”কিসের কমতি আছে তোমার?সবকিছুই তো হাতের নাগালে।”

সোনালী এবার ক্ষিপ্ত হয়ে বলে,”কি পেয়েছি আমি?এই রান্নাবান্না কাজ কর্ম।বাচ্চা হওয়ার পর তো খালি ওদেরকে সেবা করলাম।আগে কি সুন্দর বারে যেতাম পার্টি করতাম।ফ্রেন্ডের সাথে চিল মুডে ছিলাম এখন কোথায় সেই ফ্রীডম?”

মোহন সরদার সোনালীর কাছে এসে শান্তনা দিয়ে বলেন,”আচ্ছা শান্ত হও।তুমি চাইলে এখনও পার্টি করতে পারো।”

“এই বাড়িতে সেই সুযোগ আছে নাকি?তোমার বড় ভাই আর তার সন্তান তো রাজ করছে এই রাজত্বে।নাম যেমন দিয়ে রেখেছে রাজ তেমন করছেও কাজ।একটুও শান্তি পাচ্ছি না আমি।”

“এই বাড়িটি শুধু ভাইয়ের একার নয়।এটা আমারও বাসা।তুমি তোমার নিজ স্বাধীনতায় থাকবে।তোমার মন চাইলে তুমি পার্টি করবে না চাইলে না।বাধা দিলে আমি দেখে নিবো।”

“সত্যি বলছো?”

“হ্যাঁ।এবার একটু হাসো।”
সাথে সাথে সোনালী হেসে দিয়ে জড়িয়ে ধরেন মোহন সরদারকে।তার উদ্দেশ্য এই বাড়িতে পার্টি রাখার। আর এই পার্টি করতে পারলে সে বাড়িতে কিছু ধামাকা করতে পারবে। যার মাধ্যমে জারা রাজ এক হতে পারবে।

সকাল বেলা,
মায়া ব্যাগ প্যাক করতে থাকে।একটু পর তাদের ফ্লাইট। মায়া তার সমস্ত জিনিসপত্র গুছিয়ে ব্যাগে ভরছে।ঠিক তখনই রুমে প্রবেশ করে রাজ।রাজ এসে মায়ার রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে হালকা হেলে দাড়িয়ে বলে,”আর ইউ রেডী,মায়াবতী?”

“কিছু সময় লাগবে।প্রায় হয়ে এসেছে।”
বলেই ভালো করে সবকিছু খেয়াল করে মায়া।রাজ মায়ার সামনে এসে বলে,”সবকিছু তো মনোযোগ দিয়ে খেয়াল করছো।আমাকে খেয়াল করে নিবে না?”

“আপনি তো পিছন পিছন এমনিতেই চলে আসবেন।আপনাকে আর কি নিবো?”

“একবার একটু তোমার এই রক্তমাখা হৃদয়ে আমার নাম গেঁথে দেও মায়াবতী।সত্যি বলছি পিছন থেকে না একদম হৃদয়ে লেপ্টে থাকবো।”

“শুরু হয়ে গেছে?”
“শেষ করতে চাও এত তাড়াতাড়ি?”
“শাট আপ অ্যান্ড লেট মী প্যাক।”
“কেন আই হেল্প ইউ?”
“নো নীড।”
“কিন্তু আমি তো সাহায্য করবো।”
“বিরক্ত করছেন কেনো?”
“বিরক্ত হচ্ছো কেনো?”

মায়া এবার ভ্রু কুচকে তাকালো রাজের দিকে।সাথে সাথে রাজ মায়াকে ফ্লাইং কিস দেখিয়ে দিলো।মায়া রাজের কলার চেপে ধরে বিছানায় শুইয়ে দেয়।মায়া বিছানায় কোনায় দাড়িয়ে রাজের কলার চেপে আছে।ভয়ংকর দৃষ্টি দিয়ে মায়া বলে,”আমাকে আপনার জারা পেয়েছেন নাকি।আমি মায়া।এটা ভুলে যাবেন না।”

রাজ ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে দেয়।মায়ার দিকে তাকিয়ে বলে,”জারা বেইবী আর মায়াবতী এই দুজনের মধ্যে যদি কমপেয়ার করা হয় তাহলে বলতে হয় তুমি ফার্স্ট মায়াবতী।আমার জারা বেইবী তো কখনও আমার এতটা কাছে আসেনা যতটা তুমি আসো।”

মায়া পাশে থাকা ছোট টেবিলে তাকায়।সেকশনে একটি ঝুড়িতে কিছু ফল আর ফল কাটা ছুরি আছে। ছুরিটি নিয়ে রাজের গলায় তাক করে বলে,”শুধু একবার চালাবো এই ছুরি আপনার গলার উপর দিয়ে।সাথে সাথে গলার সমস্ত শিরা উপশিরা থেকে টগবক করবে রক্তের বন্যা।”

রাজ তার দুই হাত উচু করে আয়েশে মাথার পিছনে রেখে বলে,”নেও।আমি আরাম করে শুয়ে আছি।আজ আমার ভালোবাসার জন্যই না হয় হবে মায়াবতীর হাতে আমার মৃত্যু।”

মায়া ছুরি ধরেই রাজের দিকে ঝুঁকে আছে।ঠিক তখনই গেট নক করে পিয়াশ বলে,”গাড়ি রেডি আমাদের পৌঁছাতে হবে।আপনারা রেডি তো?”

মায়া উঠে যায় ছুরি নিয়ে।রাজ ঠিক সেভাবেই শুয়ে আছে। পিয়াশের দিকে ঘাড় কাত করে বলে,”আমরাও রেডি।শুধু দশ মিনিট অপেক্ষা করো।আমরা আসছি একটু পর।”

পিয়াশ চলে যায়।মায়া প্যাকিং শেষ করে ল্যাকেজের চেইন লাগাতে থাকে।তারপর নিজেকে দেখে নেয় আয়নায়।রাজ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে হঠাৎ করে মায়ার বাহু ধরে মায়াকে জড়িয়ে ধরে।মায়া নিজেকে ছাড়াবার চেষ্টা করে।কিন্তু সে ব্যার্থ।রাজের এই শক্তপোক্ত শরীরে সে কিছুতেই পেরে উঠবে না রাজের সাথে।রাজ মায়াকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে,”উহুম মায়াবতী।আমি না চাওয়া অব্দি তুমি এই বাঁধন খুলতেই পারবে না।”

মায়া রাজের কথা শুনে।কিন্তু সে তার জেদের সাথে ব্যার্থ শক্তি খাটাতে থাকে।রাজ মায়াকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেই বলে,”দুষ্টুমি করতে নেই,মায়াবতী।আমার অনুভূতিতে বাধা পড়ছে তো!”

মায়া চিল্লিয়ে বলে ওঠে,”ছাড়ুন আমাকে।দম বন্ধ হয়ে আসছে আমার।”

“দুষ্টুমি করবে না তো?শান্তিতে এভাবে থেকে আমার অনুভূতিতে ব্যাঘাত ঘটাবে না তো?আমি কিন্তু তাহলে আমার প্রেমের ডোজ আরো বাড়িয়ে দিবো।”

মায়া থেমে গেলো।এই লু চুর কাছে তাকে হার মানতে হবে।তাছাড়া উপায় নেই।যেভাবে লেগে আছে।

রাজ হালকা হেসে মায়ার মাথায় চুলের উপর দিয়ে আলতো ঠোঁটের পরশ দিয়ে বলে,”বউ বউ অনুভূতি পাচ্ছে, জান।

মায়া অবাক হয়ে যায়।এ কি মাথা খারাপ হয়ে গেলো নাকি।কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া করে না।বাড়াবাড়ি করলে এই পাগলা মন্ত্রী ডোজ বাড়িয়ে দিবে।মায়ার দমে যাওয়া দেখে রাজ বলে,”আর দুই মিনিট।তারপর তো আমরা ঢাকার জন্য রওনা দিবো।সেখানে পদে পদে অপেক্ষা করছে তোমার শত্রু আমার শত্রু।আচ্ছা এত শত্রুর নিঃশেষ হতে হতে আমাদের মিলন কবে হবে?”

মায়া চুপ করে আছে।রাজ তার মতো বকেই যাচ্ছে।মায়ার থেকে উত্তর না পেয়ে রাজ বলে ওঠে,”আমার হিংস্র মায়াবতী হঠাৎ কেনো হলে শান্তবতী?”

“দুই মিনিট শেষ।”

রাজ ছেড়ে দিলো মায়াকে।বলে,”তুমি এতক্ষণ ধরে কাউন্ট করছিলে!আমি ভাবলাম আমার সমস্ত স্পন্দন অনুভব করছিলে।”

মায়া ফিচেল হেসে বলে,”মায়াকে যতটা দুর্বল মনে করেন মায়া ততটা না।”
বলেই ল্যাকেজ নিয়ে বের হতে থাকে মায়া।রাজ তার সোজাই থাকে।মায়া বের হওয়ার সাথে সাথে মায়ার থেকে ল্যাকেজ নিয়ে গাড়িতে ঢুকিয়ে দেয় একজন গার্ড।রাজের ল্যাকেজ আগেই ঢোকানো হয়েছে।

এয়ারপোর্টে কিছু চেকিং করে প্লেনে উঠে বসে মায়া ও রাজ।চট্টগ্রামে আসার সময় যেভাবে করে সবাই সিটে বসেছিলো,আজও সেভাবে করেই সবাই একই সিটে বসে ঢাকা যাচ্ছে।

মৌ মন খারাপ করে আছে।তারা অনেক জায়গায় ঘুরেছে।কিন্তু এই সাতদিন যেনো কম লাগছে তার কাছে। পিয়াশ সামলাতে থাকে মৌকে।মৌ পিয়াশের বুকে মাথা রেখে বলে,”আনন্দ মুহূর্ত কত তাড়াতাড়ি যায় তাই না?”

“চিন্তা করো না বউ!আনন্দ মুহূর্ত আরো আসবে।”

রাজ পিয়াশের দিকে ফিরে বলে,”আর সবার আনন্দের মুহূর্ত আসলেও তোমার আনন্দ মুহূর্ত আসবে না পিয়ু বেবী।”

প্লেনের সবাই অট্টহাসিতে মেতে ওঠে।প্লেনে রাজ ও মায়ার লোক ছাড়া কেউ নেই।রাজ নিজে এই প্লেনের সমস্ত টিকিট নিজের নাম কেটেছিলো।যেখানে বাইরের লোকজন থাকবে না। পিয়াশ বিড়বিড় করে বলে ওঠে,”আমার প্রেমের কাবাব কি হাড্ডি।আমি করবো আমার বউয়ের সাথে প্রেম মাঝখানে খাম্বা হয়ে দাঁড়ায় আমার বস।”

মৌ পিয়াশের কানে কানে বলে,”আরেকটু জোরে বলো।ভাইয়া শুনে তোমার কি করে দেখো।”

“মাথা খারাপ!এ যা লাগামহীন বস।আমি টিকতে পারবো না,বউ।”

সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে ঘরের বাইরে বের হয় হিয়া।চারপাশে ভালোভাবে উকি দেয়।দেখতে থাকে কোথাও রুদ্র আছে কি না।একা একা রুদ্রের সামনে যেতে ভয় পায় সে।তাই এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখছে। নাহ,নেই রুদ্র।হিয়া এবার সাহস নিয়ে পিটপিট পায়ে সিড়ি দিয়ে যেতে লাগলো নিজের ছোট লাইব্রেরির দিকে।ভালোভাবে আবারও চারপাশ পরখ করে লাইব্রেরির ভিতর ঢুকেই দরজায় ছিটকিনি দিয়ে দিলো হিয়া।ছিটকিনি দিয়ে একটু শান্তির নিশ্বাস নিচ্ছে সে।কিন্তু হঠাৎ বন্ধ রুমের ভীতর থেকে ভেসে এলো,”আমার থেকে পালানোর চেষ্টা করছিস, হিয়াপাখি?”

দরজার দিকে মুখ করে ছিলো হিয়া।রুদ্রের এমন কণ্ঠ শুনে যেনো আতকে উঠলো।রুদ্র কোথা থেকে আসলো?কাপা কাপা শরীর নিয়ে পিছনে ঘুরে দেখলো লাইব্রেরির এই ছোট রুমটির মধ্যে থাকা বুকশেলফে হেলান দিয়ে আছে রুদ্র।হিয়া চুপ করে তাকিয়ে আছে রুদ্রের দিকে।রুদ্র লম্বা লম্বা পা ফেলে এগিয়ে আসে হিয়ার দিকে।

চলবে…?