প্রেমহিল্লোল পর্ব-১৭+১৮

0
17

#প্রেমহিল্লোল||১৭||
#তাসনীম_তামান্না

মানুষের একটা জিনিস অল্পই ভালো লাগে, কিন্তু অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো লাগে না। ঠিক তেমনই তুষার কুয়াশার কান্না মাখা মুখশ্রী দেখে প্রেমে পড়ে গেলেও। এই কান্নাটা এখন অসহ্য লাগে! এখন তার কান্না দেখলে ওর মনে কুঠুরিতে অসহনীয় ব্যথা করে। হাসিখুশি মেয়েটা এক দমকা ঝড়ে মুষড়ে পড়েছে। তার এমন কষ্টে তার পাশে থাকার অধিকারটুকু নেই। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা নেই। বাবা-মা’র মৃত্যুতে কোনো সান্ত্বনা কাজে দেয় না। যদিও দেওয়া হয় সেটার কাজে দেয় না। কথায় আছে যার যায় সে-ই বোঝে!

তুষার মাথা ব্যথা করছিলো মায়ের কাছে কফি চেয়ে সোফায় কুশন আরামদায়ক করে শুয়ে নিজের মাথা নিজে টিপছে। তিশা কফি এনে দিয়ে বলল “কফিটা খেয়ে। একটা মাথা ব্যথার ঔষধ খা দেখবি কমে যাবে।”

–হুম!

–যা হচ্ছে। কিছু বুঝতে পারছি না।

–কেনো? আবার কী হলো?

–কুয়াশা নাকি কিসব ভুলভাল পাগলামি করছে। ওর ভাইয়ের সাথেও নাকি সকালে ঝগড়াঝাটি করেছে। ওরা সব বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়ে কীভাবে যে সবটা সামলাবে।

কফিতে চুমুক দিতে গিয়েও কুয়াশার কথা শুনে থেমে গেলো বলল “কী পাগলামি করছে?”

–তুতুল সে-সব ওতো খুলে বলে নি। বলল বিয়ে কোনো বিষয়।

তুষার দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে কফিতে চুমুক দিলো। আর কোনো প্রশ্ন করলো না। জীবনটা দিনকে দিন কঠিন হয়ে পড়েছে। অথচ ও ভেবেছিল কুয়াশাকে পেতে ও কষ্ট করতে হবে না সহজেই হাসিল করতে পারবে। কিন্তু যে মানুষটা তাকেই চাই না তাকে কীভাবে নিজের করবে? জোর করে আর যায় হোক ভালোবাসা, সংসার, জীবনের পথ চলা তো হয় না। তুষার চুপচাপ কফি খেয়ে রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লো ঘুমটা বেশি দরকার। মাথার মধ্যে পোকাগুলো ঝিঁঝি ধরে ডেকেই চলেছে।

তিশা বেগম ছেলের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলল “আমি জানি তুই কুয়াশাকে ভালোবাসিস। কিন্তু কী করার ওদের তো জোর করতে পারি না। আমার মেয়ের সংসার জড়িয়ে আছে। ছেলেটা যা হোক একটু বিয়ের জন্য রাজী হয়েছিল। সেটাও হলো না। এখন চোখের সামনে ভালোবাসার মানুষের বিয়ে হয়ে যেতে দেখবে! ওর কষ্ট হবে নিজেও কোনো মেয়ের সাথে জড়াতে চাইবে না আর চাইলেও মেয়েটার সাথে কী সুখী হবে? আর মেয়েটাই বা কেনো নিজের স্বামীর মনে অন্য মেয়ের বসবাস মেনে নিয়ে সংসার করবে? আমি কী করবো এই ছেলেকে নিয়ে? কী ভাবে বোঝাবো ওকে? মনের ওপরে কারোর জোর চলে না! মা হিসাবে নিজেকে আজ ব্যর্থ মনে হচ্ছে ছেলেমেয়েদের জন্য কিছু করতে পারছি না। হাতপা অদৃশ্য শিকল দিয়ে বাঁধা।”

———————

সেদিনের ঝগড়াঝাটির পর সব শান্ত থমথমে হয়ে গেছে। যেনো আবার কোনো ঝড় আসার পূর্ব মুহূর্ত জানান দিচ্ছে। সেটা কেমন ঝড়? সুখ না-কি দুঃখের! ঝড় আবার সুখের হয় কীভাবে? ঝড় মানেই তো সব লন্ড-ভন্ড, ধ্বংস, ছাড়খাড়, এলোমেলো করে দিয়ে যায়। সেখানে সুখ শব্দটা যায় না। কিন্তু এই ঝড় আসতে বেশি সময় নিলো না। আবার একটা প্রিয় মানুষের মৃত্যু!

মানুষগুলো একটার পর একটা ধাক্কা সহ্য করে উঠতে না উঠতে আবার ধাক্কা! আর কতটা সহ্য করবে তারা? বাড়ির দুই ভাই এক্সিন্ডেটের মৃতুর পর বাড়ির বড় বউয়ের স্ট্রোকে মৃতু, এবার ছোট বউ মুন্নি বেগম ওয়াসরুমে পড়ে গিয়ে মাথা ফেটে পড়ে ছিলো অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ওরা হসপিটালে আনতে দেরি করে ফেলায় বাঁচানো সম্ভব হয় নি। আবার মৃত্যুতে সকলে যেনো এক একটা পাথরে পরিণত হয়েছে। আর কত দুঃখ, কষ্ট, হারানোর বেদনা সহ্য করার আছে? হুট করে কেনো সাজানো পরিবার এলোমেলো হয়ে গেলো? কেনো এমন ঝড় এলো? যে ঝড় মানুষকে কেঁড়ে নেয় সে কেনো আসে বারে বার? কেনো! কেনো!

কয়েকমাসের মধ্যে সবাই আস্তে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তুতুল ও পাখির বাবা-মা’রা কয়েকদিন পরপর এসে ছেলেমেয়েদের সাথে দেখা করে যায়। ওদের বাসায় গিয়ে বেড়িয়ে আসতে বলে কিন্তু ওরা রাজী হয় না। সবাই স্বাভাবিক হলে-ও কুয়াশা যেনো সে-ই একই জায়গায় থেমে আছে। নিজেকে পুরোপুরি ঘরবন্দী করে নিয়েছে নিজের জগতে ও ছাড়া কেউ নেই। বাসার কারোর সাথেও তেমন কথা বলে না সময় কাটায় না। সামনে বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার কথা থাকলেও সেটার ওপরে আর আগ্রহ পাচ্ছে না। মাস্টার্সের ফ্রম তুলবে। কুয়াশার এমন অস্বাভাবিকতা বাসার সবার চোখে পড়েছে। ওরা ও সাথে মিশতে গেলেও কুয়াশা এড়িয়ে যাচ্ছে। মাঝেমাঝে ও একা একা কথা বলে প্রথম প্রথম কেউ বিষয়টা সেভাবে না নিলেও এখন বেশ চোখে লাগছে। ভীতকর পরিস্থিতি ও যে মানসিক রোগী হয়ে যাচ্ছে অল্প থেকে টিটমেন্ট দরকার।

কুশান আর মেঘ ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে বাসায় কী হচ্ছে সেটার দিকে ওদের তেমন খেয়াল নেই। আগে থেকে ব্যবসায় কোনো কাজে বাবা-চাচা ওদের জাড়ায় নি তাই এখন সব সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে। কুশান বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে একটু শুয়েছে পাখি থমথমে মুখে রুমে ডুকে বলল “শুলে কেনো খাবে না?”

–“খেয়েছিলাম পেট ভরা না খেলেও চলবে। তোমরা খেয়ে নাও।”

–“তোমার সাথে কুয়াশার ব্যাপারে ইম্পর্ট্যান্ট কথা আছে।”

–“কী হয়েছে? আবার কী রাজকে বিয়ে করার জন্য…”

–নাহ! কুশু অস্বাভাবিক ব্যবহার করছে। একা একা কথা বলছে। মনে হচ্ছে ও মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। ব্যাপারটা প্রথমে সেভাবে না দেখলেও এখন তার তিব্রতা লক্ষ্য করছি।

কুশান শোয়া থেকে উঠে বসলো। কাজের চাপে বোনের সাথে কথা বলা হয় না। সেদিনেও পর আর কথাই বলা হয় নি। সেভাবে হঠাৎ এমন কথা শুনলে যে কেউ চমকাবে।

–কী বলছ এসব? বাবা-মা’কে হারিয়ে এখন কী বোনকে হারাতে হবে?

–রিলেক্স, দেখো ও ডক্টর দেখানো উচিৎ এভাবে থাকলে আরো অসুস্থ হয়ে যাবে। সঠিক কাউন্সিল নিলে সুস্থ হয়ে উঠবে।

কুশান কিছু বলল না উঠে রুম থেকে বের হয়ে কুয়াশার রুমে গেলো। তার এমন একটা কথা কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না। তার বোন পাগল হয়ে যাচ্ছে? ভাই হিসাবে সে তার বোনকে আগলে রাখতে পারছে না। ওর রুমে গিয়ে দেখলো কুয়াশা বই ঘাটাঘাটি করতে করতে নিজে নিজে কথা বলছে ও চমকে তাকিয়ে রইল। ও চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল কুয়াশার কুশানকে খেয়াল হতেই বলল “শোন ভাইয়া, আমি বিসিএস এক্সাম দিবো না। মাস্টার্সে ভর্তি হবো। আমি আব্বু আম্মুকেও বলেছি। ওরা বলেছে আমার যা ভালো মনে হয় সেটা করতে। তুই কিন্তু আমাকে বাধা দিতে পারবি না।”

বোনের কথায় কুশান দফায় দফায় চমকে উঠলো। নির্বাক চেয়ে রইলো। চোখটা অনেক দিন পর আবার জ্বালা করে উঠলো। এতোদিন কাজের চাপে দুঃখগুলো চাপা পড়ে গেছিলো। কিন্তু বোনের এমন অস্বাভাবিকতায় সবটা আবার জেগে উঠলো। কীভাবে ঠিক করবে? কীভাবে সুস্থ করবে? কুশানের নিজেকে পাগল পাগল লাগলো।

চলবে ইনশাআল্লাহ

#প্রেমহিল্লোল||১৮||
#তাসনীম_তামান্না

হঠাৎ করে আকাশের কালো মেঘের আনাগোনা। ঝড়ো বাতাস বইছে। আজ অনেকদিন পর তিশা বেগম মেয়ের শশুড়বাড়িতে এসেছে। হুট করে কোনো প্লান ছাড়া চলে এসেছে মেয়ের জন্য মনটা ছটফট করছিলো মেয়েও অনেকদিন হলো ও বাড়িতে যায় না। একঘন্টা আগেও জানতো না আজ এখানে আসবে। সন্ধ্যার একটু আগে এসে পৌঁছে দেখলো সদর দরজা হাঁট করে খুলে রাখা। বাড়িতে ঢুকে কাউকে দেখতে পেলো না। তুষার গাড়ি পার্কিং করে এসে মাকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে চিন্তিত হয়ে বলল “কী হয়েছে, মা? এভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেনো?”

–বাসায় কী কেউ নেই নাকি? এসে দেখি দরজা হাঁট করে খুলে রাখা। কাউকে দেখছি না।

তিশা বেগম কথা শেষ করতে পারলো না উপর থেকে চিৎকার চেচামেচি আর ভাংচুরের আওয়াজ আসলো। কণ্ঠটা যে কুয়াশার তা স্পষ্ট বুঝতে পারলো ওরা।

তুষারের বুকটা ধক করে উঠলো। এখানে আসার ইচ্ছে ছিলো না। নিজেকে একটু একটু করে সামলিয়ে উঠছিলো। কিন্তু মায়ের চাপাচাপিতে লাগাম টানা মনটা আবারও অবাধ্য লাগামহীন হয়ে গেলো। একনজর কুয়াশাকে দেখার জন্য মনটা ছটফটিয়ে উঠলো। সেই কবে দেখেছে! মাকে আর না করতে পারলো না চলে এলো মায়ের সাথে। কিন্তু হঠাৎ কী হলো এভাবে চিৎকার চেচামেচি ভাংচুর করছে কেনো? সেসব কথায় মূল ঘটনা কী সেটা বুঝতে পারছে না।

তিশা শান্ত ছেলেকে দেখে ওর মনের ছটফটানি বুঝতে পারলো। বলল “উপরে চল দেখি কী হচ্ছে।”

তুষার ধিমি কণ্ঠে বলল “মা এটা ওদের পারিবারিক ইস্যু হতে পারে। সেখানে আমরা বাইরের লোকজন হয়ে এসবের মধ্যে ঢোকা উচিৎ নয়।”

তিশা বেগমের কাছে ছেলের কথা যৌক্তিক মনে হলো। ওরা গেলেও ওরা অপ্রস্তুত হতে পারে। মেয়েও তো তার শশুড়বাড়ি সম্পর্কে আজকাল তেমন কিছু বলে না। বলার মতো হলে সে হয়তো বলতো। একটু ভেবে বলল “তাহলে কী করবি? চলে যাবি?”

–এসেই যখন পড়েছি দেখা করে যায়। আমরা বসি ওরা আসুক তারপর না-হয় দেখা করে, কথা বলে, বাসায় চলে যাবো।

তিশা বেগম দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে সোফায় বসালো তার পাশে তুষার অশান্ত মনে শান্ত হয়ে বসলো। উপর থেকে আর আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না। ওরা চুপচাপ বসে রইলো। তিশা বেগম ছেলের দিকে তাকিয়ে রইল। তিনি ছেলের মনে কী চলছে সেটাই বোঝার চেষ্টা করছেন।

————–

ঘটনা শুরু মূলত, কুশান আর পাখি কুয়াশাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে সাইক্রিয়েটিসের কাছে কাউন্সিলয়ে নিয়ে গিয়েছিল। কুয়াশা জানত তাকে নিয়ে ওরা শপিংয়ে যাচ্ছে সেখানে গিয়ে বুঝতে পারলো তার সাথে কী হচ্ছে পাবলিক প্লেসে কোনো সিনক্রিয়েট না করে চুপ করে রইল। ডক্টরের একটা প্রশ্নের ও উত্তর দিলো না। প্রাণহীন বস্তুর মতো বসে রইলো। ওকে চুপচাপ দেখে কুশান, পাখি ঘাবড়ে গেলো। ডক্টর কুশানকে আলাদা করে ডেকে কিসব বলল। ফেরার সময় সারাটা রাস্তায় ও কোনো কথা বলে নি। অথচ যাওয়ার সময় বাবা-মাকে নিয়ে কত কথা বলছিলো।

কুয়াশা বাসায় ডুকে চিৎকার চেচামেচি করে বলল “আমি পাগল? আমাকে পাগল মনে হয়? আমাকে এ্যাসাইলামে পাঠাতে চাও? তাই এমন করছো?”

পাখি ওকে শান্ত করার চেষ্টা করে বলল “এসব কী বলছিস কুশু? আমরা তো তেকে ভালোবাসি সোনা তোর ভালোর জন্য…”

কুয়াশা পাগলামো করে বলল “ থাক! থাক! অনেক ভালো করেছ। তোমরা এতোই ভালো চাইলে এ্যাসাইলামে পাঠাতে চাইতে না। বলে দিতে পারতে আমি তোমাদের বোঝা হয়ে গেছি চলে যেতাম। থাকব না তোমাদের সাথে চলে যাবো।”

নিজের মতো কথাগুলো বলে নিজের রুমে চলে গেলো ওর পিছনে সকলে ওকে বোঝাতে চলে গেলো। কুশান নিজেও কষ্ট পাচ্ছে বোনের এমন অবস্থার জন্য নিজেকেই বার বার দায়ী করছে। নিজেকে শক্ত করে নিজেও বোনের পিছনে গেলো।

কুশ, শান আজ-কাল কুয়াশার আশেপাশে আসতে ভয় পাই। আগে কুশু পিপি ভালো ছিলো খেলতো ওদের সাথে এখন আর ওদের সাথে মিশে না। ওরা রুমের এক কোণে দাঁড়িয়ে পিটপিট চোখে তাকিয়ে আছে।

কুশান বোনকে আগলে নিয়ে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো ও কিছুটা শান্ত হলো আদুরে কণ্ঠে বলল “বাবুইপাখিকে খুব ভালোবাসি। সে মাঝেমাঝে কেমন অচেনা আচরণ করছে। তাই তো আমরা ভয় পেয়ে গেছিলাম। শুধু তাকে সুস্থ দেখতে চাই আমরা সকলে।”

ওর কথা শেষ হতে পারলো না। কুয়াশা রাগে ফুঁসে উঠে বলল “তাই বলে আমাকে পাগলের ডক্টরের কাছে নিয়ে যাবে? আমি কী পাগল নাকি? আমি কী খারাপ মেয়ে? বাবা-মা’কে আমি সব বলব তোমরা আমার সাথে এমন করছ করে নাও। বাবা-মাকে বলবো আমি। বলে তোমাদেরকে বকা খাওয়াব। সবসময় আমার সাথেই এমন করো তোমরা”

ও কথাগুলো বলতে বলতে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো। ব্যাগ বের করে গোছাতে লাগলো। ওরা স্থির হয়ে তাকিয়ে রইল। কুয়াশা যে মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে শোকে তাকে সুস্থ করতে এখন কী করা উচিৎ ওরা বুঝতে পারছে না। তুতুল ওকে ব্যাগ গোছাতে বাঁধা দিলে কুয়াশা ঝাড়া মেরে ছাড়িয়ে নিয়ে অযথা রাগ ঝাড়লো। পাখি অধৈর্য্য হয়ে বলল “ সন্ধ্যা হয়ে গেছে এখন কোথায় যাবি? কাল সকালে যাস।”

–আমাকে নিয়ে তোমাদের অতো ভাবতে হবে না। আমি ঠিক আমার ব্যবস্থা করে নিবো। ঘুমের মধ্যে আমাকে পাগলাগারদে দিয়ে আসবে না তার কী গ্যারান্টি?

মেঘ আশ্চর্য হয়ে বলল “তুই আমাদেরকে এমন ভাবিস? এমন করছিস কেনো? আমরা তো তোর পরিবার! রাতে হয়ে যাচ্ছে কোথায় যাবি?”

কুয়াশা কারোর কথা শুনলো না কারোর কথা মানলো না। আজ ওর গায়ে অসুরের শক্তি ভড় করেছে। ব্যাগ নিয়ে নিচে আসলো।

তিশা বেগম আর তুষার ওদের নিচে আসার শব্দ শুনে উঠে দাঁড়ালো। কুয়াশা কোনো দিকে না তাকিয়ে ধুপধাপ পায়ে নিচে চলে এলো ওর পিছনে বাকিরা। মা, ছেলে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। ওদেরকে দেখে কুয়াশা থেমে গেলো। ভাইয়ের বলা সেদিনের কথাটা হঠাৎ জ্বলে উঠলো ব্যাগ ফেলে ছুটে তুষারের সামনে গিয়ে বলল “তুষার! আমাকে বিয়ে করবেন? ”

তুষারসহ উপস্থিত সকলে অবাক হয়ে কথা বলতে ভুলে গেলো। কীসের মধ্যে কী বলছে মেয়েটা। বিয়ের ভুত আবার কোথা থেকে আসলো?

চলবে ইনশাআল্লাহ