#প্রেমহিল্লোল||২৫||
#তাসনীম_তামান্না
দিনের আলো শেষে, রাতের আঁধার নেমে এসেছে। সেকেন্ডে পেরিয়ে মিনিট পেরিয়ে ঘন্টা। রাত যতোই বাড়ছে মনে মনে ততোই ভীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছে কুয়াশা। তখন সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলছে আবার অন্যমনস্ক হয়ে যাচ্ছে। ছোটরা উপরে তুষারের রুমের দরজা বন্ধ করে কিছু একটা করছে। তুষার কোনো কাজে বাইরে গেছে। রাতের খাবার খাওয়ার সময় হয়ে গেছে। একে একে প্রায় সকলে খাওয়া শেষ করলো। তিশা কুয়াশাকে খেতে বসতে বলেছে কিন্তু ওর খেতে ইচ্ছে করছে না বলে তুতুলের রুমে গিয়ে বসে রইলো। তুষার ফিরে এসে শুনলো কুশু খাইনি তাই তিশাকে একপ্লেটে দু’জন খাবার দিতে বলল। তিশা বেগম ছেলেকে মজা করে বলল “বাবাহ, ছেলে দেখি বউ ছাড়া বাঁচতে পারবে না।”
তুষার মাকে জড়িয়ে ধরে বলল “মা’কে ছাড়াও বাঁচতে পারব না।”
–থাক হয়েছে। সর দেখি অনেক কাজ পড়ে আছে। তোর বাবাও যে কবে ফিরবে কাজ নিয়ে পড়ে থাকুক লোকটা জ্বালিয়ে মারলো।
–রাগ করছ কেনো মা বাবারও কী এসব ছেড়ে ওখানে থাকতে খুব ভালো লাগছে? শুধু শুধু রাগ করছো তুমি। বুঝার চেষ্টা করো না রাগ করে ঝগড়া করো।
ছেলের কথা বুঝলেও শেষের কথাটা শুনে রেগে গেলেন বলল “কীহ? কী বললি তুই আমি শুধু ঝগড়াঝাটি করি আর তোর বাপ দুধে ধোঁয়া তুলসীপাতা?”
তুষার মুখ ফোস্কে কী বলেছে বুঝতে পেরে কথা ঘুরিয়ে বলল “আমার ক্ষীদা পেয়েছে মা। খেতে দিবে না বলে কী কথা বাড়াচ্ছ মা?”
–ছিহ ছিহ কী বলছিস তুই? যা ফ্রেশ হয়ে নে আমি খাবার বাড়ছি।
ও দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে ফ্রেশ হয়ে খাবার নিয়ে কুয়াশার কাছে গেলো। ও বাসার সবার সাথে কথা বলে ফ্রেন্ডসদের সাথে চ্যাট করছিলো। তখনই তুষার রুমে ঢুকলো। ওর সেদিকে না তাকিয়ে নিজের মতো ফোন টিপছে ও ভেবেছে তুতুল এসেছে একটু আগে মেঘের সাথে ফোনে কী নিয়ে ঝগড়াঝাটি করে মুখগোমরা করে রেখেছে কারোর সাথে কোনো কথা বলছে না তাই আর তাকাই নি। তুষার গিয়ে ওর পাশে বসে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো। ওর তা-ও হুঁশ ফিরলো না আবার মিটমিট করে হাসছেও। তুষার ঠাশ করে ফোন কেঁড়ে নিলো। কুয়াশা গোল গোল চোখ করে তাকিয়ে পড়লো তেতে উঠে বলল “ফোন! ফোন নিলেন কেনো? একটা ইম্পটেন্ট কথা হচ্ছিল।”
তুষার ভ্রু নাচিয়ে বলল
–সয়ং আমি উপস্থিত থাকতে তোমার আমার থেকেও ইম্পটেন্ট কিছু থাকতে পারে?
ও অক্ষি পলক ঝাপটে তাকিয়ে বলল “ইউ কন হো? আপ এ্যাছে ভাব দেখারেহিহো জো আপ এ্যাছা ও্যাছা ওয়ালা প্রেসিডেন্ট।”
ও হেসে বলল “রাইট, আমি তোমার জীবনের প্রেসিডেন্ট। সো চুপচাপ এখন খাবে ভুলভাল হিন্দি বলবে না।”
–এ্যাঁহ আসছে ওনি আপনার পিছনে তো অনেক মেয়েরা পড়ে আছে যান তাদের কাছে যান।
ও হতাশ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলল “আমার ভুল হয়ে গেছে। আমার আগে-পিছনে ডানে-বামে আমার একমাত্র বউ ছাড়া আর কাউকে দেখতে পাই না কাউকে দেখার কথা ভাবিও না।”
–থাক অনেক নাটক করেছেন। আপনি খেয়ে নিন। আমার খেতে ইচ্ছে করছে না আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।
ও ভ্রু কুঁচকে বলল “আগে খাবে তারপর ঔষধ খাবে তারপর ঘুমাবে। তাই কোনো বাহানা শুনতে চাইছি না।”
ও একলোকমা কুশুকে দিলো ও চিবাতে চিবাতে বলল
–আপনি খেয়েছেন?
–উহুম তোমার সাথেই খাবো।
ওরা দুজনের চুপচাপ খেতে লাগলো। ওদের খাওয়া দাওয়া শেষ হতেই দল বেঁধে মেয়েরা রুমে এসে গেলো। তুষারকে দেখে টিটকারি মেরে এক কাজিনের বউ বলল “কী দেবর জি বউকে ছাড়া থাকতে পারছ না না-কি? একটু সবুর করো তোমার বউকে সুন্দর ভাবে তোমার কাছে উপস্থাপন করে দিয়ে আসবো।”
বলেই সকলে হাসাহাসি করতে লাগলো। তুষার সকলের দিকে তাকিয়ে কুয়াশার দিকে তাকালো ও অবাক হয়ে গোল গোল চোখে তাকিয়ে ছিলো তুষার ওর দিকে তাকিয়েছে বুঝতে পেরে নিজেও ওর দিকে তাকালো দুজনের চোখাচোখি হলো। ও ভয়, লজ্জা, সংকোচে চোখ নামিয়ে নিলো। তুষারকে ঠেলে রুম থেকে বের করে দিয়ে ওরা কুয়াশাকে সাজাতে ব্যস্ত হয়ে গেলো। ও কাউকে বাঁধা দিতে পারলো না। মনে মনে ভীতিগ্রস্ত হয়ে গেলো। ও অনেক দ্বিধাদ্বন্দ নিয়ে বলল “ভাবিপুকে ডাকবেন প্লিজ।”
–কেনো গো আমাদেরকে পছন্দ হয় নি বুঝি? তুতুলকেই লাগবে?
–না না তেমনটা বলি নি। ভাবিপুকে দেখছি না তাই বলছিলাম আর কী
–ভয় লাগছে বুঝি? হয় হয় এমন হয়। এখন ভয় পেয়ে না-ও তখন আর ভয় লাগবে না।
বলে আবারো সকলে হেসে ফেললো। ওর কেনো জানি রাগ লাগছে। জানে এই সময় মেয়েরা ভয় পাই। তাই বলে হাসাহাসি করবে একটু সাহস দিলে খুব ক্ষতি হয়ে যায়? ওরা লাল টুকটুকে রঙের শাড়ি পড়িয়ে দিয়ে হালকা সাজিয়ে বেনি করে দিলো। ওরা সাজানো শেষে তুতুল এসে ওকে দেখে বলল “মা-শা-আল্লাহ কুশুকে এতো মিষ্টি লাগছে ভাইয়া তো পুরো পাগল হয়ে যাবে।”
ও অস্থিরতা নিয়ে তুতুলে একটু সাইডে এনে বলল “ভাবিপু আমার না খুব ভয় লাগছে। আমি আজ তোমার সাথে থাকি। প্লিজ”
–তা বললে কীভাবে হবে? এতো লোকজন কী ভাববে বলো তো! আর তোমাদের বিয়ে হয়ে গেছে একদিন না একদিন তো ভাইয়ার সাথে থাকতেই হবে। তবে আজ নয় কেনো? ভয় পেও না ভাইয়ার সাথে সহজ হও।
ওরা কুয়াশাকে তুষারের রুমে দিয়ে আসলো। রুমে ফুলের গন্ধে ম-ম করছে চারিদিক। কী ফুলের গন্ধ সেটা ও ধরতে পারলো না। কানে কানে অনেক দুষ্টুমি করে অনেক কথাই বলে গেলো যা ওর কানে বা মস্তিষ্কে ডুকাতে পারলো না নার্ভাস নেসে সব গুলিয়ে ফেলছে। তুষার ও তার কাজিনদের কথা কাটাকাটি আওয়াজ আসছে। ওর বুকে হাতুড়ি পেটানোর শব্দ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। ওদের হৈ-হুল্লোড়ের মাঝে তুষার রুমে ডুকে সশব্দে দরজা আঁটকে দিলো। ও শাড়ির আচল খামচে ধরে শক্ত হয়ে বসে রইলো। তুষার ওর অবস্থা দেখে সহজ হওয়ার জন্য বলল “যাও অজু করে এসো নামাজ… ওহ তোমার হাতে ব্যান্ডেজ। তুমি বসো আমি পড়ি তুমি সুস্থ হলে একসাথে পড়বো আবার”
ও একটু সহজ হয়ে মাথা নাড়ালো। তুষার নামাজ শেষ করলো পুরোটা সময় সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত স্নিগ্ধ পুরুষকে দেখতে লাগলো কুয়াশা তার একান্ত পুরুষ সে। তার মধ্যে ক্রমাগত দরজায় বারি পড়তে লাগলো যেনো কেউ দরজা ভেঙে রুমে ঢুকে পড়বে।
–কে এমন করছে?
–দেখছি আমি। বাদরগুলো হলে আজ খবর আছে।
তুষার গেলো দরজা খুলতে।
চলবে ইনশাআল্লাহ
#প্রেমহিল্লোল||২৬||
#তাসনীম_তামান্না
রাত তখন বারোটা রুমে ফুলের সুবাসে ম-ম করছে। স্বামী বুকে অপরিচিত একটা মেয়ে কেঁদে কেটে বুক ভাসাচ্ছে। কুয়াশা শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। দরজা খোলার সাথে সাথে মেয়েটি তুষারের বুকে ঝাঁপিয়ে কাঁদা শুরু করেছে থামাথামির নাম নেই। ও নিজেকে মেয়েটির থেকে ছাড়াতে চাইলেও মেয়েটি শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে। দরজার ওপাশে বাড়ির মানুষ, আত্মীয় স্বজনরা সকলে দাঁড়িয়ে আছে। তুষার বিরক্ত হয়ে বলল “কী হচ্ছে এসব রিমা? ছাড় আমাকে! কী হলো কথা শুনতে পারছিস না?”
রিমা তুষারের বুকের মধ্যে ঢুকে যাবে এমন অবস্থা ও বলল “না না কিছুতেই ছাড়ব না তুমি শুধু আমার আর কারোর নও। তুমি আমাকে ছেড়ে অন্য একটা মেয়েকে কীভাবে বিয়ে করলে? কীভাবে বাসর করতে পারলে? আমার কথা এক বারও মনে পড়লো না? আমার ভালোবাসা এতো তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে?”
তুষার রিমাকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিয়ে রাগান্বিত কণ্ঠে বলল “তোর সাথে আমার এমন কোনো সম্পর্ক নেই যার সূত্র ধরে তুই এ-সব ননসেন্স কথাবার্তা বলতে পারিস! তোকে অনেক বার সাবধান করেছি বার বার এক কথা বলতে ভালো লাগে না।”
রিমা কান্নাকাটি করায় চোখ-মুখ ফুলে আছে। তুষারের কথা শুনে ওর চোখ লোনাপানিতে আবারও টইটম্বুর হয়ে গেলো কান্নারত কণ্ঠে বলল “আমার ভালোবাসা মিথ্যা নয় আমি তোমাকে সত্যি অনেক ভালোবাসি। বিশ্বাস করো। তুমি আমার ভালোবাসাকে অপমান করতে পারো না। তোমাকে না পেলে আমি সত্যি মরে যাবো।”
–তোর এসব কথা ভিত্তিহীন। আমি একজন বিবাহিত পুরুষ আমার স্ত্রী আছে। আর আমি আমার স্ত্রীকে ভালোবাসি।
ও রেগে গেলো বলল
–আমিও দেখতে চাই কে সেই মেয়ে যার জন্য তুমি আমাকে ভালোবাসলে না। সে কী আমার থেকেও সুন্দরী স্মার্ট?
তুষার হেসে বলল
–আমার চোখে আমার স্ত্রী বিশ্বসুন্দরী সে যেমনই হোক না কেনো!
রিমা রাগে ফুঁসফুঁস করছে। তুষার পিছনে দু-কদম এগিয়ে গিয়ে কুয়াশার নরম ব্যান্ডেজ করা হাত আলতো হাতে তুলে নিয়ে বলল “মিট মাই বেটার হাফ। যার সাথে হোল্ড লাইফ স্পেন্ড করবো। কোনো থার্ড পার্সন এ্যালাউ করব না।”
রিমা কুয়াশার আপতমস্তক দেখলো গায়ের রং দুধে-আলতা সাথে লাল টুকটুকে রঙের শাড়ি পড়েছে দেখতে বাঙালি মেয়ে লাগছে। রিমার কাছে মেয়েটাকে আহামরি সুন্দর লাগলো না। তার মনে এই মেয়ের থেকে সে বহুগুণে সুন্দরী। কুয়াশা তখন নির্লিপ্ত চোখে সবটা পরক করে চলছে। তুতুল গিয়ে রিমাকে বলল
–আমার সাথে রুমে চল রিমা। অযথা সিনক্রিয়েট করে কী লাভ পাচ্ছিস?
–আমার ভালোবাসাটা দেখছিস না? ভালোবাসার মানুষের জন্য আমি ওদেশ থেকে ফিরে এসেছি।
–তোর ভালোবাসা দেখে কী করবো? জোর করে আর যায় হোক ভালোবাসা হয় না। তার থেকে বড় কথা ওদের বিয়ে হয়ে গেছে।
–আমি এই বিয়ে মানি না। তুষার আমাকে বিয়ে করবে। এই মেয়ের থেকে আমি বেশি সুন্দরী ওর থেকে হাজার গুনে তুষারকে ভালো রাখবো। বলো তুষার তুমি আমাকে ভালোবাসো। আমাকে বিয়ে করবে বলো।
তুষার কঠোর গলায় বলল “তোর মানা না মানায় কিছু যায় আসে না। আমি আর আমার স্ত্রী কী ভাবছি সেটাই বড় বিশ্বাস। আর আমরা বিয়ে মানি। রিসিভশনে ভাই ভাবির দাওয়াত খেয়ে যাবি কেমন?”
কথাটা বলে তুষার ধরাম করে দরজা লাগিয়ে দিলো। দরজা লাগিয়ে দিলেও রিমা ক্রমাগত দরজা ধাক্কাধাক্কি করতে লাগলো ওরা কেউ-ই দরজা খুললো না। তুষার গিয়ে বিছানায় বসলো। কুয়াশা স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে একই জায়গায় মনের মধ্যে কেমন ভাংচুর হচ্ছে ও-ই ভালো জানে। কোনো মেয়ে স্বামীর বুকে কোনো মেয়েকে সহ্য করতে পারে না। ভালোবাসা কথা শুনে পারে না। কিন্তু কুয়াশা শুনলো। ওর মনে হলো ও দু’জনের মাঝে তৃতীয় ব্যক্তি হয়ে ডুকে পড়েছে। ওর সরে আসা উচিৎ! কী করবে কিছু ভেবে পেলো না।
ধীরে ধীরে দরজা শব্দ কমে গেলো সকলে মিলে রিমাকে এক প্রকার জোর করে নিয়ে গেছে। কুয়াশা তখনো ঠাঁই একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। তুষার ওকে ওভাবে দেখে বলল “দাঁড়িয়ে আছো কেনো?”
কুয়াশা কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাালো না মনে হচ্ছে সে অনুভূতি শূন্য মূর্তি। ওর ভ্রু কুঁচকে গেলো
–কুয়াশা আমি তোমার সাথে কথা বলছি।
ও তা-ও কোনো অভিব্যক্ত করলো না। তুষার উঠে এসে ওর বাহু চেপে নিজের দিকে ফিরিয়ে বলল “কী হয়েছে তোমার? ডাকছি শুনতে পাচ্ছো না। এমন ভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেনো?”
কুয়াশা ঝাড়া মেরে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে ওয়াসরুমে চলে গেলো। তুষার হতভম্ব হয়ে ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইল। কুয়াশার সব রাগ গিয়ে পড়লো দরজার ওপরে ধড়াম করে লাগিয়ে দিলো। চুপচাপ নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে কাঁদলো কতক্ষণ। চোখ মুখে পানি দিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলো রাগের তোপে হাতের ব্যান্ডেজের কথা ভুলে গেছিলো তার দরুন ভিজে গেলো জিদে সেটা খুলে ফেললো রুমে এসে দেখলো তখনো তুষার আগের ন্যায় একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। ও গিয়ে ফুলের পাপড়িগুলো একপাশে সরিয়ে দিয়ে গুটি-শুটি মেরে শুয়ে পড়লো। তুষার ওর হাতে ব্যান্ডেজ না দেখে উতেজিত হয়ে গিয়ে বলল “তোমার হাত! এসব কী কুশু? আমার ওপরে রাগ করে নিজের ক্ষতি করছো কেনো? আমার রাগ আমার ওপরে দেখাও নো প্রবলেম।”
কুয়াশা কোনো উত্তর করলো না তুষার মেডিসিন বক্স নিয়ে ওর হাত ধরলে ও তেতে উঠে বলল “একদম টাচ করবি না আমাকে! তোর প্রেমিকার কাছে যা প্রেমিকা থাকতেও অন্য একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করতে তোর লজ্জা করে না? একদম ছোঁয়ার চেষ্টা করবি না।”
তুষার হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইল তুইতোকারি করছে! ও নিজেকে সামলে নিলো বলল “কুশু, ট্রাই টু আন্ডারস্ট্যান্ড! আমার সাথে রিমার কাজিনের বাইরে আলাদা কোনো রিলেশন নেই।”
–কোনো ঠকবাজ, প্রতারকের কাছে কোনো এক্সামপেল শুনতে চাই না। আমি ঘুমাতে চাই ডোন্ট ডিস্টার্ব মি।
তুষার আর ওকে কিছু বলল না চুপচাপ লাইট অফ করে ড্রিম লাইট জ্বালিয়ে দিলো। ওর ঘুমানোর অপেক্ষা করলো। কিছুক্ষণের মধ্যে ও মেডিসিনের ইফেক্টে ঘুমিয়েও পড়লো। তুষার ধীরে ধীরে ভীরু মনে ওর হাতে ব্যান্ডেজ করে দিলো। পাছে ঘুম ভেঙে না যায় সে ভয়ে। না ওর ঘুম ভাংলো না ব্যান্ডেজ শেষ করে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে ওর মাথায় বিলি কেটে দিতে দিতে ধীমি স্বরে বলল “কুশু, আমাকে বোঝার চেষ্টা করো। আমাদের মধ্যে তৃতীয় কোনো ব্যক্তিকে এতো ইম্পটেন্ট দিও না। আমি তোমাকে ভালোবাসি, এটাই সত্যি!”
তুষার ওর তপ্ত ওষ্ঠ জোড়া কুয়াশার ললাটে চেপে ধরলো। বিড়বিড় করে বলল “তোমাকে সামলানোর মতো ধৈর্য্য আমার হোক!”
ও কুয়াশার পাশে দূরত্ব বজায় রেখে শুলো ভালোবাসার মানুষকে দেখতে দেখতে ঘুমিয়েও পড়লো একটা সময়।
চলবে ইনশাআল্লাহ