#এক_মুঠো_বুনোপ্রেম
পর্ব ৩
#জান্নাতুল_মাওয়া_লিজা
রাত হয়ে যাওয়ায় আর্শির সব বন্ধুরা যার যার গন্তব্যের জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলো।
আর্শির কাছে শুধু রয়ে গেলো এষ আর অপরাজিতা।
অপরাজিতা এষকে অনুরোধ করলো যেনো সে বাসায় গিয়ে বিশ্রাম নেয়, কিন্তু বরং সে ই উলটা অপরাজিতাকে বাড়ি যাওয়ার জন্য জোর দিতে লাগলো,
” ফুপি, প্লিজ তুমি যাও, আমি আর্শির কাছে আছি না? এত ভয় কিসের?”
অপরাজিতার চোখে মুখে দু:শ্চিন্তা। শুধু আর্শি অসুস্থ সেজন্য নয়, বরং মেঝো ভাইয়ের এ ছেলেটার জন্যও তার দুশ্চিন্তা হচ্ছে, ছেলেটা আমেরিকায় তার বাবা মা ছেড়ে এখানে আর্শির জন্য এসে পড়ে রয়েছে। আর্শির প্রতি ওর ভালোবাসা ছেলেটার বাবা মা কোনোকালেই মেনে নেয়নি। কিন্তু ছেলেটা যেনো সব হারাতে রাজী শুধু আর্শিকে নয়। অপরাজিতা দ্বীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজেকে হালকা করার চেষ্ঠা করে বললো,
” আচ্ছা, ঠিক আছে, থেকে যাও! আমিও আছি!”
.
.
অগ্র ও নিহুকে তাদের নিজের নিজের প্রাইভেট কার এসে নিয়ে গেলো আর আরাধ্যার গাড়ি না আসায় পূর্ণ ওকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিলো।
একটা সি এন জি ভাড়া করে নিলো দুজনে, উদ্দ্যেশ্য আরাধ্যা কে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে পূর্ণ চলে যাবে তার পার্ট টাইম জবের অফিসে। তবে আর্শির এ অবস্থার জন্য দুজনেরই মন ভার।
সি এন জি তে দুজনেই আলাপচারিতা শুরু করলো, পূর্ণ আক্ষেপের সাথে বললো,
” মেয়েটাকে তোরা গত ছ বছর যাবত দেখছিস, একবারো কি তোদের এটা মাথায় আসেনি, ও কেনো সবসময় সবকিছু ভুলে যায়? আর তোরই তো বেস্ট ফ্রেন্ড ও! এত অল্প বয়সেই ডিমেনশিয়া একজনের কেনো হবে? আর ওর মা টাও কেমন? ড্যাম কেয়ারলেস! এসেই এমনভাবে কেঁদে দিয়েছে! এত কাঁদবিই যখন তাহলে আগে কেনো ট্রিটমেন্ট করালি না?”
আরাধ্যা পূর্ণ কে একটা ধমক দিয়ে বললো,
” শাট আপ পূর্ণ! কাকে কি বলছিস তুই? মিসেস অপরাজিতা একজন সিঙ্গেল মম হয়েই আর্শিকে সামলেছেন, সাথে এত বড় জব তার। দেশের বাইরেও তিনি বহু বছর ছিলেন, চাকরির সুবাদে, কোনোদিন তাকে মেয়ের অনাদর করতে দেখিনি। সোসাইটিতে তার নামে নানা ধরনের রিউমার ছিলো, যেমন সে নাকি আজীবন বিয়েই করেন নি। তার পরো কিভাবে তার এক কন্যা সন্তান আসলো? আর্শি নাকি তার অবৈধ সন্তান আবার অনেকে বলে আর্শি নাকি তার পালক সন্তান। এত সব রিউমার তিনি কানে না তুলেই আর্শিকে তিনি বড় করেছেন পরম যত্নে। আমি বলি পালক মা ও যদি তিনি হন, তবে তিনি প্রকৃত মায়ের থেকেও বেশি ভালো। মা হিসেবে তিনি টেন আউট অব টেন!”
আরাধ্যার এত বড় লেকচারে পূর্ণ থামলো, বটে, তবে মনে মনে তার বিশাল ক্ষোভ অপরাজিতার প্রতি।
আরাধ্যাদের বাড়ি পুরাতন ঢাকায়। আর পূর্ণের অফিস নয়া পল্টনে। অর্থাৎ আরাধ্যাকে পুরাতন ঢাকায় নামিয়ে দিয়ে পূর্ণকে আবার নয়া পল্টনে উলটো ঘুরে আসতে হবে। এদিকে পূর্ণের নির্দিষ্ট সময় অর্থাৎ রাত নয়টায়ই ডিউটি শুরু করার জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। পূর্ণ বারবার হাতঘড়িতে সময় দেখছে।
বার বার সময় দেখছে বলে আরাধ্য সামান্য বিষন্ন মুখে বললো,
” তুই পারিস ও পূর্ণ! এই জবটা করার কি দরকার ছিলো? একদিকে পড়াশুনা আবার টিউশনি আবার জব! আমার বাবার কোম্পানিতে মাত্র একটা ঘন্টা দিলেই তুই আরো বেশি ইনকাম করতে পারতি!”
পূর্ণ হাসিমুখে বললো,
” তোর বাবার কোম্পানিতে আমি হয়তো আরো বেশি ইনকাম করতাম কিন্তু তোর রেফারেন্সে ওখানে চাকরিতে ঢুকে নিজের যোগ্যতার চেয়ে বেশি ইনকাম করলে আমার মনে হতো কেউ আমাকে করুনা করছে, আর আমাকে করুনা করছে, এমনটা মনে করে সেখানে আমার দ্বারা কাজ করা পসেবল হতো না! গ্র্যাজুয়েশনের আর মাত্র কয়েক মাস বাকি আছে। আমি বরং তারপরই জবে ঢুকি!”
আরাধ্যার কথার বিপরীতে পূর্ণের এতগুলা কথা শুনে আরাধ্যা বড় করে একটা ঢোক গিললো। পূর্ণের প্রতি তার দুর্বলতা সে কিভাবে বুঝাবে? আর পূর্ণই বা কিভাবে বুঝবে? পূর্ণ অর্থনৈতিক ভাবে স্বচ্ছল নয়। বাবার রিটায়ারমেন্টের টাকা দিয়ে টিউশন ফি দিয়ে, সে চাকরি আর টিউশনি করে উলটা বাড়িতে টাকা পাঠায়। বেশি বিপদে পড়লে আরাধ্যাই প্রথম ধার দেনা দিয়ে থাকে। আর আরাধ্যার ছোটো বোন পায়েলিয়া কে পূর্ণ টিউটর হিসেবে পড়ায়! সামান্য একটু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেও ছেলেটা গ্রহন করে না বলে আরাধ্যার খুবই ক্ষোভ হয়? কেন যে এমন ব্যক্তিত্ত্ববান একজনকে ভালোবাসতে গেলো, তাও মনে মনে। ভালো যে বাসে তা মুখে প্রকাশ করার মতো সাহসটাও আরাধ্যা সঞ্চয় করতে পারেনি এতদিনে। তবে বিভিন্নভাবে আরাধ্যা বোঝাবার চেষ্ঠা করে আসছে বহুদিন ধরেই। যেমন প্রায়ই ফুল রেখে দেয় পূর্ণর জন্য। তবে পূর্ণ জিজ্ঞেস করলে বলে এমনিতেই দিয়েছি। আবার মাঝে মাঝেই একটা টি শার্ট বা একটা ক্যাপ কিনে গিফট করে। কিন্তু এর মানেই যে সে পূর্ণ র প্রতি দুর্বল তা বোঝা যায় না। মাঝে মাঝেই সে পূর্ণের পাশে গিয়ে বসে। এবং খুব পাশেই বসে। সময় সময় হাত ধরে বা জড়িয়ে ধরতে যায়। কিন্তু পূর্ণ ওকে হাসতে হাসতেই দূরে সরিয়ে দেয়। ক্লাশের অন্য কোনো মেয়েকে পূর্ণর পাশে ভিড়তে দেখলে আরাধ্যা সেই মেয়েটা ডিরেক্ট থ্রেট দিয়ে দেয়, যেনো আর কোনোদিন পূর্ণর ধারেকাছেও না যায়। কিন্তু সরাসরি যে পূর্ণ কে প্রপোজ করবে তার সে সাহস তিন বছরেও হলো না। পূর্ণ সর্বদা এত ব্যস্ত যে, যদি আরাধ্যা মনের মানুষটির সাথে সামান্য ফোনে কথাও বলতে যায়, ” ব্যস্ত, ব্যস্ত” করে পূর্ণ জলদি ফোন রেখে দেয়।
সি. এনজি জ্যামে পড়ায় পূর্ণ আবারো বারবার ঘড়ি দেখছিলো, ঘড়িতে সময় সাড়ে নয়টা। নয়া পল্টনের আগে একটা মোটামুটি সরু গলি দিয়ে সি এন জি ঢুকে পড়েছে। বৃহস্পতিবার হওয়ায় সরু গলিগুলোও যানবাহনে পরিপূর্ণ। পূর্ণ ইশপিশ করছিলো যেনো জ্যামে নয়, বিরাট এক ফাপড়ে পড়েছে সে। আর আরাধ্যা মনে মনে চাচ্ছে, অন্য কিছু, সে পূর্ণ কে কাছে পেতে এক অবাধ্য বাসনায় লিপ্ত হলো। আবছা আঁধার আবার মেঘলা আকাশ, বৃষ্টির পূর্বে যে ঝড়ো হাওয়া আসে, সেই হাওয়া বইছে। তার ইচ্ছে করছে পূর্ণর হাতটা বেশ করে ধরতে। কিন্তু পূর্ণ যদি ভুল বুঝে? সে পাশাপাশি বসে থাকা পূর্ণর দিকে গাঢ় দৃষ্টিতে চাইলো। উস্কোখুস্কু চুল, গায়ে নীল টি শার্ট আর কালো জিন্স। ফর্সা ছেলেদের কালো নীল রং য়ে এমনিতেই ভালো দেখায়। পূর্ণর গায়ের রং এমন এক ধরনের যাকে বেশি আলোতে লাগে উজ্জ্বল শ্যামলা আর আবছা অন্ধকারে লাগে আলোকিত ফর্সা। অর্থাৎ মুখে এক ধরনের দ্যুতি বিদ্যমান। পূর্নের মুখের পানে চেয়ে আরাধ্যার নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে কষ্ট হলো।
সে পূর্ণকে একপাশ দিয়ে জড়িয়ে ধরলো।
” আরে! করছিস কি, করছিস কি ” বলে পূর্ণ এক ঝটিকা বেগে আরাধ্যা কে ছাড়িয়ে দিলো। পূর্ণ যেনো একশত এক ভাগ অপ্রস্তুত। আর আরাধ্যার এ স্পর্শটাকে সে এমন ভাবে দেখছে যেনো তাকে কোনো অপবিত্র বস্তু এসে ছুঁয়ে দিয়েছে, যেনো আরাধ্যার স্পর্শ পেয়ে সে কলুষিত হয়ে যাবে!
আরাধ্যার চোখ মুখ যেনো বিস্ফোরণের ন্যায় বিচ্ছুরিত হলো। তবে তার ভেতরে যে কি কষ্ট খেলে গেলো তা আর সেটা লুক্কায়িতই রইলো।
” স্যরি, স্যরি, এমনভাবে রিএক্ট করবি জানলে ধরতাম না, ওই যে শুকনো বজ্রপাত হলো না? তাই ভয়ে ধরে ফেলেছিলাম, তবে তুই ভাবটা এমন করলি যেনো আমি ধরলেই তোর শরীর ক্ষয়ে পড়বে, ইট হার্ট মি ডিপলি!”
বলে আরাধ্যা মাথা নত করলো বিষন্নতায়।
পূর্ণ কিছু উত্তর করলো না।
একরাশ অশ্রু এসে আরাধ্যার চোখের রেটিনার কাছাকাছি উঁকিঝুঁকি মারতে লাগলো, যেনো এখনি তা ঝড়ে পড়বে।
আরাধ্যা নিজেকে সামলে নিলো।
.
.
” আ’ম রিয়েলি স্যরি মিসেস অপরাজিতা, আমি এ কাজ করতে পারবো না, ডক্টরদের কিছু ব্যসিক রুলস থাকে, আমাকে সে মোতাবেক ই চলতে হবে!”
ডক্টর বসাক অপরাজিতাকে দৃঢ় বাক্যে বাক্যটা বললো।
অপরাজিতা গম্ভীর স্বরে বললো,
” কেনো নয় ডক্টর? আমি জানি আর্শি তার সাথে ঘটে যাওয়া অতীতের স্মৃতিগুলো মনে করে ফেললে দু:খে পাগল হয়ে যাবে, আমি চাইনা আমার মেয়ে এত কষ্টের স্বীকার হোক! আমি চাই ও সবকিছু ভুলে নতুন করে বাঁচুক, আমি ওকে সুখী দেখতে চাই, আমি ওর হাসিমুখ চাই”
অপরাজিতার এহেন কথায় ডক্টর বসাক ম্লানমুখে বোঝাতে শুরু করলেন,
” মিসেস অপরাজিতা, হিউমেন ব্রেইন হচ্ছে এই পৃথিবীর সব সৃষ্টির চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা, হিউম্যান ব্রেইন এত জটিল বলেই মানুষ পৃথিবীর সবচাইতে বুদ্ধিমান প্রাণি। আমার ঔষধেও যেখানে কাজ হচ্ছে না, মানে আমি মেডিসিন দিচ্ছি, তার পরো স্বপ্নের মাধ্যমেই ও ওর ছোটোবেলার এক বা একাধিক স্মৃতি মনে করে ফেলছে, এখন আমি সত্যিই অপারগ, আমি আর কিচ্ছু করতে পারবো না। এট ফার্স্ট মাত্র দশ বছর বয়সে আপনি যখন ওকে আমার কাছে আনেন, তখন আমার লক্ষ্য ছিলো ওকে এট এনি হাউ ট্রমা থেকে বের করা, কিন্তু এখন দেখছি ও সব ভুলেও অনেক কিছু স্মরণ করে ফেলছে, এখন আমি রিয়েলি দু:খিত আমি কিছু করতে পারবো না। তবে এখন জ্ঞান ফেরার পর থেকে আপনার কাজ হলো ও যেনো কোনো ভাবেই এক্সাইটেড না হয় আর তাকে তার পছন্দসই কাজ করতে দিন, কোনো প্রেসার নয়, কোনো জোর নয়। তাহলেই সব মোটামুটি ঠিক থাকবে, বাদবাকি ডিপেন্ড অন অলমাইটি!”
অপরাজিতা বড় এক দ্বীর্ঘশ্বাস ফেলে ডক্টর বসাকের রুম ত্যাগ করলো।
.
.
পরদিন খুব ভোরে আর্শির জ্ঞান ফিরলো। অপরাজিতা সেখানেই সোফায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলো। কিন্তু এষ সারারাতই জাগনা। সারা রাত সে শুধু আর্শিকেই দেখেছে, আর আর্শিকে জড়িয়ে সব স্মৃতি রোমন্থন করেছে। আর্শির সাথে ওর ছোটোবেলায় তেমন জমতোনা, অন্যান্য কাজিনদের আসরে আর্শি ছিলো ভীষনই চুপচাপ। একা একা সে শুধু তার মায়ের পাশে বসেই থাকতো, অথবা ব্যালকনিতে বসে একা একা পুতুল দিয়ে খেলতো। অন্যান্য রা হয়তো দৌড়ঝাপ বা লাফালাফি করতো। অপরাজিতারা ছিলো দুই ভাই আর এক বোন। বড় ভাই কায়েস শিকদার, তার তিন মেয়ে পৃথা, প্রিয় আর প্রিসিলা। ছোটো ভাই রায়েস শিকদার; তার ছিলো, দুই ছেলে আর এক মেয়ে। দুই ছেলে যথা এষ ও নীষ আর এক মেয়ে কায়া। আর ছোটো বোন তথা অপরাজিতার শুধুমাত্র এক মেয়ে আর্শি। দুই ভাই আর এক বোন গোটা পরিবার সহ নিজেদের বনানীর বাড়িতেই থাকতো। কারো সাথেই আর্শির বনিবনা ছিলো না, সে শুধু একা একাই বসে থাকতো। এই তিন ভাই বোনের সর্বমোট সাত জন বাচ্চা সবাই প্রায় সমবয়সীই ছিলো। সবারই এক দুই বা তিন বছরের ব্যবধান। সবাই একে অপরকে তুই তোকারি করেই ডাকতো। আর্শির সাথে এষের মাত্র দুই বছরের ব্যাবধান, তবে আর্শিই বেশি লম্বা ছিলো এষের চেয়ে। এষ ছোটোবেলায় জানতো আর্শি ওর চেয়ে বয়সে বড়। আর্শিকে একদিন জোর করেই অপরাজিতা খেলতে পাঠায় কাজিনদের দলে। একা একা থাকতে থাকতে তার অসুস্থ মেয়ে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছিলো যে! আর সেদিনই খেলতে খেলতে জোড় ঠিক করার সময় এষের জোড়া পড়ে যায় আর্শি। আর্শিকে এষ কখনোই তেমন কাছে পায়নি সেদিন যেমনটা পেয়েছিলো। গোল্লাছুট খেলায় একই দলে হওয়ায় এষ প্রথমবার আর্শির হাত স্পর্শ করার সুযোগ পায়। অন্যান্য বাচ্চাদের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা আর্শির সাথে খেলতেই হঠাৎ এষ অনুভব করলো আর্শির হাতগুলো কেমন মখমলের ন্যায় নরম। কিশোর এষের মনে প্রশ্ন মানুষের হাত কি এতই নরম হতে পারে! এষের সবচাইতে পছন্দের প্রাণি ছিলো বেড়ালের বাচ্চা। আর মেয়েটার অর্থাৎ আর্শির চোখগুলো কেমন ছোটো বেড়ালের বাচ্চার ন্যায় গোল গোল ছোটো মার্বেলের ন্যায়। যা দেখে এষের এতই ভালো লেগে যায় যা ভাবনার অতীত! আর আর্শির সেই বোঁচা নাকটা দেখছে নাতো যেনো সে কোনো ছোটো বেড়ালের নাক দেখছে। এভাবেই আর্শির প্রতি এষের প্রথম অনুরাগ সৃষ্টি, যা যৌবনে এসে এক বুনো ভালোবাসায় রুপ নেয়। বুনো প্রাণি যেমন কোনো বাঁধ মানে না, মানে না কোনো নিয়ম; আর্শির প্রতি এষের ভালোবাসাও মানে না কোনো বাঁধ আর মানেনা কোনো নিয়ম! যে ভালোবাসার জোরে এষ সবকিছু যেমন ধবংসও করতে পারে তেমন সবকিছু সৃষ্টিও করতে পারে।
আর্শি চোখ মেলেছে দেখে এষ চুপিচুপি এসে আর্শির পাশে বসে। আর্শি একটা মৃদু হাসি হেসে উঠে বসে এষকে হাত ধরে কাছে টেনে পাশে বসায়। এষের নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে কষ্ট হয়। আর্শিকে তীব্রতার সাথে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়!
(চলবে)