#প্রাণপ্রিয়❤️ [পর্ব-০৩]
~আফিয়া আফরিন
আহির ক্যাম্পাসের সামনে অনেকক্ষণ যাবৎ অনিতার জন্য অপেক্ষা করছিল। সাড়ে দশটার সময় এখানে তার উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল, অথচ এখন ঘড়িতে প্রায় সাড়ে এগারোটা। আহির অবশ্য এসবে অভ্যস্ত। অনেকটা সারাদিন অপেক্ষা করালেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ সে বরাবরই এই রকম। একবার তো দেখা করবে বলে সন্ধ্যায় এসেছিল। আহির নিজেও কম যায় না, পাঁচটা ঘন্টা সে ওখানেই ঠাঁয় দাঁড়িয়েছিল। তারপর অনিতা এসেছে, অনেকবার সরি বলেছে, কানে ধরেছে। কিন্তু আহির বরাবর নির্লিপ্ত। তার এক কথা, ‘ঠিক আছে ঠিক আছে, কোনো ব্যাপার না। এইবার দেরি করে এসেছে, পরে না হয় তাড়াতাড়ি আসবে।’
আহিরের এই গুণটাই ভালো লাগে। সে সহজে রেগে যায় না, কথা কাটাকাটি করে না, অযথা কখনো তর্ক করে না। সব পরিস্থিতি ধৈর্য ধরে মাথা ঠান্ডা রেখে সামলায়। অনিতার আবার নেই। প্রতি সেকেন্ডে সেকেন্ডে তার মেজাজ গরম হয়ে যায়।
রাগে গজগজ করতে করতেই ক্যাম্পাসে এসে উপস্থিত হলো। আহিরকে দেখতে পেয়েও এড়িয়ে গেল। সোজা হেঁটে ক্যান্টিনে গিয়ে একটা চেয়ার দখল করে নিল। আহিরও পিছু পিছু গিয়ে তার পাশে বসল। জিজ্ঞেস করল, ‘মুড অফ? কি হয়েছে?’
অনিতা তেড়ছা কণ্ঠে বলল, ‘তুমি কি চাও আমার কিছু হোক?’
‘একদম না।’
‘তাহলে আজ মুখ ভার কেন?’
অনিতা মুখ বেঁকিয়ে উত্তর দিল, ‘মোটা হয়ে গেছি তাই আমার মুখ ভার।’
আহির হেসে অপেক্ষা করল অনিতার মেজাজ ঠিক হওয়ার। কিন্তু সেসময় অনিতার মাথায় একটা দুষ্ট বুদ্ধি খেলে গেল। সে ফাজলামির ছলে বলল, ‘বাবা বাসা থেকে আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে।’
আহির আর চোখে অনিতার দিকে তাকিয়ে ছিল। তার চোখে দৃষ্টিতে রাগান্বিতভাবে স্পষ্ট। ওর কথাটা কানে যাওয়া মাত্র তীক্ষ্ণকণ্ঠে বলল, ‘তো তুমি কি এখন বিয়ে করে ফেলতে চাচ্ছো?’
‘আমাকে বিয়ে করে ফেলা উচিত নয়?’ অনিতা প্রশ্নের উপর প্রশ্ন করল পানসে গলায়।
আহির চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াল। ওখান থেকে প্রস্থান করার আগে আগুন গরম চোখে তাকাল অনিতার দিকে। বলল, ‘ঠিক আছে, করো।’
তারপর সে চলে গেল। অনিতা জিভ কাটল। ইশশশ, রাগিয়ে দিয়েছে। সে জানে, অন্য যেকোনো ব্যাপার চুলায় যাক কিন্তু আহির তার ব্যাপারে ভীষণ সিরিয়াস। সত্য তো দূরে থাক, সে সামান্য ফাজলামিও মেনে নিতে পারে না। অনিতা উঠল। আহিরকে ফোন দিল। কিন্তু সে রিসিভ করল না। ক্যান্টিন থেকে বের হতেই ওর বান্ধবী চৈত্রিকার সাথে দেখা হয়ে গেল। তাকে উদ্দেশ্য করে জিজ্ঞেস করল, ‘আহিরকে দেখেছিস কোথাও?’
‘ক্লাসে যেতে দেখলাম সম্ভবত। আর শোন অনি, আমাদের ইনকোর্স পরীক্ষার ডেট কিন্তু দিয়ে দিয়েছে।’
অনিতা চৈত্রিকার কথাটা শুনল কি শুনল না কে জানে! সে দপাদপ সিঁড়ি বেয়ে চারতলায় উঠে পড়ল। ওইতো, করিডোরে’ই আহিরকে দেখা যাচ্ছে। বন্ধুদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। গায়ে ধূসর রঙের হাওয়াই শার্ট। কালো প্যান্টের পকেটে দু’হাত গুঁজে বেশ আয়েশি ভঙ্গিতে দাঁড়িয়েছে। রোদ এসে পড়ায় তাম্রবর্ণ চেহারা ফর্সা রং ধারণ করেছে। অনিতা একটা পিলারের সাথে হেলান দিয়ে একদৃষ্টিতে দেখছিল তাকে। হঠাৎ’ই নিজেকে নিজে ধমক মেরে বলল, ‘ছিঃ অনি, এভাবে নির্লজ্জের মত ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছিস কেন? নজর লাগবে না?’
মন এই কথা বললেও অনিতা বলছে আরেক কথা। তার ভাষ্যমতে, ‘আল্লাহ! এই ছেলেটা এত জোশ কেন? একদম পাগল করে দিবে আমাকে।’
নাহ, লুকোচুরি ভালো লাগছে না। অনিতা এগিয়ে গেল। আহির তাকে দেখল বটে কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাল না। উল্টো, তাকে এড়িয়ে ক্লাসরুমে ঢুকে গেল। অনিতার এই অপমান হজম হলো না। ফের রাগে গজগজ করতে করতে নিচে নেমে এলো। এত নিষ্ঠুর ভাবে অপমান? ঠিক আছে, সেও দেখে নিবে।
অনিতা আহিরের জন্য কলেজ গেটে অনেকক্ষণ যাবৎ ওয়েট করছিল। আহিরকে দেখতে পেয়েই পেছন থেকে শার্টের কলার টেনে ধরল। আহির পেছন ফিরে তাকিয়ে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘ওমা! এখনো বিয়ে করতে যাও নাই?’
‘আহির, আমার সাথে কিন্তু ফাজলামি করো না বলে দিলাম।’ অনিতা তার শার্ট ছেড়ে দিল।
আহির বলল, ‘আমি কোথায় ফাজলামি করছি? তুমি না বললে তখন…..’
কথায় শুধু কথাই বাড়বে। এই মুহূর্তে অনিতার তর্কে জড়ানোর ইচ্ছা হলো না। তাই সে সহজ ভঙ্গিতে বলল, ‘বাবা তোমার সাথে দেখা করতে চেয়েছেন। কবে আমাদের বাড়ি যাচ্ছ সেটা বলো?’
আহির’ও আচমকা হেসে উঠল। বলল, ‘তোমার ফুপি ম্যানেজ করে দিয়েছেন তাই না?’
অনিতা প্রফুল্ল ভঙ্গিতে মাথা নাড়ল। অন্ধকার কেটে আলো ঝলমল করার মত মুহূর্ত নেমে এলো জীবনে। এমন মুহূর্তে কোন পিছুটান নেই, হাঁকডাক নেই, বাঁধা বিপত্তি নেই—শুধু রয়েছে একজনের প্রতি আরেকজনের অসীম ভালোবাসা।
.
অনিতা রাতে জেগে রইল। দেখতে চাইল, সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আজও হয় কিনা? কিন্তু আজ কিছু হলো না, বরং ফুপি তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ল এবং ঘুমিয়েও গেল। এটার অপেক্ষাতেই ছিল সে। অনু ঘুমানোর অনেকক্ষণ বাদে উঠে দাঁড়াল। ফোনের আলো জ্বালিয়ে টেবিলের উপর ডায়েরীটা খুঁজল কিন্তু পেল না। কোথায় রেখেছে কে জানে? হতাশ হতে হলো তাকে।
ঘুমানোর উদ্দেশ্য বিছানায় আসতেই ফুপির বালিশের দিকে চোখ পড়ল। ডায়েরীটা ওখানেই রাখা। সে সাবধানে হাত বাড়িয়ে জিনিসটা হস্তক্ষেপ করল। তারপর গভীর শ্বাস ফেলে পৃষ্ঠা উল্টাল। পড়তে আরম্ভ করল,
‘প্রিয় মানুষের দেখা পাওয়া আর আকাশের চাঁদের দেখা পাওয়া বোধ হয় একই অনুভূতি তৈরি করে। কী যে ভালো লাগছে! দু’চোখ প্রতিদিন যারে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়ায়, মন প্রতিনিয়ত যার জন্য দিশেহারা—তার দেখা পেয়েছি। প্রিয় সম্বোধন করলাম, কিন্তু সে আমার ঠিক কতটা প্রিয় আমি জানিনা। তবে তাকে দেখতে ভালো লাগে, বুকের ভেতরটা প্রশান্তিতে ছেয়ে যায়। মন কেমন করে সেই অনুভূতি আমি লিখে প্রকাশ করতে পারব না।’
১০ ফেব্রুয়ারি, ২০০০.
‘আজ ভাইয়া এসেছিল বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে। কিন্তু আমি আমার ভালো লাগার মানুষটাকে ছেড়ে যাব কি করে? তাকে সেদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম, এতদিন কোথায় ছিলেন? সে উত্তরে বলেছিল, বাড়ি গিয়েছিলাম। চিন্তামুক্ত হলাম আমি। বলতে ইচ্ছে করছিল, একবার আমায় জানিয়ে গেলে কি এমন ক্ষতি হতো? কিন্তু এই কথাটা বলতাম কোন মুখে বা কোন অধিকারে?’
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০০০.
‘অবশেষে আমার মামার বাড়ি থাকার দিন ফুরিয়ে গেল…. ফিরতে হলেও নিজ আবাসস্থলে। অনেকদিন পর নিজের ঘর, নিজের আপন মানুষগুলোর ঘ্রাণ পেলাম।’
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০০০.
‘সেইবার বাবার কাছে খুব বায়না ধরলাম, আমাকে রাজশাহীতে কোন কলেজে ভর্তি করিয়ে দিতে। আমি ওখানে মামাবাড়িতে থেকে পড়াশোনা করব নয়তো হোস্টেলে। বাবা আমাকে একা ছাড়তে চাইলেন না। ভরসা পেলেন না। আমিও না খেয়ে বায়না শুরু করলাম। অবশেষে বাবা মেনে নিলেন। এডমিশনের জন্য ভর্তি করিয়ে দিলেন। রাজশাহী থেকে চলে আসার কষ্ট কিছুটা হলেও কমল!’
০১ মার্চ, ২০০০.
‘আগামীকাল আবার যাচ্ছি রাজশাহী। ভালোলাগার শহর, ভালোলাগার মানুষের শহর। মামা একটা কাজে ঢাকায় এসেছেন। আগামীকাল ফিরে যাবেন। মাকে বলেছি, স্নেহা আমাকে খুব করে যেতে বলেছে। আমাকে যেতেই হবে। পড়াশোনা আপাতত চুলোয় যাক।’
১০ মার্চ, ২০০০.
‘এক সপ্তাহের জন্য এসেছিলাম। প্রথম দিনেই সেই মানুষটার দেখা পেয়েছি। শিকারি যেমন শিকার ধরার জন্য সব সময় মুখিয়ে থাকে, ঠিক সেইভাবে ওকে একনজর দেখার জন্য আমি তৃষ্ণার্ত থাকতাম। দিনের দেখা দিনেই পেয়ে যেতাম। লুকিয়ে চুরিয়ে দেখতাম। আমার সাথে চোখাচোখি হলে সে একটা মুচকি হাসি উপহার দিত। এতো সুন্দর সে হাসি! আচমকা উপরওয়ালার কাছে প্রার্থনা করে বসলাম, ওই সুন্দর হাসির মানুষটা কি কোন ভাবে আমার হতে পারে না?’
১৫ মার্চ, ২০০০.
‘এক সপ্তাহের দিনগুলো অতি দ্রুত Ok গেল। শেষ দিন চলে যাওয়ার সময় ওর দেখা পাই নাই। নিজের মনকে এই ভেবে সান্ত্বনা দিলাম, আমার তো আবার ফিরতে হবে। এখনকার না দেখাটা তখন নাহয় পুষিয়ে নিব।’
১৮ মার্চ, ২০০০.
পরের পৃষ্ঠা উল্টাতে গেলেই অনিতার ফোন ভাইব্রেট করে। দ্রুত ফোন হাতে নিয়ে দেখল আহির ফোন করেছে। অনিতা ডায়েরীটা বন্ধ করে জায়গায় রেখে দিল। আমার ফোন নিয়ে ঘরের সাথে লাগোয়া বারান্দায় গিয়ে বসল। দ্বিতীয়বারে আহিরের ফোন রিসিভ করল। ফিসফিস করে কিছুক্ষণ কথা বলল। তার কণ্ঠে তাড়া ছিল। আহিরকে ঘুমানোর কথা বলে দ্রুত ফোন রাখল। ঘড়িতে সময় দেখে নিল, তিনটা বাজে। ভোর হতে বেশি দেরি নেই, তার আগেই ফুপি উঠে পড়বে। অনিতা বিছানায় বসে সাবধানে বের ডায়েরীটা তুলে নিল।
পরের কিছু পৃষ্ঠায় কোনো লেখা নেই কয়েকটা লাভ ইমোজি। পৃষ্ঠার একদম নিচের দিকে চোখ পড়তেই সেখানে লেখা দেখতে পেল, ‘প্রেমে পড়ে গেছি!’
দিনক্ষণ, তারিখ কিচ্ছু লেখা নেই। অনিতা ভুরু কুঁচকাল। কার প্রেমে পড়ল? সেই ভালো লাগার মানুষটার? নাম কী? এখন পর্যন্ত নামটা কোথাও চোখে পড়ল না।
সে পরের পৃষ্ঠা থেকে পড়তে শুরু করল—
‘সময় খুব দ্রুত যাচ্ছে। আমার পরীক্ষার সময়’ও ঘনিয়ে এসেছে। আমি তো তাই চাই। এই মুহূর্তে আমায় কেউ যদি জিজ্ঞেস করে, তোমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য কী? পাগল আমি হয়ত বলেই ফেলব, আমার শান্তি যেখানে আমি সেই মানুষটাকে পেতে চাই।’
২৪ এপ্রিল, ২০০০.
অনিতা আলতো হাতে ডায়েরীর পাতায় হাত বুলিয়ে দিল। কত যত্ন করেই না প্রতিটি শব্দের বুনন! কত অলিখিত স্বপ্ন!
যে নিজে যখন আহিরের প্রেমে পড়েছিল, ঠিক একইরকম অনুভূতিতে আচ্ছন্ন হয়েছিল। কিন্তু মন ব্যাতীত অন্য কোথাও সেই অনুভূতি লিপিবদ্ধ করে নাই, সময়’ই পায় নাই।
যাইহোক, আবার ডায়েরীর পাতায় মনোযোগ দিল—
‘রাজশাহী শহরের নামে প্রশংসা শুনেছি অনেক… অসংখ্য। কিন্তু আমার খুব একটা ইন্টারেস্ট ছিল না কোনোদিন। অবশ্য পড়াশোনা ছাড়া আর কোন কিছুতেই আমার মন ছিল না। আজ ভাইয়া সেই সম্পর্কে কিছু বলছিল, বুকের মাঝে ছলাৎ ছলাৎ করে উঠল। কেন জানিনা খুব আপন লাগে!’
৩০ এপ্রিল, ২০০০.
‘এক সপ্তাহ বাদে এডমিশন পরীক্ষা। প্রস্তুতি যথেষ্ট ভালো কিন্তু চিন্তা হচ্ছে। মা অবশ্যই মন থেকে চায় না, আমি পরীক্ষায় টিকে যাই। শুধু বলে, তোকে তো আমি একই সময় বিয়েই দিয়ে দিব। এখনি আমার থেকে আলাদা হয়ে যাবি?
আমি মাকে কী করে সবটা বোঝাই?’
০২ মে, ২০০০.
‘আজ আবার এসেছি রাজশাহী। আগামীকাল আমার পরীক্ষা। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, এখানে আসার পথেই তার দেখা পেয়েছি।’
০৫ মে, ২০০০.
‘পরীক্ষা শেষ, মোটামুটি ভালোই হয়েছে। এক্ষুনি আমি ঢাকায় ফিরে যাচ্ছি না। কিছুদিন থাকব এখানে।’
০৬ মে, ২০০০.
‘আজ একটা লজ্জাজনক ঘটনা ঘটেছে। আমি লুকিয়ে চুরিয়ে সবসময় দেখি তাকে। অভ্যাসে পরিণত হয়েছে আর কী! দেখতে দেখতে প্রায় তার সাথে চোখাচোখি হতো, আমি চোখ নামিয়ে সরে আসতাম। আজ আর পারলাম না, ধরা পড়ে গেলাম। সে আমায় জিজ্ঞেস করছে; আচ্ছা, তোমার কি সারাদিন কোনো কাজকর্ম নেই? সারাদিন লুকিয়ে লুকিয়ে আমাকে দেখো কেনো?
আমি লজ্জায় লাল, নীল, বেগুনি হয়ে কুঁকড়ে গেলাম। কী বলব তাকে? ছিঃ ছিঃ! মানসম্মান সব শেষ। একরাশ জড়তা আমায় আঁকড়ে ধরেছে। ওর চোখের দিকে তাকাতে পারলাম না। ও আমার দিকে অনেকক্ষণ উত্তরের অপেক্ষায় চেয়েছিল, বুঝতে পারলাম। শেষমেষ আমায় কড়া গলায় একটা ধমক মেরে বলল, বাড়ি যাও।
আমি সুড়সুড় করে চলে এসেছিলাম ঠিকই, কিন্তু মনটা এত খারাপ হয়েছিল যা বলার মত নয়। এইভাবে বকবে আমায়? শুধু তো দেখছিলাম’ই, তাকে তো চুরি করে নিয়ে যাইনি।’
১২ মে, ২০০০.
‘গেল তো আমার জীবনের সবচেয়ে লজ্জাজনক ঘটনাটা। তারপর এলো, সবচেয়ে আশ্চর্যজনক একট ঘটনা। মন খারাপ করে, অভিমান করে ভেবেছিলাম বাড়ি ফিরে যাব। মামি যেতে দিচ্ছিলেন না। বলছিলেন, আর কিছুদিন থেকে যাও। তার কথামত রয়ে গেছি। তাদের সাথে আমার কখনোই খারাপ সময় কাটে না। বিকালে স্নেহাকে খুঁজতে নিচে নামলাম। হঠাৎ পথ আঁকড়ে দাঁড়াল সে। আমি মাথা নিচু করে পাশ কাটিয়েই চলে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ পেছন থেকে তার কণ্ঠস্বর আমার পথরোধ করতে বাধ্য করল। সে আমার সমস্ত সত্ত্বা কাঁপিয়ে বলে উঠল, ভালোবাসো আমাকে?’
২৩ মে, ২০০০.
.
.
.
চলবে….
[কার্টেসি ছাড়া কপি করা নিষেধ]
শব্দ সংখ্যা— ১৬২৭