প্রাণপ্রিয় পর্ব-০৮

0
5

#প্রাণপ্রিয়❤️ [পর্ব-০৮]
~আফিয়া আফরিন

অনুর কথা শুনেই অনিতা এক ঝটকায় শোয়া থেকে উঠে বসে পড়ল। উত্তেজনা নিয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘কে সে ফুপি?’

অনু নিজের আশেপাশে তাকাল। তারপর জিজ্ঞেস করল, ‘কোথায় কে?’

‘আরে আমি বলছিলাম, তুমি কাকে এখনও ভালোবাসো? সে মানুষটা কে?’

অনু সরু চাহনি নিক্ষেপ করে বলল, ‘কে মানে? এইতো তোরা সকলে। তোদের আগেও ভালোবেসেছি, এখনো ভালোবাসি। এইটুকু বুঝিস না?’
অনিতা যতটুকু উচ্ছ্বাস নিয়ে জিজ্ঞেস করেছিল, ততটুকুই হতাশ হতে হলো তাকে। সে চুপ করে তব্দা খেয়ে বসে থাকল কিছুক্ষণ।
অনু বলল, ‘বাসায় থেকে কি করব? চল দুজন ঘুরে আসি। রান্নাবান্নার করতে ইচ্ছা করছে না, বাহির থেকে খেয়েদেয়ে তারপর ফিরব।’
ঘোরাঘুরির বিষয়ে অনিতার কখনোই না নেই। তবে এই মুহূর্তে তার কোথাও যেতে ইচ্ছা করছে না। মন পড়ে রয়েছে ডায়েরীতে, ২০০২ সনের সেপ্টেম্বরে, ফুপি আর ওই ভালো লাগার মানুষটার প্রেম কাহিনীতে।
মনে তো হচ্ছে, ভালোবাসা দুইদিক থেকেই ছিল। তবে হারিয়ে গেল কেন? একে অপরকে পাওয়া হলো না কেন? কী এমন কারণ? কেন সর্বশেষে তার ফুপির জীবনটাই এভাবে এলোমেলো আর ছন্নছাড়া হয়ে গেল?
.
সন্ধ্যার শহরে চারিদিকে অপরূপ লাবণ্যতা। অনিতার মন খারাপ ভাবটা কেটে গেল। প্রশান্তিতে মন ছুঁয়ে গেল, জুড়িয়ে গেল। এই মুহূর্তে আহিরকে অনুভব করছিল। যদি পাশে থাকতো, তবে অনিতা চোখ বুজে তোমার হাতে হাত রেখে প্রতিটা পদক্ষেপে এগিয়ে যেত। আজ সারাদিন ওর সাথে কথা হয় নাই, অথচ একটুও মন খারাপ হচ্ছে না। যে মানুষটা সবসময় অনুভবে থাকে, তার সাথে তো সর্বক্ষণ সারাক্ষণ কথা না বললেও চলে।
আচ্ছা, ফুপিরও কি এমন হয়? সে হয়তো ওই মানুষটাকে আজ পর্যন্ত অনুভবে রেখেছে বলেই, এতো ভালো আছে! কিন্তু কি করে সম্ভব? একটা মানুষকে ভালোবেসেছে কিন্তু দিনের পর দিন তার সাথে কোন কথা হচ্ছে না, তাকে দেখতে পাচ্ছে না; তবে কি করে ভালো থাকবে? এই ভালো থাকাটা কি অভিনয়, লোক দেখানো? সে হাঁপিয়ে যায় না? এ ব্যাপারটা ছাড়াও অনিতা এর আগেও খেয়াল করেছে, আশ্চর্য রকমের প্রাণশক্তি আছে এই মানুষটার মধ্যে!

পথে যেতে যেতে অনু এতক্ষণ চুপ থাকলেও, এইবার অনিতাকে আহিরের সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞেস করল। অনিতাও বেশ আগ্রহ নিয়ে উত্তর দিল। আহিরের কথা বলতে তার ভালই লাগছিল। বলছিল—তাদের প্রথম দেখা, পরিচয়, প্রথম ভালোলাগা, বন্ধুত্ব, ভালোবাসা, একে অপরকে প্রেম নিবেদন করা, অনুভূতি বুঝতে শেখা, সকলকে লুকিয়ে চুপি চুপি প্রেম করা, হাতে হাত রাখা, চোখে চোখ রেখে অব্যক্ত মনটাকে প্রকাশ করা। সবটাই সে প্রচন্ড উচ্ছ্বাস নিয়ে বলছিল। আর অনু, সে কৌতূহল নিয়ে শুনছিল। এইমুহূর্তে সে আমি অনিতার চোখে মুখে আহিরের জন্য উপচে পড়া ভালোবাসা দেখতে পেয়েছে। কথাগুলো বলার সময় ওর অজান্তেই ওর চোখ দুটো চকচক করছিল, ঠোঁটের কোণে মিষ্টি হাসি ফুটে উঠছিল। এটাই তো ভালোবাসা, ভীষণ সামান্য। আবার কেউ কেউ তো মন প্রাণ উজাড় করে দিয়েও এই সামান্য আনন্দটুকু পায় না। তবে পার্থক্য কীসে? নিজস্বতায় নাকি ভালোবাসায়?
.
সন্ধ্যার জাঁকজমকপূর্ণ সিএন্ডবি এ হাঁটতে হাঁটতে দু’জনের মধ্যে বেশ গল্প হলো। সেখানকার স্পেশাল রসগোল্লা খাওয়া হলো। বাড়ি ফিরল বেশ দেরি করেই। ফিরেই তো শুয়ে পড়া…. তারপর ঘুম। সকাল হতে না হতেই সেই একঘেয়ে রুটিন।
মানুষ যে একা বাঁচতে পারে না, তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ নিজেকেই মনে হয় অনুর কাছে। কী একটা জীবন তার! নিজের বলতে এখানে কেউ নেই। অসুস্থ হলে সামান্য মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়ার মত কাউকে পায় না। নিজেকেই নিজে চালিয়ে নিতে হয়। নিজেই নিজের জন্য আফসোস করে।
আজকালকার যুগের ছেলেমেয়ে গুলোকে দেখে। তারা বোধহয় ভালোবাসার আক্ষরিক অর্থটাই বোঝেনা। আজ একজন চলে যাচ্ছে তো পরদিন আবার অন্যজনের সাথে নিজেকে ঠিকই মানিয়ে নিচ্ছে। ঠিকই তার হাতে হাত রেখে ঘুরে বেড়াচ্ছে, কাঁধে মাথা রেখে চলছে। কী করে পারে এরা এত সহজে একটা মানুষের স্মৃতি ভুলে যেতে? কই, সে তো পারল না। তার পক্ষে তো সম্ভবই হলো না, ওই মানুষটাকে হারিয়ে অন্য কাউকে গ্রহণ করা। যদি সে এই যুগের আওতায় পড়ত, তবে বেশ হতো। ভালোবাসা থাকতো না, স্মৃতি থাকতো না, নিজের মানুষ থাকতো না, একাকীত্ব থাকতো না।

অনিতা আসাতে ভালই হয়েছে। বাড়ি ফিরে অন্তত চারিদিক শূন্য দেখতে হয় না। কথা বলার একটা মানুষ আছে, রাগারাগি করার একটা মানুষ আছে। তবে কয়দিন? বেশি হলেও আর এক সপ্তাহ থাকবে। ওর পরীক্ষা ছিল, সেটা স্থগিত হওয়ার কারণেই না এখানে এসেছে। আবার কবে ডেট দিয়ে দেয় কে জানে?
.
“ইদানিং ভাইয়া যে টিউশনির নাম করে প্রেম করতে যায়, এটা আমি ভালো করেই বুঝতে পারি। মজা লাগে দেখতে। শুধু মনে হয়, মাকে যদি একবার দেখাতে পারতাম! মা কিন্তু ভাইয়াকে ভীষণ ভালোবাসে। মাকে যদি বলি তার গুণধর ছেলে এসব করে বেড়াচ্ছে, জীবনেও বিশ্বাস করবে না। উল্টো আমাকে বকবে। আবার আমার বাবাকে যদি কেউ আমার সম্পর্কে কিছু বলে, তবে নির্ঘাত সেই মানুষটাই বকুনি খাবে। আমরা দু’জন বাবা মায়ের ভীষণ প্রিয় ছিলাম।”
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০০০.

“আজকের দিনটা ওর আসার কথা ছিল, তবে এলো না। আমি অনেকক্ষন যাবত অপেক্ষা করেছিলাম, পার্কের ছেলেগুলো কেমন করে তাকাচ্ছিল। কীসব বলছিল। সরে এসেছিলাম, তবুও ওরা পিছু নিয়েছিল। পরে বাধ্য হয়ে বাসায় চলে এসেছি। ও এলো না কেন? ভীষণ রাগ করেছি, তার থেকেও বেশি মন খারাপ করেছি। এরপর এলে দেখাই করব না। আমাকে যেমন অপেক্ষা করিয়েছ, নিজেও এইবার করো। আমিও আর সহজে দেখা দিচ্ছি না।”
২৫ সেপ্টেম্বর, ২০০০.

“মা ইদানিং আমার বিয়ের কথাবার্তা তোলে। আচ্ছা আমি কি এতই বড় হয়ে গেছি? নাকি বোঝা হয়ে গেছি? আমাকে বিয়ে দিলে আমার বাবা থাকবে কী করে? সে কষ্ট পাবে না? মা বলে ডাকবে কাকে? কে তাকে রোজ নিয়ম করে তিনবেলা ওষুধ খাওয়াবে? মাঝেমাঝে বাবার হাতে পায়ে ধরে বলতে ইচ্ছে করে, আমাকে কখনো বিয়ে দিওনা। কিন্তু পরক্ষণেই মনে হয়, বিয়ে না দিলে আমার যে ওকে পাওয়া হবে না।”
০৮ অক্টোবর, ২০০০.

“আজ ও এসেছিল দেখা করতে। ভেবেছিলাম দেখাই করব না, কথাই বলব না। তারপরও কেন যেন নিজেকে আটকে রাখতে পারলাম না, ছুটে চলে গেলাম। আমাকে দেখে সে পলকহীন আমার দিকে চেয়ে থাকল কিছুক্ষণ। আমি কেমন যেন তাকাতে পারলাম না। জিজ্ঞেস করলাম, ‘অমন করে কি দেখছ?’
‘তোমাকে।’
‘এত দেখতে হয়? আমি কি নতুন?’
‘আমার জন্য তুমি সবসময়’ই নতুন। এতদিন দেখতে পারি নাই, তাই সেই দেখা সুদে আসলে তুলে নিচ্ছি। তোমাকে ঋণী রাখতে চাচ্ছি না।’
‘আসো নাই কেনো? অপেক্ষায় ছিলাম তো!’
ও দু’কদম এগিয়ে আসে। আমার হাত ধরে বলে, ‘বাড়ি গিয়েছিলাম। হঠাৎ করে বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ল। তৎক্ষণাৎ চলে আসতে পারি নাই। পরশু রাজশাহী এসেছিলাম।’
ততদিনে আমি ভালোবাসা সম্পর্কে বেশ অভিজ্ঞতা এবং সাহস সঞ্চয় করেছিলাম। তাই ওর গালে হাত বুলিয়ে দিয়ে বললাম, ‘সরি, আমি তোমার উপর রাগ করেছিলাম। তোমায় ভুল বুঝেছিলাম।’
‘ভুল ভেঙেছে এখন?’
‘হুম।’
সে টুপ করে সকলের অগোচরে আমার গালে একটা চুমু খেল। আমি লজ্জায় আশপাশে তাকালাম। নাহ, কেউ দেখতে পায় নাই। ওর দিকে আর তাকাতেই পারলাম না। কখন কী কাণ্ড করে বসে! ওর সাথে আর বেশিক্ষণ কথাবার্তা হলো না। আমি বাড়ি ফিরলাম। এই দিনটাকে স্মৃতির পাতায় আমার জীবনের সেরা দিন হিসেবে রেখে দিলাম। কয়েকবার গালের সেই অংশটায় হাত বোলালাম, যেখানে তার ঠোঁটের স্পর্শ রয়েছে! আমি একলাই এই মুহূর্তটা অনুভব করছিলাম, তবুও চোখ তুলে নিজেকে দেখতে পারছিলাম না। হয়ত আয়নায় নিজেকে দেখলে লজ্জাবতী গাছের মত লজ্জায় নুইয়ে পড়া আমাকেই দেখতে পেতাম।”
১৬ সেপ্টেম্বর, ২০০০.

“হিহিহিহি! আজকে ভাইয়া একদম বাবার কাছে হাতেনাতে প্রেমিকা নিয়ে ধরা পড়েছে। বেচারার বয়স আরেকটু কম হলে মাইর খাইতো নির্ঘাত, তবে এইবার বকুনিও কম খায় নাই। মনে হয় না, ভাইয়া আর ওই পথে পা বাড়াবে। বাবা আজ বলছে, ‘আমার মেয়েটাকে আমার কাছে সারাজীবন রেখে এই আপদটাকে ঘর থেকে বিদায় করব।’
আমার কী যে মজা লাগছিল! ভাইয়ার মুখটা দেখার মত হয়েছিল।”
২০ সেপ্টেম্বর, ২০০০.

“ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠান। বান্ধবীরা সবাই শাড়ি পড়ে আসবে, আমাকেও বলেছিল। আমি কখনো শাড়ি পড়ে অভ্যস্ত নই, আর শাড়ি পড়লেও কেমন লজ্জা লজ্জা লাগে! তাই সাধারণ সালোয়ার কামিজ পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু মা বলতেছে, ‘শাড়িতে তোকে দারুণ মানাবে।’ আমি ভাবলাম। শাড়ি পড়ে নিজেকে সামলাতে পারব তো? সম্পূর্ণ নতুন একটা জিনিস।
তবে শাড়ি পড়লাম। মা খুব যত্ন করে তার একটা নীল কাতান আমায় পড়িয়ে দিল। নিজের দিকে নিজেই কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলাম, মুচকি হাসলাম। দ্বিতীয়বারের মত প্রেমে পড়লাম। প্রথমবার প্রেমে পড়েছিলাম ওর আর এইবার আমার!
মনে হচ্ছিল, আজ যদি ও একবার আসতো! ইশশশ, একটাবার যদি দেখা পেতাম। এইরূপে আর কখনোই ধরা দিতে পারব না হয়ত, তাও প্রেম করা অবস্থায়। একটু মন খারাপ নিয়েই গেলাম। তবে আনন্দ, গানবাজনার মধ্যে বেশিক্ষণ মন খারাপ টিকল না। সময় অনেকখানি কেটে গেল। আমার আর কিছু করার ছিল না, ভাবছিলাম বাড়ি ফিরে যাই। এমনিতেও আমার শাড়ি সামলাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে। কলেজ গেটে এসে দাঁড়ালাম রিকশার জন্য। হঠাৎ পেছন থেকে কেউ একজন আমার চোখ দু’হাতে চেপে ধরল। আমি ভাবলাম, বান্ধবীরা কেউ দুষ্টুমি করছে হয়ত। ছেড়ে দিতে বললাম। সে ছাড়ল না। পুরুষালি চেনা কণ্ঠটা ভেসে এলো। অবাক হলাম। ও এখানে? আজ? কিন্তু আসার তো কথা ছিল না।
জিজ্ঞেস করলাম, ‘তুমি এখানে কখন এসেছ?’
সে উত্তর দিল, ‘এইতো কিছুক্ষণ আগে।’
‘জানো, আমি মনে মনে তোমাকেই চাইছিলাম।’
‘মনে মনে কালেকশান আছে বলেই তো চলে এলাম। সকাল থেকে মনে হচ্ছিল, তুমি আমায় মনে করছ। এখন দেখি, আসলেই সত্যি।’
ও কথা বলছে, কিন্তু আমাকে শাড়ি পড়া অবস্থায় দেখে কিছু বলল না।অথচ আমি অনেককিছুই আশা করেছিলাম। ওর সাথে ঘুরলাম, অর্থাৎ ওই আমাকে নিয়ে ঘুরতে গেল। এই জায়গাটায় আমার এর আগে আসা হয় নাই, কিন্তু নাম শুনেছিলাম। ভীষণ সুন্দর গাছগাছালিতে পূর্ণ পথ প্রান্তর।
ও আমার হাত ধরে হাঁটছিল, কথা বলছিল। আমি কিন্তু কিছু বলছিলাম না। বলব কেনো? রাগ করেছি।……
অনিতা এই পর্যন্ত পড়তেই ওর ফোনটা বেজে উঠল। মনোযোগ ছুটে গেল। ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখল, আহির ফোন করেছে। ফোন রিসিভ করে কানে ধরতেই আহির বলে উঠল, ‘বাসায় বলেছি আমাদের কথা।’

অনিতা জিজ্ঞেস করল, ‘এখন বলেছ মানে? আগে থেকেই তো জানত।’

‘হ্যাঁ, কিন্তু বিয়েশাদীর ব্যাপারে। বাবা বলেছে, খুব তাড়াতাড়ি তোমাদের বাসায় যাবে। আমি তাদের বলে দিয়েছি, গেলে তারা যাবে আমি যেতে পারব না।’

‘কেনো? তোমার কি সমস্যা?’

আহির নাক ছিটকে বলল, ‘তোমার ভিলেন বাপ আবার চোর চোর বলে তাড়া করবে। আমি কি পাগল নাকি যে আবার যাব? ন্যাড়া বেলতলায় একবার’ই যায়।’

‘তো তুমি আমার বাবার কলিজার টুকরা চুরি করতে যাবে তাতে কোনো দোষ নেই আর আমার বাবা তোমায় তাড়া করলেই দোষ। এসব শুনছি না। আংকেল আন্টির সাথে কথা বলে আমায় ডেট জানাও। আমি ফুপিকে দিয়ে বাসায় বলাব তাহলে। কিন্তু আমার মনে হয়, তার আগে তুমি গিয়ে একবার আমার বাবা-মা’র সাথে দেখা করে কথাবার্তা বলে আসো।’

আহির মুখ ঘুরিয়ে বলল, ‘পারব না। লজ্জায় এমনিতেই মাথা কাটা গেছে সেদিন, এরপর আবার কি হবে কে জানে? পারব না, পারব না, সম্ভব না। তারমধ্যে তুমিও নাই।’

‘যেহেতু তুমি কিছু পারবাই না, যেহেতু তোমার পক্ষে কোনোকিছু সম্ভব’ই না; তাহলে তোমার বিয়েও করতে হবে না। সন্ন্যাসী হয়ে বনে-জঙ্গলে ঘুরে বেড়াও প্লিজ। আর শোনো, আমি খুব জরুরী একটা কাজ করতেছি আমাকে অসময়ে ফোন দিয়ে বিরক্ত করবা না। রাখলাম।’ অনিতা দাঁত কিড়মিড় করে কথাগুলো বলে ফোন কেটে দিল।
মনে মনে বলল, ‘বিড়ালের আত্মা নিয়ে আসছে আমার সাথে প্রেম করতে। অভদ্র কোথাকার! আর ফোন কইরো আমাকে, কথাই বলব না তোমার সাথে। যত্তসব। কাজের সময় আসছে নাটক দেখাইতে। মুডটাই নষ্ট করে দিল, হুহ।’
অনিতা রাগ ঝেড়ে আবার ডায়েরী নিয়ে বসল। পৃষ্ঠা উল্টাতে যাবে, ঠিক সেই মুহূর্তে অনু বাসায় প্রবেশ করল এবং দরজায় দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘কী করছিস অনি?’
.
.
.
চলবে…….