গল্প:- #তোমার_নেশায়_মুগ্ধ
লেখিকা:- #রাইমা। #পর্ব :- ৬
🥀কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য🥀
গভীর রাতে শুনশান নীরবতা চারিদিকে বিরাজমান। সবাই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হলেও এক রমণী চাঁদের পানে তাকিয়ে অশ্রুবিসর্জন দিতে ব্যস্ত। হঠাৎ বলিষ্ঠ হাতের হ্যাঁচকা টানে হুমড়ি খেয়ে পড়ে পিছনে দাঁড়ানো বত্রিশ বছর বয়সী পুরুষের উদাম লোমশ চওড়া প্রশস্থ বুকে। ধাতস্থ হতেই নাকে তার পুরুষালী ঘ্রাণ এসে পৌঁছায় সেই ঘ্রাণে গোটা শরীরে যেন তরঙ্গ ঢেউ খেলে যায় মুগ্ধতার। অশ্রুসিক্ত নয়নে নয়ন তুলে তাকায় মুগ্ধ, পরক্ষণেই আবার চোখ নামিয়ে নেয়।
মুগ্ধতার পানে মোহিত হয়ে তাকিয়ে আছে ইভান।আজ অনেক বছর পর তার প্রাণপ্রেয়সীকে এতোটা কাছে থেকে দেখছে সে। মুগ্ধতার ভেজা আঁখিপল্লবে ঠোঁট ছোঁয়ায় ইভান নিজের ওষ্ঠ দ্বারা নিজের প্রাণপ্রেয়সীর অশ্রু শুষে নিতে ব্যস্ত সে।এইটুকুতেই কেঁপে ওঠে মুগ্ধ, খামচে ধরে ইভানের কাঁধ।
” Who is the person who made you cry??tell me the name,babe. I swear কাল সকালের সূর্য তার দেখার সৌভাগ্য হবে না”
ইভানের ঠান্ডা গলায় বলা কথায় চমকে ওঠে মুগ্ধ। “কে…কেও না। বাড়ি… বাড়ির কথা মনে পড়ছে।”
“বাড়ি???”
অট্টহাসিতে ফেঁটে পড়ে ইভান, মুগ্ধতা কে ছেড়ে সরে এসে সোফায় বসে।” কোন বাড়ির কথা বলছো মুগ্ধ?? যে বাড়ির লোকেরা কিনা নিজের মেয়েকেই বিশ্বাস করে না। একটা কথা বলোতো babe। তোমার দাদাজান মানে ওই so called great man নিজের বাড়ির মেয়েদের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া ছাড়া আর করতেই বা পারে কি??”
“দেখুন আমার দাদাজানকে নিয়ে একদম উল্টোপাল্টা কিছু বলবেন না।আপনি জানেন তিনি খুবই ভালো মানুষ……”
ইভানের মুগ্ধতার কথার দিকে কোনো খেয়াল নেই ।তার খেয়াল এখন তার প্রাণপ্রেয়সীর খোলা কোমর ছাপানো হাটু পর্যন্ত চুলের দিকে।একটু আগে এই চুলের মিষ্টি ঘ্রাণে যে নেশা ইভানে ধরেছে টা অতো সহজে কাটার নয়।।(গল্পের আসল লেখিকা রাইমা)
কচাত
হঠাৎ আওয়াজে পিছনে ঘুরে তাকাতেই স্তব্ধ হয়ে যায় মুগ্ধ। বাকশক্তি যেনো সে হারিয়ে ফেলেছে। ইভানের বাম হাতে এক হাত লম্বা একগোছা চুল,আরেক হাতে বড়ো একটি কাচি।নিজের চুল হাত দিয়ে বুঝতে পারে যে তার সখের কষ্ট করে বাড়ানো হাঁটু অব্দি চুল এখন কোমরেরও এক আঙ্গুল উঁচুতে এসে ঠেকেছে। নিজেকে আর সামলাতে পারেনা মুগ্ধ, হাউ হাউ করে কেঁদে ওঠে সে।
“কেনো এমন করলেন আপনি?? আমার চুল কেনো কাটলেন বলুন। উত্তর দিন।”একনাগারে কিল ঘুষি মারতে থাকে ইভানকে।এক পর্যায়ে মুগ্ধতার চুল মুট করে খামচে ধরে ক্ষিপ্ত ভাবে মুগ্ধর গোলাপী ঠোঁট জোড়া নিজের মুখের ভিতর নিয়ে কামড়াতে থাকে। চুলের ব্যাথায় ও ঠোঁটের অপর অত্যাচারে অনবরত চোখ দিয়ে জল পড়তে থাকে মুগ্ধর। অনেক্ষন যাবৎ যখন ইভান তাকে ছাড়ে না তখন তার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম।পনেরো মিনিট পর ছাড়া পেয়ে জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে ও ফোফাতে থাকে মুগ্ধতা। তবে এখনো ইভান চুলের মুটি ছাড়েনি।
” ওই তুর্যের কথায় নিজের চুল খুলে রাখার সময় তোমার এটা মনে ছিলো না babe?? যে এটার ফল কি হতে পারে??………….. যে টুকু চুল রয়েছে সেটা আমার পছন্দের তাই ছাড় দিয়েছি।আমি ছাড়া অন্যের সামনে খোলা চুলে গেলে,তোমায় ন্যাড়া করে বসিয়ে রাখতেও আমি দুবার ভাববো না।” ঠাণ্ডা গলার হুমকিতে চুপ হয়ে যায় মুগ্ধ।
_______________
“Good morning mom”ইভান গিয়ে তার মাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে,নিজের চেয়ারে গিয়ে বসে।
” Good morning বেটা”
” শুধু good morning mom??” ব্রেডে জ্যাম লাগাতে লাগাতে জিজ্ঞেস করে ইনায়া।
দুধের গ্লাসে চুমুক দিতে দিতে ইয়ানা বলে,” yeah mom তুমিতো কখনো শুধু good morning বলোনা?? তুমিতো always very good morning বলো??”
” তা morning আর ভেরি গুড তোমাদের ভাইয়া রাখলো কোথায়?? কি নাম যেনো…yeah মুগ্ধ where is she??”
“ঘুমাচ্ছে mom। উঠলে দেখা করো।”
” কেনো ডাকলে বুঝি সে সারা দেবেন না??”
” No mom। Kal রাতে ভালো করে ঘুমাইনি ও তাই আমি চাইনা কেও মুগ্ধ কে ডিস্টার্ব করুক।”
ইভানের কোথায় ডাইনিং টেবিলে সবাই মুখ চাওয়াচাওয়ি করে।
” I need to go now। ইনায়া take care of her।”
ইভান চলে যাওয়ার পর ইয়ানা তার mom কে জিজ্ঞেস করে, “mom do you know মুগ্ধতা কে??”
” কে??”
” আরফিন তালুকদারের আপন বোন”
“Whattttt!!!!!!” বিস্ময়ের সাথে চিৎকার করে ইভানের mom বুশরা বেগম।
” এবার বুঝতে পারছো mom ভাইয়া কেনো মুগ্ধতা কে নিয়ে এসেছে?”
__________________
” মেহু এই মেহু দরজা খোল।”
অনেক্ষন যাবৎ গলা ফাটিয়ে মেহেক কে ডেকে যাচ্ছে আরফিন।কিন্তু তার দরজা খোলার নাম নেই।দুদিন আগে মুগ্ধতা চলে যাওয়ার পর দরজা লাগায় মেহু, এখনো খোলেনি। কিচ্ছু খাইওনি পর্যন্ত।
” এখনো দরজা না খুললে থাবরে দাঁত কোপাটি ফেলে দেবো বলে দেবো বললাম। খোল বলছি খোল….” বলতে বলতেই মেহু দরজা খুলে দেয়।আরফিন ভেতরে ঢুকে দেখে মেয়েটা কেমন রুগ্ন হয়ে গেছে।চোখ মুখ সব ফুলে গেছে।
” বোকা মেয়ে দুদিন ধরে খালি কেঁদে গেছিস। নিজের কি অবস্থা করেছিস দেখেছিস?”
মেহু আরফিনকে জড়িয়ে ধরে হুহু করে কেঁদে দেয়।আরফিন তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে। ” আপাই কেমন আছে ভাইয়া?? ওই লোকটা আপাইয়ের কোনো ক্ষতি করেনি তো??”
” মুগ্ধ ঠিক আছে মেহু। তুই শান্ত হ।খাবি চল দুদিন আগে খেয়েছিলি।”
” তুমি কি করে জানলে ভাইয়া?? তুমি ওই লোকটাকে চেনো??” মেহেক সরে এসে জিজ্ঞেস করে।
মেহেকের কথায় কোনো উত্তর না দিয়ে সেখান থেকে চলে যায় আরফিন।
বসার ঘরে,
” আব্বাজান আপনি যদি অনুমতি দেন একবার মেয়েটার খোজ নিই?? আপনারা বৌমা বড়ো বিচলিত হয়ে আছে।”
” কোন মেয়ে হামিদুল?? তোমার তো একটাই সন্তান তোমার ছেলে আরফিন তালুকদার।”
“আব্বাজান বড়ো ভাইজান ঠিকই বলেছে, যতই হোক মুগ্ধতা তো আমাদেরই বাড়ির……”
” তোর সাহস দেখে আমি অবাক যাচ্ছি আজিজুল।তুই আব্বাজানের হুকুমের ওপরে কথা বলছিস??”
” আমি সেটা বলতে চাইনি মেজো ভাইজান।তুমি আমায় ভুল বুঝছো…..”
” আহ্ থামো তোমরা।…. হামিদুল তুমি যদি চাও নিজের স্ত্রী ও পুত্রকে নিয়ে এবাড়ির বাইরে গিয়ে থাকতে পারো পারলে তোমার ছোটো ভাইও সোনার সঙ্গে যেতে পারে। কিন্তু এবাড়িতে থেকে ওই দুশ্চরিত্র মেয়েটার সাথে কোনো যোগাযোগ রাখা যাবে না। এটা তুমি জেনে রাখো।”
___________________
রাতের অন্ধকারে সবাই যখন ঘুমে মগ্ন ইভান তখন লোক চক্ষুর আড়ালে ফোনে ব্যস্ত।
” দেশে কবে আসবি তুই?”
” আসবো তাড়াতাড়ি আসবো।…. আমি না গেলে তো তোমার উদ্দেশ্যই সফল হবে না। আমাকে যেতেই হবে।”
#চলবে