#সে_আমার_বৌপ্রিয়া
#নুসাইবা_ইভানা
#পর্ব -৯
“কবুল যখন বলেছো বাসর আমি তোমার সাথেই করবো।
‘আপনি কে? আপনাকে তো আমি চিনিনা৷
‘চিনতে হবে না মেরিজান সোজা বাসর ঘরে পরিচয় পর্ব সারবো৷
‘আপনি জানেন একটা মেয়েকে হ্যারাসমেন্ট করার শাস্তি কি হতে পারে!
‘সে আমার বৌপ্রিয়া তাকে আমি হ্যারসমেন্ট কেনো করবো তাকে তো আদর করবো।
‘মিরহা বলল,পুস্প তুই কিছু বলিস না। হয়ত এদেশে এসে মেয়াদ উত্তীর্ণ কিছু খেয়ে লোকটার মাথাটা গেছে৷
‘মেরি জান, মেরি জান, মেরি জান আমি হাজার বার তোমার মুখে পাগল শুনতে রাজি। উফফ বৌ আমি যে তোমার প্রেমে পাগল।
‘আমাদের পথ ছেড়ে কোনো নিউরোলজিস্টের সাথে কথা বলুন।
‘তুমি আমার কার্ডিওলজিস্ট তুমিই আমার নিউরোলজিস্ট চিকিৎসা করবে আমার?
‘মিরহা কথার উত্তর না দিয়ে সামনের দিকে হাঁটা শুরু করলো।
‘ফারজাদ জোড়ে চিৎকার দিয়ে বলে,এই পালাট.. জো ভিহহহ ম্যা কারতাহু তুঝে লাগতাতাহ্যা কিউ গালাত!
‘মিরহা পিছনের দিকে তাকিয়ে বলে,পাবনা যান এখানে কি?
‘ফারজাদ মিরহার পিছু পিছু হাঁটছে আর গাইছে, মিরহা চলেছে একা পথে,ফারজাদ সঙ্গী হলে দোষ কি তাতে!
রাগ করে না বৌগো আমার রাগলে তোমায় লাগে ভালো।
‘আশেপাশে অনেক তাকিয়ে দেখছে কিন্তু ভাষার কারনে কেউ কিছু বুঝতে পারছে না।
‘এবার কিন্তু লিমিটেড ক্রস করছেন!
‘বৌয়ের সাথে আমার কিসের লিমিট? বৌয়ের সাথে সব হবে আনলিমিটেড। বৌ মানেই আন লিমিটেড আদর, ভালোবাসা উফফ বৌ শব্দটাই বড্ড আদুরে
‘আপনি কি চাইছেন?
‘তোমাকেই চাই শুধু তোমাকেই চাই।
‘অন্যকে দান করা জিনিসের ফেরত পাওয়া যায় না৷ আপনি যা দান করেছেন সেটার প্রতি মায়া ছেড়ে দিন।
‘আমার বৌ আমার প্রোপার্টি আমার অহংকার। নিজের বৌকে দান করার মত মহৎ আমি না।
‘অথচ আপনি সেই মহৎ কাজটা করে ফেলেছেন৷
‘বৌ আর জীবনে কোন ভুল করবো না৷ তুমি যা বলবা তাই হবে। রাগ করো অভিমান করো, মারো কা’টো যা খুশি করো তবে এ সব কিছুর শেষে তোমাকেই চাই।
‘সৈনিকের হাতের মারকে এতো সহজ ভাবে নিবেন না৷ একবার মার খেলে মাসের পর মাস হসপিটালের বেডে পরে থাকতে হবে।
‘বাঙালি বৌ-রা স্বামীর নাম মুখে নেয়না আর মারা তো বহুত দূরের কথা!
‘আপনি এখান থেকে চলে যান।
‘এসেছি তোমার মন চুরি করে তোমারে নিয়েই যাবো সাথে করে।
‘ভালো হচ্ছে না কিন্তু আমি আপনাকে ছাড়বো না মিস্টার৷
‘মিরহার একদম কাছাকাছি এসে বলে কখনো ছেড়ো না বৌ শক্ত করে ধরো। মিরহা আর কিছু বলার আগেই ফারজাদ মিরহার অধরে আধর মিলিয়ে একটু সরে দাঁড়ালো। কাজটা এতো দ্রুত হলো মিরহা বুঝে ওঠার আগেই কিস করে সরে গেছে ফারজাদ।
‘এটা কি হলো? আপনার সাহস কি করে হলো এসব করার?
‘কি হয়েছে? কিছু কি হয়েছে মিসেস ফারজাদ? বৌয়ের সাথে ইয়ে করতে আবার সাহস লাগে?
‘আমি আপনার নামে মানহানীর কেস করবো।
‘বিচার যদি হয় তোমার লকাপে আমি মামলা খেতে রাজি দিনে ৩৬ টা।
‘পুস্প ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলে,মিরহা আমাদের টাইম ওভার এখন না ফিরলে কৈফিয়ত দিতে হবে৷
‘মিরহা চলে যাচ্ছে ফারজাদ বলে, আমি ভালোবাসি তোমাকে শুনতে পারছো?আমি তোমাকে ভালোবাসি মিরহা৷
কিছু সময় পূুর্বে……
পুস্প এসে বলে,মিরহা শিউলি ম্যাডামের অনুমতি নিয়েছি চল একটু ঘুরে আসি।
‘তুই রেডি হ আমিও রেডি হচ্ছি।
পুস্প রেডি হয়ে এসে বলে কিরে তুই এসব কি পরেছিস! না না আমার সাথে এসব পরে যাওয়া যাবে না৷
‘জিন্স আর টিশার্ট সমস্যা কি?
‘সুন্দর একটা থ্রিপিস পর। আমরা ট্রেনিং যাচ্ছি না ঘুরতে যাচ্ছি।
‘মিরহা ড্রেস চেঞ্জ করে আসলো। দুজনে বের হয়েছিলো৷ বেশ কিছু সময় ঘোরাঘুরি করে একটা বেঞ্চের উপর বসেছিলো।
হঠাৎ মিরহার পেছন থেকে কেউ চোখ ধরে বলে,এসেছি তোকে নিয়ে ফিরবো বলে, মনেরই পথ চিনে এসেছি চলে৷
‘মিরহা কিছু বলার আগেই ফারজাদ সামনে এসে বলে,মেরিজান তোমার প্রানপ্রিয় স্বামি তোমার পিছু পিছু চলে এসেছে৷
‘স্বামী! আমি অবিবাহিত।
‘কি যে বলো না জান! বিয়ের পর বাসর হয়নি তাই হয়তো বিয়ের ফিল পাচ্ছো না তাই না?
‘বাসর! তাও আপনার সাথে?
বর্তমানে…. মিরহা চলে যাওয়ার পর ফারজাদ বেঞ্চে বসে ভাবছে। ইয়ার প্রেম পরলাম, প্রেম করলাম, ভালোবাসলাম বিয়ে করলাম। কিন্তু বুঝতে দেরি করলাম কেনো?এই একটু বুঝতে দেরি হওয়ার কারনে বৌয়ের সাথে বাচ্চার নাম ঠিক করার বদলে এখন বৌয়ের পিছু পিছু ঘুরতে হচ্ছে। আর বৌ তো আর যে সে বৌ না পুরো নাগা মরিচ। কবে যে নাগা মরিচের রসগোল্লা বানাবো!
🌿তুই আমাকে মিথ্যে কেন বলেছিস?
‘বিয়ে করেছিস এতো সুন্দর জিজু আছে এরপরে ও বলিস তুই সিঙ্গেল!
‘তোর মাথা। যে কেউ এসে বৌ দাবি করলেই আমি কি তার বৌ হয়ে যাবো! কোন মেন্টাল হসপিটাল থেকে পালিয়ে এসেছে সেটা খোঁজ নিয়ে দেখ।
‘চুপ থাক তুই। তোর জামাই না হলেও ছেলেটা তোর প্রেমিক। নয়তো তোর ঠোঁটে চুমু খেলো আর তুই কিছু বললি না?
‘বললাম তুই শুনিস নি?
‘আহাগো আফা অন্য কেউ তোরে টাচ করলেও তার হাত ভেঙে দিতি। সেখানে সোজা তোর ঠোঁট তাও একটা চিমটি অব্দি দিলি না। আমারে কি ফিডার খাওয়া বাচ্চা মনে হয়?
তোর বলার ইচ্ছে না থাকলে বলবি বলতে পারবো না মিথ্যে কেন বলবি!
‘হ এই ছেলে আমার এক্স। শা’লা আমার সাথে বাটপারি করছে। অন্য দেশে তাই সিন ক্রিয়েট করলাম না। দেশে ফিরে ওরে আমি ফ্রাই করে খাবো।
‘আজ তাহলে রাতে তোর প্রেম কাহিনি শুনবো৷ বলবি তো?
‘আচ্ছা বলবোো।এবার বল তোর প্রেমিকের কি খবর?
‘আর বলিস না, কাল থেকে রিপ্লাই করছে না৷ কেমন আছে তাও জানিনা৷ ব্যস্ত আছে এটা বুঝতে পারছি নয়ত আমাকে ছেড়ে থাকতেই পারতো না।
‘ছেলেদের এতো সহজে বিশ্বাস করতে নেই এরা যেমন দেখায় আসলে তার বিপরীত। দেখ নতুন কোন মেয়ের সাথে প্রেম শুরু করছে এরজন্য তোরে ইগনোর করতেছে।
‘দেখ দোস্ত তুই আমারে খারাপ বল তবুও আমার জিসানরে কিছু কবি না। ও অনেক ভালো অনেক মানে অনেক৷তুই তো প্রেম করেছিস জানিস।
‘হ্যা প্রেম করেছি বলেই তো জানি৷
‘সর তুই ভুল জানিস। আমার বাবু সবচেয়ে ভালো আলাভোলা চকোলেট।
‘মিরহা বারান্দায় এসে জিসানকে কল করলো। রিসভ হতেই বলে,জিসাইন্না তোরে কইছি ব্রেকআপ করতে কেনো করিস নি?
‘ যদি ব্রেকআপ না করিস তোর ফেসবুক পাসওয়ার্ড, হোয়াটসঅ্যাপ পাসওয়ার্ড, ইমু কোড, ইনস্টাগ্রাম পাসওয়ার্ড সব আমাকে দিবি।
‘আমার গার্লফ্রেন্ডরাই এসব চাওয়ার সাহস করে না আর তুই তো বোন।
‘হয়তো ব্রেকআপ করবি নয়তো দিবি। আর না দিলে আমি সোজা তোর সাথে পুস্পর বিয়ের ব্যবস্থা করবো।
আরেহহ চিল। ব্রেকআপ তো আমার জন্য পান্তাভাত কিন্তু কথা হলো তোর বান্ধবী বেশি ইমোশনাল তাই একটু সময় নিচ্ছি।
দেখ তোর মত প্লেবয়রা বুঝবে না প্রথম প্রেমের অনূভুতি ঠিক কি?
প্রথম প্রেমের অনূভুতি ঠিক কি,তা হয়তো ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে বোঝানো যাবে না। প্রথম অনূভুতি প্রথম ভালোবাসা হৃদয় স্পর্শ করে। এরপর মানুষ যতই বলুক প্রথম ভালোবাসা প্রথম অনুভূতি ভুলে গেছি। আসলে তা কেবল মুখের শব্দ। প্রথম ভালোবাসা কেউ ভুলতে পারে না৷ তুই আজই ব্রেকআপ করবি নয়তো বাকি সব মেয়েদের সাথে প্রেম প্রেম খেলা বন্ধ করে পুস্পকে নিয়ে সিরিয়াস হবি৷ তোদের ছেলেদের কাছে মেয়েদের কি মনে হয়? তাদেরকে খেলনা পুতুল মনে করিস? যতক্ষণ ইচ্ছে খেলবি খেলা শেষ ছুড়ে ফেলে দিবি?
‘আরেহহ ইয়ার রাগ করছিস কেন ভুল হয়েছে আজই ব্রেকআপ করে নেবো।
‘মিরহা খট করে কলটা কেটে দিলো। এই মূহুর্তে ফারজাদের কথা মনে পরে মেজাজ হাই ভোল্টেজ হয়ে গেছে। ইচ্ছে করছে সব ছেলেদের শুটকি বানিয়ে রোদে শুকাতে দিতে পারলে ভালো লাগতো৷
#চলবে
