#হারানো_হিয়া (পর্ব ৭)
বিটুর বাবা মানে মাহিনের ছোট চাচার নাম হাজী মোহাম্মদ খন্দকার আজিজুল হক। বয়স সাতষট্টি প্রায়। গায়ে খদ্দরের মোটা একটা চাদর জড়িয়ে উঠানে বসে ছিলেন। সামনে একটা মোড়ায় মাহিন মুখ নিচু করে বসে আছে। সকালের মিষ্টি রোদে শরীরে আরামদায়ক ওম লাগছে।
আজিজুল ঘুম ঘুম চোখে ঘোলাটে দৃষ্টিতে মাহিনের মুখের দিকে তাকান। তারপর গলাখাঁকারি দিয়ে বলেন, ‘তাহলে বউয়ের সঙ্গে তোমার ডিভোর্স হয়ে গেছে?’
ছোট চাচা ময়মনসিংহ জজ কোর্টের উকিল ছিলেন। সব কিছু স্পষ্ট করে জানতেই পছন্দ করেন। মাহিন এখন পর্যন্ত ব্যাপারটা নিয়ে কারও সঙ্গে কথা বলেনি। এবার বলতেই হয়।
‘হ্যাঁ চাচা, আইনগত দিক থেকে আমরা এখন আলাদা’, অস্বস্তি নিয়ে কথাটা বলে মাহিন।
আজিজুল ভ্রু কুঁচকে বলে, ‘আইন অনুযায়ী ডিভোর্স হইতে নব্বই দিন সময় লাগে। দুই তিনটা নোটিশ লাগে। তারপর না ডিভোর্স। তা ওই দেশে কি এসব মানা হইছে?’
মাহিনের এবার বিরক্ত লাগে। ও শক্ত গলায় বলে, ‘সব আইনগত ভাবেই করা হয়েছে। আপনাদের বউমার সঙ্গে আমার আর কোনো রিলেশন নেই।’
‘আর আমাগো নাতনি, ন্যান্সি? তার কী হইল?’, আজিজুল চোখা গলায় জিগ্যেস করেন
মাহিন থমকায়। ন্যান্সি এখন কী করছে? নিশ্চয়ই ঘুমিয়ে পড়েছে। ঘুমোনোর আগে বাবার কাছে ওর গল্প শোনা চাই। মাহিন ওকে বাংলাদেশের গল্প বলত। কেমন করে ও বৃষ্টিতে ভিজে বল খেলত, ইদের নতুন জামা লুকিয়ে রাখত, ঘুঘুর বাচ্চা চুরি করত এইসব। ন্যান্সি অবাক হয়ে সেসব শুনত।
মন খারাপ গলায় বলে, ‘আমি মাসে দুবার ওকে কাছে পাব, কয়েক ঘন্টার জন্য।’
আজিজুল ফোঁস করে একটা নিশ্বাস ফেলে। তারপর বলে, ‘এই বয়সে একা থাকা যায় না। তোমার বয়স হইতেছে, নতুন কইরা ঘর সংসার করো। এইবার ভালো দেইখা পাত্রী দেখমু। তারে বিয়া কইরা আমেরিকা নিয়া যাও।’
মাহিন গম্ভীরমুখে বলে, ‘চাচা, আমি আর আমেরিকায় যাব না। এই দেশেই থাকব। আপনি এই বাড়িটা একটু মেরামত করার ব্যবস্থা করেন।’
আজিজুল এক দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকেন।।তারপর বলেন, ‘তা করলাম। কিন্তু এই দেশে থাইকা খালি টাইম নষ্ট। আমি যেইটা কইলাম সেইটা মন দিয়া ভাইব।’
এই সময় বিটু একটা বড়ো বাটিতে মুড়ি, নারিকেল আর গুড় নিয়ে আসে। মাহিনের হাতে দিয়ে বলে, ‘মা দিল। আপনি নাকি খাইতে চাইছিলেন ভাইয়া?’
গতকাল বিকেলেই চাচিকে ও নারিকেল, গুড় দিয়ে মুড়ি খাবার কথা বলেছিল।
এক মুঠো মুড়ি, সাথে একটু গুড় আর এক কামড় নারিকেল মুখে দিতেই সেই পুরনো স্বাদটা টের পায় মাহিন। ওদের এই বাড়িতেই অনেকগুলো নারিকেল গাছ ছিল। মা বেঁচে থাকতে প্রায়ই গাছ থেকে নারিকেল পাড়া হতো। মাহিন নিজেও কতবার নারিকেলের খোসা ছাড়িয়ে দিয়েছে। আজকাল এই একটা অসুখ হয়েছে। শুধু পুরনো কথাই মনে পড়ে। আর সেই সাথে নাফিসার কথা মনে পড়ে। ব্রম্মপুত্রে নদে কতবার ওরা নৌকা ভাড়া করে ঘুরেছে।
আজিজুল মোড়া থেকে উঠে দাঁড়ায়, ‘আমি যাই। গোসল করব।’
চাচা চলে যেতেই বিটু জিজ্ঞাসু গলায় বলে, ‘ভাইয়া, আমার পড়াশোনা শেষ হইতে আর এক বছর বাকি। আমার খুব শখ আমেরিকায় যাওয়ার। তাই ইংরেজি সাবজেক্ট নিয়া পড়তেছিলাম।’
বিটুর কথায় মাহিন হাসে। তারপর হঠাৎ করে বলে, ‘বিটু, এখানে নিরিবিলি কোথায় একটু বসে বসে নদী দেখা যায় বল তো?’
বিটু একটু অবাক হয়। মাহিন ভাই সারাক্ষণ কী যেন ভাবে। চুপচাপ বসেই থাকে। ও একটু ভেবে বলে, ‘একটা জায়গা আছে। গাছ গাছালি ভরা, নিরিবিলি। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনটা। ওইখান থেকে নদীও দেখা যায়। আমি মাঝে মাঝে ওইখানে যাই।’
কথাটা বলেই বিটু জিভে কামড় দেয়। এখন ভাইয়া যদি ওকে পাল্টা জিজ্ঞেস করে ও কেন প্রায় ওখানে যায় তাহলেই যে গোমর ফাঁস হয়ে যাবে। শিউলিকে নিয়ে ও মাঝে মাঝে বোটানিক্যাল গার্ডেনে গিয়ে চুপচাপ বসে থাকে। মানে ও চুপচাপ থাকে, আর শিউলি কথার ফুলঝুরি ছোটায়। তা শিউলি অনেক কথা কইতে পারে। ওর সব বিষয়েই জ্ঞান। ভাইয়ার এই চুপচাপ থাকার ব্যাপারটা নিয়ে ওর সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।
মাহিনেরও হঠাৎ করেই জায়গাটার কথা মনে পড়ে যায়। একবার ঘোর বর্ষায় নাফিসাকে নিয়ে ও বোটানিক্যাল গার্ডেনে গিয়েছিল। বড়ো একটা রেনট্রির নিচে ওরা ঘন হয়ে দাঁড়িয়েছিল বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য। কিন্তু একটা সময় টের পেল নাফিসার মুখের উষ্ণ নিশ্বাস ওর গায়ে পড়ছে। দুজন দুজনকে ঝাপটে ধরেছিল। সেই প্রথম চুমু খাওয়া। নাফিসা থরথর করে কাঁপছিল। সেদিন রাতে নাফিসার শরীর কাঁপিয়ে জ্বর এসেছিল। তিন দিন বাদে সেই জ্বর সেরে যখন উঠল ততদিনে নাফিসা লাজুক লতা। ওকে দেখলেই কেমন চোখ নামিয়ে নিত।
‘ভাইয়া, আজ যাবেন? গেলে দুপুর দুইটা সময় যায়েন। দুপুর দুইটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত খোলা থাকে বোটানিক্যাল গার্ডেন’, বিটু তথ্য দেবার ভঙ্গিতে কথাটা বলে।
মাহিন মাথা নাড়ে।
দুপুরে ভাত খেয়ে সবাই যখন একটা ভাতঘুম দেবার আয়োজন করছিল ঠিক তখন মাহিন একটা রিকশা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। এগুলোকে অটোরিকশা বলে। সেবার যখন দেশে এসেছিল তখনও পায়ে টানা রিক্সা ছিল। এখন সব ব্যাটারি চালিত রিক্সা। পঙ্খীরাজের মতো ছোটে। এই রিক্সাওয়ালাটা অবশ্য বেশ ধীরে ধীরেই চালাচ্ছে। শীতের দুপুরে শহরটা ফাঁকা। বাতাসটা গায়ে একটা মিষ্টি আদর বুলিয়ে দিচ্ছে। প্রিয় শহর যেন চুপিচুপি ওর কষ্টের কথা শুনেছে। তাই মায়ার আদর বুলিয়ে দিচ্ছে।
আধা ঘন্টার মতো লাগে। ক্যাম্পাসের ভেতরেই। জয়নুল আবেদীন অডিটোরিয়াম পার হয়েই বোটানিক্যাল গার্ডেনেটা। টিকেট কেটে ও ভেতরে ঢুকতেই সবুজ গাছ গাছালি ওকে যেন স্বাগত জানায়। এখনও গাছের পাতা ঝরা শুরু হয়নি। গাছগুলো এখনও সবুজ পাতায় ভরা। লাল ইটের সরু একটা রাস্তা দিয়ে ও হাঁটতে থাকে। কত বাহারি রকমের গাছ। একটু খেয়াল করতেই ও গাছের উপর ছোট ছোট মাটির কলস দেখতে পায়। পাখির নিরাপদ বাসা। চারপাশটা নিঝুম। গাছের ফাঁকে বেঞ্চিতে কিছু যুগলকে বসে গল্প করতে দেখা যায়। বিটুও বুঝি এমন গল্প করতেই আসে।
অনেকটা পথ পেরিয়ে একদম শেষ সীমায় আসতেই ব্রহ্মপুত্র নদটা দেখতে পায়। পানি শুকিয়ে এদিকটায় এখন একদম খালের মতো। রঙিন পাল তুলে কিছু নৌকা চলছে।
মাহিন এবার অনুসন্ধিৎসু চোখে সেই রেনট্রি গাছটা খোঁজে। এদিকটাতেই তো ছিল। যার নিচে একসময় দাঁড়িয়ে ও প্রথম চুমুর স্বাদ পেয়েছিল।
খুঁজতে গিয়ে ও হঠাৎ করেই থমকে যায়। চোখ কুঁচকে সামনের মেয়েটার মুখ দেখার চেষ্টা করে। মেয়েটা মোবাইল ক্যামেরা তাক করে একটা গাছের ছবি তুলছে। এখান থেকে মুখের একটা পাশ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু তবু্ও এই মুখ চিনতে এত বছর পরে এতটুকু অসুবিধে হয় না। নাফিসা!!! কিন্তু ও এখানে কেন?
পায়ে পায়ে কাছে এগিয়ে যায়। তারপর আলতো গলায় ডাকে, ‘নাফিসা, তুমি এখানে?’
নাফিসা একটা অশোক গাছের ছবি তুলছিল। কেউ একজন ওর নাম ধরে ডাকতেই মোবাইল ধরা হাতটা কেঁপে যায়। ধীরে ধীরে মুখ ঘুরিয়ে তাকাতেই ওর চোখ বড়ো বড়ো হয়ে যায়। টের পায় নিশ্বাস কেমন ভারী হয়ে আসছে। তার মানে ওর অনুমান ঠিক ছিল। মাহিন ময়মনসিংহ এসেছে!
ও কোনোমতে বলে, ‘মাহিন, তুমি!’
মাহিন হাসে, ‘আমারও তো একই প্রশ্ন। কদিন আগেই আমি আমেরিকা থেকে এসেছি। কিন্তু তুমি এখানে কী করছ?’
নাফিসার অবাক লাগছে। কেমন স্বাভাবিক ভাবে কথা বলছে মাহিন। যেন ওদের মাঝে কিছু হয়নি। পুরনো বন্ধুর মতো হঠাৎ দেখা হওয়ার উচ্ছ্বাস যেমন হওয়া উচিত ঠিক তেমন। অথচ ওদের সম্পর্কটা তো সহজভাবে শেষ হয়নি। মাহিন যেদিন ওই আমেরিকার মেয়েটাকে বিয়ে করল সেদিন ও শহরের কয়েকটা ওষুধের দোকান থেকে অনেকগুলো ঘুমের ওষুধ কিনে খেয়েছিল। মা ব্যাপারটা টের পেয়েছিলেন। সাথে সাথে হাসপাতালে নিয়ে পেট ওয়াশ করে সে যাত্রায় ওকে বাঁচিয়েছিল। যার জন্য ও মরতে বসেছিল সেই মাহিন বিয়ে করে চলে গেল আমেরিকা। আজ তার সাথে ও হেসে হেসে কথা বলছে।
নাফিসার হঠাৎ করেই পুরনো কষ্টের কথা মনে হয়। ও গম্ভীরমুখে বলে, ‘তুমি হয়তো ভুলে গেছ এই শহরটা আমারও। এখানে আমারই তো থাকার কথা। বরং তুমিই এই শহরের নরম মায়া ভুলে চাকচিক্যে ভরা আলোকোজ্জ্বল নিউইয়র্ক সিটিতে চলে গেছ।’
মাহিন বিষণ্ণ হাসে। তারপর বুক কাঁপিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, ‘ভীষণ ভুল করেছি। আর সেই ভুলের মাশুল দিচ্ছি জীবন দিয়ে। এই শহরের সঙ্গে যে বিশ্বাসঘতকতা আমি করেছিলাম ভাগ্য আমাকে টেনে সেই শহরেই আজ ফিরিয়ে দিয়েছে দীনহীন ভাবে। নাফিসা, এবার দেশে ফেরার পর ভেবেছিলাম তোমার কাছে গিয়ে দাঁড়াব। করজোড়ে ক্ষমা চাব। সে তুমি ক্ষমা করো বা নাই করো। আমি অন্যায় করেছি, ভীষণ অন্যায়।’
শেষ দিকে কথা বলতে গিয়ে মাহিনের গলা ধরে যায়, চোখ ভিজে যায়। আর নাফিসা টের পায় একটু আগের ওর সব রাগ, দুঃখ সব কেমন মোমের মতো গলে যাচ্ছে। মাহিনের গালে কেমন খোঁচা খোঁচা দাড়ি হয়েছে৷ মাথায় বাউণ্ডুলের মতো চুল। একটু স্বাস্থ্য হয়েছে কিন্তু সেই আগেরমতোই সুন্দর।
নাফিসা একটু কাছে সরে আসে। উদবিগ্ন গলায় বলে, ‘কী হয়েছে তোমার মাহিন? অমন করে বলছ কেন?’
মাহিন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, ‘সত্যিই তুমি শুনতে চাও?’
নাফিসা আকুল গলায় বলে, ‘হ্যাঁ মাহিন।’
ওরা হেঁটে গিয়ে সামনের একটা বেঞ্চিতে বসে। কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে, ‘আমেরিকা যাবার লোভেই আমি তূর্ণাকে বিয়ে করতে রাজি হই। তাই সেদেশে যাবার পর ওর ব্যবহার তেমন কষ্ট দিত না। নিজের মতো চলতে চাইত। আমার নিজের তখন কোনো আয় রোজগার নেই। এখানকার ডিগ্রি ওখানে কোনো কাজে লাগে না। ও বলল ওখানকার ডিগ্রি নিতে। তা ওদেশে ডেন্টালে পাশ করা খুব শক্ত। তাও আমি মাটি কামড়ে পড়াশোনা করলাম। অনেকটা বছর লেগে গেল সেসব শেষ হতে। এর মাঝে মেয়ে হলো। পাশ করার পর আমি সত্যিকারের একটা মুক্তির স্বাদ পেলাম। ভালো একটা হসপিটালে কাজ পেলাম। সম্মান, টাকা পয়সা সব একসাথে ধরা দিল। কিন্তু তূর্ণার সঙ্গে আমার যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল সেটা আর কখনোই ঘুচেনি। সেই প্রথম থেকেই ও আমাকে খুব তাচ্ছিল্য করত। কথায় কথায় শোনাত আমেরিকায় আসার লোভেই ওকে বিয়ে করেছি। যদিও কথাটা সত্য ছিল কিন্তু বারবার শুনতে শুনতে মন তিতি বিরক্ত হয়ে গিয়েছিল। তাই যখন আমি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হলাম তখন আমিও উত্তর দিতে শুরু করলাম। একটা সময় সম্পর্কটা এতটাই বিষিয়ে গেল যে আর একসাথে থাকা সম্ভব হলো না। সব ছেড়ে চলে এলাম। সাথে আমার কলিজার টুকরো মেয়েটাকেও। নাফিসা, তোমার সাথে করা পাপের শাস্তি আমি পেয়েছি। পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমি যেমন লোক করেছিলাম তেমন শাস্তি পেয়েছি।’
নাফিসা মন খারাপ করে ওর কথাগুলো শুনছিল। আমরা মানুষ হয়তো সব হারিয়ে বুঝতে পারি জাগতিক পাওয়াটাই সব সুখ না। মনের সুখ মনে না খুঁজে আমরা বনে গিয়ে খুঁজে বেড়াই। কী হতো সেদিন মাহিন ওকে বিয়ে করত। আজ সব হারিয়ে ওর সামনে এসে দাঁড়িয়েছে ক্ষমা চাইতে। আজ ক্ষমা করলেই কী আর না করলেই কী। সময়ের স্রোতে জীবন এতটাই এগিয়ে গেছে যে এখন পেছন ফিরে তাকাবার কোন অবকাশ নেই।
নাফিসা ওকে সান্ত্বনা দেবার গলায় বলে, ‘যা হবার হয়েছে। হয়তো বিধাতা এটাই কপালে লিখে রেখেছিলেন। তুমি দেখে শুনে আরেকটা বিয়ে করো। সব বার যে একই রকম হবে তা তো নয়।’
মাহিন ম্লান হাসে, তারপর বলে, ‘তোমার খবর কী বলো। শুনেছিলাম ইঞ্জিনিয়ার ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে। তা এখন কটা বাচ্চা তোমার?’
নাফিসা হেসে বলে, ‘এক মেয়ে আর এক ছেলে। ওখানকার একটা হাই স্কুলে পড়াই। এই তো জীবন বেশ সুখেই চলে যাচ্ছে।’
শেষের কথাটা ইচ্ছে করেই বলে নাফিসা। মাহিন কেমন উদাস চোখে ব্রহ্মপুত্র নদের দিকে তাকিয়ে থাকে। সত্যিই তো সবাই বেশ সুখে আছে। শুধু ও-ই একমাত্র অসুখী এই পৃথিবীতে।
(চলবে)
মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান সুবাস
শিমুলতলী, গাজীপুর