রেড রোজ পর্ব-২৯+৩০

0
3

#রেড_রোজ
পার্ট [২৯]
#লেখিকা_ফারহানা_নিঝুম

(কঠোর ভাবে প্রাপ্ত বয়স্ক এবং মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত)

সকাল সকাল পুরো বাড়িতে উৎসা কে নিয়ে হৈচৈ পড়ে গেল। উৎসা কে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না,এই কথাটি ঐশ্বর্যের কানে আসতেই রাগে গজগজ করতে করতে আফসানা পাটোয়ারীর রুমে গেল ঐশ্বর্য।
কাল বিকেলের কথা, উৎসা কিচেনে ছিল। আফসানা পাটোয়ারী ভেতরে গেলেন, এদিকে ঐশ্বর্য কফির জন্য কিচেনে যাচ্ছিল। কিচেনের দরজার কাছে যেতেই আফসানা পাটোয়ারীর কাঠ কাঠ কন্ঠস্বর ভেসে আসলো।

“তুই আর তোর এই প্রেমিকের অস’ভ্যতামো কিন্তু এই বাড়িতে চলবে না উৎসা!”

উৎসা আফসানার কথা শুনে রেগে গেল।
“ভদ্র ভাবে কথা বলো মামী। তুমি আমাকে নিয়ে যা ইচ্ছে বলতে পারো না।”

“একশো বার পারি,যদি বেশি তিড়িং বিড়িং করিস তাহলে জানে মে’রে ফেলব।কেউ কখনও খুঁজেই পাবে না।”

কথা গুলো মস্তিষ্কে হা’না দেয় ঐশ্বর্যের। আফসানা পাটোয়ারী রুমেই বসে ছিলেন, আচমকা হুড়মুড়িয়ে ভেতরে প্রবেশ করলো ঐশ্বর্য।

“মিসেস মহিলা সত্যি করে বলুন উৎসা কোথায়?”

আফসানা পাটোয়ারী কিছুটা চমকে উঠেন।
“উৎসা কোথায় আমি কী করে বলব?”

ঐশ্বর্য দাঁতে দাঁত চেপে বললো।
“দেখুন আপনার ফা’কিং ড্রামা বন্ধ করুন, বলুন উৎসা কোথায়?”

ঐশ্বর্যের চিৎকার শুনে ভয় পেয়ে গেলেন আফসানা পাটোয়ারী।

“ঐশ্বর্য আমি সত্যি বলছি,উৎসা কোথায় আমি জানি না।”

ঐশ্বর্য বেজায় রেগে গিয়ে পাশের ফ্লাওয়ার বাস তুলে ছুড়ে ফেলে দিলো।
“আই সোয়ের উৎসার কিছু হলে আপনাকে জীবিত কবর দেব।”

আফসানা পাটোয়ারী শুকনো ঢুল গিললো, সত্যি তিনি জানেন না উৎসা কোথায়? হয়তো বলেছিল সে, কিন্তু তা শুধু উৎসা কে ভয় দেখাতে।
____________
ঐশ্বর্য পুরো বাড়ি থেকে শুরু করে আশেপাশে অনেক মানুষ কে উৎসার ছবি দিয়ে জিজ্ঞেস করেছে। কিন্তু কেউই বলতে পারছে না উৎসা কোথায়? ঐশ্বর্য ভয়ে সিঁ’টিয়ে গেল। জিসান ঐশ্বর্যের এমনতর অবস্থা দেখে বলে।

“রিক কাম ডাউন।মিস বাংলাদেশী চলে আসবে।”

ঐশ্বর্য জিসানের কলার চেপে ধরে।
“আর ইউ ম্যাড? উৎসা কে কেউ দেখেনি জিসান!রেড রোজ কোথায় আছে আমি সত্যি জানি না। আচ্ছা ওর কিছু হয়নি?”

জিসান আশ্চর্য হয়ে গেল ঐশ্বর্যের আচরণে।
“ব্রো আমাকে সত্যি করে বল তো ইউ লাভ মিস বাংলাদেশী অ্যাম আই রাইট?”

ঐশ্বর্যের মাথা কাজ করছে না,সে উ’ন্মা’দ হয়ে উঠেছে।
“উৎসা চাই আমার, কোথায় সে?”

রাস্তার মাঝখানে এমন চেঁচামেচি শুনে আশেপাশের মানুষ আড় চোখে তাকাচ্ছে ওদের দিকে। জিসান চিৎকার করে উঠল।
“আমার দিকে তাকা,লুট অ্যাট মি। তুই উৎসা কে ভালোবাসিস!”

ঐশ্বর্য প্রায় পাগল পাগল?কী বলবে না বলবে বুঝতে পারছে না!
“টেল মি রিক?তুই মিস বাংলাদেশী কে ভালোবাসিস?”

ঐশ্বর্য চিৎকার করে বলে।
“ইয়েস,আই লাভ হার। ভালোবাসি ওকে,উৎসা কে ভালোবাসি আমি। অনেক ভালোবাসি,উৎসা কে এনে দে তুই। জিসান আই নিড…

“আমি জানি উৎসা কোথায় আছে!”

ঐশ্বর্য উদগ্রীব হয়ে জিজ্ঞেস করে।
“ককোথায় আমার রেড রোজ?টেল মি জিসান?”

“চল আমার সঙ্গে।”

ঐশ্বর্য দ্রুত গাড়িতে বসে গেল। জিসান বাড়ির দিকে যেতে বলে, ঐশ্বর্য বুঝতে পারছে না জিসান আবার কেন বাড়িতে যেতে বলছে?
বাড়িতে পৌঁছানোর পর পরই স্টোর রুমের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো ওরা।
নাসারন্ধ্রে কড়া পারফিউমের ঘ্রাণ আসতেই নড়েচড়ে উঠে উৎসা।সে বুঝতে পারে ঐশ্বর্য স্টোর রুমের দিকেই আসছে। কিন্তু ভেতরে আসার পর ঠিক কী হবে তার সঙ্গে?তা মোটেও আন্দাজ করতে পারছে না সে।

“তুই স্টোর রুমে নিয়ে এলি কেন?”

জিসান সূক্ষ্ম শ্বাস ফেলে বলে।
“ভেতরে গেলেই দেখতে পাবি।”

জিসান নিকির থেকে চাবি এনে দরজা খুলে দেয়, ঐশ্বর্য উঁকি দিতেই হালকা মেরুর রঙের সালোয়ার কামিজ পরিহিত মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ঐশ্বর্য উৎসা কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ঐশ্বর্য পাগলের মতো গিয়ে জাপটে জড়িয়ে ধরে।
“জান জান কোথায় ছিলে?ম্যাড হয়ে যাচ্ছিলাম।”

ঐশ্বর্য আচমকা উৎসার মুখশ্রী হাতের আঁজলায় তুলে এলোপাথাড়ি চুমু খেতে লাগল। উৎসা ঐশ্বর্যের পাগলামি দেখে তম্বা খেয়ে গেল।

“আই লাভ ইউ সুইটহার্ট ,আই লাভ ইউ।আই লাভ ইউ,আই লাভ ইউ।”

উৎসার নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছে, ঐশ্বর্য রিক চৌধুরী তাকে ভালোবাসে!
“আমাকে ভালোবাসেন?”

ঐশ্বর্য উৎসার কপালে গাঢ় চুমু এঁকে দেয়।
“অনেক ভালোবাসি। অনেক অনেক অনেক,আই লাভ ইউ।”

ভালোবাসা কথা গুলো শুনে হৃদয় স্পন্দন বেড়ে গিয়েছে উৎসার। লজ্জায় মিহিয়ে যাচ্ছে সে, সত্যি ঐশ্বর্য তাকে ভালোবাসে! ইশ্ কী লজ্জা?

“ইয়ে ইয়ে ফাইনালি।”

হৈ হৈ করতে করতে ভেতরে ঢুকে এলো কেয়া,নিকি, রুদ্র।মিহি বাইরে দাঁড়িয়ে সবটা দেখছে।
ঐশ্বর্য ফাইনালি ভালোবাসার কথা বলেছে,এটা শুনে সবাই অন্তত খুশি।
নিকি ঐশ্বর্যের উদ্দেশ্যে বললো।
“ভাইয়া সত্যি তুমি আজ অবশেষে বললে।”

ঐশ্বর্য কপাল কুঁচকে নেয়। এতক্ষণ আবেগের ব’শে বললেও এখন হুঁ’শে ফিরেছে।

“ও এখানে কী করেছে? আমি তো বাড়ির প্রত্যেকটি রুম চেক করেছি। তাহলে ও এখানে কী করছে?”

ঐশ্বর্যের প্রশ্ন শুনে সবাই চুপ করে গেল। সবাই মিলে প্ল্যান করেছিল উৎসা কে লুকিয়ে রাখবে,যাতে ঐশ্বর্য স্বীকার করে সে উৎসা কে ভালোবাসে। জিসান প্ল্যান করে ঐশ্বর্য বাড়ি থেকে বের হতেই উৎসা কে স্টোর রুমে থাকতে বলে।

“কী হলো বলো? উৎসা তুমি বলো এখানে কী করে এলে?আর আমি যখন পাগলের মতো খুঁজছিলাম তখন কী কেউ একবারের জন্যও বলেনি তোমাকে?”

উৎসা অসহায় চোখে তাকায় জিসানের দিকে। জিসান ঐশ্বর্য কে বললো।
“ব্রো চিল,তুই আম খা আঁটি নিয়ে কেন টানাটানি করছিস? হোয়াই?”

ঐশ্বর্য তী’ক্ষ্ণ দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।
“কেয়া আমি তোর থেকে জানতে চাই,তুই অ্যাটলিস্ট সবটা বল।”

কেয়া ঐশ্বর্যের রাগ দেখে গড়গড় করে সব বলে দিলো। ঐশ্বর্য উৎসার দিকে তাকাতেই,উৎসা চুপসে গেল।

“দদেখুন আমি তো শুধু….

“চুপ,যা কথা হবে রুমে।”

ঐশ্বর্য আচমকা উৎসার হাত চেপে ধরে টানতে টানতে রুমের দিকে এগুতে লাগলো।
“ভাইয়া কী করছো?”

নিকি রুদ্র কে বললো আটকাতে। রুদ্র চেষ্টা করে, কিন্তু ঐশ্বর্য থামলো না।
“কেউ আমাদের রুমে আসবে না।”

উৎসা ভয়ে কেঁদে উঠলো, সেদিন রাতে ঐশ্বর্যের থাপ্পড় খেয়ে ঘন্টার মতো বে’হুঁ’শ হয়ে ছিলো
“আমাকে ছেড়ে দিন, আমি আপনার সঙ্গে যাবো না। জিসান ভাইয়া আমাকে বাঁচাও। প্লিজ প্লিজ।”

ঐশ্বর্য অগ্নি চক্ষুদয় জ্ব’ল’জ্ব’ল করছে,উৎসা আরো জোরে জোরে কাঁদতে লাগলো।কেউ আসার পূর্বেই ঐশ্বর্য ঠাস করে দরজা বন্ধ করে দেয়।
____
রুম জুড়ে পিনপতন নীরবতা।
বিছানার এক পাশে আড়ষ্ট হয়ে দাঁড়িয়ে আছে উৎসা।হাত পা থরথর করে কাঁপছে তার।

“দেখুন আমি কিন্তু কিছুই……

“হুস কোনো কথা না।”

উৎসা শুকনো ঢোক গিললো, ঐশ্বর্যের কথা গুলো ভয়ংকর শুনাচ্ছে উৎসার কাছে। ঐশ্বর্য এক পা এগুতেই উৎসা আ’তং’কিত স্বরে বলল।

“অ্যাম স্যরি।”

ঐশ্বর্য উৎসার খুব কাছাকাছি এসে দাঁড়ালো।সফটলি উৎসার গালে হাত রাখলো,উৎসা ঘনঘন নিশ্বাস নিচ্ছে। তৎক্ষণাৎ ঐশ্বর্য উৎসার গাল চেপে ধরে, ব্যথায় কঁ’কি’য়ে উঠলো উৎসা।

“আহ্..

“এত টা ষ্টুপিড তুই? ভালোবাসার কথা শুনতে এভাবে গেইম খেললি আমার সঙ্গে?”

উৎসা ঐশ্বর্যের হাত সরানোর চেষ্টা করছে, ঐশ্বর্যের শক্ত হাত নড়াতে পারছে না।

“ব্যথা…

“হোক ব্যথা,যখন আমি কষ্ট পাচ্ছিলাম তখন?হাউ ডেয়ার ইউ?এসব করার সাহস হলো কী করে তোর?”

উৎসা ফুঁপিয়ে কেঁদে দেয়। ঐশ্বর্য ছেড়ে দেয় উৎসা কে। উৎসা ফ্লোরে বসে হাত পা ছড়িয়ে কাঁদতে লাগলো।

“যা করেছি বেশ করেছি। একশো বার বেশ করেছি।”

উৎসার বেশ করেছি কথা টা আ’গু’নে ঘি ঢেলে দেওয়ার কাজটা করলো। ঐশ্বর্য এসে উৎসার কাঁধে সজোরে কা’ম’ড় বসিয়ে দেয়।

“আহ্.. রাক্ষুসে মানুষ ছাড়ুন.. ব্যথা পাচ্ছি আমি!”

ঐশ্বর্য ছাড়লো না, দাঁত বসিয়ে দেয় নিজে। চুলের মুঠি শক্ত করে ধরে হিসহিসিয়ে বলল।

“যা করেছি বেশ করেছি। এরপর আমার সঙ্গে ষ্টুপিড কাজকর্ম করতে আসলে ফলাফল খুব খারাপ হবে।”

“আপনার মত ক্যারেক্টারলেস মানুষ এসব ছাড়া আর কী পারে?”

ঐশ্বর্য বাঁকা হাসলো,উৎসার সামনাসামনি ফ্লোরে বসে।
“আমি না হয় ক্যারেক্টারলেস। আমি মানি এটাই।বাট ইউ…. ক্যারেক্টারলেসের কাছ থেকে আই লাভ ইউ শুনতে ম’রিয়া হয়ে উঠেছে সুইটহার্ট!”

উৎসা ফুঁসে ওঠে।
“কখনও না। ওইটা তো জিসান ভাইয়া বলেছিল বলে। আমি এখুনি গিয়ে সবাই কে বলছি আপনি আমাকে মে’রেছেন!”

উৎসা ত্বরিতে উঠে দাঁড়ালো, ঐশ্বর্য উৎসার ওড়নার শেষ অংশটুকু টান দিয়ে নিজের উপর এনে ফেলল তাকে।

“পা ভে’ঙ্গে দেব। ট্রাস্ট মি সুইটহার্ট যা বললাম এখন তাই করব।”

উৎসা ঐশ্বর্যের কোলে বসে আছে,রাগে দুঃখে ঠাস করে বলে উঠে।

“ছাড়ুন আমায়, অস’ভ্য রিক চৌধুরী। আমি আপনার সঙ্গে থাকব না।”

ঐশ্বর্য উৎসার ফুলে যাওয়া নাকের ডগায় আলতো করে নিজের নাক ঘষে বলে।

“উই আর ম্যারেড সুইটহার্ট, এখন চাইলেও আমার সঙ্গে থাকতে হবে। না চাইলেও থাকতে হবে।আর হ্যাঁ যখন ভালোবাসি কথাটা বলিয়েই নিয়েছো, তাহলে ইটস্ মাই টার্ন।”

উৎসা লাফ দিয়ে কোল থেকে উঠে বসলো।
“মানি না আপনার জার্মানির বিয়ে। আমি কখনও আপনার মত ক্যারেক্টারলেস কে বিয়েই করিনি।”

উৎসা সাফ সাফ বিয়েটা অস্বীকার করছে। ঐশ্বর্য উঠে উৎসার হাত দুটো পিছন থেকে চেপে ধরলো।

“দরকার হলে আবার বিয়ে করব। তোমার দেশী স্টাইলে, ওকে সুইটহার্ট! কিন্তু কিন্তু কিন্তু।এই বিয়ে শেষে কিন্তু এক মিনিটের জন্যেও ছাড় নেই তোমার রেড রোজ।”

উৎসা চমকে উঠে, অন্তর আ’ত্মা শুকিয়ে আসছে।
“করব না বিয়ে, সত্যি সত্যি বিয়ে করব না।”

ঐশ্বর্য উৎসার চুল থেকে স্মেল টেনে নেয়, অদ্ভুত সুবাস।নে’শা ধরে যাওয়ার মতো।

সন্ধ্যার দিকে ড্রয়িং রুমে বড়সড় সমাবেশ বসেছে। বিশেষ করে শহীদ বেশ আগ্রহ নিয়ে বসে আছে, ঐশ্বর্য নিজ থেকে তাকে বলেছে থাকার কথা।সবার সামনে কিছু জরুরী কথা বলবে।
উৎসা কিছুই বুঝলো না,কই ঐশ্বর্য কে দুপুরে দেখে তো বোঝাই গেল না তার কোনো জরুরি কথা আছে কী না?
অদ্ভুত মানুষ, মূহুর্তে মূহুর্তে রূপ বদলায়।
সবাই বেশ আগ্রহ নিয়েই অপেক্ষা করছে ঐশ্বর্যের। মিনিট দশেক পরেই সদর দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে ঐশ্বর্য।
ঐশ্বর্য কে দেখে চোখ আটকে গেল উৎসার,লোকটা সুদর্শন মানতেই হবে। দশ পুরুষের মধ্যে একজন,উৎসার ভাবতেই লজ্জা লাগে এই লোকটা তাকে বিয়ে করেছে!

চলবে…………..।✨

#রেড_রোজ
পার্ট [৩০]
#লেখিকা_ফারহানা_নিঝুম
(কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ)
(কঠোর ভাবে প্রাপ্ত বয়স্ক এবং মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত)

“ঐশ্বর্য তুমি কী বলবে বলছিলে?”

সবাই অপেক্ষা করছিল ঐশ্বর্যের, অবশেষে সে এলো।
ঐশ্বর্য আড় চোখে তাকায় উৎসার দিকে,উৎসা মুখ বাঁকিয়ে নেয়।
শহীদ ঐশ্বর্যের উদ্দেশ্যে বলে।
“ঐশ্বর্য তুমি কি কিছু বলবে?”

ঐশ্বর্য সোফায় গিয়ে বসলো। দৃষ্টি তার সেন্টার টেবিলের উপর।
“দেখুন মিস্টার শহীদ, আপনার সঙ্গে কথা বলার কোনো ইন্টারেস্ট আমার নেই। তবুও মাম্মা তো আবার আপনাকে সম্মান করতো, সেই হিসেবে শুধু একটা কথাই আপনাকে জানিয়ে রাখি।”

সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে কী কথা বলবে তা শোনার জন্য।
ঐশ্বর্য গুরুগম্ভীর স্বরে বলল।
“আমি উৎসা পাটোয়ারী কে মিসেস উৎসা ঐশ্বর্য রিক চৌধুরী বানাতে চাই।আই মিন টু সে উৎসা কে বিয়ে করব।”

বিয়ে? রিতিমত তম্বা খেয়ে গেল উৎসা, আফসানা পাটোয়ারীর দিকে তাকাতেই চোখাচোখি হলো। তিনি অ’গ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
“তুমি সত্যি বিয়ে করতে চাও?”

শহীদের প্রশ্নে বিরক্ত হয় ঐশ্বর্য।
“তো আপনার কী মনে হচ্ছে? আমি কি আপনার সঙ্গে মজা করছি?”

শহীদ কিছুটা বিব্রত হলো। রুদ্র,নিকি, জিসান,কেয়া হৈ হৈ করে উঠলো।কেয়া আবেগের বশে রুদ্র কে হাগ করে ফেলে।
“অ্যাম সো হ্যাপি।”

রুদ্র কিয়ৎক্ষণের জন্য থমকে গেল।কেয়া বুঝতে পেরে সরে গেল।
“স্যরি।”

রুদ্র মৃদু হাসলো।কেয়া ফের বললো।
“খবরটা দারুন ছিল।”

রুদ্র টিপুনি কে’টে বলে।
“স্পর্শটাও দারুণ ছিল।”

কেয়া কিছুটা লজ্জা পায়।

উৎসা সবার মাঝখানে বলে উঠে।
“করব না বিয়ে, আপনি অস’ভ্য রিক চৌধুরী।”

ঐশ্বর্য বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো।তাতে উৎসা পিছিয়ে গেল, দৌড়াতে লাগলো সিঁড়ির দিকে।

“রেড রোজ স্টপ।”

উৎসা থামলো না,ছুট লাগালো, ঐশ্বর্য ফের বললো।
“আই সে স্টপ।রেড রোজ লিসেন।”

শহীদ মনে মনে খুশিই হলো,যাক অবশেষে বড় ছেলে তার বোনের মেয়েকেই বিয়ে করছে।এর মানে ঐশ্বর্য ওদের কাছাকাছি থাকবে।
আফসানা পাটোয়ারী মোটেও এই বিয়েতে সম্মতি দিচ্ছেন না। কিন্তু যেখানে সবাই রাজী সেখানে তিনি কিছু বললে সবাই তাকে চেপে ধরবে।

সফেদ পর্দা ভেদ করে সূর্যের আলো মুখে এসে পড়ছে উৎসার।চোখ মুখ খিঁচিয়ে বন্ধ করে নিয়েছে সে,উঠতে গিয়েও উঠতে পারলো না সে।এমন মনে হচ্ছে কোনো ভারী জিনিস তার উপর আছে। অন্ধকার রুমে অল্প বিস্তর আলোয় উৎসা ঐশ্বর্যের স্নিগ্ধ মুখশ্রী দেখতে পেলো।কী নিষ্পাপ! হয়তো মানুষ ঠিকই বলে ঘুমন্ত অবস্থায় প্রতিটি মানুষকেই নিষ্পাপ মনে হয়। একদম বাচ্চাদের মতো,এই যে এখন উৎসার কাছে ঐশ্বর্য কে নিতান্তই বাচ্চা মনে হচ্ছে।
ঐশ্বর্য উৎসা কে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে আছে। উৎসা মৃদু কেঁপে উঠলো।
“এই যে অস’ভ্য রিক চৌধুরী সরুন। আমার উপর থেকে সরুন।”

ঐশ্বর্য ঘুম জড়ানো কন্ঠে বলে।

“বেইবি সামথিং নিডস্।”

উৎসা অবাক চোখে তাকায় ঐশ্বর্যের দিকে। কত নির্লজ্জ এই লোক।
এই তো কাল রাতেই নিজের রুমে গিয়েছিল উৎসা ঘুমানোর উদ্দেশ্যে। কিন্তু ঐশ্বর্য উৎসা কে গিয়ে নিয়ে আসতে লাগল,উৎসা আসতে না চাইলে এক প্রকার কোলে তুলে নিয়ে এসেছে। এরপর নিজের রুমে এনে সেই বুকে যে শুয়েছে,আর নামার নাম নেই।

“ছিহ্ ছিহ্ কী বলছেন এসব?এই উঠুন আমার উপর থেকে।”

ঐশ্বর্য উৎসার ঘাড়ে নাক ঘসতে লাগলো।
“উফ্ সুইটহার্ট তোমার বডি স্মেল টানে।”

উৎসা থতমত খেয়ে গেল।
“নির্লজ্জ।”

ঐশ্বর্য উৎসার বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছে, এদিকে উৎসা বেচারি এভাবে শুয়ে থাকতে থাকতে ক্লান্ত।

“ছাড়ুন ছাড়ুন। সকাল হয়ে গেছে।”

ঐশ্বর্য ছাড়লো না,উৎসা কে টেনে নিজের পেটের উপর তুলে নেয়।

“বেইবি সামথিং সামথিং।”

উৎসা ঐশ্বর্যের বুকে কি’ল বসিয়ে দেয়।

“এত কিসের সামথিং সামথিং আপনার? ক্যারেক্টারলেস মানুষ, করব না আমি বিয়ে।”

ঐশ্বর্য উৎসার হাতের আঙ্গুলে কা’ম’ড়ে দেয়, মৃদু কঁকিয়ে উঠলো উৎসা।

“উফ্ ব্যথা পাই আমি।”

ঐশ্বর্য সিল্কি চুল গুলো পিছনে ঠেলে দেয়। উৎসার কোমর জড়িয়ে ধরে।

“আমার ফার্স্ট নাইট এখনো হয়নি।আই কান্ট কন্ট্রোল।”

উৎসা ঐশ্বর্যের মুখ চেপে ধরে।

“আরে বেশরম কী বলেন এসব?”

উৎসা ঐশ্বর্যের পেট থেকে নেমে বিছানায় বসলো, নিজের ওড়না টেনে গায়ে জড়ায়। ঐশ্বর্য উঠে উৎসার ওড়না টেনে সরিয়ে দেয়। গলায় মুখ গুজে দিতেই উৎসা ঐশ্বর্যের ভারে কিছুটা কাত হয়ে গেল।

“সকাল হয়ে গেছে রিক চৌধুরী, এবার সরুন।”

ঐশ্বর্য অ্যালার্ম দেখলো,সবে সাড়ে পাঁচ টা বাজে।এটা কী সকাল নাকি ভোর?
“বেইবি এখনও সকাল হয়নি।আরেকটু ঘুমাই?”

উৎসা ঐশ্বর্যের হাত সরিয়ে ফলে।
“তো ঘুমান কে মানা করেছে? আমি যাই।”

ঐশ্বর্য উৎসা কে টেনে আবার বিছানায় শুয়ে ওর উপর নিজের শরীরের সমস্ত ভার ছেড়ে দেয়।
“আমার সাথে তুমিও ঘুমাবে সুইটহার্ট।যদি একটুও ডিস্টার্ব করলো তাহলে খেয়ে নেব তোমাকে।”

উৎসা হাঁসফাঁস করছে। লোকটা দারুণ নির্ল’জ্জ, ঐশ্বর্য উৎসার ললাটে চুমু খায়। মৃদু কেঁপে উঠলো উৎসা।
_______________
ফুলের গন্ধে মৌ মৌ করছে পুরো বাড়ি,আজ আফসানা পাটোয়ারীর ভাইয়ের বড় ছেলে মাহমুদ আসবে।
সেই হিসেবে আয়োজন করেছেন উনি, এদিকে ঐশ্বর্য সোফায় বসে বসে মিসেস মহিলার কাজ কর্ম দেখছেন। কিন্তু তা বুঝতে দিচ্ছে না আফসানা কে,আই প্যাড হাতে নিয়ে ভিডিও গেইম খেলতে ব্যস ঐশ্বর্য।

উৎসা সবে দুতলা থেকে নেমে এলো,এর মধ্যে আফসানা পাটোয়ারী হু’কু’ম করলো।

“এই শুন তাড়াতাড়ি রান্না চাপা,আজ গেস্ট আসছে।আর গেস্ট রুম পরিষ্কার করে রাখবি।”

উৎসা সূক্ষ্ম শ্বাস ফেলে এগিয়ে যেতে লাগলো, ঐশ্বর্য চোয়াল শক্ত করে নেয়।আই প্যাড সোফার উপর রেখে উৎসার ওড়নার অংশ টেনে ধরে।

“কী হচ্ছে এসব? এটা ড্রয়িং রুম, তোমার বেড রুম নয় ঐশ্বর্য!”

ঐশ্বর্য বাঁকা হাসলো।
“মিসেস মহিলা বেড রুম হোক বা ড্রয়িং রুম বউটা তো আমারই!বাই দ্যা ওয়ে আমার বউ কে হু’কু’ম করার আপনি কে?হো আর ইউ?”

উৎসা ফিসফিসিয়ে বললো।
“প্লিজ ঝামেলা করবেন না।”

ঐশ্বর্য চোখ রাঙিয়ে তাকালো,উৎসা মূহুর্তে চুপসে গেল।

“ঐশ্বর্য তুমি ভুলে যাচ্ছো উৎসা আমাদের উপর নির্ভর, আমাদের টাকায় খায় আমাদের……

“নো নো ভুল বললেন আপনি।”

আফসানা পাটোয়ারী কে থামিয়ে বললো ঐশ্বর্য। আফসানা বুঝলো না ঐশ্বর্যের কথা।
“মানে?”

ঐশ্বর্য তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো।

“আপনি ঠিকই বলেছেন, নির্ভর, খাওয়া সবই ঠিক।তবে এখানে উৎসা নয়, আপনি আছেন। আপনি উৎসার উপর নির্ভরশীল, ওদের বাড়ি, ব্যবসা থেকে শুরু করে সব কিছু ভো’গ করছেন।”

আফসানা দাঁত কটমট করলেন। ঐশ্বর্য তাকে অপমান করছে তা স্পষ্ট।

“আমি আপনাকে লাস্ট ওয়া’র্নিং দিচ্ছি। আজকের পর যদি আমার ওয়াইফ কে কোনো রকম অর্ডার করেন। তাহলে সত্যি খুব খারাপ হয়ে যাবে!”

আফসানা বলে উঠে।

“তাহলে ও কী বসে বসে খাবে?এটাই চাও তুমি?”

ঐশ্বর্য আরাম করে সোফায় বসলো,তবে এখনও উৎসার ওড়না ছাড়লো না।

“আমার ওয়াইফ বসে বসে খাবে না কী কাজ করে খাবে সেটা আপনার দেখার বিষয় না।আর বেশি বাড়াবাড়ি করলে আমিই উৎসার বদলে আপনাকে বাড়ি থেকে বের করে দেব।আর হ্যাঁ ব্যবসা নিয়ে চিন্তা করবেন না,এইটাও আমি সামলে নিতে পারব।”

আফসানা পাটোয়ারী চুপসে গেলেন,এই ঐশ্বর্যের উপর ভরসা নেই তার। দেখা গেল সত্যি সত্যি ওকে বাড়ি থেকে বের করে দেবে।আর এই বাড়ি থেকে বের করে দিলে কী হবে আমার?
আফসানা নানা চিন্তা ভাবনা করে দ্রুত পায়ে দুতলায় চলে গেল।

“আপনি কেন ঝামেলা করছেন?”

ঐশ্বর্য উৎসার ওড়না ছেড়ে দিল।
“নেক্সট টাইম অন্যদের কাজ করতে দেখলে ট্রি’গার পয়েন্টে রেখে শুট করে দেব।”

উৎসা শুকনো ঢোক গিললো। অদ্ভুত মানুষ,পদে পদে রূপ বদলায়।

বিকেলের দিকে বাড়ি সাজানো হয়েছে, খাওয়া দাওয়ার ব্যাবস্থাও সব হয়ে গেছে।কিয়ৎক্ষণ পর মাহমুদ এলো,উৎসা মাহমুদের থেকে সবসময় কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখে। অবশ্যই তার কারণ আছে, মাহমুদের আচরণ অদ্ভুত রকমের। বরাবরই উৎসা কে বাজে ভাবে ছুঁতে চায় মাহমুদ, কিন্তু উৎসা সরে এসেছে।উৎসা এ কথা গুলো আফসানা পাটোয়ারী কে বলেছিল। কিন্তু আফসানা উল্টো উৎসা কে দোষ দিয়েছে।

ড্রয়িং রুমের এক কোণে সোফায় বসে জিসান আর ঐশ্বর্য ভার্সেসে গেইম খেলছিল।নিকি আর কেয়া গল্প করছে,উৎসা দুতলায় আছে।
মাহমুদ আসতেই আফসানা পাটোয়ারী এগিয়ে গেল।

“মাহমুদ আয় বাবা আয়।”

ঐশ্বর্য আড় চোখে একবার দেখলো মাহমুদ কে। কেমন জানি একটা,মুখে দাড়ি ভর্তি।আর আশ্চর্যের বিষয় হলো ওর হাসি, কথায় কথায় ভ্যাবলার মত হাসছে।

“কেমন আছো ফুপি?”

“এই তো ভালো,তুই কেমন আছিস বাবা?”

“আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।ফুপা কোথায়?দেখছি না যে!”

“উনি উপরের রুমেই আছে।তুই আয় ভেতরে।”মাহমুদ ভেতরে গেল,তবে ঐশ্বর্য, কেয়া, জিসান কে চিনতে পারলো না। মাহমুদ কী সোফায় বসলো,নিকি কে উদ্দেশ্য করে শুধায়।
“কী রে নিকি ওরা কী তোর ফ্রেন্ড?”

নিকি জোরপূর্বক হাসার চেষ্টা করে বলে।
“না মা তোমাকে বলেনি?উনি হলেন ঐশ্বর্য ভাইয়া।”

ঐশ্বর্য নাম শুনেই মাহমুদ বুঝতে পারে শহীদের আগের পক্ষের ছেলে।

“ওহ্।”

“আর ওরা হলো ভাইয়ের ফ্রেন্ড।”

মাহমুদ কে সবাই অদ্ভুত চোখে দেখে। ছেলেটাকে দেখেই কেমন অদ্ভুত লাগছে।
তৎক্ষণাৎ উৎসা ড্রয়িং রুমে নেমে এলো। মাহমুদ ওকে দেখে বিশ্রী হাসলো,উৎসা শুকনো ঢোক গিলে।
মাহমুদ উঠে সিঁড়ির কাছে এগিয়ে গেল,উৎসার দিকে হাত বাড়িয়ে বলে।

“উৎসা কেমন আছো তুমি?”

ঐশ্বর্য এসে মাহমুদের হাত ধরে।
“হাই, আমাদের সঙ্গে পরিচিত হও।”

উৎসা আড় চোখে তাকায় ঐশ্বর্যের দিকে, ঐশ্বর্য ইশারা করে যাওয়ার জন্য।উৎসা গুটি গুটি পায়ে সোফার দিকে এগিয়ে গেল। মাহমুদ দেখলো,সে তো উৎসার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিল, কিন্তু মাঝখানে এই ছেলে কেন এলো?

ঐশ্বর্যের থেকে হাত ছাড়িয়ে নেয় মাহমুদ। ঐশ্বর্য গিয়ে নিজ স্থানে বসে পড়লো,একদম উৎসার সামনাসামনি।
দৃষ্টি তার উৎসার দিকে, এদিকে উৎসা ঠিক মতো তাকাতে পারছে না। এলোমেলো দৃষ্টি ফেলছে আশেপাশে।
উফ্ এইই লোক টা অদ্ভুত তো! তাকিয়ে আছে তো আছেই,চোখ সরাচ্ছে না পর্যন্ত।
এবার উৎসার বেশ অস্বস্তি লাগছে,সে উঠে আবার দুতলার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো। ঐশ্বর্য আই প্যাড রেখে উৎসার পিছু পিছু যেতে লাগে। কেয়া ঠোঁট টিপে হাসলো।

“আজব তো এখন কী চোখ দিয়ে গিলে খাবে? আহ্…

ভাবনার মাঝখানে কেউ একজন হেঁচকা টানে নিজের কাছাকাছি নিয়ে নেয় উৎসা কে।
“অস’ভ্য রিক চৌধুরী সবসময় এত টানাটানি করেন কেন?”

ঐশ্বর্য আচমকা উৎসার ওষ্ঠাদয় আঁ’ক’ড়ে ধরে। উৎসা কিছু বোঝার আগেই ঐশ্বর্য অধর চুম্বনে ব্যস্ত হয়ে উঠে। উৎসা ঐশ্বর্যের বাহুতে ধাক্কা দেয়, কিন্তু ঐশ্বর্য নড়লো না। ঐশ্বর্যের হাত বিচরণ করছে উৎসার কোমড়ের ভাঁজে ভাঁজে। উৎসা কেঁপে কেঁপে উঠছে, নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসবে এই বুঝি।
ঐশ্বর্য কে আবারও ধাক্কা দেয় উৎসা। ঐশ্বর্য মিনিট দশেক পর উৎসার ঠোঁট ছেড়ে দেয়, কপালে কপাল ঠেকিয়ে নিঃশ্বাস টেনে নেয়।
ঐশ্বর্য আবারো উৎসার দিকে তাকালো। উৎসা কাঁপছে, এলোমেলো দৃষ্টি ফেলছে ঐশ্বর্যের দিকে। ঐশ্বর্য আবারো অধর চুম্বন করতে চায়, কিন্তু উৎসা ঐশ্বর্যের ঠোঁট চেপে ধরে।
“সুইটহার্ট আরেকবার প্লিজ।”

“ছাড়ুন আমায়।”

“প্লিজ প্লিজ লাস্ট বার প্লিজ প্লিজ।”

চলবে…………..✨।