লেবু পর্ব-০২

0
3

#লেবু

লেখা : অতন্দ্রিলা আইচ

মৃদু ভলিউমে গাড়ির রেডিও চলছে। সাবা আটকা পড়েছে ঢাকার চিরচেনা অসহনীয় যানজটের মুখে। ভাগ্যিস শামাকে সময়মতো ভার্সিটিতে নামিয়ে দিতে পেরেছিল। আজ বিকেলের দিকে তাকে রিপোর্ট করার জন্যে বের হতে হবে। তাই অফিসে একটু দেরি করে পৌঁছালেও অসুবিধা নেই। জানালার কাঁচটা নামিয়ে বাড়িয়ে মুখ বাড়িয়ে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করলো সাবা। সঙ্গে সঙ্গে মেজাজটা বিগড়ে করে। পাশের গাড়ি থেকে বয়স্কমতো একটা লোক উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে।

সাবা বিরক্ত গলায় লোকটার উদ্দেশ্যে বলল, “কী চাচা? মেয়ে মানুষ দেখেননি কখনো?”

লোকটা সঙ্গে সঙ্গে লজ্জা পেয়ে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো। প্রায়ই এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় সাবাকে। এদেশের রাস্তায় একটা মেয়ে গাড়ি ড্রাইভ করছে, এ যেন বিরাট মজার কোনো দৃশ্য। বেশির ভাগ মানুষই মনে করে মেয়েরা ড্রাইভার হিসেবে আনাড়ি। তাদের পেছনে পড়লে এ জীবনেও গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে না।

সেই ধারণা অবশ্য খাটে না সাবার ক্ষেত্রে। মাত্র আঠারো বছর বয়সে ড্রাইভিং শিখেছে সে। সেই থেকে নিজেই নিয়মিত গাড়ি ড্রাইভ করে। এই গাড়িটা তার নিজের টাকায় কেনা। শাফকাতের বিশাল বাড়ির গ্যারেজে তার গাড়ির সংখ্যা অনেক। একেক দিন একেক গাড়ি নিয়ে বের হয় সে। মায়ের জন্যে আলাদা একটা গাড়ি, বোনের জন্যে আলাদা একটা গাড়ি, নিজের সঙ্গে আলাদা অসংখ্য গাড়ি। সাবার জন্যেও একটা গাড়ি বরাদ্দ আছে, তবে সেই গাড়ির দিকে সে ফিরেও তাকায় না।

নিজের জমানো টাকা দিয়ে কিস্তির মাধ্যমে গাড়িটা কেনে সাবা। দেশের অন্যতম ধনী ব্যক্তির স্ত্রী হওয়া সত্বেও প্রতি মাসে মাসে গাড়ির কিস্তির পরিশোধ করছে সে। শাফকাতের কোনো কিছুর ওপরেই নিজের অধিকার স্থায়ী করতে অনিচ্ছুক সাবা। এই মানুষটার সঙ্গে যে আজীবন সে থাকবে না, এ ব্যাপারে সাবা শতভাগ নিশ্চিত।

অফিসের গ্যারেজে গাড়িটা পার্ক করে গলায় আইডি কার্ড ঝুলিয়ে লিফটে করে সাত তলায় চলে গেল সাবা। বাংলার বাতাসের এই বিশাল অফিসের পুরোটা জুড়ে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়। একেক ডিপার্টমেন্টের জন্যে একেক ফ্লোর। ক্রাইম ডিপার্টমেন্ট সাত তলায়। এখানের বড় একটা অংশ জুড়ে তথ্যের বিশ্লেষণের জন্যে সাংবাদিকদের আলাদা আলাদা ডেস্ক। এখান থেকে একটু এগিয়ে গেলেই রয়েছে স্টুডিও। স্টুডিও থেকে বাম দিকে কতগুলো একক কেবিন।

ডিপার্টমেন্টের প্রধান আফসানা করিমের পাশের কেবিনটি সাবার। ডিপার্টমেন্টে জুনিয়র হওয়া সত্বেও কাজের দক্ষতার বলে খুব কম সময়েই বড় বড় দায়িত্ব কাঁধে নিতে শিখেছে সাবা। আফসানার অনুপস্থিতিতে সে-ই কোনো রিপোর্টের অ্যাপ্রুভাল দেয়। যদিও এ নিয়ে অন্যান্য সিনিয়রদের ঈর্ষার শেষ নেই। অফিসে ভেসে বেড়ানো নানা প্রকার গুঞ্জনের একটি হলো, সাবা শাফকাত আলমের স্ত্রী বলেই তাকে এত বড় অবস্থান দেওয়া হয়েছে। অথচ কেউ দেখে না, মেয়েটা একেকটা রিপোর্টার পেছনে দিন-রাত কত খাটাখাটনি করে।

নিজের কেবিনে ঢুকে এডিটিং ডিপার্টমেন্ট থেকে আজ তার যে রিপোর্টটা প্রচারিত হবে, সেটা আনিয়ে নিলো। রিপোর্ট প্রচারের আগে ফাইনাল চেকটা সাবা নিজেই দেয়। আজকের রিপোর্ট ঢাকার ভিক্ষা বাণিজ্য নিয়ে। ভিক্ষাবৃত্তি এ শহরে কিছু কিছু মানুষ করে পেটের দায়, আর কেউ কেউ ব্যবসার খাতিরে। ভিক্ষুকদের নিয়ে বিশাল একটা চক্র কাজ করে। এই চক্রই অসহায়দের মানুষের কাছে হাত পাততে বাধ্য করে। শেষমেশ হাতিয়ে নেয় সেই টাকা।

এই সত্যিটা অনুসন্ধানে যতটুকু উঠে এসেছে, ততটুকুই রিপোর্টে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে সাবা। তার রিপোর্টের সবথেকে আকর্ষনীয় দিক হলো, এগুলোর সবই সাজান-গোছানো। ধাপে ধাপে আসে একেকটা তথ্য।

রিপোর্ট ফাইনালাইজ করে আজ যে রিপোর্টের শুট হবে, সেটা নিয়ে বসলো সাবা। অনুসন্ধানে যতটুকু তথ্য উঠে এসেছে, সবগুলো নিয়ে সাজিয়ে-গুছিয়ে রিপোর্ট লিখছে সাবা।

হঠাৎ দরজায় টোকা পড়লো।

সাবা কম্পিউটারে কী যেন টাইপ করতে করতে বলল, “Come in.”

দরজা খুলে যেতেই একটা ছেলে মাথা বের করে বলল, “সাবা আপু আসবো?”

সাবা এবার চোখ তুলে তাকিয়ে বলল, “আরে সানি! এসো।”

সানি বাংলার বাতাসের বিনোদন বিভাগে ইন্টার্নশিপ করছে। ছেলেটা চুপচাপ, নম্র-ভদ্র বলে অফিসের সবাই তাকে পছন্দ করে। সাবাও তার ব্যতিক্রম নয়।

সাবা হাসিমুখে বলল, “আমার ডিপার্টমেন্টে কী মনে করে?”

সানি তার মুখোমুখি থাকা চেয়ারে বসলো। তার হাতে একটা ল্যাপটপ। ল্যাপটপটা সাবার ডেস্কের ওপরেই রাখলো। তাকে দেখে মনে হচ্ছে কোনো কারণে হয়তো চিন্তিত। কিংবা চিন্তিত না হলেও ঘাবড়ে গেছে।

সানি ইতস্তত করে বলল, “আপু একটা নিউজ করতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু নিউজটা পাবলিশ করার আগে মনে হলো আপনার পারমিশন নেওয়ার দরকার।”

বাংলার বাতাস টিভি চ্যানেল হলেও অনলাইন পোর্টাল হিসেবে তাদের জনপ্রিয়তাও নেহায়েত কম নয়। অনলাইনের নিউজ লেখালিখি করাই মূলত সানির কাজ।

সাবা বিস্ময় নিয়ে বলল, “বিনোদনের নিউজেও এখন আমাকে অ্যাপ্রুভাল দিতে হবে?”

সানি মাথা চুলকে মেঝের দিকে তাকিয়ে রইলো। সাবা যথেষ্ট বুদ্ধিমতী মেয়ে। মুহূর্তের আঁচ করে ফেলল, কোনো একটা ঝামেলা নির্ঘাত বেঁধেছে।

খানিক চিন্তিত সুরে সাবা বলল, “কই দেখি?”

ল্যাপটপটা সানি ঘুরিয়ে দিলো তার দিকে। রিপোর্টের শিরোনাম, ‘প্রযোজকের প্রেমে বিভোর শেহনাজ?’ শিরোনামের শেষে এই প্রশ্নবোধক চিহ্নটা না দিলে নিউজ যেন অসম্পূর্ণই রয়ে যায়। নিজের ডিপার্টমেন্টে এই প্রশ্নবোধক চিহ্নের ব্যবহার সেই কবেই কমিয়ে এনেছে সাবা। সানিকেও এ নিয়ে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, হঠাৎই তার চোখ পড়লো শিরোনামের নিচে থাকা ছবিটার দিকে।

জাকজমকতায় পরিপূর্ণ শুটিং সেট। সেখানেই একটা সোফায় বসে আছে শেহনাজ। এ সময়কার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেয়েটা। তার পরনে গাঢ় নীল টাইট একটা স্লিভলেস জামা, যেটা তার উরু পর্যন্তই আবৃত করে রেখেছে। মেয়েটার মুখে কড়া মেকআপ। তার থেকেও বড় কথা মেয়েটা বসে আছে শাফকাতের গা ঘেঁষে।

ছবিটা দূর থেকে এমনভাবে তোলা হয়েছে যে দুজনের কেউই টের পায়নি কখন ক্যামেরাবন্দি হয়েছে তারা। এক মনে কথা বলে যাচ্ছে একে অপরের সঙ্গে।

শাফকাতের অসংখ্য ব্যবসার মধ্যে একটি সিনেব্লাস্ট মিডিয়া। সিনেমা জগতের জনপ্রিয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। এ দেশের অসংখ্য ব্যবসাসফল সিনেমা তৈরি হয়েছে সিনেব্লাস্ট মিডিয়ার ব্যানারেই। প্রযোজক হিসেবে এক নামে মিডিয়াপাড়ার সবাই চেনে শাফকাতকে। এটাও হয়তো সিনেব্লাস্টের পরবর্তী কোনো সিনেমার শুটিংয়ের সময়ে তোলা ছবি।

সাবার গা বেয়ে শীতল হাওয়া বয়ে গেল। নিজের স্বামীকে অন্য নারীর সঙ্গে এমন অবস্থায় দেখলে একটা মেয়ের কষ্ট হওয়াটা স্বাভাবিক। সাবার মধ্যে কষ্টের লেশমাত্র দেখা গেল না। তার মাঝে যা কাজ করছে তা হলো
রাগ, লজ্জা এবং অপমান।

সানিকে কী বলবে বুঝতে পারছে না সাবা। তার স্বামীর সঙ্গে আরেকটা মেয়ের প্রেমের গুঞ্জন চলছে, ব্যাপারটা তার জন্যে কতটা অপমানজনক!

সাবা সংযত কণ্ঠে বলল, “I’m sorry Sani, is it possible not to publish this news?”

নিজের জন্যে লজ্জাজনক কোনো কথা বাংলার চেয়ে ইংরেজিতে বললে, কিছুটা কম বিব্রতবোধ হয়।

সানি ঘাড় কাঁত করে সায় জানিয়ে বলল, “অবশ্যই আপু।”

“ল্যাপটপটা এখানেই রেখে যাও, আমি একটু পরেই পাঠিয়ে দিচ্ছি।”

সানি চলে যেতেই সাবা অপ্রকাশিতব্য এই রিপোর্টটা প্রিন্ট করে নিলো। মনে মনে বলল, “শাফকাত আলম! আজ আপনার খবর আছে।”

অফিসের কাজ সেরে রিপোর্ট শুট করতে করতে সন্ধ্যা আটটা বেজে গেল। বাড়িতে পা রাখতেই একজন স্টাফকে সামনে পেলো সাবা।

তাকে দ্রুত গলায় জিজ্ঞেস করলো, “তোমার স্যার বাড়িতে?”

স্টাফ মেয়েটি মিষ্টি গলায় বলল, “জি ম্যাম।”

সাবা ভ্রু কুঁচকে বলল, “কতবার বলেছি আমাকে ম্যাম ডাকবে না! আমার নাম সাবা। নাম ধরে ডাকতে না পারলে কিছুই ডাকবে না।”

মেয়েটিকে অবাক দৃষ্টির মাঝে রেখেই গটগট করে হেঁটে ভেতরে চলে গেল সাবা। নিচতলায় শাফকাতের বিশাল স্টাডি রুম। যাবতীয় সব কাজ এখানেই করে থাকে সে। ঘরের অর্ধেকটা জুড়ে বিশাল একটা অফিস টেবিল। টেবিলের এক প্রান্তে একটা মাত্র প্রকান্ড চেয়ার। আরেক প্রান্তে দুটো চেয়ার। এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তের দূরত্ব অনেক। ঘরের এক পাশে চমৎকার কাঁচে ঘেরা বুকশেলফে শাফকাতের পছন্দের কিছু বই। আরেক পাশে আকর্ষনীয় একটা র‍্যাকে শাফকাতের যাবতীয় জরুরি ফাইলপত্র।

অনুমতি না নিয়েই ঝড়ের গতিতে স্টাডি রুমে প্রবেশ করলো সাবা। এসি রুমে সিগারেটের গন্ধ স্থায়ী হয়ে বসে গেছে। শাফকাত এ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে কম্পিউটারের দিকে। এক হাতে মাউস স্ক্রল করছে, আরেক হাতে জ্বলন্ত সিগারেট। সিগারেটের গন্ধে মাথা ধরে গেল সাবার। তবুও লম্বা লম্বা পা ফেলে এগিয়ে গেল শাফকাতের দিকে। সাবার উপস্থিতি শাফকাত টের পেয়েছে ঠিকই, তবে চোখ তুলে তাকানোর প্রয়োজন বোধ করলো না।

সাবা গিয়ে তার পাশে দাঁড়িয়ে প্রিন্ট করা রিপোর্টটা রাখলো টেবিলের ওপরে।

দাঁতে দাঁত চেপে বলল, “এসব কী?”

শাফকাত কম্পিউটারের দিকেই দৃষ্টি আবদ্ধ রেখে বলল, “কোন সব?”

সাবা তীক্ষ্ণ স্বরে বলল, “কষ্ট করে চোখটা তুলে তাকালে দেখতে পারতেন।”

শাফকাত হালকা গলায় বলল, “চোখটা না সাবা, চোখদুটো। বাংলা ভাষার সঠিক ব্যবহার জানো না, জার্নালিজমে টিকে থাকবে কীভাবে?”

সাবা অগ্নিমূর্তি ধারণ করে বলল, “আমার জার্নালিজম নিয়ে আপনাকে চিন্তা করতে হবে না। যা জিজ্ঞেস করেছি উত্তর দিন!”

শাফকাত বিরক্ত মুখেই তাকালো রিপোর্টের দিকে। তার ভাব-ভঙ্গি দেখে অবশ্য মনে হলো না বিন্দুমাত্র চমকেছে সে।

আগের মতোই স্বাভাবিক থেকে বলল, “কী? সমস্যা কোথায়?”

সাবা কঠিন গলায় বলল, “একজন নায়িকার সাথে আপনার ছবি ইন্টারনেটে ঘোরাফেরা করছে। এটাই সমস্যা।”

শাফকাত ভ্রু কুঁচকে বলল, “আমি একজন প্রোডিউসার সাবা। সেই অর্থে এই নায়িকা আমার কলিগ। কলিগের সাথে ছবি তুলতেই পারি। এটা আবার ইন্টারনেটে ঘুরে বেড়ানোর কী আছে?”

সাবা রাগের চূড়ান্ত শিখরে পৌঁছে বলল, “কী আছে বুঝতে পারছেন না?”

শাফকাত সোজাসাপ্টা জানিয়ে দিলো, “না পারছি না। বুঝিয়ে দাও।”

সাবা অগ্নিকণ্ঠে বলল, “মেয়েটা আপনার গা ঘেঁষে বসে আছে, আর আপনি সেটা প্রশয় দিচ্ছেন।”

শাফকাত রহস্যভরা দৃষ্টিতে তাকালো সাবার দিকে। বিয়ের ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও দুজনের মাঝে তেমন একটা কথাবার্তা হয়নি। কিন্তু হাতে গোনা যে কয়েকবার কথোপকথন হয়েছে তাদের কাছে, প্রতিবারই তাদের দুজনের কেউ একজন ছিল ভয়ঙ্কর রেগে। কাল রাতে যেমন শাফকাত রেগে ছিল, আর আজ রেগে আছে সাবা। মেয়েটাকে মাঝেমধ্যে অসহ্য লাগে শাফকাতের। আবার মাঝেমধ্যে উপভোগ্যও লাগে বটে। এই যেমন, এই মুহূর্তে তার রাগটা দারুণ উপভোগ করছে শাফকাত।

রহস্যের হাসি হেসে শাফকাত বলল, “Are you jealous?”

সাবা তাচ্ছিল্যের স্বরে বলল, “In your dreams!”

“তোমাকে স্বপ্নে দেখার সময় আমার নেই।”

সাবা তার সূক্ষ্ম কটাক্ষ অগ্রাহ্য করে গর্জন দিয়ে উঠে বলল, “আমি বলেছিলাম ঢাক-ঢোল পিটিয়ে মানুষকে জানাতে যে আমি আপনার বউ? আমি তো বিয়েটাই মেনে নিইনি! আপনি বিয়ের পরদিনই প্রেস ডেকে দুনিয়ার সামনে আমাকে স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিলেন। পরিচয় যখন দিয়েছেনই, তখন স্ত্রীকে সম্মান করতে শিখুন!”

শাফকাত মৃদু ধমকের সুরে বলল, “এই মেয়ে! আস্তে চিৎকার করো তো! চেঁচামেচি ছাড়া
কোনো কথা বলতে পারো না না-কি?”

“কথা ঘোরানোর চেষ্টা করবেন না শাফকাত আলম!”

“অসম্মানটা করলাম কোথায় সেটাই তো বুঝলাম না।”

সাবা কঠিন সুরে বলল, “দুনিয়ার চোখে যে আমার হাসবেন্ড, সে আরেকটা মেয়ের সঙ্গে প্রেম করে বেড়াচ্ছে! আমার সম্মানটা কোথায় থাকে? আমার চ্যানেলে এই নিয়ে নিউজ হতে যাচ্ছিল। কোনমতে ঠেকিয়েছি আমি। বুঝতে পারছে, কতটা অসম্মানজনক এটা আমার জন্যে?”

শাফকাত একরাশ বিরক্তি নিয়ে বলল, “এই শোনো! আমার এসব প্রেম-ফ্রেমের সময় নেই।”

“থাকলেও আমার কিছুই যায় আসে না। আপনি কার সঙ্গে কী করছেন, তাতে আমার কী? কিন্তু আমার একটাই কথা, দুনিয়ার সামনে যখন আমাকে স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন তখন সেভাবেই থাকুন। মানুষকে দেখিয়ে অসভ্যতা করবেন না।”

শাফকাত আবারও সেই রহস্যের হাসি হেসে বলল, “অসভ্যতা না? সত্যিকারের অসভ্যতা শুরু করলে তো টিকেই থাকতে পারবে না।”

সাবা বিগড়ে যাওয়া মেজাজ নিয়েই বলল, “কেন যে কথা বলতে আসি আপনার সাথে!”

(চলবে)