#হয়তো_তোমারই_জন্য
পর্বসংখ্যা.১১
লেখনীতে:সাদিয়া তাসনিম
(অনুমতি ব্যতীত কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, চাইলে শেয়ার দিয়ে পাশে থাকতে পারেন)
সৌহার্দ্য যে তাকে আবারও চরম বিরক্ত করলো সাঁঝ সেটা ভালো করেই বুঝতে পেরেছে। এই লোকটার মাঝে মাঝে কী যে হয় সাঁঝ বুঝে উঠতে পারে না। এই দেখো সারাদিন তার কত খোঁজ খবর রাখবে আবার মিনিটে মিনিটে এসে বিরক্ত করবে এটা কী কোনো ভাবে নেওয়া যায়? না মোটেও নেওয়া যায় না। ইশশ! সে যদি গিয়ে সৌহার্দ্য চুল গুলো সব একটা একটা করে টেনে তুললে পারতো তাহলে কতই না ভালো হতো। এই লোকটার এতো বকবকানি থেকে সে হয়তো একটু রেহায় পেতো নিজের আনমনে কথাগুলো ভাবতে ভাবতে সাঁঝ নিজের রুমের দিকে পা বাড়ালো। বিকাল কাটিয়ে সন্ধ্যা নেমে এসেছে। তালুকদার বাড়ির মেয়ে-বউয়েরা আবারও নিজের রান্নাঘরের কাজে ব্যস্থ হয়ে পরেছে। সাঁঝ নিজের পরিধেয় জামার ওড়নাটার এক অংশ নিজের হাতের নিয়ে মোচড়া-মোচড়ি করতে করতে নিজের রুমে এসে উপস্থিত হলো। সাঁঝ রুমে এসে রুমের দরজাটা হালকা করে চাপিয়ে দিয়ে তার খাটের দিকে মৃদু পায়ে অগ্রসর হলো এবং ঠান্ডা মস্তিষ্কে সৌহার্দ্যকে সায়েস্তা করার চরম ছক কষতে লাগলো। যদি আজ এখানে প্রহর ভাই থাকতো তাহলে কতই না ভালো হতো। প্রহরের কথাগুলো সাঁঝের মনে পরতেই সাঁঝ আপন মনেই হেঁসে উঠলো। সৌহার্দ্য ভাই যে তাকে ইচ্ছে করে অপমান করার জন্য কোনো না কোনো অজুহাত খুঁজে বের করে তা সব সে প্রহর ভাইয়ের কাছে বলতো আর প্রহর ভাই রাগান্বিত হয়ে সৌহার্দ্য ভাইকে উত্তমমধ্যম দিতেন। আহা! কথাটা কল্পনা করতেই সাঁঝের মুখে এক চরম তৃপ্তির হাঁসি ফুটে উঠলো। সে নিজের আনন্দকে সামলাতে না পেরে বিছানায় বসে বালিশ জড়িয়ে ধরল। বিছানার বালিশ জড়িয়ে ধরে আনমনেই বলে উঠলো,
‘উফ, ওই লোকটা কতটা অসহ্যকর!’
সাঁঝ নিজের মনে মনে কথাগুলো বলতে ভাবতে লাগলেও তার মনের গভীর থেকে একটা অদ্ভুত অনুভূতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠল সৌহার্দ্যের জন্য। সাঁঝ ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা টেনে সৌহার্দ্যের দেওয়া নুপুরটা দেখতে লাগলো। নিজের মনে মনে কিছু একটা ভাবতেই সাঁঝ নিজের ঠোঁট চেপে ধরলো তারপর নিজের পরেই বিরক্ত হয়ে উঠলো সে। নিজের মাথায় নিজেই একটা থাপ্পড় মেরে বিরবির করে বলে উঠলো,
‘না, এসব আমি ভাবছি কেন? উনি তো শুধু মজা করছেন। আর আমি এখানে পাগলের মতো তার কথা নিয়ে ভাবছি!ছিঃ সাঁঝ এই কথাটা সৌহার্দ্য জানতে পারলে আবারও তোকে পঁচাবে গাধী।’
সাঁঝ আপন মনে কথাগুলো বিরবির করে নিজের মাথা ঝাঁকিয়ে নিজের চিন্তাগুলো সরানোর চেষ্টা করল। যখন দেখলো সে সত্যি সত্যি এই চিন্তাগুলোর মধ্যে ডুব দিয়েছে তখন সে নিজের গালে আস্তে করে থাপ্পড় দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে ড্রয়িং রুমে চলে গেলো।
সৌহার্দ্য চায়ের শেষ চুমুক দিয়ে ফুঁস করে হাসল। সাঁঝের বিরক্ত মাখা মুখটা তার মনে বারবার ভেসে উঠছে আর সে নিজের মতো হেঁসে উঠছে। মেয়েটা যতই বিরক্ত হোক না কেন তার সেই অভিব্যক্তি সৌহার্দ্যের কাছে যেন এক অন্যরকম আনন্দের। ” পাগল একটা।” নিজের মনে সাঁঝকে উদ্দেশ্য করে কথাটা বলেই সৌহার্দ্য হাসে উঠলো। সে জানে সাঁঝ তাকে দেখতে পারে না, কথায় কথায় তাদের ঝগড়া লাগে। সে ডান বললে মেয়েটাকে বাম বলতেই হবে কিন্তু তবুও সাঁঝ রেগে যাওয়ার পর ওর এই ছোট ছোট প্রতিক্রিয়া সৌহার্দ্যের মনকে অজানা এক আনন্দে ভরিয়ে তোলে তাই সৌহার্দ্য না চায়তেও সাঁঝকে রাগিয়ে তোলে। নিজের চিন্তার মধ্যেঔ হঠাৎই সৌহার্দ্য সিরিয়াস হয়ে যায়।কিন্তু সাঁঝের বিরক্ত মাখা মুখটা তার মনপ পরতেই সৌহার্দ্য আনমনে বলে উঠে, ‘তোর কী হলো রে সৌহার্দ্য? তুই তো গেলি রে।’
.
.
সেদিন সন্ধ্যার পরে সাঁঝ তার সৌহার্দ্যের সামনে যায়নি এমনকি খাওয়ার সময়ও যখন সৌহার্দ্য খেতে এসেছিলো তখন সে আর নিচে নামেনি। সকালের আলো জানালা দিয়ে পড়তেই সাঁঝ ঘুম থেকে উঠে বসল। আজ তার মনটা বেশ ফুরফুরে। কালকের ঘটনাগুলো সে নিজের মন থেকে সরিয়ে নিয়েছে এবং মনে মনে এটাও নিয়ত করে নিয়েছে যে সে আর সৌহার্দ্যের সঙ্গে কোনো ঝামেলায় জড়াবে না।সাঁঝ চটপট ফ্রেশ হয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে পরিপাটি করে বাহিরে যাওয়ার পরিকল্পনা করলো এবং মনে মনে বিরবির করতে লাগলো” আল্লাহ প্লিজ এই সৌহার্দ্য সাথে যেনও দেখা না হয়,প্লিজ, প্লিজ ” কিন্তু ভাগ্যের কী নিষ্ঠুর পরিহাস! সাঁঝ বারান্দায় গিয়ে দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই দেখতে পেলো সৌহার্দ্য বাগানের গেটের কাছে দাঁড়িয়ে আছে। তার চোখে চশমা আর হাতে একটা বই।সৌহার্দ্য সাধারণ যখনই বই পড়ে তখন চশমা ব্যবহার করে কিন্তু অন্য সময় চশমা ব্যবহার করে না। সাঁঝ বুঝতে পেরেছে মহাশয় তাকে বাঁশ দেওয়াী জন্য এখন বাহিরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পরছে। উঁহু ভাল লাগে না কেলা! সাঁঝ আনমনেই বলে উঠলো। সৌহার্দ্য যেন সাঁঝকে দেখেই দাঁড়িয়ে পরিছে আর সাঁঝের দিকে অদ্ভুত দৃষ্টি দিয়ে রেখেছে। সাঁঝ তাকে দেখে আবারও বিরক্ত হলো তারপর মনে মনে নিজের বিরক্তিকে প্রকাশ করার জন্য বলে উঠলো,
‘ শালার উগান্ডার বাসিন্দা। তুই পড়বি ভালো কথা কিন্তু এই সাতসকালে বাহিরে পড়ার কী আছে? একে তো মেডিকেল চান্স পেয়ে সকলের মাথা কিনে বসে আছে তারপর আবার এই পন্ডিতগিরি ভাবটা উঁহু অসহ্য একটা।’
সাঁ যখন নিজের মনের বিরক্ত চেপে রেখতে না পেরে কথাগুলো মনে মনে বিরবির করছিলো ঠিক তখনই সৌহার্দ্য
নিজের হাতে থাকা বইটা বন্ধ করে সাঁঝের দিকে তাকাল। সাঁঝকে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে উঠলো,
‘সকাল সকাল এত রাগ নিয়ে ঘুম থেকে উঠেছিস কেন?’
সৌহার্দ্যের কথাটা শুনে সাঁঝ নিজের মুখ কুঁচকালো।সৌহার্দের দিকে তাকিয়ে নিজের ভ্রুঁ গুঁটিয়ে নিলো। সাঁঝ সৌহার্দ্যের মুখমন্ডল জুড়ে নিজের সূক্ষ্ম চাউনি নিক্ষেপ করলো তারপর মৃদু কন্ঠে বলে উঠলো,
‘ রাগ নিয়ে কে ঘুম থেকে উঠেছে?’
‘ তুই। আচ্ছা চা খেলো মন ভালো হয়ে যাবে। খাবি?’
সাঁঝ সৌহার্দ্যের কথাটা শুনে নিজের চোখ মুখ কুঁচকে নিলো। কাল সৌহার্দ্যের চা-রের কথা তার মনে পরে গেলো। সে সৌহার্দ্যের দিকে তাকিয়ে মৃদু কন্ঠে বলে উঠলো ,
‘আপনার চায়ের কথা শুনলে তো এখন থেকেই আমার মাথা ঘুরতে শুরু করে।’
সৌহার্দ্য সাঁঝের কথাটা শুনে শব্দ করে হেসে ফেললো তবেও সাঁঝের সামনে নিজের ঠোঁট চেপে বলে উঠলো,
‘ আহা! আমার সাঁঝবাতি রাগ করো না। বল চা খাবি নাকি?’
সাঁঝ এবার আর নিজেকে থামাতে পারল না। সৌহার্দ্যের এমন শব্দ করে হেঁসে ওঠাটা তার কাছে বিরক্ত লাগলো। সে গম্ভীর হয়ে বলে উঠলো ,
‘ আচ্ছা আপনার সমস্যাটা কী?সবসময় আমার পিছনে লাগেন। আমি আপনার সঙ্গে ঝগড়া করতে চাই না ভাইয়া। প্লিজ, আমাকে আমার মতো থাকতে দিন। তা না হলে কখন কী বলে দিবো আর আপনি কষ্ট পাবেন তখন আবার বাড়ি থেকে চলে যাবেন। সকলে আমাকে ভিলেন বানিয়ে দিয়ে বকাবকি করবে তখন।’
সৌহার্দ্য এবার সাঁঝের কথায় একটু থমকে গেল। সে বুঝল, মেয়েটা সত্যি বিরক্ত হয়ে গেছে। তবে বইটা হাতে নিয়ে সৌহার্দ্য সাঁঝের দিকে এগিয়ে আসলো। সৌহার্দ্যকে নিজের দিকে এগিয়ে আসতে দেখে সাঁঝ নিজের চোখ ছোট ছোট করে নিলো। আল্লাহ ভালো জানে লোকটা আবার তাকে কথাগুলো বলার জন্য থাপ্পড় না মেরে বসে সাঁঝ সৌহার্দ্য কাছে আসতেই নিজের চোখ মুখে কুঁচকে বন্ধ করে নিলো। বেশ কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে থাকার পরও যখন সৌহার্দ্য কিছুই করলো না তখন সাঁঝ এক চোখ খুলে সৌহার্দ্যকে দেখবার চেষ্টা করলো এবং সাঁঝ চোখ খোলার সাথে সাথে সৌহার্দ্য সাঁঝের নাক টেনে মৃদু কন্ঠে বলে উঠলো,
‘তুই রাগলে তো আরও সুন্দর দেখাস সাঁঝ। তাহলে এবার থেকে তোকে বেশি বেশি করে রাগাতে হবে দেখি কিন্তু আজ তার বিরক্ত করবো না তোকে। আমার জন্য এক কাপ চা বানাবি দিবি?’
সাঁঝ এখনো সৌহার্দ্যের উপর রেগে আছে তাই সে বিস্মিত হয়ে সৌহার্দ্যের দিকে তাকাল আর মনে মনে কালকের ঘটনাগুলোর স্মৃতিচারণ করতে লাগলো। সে সৌহার্দ্যের দিকে নিজের ভ্রুঁ কুঁচকে বলে উঠলো
‘কাল তো আমাকে দিয়ে আপনরা তেতো চা-টাজোর করে খাওয়ালেন আর এখন আবার আবার আমাকে এই বিষ বানাতে বলছেন?’
সৌহার্দ্য সাঁঝের মুখ থেকে কথাটা শুনে হেঁসে উঠলো। সে সাঁঝের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,
‘হ্যাঁ, কিন্তু এইবার চিনি দিয়ে তুই যেমনটা দুধ চা খাস তেমনই বানাবি।’
সৌহার্দ্যের কথায় সাঁঝের চোখ বড় হয়ে গেল। সে কিছু সময় সৌহার্দ্যের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বলে উঠলো ,
‘আপনি মনে হয় আমাকে নিয়ে মজা করতে এসেছেন।আপনি রং চায়ের বদলে দুধ চা!’
সৌহার্দ্য সাঁঝের কথাটা শুনে ঠোঁট গোল করে বলে উঠলো ,
‘একদমই না। তোর যা ভাবছিস তার উল্টো,আমি তোর বানানো চা খেতে চাই, দেখি জীবনপ কী কী করতে পেরেছিস। আমাকে বাদে তো তুই নাকি সবাইকে চা বানিয়ে খাওয়াইছিস? তাহলে আমি কী দোষ করলাম?’
সাঁঝ এবার আর কিছু বলল না। সে বুঝতে পারলো লোকটাকে চা বানিয়ে না খাওয়ালে লোকটা কিছুতেই তাকে বিরক্ত করা ছাড়বে না তাই সে গজগজ করতে করতে রান্নাঘরে চলে গেল। সাঁঝ চায়ের পানি বসাতে বসাতে নিজের মনের ঝাল মেটাতে লাগল। সে বিরবির করে বলতে লাগলো,
‘লোকটার সাহস তো দেখো! কাল আমাকে দিয়ে নিজের তেতো চা খাওয়ালো, আজ আমার কাছে চিনি দিয়ে চা চাইছে। আহা, কী সুন্দর! আমাকে কী পেয়েছে এ!’
সাঁঝ চুলায় পানি বসিয়ে অন্যনা জিনিসপত্র বের করার জন্য পেছনে ঘুরতেই দেখলো সৌহার্দ্য রান্নাঘরের দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ সৌহার্দ্যকে দেখে বেচারা সাঁঝ লাফ দিয়ে উঠলো। তার বুকটা ধক করে উঠলো সৌহার্দ্যকে এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সে নিজের মুখে বিরক্তর রেখা টেনে বলে উঠলো,
‘আবার কী হলো?’
‘তুই তো একাই চা বানাচ্ছিস, তাই ভাবলাম তোর সঙ্গ দিতে আসি ।’
সাঁঝ নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করে চুপচাপ চাপ সৌহার্দ্যের জন্য চা বানিয়ে দিলো। সৌহার্দ্য তার সাথে টুকটাক কথা বলে গলেও সাঁঝ সেগুলোর কোনো উত্তর দিলো না। সে সৌহার্দ্যের জন্য চা প্রস্তুত করে চায়ের কাপটা হাতে তুলে সৌহার্দ্যের দিকে এগিয়ে দিল। মুখে একটা গম্ভীর ভাব টেনে বলে উঠলো,
‘এই নিন আপনার চা। আর দয়া করে আমার পেছনে আসা বন্ধ করুন ভাইয়া।’
সৌহার্দ্য সাঁঝের মুখটা দেখতে দেখতে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে মৃদু হেসে বলে উঠলো,
‘তুই এভাবে রাগ করিস কেন?’
সাঁঝ এবার আর কোনো উত্তর না দিয়ে রান্নাঘর থেকে বের হয়ে গেল। নিজের রুমে এসে সাঁঝ বিছানায় বসে পড়ল। লোকটা সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে বিরক্ত করেই চলেছে। কাল পর্যন্ত লোকটা বাড়িতে আসছিলো না বলে সাঁঝের কষ্ট লাগছিলো কিন্তু আজ! আজ তো বিরক্ত লাগছে লোকটাকে। ‘এই লোকটা আমাকে পাগল করে ছাড়বে। আমি কীভাবে সামলাবো এই লোকটাকে আল্লাহ?কোনো কথা বললেই গায়ে লেগে যায় আবার কিছু মুখ বুঁজে সহ্যও করা যায় না।’সে নিজের মনে কথা বলতে বলতে হঠাৎ দরজার দিকে তকাতেই চমকে উঠল। সে দেখলো দরজার কাছে সৌহার্দ্য দাঁড়িয়ে আছে। সৌহার্দ্যকে নিজের রুমে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সাঁঝ একটু চেচিয়ে বলে উঠলো,
‘ এখন কী চান আপনি? চায়ে কিছু মিশিয়েছি কিনা তা চেক করার জন্য এনেছেন? ‘
সৌহার্দ্য সাঁঝের কথাটা শুনে দরজা ঠেলে রুমে ঢুকে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে মৃদু কন্ঠে বলে উঠলো,
‘তোকে।’
সাঁঝ এবার পুরোপুরি অবাক। তার মুখে কোনো কথা এলো না। সৌহার্দ্যের মুখ থেকে অপ্রত্যাশিত কথাটা শুনে এক লহমায় তার সম্পূর্ণ শরীর স্তব্ধ হয়ে গেলো ।অদৃশ্যমান লালিমায় চেহারা টকটকে বর্ণ ধারণ করলো,কানের লতি উষ্ম হয়ে উঠল তার।সৌহার্দ্য ধীরে ধীরে তার দিকে এগিয়ে আসলো ঠিক তখনই সুবহা সাঁঝের রুমে প্রবেশ করলো। সুবহা সৌহার্দ্যকে সাঁঝে রুমে দেখে নিজের মুখে হাসির রেখা ফুটিয়ে বলে উঠলো,
‘ ভাই তুমি এখানে? ‘
‘ হুম, সাঁঝ বানিয়ে দিলো তাই ওকে একটু থ্যাংকস বলতে আসলাম সাথে বিরক্তও করতে আসলাম।’
সৌহার্দ্য সুবহার দিকে তাকিয়ে নিজের চোখ টিপ মেরে কথাটা বলে উঠলো। সৌহার্দ্যের কথা শেষ হওয়ার সাথে সাথে সুবহা হেসে উঠলো। সাঁঝ সৌহার্দ্যের কথাটা শুনে এখনো হতবাক হয়ে সৌহার্দ্যের দিকে তাকিয়ে রইল। তার মুখ থেকে একটাও শব্দ বের হলো না। সৌহার্দ্য একবার সাঁঝের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে সুবহাকে উদ্দেশ্য করে বলল,
‘ থাক তোরা আমি বরং যায়।’
সাঁঝ কিছু বলার আগেই সৌহার্দ্য রুম থেকে বের হয়ে গেল।
সাঁঝ স্থির হয়ে বসে রইল। তার হৃদস্পন্দন যেন থেমে গেছে। সৌহার্দ্যের কথাগুলো সাঁঝের আনমনেই মনের ভেতর গভীরভাবে প্রভাব ফেলল।
চলবে…..