গোধূলির শেষ প্রণয় পর্ব-১৯+২০

0
7

#গোধূলির_শেষ_প্রণয়
#লেখনিতে_ছনিয়া_তাবাচ্ছুম_অনি
#পর্ব_১৯

আবরারের ঘুম না আসায় ছাদে এসেছিল কিন্তু ছাদে এসে এমন একটা দৃশ্য দেখতে পাবে কখনো ভাবেনি। ভাইবোনের ভালোবাসা পৃথিবীর অন্যতম এক ভালোবাসা । যা সবার ভাগ্যে থাকে না। আবরারের চোখ দুটো জুড়িয়ে যায় দেখে। ভাই বোনের কোলে মাথা দিয়ে আছে আর বোন মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।অতঃপর মিরাজ ছাদ থেকে নেমে গেলে সে মানহার পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। নিজের পাশে কারোর অস্তিত্ব পেয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে আবরারকে দেখে অবাক হয়। এই অসময়ে তাকে আশা করেনি। তাই জিজ্ঞেস করে,,

” আপনি..?
” হু,

“এখানে কি করছেন?

” ছাদে কি করতে আসে মানুষ নিশ্চয় খেতে আসে না। আবরারের কথার ধরন দেখে একদফা অবাক হয়। তাই ফের বলে,,

” ত্যাড়া ভাবে বলছেন কেন? ভ্রু কুচকে বলে।

” বনবিড়াল

মানহা চকিত নজরে তাকায়। আহ কি ডাক। আবরারের গলায় ডাকটা ভালোই মানিয়েছে। এসবে গলার মেয়ে মানহা নয়। মধুর কন্ঠেস্বরে আবরার ফের বললো,,

” বনবিড়াল আমাকে কি ভালোবাসা যায় না।

মুখ ঘুরিয়ে দুর আকাশ পানে তাকায় সে। বেড়িয়ে আসে এক দীর্ঘ শ্বাস। জীবন টা বড়ই অদ্ভুত। আবরারের প্রশ্নে তার মুখ থেকে সেই একই কথা বের হবে সেটা জেনেও বারবার কেন জানতে চাই? মানহার ভাবনার মাঝেই ফের বলে,

” কি হলো বলছেন না কেন?

” একটা কথা কি জানেন আবরার। আমরা যাকে চাই কখনো তাকে পায় না। আর যাকে চাই না তাকে না চাইতেও পেয়ে যায়। বিষয়টা অদ্ভুত তাই না।

” আমার উত্তর কিন্তু এটা না।

” আপনি কি জানতে চান। আপনাকে ভালোবাসা যায় কি না সেটাই তো। তাহলে শুনুন ভালো তো সবাইকে বাসা যায় কজন কেই বা ভালোবসে আগলে রাখা যায়। আর কজনই বা সেটা পারে বলুন তাচ্ছিল্য হেসে বলে ।

” কে পারলো না আর না পারলো সেটা আমার দেখার বিষয় না। আমি পারি কি না সেটা দেখেন।

” জীবনে একজন কে ভালোবেসে ঠকে গেছি দ্বিতীয় বার আর সেই ভুল আমি করতে পারবো না।

” এতো কঠোর কেন আপনি? আমাকে দেখে কি একটুও মায়া হয় না আপনার?

” বাই দা ওয়ে আপনার না বিয়ে ঠিক হয়েছে তাহলে এসব কথা আসছে কোথা থেকে হ্যাঁ। ফালতু চিন্তা বাদ দিয়ে নিজের বিয়েতে ফোকাস করেন মিস্টার আবরার তেজ।

” আবরার কি বলবে এখন থতমত খেয়ে যায়। নিজেকে সামলে বলে, আপনাকে পেলে আমার আর কাউকে লাগবে না বনবিড়াল প্লিজ এমন হৃদয়হীন হবেন না। খুব কষ্ট লাগে আমার। এই যে এখানটায় (বুকের বা পাশে দিয়ে) খুব যন্ত্রণা করে। আপনাকে হারিয়ে ফেলার।

” আমাকে যদি এত পাবার আকাঙ্খা থাকে তাহলে বিয়ে তে মত কেমনে দিলেন বলুন।

” ওটা জাস্ট আপনাকে__ বাকিটুকু বলতে পারে না তার আগেই থামিয়ে দেয় আবরার কে।

” থাক বলতে হবে না। আমি জানি। আপনারা এমনই। অনেক রাত হয়েছে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন। আসি বলে চলে যায়।

মানহার যাওয়ার পানে একাধারে চেয়ে থাকে। বিড়বিড় করে বলে, এমন নিষ্ঠুর হবেন না বনবিড়াল। এমন হৃদয়হীন আপনাকে মানায় না। আর সেদিনের বিষয়টা একদমই ভালো হয়নি জানি আমি কিন্তু কি করার বলুন আমাকে যে জানতেই হতো আমার জন্য আপনার মনে আদো কোনো অনুভূতি আছে কি না। জাস্ট এতটুকুর জন্যই ওমন একটা প্রাঙ্ক করছিলাম এর চেয়ে বেশি কিছু না। তার জন্য আমি লজ্জিত।

সেই কবেই আবরার তেজ তার মনটা মানহা খান কে দিয়ে ফেলছে। সেটা আর কখনো ফেরত নেওয়া সম্ভব নয়। আপনাকে আমি নিজের করেই ছাড়ব বনবিড়াল ইটস মাই প্রমিজ।










পূর্ব আকাশে সূর্য উদিত হচ্ছে। একটু একটু করে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে তার আলো । সূর্য তার কিরণে চারপাশ টা আলোকিত করে ফেলছে। প্রতিদিনের মতো আজও সুন্দর নতুন এক সকালের সূচনা হয়। মানুষজন তার কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ত হয়ে পরে।

অনেক রাত করে ঘুমানোর ফলে একটু দেড়িতে ঘুম ভাঙে মানহার আর আবরারের। সাতটার পরপরই উঠে পরে মানহা। দ্রুত ফ্রেশ হয়ে ড্রয়িংরুমে চলে যায়। সেখানে প্রায় সবাই আছে নেই শুধু আবরার আর মিরাজ। মানহা গিয়ে তার বাবার পাশে বসে পরে। মিনহাজ খান মেয়েকে দেখে মুচকি হাসেন। ব্যস্ততার কারণে তিনি মেয়েকে সময় দিতে পারেন না। কয়েকটা দিন কাজের খুব প্রেসার ছিল। আপাতত এখন নেই। তাই ভাবছেন দুইটা দিন পরিবার কে সময় দেবে।

মিনহাজ খান মেয়ের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলেন,,

” প্রিন্সেস তোমার দিনকাল কেমন যাচ্ছে । ব্যস্ততার কারণে তোমাকে সময় দিতে পারিনি। বাট এখন আর কাজের প্রেসার নেই তোমাকে অনেক সময় দেবো।

” মানহা মুচকি হেসে উত্তর দেয়, আলহামদুলিল্লাহ বাবা, সময়টা ভালোই যাচ্ছে বলে মুখে আধার ঘনিয়ে আসে কারণ তার সময়টা ভালো যাচ্ছে না। নানান ঝামেলা তাকে আষ্টে পিষ্টে জড়িয়ে রেখেছে। কিছুতেই ছাড়তে চাইছে না। বাবা কে তো আর সেটা বলা যাবে না তাই মিথ্যাে হাসি ঝুলিয়ে মিথ্যা বলতে হলো। মানহার মুখে হাত দিয়ে বলেন,,

” কি হলো মা। তোমার মুখ টা এমন হয়ে গেলো কেন? কিছু কি হয়েছে?

” না বাবা হালকা হেঁসে।
” তাই বলো মা। আমি তো টেনশনে পরে গিছিলাম।

এমন আরও কতশত কথা হয় বাবা মেয়ের মধ্যে। সেখানে কেউ তাদের ডিস্টার্ব করে না। বাবা মেয়ের মাঝে কেউ কাবামে হাড্ডি হতে চায় নি। এক পর্যায়ে কথা বলতে বলতে জোরে হেসে ওঠেন দুজনে৷

আবরার নিচে নামার সময় বাবা মেয়ের সুন্দর এক দৃশ্য দেখে মুখে হাসি ফুটে ওঠে। মানহার হাসির দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।

ড্রয়িংরুমে রুমে থাকা সকলে তাদের দিকে তাকিয়ে পরে। দুজনেই থতমত খেয়ে যায়। তারপর তাদের সাথে অয়ন আর তার বাবা দুজনেই হেসে ওঠে। মানহা সেটা দেখে নিজেও হেসে ফেলে। চারজনের হাসি তে সারা বাড়ি টা ঝনঝনিয়ে ওঠে।

হাসির শব্দ শুনে দু জায়ে কিচেন থেকে ড্রয়িংরুমে আসেন। নিরার কাছে সব দেখতে দিয়ে আসেন। এসে মুগ্ধ হয়ে যান দুজনে। দুজন দুজনার দিকে অবাক হয়ে তাকান। ইশারায় বলে এরা বাচ্চাদের মতো হাসছে কেন?

শাশুড়ীর দেড়ি হচ্ছে দেখে নিরাও বেড়িয়ে আসে। এসে সেও অবাক হয়ে যায়। মুখটা হা হয়ে যায় তার।

মানহার হাসতে হাসতে চোখ পড়ে সিড়ি দিকে। তার দিকে এক ভাবে তাকিয়ে আছে আবরার। দুজনের চোখাচোখি হয়ে যায় । ততক্ষণাত হাসি বন্ধ হয়ে যায় মানহার। দ্রুত চোখ সরিয়ে অন্য দিকে তাকায়।

আবরার ধীরে ধীরে নিচে নেমে আসে।

ইয়াসমিন বেগম এগিয়ে আসতে আসতে বললো,,

” কি ব্যাপার সবাই এমন হাসছো কেন?

” সেটা তুমি বুঝবে না বলেন মিলন খান।

তিনিও মুখ বাকিয়ে কিছু না বলে চলে যান। তানিয়া বেগম জা’য়ের পিছন পিছন চলে যান।

আবরার কে দেখে মিলন খান হেসে ওঠে বলেন,,

” আবরার এসো বাবা। দাড়িয়ে না থেকে বসে পড়ো।

” আবরার মুচকি হেসে মানহার অপজিট সোফায় বসে পড়ে। এটা সেটা জিজ্ঞেস করে মিলন খান সেটা চুপচাপ উত্তর দেয়।

মানহা সবার উদ্দেশ্য বলে, তোমরা সবাই কথা বলো আমি একটু আসছি বলে চলে যায়। মানহার যাওয়ার পানে একাধারে চেয়ে থাকে। আবরার বুঝতে পারে তার বনবিড়াল তাকে ইগনোর করছে। মুহূর্তেই হাসি মুখ টা মিলিয়ে যায়।

চলবে ইনশা আল্লাহ

#গোধূলির_শেষ_প্রণয়
#লেখনিতে_ছনিয়া_তাবাচ্ছুম_অনি
#পর্ব_২০

পৃথিবীর উন্নত দেশ গুলোর মধ্যে আমেরিকা অন্যতম। এজন্য আমাদের অনেকরই স্বপ্ন সেখানে যাওয়া এবং সুখে শান্তিতে বাস করা। বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যেতে সময় লাগে তেইশ ঘন্টা পঁয়ত্রিশ মিনিটের মতো । তবে, কোনো কোনো ফ্লাইটের ক্ষেত্রে আরও বেশি সময় লাগতে পারে। বাংলাদেশ থেকে সরাসরি বিমান আমেরিকা যায় না। বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যেতে প্রথমে ডুবাই নামতে হয়। সেখানে কয়েকঘন্টা বিশ্রাম নিয়ে তারপর আমেরিকা যাওয়া হয়। বাংলাদেশ থেকে আমেরিকার তেরো হাজার দুইশো উনিশ কিলোমিটার। বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা দশ ঘন্টার পার্থক্য।

টানা তেইশ ঘন্টা পয়ত্রিশ মিনিট জার্নি করে পৌঁছে যায় আমেরিকা। সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে সোজা নিজের বাসায় চলে যায় তানশি আর তাসকিন। আমেরিকান সময় সকাল সাত টায় বাসায় পৌছায় দুজনে।
জার্নি করার ফলে দুজনেই খুব টায়ার্ড হয়ে পড়ে। তানশির আম্মু তানভি খান ছেলে মেয়ে কে ঠান্ডা পানি খেতে দেন। পানি খেয়ে দুজনে নিজেদের রুমে ফ্রেশ হতে চলে যায়। ওয়াশরুমে গিয়ে একেবারে শাওয়ার নিয়ে বের হয় তানশি। তারপর বেলকনিতে দাঁড়িয়ে নিজের পরিচিত শহর দেখতে থাকে। খাওয়ার জন্য নিচে থেকে ডাক আসায় খেতে চলে যায়। সকালের খাবার খেয়ে রুমে চলে আসে। তার এখন বিশ্রামের প্রয়োজন। তার বাবা এখন বাসায় নেয়।

মানহা কে ফোন দেওয়ার জন্য ফোন টা হাতে নিয়ে বেলকনিতে চলে যায়। দেখে প্রায় নয়টা বাজতে চললো। তাহলে এখন বাংলাদেশে সন্ধ্যা ছয়টা বাজতে চললো। হোয়াটসঅ্যাপে কল দেয়। বার দুয়েক রিং হতেই রিসিভ করে মানহা। রিসিভ করলে তানশি বলে,

” হাই আপু। কেমন আছো?
” এই তো আলহামদুলিল্লাহ। পৌঁছেছিস কখন?

” এই দেড় ঘন্টা মতো হবে। বাসায় এসে গোসল করে খেয়ে তারপর তোমাকে কল দিলাম।

” ওহ আচ্ছা। তাহলে এখন রেস্ট নে। নিশ্চয় অনেক টায়ার্ড।

” হ্যাঁ আপু। তুমি ঠিক ধরেছো। রাখি তাহলে। আল্লাহ হাফেজ।

” নিজের খেয়াল রাখিস। আল্লাহ হাফেজ।

ভিডিও কলের সামনে দুবোন দুজন কে দেখে। কথা শেষ করে কল কেটে দেয়। মিরাজের কাছে কল দিতে গিয়ে দেয় না কিছু একটা ভেবে।









রাত গভীর। ভাসমান মেঘের আড়ালে থেকেও চাঁদোয়া ঝাড়তে ব্যস্ত চাঁদ। রাতের মৃদু আলোয় তেমন কিছু দেখা যাচ্ছে না। ছাদে দাড়িয়ে দাড়িয়ে বাইরের পরিবেশ টা দেখছে মানহা। সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে। খান বাড়িতে শুধু মানহা’য় সজাগ আছে। তানশি চলে যাওয়ায় সে বড্ড একা হয়ে পড়েছে। বোনটার সাথে সময় কাটাতে পারতো। কত রাত পর্যন্ত জেগে থেকে গল্প করে কাটিয়েছে দুবোন। আজ রাতটায় সে সম্পূর্ণ একা। সারাদিন সবার সাথে কাটালেও রাত টা কাটে বিষন্নতায়।

নয় আজ ভরা পূর্ণিমা। আর নয় আজ কোনো মাধবী রাত। তবুও উঁকি দিয়ে যাচ্ছে চাঁদ। হয় তো শীঘ্রই আসবে ভোর।

__________

ভোরে পাখির কিচির শব্দে ঘুম ভেঙে যায় মানহার। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ওযু করে ফজরের নামাজ টা শেষ করে। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে বাইরের দিক টা দেখে চলে আসে বাড়ির বাইরে। অন্য দিনের তুলনায় আজ বেশি কুয়াশা পড়েছে। কাছের মানুষ গুলো ছাড়া দুরের কাউকে দেখা যাচ্ছে না কুয়াশার আড়ালে। বাইরে কিছুক্ষণ হাটাহাটি করে বাসায় ফিরে আসে মানহা।

কিচেনে কেউ নেই এজন্য নিজে চা বানাতে চলে যায়। এক কাপ চা নিয়ে নিজের রুমে চলে যায়। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ধোঁয়া ওঠা চা খাচ্ছে আর বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে। বেলা বাড়তে থাকে। দেখতে দেখতে সকালের নাস্তার সময় হয়ে গেছে। খান ভিলার সকলে খেতে বসেছে। খাওয়ার মাঝে মিনহাজ খান বলেন,

” আমার একটা কথা বলার ছিল?

” মিলন খান বলেন, হ্যা বল।

” আজ সবাই মিলে ঘুরতে গেলে কেমন হয়। না মানে আমি চাচ্ছিলাম পরিবারের সবাই আজ বাইরে ডিনার করব। তোমাদের কি মতামত।

” মিনহাজ খানের কথা শুনে ছোট বড় সবাই তার দিকে তাকায়। মিলন খান কিছুক্ষণ ভেবে বলেন, সে তো যাওয়ায় যায়। তাতে আপত্তির কি আছে। কি বলিস তোরা সবাই অয়নদের কে বলে।

” সেটা তো ভালোই হবে বাবা। অনেক দিন পরিবারের সবাই কোথাও যাওয়া হয় না।

” ঠিক আছে তাহলে রাতের ডিনার টা রেস্তোরাঁয় করা যাক। মিনহাজ খান কথাটা বলে হাত ধুয়ে টেবিল ছেড়ে ওঠে যান।

একে একে সবার খাওয়া শেষ করে যার যার কাজে চলে যায়। মানহা নিজের রুমে চলে যায়। মিরাজ ভার্সিটিতে। অয়ন বাবার সাথে শো রুমে গেছে তার সাথে আজ এডভোকেট মিনহাজ খান ও গেছেন। নিজেদের শো রুমে কিছু টা সময় দেবেন তিনি।

নিরা মানহার কাছে এসেছে রাতে কি পড়ে ডিনারে যাবে সেটা জানার জন্য। দুজনে বসে এক সাথে কিছুক্ষণ গল্প করে সময় কাটায়। দুজনে কালো কালারের শাড়ি তার ম্যাচিখ হিজাব বেধে যাবে।








দুপুর গড়িয়ে সুন্দর এক বিকেলের উদয় হয়। বিকেল গড়িয়ে রাত। খান বাড়ির সবাই রেডি হয়ে ড্রয়িংরুমে বসে আছে। শুধু নিরা আর মানহা আসেনি। দুজনের এখনো সাজা হয়নি। নিরা মানহা কে জোর করে সাজিয়ে দিচ্ছে। মানহার নিষেধ কে অগ্রাহ্য করে সব করছে। মানহা কে সাজিয়ে দিয়ে আয়নার সামনে ধরে বলে,,

” আপু দেখো তো তোমাকে কেমন লাগছে?

” নিজেকে আয়নায় দেখে কিছু বলে না। তারপর বলে, নিরা নিচে চলো সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। দুজনে এক সাথে নিচে নামে। দুজনকে দেখে মিরাজ মুখ ফসকে বলে ফেলে।

” মাশাল্লাহ! মাশাল্লাহ! কি সুন্দর লাগছে দুজনকে।

সবাই মিরাজের দিকে তাকায়। মিরাজ সবার রিয়াকশন দেখা থতমত খেয়ে যায়। মিরাজের কথা শুনে মানহা নিরা দুজনেই লজ্জা পেয়ে যায়।

মানহার বাবা মা আর অয়নের বাবা মা চারজনে বাড়ির গাড়ি করে যাবে। অয়ন আর নিরা দুজন একটা বাইকে আর মিরাজ মানহা একটা বাইকে। রাতের বেলা বাইকে ঘুরতে খুব ভালো লাগে মানহার কাছে। তাই তো এখন সেটায় করছে।

গাড়ি গিয়ে থামে একটা বড়সড় রেস্টুরেন্টের সামনে। মানহার বাবা সবাইকে নামিয়ে দিয়ে গাড়ি পার্কিং করতে যায়। অয়ন আর মিরাজও দুজন কে নামিয়ে দিয়ে বাইক পার্কিং করতে যায়। মানহা রা সবাই গিয়ে রেস্টুরেন্টের ভিতরে বসে। একটু পর চাচা ভাইপো চলে আসে।

রাত নয় টা বাজতে চললো। তারা একটু দেড়ি করেই বাড়ি থেকে বেড়িয়েছে। ওয়েটার কে ডেকে খাবার অর্ডার দেয়। মানহার বিরিয়ানি খুব পছন্দ তাই তো সবাই চিকেন বিরিয়ানি অর্ডার দেয়। বিরিয়ানির সাথে থাকবে সবার জন্য কোল্ড ড্রিংকস। ওয়েটার বিরিয়ানি আনতেই ঘ্রাণ বের হয়। মানহা মন ভরে ঘ্রাণ টা নেয়। এখানকার বিরিয়ানির স্বাধ খুবই ভালো। ইনারা বিরিয়ানি টা খুব ভালো করে রান্না করেন। সেটা জানেন বলেই মিনহাজ খান সবাইকে এখানে নিয়ে এসেছেন।
সবাই তৃপ্তির সাথে খায়। মিরাজ খাওয়া শেষ করে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে। মিরাজের ঢেকুর তোলা দেখে হেসে ফেলে সকলে।

খাওয়া শেষ বিধায় রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয় সবাই। বাবা মা কে বুঝিয়ে শুনিয়ে বাড়িতে পাঠায় দেয় মানহা আর অয়ন। তারাও মেনে নেয়। ছেলে মেয়ে এখন বড় হয়েছে। তাদের তো একটা প্রাইভেসি আছে।

চারজন মিলে এখন যাবে লং ড্রাইভে। মানহার মন টা ফুরফুরে মেজাজে আছে। আজকের দিনটা খুব স্পেশাল মনে হচ্ছে তার। অয়ন আর মিরাজ বাইক চালাচ্ছে আর দুই রমনী বসে আছে তাদের পিছে। তারা খুব ইনজয় করছে। ঢাকা শহরে রাত দশ টা এগারোটা কে রাত বলে না কেউ কেউ । শহরের প্রতিটা অলিতে- গলিতে ল্যামপোস্টের আলোয় জ্বলজ্বল করেছে রাস্তা৷।।।

ঢাকা শহর টা আজ মন ভরে ঘুরছে তারা। তাদের বাধা দেওয়ার মতো কেউ নেই। চিল মুডে আছে তারা। নিরা আর মানহা দুজনেই খুব খুশি।
বাইক চালাতে চালাতে হঠাৎ করে বাইক থামিয়ে দেয় অয়ন। কারণ তার সামনে আরও একজন বাইক থামিয়েছে।

চলবে ইনশা আল্লাহ

এখানে যতটুকু তথ্য দিয়েছি সেটা গুগল থেকে কালেক্ট করছি।

[ ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ]