তৃষ্ণার্ত প্রেম পর্ব-১২+১৩

0
6
তৃষ্ণার্ত প্রেম
বাংলা রোমান্টিক গল্প | তৃষ্ণার্ত প্রেম

#তৃষ্ণার্ত_প্রেম|১২|
#শার্লিন_হাসান

তাইজ্যিন রুমে পায়চারি করছে। শার্মিলা এটা কী করেছে? নিজেকে আয়নায় দেখলে নিজেরই লজ্জা লাগে্। পরিবারের সবার সামনে
সে কী ভাব তার। আজকে? নিচে যাবে কীভাবে? তখন আবার শার্মিলা রুমে আসে। তাইজ্যিন চটজলদি তাকে কাছে ডাকে। আসতেই অধর জোড়া দখল করে নেয়। শেষ নিজেও কামড় বসিয়ে দেয়। শার্মিলা চিৎকার করে উঠে, “এটা তুমি কী করলে?”

“নজর টিপ দিয়েছি সুইটহার্ট।”

শার্মিলার কান্না পাচ্ছে।। এখন তার কলিগদের সামনে যাবে কীভাবে? হেডকোয়ার্টারের গেলেই তো হলো। সবাই বুঝে যাবে ইনস্পেক্টর শার্মিলা ইবনান শ্রেয়সী শত্রুর সাথে রোমান্স করে। শার্মিলাকে রেগে যেতে দেখে তাইজ্যিন শুধায়, “হিসাব বরাবর। তোমার লজ্জা আছে আমার বুঝি লজ্জা নেই।”

“তোকে আমি খু’ন করে ফেলব।”

“তোমার কথা মতোই এটা জেনো কত নাম্বার পয়েন্ট?”

“এটা ধাপের কোন পয়েন্টে নেই। তুই আর আমায় চুমু খেতে আসলে তোর খবর আছে।”

“তাহলে ঠিক আছে, মেয়ের অভাব পড়বে না।”

কথাটা বলে তাইজ্যিন পা বাড়াতে যাবে, তখন শার্মিলা তার কলার চোপে ধরে বলে, “তোর মেয়ে আমি বের করব। শ্লা বারো রাইস একটা।

শার্মিলার কথায় তাইজ্যিন হাসে। দু’জনে একসাথেই রুম থেকে বের হয়। একটু পর,পর একজন আরেকজনের দিকে কঠোর দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বুঝাচ্ছে, ‘পারলে খু’ন করে ফেলত।’

শার্মিলা যেতে তিথিয়া চৌধুরী তার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে বলে, ” ঠোঁটে কী হয়েছে নাত বউ?”

“চকলেট খাওয়ার সময়,কামড় পড়েছে।”

“তাহলে চকলেট খাওয়া বাদ দিয়ে দাও।”

তিথিয়া চৌধুরীর কথায় শার্মিলা তাইজ্যিনের দিকে তাকায়। তাইজ্যিন নিজের ঠোঁট ঢেকে কোন রকম চেয়ারে বসে। কারোর দিকে তাকায়নি, নিজের মতো করে মাথা নিচু করে নাস্তা খেতে আরম্ভ করে। শার্মিলা কফিতে চুমুক দিতে আঁতকে উঠে। মৃদু চিৎকার করতে তাইজ্যিন চোখ তুলে তাকায়। হাল্কা গরম কফি,কাটা ঠোঁট সব মিলিয়ে জ্বলছে প্রচুর। খাবার খাবে কীভাবে এটা ভেবে শার্মিলার তাইজ্যিনকে খু’ন করতে ইচ্ছে করছে। তাইজ্যিন তাকাতে তিথিয়া চৌধুরী তার দিকেও ব্রু জোড়া প্রসারিত করে। তাইজ্যিন এদিক সেদিক তাকিয়ে খাওয়ায় মনোযোগ দেয়। জেসিয়া ইসলাম শার্মিলার ঠোঁটের জ্বালা কমানোর জন্য আইস দেয়।

শার্মিলা নাস্তা শেষ করে তাইজ্যিনের রুমটা সার্চ করে। তেমন করে ঘেঁটে দেখা হয়নি। কিছু ড্রয়ার চেক করে। তেমন কিছুই পায়নি সে। একটা ফাইল পেতে সেটা নিয়ে বসে পড়ে। ফাইলে তেমন কিছু নেই। হযবরল করে কী সব লেখা যেটা সহজে কেউ ধরতে পারবে না। পরক্ষনে একটা কাগজ পায়। বলা যায় একটা লিস্ট। সেখানে কয়েকটা কোম্পানির নাম,তিন-চারটা ব্যাংকের নাম সাথে কিছু মানুষের নাম ও লেখা আছে। যেগুলোর সিরিয়ালে লাল কলম দিয়ে ক্রস দেওয়া। শার্মিলা বুঝেছে, এই নামের মানুষগুলো তার হাতে খু’ন হয়েছে। ব্যাংক লুটপাট করেছে আর এই কোম্পানি গুলো? শার্মিলা ফোনে পিকচার তুলে নেয়। যে কয়েকজনকে তাইজ্যিন মে’রেছে তাদের মধ্যে তার বাবা বা মায়ের নাম নেই। এদের কয়েকজনের ব্যপারে সার্চ করে গুগলে,কিছু বিজন্যাস ম্যান ও ছিলো। শার্মিলা এসব নিয়ে আর ভাবে না। তাইজ্যিনের হাব-ভাব দেখে মনে হচ্ছে কাউকে খু’ন করবে সে।

তাইজ্যিন বেড়িয়েছে কিছুক্ষণ আগেই। সাথে আছে পারিশ। তাকে দেখার পর থেকেই কেমন মিটমিট হাসছে। তাইজ্যিন বিষয়টা নোটিশ করলেও পাত্তা দেয়না। গম্ভীর স্বরে বলে, “সায়েমকে ধরেছ?”

“ওর রিসেন্ট লোকেশন ট্র্যাক করতে পারিনি। মনে হয়না ওকে আর ধরতে পারব।”

“ও একজন পুলিশ। ওকে ধরলে আমি অনেক কিছু জানতে পারব। বিশেষত, ওই মানুষটা সম্পর্কে যে আমার প্লান জেনে যাচ্ছে। প্লান সব ফ্লপ খাচ্ছে।”

“আরে স্যার খুব শীঘ্রই তাকে পাবো। ও যেহেতু আপনার পেছনে পড়েছে নিশ্চয়ই আপনার সম্পর্কে সব ডিটেইলস সংগ্রহ করবে। আমাদেরকে মুভমেন্ট যদি জেনেই থাকে তাহলে এটাও জানবে, কয়েকদিন পর গুটি কয়েক মেয়ে পাচার হতে যাচ্ছে। ও নিশ্চয়ই তাদের বাচাতে ছুটে আসবে।”

“গুড আইডিয়া। তবে তাইজ্যিন ইশতিয়াক চৌধুরী নারী পাচার করে না, শুধু খু’ন করতেই পছন্দ করে।”

“সে জানি! এসব তো করে…

” এক কাজ করি, ওর ঢেরায় যাই। নিশ্চয়ই ওই লেডিও আসবে। এখন না হোক দুই ঘন্টা পর হলেও।”

★★★

কেটে যায় দুইদিন। চৌধুরী বাড়ীতে সন্ধ্যায় পার্টি রয়েছে। বাড়ির দুই কর্তা আজকে বাড়ি আসবে। তাইজ্যিন দুপুরে বেড়িয়েছে এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্য। তার বাবা আর চাচ্চুকে নিয়ে আসার জন্য।

বাড়ীর গার্ডেনে সুন্দর ভাবে ডেকোরেশন করা হয়েছে। তাইজ্যিনের বাবা তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী এবং তার ছোট ভাই তারাফ আহমেদ চৌধুরী বিকেলের দিকে নিজের বাড়িতে পা রাখেন। তিথিয়া চৌধুরী শার্মিলাকে ডেকে পাঠান কোল্ড ড্রিং নিয়ে আসার জন্য। শার্মিলা সুন্দর ভাবে গোমটা টেনে ড্রিং নিয়ে এসে সালাম দেয় তাঁদের দুজনকে। ড্রিংকের গ্লাস হাতে দিয়ে তোফায়েল আহমেদ চৌধুরীর মুখের দিকে তাকায়। মূহুর্তে ব্রু জোড়া প্রসারিত করে নেয়। তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী শার্মিলাকে দেখে চমকায়। তবে প্রকাশ করে না। তাইজ্যিন পাশে দাঁড়ানো। তখন তিথিয়া চৌধুরী বলেন, “শার্মিলা তাইজ্যিনের বউ।”

“বেশ ভালো।”

তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী বলেন। নিচে থেকে প্রস্থান করে নিজের রুমে অবস্থান করে তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী। শামিম ইমতিয়াজের মেয়ে শার্মিলা ইবনান শ্রেয়সী তো একজন সিআইডি। সে এই বাড়িতে কেন? তাইজ্যিন কী আর মেয়ে ফেলো না? ওকে কেণ বিয়ে করতে গেলো? এই মেয়ে… এই মেয়ে নিশ্চয়ই তার পেছনে লাগবে। তার কোটি,কোটি টাকার কোম্পানি যেগুলো থেকে ড্রাগস বহন করা হয়। এই মেয়ে চাইলে তার ঠিকুজী বের করতে পারবে। চৌধুরীদের নিয়ে মানুষের আগ্রহ বেশী সেজন্য নিজেদেরকে হাইড রাখে তারা। তাদের প্রফেশন ছাড়া ব্যক্তিগত কোন ব্যপার বাড়ির চার দেওয়ালের বাইরে যায় না।

তাইজ্যিন ওকে এখনো বাচিয়ে রেখেছে কেন? সেটাই মাথায় আসছে না তোফায়েল আহমেদ চৌধুরীর। সৈয়দ ইব্রাহিমের আছে ভেবে কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী। সবার টার্গেট সে হলেও আসল লোককে কেউ চেনে না।

রুম জুড়ে পায়চারি করছে শার্মিলা। তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী এখানে কেন? উনি তাইজ্যিনের বাবা। চিন্তায় কিছুই মাথায় আসছে না শার্মিলার। তাইজ্যিন তার সত্যিটা জেনে গেলে কিছুই করতে পারবে না সে। তার দল হালকা। তাইজ্যিনের শক্তি তার তুলনায় বেশী। তখন তাইজ্যিন রুমে প্রবেশ করে। শার্মিলা তার দিকে তাকিয়ে বিরক্ত হয়। তার ঠোঁটে আপনাআপনি হাত চলে যায়। হেডকোয়ার্টারে যেতে পারে না। কোন কাজ হচ্ছে না তার। এই দুইদিনে তাইজ্যিনের থেকে দূরে,দূরেই থেকেছে সে। শার্মিলাকে চিন্তিত দেখে তাইজ্যিন বলে, “রেডি হওনি? গেস্ট চলে আসছে তো।”

“হবো একটু পর।”

“এখনি রেডি হও? আর হ্যাঁ, কোন ওয়েস্টার্ন না, অনলি শাড়ি। তুমি শাড়ি পড়ে পার্টিতে আসবা।”

“ঠিক আছে।”

সোজাসাপটা জবাব দেয় শার্মিলা। তাইজ্যিন হাসি মুখে প্রস্থান করে। করিডোরে আসতেই তারিন তাইজ্যিনকে থামিয়ে দিয়ে বলে, “ভাইয়া বৌদি আজকে আমার সাথে রুড বিহেভ করেছে।”

“কখন?”

“সকালে।”

“কেন?”

“ওই…
কথাটা বলতে গিয়েও থেমে যায় তারিন। তাইজ্যিন ব্রু জোড়া প্রসারিত করে শুধায়, ” থেমে গেলে কেন?”

“না কিছু না। পার্টিতে আসছো তো?”

“হ্যাঁ।”

“আজকে আমার কিছু ফ্রেন্ড ও আসবে।”

তাইজ্যিন জবাব দেয়না। তাড়া দেখিয়ে বিদায় নেয়। বাইরে আসতে চোখে পড়ে সুন্দর ডেকোরেশন। সার্ভেন্টরা সবাই তৈরী। আস্তে,আস্তে গেস্ট আসাও শুরু করে দিয়েছে। তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী এবং তারাফ আহমেদ চৌধুরী গেস্টদের সাথে কুশল বিনিময় করছে।

তাইজ্যিন রুমে এসে রেডি হয়ে নেয়। ব্লাক কালারে নিজেকে সজ্জিত করেছে। তখন আবার শার্মিলা চেঞ্জিং রুম থেকে বের হয়। আজকে সে গোল্ড এ্যান্ড ব্লাক সংমিশ্রণ শাড়ি পড়েছে। ছোট,ছোট চুলগুলো একপাশ থেকে সিঁথি করা। হাল্কা মেক-আপ! ব্যাস শার্মিলা রেডি। সবাই মোটামুটি পার্টিতে এটেন্ড করেছে। তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী তাইজ্যিনকে কল দিয়েছে নিচে যেতে। শার্মিলার জন্য ওয়পট করলেও, এখন একাই যাবে।যাওয়ার আগে শার্মিলা থুতনির ব্লাক কালার তিলটায় অধরের বিচরণ ঘটায়।

তারিন ওয়েস্টার্ন পরিধান করেছে। সাথে তার দু’টো মেয়ে ফ্রেন্ড আছে। তারাও ওয়েস্টার্ন পড়েছে। তাইজ্যিনকে দেখা মাত্রই তিনজন এগিয়ে আসে। তারিনের ফ্রেন্ড, রিয়া এবং ছোঁয়া একসাথেই বলে, “হাই তাইজ্যিন! হোয়াটসআপ?”

“ফাইন!”

ব্যস্ততা দেখিয়ে জবাব দেয় তাইজ্যিন। তারা দুজন কিছু বলতে যাবে তাইজ্যিন পাশ কাটিয়ে চলে যায়। পারিশের সাথে দেখা হতে তাইজ্যিন শুধায়, “ভাই পারিশ, নেয়েরা আমায় চেপে ধরছে তুমি আমার হয়ে সামলে নেও। একটু পর আমার মহারানীর আগমন হবে,আমাকে মেয়েদের সাথে কথা বলতে দেখলে….

” আপনার সন্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে এই তো?”

“কীভাবে? এতে সোজা নাকী?”

“ঠোঁটে কামড় দিয়ে।”

অকপটে বলে দেয় পারিশ। তাইজ্যিন এদিকসেদিক তাকিয়ে বলে, “বুঝেছ। এবার সামলাও।”

তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী মাইক হাতে এনাউন্সমেন্ট করছে তাঁদের নতুন প্রেজেক্ট সাথে আগের প্রজেক্ট তাদের কোম্পানির সফলতা। যখন নতুন প্রজেক্ট নিয়ে কথা শুরু করে তখন আবার শার্মিলার আগমন ঘটে। বেশ দাম্ভিকতার সাথেই এখানে আসে শার্মিলা। অনেকের নজর তার দিকে যায়। তাইজ্যিন এগিয়ে আসতে শার্মিলা তার হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে সামনের দিকে এগোয়। তিথিয়া চৌধুরী শার্মিলাকে দেখে বেশ প্রশংসা করে। তারিন তার ফ্রেন্ডদের সাথে দাঁড়িয়ে তাইজ্যিন আর শার্মিলাকে দেখছে। তখন ছোঁয়া বলে, “এই মেয়েটা কে?”

“তাইজ্যিনের ওয়াইফ।”

“হোয়াট…

মৃদু চিৎকার করে উঠে ছোঁয়া। তখন তারিন শুধায়, ” আস্তে। ওদের বিয়ে হয়েছে দু-মাসের মতো।”

তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী নিজের প্রজেক্টের এনাউন্সমেন্ট ছেড়ে শুধায়, “আপনাদের বলা হয়নি, আমার ছোট ছেলে তাইজ্যিন ইশতিয়াক চৌধুরী বিয়ে করেছে। মিস শার্মিলা ইবনান শ্রেয়সী আমার ডটার ইন ল।”

শার্মিলা ড্রিং হাতে দাঁড়িয়ে। চৌধুরীদের এনাউন্সমেন্ট শোনার মুড নেই। তখন তাইজ্যিন তাকে অনেকের সাথে ইন্ট্রডিউস করায়। বেশীরভাগ তার পেশারই লোক সাথে বিভিন্ন কোম্পানির এমডি, ওনার কিছু আছে গভর্মেন্টের লোক। শার্মিলার মোটামুটি অনেককে আগে থেকে চেনা।

তাদের কথাবার্তার পালা শষ হতে মিউজিক শুরু হয়। কেউ,কেউ ডান্স ও করে। তাইজ্যিন শার্মিলা পাশাপাশি ছিলো। তারিন তাইজ্যিনপর আশেপাশে ঘেঁষার চেষ্টা করলেও পাত্তা পায়নি। ওদের দু’জনকে এতো মিল আর সবার প্রশংসা কানে ভাসতে জ্বলে যায় তারিনের। বেশীরভাগ মানুষ ওদের দেখে একটা কথাই বলেছ, “মেইড ফর ইচ অ্যদার।”

সবার এমন প্রশংসা শুনে শার্মিলা নিজেও মুচকি হাসে। তাইজ্যিনের দিকে তাকায়। সে কথা বলায় মত্ত! কিছুটা দূর থেকেই তাকে পর্যবেক্ষণ করে। ছেলেটা খু’নি তবে তার সৌন্দর্য নারীদের ঘায়েল করার মতো। যাকে এতো নারীর ছোঁয়ার ইচ্ছে সে একান্ত তার। ভাবতে নিজেকে জেনো লাকী মনে হয়। আজকে তাইজ্যিনকে দেখে শার্মিলার অদ্ভূত এক লোভ জাগে সেটা এই মূহুর্তে তাকে চু’মু খেতে ইচ্ছে করছে। নিজের লোভে নিজেই হাসে শার্মিলা। কিছুটা সাইডে এসে দাঁড়ায়। তাইজ্যিন কথা শেষ করে এদিকওদিক তাকায়। শার্মিলাকে খোঁজার জন্য। কিছুটা সাইডে আসতে হাতে টান পড়ে। তাইজ্যিনকে দেখে শার্মিলা হাসে। তখন তাইজ্যিন বলে, “তুমি এই চিপায় কেন?”

“রোমান্সের জন্য চিপাচাপা জায়গাই ভালো মনে হয়। ”

“মানে?”

আকস্মিক ভাবেই শার্মিলা তাইজ্যিনের গালে চুমু খায়। তাইজ্যিনের হাত আপনাআপনি গালে চলে যায়। তখন শার্মিলা শুধায়, “নজর টিপ দিলাম। মেয়েরা তাকিয়ে ছিলো এতোক্ষণ।”

“তোমার লিপস্টিক নিশ্চয়ই আমার গালে।”

“হুম! যাতে মানুষ লজ্জায় তোমার দিকে না তাকায়।”

“মানুষ কী তাকাবে। আমি নিজেই তো লজ্জায় এখন যেতে পারব না।”

“আমার কী দোষ,তুমি তো আমায় শিখিয়েছে কীভাবে গালে,ঠোঁটে, থুতনিতে, কপালে চুমু খেতে হয়।”

শার্মিলার কথা শেষ হতে তাইজ্যিন এক টানে তাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। ঠিক কপাল বরাবর চুমু দিয়ে বলে, “এখন তাহলে,আরেকটু শিখে নেও। যদও,আমিও দিলাম আমার বউকে নজর টিপ।”

#চলবে

#তৃষ্ণার্ত_প্রেম|১৩|
#শার্লিন_হাসান

আকস্মিক ভাবেই শার্মিলা তাইজ্যিনের গালে চুমু খায়। তাইজ্যিনের হাত আপনাআপনি গালে চলে যায়। তখন শার্মিলা শুধায়, “নজর টিপ দিলাম। মেয়েরা তাকিয়ে ছিলো এতোক্ষণ।”

“তোমার লিপস্টিক নিশ্চয়ই আমার গালে।”

“হুম! যাতে মানুষ লজ্জায় তোমার দিকে না তাকায়।”

“মানুষ কী তাকাবে। আমি নিজেই তো লজ্জায় এখন যেতে পারব না।”

“আমার কী দোষ,তুমি তো আমায় শিখিয়েছে কীভাবে গালে,ঠোঁটে, থুতনিতে, কপালে চুমু খেতে হয়।”

শার্মিলার কথা শেষ হতে তাইজ্যিন এক টানে তাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। ঠিক কপাল বরাবর চুমু দিয়ে বলে, “এখন তাহলে,আরেকটু শিখে নেও। যদি,আমিও দিলাম আমার বউকে নজর টিপ।”

বিনিময় শার্মিলা তাইজ্যিনের বুকে আলতো ধাক্কা দিয়ে তাকে সরিয়ে দেয়। পার্টিটা বেশ জাঁকজমকপূর্ণ ভাবেই হচ্ছে। তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী ড্রিং হাতে তার গেস্টদের সাথে কথা বলছে। শার্মিলা পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো। তখন তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী নিজে তাকে ডাকে। শার্মিলা জেনো এটাই চেয়েছিলো। তোফায়েল আহমেদ চৌধুরীর পাশে দাঁড়ানো মানুষটি শুধায়, “আপনার ছেলে মাশা-আল্লাহ খুঁজে আকাশের চাঁদ পেয়েছে।”

“আকাশের চাঁদ নয় ওটা, পুরাই ডেঞ্জারাস।”
মনে,মনে শুধায় তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী। তবে মুখশ্রী তে প্রকাশ না করে বলেন, “হ্যাঁ,মাশা-আল্লাহ, ওদের জন্য দুয়া করবেন।”

“আংকেল আপনাদের নেক্সট টার্গেট, শিশু নাকী নারী? বললে খুব উপকার হতো ”

চটজলদি মাঝখানে কথাটা বলে বসে শার্মিলা। অপমানে মুখ থমথমে হয়ে যায় তোফায়েল আহমেদ চৌধুরীর। তার সামনে থাকা গেস্টরা ব্রু জোড়া প্রসারিত করে বলে, “কিসের নারী? মানে কী চৌধুরী সাহেব? আপনার ডটার ইন ল এসব কী বলছে?”

“স্যরু মিস্টার। বোধহয় এলকোহল মেশানো ড্রিংটাই ও করেছে।”

“মোটেও না ফাদার ইন ল। আমার এলকোহলে অভ্যাস আছে। এতো কিছু এনাউন্সমেন্ট করলেন এখন এটা করলেও ভালো হতো। এটলিস্ট ওই মানুষগুলোকে….

” তাইজ্যিন…

চিৎকার করে ডাকে তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী। একহাতে শার্মিলাকে টেনে কিছুটা সাইডে এনে ছেড়ে দেয়। তখন শার্মিলা ও কন্ঠে তেজ বৃদ্ধি করে বলে, “চেঁচাবেন না শাশুড়ীর বর। আপনাকে আমি হারে,হারে চিনি। আমাকে দেখে মুখটা একবারে হাওয়া মিঠাইয়ের নতো নুইয়ে গেছে। খেয়াল করেছি আমি।”

“বাজে কথা ছাড়। তোর বাবার কী অবস্থা করেছি এর থেকে ভয়ংকর অবস্থা তোর করবো। আচ্ছা তোকে তো মেরে ফেলার কথা ছিলো। তাইজ্যিন তোকে বিয়ে করলো কেন?”

“আমার বাবার মৃত্যুর থেকেও ভয়ংকর মৃত্যু দেব আমি আপনাদের। আপনার সব প্রোপার্টি আমি মাটিতে মিশিয়ে দেব ছাই করে। কথাটা মনে রাখবেন।”

“তার আগে তুই নিজেই ছাই হয়ে মাটিতো মিশে যাবি। ব্যবস্থা করছি আমি।”

কথাটা শেষ করে তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী প্রস্থান করে। শার্মিলার রেগে মাথা ফেটে যাচ্ছে। তার মানে তার বাবার আসল খু’নি এই চৌধুরী। তাহলে এই রাতে তার ছেলে আর ছেলের বউয়ের খু’নটা কে করলো? সেসব নিয়ে তো তাঁদের মাথা ব্যথা নেই। জেসিয়া ইসলাম ও তাইজ্যিনের বড় ভাইকে নিয়ে তেমন কিছু বলেনি৷

তাইজ্যিনকে তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী ডেকে পাঠান। হাতে ড্রিং এর গ্লাসটা নিয়েই এগিয়ে যায় সে। ব্যস্ত কন্ঠে বলে, “কী হয়েছে পাপা?”

“কী আর হবে। তাইজ্যিন তোমাকে বলা হয়েছে ওই মেয়েকে মে’রে ফেলতে আর তুমি কীনা ওকে বিয়েই করে নিলে।”

“বাজে কথা ছাড়ো। ও এখন আমার স্ত্রী। ওকে মারব কেন?”

“ওর থেকেও সুন্দর মেয়ে পাবি তুই। ওকে বিদায় কর আমার বাড়ী থেকে।”

“পাপা তুমি রেগে আছো কোন কারণে?”

“ওই মেয়ে আমাকে গেস্টদের সামনে অপমান করেছে। বল, নেক্সট টার্গেট কী নারী পাচার নাকী শিশু পাচার। আমার সন্মান কোথায় থাকলো বল তো?”

“কুল! তোমাকে অপমান করার শাস্তি ওকে আমি দেব।”

“শাস্তি না ওকে গাড় ধাক্কা দিয়ে আমার বাড়ীর বাইরে ফেলে দে।”

তাইজ্যিন তার বাবাকে রিলেক্স হতে বলে। নিজেই শার্মিলার খুঁজ করে। এতো মানুষের ভীড় সেজন্য কল দেয়। সাথে,সাথে তাকে ব্যস্ত দেখায়। রাগে মাথার রগ ফুটে উঠে তাইজ্যিনের। খুঁজতে, খুঁজতে শার্মিলাকে পায় তাইজ্যিন। ব্যাক সাইড দেখেই জোর কদমে এগিয়ে যায়। তার হাঁটা চলাতে রাগ সুস্পষ্ট। কোন কিছু না বলে শার্মিলার থেকে তার কানে ধরে রাখা ফোনটা নিয়ে অফ করে নিজের প্যান্টের পকেটে ঢুকায়। আরেকহাত শক্ত করে ধরে সবার মাঝ দিয়ে টেনে নিয়ে যায়। তাইজ্যিবের হাটার গতিবেগের সাথে শাড়ি সামলে হাঁটতে হিমশিম খাচ্ছে শার্মিলা। তারউপর হাই হিল পড়ায় তার অবস্থা বেগতিক। ভেতরে আসতে শার্মিলা তাইজ্যিনের হাত ঝাড়া দিয়ে ফেলে দিয়ে রাগী কন্ঠে শুধায়, “ডোন্ট টাচ মি তাইজ্যিন। ফল খুব খারাপ হবে বলে দিলাম। আমার ফোন দাও।”

“সেটা দেখা যাবে।”

কথাটা বলে পুনরায় শার্মিলার হাত ধরে টেনে উপরে নিয়ে যায়। রুমে এসে দরজা লক করে শার্মিলাকে দেওয়ালের সাথেই চেপে ধরে। কন্ঠে তোজ বৃদ্ধি করে বলে, “আমার বাবাকে অপমান করলে কোন সাহসে?”

“বেশ করেছি। তোমার বাবা আস্ত মুখোশ পড়া শয়তান একটা। ওর শেষ আমি না দেখে ছেড়েছি তো আমার নাম ও শার্মিলা নয়।”

কথাটা শেষ হতে তাইজ্যিন রক্তচক্ষু করে শার্মিলার পাণে তাকায়। শার্মিলা নিজের সর্বশক্তি দিয়ে তাইজ্যিনকে সরামোর বৃথা চেষ্টা চালায়। তাতে কিছুই হয়না। তাইজ্যিন রুম কাপিয়ে চিৎকার করে বলে, “আমার বাবার কোন ক্ষতি হলে তোমায় আমি বাঁচিয়ে রাখা তো দূরে থাক, শেষ নিঃশ্বাসটাও সুন্দর ভাবে ফেলতে দেব না।”

“তোর বাপ আর তুই ফেরাউন আর নমরুদ। আস্ত মুখোশ ধারী। তোরা এক,একটা খু’নি।”

কথাটা শেষ হতে শার্মিলার গালে চড় পড়ে যায়। যার তাল সামলাতে না পেরে সে মেঝেতে পড়ে যায়। মাথাটা তার ভণভণ করে ঘুরছে। তাইজ্যিনের থেকে এমন কিছু একসেপ্ট করতে পারেনি। তাইজ্যিন নিজেকে যথাসাধ্য কন্ট্রোল করার চেষ্টা করে। তার বাবা,ভাই তার জীবন। সেখানে তাঁদের কাউকে নিয়ে বাজে কথা সে শোনতে রাজী না। শার্মিলা হয়ত তার বাবার প্রতি টান-ভালোবাসা সম্পর্কে কিছুই জানে না। শার্টের উপরের কালো শ্যুট টা খুলে খাটে ছুঁড়ে মারে তাইজ্যিন। সোফায় বসে কপাল স্লাইড করছে। ওইপাশে শার্মিলা দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে বসে আছে। মাথার ব্যথায় চোখ তুলে তাকাতে পারছে না। তাইজ্যিন বেশ কয়েকবার দীর্ঘশ্বাস ফেলে। উঠে সোজা বেলকনিতে চলে যায়। নিজের রাগকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা চালাচ্ছে সে। বেলকনির ভারী কাঁচে হাত দিয়ে আঘাত হানে। যার ফলস্বরূপ হাতে তীব্র রকমের ব্যাথা পায়। দেওয়ালে আঘান হানে। হাত ফেটে রক্ত বের হয়। শার্মিলা না থাকলে রুমে ভাংচুর করতো। এখন তা সম্ভব না সেজন্য এটাই করতে হচ্ছে।মাথাটা জিম ধরে আছে। একটু ড্রিংস করলে মন্দ হয়না। কিন্তু শার্মিলার সাথে দেখা হওয়ার পর থেকে ড্রিংস করা ছেড়ে দিয়েছে তাইজ্যিন। এটাকে কী বলবে সে নিজেও জানে না। বেলকনিতে থাকা সোফায় বসে পড়ে সে। হাত বেয়ে রক্ত পড়ছে তার সাদা শার্টের হাতায়। তাতেও তার হেলদোল নেই।

শার্মিলা অনেক কষ্টে উঠে দাঁড়ায়। একে তো তার বাবার খু’নিকে পেয়েছে অন্যদিকে তাইজ্যিন তার গায়ে হাত তুলেছে অথচ সে কিছুই করতে পারলো না। তাইজ্যিনের শক্তির কাছে তার শক্তি,হাতি আর পিঁপড়ের মতো। এলোমেলো ভাবে ওয়াশরুমে গিয়ে ট্যাপ ছেড়ে মাথায় পানি দিতে থাকে শার্মিলা। এখনো মাথাটা ধরে আছে। ভয়ংকর রকমের থাপ্পড় খেয়েছে সে। এটাই প্রথম তাই এক্সপেরিয়েন্স ভীষণ বাজে। পানি পড়ে শাড়ীর আঁচল ভিজছে তাতে হেলদোল নেই শার্মিলার। কিছুক্ষণ পানি ঢেলে অর্ধ ভেজা শাড়ী নিয়ে রুমে প্রবেশ করে। ড্রয়ার খুঁজে ফাস্ট এইড
বক্সের জন্য। কিন্তু সেটা পায়নি। এই মূহুর্তে তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী এবং তাইজ্যিনকে নিজ হাতে খু’ন করতে ইচ্ছে করছে। তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী তার পরিচয়টা জানে। অথচ তাইজ্যিন জানে না। জানতেও বেশী সময় নেই। সামনে বড়োসড়ো কোন ঝড় আসতে চলেছে এটা নিশ্চিত।

ঘড়ির কাটা একটা ছুঁইছুঁই। দেওয়ালের সাথে পিঠ ঠেকিয়ে বসে আছে শার্মিলা। হাঁটুতে মাথা নিচু করে রেখেছে। চোখে ঘুম নেই। কেমন হাস ফাঁস লাগছে। ক্ষুধায় পেটে ইঁদুর দৌড়াচ্ছে। তাইজ্যিন বাইরে গিয়েছিলো কিছুক্ষণ আগে। যাওয়ার সময় শার্মিলার দিকে একনজর ও তাকায়নি। যার দারুন বোঝা যায় লোকটার প্রচুর রাগ আর ইগো।

পার্টি শেষে ডিনার করে বিদায় হয় গেস্টরা। লোকের সমাগম কম। তাইজ্যিন নিচে আসতে তার বাবা আর চাচ্চুকে দেখে। ছেলেকে দেখে তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী বলেন, “তাইজ্যিন এখনো ডিনার করোনি। খেয়ে নাও।”

“ওর হাতে কী হয়েছে?”

পাশ থেকে জবাব দেয় তিথিয়া চৌধুরী। তার সাথে তারিন ও এগিয়ে আসে। তাইজ্যিনকে কেমন এলোমেলো লাগছে। চোখ-মুখ কেমন হালকা,হালকা লাগছে। তিথিয়া চৌধুরী তার কপালে হাত দিয়ে দেখে,জ্বর আসবে কীনা। গায়ের তাপমাত্রা স্বাভাবিক লাগায় হাত নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তাইজ্যিনের ডান হাত তারিনের দেখলে। হুশ আসতে হাত ছাড়িয়ে নেয় তারিনের থেকে। বাম হাতের তর্জনী উঁচু করে বলে, “ডোন্ট টাচ্ মি এগেইন। শার্মিলা কোথায়?”

“তুমি না ওকে নিয়ে রুমে গেলে। নেশা চড়েছে নাকী?”

তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী জবাব দেয়। তখন তাইজ্যিন তর্জনী উঁচু করে বলে, “ইও আর রাইট পাপা। আমাদের ডিনারটা পাঠিয়ে দিও তো।”

কথাটা বলে হেলেদুলে সিঁড়ি বেয়ে উপরের দিকে যায় সে। প্যান্টের পকেটে থাকা ছোট্ট এলকোহল সংমিশ্রণ ড্রিং নিয়েছিলো সে। যার দরুণ এই অবস্থা। রুমে এসে পিঠ পিঠ চোখ তুলে তাকায় শার্মিলার দিকে। শার্মিলা তখন উঠে খাটের দিকে পা বাড়ায়। বসে থাকতে,থাকতে পিঠ ব্যাথা হয়ে গেছে। তাইজ্যিন তাকে দেখে ড্রাঙ্ক কন্ঠে শুধায়,”স্টপ!”

শার্মিলা তার কথাকে পাত্তা দেয়না। চুপচাপ খাটে গিয়ে শুয়ে পড়ে। তখন তাদের রুমের দরজায় নক করে একজন সার্ভেন্ট। তাইজ্যিন দরজা পারমিশন দিতে সার্ভেন্ট খাবার রেখে চলে যাবে তখন তাইজ্যিন শুধায়, “আমার জন্য লেবুর শরবত নিয়ে আসো।”

তাইজ্যিন পুনরায় শার্মিলার দিকে তাকিয়ে শুধায়, “অনেক রাত হয়েছে ডিনার করে নেও।”

শার্মিলা জবাব দেয়না। তাকে চুপ থাকতে দেখে তাইজ্যিন পুনরায় শুধায়, “ডিনারটা করে নেও। কথা কানে যাচ্ছে না।”

কিছুটা ধমকে বলে তাইজ্যিন। শার্মিলা কিছুটা কেঁপে উঠে শুধায়, “খিদে নেই।”

“আমি কিছু শুনতে চাই না।”

“তাহলে কানে তুলে দিয়ে বসে থাকুন। আমি কাউকে জোর করে বলছি না আমার কথা শোনতে।”

“ত্যাড়ামী ছাড়ো শার্মিলা। না খেলে অসুস্থ হয়ে পড়বে। এমনিতে তোমার শরীরে শক্তি নেই।”

শার্মিলা নিশ্চুপ। তখন তাইজ্যিন তার ডান গালে হাত রেখে স্লাইড করে বলে, “বেশী জোরে লেগেছে?”

শার্মিলার রাগ উঠে। লা’থি মেরে গরু দান করার মানে হয়না। শার্মিলা নিরব দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাইজ্যিনের পাণে। তাইজ্যিন চোখে,চোখ রাখতে পারেনা বেশীক্ষণ। অপরাধ বোধ হচ্ছে। তখন শার্মিলা তার হাত ঝাঁটা মেরে সরিয়ে দিয়ে কঠোর কন্ঠে শুধায়, “ডোন্ট টাচ মি। গুড নাইট।”

পাশ ফিরে শুয়ে পড়তে যাবে তাইজ্যিন তাকে টেনে বসিয়ে দেয়। খাবারের প্লেট এগিয়ে দিয়ে শুধায়, “শোন খাবারের সাথে রাগ করতে নেই। আমার উপর করো সমস্যা নেই। খাবার তো আর দোষ করেনি।”

“প্লিজ তাইজ্যিন আমাকে বিরক্ত করো না। নিজের মন চাইলে খেয়ে নেও। আর বেশী অধিকার দেখাতে এসো না। এখন আমি দুর্বল তাই বলে এই না যে সবসময় আমি দুর্বল থাকব। সময় আমার ও আসবে। গুড নাইট।”

#চলবে