ভ্যাম্পায়ার কুইন পর্ব-১২+১৩+১৪

0
2

#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
পর্বঃ১২
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
–হ্যা। আমি লংস্টার রাজ্য হতে বিতারিত জ্যাসন ব্রিটের বড় সন্তান প্রিন্স জ্যাকসন ব্রিট।(আমি)
।।।
।।।
আমার কথা শুনে আশে পাশের সবাই অবাক হয়ে গেলো। বিশেষ করে এনা নিজেই অবাক হয়ে গেলো। এমন সময় জেসি সময় আটকে দিলো আমাকে ধরে।
.
–কিরে তুই কি করছিস?(জেসি)
.
–কেনো?(আমি)
.
–এভাবে এখানে আমাদের পরিচয় ছেড়ে দিলে তো আমাদের ক্ষতি হবে।(জেসি)
.
–কিছুই হবে না।(আমি)
.
–তুই কিভাবে বলতেছিস সেটা। এমনিতেই লংস্টারের সাথে ব্লাক লোটাসের ঝামেলা। আমরা এখানে পরে গেলে তো আমাদের বন্ধী করে রাখবে।(জেসি)
.
–দেখিস কি হয়।(আমি)
।।।
।।।
জেসি ওর জায়গায় চলে গিয়ে আবার সময়কে নিজের মতো করে দিলো। ওর পাওয়ারটা আমার সেরকম লাগে। নিজের এবং অন্যের সময় কিছুক্ষনের জন্য আটকে দিতে পারলে তো কথায় নাই। তার উপরে আবার ও জায়গাকে কন্ট্রোল করতে পারে। ওর আশে পাশে হাফ কিলোমিটার জায়গায় ও মুহুর্তের মধ্যেই চলে যেতে পারে।
.
–কিন্তু সবাই তো জানে প্রিন্স জ্যাকসন ব্রিট মারা গেছে।(রাজা)
.
–আমার আম্মা আমাকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন ত্যাগ করেছে।(আমি)
.
–জ্যাসন আর আমি খুব ভালো বন্ধু ছিলাম। ওর এই কার্যের পর থেকেই আমার আর ওর ভিতর লড়াই শুরু হয়। আর সেই লড়াই আজ দুই রাজ্যের বিরুদ্ধে চলে আসছে।(রাজা)
.
–…(আমি চুপ করে রইলাম)
.
–আজকে এখানে জ্যাসনকে ও ডেকেছি আমি। ভালো একটা শকিং নিউজ দিবো জ্যাসনকে।(রাজা)
.
–কি বলবেন?(আমি)
.
–তুমি শুধু সেটা আমার উপরে ছেড়ে দাও। শুধু এইটা বলো আমার মেয়েকে কি তুমি পছন্দ করো?(আমার কানে কানে রাজা বললো)
.
–পছন্দ না। আমি এনাকে ভালোবাসি অনেক।(কথাটা একটু জোরেই বল্লাম)
।।।
।।।
আমার কথা শুনে এনা সহ পুরো হলের লোকজন অবাক হয়ে গেলো। পুরো লোকজন অবাক হওয়ার কথায় কারন একজন লোক রাজার কাছে তার মেয়েকে ভালোবাসে বলে জানাচ্ছে সেটা শুনে রাজা কি বলে সেটা শোনার জন্য। আর এনা খুশিতে কেঁদে দিয়েছে। কারন আমি এখনো নিজে ওকে ভালোবাসার কথা সরাসরি বলি নি।
.
–তো ইয়াং ম্যান। আমার মেয়েকে প্রপোজ করো যদি ও তোমাকে মেনো নেই তাহলে আমার কোনো আপত্তি নেই।(রাজা)
.
–ওকে মহারাজ।(আমি)
।।।
।।।
আমার ব্লেজারের পকেটে একটা কালো গোলাপ ফুল ছিলো। আমি সেটাকে হাতে নিলাম। হ্যারি আমার কাছে এসে বলতে লাগলো,
.
–কি বড় ভাই কালো গোলাপ দিয়ে মানুষ প্রপোজ করে?(হ্যারি)
.
–তাহলে?(আমি)
.
–এই গোলাপ লোকের মনের অবস্থা দেখে রল বদলাতে পারে। কি রঙ লাগবে সেটা ভেবে ফুলের উপরে হাত দিলেই রঙ বদলে যাবে।(হ্যারি ফুলের রং লাল করে দিলো)
.
–ধন্যবাদ হ্যারি।(আমি)
।।।
।।।
আমি এনার কাছে গিয়ে এক হাটু গেরে বসলাম। পুরো রোমান্টিক হয়ে ওকে প্রপোজ করে হবে তো। সিনেমার কয়েকটা ডায়ালোগ মেরে ওকে প্রপোজ করে দিলাম।
.
–প্রিন্সেস এলিনা কোয়াডার্ট ওইল ইউ ম্যারি মি?(আমি)
.
–অবশ্যই।(কেদে দিয়ে হ্যা বলে দিলো)
।।।।
।।।।
সবাই জোরে হাততালি দিতে লাগলো, এতোক্ষনে আমি দেখতে পেলাম লংস্টারেরে রাজা জ্যাসন ও এসেছে। তার চেহারা কিভাবে ভুলতে পারি। দেখতে অনেকটা আমার মতোই। সরি আমি দেখতে অনেকটা তার মতোই। এসেছে রানী আর দুই সন্তানের সাথে। পিছনে রয়েছে রয়েল গার্ড। এখন এনার বাবা বলতে লাগলেন।
.
–লেডিস এন্ড জেন্টেলম্যান্ট। আপনারা আজ এখানে এসেছেন আমার বড় কন্যা প্রিন্সেস এলিসা কোয়াডার্ট আর পুরো মনস্টার রাজ্যের ৩য় ব্যাচধারী হান্টার আমার ছোট ভাই লর্ড ভল্ডেমর্ট এর বড় পুত্র ভায়মীর কোয়াডার্ট এর বিয়ের অনুষ্ঠানে। আজ এই খুশির দিনে আপনাদের আমি আরো একটা খুশির খবর দিতে চাই। আজ আমার ছোট মেয়ে প্রিন্সেস এলিনা কোয়াডার্ট এবং লংস্টার রাজ্যের রাজা জ্যাসন এর বড় পুত্রের আজ এনগেজমেন্ট হবে।(রাজা)
।।।।
।।।।
সবাই হাততালি দিচ্ছে। কিন্তু জ্যাসন মশাই হাততালি দিচ্ছে না। সবাই মনে মনে অবাক হচ্ছে। অনেকে আমাকেই জ্যাসন এর সন্তান মেনে নিয়েছে। কিন্তু সন্তান হলেও এখানে একটু ঝামেলা আছে। সবাই ভাবছে আমিই জ্যাসনের একমাত্র সন্তান। বলাবলিও করছে সেটা। তখন রাজা জ্যাসনের ছোট ছেলে বলে উঠতে লাগলো,
.
–বাবা কি হচ্ছে এখানে। আমি এখানে কোনো এনগেজমেন্ট করতে আসি নি।(প্রিন্স কহিল বললো)
.
–রাজা কোয়াডার্ট কি হচ্ছে কি? আমি কখন বলেছি প্রিন্স কহিলের সাথে প্রিন্সেস এলিনার এনগেজমেন্ট হবে। আর মাত্রই তো একটা ছেলে তোমার মেয়েকে প্রপোজ করলো।(বাবা এনার বাবাকে বললো)
.
–আমি কি বলেছি তোমার ছোট পুত্রের সাথে এলিনার এনগেজমেন্ট হবে?(এনার বাবা)
.
–কি বলতে চাচ্ছো তুমি?(বাবা)
.
–জ্যাক বাবা এদিকে আসো তো?(এনার বাবা আমাকে ডাকলো)
.
–জ্বী মহারাজ।(আমি)
।।।
।।।
বাবা আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। আমার চেহারা আর নাম শুনেই বুঝতে পারলেন আমি কে। কারন আমার চেহারা অনেকটা তার মতোই, আর আমার নাম তো তার দেওয়ায়।
.
–এই হলো লংস্টার রাজ্যের রাজা জ্যাসন ব্রিটের বড় সন্তান জ্যাকসন ব্রিট। অবশ্য জিনিসটা আমাদের লংস্টার মহারাজ গোপন রেখেছে। তিনি তার ছেলেকে গোপনে মানুষদের মধ্যে রেখে এসেছিলেন।(এনার বাবা সকলের উদ্দেশ্যে বললো)
.
–তো আমি কখন বলেছি আমার বড় পুত্র জ্যাকসনের সাথে তোমার কন্যার এনগেজমেন্টে রাজি হবো।(বাবা অনেকটা ঘেমে গিয়ে বললো)
.
–আপনি হয়তো ভুলে গেছেন আমি লংস্টার থেকে বিতারিত। রাজ্যের কেউ জানে ও না আমি বেচে আছি কিনা।(আমি)
.
–কিন্তু তুমি তো একটা চিঠি লিখেছিলে যে ফেরত এসেছো তুমি। আর আজ তো আমাদের রাজ্যে ফেরত যাওয়ার কথায় তোমার।(বাবা)
.
–হ্যা কিন্তু পথিমধ্যে কি ভেবে যেনো মন পরিবর্তন করলাম।(আমি)
.
–দেখো তুমি বিতারিত নও। আমি তোমাকে মেনে নিয়েছি তুমি আমার বড় সন্তান।(বাবা)
.
–হ্যা তাহলে তো সব ঠিকঠাক। মহারাজ আমি এনগেজমেন্ট করতে প্রস্তুত। আমার বাবা নিজেই মেনে নিয়েছেন আমাকে।(আমি এনার বাবাকে বললাম)
।।।
।।।
রাজা জ্যাসন রাজার কথা শুনে কে আর। আমাকে নিয়েই এনার সাথে এনগেজমেন্ট করিয়ে দিলো। এখানে রাজা জ্যাসন কিছুই করতে পারবে না। কারন বাকি তিন রাজারাও আছে। কোনো কিছু করলেই একটা যুদ্ধ লেগে যাবে এখানে। তাই চুপ চাপ বসে আছে। আমাদের এনগেজমেন্টের পরে এনার বোনের বিয়েও হয়ে গেলো। বিয়ের শেষে নাকি একটা বিশাল অনুষ্ঠান। আমি নিজেও জানি না কি অনুষ্ঠান। কিন্তু এনার বাবা আমার কাছে এসে বললো,
.
–আমার একটা স্পেশাল পাওয়ার আছে।(রাজা)
.
–কি সেটা মহারাজ।(আমি)
.
–এখন থেকে আমি তোমার ফাদার ইন ল্। তাই রাজ দরবারের বাইরে আঙ্কেল ডাকো।(রাজা)
.
–ঠিক আছে আঙ্কেল।(আমি)
.
–আমি অন্যের মনে কি চলছে সেটা শুনতে পারি।(আমার কাধে হাত দিয়ে বললেন)
.
–মানে লোকজন কি ভাবছে সেটা পরতে পারেন।(আমি জিজ্ঞেস করলাম)
.
–হ্যা। তোমার বাবার মনের খবর জেনে তো অবাক হলাম।(ডান হাতের ওয়াইন এর গ্লাসে চুমুক দিয়ে বললো)
.
–কি ভাবছে তিনি?(আমি)
.
–এই প্রথম বার আমার থেকে হেরে গিয়েছে। অপমানটা সহ্য করতে পারছে না। ওর স্ত্রী ওকে একটা বুদ্ধি দিচ্ছে।(রাজা)
.
–….(আমি চুপ করে রইলাম)
.
–একটু পরে একটা ফাইট টুর্নামেন্ট হবে। সেখানে সব রাজ্যের একজন করে লড়বে। রাজারা এমন অনুষ্ঠানে সাথে করে নিজের সবচেয়ে শক্তিশালী লোককেই নিয়ে আসে। আর তোমার বাবা নিয়ে এসেছে তোমার ছোট ভাইকে। তোমার বাবা চাচ্ছে আমি আমার তরফ থেকে আমার নতুন জামাইকে পাঠায়। কারন পুরো রাজ্যের মধ্যে সেই সবচেয়ে শক্তিশালী।(রাজা)
.
–….(আমি চুপ করে রইলাম)
.
–সে চাচ্ছে ভায়মীরকে একদম মেরে ফেলতে। এতে করে আমার উপরে প্রতিশোধ নেওয়া হবে তার অপমানের।(রাজা)
.
–কহিল ব্রিট তাহলে লংস্টারের সবচেয়ে শক্তিশালী?(আমি)
.
–হ্যা।(রাজা)
.
–তাহলে মহারাজ আপনি আপনার তরফ থেকে আমাকে পাঠান।(আমি)
.
–পাগল হয়েছো? তুমি এখনো লড়াই এর সম্পর্কে কিছুই জানো না। এক সেকেন্ড ও টিকটে পারবে না ওর কাছে। আর ওর বড় ভাই বলে তোমাকে রেহায় দিবে না একটুও।(রাজা)
.
–আপনাকে আমাকে নিয়ে কিছুই ভাবতে হবে না।আপনি শুধু ওর সাথে আমার লড়াইয়ের ব্যবস্থা করে দিন।(আমি)
।।।
।।।
আমি জানি রাজা মন পরতে পারে। তাই আমি মনে ইচ্ছা করেই ভালো একটা জিনিস ভাবতে লাগলাম। এনার বাবা ভালো মানুষ সেটা তাকে দেখলেই বোঝা যায় কিন্তু রাজা জ্যাসনের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র পেলে সেটা না করে থাকতে পারে না। দুজনে ভালো বন্ধু হলেও আজ দুজন সেরা শত্রু। আমি জানি না কিসের এতো শত্রুতা। কিন্তু মনে হয় না আমার বাবার বদলে যাওয়ায় এমন শত্রুতা হয়েছে। শত্রুতা আরো গভীর হবে।
।।
।।
একটু পরেই অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেলো। প্রথমেই দ্বিতীয় রাজ্য সি জারের একজন সেনাপতি আসলো তার সাথে লড়লো পঞ্চম রাজ্য এক্সরির একজন হান্টার। জে জিতলো তার সাথে লড়াই হলো চতুর্থ রাজ্য অসিয়াসের একজন হান্টার গিল্ডের লিডারের সাথে। সেখান থেকে গিল্ডের লিডার জিতলো তার সাথে লড়াই হলো রাজা জ্যাসন এর ছোট পুত্র মানে আমার ছোট সৎ ভাই কহিলের সাথে। আমি ওদের ফাইট দেখে পুরো অবাক হয়ে গেলাম। এমনিতেও আগের গুলো মারাত্মক ছিলো। যেভাবে ম্যাজিক ব্যবহার করে লড়াই করছিলো ওরা। তাতে তো মতে হচ্ছিলো এটা ওদের বা হাতের কাজ কিন্তু আমি তো তেমন ম্যাজিক ব্যবহার করতেই পারি না

।।
আর কহিল যেভাবে লড়ছিলো। পুরো মারাত্মক। লড়তে লড়তে গিল্ডের মাস্টারের জীবন চলে গেলো। কহিল তার বুকের মধ্য দিয়ে বরফ ঢুকিয়ে দিয়েছে। কিন্তু একটু পর গিল্ড মাস্টারের শরীর ঠিক হতে শুরু করলো। দেখলাম ম্যাজিক অনেক অস্থির জিনিস। একজন লোক তাকে ম্যাজিক দিয়ে হিল করে দিচ্ছে। যা দেখলাম তাতে বুঝলাম কহিলের এট্রিবিউট হলো Ice। বরফ বানাতে পারে হাওয়ার মধ্য থেকেই। আমি তো নিজেও জানি না আমার এট্রিবিউট কি? কিন্তু আমার ভয় নেই কারন কিছু জিনিস তো আমি ও করতে পারি। আর আমার কাছে এক্সোনিয়া আছে। যখন দরকার পরবে হালকা ব্যবহার করতে পারবো। আমি দাড়িয়ে ছিলাম। এনা আমার পাশে দাড়িয়ে আছে আমার হাত ধরে। ও কিছু বলছে না। কারন ও রেগে আছে। রাগ করেছে কেনো সেটা তো জানিই। আমি ওকে বলি নি আমি প্রিন্স তাই।

।।।।।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
পর্বঃ১৩
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
এনার বাবা আমাকে ডাকলেন।
.
–শুনবে তোমার বাবা কি বলছে তোমার ছোট ভাইকে?(রাজা)
.
–আপনি কি দূরের মানুষের কথাও শুনতে পারেন?(আমি)
.
–হ্যা অবশ্যই। তোমার এক হাত দাও আর শুনো।(আমার এক ধরলো এনার বাবা। আমি স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছিলাম কহিল আর বাবার কথাবার্তা)
.
–যে করেই হোক তোমাকে এইবার জিততে হবে। এইবার ফায়ার প্রিন্স(এনার ভাই) এখানে নেই তাই তোমার বিরুদ্ধে কেউ থাকবে না। ভায়মীর আসলে ওকে টুকটো টুকটো করে ফেলবে যাতে কেউ হিল করার পূর্বেই ও মারা যায়।(বাবা)
.
–ঠিক আছে বাবা।(কহিল)
।।।
।।।
এনার বাবা তার তরফ থেকে আমাকে পাঠালেন। সবাই অবাক হয়ে গেলেন। কারন আমি নিজের রাজ্যের বিরুদ্ধে লড়ছি।
.
–জ্যাক কি করছো তুমি। নিজের ভাইয়ের বিরুদ্ধে কেনো লড়ছো?(বাবা)
.
–আপনার তো বয়স হয়েছে। কিছুদিন পর আপনার রাজ্য তো আপনার ছেলেদেরকে দিয়ে দিতে হবে তাই না? কোন ছেলে রাজা হবে এটাও নিয়ম করা। সব সময় বড় ছেলেই রাজ্যের রাজা হবে। আর ছোট গুলো মন্ত্রী কিংবা জেনারেল হয়। কিন্তু আমি আজ আমার ছোট ভাইকে চ্যালেন্জ করছি। যদি আমি জিততে পারি তাহলে সে মন্ত্রী না সোজা রাজা হবে। কি হলো কহিল ব্রিট সিংহাসনের জন্য লড়বে না বড় ভাইয়ের জন্য।(আমি)
.
–সিংহাসন আর আমার মধ্যে যে আসবে আমি তাকে এই দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিবো।(কহিল আমার দিকে আসতে যাবে তখন রানী কর্ডিটা তাকে ডেকে নিয়ে বলতে লাগলো)
.
–আমার ছেলে কহিল আজ এতো বছর পর তোমার সৎ ভাই ফিরে এসেছে। আমি তো ভেবেছিলাম কবেই মরে গেছে। কিন্তু এন্জিলা যে ওকে বাঁচিয়ে রাখবে সেটা কে জানে। দেখো ও বেঁচে থাকলে কখনোই তুমি তোমার বাবার সিংহাসন পাবে না। তাই ওকে আজই মেরে ফেলো। আমি চাই না তোমার বাবার ওর প্রতি কোনো মনোভাব আরো হোক।(রানী আস্তে আস্তে কথাগুলো বললো কহিলকে)
।।।
।।।
আমি অবাক হয়ে গেলাম। কারন এখন আর রাজা আমাকে ধরেন নি। বরং আমি নিজেই এতো দূর থেকে স্পষ্ট শুনতে পেলাম ওরা কি বলছে। কহিল এগিয়ে আসছে আমিও এগিয়ে গেলাম।
.
–আমার লাইফ তো ভালোই যাচ্ছিলো। কখনো কোনো বিষয় নিয়ে চিন্তা করি নি। কারন আমি জানতাম আমিই আমার বাবার একমাত্র সন্তান। বাবার পরে তার স্থান আমিই পাবো। কিন্তু গত এক সপ্তাহ আমার মাথার মধ্যে প্রথম চিন্তার স্থান দেখা দিয়েছে। তাও সেটা আপনার জন্য। কোথা থেকে আমার বড় সৎ ভাই ফিরে এসেছে। এবং সে তো নিজের স্থান ফিরে চাইবে। আপনি থাকলেও সিংহাসন আমারই হবে। রাজ্যের নিয়মে বলা রয়েছে রাজার বড় সন্তান যদি যোগ্য হয় তাহলে কোনো অবজেকশন থাকবে না সেই রাজা হবে।(অহিল)
.
–কিন্তু যোগ্য না হলে তাকে বাকি ভাইদের সাথে লড়তে হবে। লড়াইয়ে যে জিতবে সেই পরের রাজা হবে। তাই তো তোমাকে সুযোগ দিচ্ছি আমি।(আমি)
.
–আমার সৎ ভাই যে কিনা কোনো পাওয়ার নিয়ে জন্ম নেই নি। আপনার জন্য আপনার মাকে হারিয়েছেন। কিভাবে ভাবছেন আপনি রাজার সিংহাসনের জন্য যোগ্য। সিংহাসনে তারাই বসে যারা শক্তিশালী। আর যারা আপনার মতো শক্তিহীন তারা আমাদের জুতো মুছে।(কহিল)
.
–কথা গুলো বেশী হয়ে যাচ্ছে না। আমাকে হারিয়ে নিজের রাজ্য নিজে নিয়ে নাও। তাতেই তো হয়।(আমি)
.
–সেটা তো নিবোই। আর আপনাকে হারাতে হবে না। আমি তো আপনাকে মেরেই ফেলবো।(কহিল)
।।।
।।।
কহিল কথাটা বলে আমার দিকে কতগুলো লম্বা লম্বা ধারালো বরফের মতো তলোয়ার ছুরলো। ভাবলো হয়তো আমি নরবো কিন্তু আসলেই এতো জোরে এসেছে যে আমি নরার সুযোগও পেলাম না। পুরো ১০ টা বরফের ধারালো তলোয়ার আমার শরীরের বিভিন্ন অংশে ঢুকে গেলো। কহিল হেসে দিয়ে চলে যেতে লাগলো,
.
–কে জানে একটা সিংহাসনের জন্য আমাকে মাত্র এক আঘাত দিতে হবে।(কহিল পিছন ফিরে চলে যাচ্ছিলো)
।।।
।।।
শরীরে অনেকটা ব্যথা লাগলো। কিন্তু কিছুই করার নাই। লড়তে না পারলে যা হয়। শরীর দিয়ে কোনো রক্ত ঝড়ছে না। আস্তে আস্তে বরফের ধারালো তলোয়ার গুলো আমার শরীরের উত্তাপে গলতে শুরু করে দিলো। গলে পুরো পানি হয়ে গেলো। আর সেই পানি আমার ক্ষত তে লাগার সাথে সাথে সেগুলো ঠিক হতে লাগলো।
আমি কহিলকে ডেকে বলতে লাগলাম,
.
–এক আঘাতে কখনো সিংহাসন পাওয়া যায় না ছোটু।(আমি)
.
–এটা কিভাবে সম্ভব। এতোক্ষন আমি ফিল করেছি আপনার ভিতরে কোনো ম্যাজিক নেই। কিন্তু ঠিক হলেন কিভাবে এতো তারাতারি? নিশ্চয় আপনাকে কেউ হিল করেছে।(কহিল অবাক হয়ে আসে পাশে দেখে লাগলো কোনো হিল ম্যাজিক ব্যবহার কারী আছে কিনা)
.
–বল্লাম একটা সিংহাসনের জন্য এক আঘাত যথেষ্ঠ নয়। আরো অনেক কিছু করতে হয়। দেখি কত কিছু করতে পারো?(আমি)
.
–এবার তো আমি আপনাকে টুকরো টুকরো করে ফেলবো।(কহিল)
.
–দেখা যাক।(আমি)
।।।।
।।।।
এবার আমাকেই পুরো বরফ বানিয়ে দিলো। আমি জমতে লাগলাম। দম বন্ধ হয়ে আসতে লাগলো। মনের ভিতর শুধু আগুনের কথা মনে হলো। সাথে সাথে আমার দু হাত দিয়ে আগুন বের হতে লাগলো। সেই আগুনের তাপে পুরো আরফ গলে গেলো,
.
–তারমানে আপনি ফায়ার ম্যাজিক ইউজার। কিন্তু আমার সাথে পেরে উঠতে পারবেন না। আমার এট্রিবিউট শুধু Ice না সাথে Water এর এট্রিবিউট ও আছে। আপনি আমার বরফ গলিয়ে দিবেন আগুন দিয়ে। কিন্তু আমি পানি দিয়ে আপনার আগুন নিভিয়ে দিবো।(কহিল)
.
–দেখা যাক।(আমি)
।।।
।।।
এবার এক বিশাল ঢেউ তুলে ধরলো আমার সামনে কহিল। সেটার সামনে এক হাজারের মতো বরফের তলোয়ার বানালো। এবার সত্যি আমার ভয় লাগতে লাগলো। তখন দশটা আমার শরীরে লেগেছিলো তাতেই ব্যথায় মরে যাচ্ছিলাম আর এই পুরো এক হাজার আমার শরীরে লাগলে কি হবে? আমার গুপ্ত জায়গার অবস্থাও বারোটা বেজে যাবে। আমি ম্যাজিক ব্যবহারের শর্টকার্ট বুঝে গেলাম। এট্রিবিউট অনুযায়ী শুধু ভাবতে হবে। যেমন আমার এট্রিবিউট আগুনের বুঝতে পারলাম। আমি জমে থাকার সময় আগুন সম্পর্কে ভেবেছি সে অনুযায়ী আমার হাতে আগুন চলে আসছিলো। তাহলে এখন যদি আমি একটা পারমানবিক বোমা ফাটার আগুনটা কল্পনা করে তাহলে কিছু একটা হয় কিনা দেখি। আমি আমার ভাবনা মাথায় রেখে হাত দুটো কহিলের দিকে করলাম। এবার আর হাত দিয়ে না। আমার পুরো শরীর দিয়ে আগুন বের হতে লাগলো। মুহুর্তেই পুরো একটা ব্লাস্ট হয়ে গেলো সবাই দো তলায় থাকায় কারো কোনো ক্ষতি হলো না। কিন্তু কহিলের পানি বরফ সব কিছু ভেদ করে আমার আগুনের ব্লাস্ট লাগলো। ওর পানি বাষ্প হয়ে গেলো বরফ গলে গেলো, আর কহিল দেওয়াল ভেঙে গিয়ে পরতে লাগলো। আমার মনে পরলো ওর ডানা হবে না। আর এভাবে পরলে ওর অবস্থাও টাইট হয়ে যাবে সৎ হলেও আমার ছোট ভাই হয় সম্পর্কে। তাই আমিও মুহুর্তে ভাঙা দেওয়ালের কাছে চলে গেলাম আল্ট্রা স্পিডে। আমিও লাফ দিলাম। আমরা প্রাসাদের উপরের তলাতে একদম। এখান থেকে পরলে আসলেই অবস্থা টাইট হবে ন্যাচারাল মৃত্যু হয়ে যাবে। আমি পরতে পরতে কহিলকে ধরলাম। ওর সামনের অংশের অনেকটা জামা কাপড় পুরে গেছে।
সেই সাথে ও বেহুশ হয়ে গেছে। মুখে কালো কালি লেগে গেছে। মনে হচ্ছে ব্লাস্টটা একটু বেশী হয়ে গেছে। পারমানবিক বোমা না ভেবে একটা গ্রেনেডের কথা ভাবলে হতো। আমি কহিলকে ধরে ভাবতে ভাবতে সোজা পরলাম মাটিতে। কারন আমার ডানা বের হচ্ছিলো না। ডানা বের হলো মাটিতে পরার সাথে সাথে। মাটিতে পুরো ২০ মিটারের মতো গর্ত হয়ে গেছে। কিন্তু আমার কিছুই হলো না। আমি তো ভেবেছিলাম আমার পা ভেঙে আমিও মরে যাবো। কিন্তু না তেমন কিছু হলো না বরং আমি লাফ দিয়ে উঠতে যাবো কিন্তু না উঠে আমি আকাশে আল্ট্রা স্পিডে উড়তে লাগলাম। নিজের উড়াকে কন্ট্রোল করতে পারছিলাম না। শেষমেষ অনেক কষ্টে ভাঙা দেওয়াল দিয়ে হলরুমের ভিতরে ঢুকলাম। ভিতরে সবাই অবাক। সবার অবাক হওয়া দেখে আমার ডানা দুটো উধাও হয়ে গেলো। অবাক হওয়ার কারন তো আমি বুঝতে পেরেছি। আমার ডানা সাদা কালো তাই তারা অবাক হয়ে আছে।
আমি একজন হিলারকে ডাক দিলাম। সে কহিলের উপরে হিল ম্যাজিকের স্পেল পড়লো। কিছুক্ষনের মধ্যেই ঠিক হয়ে গেলো। হল রুমের সবাই অবাক হলেও এনার বাবার হাততালি দেওয়ায় সবাই একত্রে হাততালি দিচ্ছে। কহিল অনেক ভয় পেয়ে গেছে। কি হয়েছে ও নিজেও বুঝতে পারছে না। সবাই দো তালায় দাড়িয়ে আছে। তাই আমিও আমার ডানা দুটো বের করে উপরে উড়তে লাগলাম। শুধু সোজা উপরের দিকেই উড়তে পারি। আর এক জায়গায় দাড়িয়ে থাকতে পারি হাওয়ায়। তাছাড়া আমার কন্ট্রোল নাই। আমি উপরে মাঝখানে নিউট্রল হয়ে দাড়িয়ে রইলাম।
.
–তো লেডিস এন্ড জেন্টেলম্যান। আমি লংস্টারের প্রথম প্রিন্স জ্যাকসন ব্রিট আমাদের সিংহাসন লড়াই এ বিজয়ী হয়েছি। তো আপনারা কি মনে করেন আমি কও সিংহাসনের জন্য যোগ্য?(আমি)
.
–হ্যা অবশ্যই।(সকলে একত্রে বলে উঠলো)
.
–হ্যা। তারমানে আমার পরবর্তী রাজা হওয়ায় কারো কোনো অবজেকশন নেই?(আমি)
.
–না?(সকলে আবার বলে উঠলো)
.
–কিন্তু এই লংস্টারের সিংহাসন আমার দরকার নেই। শুনে অবাক হচ্ছেন সিংহাসন ছেড়ে দিচ্ছি বলে আমি। কারন শুনবেন না? পূর্বের ডেভিল কিং তো কয়েক হাজার বছর পূর্বে মারা গেছে। সবাই মিলে মেরে ফেলেছে। আর আজ পর্যন্ত সেই ডেভিল কিং এর জায়গা খালি। কিন্তু একটা খবর শুনবেন না? সেই ডেভিল কিং জন্ম গ্রহন করেছে।(আমি)
.
–…..(আমার কথা শুনে সবাই ভয়ে ঢোক গিললো)
.
–সরি জন্ম নেই নি। অনেক আগেই জন্ম দিয়েছে। এইযে মেঝেতে পরে আছে দেখতেছেন। এই না না এইভাবে ওর দিকে তাকাবেন না। ও ডেভিল কিং না। আমি ওর কথা বলতেছি কারন ও রাজা হতে চাই। আমি তো সিংহাসন নিবো না। কারন ডেভিল কিং এর পুরো মনস্টার দুনিয়া চাই। আর আমি সেই রাস্তাই থাকতে চাই না।(আমি)
.
–……(আমার কথা শুনে এবার আসলেই সবাই ভয় পেয়ে গেলো)
.
–প্রিন্স জ্যাক এই ডেভিল কিং এর ব্যাপারে কোথায় শুনলে?(এনার বাবা)
.
–এন্জেলদের রাজা মাইকেল বলেছে আমাকে কথাটা। তিনি আমাকে মানা করে দিয়েছেন আমার সিংহাসন না নিতে। কারন ডেভিল কিং পুরোপুরি ভাবে শক্তি ফিরে ফেলে প্রথমে সকল রাজা এবং রাজ্যের পরবর্তী রাজাকে মেরে ফেলবে।(আমি মিথ্যে বললাম)
.
–তোমার একটা ডানা কালো আর একটা ডানা সাদা কেনো?(বাবা)
.
–আপনি সঠিক একটা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছেন। আমার কালো ডানা হওয়ার কারন হলো এনা আমার পাওয়ার ছিলো না তখন ওর ব্লাড খেয়েছিলাম ভুলে তাই সেই পাখা আর এইযে দেখুন ডান পাশের দাঁত। আর আপনি তো ভালো করেই জানেন আমার আম্মা একজন হাফ এন্জেল ছিলো। তাই আমার এই ডানাটা সাদা।(আমার কালো ডানাটা পুরোপুরি ডেভিলদের মতো নয়, তাই সবাই আমার কথা বিশ্বাস করে নিলো)
.
–মাইকেল আর কি বলেছে?(এনার বাবা)
.
–সে সাবধান থাকতে বলেছে আর আমাকে এক্সোনিয়া দিয়েছে।(আমি এক্সোনিয়া হাতে নিয়ে বল্লাম)
.
–এটা তো মনস্টার স্লেয়ার তলোয়ার। দ্যা হোলি শোর্ড এক্সোনিয়া। এটা মাইকেল তোমাকে দিতে যাবে কেনো?(এনার বাবা)
.
–কারন আপনারা দুজন ভালো করেই জানেন। মহারাজ কোয়াডার্ট আপনি নিশ্চয় আমার আম্মাকে ভালো করে জানেন।(আমি)
.
–হ্যা(এনার বাবা)
.
–রাজা মাইকেল আমার বাবার আসল বড় ভাই এটাও আপনারা দুজন ভালো করে জানেন।(আমি)
.
–হ্যা।(বাবা)
.
–তাহলে মামা তার ভাগ্নে কে তো দিতেই পারে এক্সোনিয়া।(আমি)
.
–হ্যা এটা অবশ্য ঠিক।(এনার বাবা)
.
–আর হ্যা এক্সোনিয়া আমাকে দিয়েছে আমার জীবন রক্ষা করতে। সময় অনুযায়ী সাধারন জনগনের জন্য আমি তুলে ধরবো এটা ডেভিল কিং এর বিরুদ্ধে।(আমি)
।।।
।।।
আমি আর কিছু বললাম না। কারন কিছু বলতে গেলে এখন ভাবতে হবে। আর ভাবলেই ধরা খেয়ে যাবো। যে মিথ্যা বলেছি তাতেই হবে। অবশ্য মিথ্যা বলার একটা কারন আছে।
।।।।।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
পর্বঃ১৪
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমি সেখানে মিথ্যা না বললে আমাকেই ডেভিল কিং মনে করবে অনেকে। সেটা তো সবাইকে ভাবতে দেওয়া যায় না এখন। নাহলে তো এখনি পুরো পাঁচটা রাজ্য আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করবে। আমার ডানা গুলো উধাও হয়ে গেলো। আমি ফ্লোরে নেমে গেলাম। আমার পাশে জেসি, হ্যারি আর এনা আসলো। তিনজন আমাকে এক হিসাবে টেনেই নিয়ে গেলো। আবার আগের রুমের মধ্যে এনে বলতে শুরু করলো।
.
–তোর কি মাথা নষ্ট হয়ে গেছিলো। তুই শুধু শুধু নিজের পরিচয়টা বলতে গেলি কেনো? কত কিছু হয়ে গেলো।(জেসি)
.
–জ্যাক আমি আমার পরিচয় লুকিয়েছি বলে তুমি নিজেও নিজের পরিচয় লুকাবে। আর জেসি তুই তো অন্তত আমাকে বলতে পারতি।(এনা)
.
–আসলে জ্যাক তুমি কি ভেবে আবার লড়তে গেলে। তুমি কি জানো কত বড় ক্রাইসিস হয়ে গেছিলো সেখানে। জেসি আর এনা তো কেদেই দিয়েছিলো।(হ্যারি)
.
–আরে আমাকে নিয়ে চিন্তা করে লাভ নাই। দেখলেই তো আমার কিছুই হলো না।(আমি)
.
–চিন্তা করে লাভ নাই মানে। তুই কখন কি বলিস তার কোনো গ্যারান্টি নাই। আর ডেভিল কিং নিয়ে বলার কি দরকার ছিলো। তুই তো ডেভিল সম্পর্কেই কিছুই জানোস না। তাও বক বক করলি কতো।(জেসি)
.
–আরে দেখলিই তো সিংহাসনের লড়াই চলছে। আমি জিতার পর সরাসরি সিংহাসন চাইলে কেমন জানি লাগবে। তাই একটু ভয় দেখালাম যাতে কহিল সিংহাসনে বসার সাহস না পায়। আর কহিল না চাইলে সিংহাসন আমার। আর এমনিতেও সিংহাসন টিংহাসন আমার ভালো লাগে না। আমি নাহয় জেসিকে বসিয়ে দিলাম।(আমি)
.
–তোর মাথার স্ক্রু যে কয়টা নাই সেটা কে জানে?(জেসি)
.
–জানিস আজকে আমি অনেক খুশি।(আমি)
.
–কেনো?(জেসি)
.
–মানুষের দুনিয়ায় যখন ছিলাম তখন খুব দুর্বল ছিলাম। কেউ কিছু বললেও আমি চোখ তুলে তাকাতাম না। অনেক মাইর খেয়েছি। আমি দুর্বল বলে আমার বন্ধুও ছিলো না। কিন্তু এখন আমার শক্তি আছে। এখন আর কাউকে ভয় পেতে হচ্ছে না। আমি নিজেই এখন আমাকে যে ভয় দেখাবে তাকে ভয় দেখাতে পারবো।(আমি)
.
–দেখো অনেক পরিশ্রম হয়েছে আজ। তুমি বরং বিশ্রাম নাও। জেসি চল তোর সাথে কথা আছে আমার।(এনা)
।।
।।
এনা আর জেসি দুজনে চলে গেছে। দুজনের মধ্যে এখন পরিচয় লুকানো নিয়ে একটা ঝগড়া হবে। হ্যারি বিছানায় পরেই শুয়ে পরলো। আমার গোসল করতে হবে। সারা শরীরে ময়লা লেগে আছে। সেই সাথে আবার শরীরের ব্লেজার আর প্যান্টে মোট দশটা ছিদ্র হয়েছে। আমি গোসল করে জামাকাপড় চেন্জ করে নিলাম। এমনিতেও রাত হয়ে গেছে। আর হালকা খাওয়া দাওয়া হল রুম থেকেই হয়েছে। তাই আমি সোজা শুয়ে পরলাম। এই দুনিয়াতে এসে মোবাইল ফোনকে অনেক মিস করি। যদি এখানে মোবাইল চলতো তাহলে তো ভালোই হতো। সকল যোগাযোগ চিঠির মাধ্যমেই করে। আর চিঠিগুলো বিভিন্ন ধরনের পাখি বহন করে। পাখির কোয়ালিটি হিসেবে চিঠি দেওয়া নেওয়ার সময় নির্ভর করে। খুব সকালে আমি আর হ্যারি মর্নিং ওয়াক এর জন্য বের হলাম। প্রাসাদের ডান পাশে বিশাল বড় একটা পুকুর। আর বাম পাশে বিশাল বড় একটা মাঠ। দেখে মনে হচ্ছে হেলিকপ্টার ল্যান্ড করার জায়গা। ও সরি এখানে তো চপার নাই।
.
–জ্যাক, ঔযে উপরে দেখতেছো একটা বিশাল পাখির মতো জিনিস আসতেছে?(হ্যারি আমাকে ডেকে বললো)
.
–হ্যা। দেখতে তো চপার মনে হচ্ছে।(আমি)
.
–আরে ভালো করে দেখো। ঔটা একটা ড্রাগন।(হ্যারি)
.
–কি? মুখ দিয়ে আগুন বের হয় সেই ড্রাগন?(আমি)
.
–হ্যা হ্যা। অবশ্য ড্রাগন অনেক রকম হয়। ড্রাগন হলেই যে মুখ দিয়ে আগুন বের হবে সেটা নয়। ড্রাগন এর মুখ দিয়ে পানি, বিদুৎ ও বের হতে পারে।(হ্যারি)
.
–ড্রাগনের পিঠে মনে হচ্ছে কেউ বসে আছে।(আমি)
.
–হ্যা এটা ফায়ার প্রিন্সের ড্রাগন।(হ্যারি)
.
–ফায়ার প্রিন্স মানে এনার বড় ভাই?(আমি)
.
–হ্যা। প্রিন্স এলেক্স কোয়াডার্ট।(হ্যারি)
.
–নাম গুলো তো তিন ভাইবোনের একই রকমই।(আমি)
।।।।
।।।।
একটা বড় একটা ড্রাগন নামলো আমাদের সামনেই। ড্রাগনের পিঠ থেকে একজন সুদর্শন পুরুষ ও নামলো। নেমেই ড্রাগনের পিঠে একটা ঠাপ্পর দিলো। ড্রাগনটা সাথে সাথে উড়ে গেলো। এরপর প্রিন্স আমাদের দিকেই আসতে লাগলো,
.
–তুমিই কি জ্যাকসন ব্রিট?(এলেক্স)
.
–জ্বী।(আমি ড্রাগনের দিকে তাকিয়ে রইলাম)
.
–আমি প্রিন্স এলেক্স কোয়াডার্ট অন্য নাম দ্যা ফায়ার প্রিন্স। আর যে ড্রাগনটা দেখলে ঔটা আমার পার্টনার ইজুরা।আর হ্যা আমার সামনে ফরমালিটি দেখাতে হবে না। আমাকে নিজের ভাই মানতে পারো।(এলেক্স)
.
–জ্বী।(আমি)
।।।
।।।
আমরা কথা বলছিলাম তখনি এনা আর ওর বোন এলিসা আসলো। এনা ওর ভাইকে জরিয়ে ধরলো,
.
–সরি এলিসা বোন, আমার আসতে একটু দেরী হয়ে গেলো।(এলেক্স)
.
–তুমি তো সব কিছুতেই দেরী করো শুধু।(এলিসা)
.
–জ্যাক তোমার সাথে তো কালকে ভালো করে পরিচয় করিয়ে দিতে পারি নি। এ হলো আমার বড় বোন এলিসা। কালকে তো ওরই বিয়ে হলো।(এনা)
.
–হাই আমি জ্যাক….(আমাকে বলতে না দিয়ে এনার বোন বলতে লাগলো)
.
–থাক থাক তোমাকে আর কিছু বলতে হবে না। এখন থেকে তো তুমি আমাদেরই একজন তাই পরিচয় একবার শুনলেই হয়।(এলিসা)
.
–হ্যা। ভাইয়া তুমি সত্যি সব কিছুতেই লেট করো।(এনা)
.
–আর বলিস না। একটা ড্রাগন মারার মিশনে গিয়েছিলাম। জানোসই তো ড্রাগনগুলো কত রেয়ার। খুজে পেতেই যত সমস্যা।(এলেক্স)
.
–তো মারতে পারলেন?(আমি)
.
–যার খোজে বের হয়েছিলাম তাকে কোথাও পাই নি। কিন্তু পথে অন্য এক বিশাল ড্রাগনের সাথে দেখা হয়ে যায়। তার সাইজ তো আমারটার থেকে তিনগুন বড়। দেখেই আমার ড্রাগন দিলো উড়াল। তাই চেষ্টাও করতে পারি নাই।(এলেক্স)
.
–ওওও।(আমি)
.
–আচ্ছা বাদ দাও। আমি সময় মতো এসে গেছি। এখন তোমার ট্রেনিং চলবে। যদি আমাকে হারাতে পারো তাহলে আমার ছোট বোনের সাথে এনগেজমেন্ট হবে নাহলে ভুলে যাও।(এলেক্সের কথা শুনে সবাই হাসতে লাগলো)
.
–ভাইয়া তোর ট্রেনিং এর দরকার নেই। কালকে বাবা এনা আর জ্যাকের এনগেজমেন্ট দিয়েই দিয়েছে।(এলিসা)
.
–ওওও শিট। বাবার সাথে তো এই কথা ছিলো না। বাবা তো আমাকেই বললো জ্যাক যদি আমাকে হারাতে পারে তাহলেই বাবা রাজি হবেন।(এলেক্স)
.
–আমার মনে হচ্ছে আমার এখানে আসার আগেই আমার কথা এখানে চলেছে।(আমি)
.
–আসলে এনাই আমাদের চিঠিতে তোমার কথা বলেছে। তাই বাবা প্রথমে পরীক্ষা করে দেখতে চাইছিলো।(এলিসা)
.
–কিন্তু আমার ট্রেনিং দেওয়ার কি হবে। বাবা সব কিছুতেই গরমিল করে দেই।(এলেক্স)
.
–আপনি চাইলে এখনি আমাকে শিখাতে পারেন। আমি শিখলাম ও সাথে আপনাকে হারিয়ে ও দিলাম।(আমি)
.
–হ্যা এটা ঠিক সিদ্ধান্ত। চলো আমার সাথে।(এলেক্স)
.
–এই ভাইয়া না। তোরা লড়িস না প্লিজ। আমার কথা শোন।(এলিসা)
.
–আরে কিছু হবে না ওদের লড়তে দাও। জ্যাক কিছু জিনিস শিখতে পারবে।(এনা)
.
–জ্যাক এমনিতেই যা জানে তাতে তো ভাইয়ার জন্য চিন্তা হচ্ছে।(এলিসা)
।।।
।।।
আমি আর এলেক্স দুজনে মাঠের মাঝখানে চলে আসলাম। এলেক্স আমাকে বলতে লাগলো,
.
–তো কি কি করতে পারো?(এলেক্স জিজ্ঞেস করলো)
.
–তেমন কিছুই না।(আমি)
.
–লড়েছো কয়বার?(এলেক্স)
.
–দুবার মনে হয়।(আমি)
.
–তো পুরো জীবনে দুবার লড়েছো। কি জীবনই কাটিয়েছো। তোমার তো আমার মতো হান্টারে যোগ দেওয়া উচিত।(এলেক্স)
.
–হান্টারে যোগ দিয়ে কি হবে?(আমি)
.
–হান্টারে যোগ দিলে নিজের মন মতো সব কিছু করতে পারবে। বিভিন্ন রকম জায়গা যেখানে রাজ্যের অন্যকেউ যেতে পারে না সেখানে তুমি যেতে পারবে।(এলেক্স)
.
–তাতে কি লাভ?(আমি)
.
–উচ্চ লেভেল হান্টারদের মিশন বেশীর মানুষের দুনিয়াতেই থাকে।(এলেক্স)
.
–কি আপনারা মানুষের দুনিয়াতেও যেতে পারেন।(আমি)
.
–নিয়ম অনুযায়ী মনস্টার দুনিয়াতে কোনো মানুষ আসতে পারবে না। কিন্তু এইটা তো লেখা নেই কোথাও যে মনস্টাররা মানুষের দুনিয়াতে যেতে পারবে না।(এলেক্স)
.
–মানুষের দুনিয়াতে কিরকম মিশন থাকে আপনাদের?(আমি)
.
–মানুষের রাজ্যে মানুষদের পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের মনস্টার থাকে। বিভিন্ন মনস্টার সেখানে ছোট থেকেই বড় হয়, আবার কিছু আছে যারা সেখানে মানুষের মতোই বসবাস করে। যেহেতু তারা মনস্টার তাই সাধারন মানুষ তাদের সম্পর্কে জেনে গেলে অনেকটা বিপদ বেধে যাবে। তাই আমরা যারা উচ্চ লেভেলের হান্টার তাদের কাজ হলো যেসব মনস্টার মানুষের দুনিয়াতে ঝামেলা করে তাদেরকে মেরে কিংবা জীবিত এখানে নিয়ে আসা।(এলেক্স)
.
–যদি নিজেরা গিয়েই কোনো ঝামেলায় পরে যায়?(আমি)
.
–তাহলে অন্য হান্টার আসবে তোমাকে মারতে।।(এলেক্স)
.
–এটা তো বেশ দারুন বিষয়।(আমি)
.
–তো হান্টার হবে নাকি?(এলেক্স)
.
–যদি প্রতিনিয়ত মানুষের দুনিয়াতে ঘুরতে যেতে পারি তাহলে তো নিশ্চয়ই।(আমি)
.
–ওকে তাহলে যদি আমাকে হারাতে পারো ডুও তে তাহলে তোমাকে আমার কালকের মিশনে মানুষের দুনিয়ায় নিয়ে যাবো।(এলেক্স)
.
–সত্যি?(আমি খুশি হয়ে জিজ্ঞেস করলাম)
.
–হ্যা যদি আমাকে হারাতে পারো তাহলে।(এলেক্স)
।।।
।।।
এলেক্স আর আমার মধ্যে লড়ায় শুরু হয়ে গেলো। আসলে এলেক্স অনেক অভিজ্ঞ। আমাকে প্রথম থেকে কম ভাবছে না। লড়ায় করতে গেলে শত্রুকে কম ভাবা হচ্ছে সবচেয়ে বোকার লক্ষন। কারন শত্রুর কিরকম শক্তি আছে সেটা না জেনে ওভারকনফিডেন্স হলেই পরাজয় আসে। আমি আমার হাত দিয়ে ফায়ার বল বানাচ্ছিলাম। আর সেগুলো এলেক্সের দিকে ছুড়ে মারছিলাম। আমি আমার ক্ষমতা গুলো এখনি দেখাতে চাই না। এলেক্স প্রথমে ভাবুক আমি কিছুই পারি না। বল গুলো ছুরছিলাম কিন্তু একটাও লাগছে না ওর।
.
–তো তুমিও ফায়ার ম্যাজিক ব্যবহারকারী। কিন্তু আমার কাছে লাভ হবে না। কারন আমি ফায়ার প্রিন্স। অন্য এট্যাক ব্যবহার করো।(এলেক্স)
.
–আমি তো আর কোনো এট্যাক ব্যবহার করতে পারি না।(আমি)
.
–তুমি আগুন দিয়ে কি বানাবে শুধু সেটা ভাবো। চিন্তাশক্তি যতো ভালো হবে ততো শক্তিশালী তোমার ম্যাজিক হবে।(এলেক্স বলেই বিশাল আগুনের ঝড় আমার দিকে ছুড়ে মারলো)
।।।
।।।
আমি বুঝতে পারলাম এই আগুন আমার লাগলে আমার শরীরের অবস্থা টাইট হয়ে যাবে। তাই দৌড়াতে লাগলাম।
.
–তোমার ম্যাজিক অনেক দুর্বল। চলো অন্য কোনো জিনিস ব্যবহার করি।(এলেক্স)
.
–আচ্ছা আমরা ড্রাগন ব্যবহার করি।(আমি)
.
—হাহাহা। কিভাবে করবে তোমার কাছে তো ড্রাগন নেই।(এলেক্স হেসে বললো)
.
–কেনো প্রাসাদে কি ড্রাগন পাওয়া যায় না?(আমি)
.
–এই রাজ্যে মোট ১০ জন আছে যারা ড্রাগনকে নিজের পার্টনার করতে পেরেছে। বাকি চার রাজ্যে বেশী সেই সংখ্যা।(এলেক্স)
.
–তো আমাকে ড্রাগন পেতে হলে কি করতে হবে?(আমি)
.
–অনেক অনেক ট্রেনিং করতে হবে তোমাকে।(এলেক্স)
.
–ট্রেনিং করলে শক্তিশালী হবে। আর একটা ড্রাগনের যোগ্য শক্তিশালী যদি হও তাহলেই ড্রাগন তোমার সাথে বন্ধুত্ব করবে। নাহলে মেরে ফেলবে।(এলেক্স)
.
–তাহলে তো ড্রাগন আমার হয়েই যাবে একটা মনে হচ্ছে।(আমি)
.
–হাহাহা। তুমি অনেক কনফিডেন্ট থাকো। তোমাকে আমার পছন্দ হয়েছে।(এলেক্স)
.
–এই না না প্রিন্স। আমি ঔরকম ছেলে না একদমই।(আমি)
.
–হাহাহা। আমিও ও ঔরকম না। আমাকে ভাইয়া বলতে পারো।(এলেক্স)
.
–না প্রিন্সই ঠিক আছে।(আমি)
.
–তাহলে এনগেজমেন্ট পর্যন্তই ঠিক আছে বিয়ে আর হচ্ছে না।(এলেক্স)
.
–আচ্ছা ভাইয়া।(আমি)
.
–গুড বয়। চলো তলোয়ার দিয়ে লড়ি।(এলেক্স)
.
–ওকে।(আমি)
।।।
।।।
এলেক্স ওর তলোয়ার বের করলো।
.
–এটাকে বলে দ্যা ভ্যাম্পায়ার শোর্ড। ভ্যাম্পায়ারদের জন্য এই তলোয়ার। এটা আমাদের শরীরের রক্ত চুষে শক্তিশালী হয়ে উঠে। তোমার নেই কোনো তলোয়ার?(এলেক্স)
.
–হ্যা আছে। এক্সোনিয়া।(আমি এক্সোনিয়া বলে ডাক দিলাম। সাথে সাথে আমার হাতে এক্সোনিয়া চলে আসলো)
.
–ওয়েট এ মিনিট। এটা কি সেই লেজেন্ডারী মনস্টার হান্টার তলোয়ার?(এলেক্স)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–এটা তোমার কাছে আসলো কিভাবে?(এলেক্স)
.
–এটা বিশাল কাহিনী।(আমি আস্তে আস্তে আমার পরিচয় আর মাইকেলের দেওয়া তলোয়ারের ব্যাপারটা শুধু বললাম)
.
–ও তুমি লংস্টারের প্রিন্স তাই হয়তো বাবা দেড়ী করে নি। শোধ নিয়েছে তোমার বাবার থেকে।(এলেক্স)
.
–সে যাইহোক তুমি তো ডিম্যান। আর আমি ভ্যাম্পায়ার। দেখি হয়ে যাক তলোয়ার ফাইট।(এলেক্স)
।।।
।।।
এলেক্সের সাথে আমি তলোয়ার নিয়ে লড়তে লাগলাম। আমি তলোয়ার চালাতেই জানি না। তাই এলেক্স প্রথমে এট্যাক করছে না। আমাকেই তলোয়ার দিয়ে ওকে মারতে বলছে।
।।।।।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।