#প্রাচীর
#নূপুর_ইসলাম
#পর্ব- ০৪
নিশাত খাতায় অংক করতে করতে বললো, — অংক বুঝেছো সায়ান?
সায়ান তার ফোকলা দাঁতে হাসলো! হেসে সোজা বললো,– না ম্যাডাম।
— কেন? সোজা যোগ অংক।
— যোগ হোক বিয়োগ, অংক কখনো সোজা হয় না ম্যাডাম। কালকে হোমওয়ার্কের অংকে ছিল পঁচানব্বই আর পনেরোর যোগ। পনেরো তো হাত, পা দিয়ে চালিয়ে দিলাম কিন্তু পঁচানব্বই টা আঙুল আমি কোথায় পাবো? বাবা, মা দাদুরটা মিলেও হয়নি।
নিশাত সায়ানের দিকে তাঁকালো! মাথা চুলকে বললো — তুমি পঁচানব্বই কে একবারে গুনতে গেছো কেন? কালকে কিভাবে দেখালাম। তাছাড়া আঙুল না হয় কম পড়ছে, কড় তো আর কম পড়ার কথা না।
— কড়ের কথা আর বলবেন না ম্যাডাম। এই যে দেখেন একেক জায়গায় দুই তিনটা করে দাগ। আপনিতো শেখান এক দাগে একটা গণনা। তো এতো এতো দাগ, আমিতো হিসেব মেলাতেই পারি না।
নিশাত নির্বিকার চিত্তে কিছুক্ষণ তাঁকিয়ে রইল। জীবনে কোন পূর্ণ্য করলে এমন চিজ পয়দা হয়, একমাত্র আল্লাহ’ই জানে। তারপর তার মতোই বললো, — আর ইংরেজি, সেটায় কি দোষ করলো? হোমওয়ার্কের খাতা দেখলাম সাদা ফকফকা।
— অংকের টেনশনেই তো ইংরেজি করতে পারলাম না ম্যাডাম। সারা রাত ঘুম হলো না। সকালে স্কুলে যেতে দেরি হলো। প্রেজেন্ট’ই দিতে পারি নি। একদিন না দিলে আবার পাঁচ টাকা। বাসায় ফিরতেই মা কান মলে দিলো। এই যে দেখেন লাল হয়ে আছে।
— বিরাট সমস্যা!
— জ্বি ম্যাডাম! পড়ালেখা’ই সমস্যা। আম্মু বুঝেনা।
— একদম সত্য! এখন আসো আবার বুঝিয়ে দেই। তোমার সমস্যা শুনে আমার নিজেরই মাথা ঘুরছে।
— আজ থাক ম্যাডাম। একতো রাতে ঘুম হয়নি, তার মধ্যে আবার কান ব্যথা করছে। এমন মোচড় দিয়েছে, ছিঁড়ে যে হাতে চলে যাইনি এই আমার ভাগ্য। পরে সবাই খেপাতো , কান ছেঁড়া সায়ান।
নিশাত ঠোঁট টিপে হাসলো ! এতো বিচ্ছুর বিচ্ছু। লেখা পড়া না করার একেক দিন একেক বাহানা ঠিক তৈরি থাকে। তখনি তার ফোন বাজলো! সে ব্যাগ থেকে বের করতেই দেখলো সেই সকালের নাম্বার। ধুর! বলেই ফট করে কেটে মোবাইল পুরো অফ করে ফেললো।
আসিফ এবারো কেটে যাওয়া কলের দিকে তাঁকিয়ে রইল। সমস্যা কি সেটাই তো বুঝতে পারছে না। থানায় থেকে তো আবার এই নাম্বার’ই দিলো। তখন কি অন্য কেউ রিসিভ করেছিল? ইয়া মাবুদ! কি প্যারার মধ্যে যে আছে একমাত্র আল্লাহ’ই জানে। এক দিকে স্যার, একদিকে স্যারের মা, আরেক দিকে তার নিজের বউ। এই চাকরি করতে গিয়ে সময় তো দিতেই পারে না। বাসায় গেলেই ঝাড়ু বটি নিয়ে তেড়ে আসে। এই ত্রিমাত্রার চাপে সে চিড়েচ্যাপটা। আবার শুরু হয়েছে এই নতুন যন্ত্রনা। আল্লাহ ধৈর্য্য দাও।
তখনি ওয়াহিদ কেবিন থেকে বের হলো। মাথায় ব্যান্ডেজ তবে গায়ে ফুল ড্রেসআপ। দেখে বোঝার উপায় নেই, এতো বড় এক্সিডেন্ট থেকে গতকাল’ই সে বেঁচে ফিরেছে। আসিফ দৌড়ে গিয়ে তার পাশাপাশি হলো। ওয়াহিদ ব্যস্ত ভাবে এগিয়ে যেতে যেতে বললো, — পেয়েছো?
— জ্বি স্যার! ছেলেটার নাম কবির। কথা হয়েছে।
— আর?
— চেষ্টা করছি স্যার।
— কোন দেশের নেত্রী সে? চেষ্টা করে খোঁজ বের করতে হয়।
আসিফ উত্তর দিলো না। তবে মনে মনে ঠিক মুখ বাঁকালো! বাঁকিয়ে মনে মনেই বললো, — সেটা তো আপনি বলেন, কি এমন করেছে যে এমন ছাকনি দিয়ে ছেকে খুঁজে বের করতে হবে। আরে বাবা মানুষ’ই তো মানুষকে সাহায্য করে। তারাও করেছে। ব্যস কাম খতম! তা না তাদের এখন বাটি চালান দিয়ে খুঁজে বের করো। কেন রে ভাই? চাকরিতে জয়েন হওয়ার পর থেকে একজনকে খুঁজতে খুঁজতে গলায় কাছে দম এসে আছে এখন আবার আরেক জনকে। আল্লাহ! অন্তত এই বান্দার উপরে একটু রহম করো।
ওয়াহিদ গাড়িতে গিয়ে বসলো। আসিফের মুখের দিকে তাঁকিয়ে বললো, — কোন সমস্যা?
আসিফ সাথে সাথে দু- পাশে মাথা নাড়লো! নাড়তেই নাড়তেই বললো, — ম্যাম বার বার ফোন দিচ্ছে স্যার। রাতে কি বাসায় ফিরবেন?
ওয়াহিদ ল্যাপটপ অন করতে করতে একটা শব্দই বললো, — না।
_____
সুলতানা ক্লান্ত চোখে মেয়ের দিকে তাঁকালো। এসেই ঢুকে গেছে রান্না ঘরে। এখন ব্যস্ত হাতে রান্না করছে। আগুনের তাপে শ্যামলা বরণ মুখটা কেমন মায়াবী লাগছে। সাথে কিছু একটা গুনগুন করছে। হয়তো কোন গান। মেয়েটার গানের গলাটা হয়েছেও এতো মিষ্টি। স্কুলে এমন কোন বছর ছিল না গানের জন্য পুরস্কার না আনতো। অথচ কোন মাস্টার নেই, গান শেখার অবস্থা নেই। শুনে শুনে কি সুন্দর সুর তুলে। শুধু গান না, যে কোন কাজ’ই এই মেয়ে চোখের দেখায় ফট করে ফেলতে পারে।
এই যে রান্না! সংসারের এতো এতো কাজ। সে কিছুই নিজে শেখায় নি। পরের সংসারে এতো সময় কই হাতে ধরে শেখাবে। একা একাই কেমন যেন শিখে গেছে। করবেও খুব গুছিয়ে তবে নিজের বেলায় খুব এলোমেলো। নিজের কোন কিছু নিয়েই তার মাথা ব্যথা নেই। বেতন টাকা এসে সব তুলে দেবে আমার হাতে। কোন সখ নেই, কোন আহ্লাদ নেই। এখনো কাপড়, টাপড় সব তার নিজে কিনে দিতে হয়।
সে অবশ্য এমন ছিল না। বাবা, মায়ের আদরের মেয়ে ছিল। লেখাপড়ায় ছিল ডাব্বা। সেজে গুজে টিপটপ হয়ে ঘুরে বেড়াতো। সেই বেড়াতে বেড়াতেই নাজিম পেছনে পড়লো। বাবা তখন নারায়ণগঞ্জ পাওয়ার হাউজে চাকরি করে। সেখানের কোয়াটারেই থাকতো তারা। নাজিম ছিল তাদের পাশের কোয়াটারের আন্টির ভাগিনা। বাবা, মায়ের ছাড়াছাড়ির পরে খালার কাছে থেকে লেখাপড়া করতো। সেখান থেকেই দুজনের পরিচয়।
কথায় আছে সুন্দরী মেয়েরা বোকা হয় হয়, সে হলো তার জলজ্যান্ত উদাহরণ। তা না হলে চাল নেই, চুলো নেই এমন ছেলের মধুর কথায় ফেসে যাবে কেন? জানা কথা বাবা, মা কখনো মানবে না। তাই এক রাতের আঁধারে’ই তার হাত ধরে পালিয়ে গেলো। অবশ্য পালিয়ে গিয়ে আফসোস কখনো হয়নি। টাকা পয়সার কমতি থাকলেও নাজিমের ভালোবাসার কমতি কখনো ছিল না। অদৃশ্য এক মায়ার চাদরে আগলে রেখেছিল। কি যে ভাগ্যবতী মনে হতো তখন নিজেকে।
নাজিমের ব্যবসা ভাগ্য ভালো ছিল। কয়েক বছরেই বাজিমাত। সবাই বলে অর্থ না থাকলে ভালোবাসা জানালা দিয়ে পালায়। আসলে কথাটা সত্য না। অর্থ ঘরে আসলে ভালোবাসা জানালা দিয়ে পালায়। তার টাও যে কখন পালিয়ে গিয়েছিল সে বুঝতেই পারেনি।
নিশাত রান্না করতে করতেই মায়ের দিকে তাঁকালো। তার মা এক ধ্যানে তার দিকেই তাঁকিয়ে আছে। পুরো সংসারের কাজ এক হাতে করে। চোখে মুখে ক্লান্তি স্পষ্ট। মামি শুধু মামা যতক্ষণ বাড়িতে ততক্ষণ’ই তিনি খুব ব্যস্ত থাকেন। ঝাড়ু দেওয়া ঘরই দেখা গেলো ঝাড়ু দিচ্ছেন। গুছানো আলমারির কাপড় সব নামিয়ে গুছাচ্ছেন। সারা দিন রান্না ঘরে পা না দিলেও, মামা আসার আগে ঠিক বসে থাকেন। এমন ভাব দেখান দুনিয়ার কাজ করে ফেলেছেন। এসব দেখা যায়, বুঝা যায় তবে পরের বাড়িতে থেকে কখনো কিছু বলা যায় না।
নিশাত অবশ্য কাওকেই কিছু বলে না। এই যে তার মা ক্লান্ত শরীরে চুপচাপ বসে আছে। এখনো কিছু বললো না। কেননা সে ভালো করেই জানে মা তাকে দেখছে না। জীবনের হিসেব নিকেশ করে। অথচ হিসেবটা করা দরকার ছিল আরো অনেক আগে। সময় ফুরুলে হিসেবে কুলোয় না।
সে আবার ফিরে ডালে ফোড়ন দিলো। মাছটা ভালো করে ধুয়ে নিলো। পাঙাশ মাছ। গরম পানিতে ভালো করে না ধুলে গন্ধটা নাকে লাগে। সে ধুয়ে মশলা মাখলো আপন মনে। মায়ের হিসেব নিকেশ নিয়ে তাকে তেমন বিচলিত মনে হলো না। অবশ্য হয়েই বা লাভ কি? মানুষের কাছ থেকে সব বিচ্ছিন্ন করা যায়। তবে তাদের স্মৃতি না। ভালো হোক মন্দ সেটা ভার সারা জীবন বহন করতে হয়।
সে মাছে মশলা মাখিয়ে জিরে খুঁজলো। ভেজে গুড়ো করে রান্নার শেষে ছিটিয়ে দেবে। এ বাড়িতে কাজের সময় কিছুই পাওয়া যায় না।
সে হাত ধুয়ে ওড়নার মুছতে মুছতে বেরুলো। এ বাড়িতে রান্না হয় দু- বার। এক সকালে, সকালের টা খেয়ে যে যার মতো বেরিয়ে যায়। বাসায় থাকে শুধু মা আর মামি। তারা দুপুরের জন্য আলাদা কিছু করে না। যা থাকে তাই দিয়ে চালিয়ে দেন। আর করেন রাতে। রাতে বলতে একটু দেরিতেই। কেননা মামা দোকান বন্ধ করেন এগোরাটার পরে । এসে তিনি গরম গরম খাবার খান। গরম খাবার না পেলে প্লেট, গ্লাস ছুড়ে মারেন। তাই রান্নার আয়োজন হয় নয়টার পরে। শুধু রান্না না এই বাড়িতে প্রতিটা সময়ের ঘন্টা চলে মামার মেজাজে। পান থেকে চুন খসলেই ধুম – ধামাকা চলে।
আর তার এই ধুম- ধামাকা মামার নাম হলো মুঘল সম্রাট জালাল উদ্দিন আকবর। বাবা ছিলেন সুলতান, ছেলে মুঘল সম্রাট। নাম যতো ভারী, মানুষ হিসেবে অবশ্য তিনি ছোট খাটো মানুষ। তবে বলেনা ছোট মরিচের ঝাল বেশি। তার মামার জন্য কথাটা একশো পার্সেন্ট সত্য। তিনি সব কথায় আকডুম বাকডুক করেন। বাজারে নামকরা বড় মুদি দোকান তার। বেঁচা কেনা কেমন নিশাত জানে না। তবে মামির হায় হুতাশের রেলগাড়ি চলতেই থাকে।
মামা শুধু আকডুম বাকডুম করেন তা না, পুরুষ মানুষ হওয়ার যতো গুণ সবই তিনি ধারণ করে বসে আছেন। তার উপরে একস্ট্রা গুণ হলো দুনিয়ার অলুক্ষণের কার কাজবারের কুসংস্কার সব তিনি মানেন। সকালে বাসি ঘর থেকে বের হবেন না। মা কে তার আগে উঠে বাসি ঘর ঝাট দিয়ে হয়, চুলা জ্বালাতে হয়। একবার বের হলে দুনিয়া গায়েব হোক পেছনে ফিরে তাঁকাবেন না। কোন কিছুতে বাঁধা পেলে, তিনি ধরেই নেবেন এই কাজ জন্মের মতো শেষ। ভর সন্ধ্যা মানেন, ভর দুপুর মানেন। আরো কতো কিছু যে আছে রে বাবা। লিস্ট করতে গেলে পৃথিবীর বুকের খাতা কলম শেষ তবে লেখা শেষ হওয়ার নাম নেবে না । মামি মামাকে যমের মতো ভয় পায়। অবশ্য বলতে গেলে বাড়ির সবাই ভয় পায়। সেই ভয়ের মধ্যে নিশাত নিজেও আছে। তবে সবার চেয়ে একটু কম। কম বলেই মামা তাকে সব সময় দেখে অগ্নিদৃষ্টিতে।
রান্না ঘর থেকে বের হয়ে নিশাত এগিয়ে সজল ভাইয়ের রুমে উঁকি দিলো। সে কি এসেছে? আসলে যদি নিচে একটু পাঠানো যায়। অবশ্য আজকাল তার চেহেরা দেখা যায় না বললেই চলে। বড় হলো এক সাথে একই ছাদের নিচে। অথচ এখন লেজ বাঁচিয়ে চলে ।
উঁকি দিতেই পেছন থেকে সজল হালকা করে মাথায় চাটি মারলো। সে মাত্রই এসেছে। এসে দেখে এই রমণী দরজায় উঁকি দিচ্ছে। এ অভ্যাসটা অবশ্য নিশাতের ছোট বেলার। সে কখনো সোজা রুমে আসবে না। আগে একটু করে উঁকি দেবেই। তারপর একটু হাসবে। এই হাসা শুধু ঠোঁট ছড়ানো পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। এই মেয়ের চোখ কখনো হাসে না।
নিশাত চোখ পাকিয়ে তাঁকালো। তাঁকাতেই সজল সাইড দিয়ে রুমে যেতে যেতে বললো, — চুন্নি।
নিশাত মুখ বাঁকিয়ে বললো, — কোন দেশের রাজা তুমি। নিশাতের এতো খারাপ দিনও আসে নি চুরি করতে তোমার রুমে আসবে।
সজল খাটে বসলো! তার দৃষ্টি নিচে। আজকাল কেন জানি নিশাতের দিকে তাঁকাতে পারে না। সে কিছু খোঁজার তাগিদে অন্য পাশে দৃষ্টি রেখেই বললো, — তাহলে কেন এসেছিস?
— নিচ থেকে পঞ্চাশ টাকার জিরে এনে দাও।
— মাত্রই দোকান থেকে এলাম ফোন দিস নি কেন?
— তখন জানতাম নাকি?
— কি ছায়ের কাজ কাম যে করিস তোরা? যা লাগে একেবারে লিস্ট করিস না কেন?
— আমাদের হলে ঠিক করতাম। আমাদের নাতো তাই করি না।
সজল ফিরে তাঁকালো। তাঁকাতেই তার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে এলো। আজকাল নিশাতের দিকে তাঁকালেই তার এমন হয়।
সে সাথে সাথেই চোখ ফিরিয়ে নিলো। নিলেই বা কি? নিশাত নেয়ে ঘেমে একাকার। মুখ লাল হয়ে আছে। কোকড়ানো চুল কপালের এপাশ ওপাশ দিয়ে স্বর্ণ লতার মতো ঝুলে আছে। তাকে দেখতে লাগছে একেবারে পুতুলের মতো। চোখ ফেরালেই কি চোখ থেকে সরানো যায়?
সে সাথে সাথেই উঠে দাঁড়ালো। এই এক কারণেই বেশিভাগ সময় সে বাড়িতেই থাকে না। নিশাতের সাইট কেটে সে আবার বেরিয়ে গেলো।
নিশাত সেই বেরিয়ে যাওয়া দেখলো। দেখতে দেখতেই ওড়নার কোণা দিয়ে নাক, মুখ মুছলো। সন্ধ্যার পর থেকে ছাদের গরম নামে। ঘরে টেকা যায় না। মুছতে মুছতেই চেঁচিয়ে বললো,– যাচ্ছো যখন এক হালি লেবু আর দশ টাকার ধনেপাতাও নিয়ে আইসো।
সজল সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতেই নিশাতের লেবু আর ধনেপাতার খবর শুনলো। শুনে হেসে ফেললো। সারা জীবন শুনে এলো মেয়েরা চোখ দেখলেই বুঝে কোন ছেলে তাকে কোন নজরে দেখে। অথচ এই মেয়ে দুনিয়ার সব বোঝে কিন্তু কারো নজর বুঝে না। নাকি বুঝতে চায় না?
চলবে…..