প্রাচীর পর্ব-০৮

0
701

#প্রাচীর
#নূপুর_ইসলাম
#পর্ব- ০৮

আজ সুবর্ণা ভিলায় ওয়াহিদ ফিরলো সন্ধ্যার একটু পরে। সুর্বণা মাত্রই নামাজ শেষ করেছে। জায়নামাজ থেকে এখনো উঠা হয়নি, সেখানে বসে বসেই তাসবিহ পড়ছে। নিনিত এসে তার কানের পাশে আস্তে করে বললো,– নানু মামা এসেছে। এসে চুপটি করে ড্রইংরুমে বসে আছে।

সুবর্ণা অবাক’ই হলেন। ওয়াহিদ কখনোও সন্ধ্যায় বাসায় ফেরে না। তার ফিরতে ফিরতে রাত হয়। আর যদি সব ঠিক ঠাক থাকে তবুও ফিরতে ফিরতে নয়টা। তাও আবার ড্রইংরুমে! সে সব সময় সোজা নিজের রুমে যাবে। খাবার খাওয়া আর অতিরিক্ত দরকার ছাড়া নিচে খুব একটা কখনো বসবে না ।

সে তসবিহ হাতেই উঠলো! সন্তান বড় হলে অন্য জগতের মানুষ। সেই জগতে চাইলেই মা প্রবেশ করতে পারে না। অথচ মায়ের পুরো জগৎটাই হয় সন্তান।

সুবর্ণা ড্রইংরুমে এসে দেখলো ওয়াহিদ সত্যিই চুপচাপ বসে আছে। অবশ্য এই ছেলে সব সময়ই চুপচাপ। এতো মেপে মেপে কথা বলে। ছোট বেলা ছেলেকে নিয়ে খুব গর্ব করতো। এতো ভদ্র, নম্র, শান্ত, কোন দুষ্টামি নেই। শুধু সে না আত্মীয় – স্বজনরা তো উদাহরণ হিসেবে তার ছেলেকেই টেনে নিতো। অথচ আজ মনে হয়, এমন না হলেই হয়ত ভালো ছিল। বাসায় ফিরতেই কয়েকবার মা, মা বলে ডাকতো, সব কিছু এলোমেলো অগোছালো করে এক গাল হেসে বলতো, — ঠিক করে রেখেতো মা। পোড়া পোড়া ডালের চচ্চড়ি দিয়ে যখন ভাত মেখে বসে। মুখ বাড়িয়ে বলতো, – দেখি এক লুকমা দাও তো মা।

ছেলেকে সবার নজরে বড় বানাতে বানাতে কখন যে বড় হয়ে গেলো বুঝতেই পারলো না। ছেলের জগৎ এখন ভিন্ন। কাজের জন্য আছে দু- তিন জন মানুষ। ডালের চ্চচড়ি মাখা ভাত খাবে কি? ছেলে ভাত’ই খায় না। খায় টলটলা ডালের পানি, ঘাস আর লতাপাতা।

সে এগিয়ে গিয়ে ছেলের পাশে বসলো! ছেলের দিকে তাঁকালেই তার চোখ জুড়িয়ে যায়। তিনি বসে মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, — কি হয়েছে রে খোকন?

ওয়াহিদ মায়ের দিকে তাঁকালো। মাথার হাত টেনে নিজের হাতে মুঠো করে বললো, — আমি এখনো খোকন ? নিনিত শুনতে পেলে খিলখিল করে হাসবে।

সুর্বণা হাসলেন। হেসে বললেন, — মায়ের কাছে সন্তানেরা সব সময়’ই খোকন।

ওয়াহিদও মৃদু হাসলো! তখনি তার ফোন বাজলো। সে রিসিভ করে কানে রাখতেই আসিফ বললো, — জ্বি স্যার। সব ইনফরমেশন নেয়া হয়েছে। আপনি যাকে খুঁজছেন তিনি’ই সে। এটা তার মামার বাড়ি। গ্রামের জমিজমা বিক্রি করে এখানে স্থায়ী হয়েছেন। তার মায়ের নাম সুলতানা। পিতা নাজিম উদ্দিন।

ওয়াহিদ ফোন কাটলো! কেটে মায়ের দিকে তাঁকিয়ে বললো, — সুলতানা আন্টির খোঁজ পেয়েছি। আসিফ কালকে তোমাকে সেখানে নিয়ে যাবে। আমি তাদের অংশ ফিরিয়ে দিতে চাই। আর.. ওয়াহিদ একটু থামলো, তারপর বললো, — তারা যদি বিয়েটা রাখতে চায় ভালো আর যদি শেষ করতে চায়। আমি সেটাও করতে চাই। আইনতো না হোক ধর্মের মতে বিয়ে হয়েছে। ধর্মের মতেই আমি সব শেষ করবো। তারপর তুমি যা চাইবে তাই হবে। তবে মা একটা কথা ক্লিয়ার, যদি তারা না চায় তুমি শেষ করার জন্য নিজে থেকে কোন স্টেপ নেবে না। বাবার শেষ ইচ্ছা এটা। আশা করি বাবার শেষ ইচ্ছার মান তুমি রাখবে।

সুর্বণা শক্ত হয়ে চুপচাপ কিছুক্ষণ বসে রইলো! তার পুরো মুখ থমথমে কঠিন। সেই কঠিন ভাবেই বললো, — আমার বোনের খুনির মেয়ে সে।

— খালামণি সুইসাইড করেছে মা।

— সুইসাইড পর্যন্ত ঢেলে দিলে সুইসাইড তো করবেই।

— যে দিয়েছে তাকে তুমি শাস্তি দিয়েছো। এখানে সুলতানা আন্টি বা নিশাত কারো দোষ নেই।

— তার দোষ তার গায়ে নাজিমের রক্ত।

— এক হাতে তালি বাজে না মা। খালামণি জেনে শুনে আগুনে ঝাপ দিয়েছিল। গা পুড়লে দোষ শুধু নাজিম আঙ্কেলের হবে কেন?

সুলতানা আগুন চোখে ছেলের দিকে তাঁকালেন। তার শরীর এখন থরথর কে কাঁপছে। ওয়াহিদ মনে মনে বড় একটা শ্বাস ফেললো। ফেলে মায়ের দিকে তাঁকিয়ে আগের মতোই শান্ত ভাবে বললো, — নিশাতের জ্ঞান না থাক, আমি সজ্ঞানে তাকে বিয়ে করেছিলাম। তোমার উপরে গিয়ে আমি তাকে চাইবো না, তবে মনে রেখো মা। তার জায়গায় অন্য কেউ আসবে না। কখনোও না। কেননা যেই সুতো তোমরা বেঁধেছিলে সেই সুতো এখন আমার রন্ধ্রে রন্ধ্রে মেশানো। সেটা চাইলেই টেনে ছিঁড়তে পারবে না। এখন সেটাই করো যেটা তোমার ভালো মনে হয়।

____

জালাল উদ্দিন নিশাতের দিকে তাঁকালো। সব কথায় আকডুক বাকডুম করলেও, আজ শান্ত তবে কঠিন করে বললো, — এসব কি?

নিশাত আপাততো বসে আছে তার মামা বাড়ির ড্রইংরুমে । অবশ্য একে শুধু ড্রইংরুম বলা চলে না। এক সাইডে আছে মাঝারি সাইজের একটা খাট, এই খাটে কেউ’ই থাকে না। যার যখন মন চায় গড়াগড়ি খায়। গড়াগড়ি খেতে খেতে তাদের পেট মোটা টিভি দেখে। খাবার দাবারের কাজ টাজ অর্ধেক এখানেই শেষ করে। আরেক সাইডে বেতের কয়েকটা চেয়ার। সেই নানার যুগের আমলের। সেই চেয়ারের অবস্থা বড়ই শোচনীয়। জবান থাকলে এদের কু কু আওয়াজে বাড়িতে টেকা যেতো না।

এদের জন্য নিশাতের মায়া’ই লাগে। রিটায়ারমেন্টের বয়সে এখনো খেটে চলছে। তাই সে বেশির ভাগ সময়ই বসে খাটে। আজকেও তাই! মাঝে মাঝে তার এই পুরো ঘরের হুলিয়া বদলাতে ইচ্ছে করে। তবে ইচ্ছে কে কখনো লাই দেয় না। ছোট বেলায় একবার দিয়েছিল, তখনতো আর নিজের ইনকামের টাকা ছিল না, খুব আগ্রহ নিয়ে মামিকে গিয়ে বললো। তার মামিও তার স্বভাব মতো নির্বিকার চিত্তে বললো, — “যখন নিজের বাড়ি, নিজের সংসার হবে তখন এতো চিন্তা ভাবনা করো । এই সংসারের জন্য তোমার মামা আছে, আমি আছি। তাই যতদিন আছো নিশ্চিন্তেই থাকো।”

যে কোন কথা নিশাতের জন্য একবার’ই যথেষ্ট। এর পরে কথার আর কোন সুযোগ সে কখনো দেয় না। তাই এই বাড়ি, এই বাড়ির মানুষ কোন কিছু নিয়ে কখনো আর মাথা ঘামায়নি। এখনো ঘামায় না। নিজের মতো থাকে। আজও তার মতোই বললো — আমি একজন কে সাহায্য করেছিলাম। কৃতজ্ঞতা থেকেই এসব করেছে।

নিশাতের মামা বসেছে আবার চেয়ারে। তার মামি ফিরেছে সন্ধ্যায়। সন্ধ্যায় ফিরেই হতবিহব্বল হয়ে ভিমরি খাওয়ার জোগাড়। তিনি দৌড়ে গিয়ে মামাকে এমন ভাবে ফোন দিলেন। যেন নিশাত দুনিয়ার পাপ টাপ করে ফেলেছে। মায়ের ফোন সারাদিন রিসিভ না হলেও মামির টা সাথে সাথেই হলো। হতে দেরি মামার আসতে দেরি হয়নি। ।

তার ছোট খাটো মামা কু কু ওয়ালা চেয়ারের হাতলে হাত দিয়ে দিলো এক থাবড়া । দিয়ে কোন লাভ হলো কে জানে। নিশাতের ধারণা তিনি নিজেই হাতে ব্যথা পেয়েছেন। বডি বিল্ডার হলে কথা ছিল। ছোট পিপলু মানুষের ছোট্ট চিকন হাত।

সে থাবড়া দিয়ে প্রায় হুংকার দিয়ে বললেন, — আমাকে গাধা মনে হয়?

নিশাত দু পাশে মাথা নাড়লো। খাটো মানুষের নাটা বুদ্ধি। আগেকার দিনের মানুষতো আর এমনি এমনি প্রবাদ বচন তৈরি করে নি। তাদের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকেই করেছেন। অবশ্য সব মানুষের জন্য প্রযোজ্য এমন না। তার মায়ের সাইজও মামার মতোই। তবে নিশাতের ধারণা বুদ্ধি তো দূরের কথা তার মাথায় ঘিলুই নেই।

জালার উদ্দিন সুলতানার দিকে তাঁকালো। তাঁকিয়ে বললো, — পড়ালেখা করাতে চেয়েছিস করিয়েছি, চাকরির জন্য অনুমতি চেয়েছিস দিয়েছি । এটা ভদ্র মানুষের বাড়ি। আর এই বাড়িতে থেকে এসব চলবে না। কয়েকদিনের মধ্যে আমি ছেলে দেখবো মেয়ে বিদেয় করবি। সামান্য কৃতজ্ঞতা থেকে ট্রাক ভর্তি জিনিস এমনি এমনি আসে না। নিজের জীবন তো নষ্ট করেছিস নেচে নেচে এখন মেয়েটা করিস না।

সুলতানার ভয়ে সাথে সাথে মাথা কাত করলো । দুনিয়া এক দিকে তার ভাইয়ের আদেশ আরেক দিকে। তাছাড়া তার নিজেরও এমন ইচ্ছা। মেয়েই নাদে পাদে না। কি করে না করে কিছু’ই তো সে বুঝতে পারে না। মাঝে মাঝে মনে হয় খুব বুদ্ধিমতি আবার মাঝে মাঝে মনে হয় আধা পাগল। এখন এই চাপে চাপে যদি বিয়েটা হয়ে যায় তাহলে তো ভালোই। শান্তিতে একটু মরতে পারবে।

নিশাত হাত উঁচু করলো। জালাল ভ্রু কুঁচকে তাঁকালো । তাঁকাতেই নিশাত বললো, — আমি বিয়ে করবো না।

— তো কি করবে? সারা জীবন আমার ঘাড়ে বসে বসে খাবে?

— আমি চাকরি করি মামা।

— তো! চাকরি করার জন্য লায়েক বানিয়েছে কে? নাকি তোমার বাপ এসে করে গেছে।

— বাপের জায়গায় বাপ থাকলে তো আর কথাই ছিল না। লায়েক সামান্য ব্যাপার স্যাপার।

— সামান্য ব্যাপার? এই সামান্য ব্যাপারের জন্যই না এই মামা’ই কাজে এসেছে। আবার চাকরি দেখায়।

— চাকরি দেখেন আর না দেখেন, আমি বিয়ে করছি না।

জালাল উদ্দিন সাথে সাথে অগ্নিদৃষ্টিতে তাঁকালো। তার এমন ভাব ক্ষমতা থাকতে এক্ষুনি আগুন বের করে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিতো।

নিশাতের অবশ্য অগ্নিদৃষ্টিতে তেমন বিচলিত দেখা গেলো না। সে আবারো কিছু বলার জন্য মুখ খুলছিল। সুলতানা এগিয়ে হাত চেপে থামালো। এই মেয়ে নির্বিকার ভাবে বসে বসে পার্ট বাই পার্ট চাপা চালিয়ে যেতে পারে। কার মতো হয়েছে আল্লাহ’ই জানে। সে বোকা কানা মানুষ। পেটে হয়েছে এক বিচ্ছু! মেয়ে মানুষের মুখ এমন হলে চলে? ভাইয়ের যায় মাথা গরম হয়ে। দুনিয়া দারি বুঝে এই মেয়ে। গার্ডিয়ান ছাড়া মেয়ে যতোই চাকরি করুক। দুনিয়ার মানুষেরা গনায় ধরে না। তাদের দেখা হয় কোণা চোখেই। সে হাত চেপেই বললো, — আপনার যা ভালো মনে হয় করেন।

— তা তো করবোই। ঘাড়ে দায়িত্ব নিয়েছি মাঝ রাস্তায় ফেলে দেওয়ার জন্য তো না। তাই মেয়ের মুখ বন্ধ কর সুলতানা। অন্তত আমার বাড়িতে না। পটর পটর স্বামীর বাড়ির জন্য তুলে রাখতে বলবি। শুধু ভাগনি বলে এখনো চুপচাপ বসে আছি। তা না হলে এতক্ষণে চাপা খুলে হাতে ধরিয়ে দিতাম। বলেই তিনি উঠলেন। উঠে সাপের মতো ফুসফুস করতে করতে রুমের দিকে গেলেন।

সুলতানা দীর্ঘশ্বাস ফেললো! নিশাত ঠোঁটে ঠোঁট চেপে বসলো। আর যেই ট্রাক নিয়ে এতো কিছু। সেই ট্রাকের গরু ছাগলকে মামি আগ্রহ নিয়ে পানি, ভাতের মাড় দিয়ে এলো। ড্রাইভারকে চা, মুড়ি। আসার সময় নিয়ে এসেছে কয়েকটা ফার্মের মুরগি। বাপের বাড়ি পাঠাবে। এখন আগ্রহ নিয়ে মোবাইলে কল দিচ্ছে আর বিরবির করছে, সাবা শয়তানটা কোথায় গিয়ে মরলো। দৌড়ে একটু দিয়ে আসতে পারতো। তা না খবর নেই।

নিশাত কিছু বললো না। উঠে রুমের দিকে গেলো। সেই দিন যেই নাম্বারটায় থেকে কল এসেছে সেই নাম্বারটা খুঁজে বের করলো। করে কল দিলো। তাকে বিপদের সাত সাগরে ফেলে বেটা আরামছে বসে আছে।

ওয়াহিদের মাথা ধরেছে! লাইট অফ করে শুয়ে ছিল! পাশেই মোবাইল। আলো জ্বলতেই সেই দিকে তাঁকালো। আননোন নাম্বার শো করছে। সে একটু অবাক’ই হলো। এই নাম্বারে পরিচিত গন্ডির বাইরে ফোন আসার কথা না।

সে হাত বাড়িয়ে মোবাইল নিয়ে রিসিভ করলো। করে তার ভারী কন্ঠে শান্ত ভাবে বললো, — হ্যালো।

নিশাত হ্যালো ট্যালোর ধারের কাছেও গেলো না। সোজা বললো, — আপনি ঐ আসিফ হাদারামের স্যার বলছেন?

ওয়াহিদ থমকালো! মোবাইটা সামনে নিয়ে নাম্বারটা একবার ভালো করে দেখলো। কে বুঝতে অবশ্য সময় লাগলো না। সে উঠে সোজা হয়ে বসে বললো, — হ্যাঁ!

— আচ্ছা আপনাদের কোন আক্কোল টাক্কোল নেই নাকি? একটা বাচ্চা মেয়ের কন্ঠ ধরতে পারেন না। লিষ্ট পাঠালো গরু, ছাগলের। ওমনি কোলে করে নিয়ে হাজির। এই হাজিরের জন্য আমি কতো বড় বিপদে পড়েছি জানেন?

— কি বিপদ?

— এই বিপদের কথা তো আপনার জেনে কাজ নেই। যেই বিপদ আপনারা আমার ঘাড়ে ফেলে গেছেন সেটার ব্যবস্থা করেন।

— ট্রাক?

— যাক বাবা যতোটা হাদারাম মনে করেছিলাম, ততটাও না।

— আমি ব্যবস্থা করছি।

— লক্ষ লক্ষ শুকরিয়া জনাব বলেই নিশাত ফোন কাটতে গেলো। ওয়াহিদ সেই দিনের মতোই বললো, — ওয়েইট।

নিশাত বিরক্ত মুখে থামলো! থামতেই ওয়াহিদ একটু থামলো! তারপর বললো, — আমি ওয়াহিদ! আবরার ওয়াহিদ।

— তো, আমি কি করবো? দেখুন কোন আলগা পিরিতের দরকার নেই। ট্রাক নিয়ে যান, মামলা ডিসমিস। আর এখানের সবাইকে বলে যাবেন ভুলে চলে এসেছে। আর হ্যাঁ মামি চারটা ফার্মের মুরগি নিয়েছে । সাহায্যের সাথে কাটছাঁট। খবরদার আর আমাকে বিরক্ত করবেন না। একটু সাহায্য কি করেছি, গলায় মাছের কাটার মতো সেধে গেছে।

ওয়াহিদ হালকা হাসলো! হেসে বললো, — যদি করি?

— কি করি?

— বিরক্ত।

নিশাত একটু থামলো! বেটার হাব ভাব তো ভালো ঠেকছে না। আল্লাহ! এতো খেটে খুটে এক জামা বিসর্জন দিয়ে এই ভন্ডকে বাঁচিয়েছে সে? দেখেতো! মনে হয় ধোয়া তুলসী পাতা, এ তো তলে তলে টেম্পু। সে তেজের সাথে বললো, — মেয়ে মানুষের কন্ঠ পেলেই ছ্যাঁচড়ামি করতে ইচ্ছে করে। শালা ছ্যাঁচড়া! আরেকবার তো সামনে আয়। ঘুষি মেরে নাকের মানচিত্র না বদলাই আমার নামও নিশাত না। হাট্! বলেই ফট করে নিশাত ফোন রাখলো।

আর ওয়াহিদ সেই কেটে যাওয়া ফোনের দিকে কিছুক্ষণ নিশ্চুপ তাঁকিয়ে রইলো। তারপর ফোন রেখে আবার শুতেই খেয়াল করলো, তার মাথা ব্যথা নেই।

চলবে….