ঝিলমিল রোদ্দুরে পর্ব-০৪

0
1076

#ঝিলমিল_রোদ্দুরে🖤 [পর্ব-০৪]
~আফিয়া আফরিন

রোদ্দুর ঢাকা পৌঁছে সরাসরি নিজের বাসায় গিয়ে ব্যাগ পত্র কোনরকম কাপড়চোপড় চেঞ্জ করে, সরাসরি বেড়িয়ে গেল সানিয়ার সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে। সানিয়াকে অবশ্য জানায় নাই সে ঢাকায় এসেছে, এখন গিয়ে একদম চমকে দিবে।
চলতি পথে সাগরকে ফোন করল। সে সানিয়ার ব্যাচমেট, তবে রোদ্দুরের সাথে খুব ভালো সম্পর্ক। ওকে জিজ্ঞেস করল, ‘সানিয়া আজ ক্লাসে গেছে তো তাই না? বলতে পারিস তুই?’

‘সানিয়া তো এখন ক্লাসে নেই। একটু আগে দেখেছিলাম, তানভীরের ভাইয়ের সাথে। এখন কোথায় তা তো বলতে পারছি না।’

‘ওহ আচ্ছা, ঠিক আছে। আমি দেখছি।’

সাগর জিজ্ঞেস করল, ‘রোদ্দুর ভাই, তুমি ফিরেছ?’

‘এইতো একটু আগেই এলাম। আচ্ছা তোর সাথে পরে দেখা করব। এখন রাখছি। আর যদি সানিয়াকে দেখে থাকিস তবে আমাকে জানাস। আর আমার কথা ওকে বলিস না।’

‘আচ্ছা।’
রোদ্দুর ফোন রাখল। তানভীরের কথা শুনেই মেজাজ চটে গেছে। তবুও সে সানিয়ার ক্যাম্পাসে গেল। সম্ভাব্য সব জায়গায় সানিয়াকে খুঁজে দেখল, কোথাও খুঁজে পেল না। অবশেষে ফোন করল। সানিয়া তৎক্ষণাৎ ফোন রিসিভ করল। রোদ্দুরের ফোন কলের ব্যপারে সে বরাবরই এলার্ট। ফোন করার সাথে সাথেই রিসিভ করবে। এইবার’ও তার ব্যাতিক্রম হলো না। ভালোমন্দ কিছু জিজ্ঞেস না করে রোদ্দুর সরাসরি প্রশ্ন করল, ‘কোথায় আছো তুমি?’

সানিয়া বোধহয় একটু ঘাবড়ে গেল। থতমত খেয়ে বলল, ‘কেনো কি হয়েছে?’

‘আহা! পাল্টা প্রশ্ন আমার পছন্দ না এটা তুমি ভালো করেই জানো। কোথায় আছো জিজ্ঞেস করেছি। এখানে কেনো কি হয়েছে, সেসবের কি দরকার?’

‘আমি…. আমি তো ক্লাসে…. না মানে ক্লাসে ছিলাম। এখন বের হয়েছি, ক্লাস করতে বোরিং লাগছিল। তুমি কখন আসবে? আজ নাকি কাল?’

রোদ্দুর চিবিয়ে চিবিয়ে উত্তর দিল, ‘বিকাল পাঁচটায় পার্কে থেকো। কথা আছে।’
এইটুকু বলেই সে ফোন রেখে দিল। সানিয়া আর কি বলবে বা ওর আর কিছু বলার আছে নাকি, তা শোনার প্রয়োজনবোধ করল না। ওর সাথে কথা শেষ করে নিজের অফিসে গিয়ে সকলের সাথে দেখা করে এলো। তারপর বন্ধুদের সাথে গিয়ে কুশল বিনিময় করল। সেখানেও একজন বলল, ‘তোর গার্লফ্রেন্ডকে ইদানিং তানভীর এর সাথে খুব বেশি দেখা যাচ্ছে। না, থাকতেই পারে। তবে সেটা যদি অতিরিক্ত চোখে লাগার মত হয়, তাহলে তো সেটা সমস্যার। তোকে একবার বলতে চাই নাই, পরে ভাবলাম যে বলি। গতকাল ওর বাইকে দেখেছিলাম, আজ একটু আগে সিনেমা হলে ঢুকতে দেখেছি। হতে পারে ব্যাপারটা স্বাভাবিক, তবে আমার কাছে খুব একটা ভালো লাগে নাই।’
রোদ্দুরকে মোটেও চিন্তিত দেখাল না তবে তার চোয়াল শক্ত হয়ে এলো। সানিয়াকে অনেকবার বলেছে, এই ছেলেটা ভালো না; খুব একটা সুবিধার নয়। তবুও ওর সাথেই কেনো মিশতে হবে রোদ্দুরের বুঝে আসে না। তারপর আবার বন্ধুদের থেকে তার এসব শুনতে হয়। নাহ, এসব আর সহ্য করার মতো না। আর কতবার বোঝালে যে গর্দভ মেয়েটা বুঝবে কে জানে?
রোদ্দুর মাথাব্যথা নিয়ে বাড়ি ফিরল। অনেক আগে থেকে একলা থাকার কারণে নিজের রান্নাবান্নাটা বেশ ভালোই শিখেছে। তার একা থাকার জন্য একটা রুম, একটা ওয়াশ রুম, একটা কিচেন রুম, একটা ছোট্ট বারান্দা বিশিষ্ট ছোট্ট একটা ঘর। এখানে থেকেই লেখাপড়া শেষ করেছে, এখন এখানে থেকেই চাকরি-বাকরি করছে। ছোট চাচ্চু মাঝেমাঝে আসেন, রোদ্দুরের সাথেই থাকতে পারেন। কিন্তু বাসার অন্যকেউ কিংবা চাচ্চুর সাথে কেউ এলে তখন থাকতে দেওয়া মুশকিল হয়ে পড়ে। তবে মা-বাবা এলে তারা রাতের মধ্যেই বাড়ি ফিরে যায়, তাই খুব একটা সমস্যার মধ্যে তাকে কখনোই পড়তে হয় নাই।
কিন্তু সানিয়াকে নিয়ে এই সেই বিভিন্ন সমস্যায় তাকে পড়তে হয়েছে। একবার তো রীতিমতো তানভীরের সাথে মারামারি লেগে গিয়েছিল। রোদ্দুর কিছুতেই ওই ছেলেটার সাথে সানিয়ার স্বাভাবিক মেলামেশা মেনে নিতে পারছে না। অন্যকারো সাথে দেখলে তো কখনো মনের মধ্যে এমন খুঁতখুঁতুনি সৃষ্টি হয় না। ধুর, মন-মেজাজ দুটোই খারাপ হয়ে গেল। এখন আর রান্নাঘরে গিয়ে কিছু রান্না করতেও ইচ্ছে করছে না, বাইরে গিয়ে খেতে ইচ্ছা করছে না; অথচ ঠিকই খিদে পেয়েছে। রোদ্দুর ঘড়িতে সময় দেখল, দুইটা বাজে। সানিয়ার সাথে দেখা করবে পাঁচটায়। হাতে এখনও যথেষ্ট সময় আছে। এরমধ্যে ঘন্টা দু’য়েক ঘুমিয়ে নেওয়া যাবে, গতরাতে ঘুম কম হয়েছে।
.
ঝিলমিল দাঁত কিড়মিড় করতে করতে ক্লাস থেকে বের হলো। এইবার সে অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে উঠেছে। আজ আসার সময় সাইফুল নামের সেই ছেলেটার সাথে দেখা হয়েছিল, ঝিলমিল যার সাইকেলের চাকা পাংচার করে দিয়েছিল এবং তাকে ধাক্কা মেরেছিল। সে আবারও তার সেই সাইকেল নিয়ে ঝিলমিলের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। ভীষণ ইনোসেন্ট মুখ করে বলল, ‘ভালো আছো?’

‘জি ভালো আছি। আপনি ভালো আছেন?’ ফাস্ট ভদ্রতাবোধ থেকে ঝিলমিল’ও তাকে প্রশ্ন করল।

সে উত্তর দিয়ে ফের বলল, ‘তুমি যে আমাকে পছন্দ করো, এটা কিন্তু আমি বুঝে গেছে, জেনে গেছি।’
ঝিলমিল বিষম খেল, হতবাক হলো। হা করে বিস্ময় নিয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল। এই চশমিশ পাগলা বলে কি?
ঝিলমিল দ্বিধাগ্রস্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, ‘কথাটা আপনি আমাকে বললেন?’

‘হ্যাঁ তোমাকেই তো বললাম। তুমি ছাড়া এখানে অন্য কেউ আছে কি?’

ঝিলমিল আশেপাশে তাকাল। আসলেই সে ছাড়া আশেপাশে কেউ নেই, শিউলিটাও আজ সাথে নাই। কতবার করে ডেকে এলো ঝিলমিল। অথচ সে ন্যাকামি করে বলল, ‘আজ যাব না রে। তুই যা, ইম্পর্ট্যান্ট কোনো ক্লাস হলে আমাকে নোট দিস।’
তাই ঝিলমিল একাই চলে এসেছিল। পথিমধ্যে এই চশমিশের সাথে দেখা এবং এইরকম উদ্ভট কান্ডকারখানার খপ্পড়ে পড়া। ঝিলমিল জিজ্ঞেস করল, ‘আমাকে কেনো বলছেন এসব কথা? আমি কি করে বুঝলেন, আমি আপনাকে পছন্দ করি? আশ্চর্য!’

‘ওসব বোঝাই যায়।’

‘আচ্ছা, তো কীভাবে? ফাজলামি করার জায়গা পান না?’ ঝিলমিলের মেজাজ ক্রমশই খারাপ হয়ে আসছিল।

সাইফুল বেশ শান্তশিষ্ট ভাবেই বলল, ‘মেয়েরা তার পছন্দের মানুষকেই ভাইয়া বলে ডাকে। খেয়াল করে দেখো, তুমিও আমাকে ভাইয়া বলেই ডাকো। তারপর মেয়েরা তার পছন্দের মানুষকেই জ্বালাতে ভালোবাসে। তুমিও কিন্তু তাই করো। আমি কিন্তু জানি তুমি আমার সাইকেলের চাকা পাংচার করেছ, আমার চলার পথে সেদিন তোমার পা এগিয়ে দিয়েছ। ভালোবাসো বলেই তো করো!’
ঝিলমিল তার কথা শুনে দ্বিতীয়বার হতবাক হতেও ভুলে গেল। কপাল চাপড়াতে লাগল। এই ছেলেটা নিতান্তই বোকাসোকা বলে, তার সাথে দুষ্টুমি করছে। আর সে কিনা সরাসরি ভালোবাসা খুঁজতে চলে গেছে? আজব দুনিয়ার আজব মানুষ।
ঝিলমিল বেশ রাগচটা কণ্ঠে বলল, ‘দেখেন মিস্টার সাইফুল, আপনি আমার কোন কাজকর্মকে কি ভেবেছেন আমার জানা নাই। আমি এসব জানতেও চাই না। তবে আপনার সাথে আমি পরপর দুইদিন অন্যায় করেছি, তার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। দয়া করে আমার এই অধ্যায়গুলো পুঁজি করে আপনি কোনো আজেবাজে কিছু ভেবে বসে থাকবেন না। আপনাকে আমার মোটেও পছন্দ না। আর যেসব বুলি আওড়ালেন, ওসব তো সামাজিক সাইট থেকে টুকে নেওয়া। কী ভেবেছেন, বুঝি না কিছু? নেক্সট টাইম এভাবে পথ আটকাবেন না, আমার সাথে কথাও বলতে আসবেন না। ধন্যবাদ।’
একরোখা কণ্ঠে কথাগুলো বলে ঝিলমিল চলে এসেছিল। প্রথম ক্লাসের সময় পার হয়ে গিয়েছিল বিধায় মাঠে বসেছিল। পরের ক্লাসগুলো অবশ্য করেছে। কিন্তু নিদারুণ বিরক্তি তার ভেতর। বাড়ি ফিরে এসে অযথা কিছুক্ষণ চিৎকার চেঁচামেচি করল নিজের সাথেই। কেউ তাকে ঘাঁটাতে এলো না। একবার শুধু তানিশা উঁকি মেরে এসে দেখে গেল। ওকে দেখতে পেয়ে ঝিলমিল ওর সাথেও কিছুক্ষণ রাগারাগি করল। তানিশা মনে মনে ভাবল, ‘রোদ্দুর ভাই এমনি এমনি ওকে পাগলী বলে না! নিশ্চয়ই মাথায় সমস্যা আছে। নির্ঘাত মাথার একটা তার ছেঁড়া। এই মেয়েটার থেকে যতটা দূরে থাকা যায়, ততটাই মঙ্গল।’
.
রোদ্দুর সময়ের আগে আগেই নির্দিষ্ট জায়গায় চলে এলো। বাইকে হেলান দিয়ে বাদাম ছিলে খাচ্ছিল, অপেক্ষা করছিল। পাঁচটা পার হয়ে যাওয়ার পরও সানিয়ার কোনো খোঁজখবর নেই। রোদ্দুর ইচ্ছে করেই তাকে ফোন করল না। দেখতে চাইল, কতক্ষণ অপেক্ষা করাতে পারে! কিন্তু আরও অনেকটা সময় পেরিয়ে গেল, সন্ধ্যা হয়ে গেছিল, মশারা জ্বালাতন করছিল তাকে, তবুও রোদ্দুর রয়ে গেল অনেকক্ষণ….. দীর্ঘক্ষণ।
সানিয়া আগে এইরকম ছিল না। কোথাও অপেক্ষা করার কথা বললে রোদ্দুরের আগে গিয়ে সে বসে থাকতো। বরং রোদ্দুর পৌঁছাতে দেরি করত। এরজন্য যখন সানিয়ার কাছে সরি বলত তখন সানিয়া নিজে থেকেই বলত, ‘আরে সরি বলার কি আছে? দেরি কি হতে পারে না? আমি জানি, যানজট থাকে। সমস্যা নাই, আজ একটু দেরি হয়েছে আবার কাল না হয় তুমি তাড়াতাড়ি আসবে।’
ঠিক এই সাদামাটা ব্যবহারের জন্য’ই রোদ্দুর মন দিয়েছিল তাকে। এই ঘটনাগুলো তাদের সম্পর্কের শুরুর দিকে ঘটেছিল। তখন একে অপরের প্রতি যত্ন ছিল, নিয়ম করে খোঁজখবর নেওয়ার চল ছিল, আর আজ? কীরকম হয়ে গেল। আসলেই কি তবে ভালোবাসা পুরাতন হয়ে যায়? আর পুরাতন হয়ে গেলে সেখানে অযত্ন এসে ভর করে? রোদ্দুরের দিক থেকে তো কোনো অযত্ন নেই, ওইদিক থেকে একটা তৃতীয় পক্ষ মাঝখানে এসে দাঁড়িয়েছে। সানিয়া বুঝতে পারছে না, এইটা কতটা ক্ষতিকর! ওই তানভীর নিশ্চয়ই তাকে ভুজুং ভাজুং বুঝিয়েছে। রোদ্দুরের রাগ করতে ইচ্ছে হলো না আবার কোনোরূপ অনুভূতি’ও প্রকাশ করতে পারল না। ব্যপারটা তার কাছে খারাপ লাগল। এতদিনের সম্পর্কের মধ্যে এভাবে চিড় ধরে যাচ্ছে? অথচ সে চেষ্টা করেও কিছু করতে পারছে না। কী করবে? সানিয়াকে যথেষ্ট বুঝিয়েছে, সে কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখালে রোদ্দুর একা আর কি করবে…. তার আর কিই বা করার আছে!

রোদ্দুর পার্ক থেকে বেড়িয়ে এলো। রাজ, রায়হান, আবীর, হাসান, আদিয়াত, সৌভিক— এদের ডেকে নিয়ে এসে সন্ধ্যার চায়ের আড্ডায় বসল। যাইহোক, এই একলার ঢাকা শহরে মন খারাপ করলে মন ভালো করে দেওয়ার মত হাতে গোনা কয়েকটা বন্ধু-বান্ধব রয়েছে। এদের মধ্যে আদিয়াতকে ইদানিং খুব একটা পাওয়া যায় না, নতুন বিয়ে-শাদী করেছে তো; বউকে সময় দিতে হয়। আদিয়াত চায়ের কাপে শেষ চুমুক দিয়ে বলল, ‘দোস্ত, বন্ধু হয়ে তোদের ভালো একটা পরামর্শ দিই। আমার কথাটা মানিস। আবেগে পড়িস না বুঝলি! আবেগে পইড়া বিয়া করলাম। বউ শান্তি দিতাছে না। বিয়া-শাদী যে এত প্যারা আমার বাপ আমারে আগে জানাইল না। দুঃখে-কষ্টে জীবন আমার জর্জরিত।’

রায়হান আদিয়াতের ঘাড়ে হাত রেখে বলল, ‘মা বিয়ার প্যারা দিচ্ছে দোস্ত। শুধু বলে, বাড়িতে আমি সারাদিন একলা থাকি। আমার সাথে একজন থাকলে ভালো লাগে না একটু! বাবা রে, বিয়ে কর। রাজি হ, আমি তাহলে পাত্রী দেখা শুরু করি।’

‘দোস্ত জেনে বুঝে খাল ভর্তি কুমিড়ের মধ্যে ঝাঁপ দিতে যাস না। আমি তোরে কইতাছি, জীবন ছাড়খার কইরা দিব। আমি বাড়িতে ঢুকি ভয়ে ভয়ে, বাড়ি থেকে বের হই ভয়ে ভয়ে। কথায় কথায় ধমক দিবে। পান থেকে চুন খসলে চেঁচামেচি, কান্নাকাটি। বাপের বাড়ি যে কবে যাবে? গেলে একটু শান্তি পাই।’

উপস্থিত সকলে বিয়ে-শাদী নিয়ে আলোচনা শুরু করে দিল। যাদের গার্লফ্রেন্ড আছে তাদের এক কথা, ‘আমরা ভাই বিয়ে-শাদী করলে এত প্যারা খাব না। প্রেম করি, প্রেমিকা বউ হিসেবে গেলে ঠিকই তাকে বুঝতে পারব। শালা, তোরা এত ফাল পারিস না। নিশ্চয়ই বউয়ের মন বুঝিস না, তাই এমন ক্যাঁচক্যাঁচ করে তারা।’
রোদ্দুর যে কোনো কথা বলছে না, এই বিষয়টা প্রথম হাসানের নজরে এলো। সে জিজ্ঞেস করল, ‘দোস্ত তোর কি হয়েছে? মন খারাপ?’
রোদ্দুর মাথা নাড়িয়ে নেতিবাচক উত্তর দিল। আরও কিছুক্ষণ ওরা ওখানে ছিল। ফেরার পথে হাসান রোদ্দুরকে বলল, ‘দোস্ত, আজ বাইক আনি নাই। আমাকে চৌরাস্তার মোড়ে নামিয়ে দিস, ওখান থেকে রিকশা করে বাড়ি ফিরব।’

‘উঠ আমার সাথেই। আমি তোকে বাড়ি পর্যন্ত’ই পৌঁছে দিয়ে আসছি।’
হাসান আর রোদ্দুর দু’জনেই রওনা দিল। চৌরাস্তার মোড় পার হতেই হঠাৎ হাসান বলে উঠল, ‘দোস্ত দোস্ত, বাইক থামা।’
রোদ্দুর আচমকা ব্রেক করল। হাসানের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাল। হাসান ইশারায় তাকে সামনের দিকে দেখতে বলল। রোদ্দুর সামনে তাকাল। দেখতে পেল সানিয়াকে সাথে তানভীর। হাতঘড়িতে সময় দেখল, সাড়ে আটটা বাজে। হাসানের দিকে আড়চোখে তাকাল, সেও ওদের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে। এতক্ষণ কিছু হয় নাই, এত অপেক্ষা করেও না…. কিন্তু এইবার বন্ধুর সামনে এই বিষয়টা বেশ অপমানে লাগল তার। কোনো কথা বলল না, হাসানকে ওর বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে নিজেও বাড়ি ফিরল।
.
.
.
চলবে……