ঝিলমিল রোদ্দুরে পর্ব-৫৬

0
195

#ঝিলমিল_রোদ্দুরে🖤 [পর্ব-৫৬]
~আফিয়া আফরিন

ফিরে এসে কেমন ব্যস্ত জীবন শুরু হয়ে গেল। রোদ্দুর নিয়ম করে অফিসে যাচ্ছে আবার সন্ধ্যার পর ফিরে আসছে। গত দুইদিন ঝিলমিলের উপর দিয়ে বেশ চাপ যাচ্ছে। সামনে টেস্ট পরীক্ষা… পরীক্ষার রুটিন দিয়ে দিয়েছে অথচ সে এখন পর্যন্ত বইয়ের পাতা উল্টে দেখে নাই। যখন’ই বই নিয়ে বসে, তখন’ই চোখে অন্ধকার দেখে… মাথা ঘোরায়, নিজেকে রোগী মনে হয়। ইচ্ছে করে, পড়াশোনার চ্যাপ্টার এক নিমিষেই ক্লোজ করে দিতে। কিন্তু রোদ্দুর যেভাবে কড়া শাসনে রাখে, তাতে আর সাহস হয় না। অন্তত তাকে দেখানোর জন্য হলেও ঝিলমিলকে বই সামনে নিয়ে বসতে হয়।
ঘুরে আসার পর এক সপ্তাহ পার হয়ে গেছে, এখনও বাড়ি যাওয়া হয় নাই। এই সপ্তাহে যাওয়ার সুযোগ ছিল কিন্তু গতকাল মায়ের সাথে ফোনে কথা বলার সময় উনি বলছিলেন, দাদি যেহেতু অসুস্থ তাই তাকে নিয়ে দু/চারদিনের পর ডাক্তার দেখাতে আসবেন।
ঝিলমিল সেই অপেক্ষাতেই ছিল। সেদিন বিকেলবেলা মাকে ফোন করল। জিজ্ঞেস করল, ‘তোমরা আসবে কবে?’

শিমু বললেন, ‘তোর দাদি তো যেতে চাচ্ছে না। অসুস্থ শরীর নিয়ে তার হাঁটাচলা করাই কষ্টকর হয়ে যায়। ওর জার্নি কীভাবে করবে? গতরাতে ডাক্তার শফিকুল এসে দেখে গেছে।’

‘কী বললেন তিনি?’

‘ওই একই কথা। বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছে, হাড় ক্ষয় যাচ্ছে, বেশি দুশ্চিন্তা করছে। ডাক্তার বিশেষভাবে বলে দিয়েছেন, আম্মা যেনো কোনোকিছু নিয়ে চিন্তা না করেন। তবুও সারাক্ষণ ধরে আবোলতাবোল ভাবতে থাকেন। এত খেয়াল রাখি, তাও উন্নতি হচ্ছে না শরীরের।’

ঝিলমিল বলল, ‘আবহাওয়া পরিবর্তন করতে পারলে ভালো লাগত। অনেকদিন হয়েছে ওইরকম বন্দী অবস্থায় আছে, বাইরে কোথাও যাচ্ছেয়না দাদি। আচ্ছা ঠিক আছে, আমি দেখছি কী করা যায়।’
মায়ের সাথে কথা শেষ করে ঝিলমিল রোদ্দুরের জন্য অপেক্ষা করতে লাগল। দাদি দুনিয়ার সবার কথা ফেললেও, রোদ্দুরের কথা ফেলতে পারেন না। এইবার’ও নিশ্চয়ই ফেলবেন না।
ঝিলমিলের ধারণা ঠিক ছিল। অনেকবার বলতে হলো না, মাত্র দু’বার বলতেই দাদি রাজি হয়ে গেলেন। কথা হলো, কাল সকাল সকাল তারা রওনা দিবেন। ঝিলমিলের ভালোই লাগল। তার এই সাজানো গোছানো সংসারে প্রথম মেহমান হয়ে তাদের’ই পরিবারের সদস্যরা আসছে।
সে এখন মোটামুটি সংসারের কাজে এক্সপার্ট। রান্নাটা বেশ ভালোই করে, কিন্তু এক পদ রান্না করতে গেলে পুরো রান্নাঘর এলোমেলো করে ফেলে। আবার সেগুলো ঘন্টাখানেক সময় নিয়ে গোছগাছ করে। অবশ্য সে সময় রোদ্দুর ঘরে থাকে না, তাই নিজের মনে যেভাবে পারে সেভাবে করে ফেলে। রোদ্দুর থাকলে প্রচুর ডিস্টার্ব করবে— রান্নাঘরে আসবে, ঘুরঘুর করবে, হাজারটা প্রশ্ন করবে, কাজের মধ্যে বাগড়া দিবে, ড্যাবড্যাব করে ঝিলমিলের দিকে তাকিয়ে থাকবে, ওর চুল এলোমেলো করে দিয়ে দৌড়ে পালাবে।
উপর উপর ঝিলমিল খুব বিরক্ত দেখালেও মনে মনে খুশি হয়। রোদ্দুর যখন থাকে না, ওর কর্মকাণ্ড গুলো মিস করে।
শেষবার এখানে আসার আগে বাড়ির সবাই পইপই করে বলে দিয়েছিল, ‘তোরা এখন থেকে একে অপরকে আর তুই সম্বোধন করবি। সম্মানের একটা ব্যাপার আছে তো নাকি? তুই তোকারি শুনলে খারাপ দেখায়।’
দীর্ঘদিনের অভ্যাস… ছাড়া সম্ভব নয়। রোদ্দুরকে তুমি তুমি করে বলতে হবে, এটা ভাবতেই পারে না ঝিলমিল। রোদ্দুর হয়ত খুব সহজে এই নতুনত্ব মেনে নিতে পারবে কিন্তু ঝিলমিলের পক্ষে সম্ভব না। নিজের মনে একবার চেষ্টা করতে গিয়ে হযবরল হয়ে গেল।
স্বাভাবিকভাবে বলে, ‘এই শোন।’ তখন বলতে হবে, ‘এই শোনো।’ কী লজ্জাজনক! এটা তো ভয়াবহ লজ্জার ব্যাপার। সামান্য একটু প্র্যাকটিস করতে গিয়ে ঝিলমিলের মনে হলো, সে অচেনা একটা মানুষের সাথে কথা বলছে। অচেনা একটা মানুষকে সম্বোধন করছে। তাদের সম্পর্কে যে একটা নিজস্বতা রয়েছে, সেটা হারিয়ে ফেলছে।
যাইহোক সবার সামনে তো একটু ভদ্রতা বজায় রাখতেই হবে। তাই রোদ্দুরকে গিয়ে বলল, ‘কাল বাসা থেকে ওরা এলে ওদের সামনে আমাকে তুই সম্বোধনে ডাকবি না। কী থেকে কী মনে করে আবার।’

রোদ্দুর বলল, ‘শুধু ওদের সামনে কেনো? বাস্তবেই তো আমাদের আর তুই তোকারি করার প্রয়োজন হচ্ছে না।’

ঝিলমিল চেঁচিয়ে উঠল, ‘না। আমি পারব না। একটুখানি ভাবতে গেলেই মনে হচ্ছে, পর মানুষের সাথে কথা বলছি। আমরা শুধুমাত্র মানুষের সামনে ফর্মালিটি মেইনটেইন করব। ওকে?’

‘ওহ আচ্ছা… আমাকে অসভ্য বলিস, তুই নিজে কি? মানুষের সামনে সভ্য কিন্তু ঘুরেফিরে আমার কাছে তো সেই অসভ্যই। তুই অবশ্য এখনও অসভ্যতামি সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা নিতে পারিস নাই। আমি বরং তোকে এই সম্পর্কে একটা কোর্স করাব। কেমন হবে?’ বলেই রোদ্দুর অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল। ঝিলমিল এগিয়ে এসে দু’হাতে ওর চুলগুলো মুষ্টিবদ্ধ করে পরপর কয়েকবার টানে দিল।
রোদ্দুর হাসি থামিয়ে ঝিলমিলের কোমড় জড়িয়ে ধরে বলল, ‘অসভ্যতামি করতে এসেছিস?’

‘জি না, আপনার অসভ্যতামির ভূত ছাড়াতে এসেছি।’

‘আমার থেকে এই ভূত টপকে যদি তোর ঘাড়ে চেপে বসে তবে কেমন হবে বলে তো?’ রোদ্দুর ভাবুক কণ্ঠে প্রশ্ন করল।

‘এসব আমি একদম পাত্তা দিই না। আচ্ছা এখন রান্নাঘরে যাই। রাতের রান্না তো অর্ধেক সেরে চলে এসেছি। শোন, কাল বাড়িতে সবাই থাকবে। সবার সামনে আমার সাথে এইরকম করবি না। ওকে?’

‘ওকে। তবে আমার মনে থাকবে কিনা সন্দেহ!’
ঝিলমিল দুরুম করে রোদ্দুরের পিঠে একটা কিল বসিয়ে দিল। রোদ্দুর ‘উহ’ করে ওকে ছেড়ে দিল। নিজের পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে বলল, ‘আমার মনে হয় আরেকটা বিয়ে করতে হবে। এই বউ খালি মারে। এইরকম মারকুটে বউ আমি চাইছি নাকি?’

ঝিলমিল রান্নাঘরের উদ্দেশ্যে পা বাড়িয়েছিল। রোদ্দুরের কথা শুনে মাঝপথ থেকে আবার ফিরে এলো।
কটমটে দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, ‘যে কথা বললি সেটা আরেকবার বল।’

রোদ্দুর নির্বিকার ভঙ্গিতে বলল, ‘আমি তো কিছু বলি নাই। চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি। তুই কি শুনেছিস?’

ঝিলমিল আরেকটু এগিয়ে এসে রোদ্দুরের কলার চেপে ধরে চিবিয়ে চিবিয়ে বলল, ‘মুখের কথা মুখেই রেখে দে। আর একবার যদি শুনি… কীযে করব!’
এটাই ঝিলমিলের পক্ষ থেকে লাস্ট এন্ড ফাস্ট আল্টিমেটাম।
রোদ্দুর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে পিছিয়ে গেল। রোদ্দুরের হয়েছে মরণদশা, কপালটা তার আসলেই পোড়া। সেই কপাল চাপড়াতে চাপড়াতে রান্নাঘরের দরজায় এসে দাঁড়াল।
রোদ্দুর ওই জায়গায় দাঁড়িয়ে এক দৃষ্টিতে ঝিলমিলকেই দেখছিল। আবহাওয়া এখন মোটামুটি ভালোই গরম। রান্নাঘরে আ’গুনের তাপে আরও গরম। ঝিলমিলের থুতনিতে, ঠোঁটের উর্ধ্বভাগে, কপালে, নাকে বিন্দু বিন্দু ঘাম দিয়েছে। একহাতে একবার নিজের ওড়না সামলাচ্ছে আরেকবার সামনে থাকা যাবতীয় জিনিসপত্র। রোদ্দুরকে বোধহয় খেয়াল করে নাই। একমনে গুনগুন করে যাচ্ছে। তারপর পরক্ষনেই রান্নার লবণ টেস্ট করে কিম্ভূতকিমাকার মুখোভঙ্গি করে রাখল। লক্ষণ সুবিধার নয়, নিশ্চয়ই কিছু উল্টাপাল্টা করে ফেলেছে। ওর মুখোভঙ্গি দেখে রোদ্দুর শব্দ করে হেসে উঠল। ঝিলমিল ওর দিকে তাকিয়ে বিব্রত ভঙ্গিতে বলল, ‘আমি তো আজ রান্নায় লবণ দিতে ভুলে গেছি।’

রোদ্দুর পকেটে হাত গুঁজে এগিয়ে এসে বলল, ‘এতক্ষণ পর রান্নার ভাবভঙ্গি দেখে ভেবেছি, তোকে শ্রেষ্ঠ রাধুনীর খেতাব দিব। আর তুই এখানে এই আকাম করলি?’

‘বুঝলাম না, আগে তো কখনো এইরকম হয় নাই।’ এই কথাটুকু ঝিলমিল বলল নরম সুরে। তারপরেই আবার তেতে উঠল।
‘এটা হয়েছে তোর জন্য। একটু আগে তোর সাথে কথা বলছিলাম তাই অন্যমনস্ক হয়ে এইরকম হয়েছে। আমি কিছু জানিনা। আর কিছু করতে পারব না, বাকিটা তুই সামলে নে।’
রোদ্দুর হতভম্ব হয়ে গেল। এসেছিল প্রেম করতে, এই মেয়ে এমনি করে ফাঁসিয়ে দিবে কে জানত? ঝিলমিল ওকে পাশ কাটিয়ে চলে গেল।
অগত্যা রোদ্দুরকেই বাকিটা সারতে হলো। রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে ঘুমানোর সময় রোদ্দুর বলল, ‘আমার সাথে থাকতে হবে না।’

ঝিলমিল জিজ্ঞেস করল, ‘কেনো?’

‘সভ্য সমাজের মানুষ তুই… আমার সাথে থাকলে অসভ্য হয়ে যাবি।’
ঝিলমিল বিরক্তিকর চাহনি নিক্ষেপ করে সোজা বিছানায় এসে একপাশে শুয়ে পড়ল। কাল আবার সকাল সকাল উঠতে হবে। মা আসার খবরে অন্যরকম আনন্দ হচ্ছে। প্রতিটা মেয়ের জীবনে এটা হয়ত অন্যরকম একটা সুখের ছোঁয়া। নিজের গোছানো সংসারে নিজের মানুষের ছোঁয়া— তার অনুভূতিই আলাদা।
.
সকাল সকাল রোদ্দুর বেরিয়ে গেল অফিসের উদ্দেশ্যে। বাড়িতে কথা হয়েছে, তারা ইতোমধ্যে রওনা হয়েছে।
ছোট চাচ্চু নিয়ে আসছে তাদের। দুপুর বারোটার মধ্যে সকলে চলে এলো। ঝিলমিলের খুশি দেখে কে!
দাদিকে দেখল, উনি বিগত কিছুদিনের অসুস্থতায় সত্যিই শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছেন। চেহারা কেমন মলিন, রুক্ষ… কিছুদিনেই মনে হয় বয়স আরও বেড়ে গিয়েছে। মা, মেজো চাচি মানে ঝিলমিলের শাশুড়ি আর দাদি এসেছেন। ছোট চাচ্চু থাকলেন না, হাজারটা কাজের বাহানা দিয়ে দুপুরে কোনোরকম দৌড়ের উপর খেয়ে বিদায় নিলেন।
ঝিলমিল বারবার বলছিল, আজকের দিনটা থেকে কাল সকাল সকাল চলে যেতে। রোদ্দুরের সাথেও দেখা হলো না, কিছুক্ষণ পরেই ফিরে আসবে।

ছোট চাচ্চু বললেন, ‘আমি তো প্রায় সময় ঢাকাতে আসিই, আবার দেখা হয়ে যাবে। তুই বরং কিছুদিন তোর মা, শাশুড়ি আর দাদিকে দেখে রাখ।’
তিনি চলে গেলেন। ঝিলমিল দাদির সাথে বসল আলাদা করে গল্প করতে। কতশত কাহিনী তিনি শুনালেন; সব ওদের ছোটো বেলার!
.
রোদ্দুর সেদিন সময়ের একটু আগেই বাড়ি ফিরে এলো। দাদিকে দেখে সে কি খুশি হবে, দাদি’ই ওকে দেখে খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়েছেন। বাড়িতে থাকতে তো কথাবার্তার পরিমাণ কমিয়েই দিয়েছিলেন। প্রয়োজন ব্যতীত কারো সাথে কথা বলতেন না। আর এখন? তার কথার ঝুড়ি শেষ হচ্ছে না।
নীলিমার ছেলেকে নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তা ছিল। কিন্তু এইখানে এসে সে এইরকম পরিপাটি একটা সংসার দেখবে, তা আসলেই ভাবে নাই। ঝিলমিলকে ছোটো থেকে দেখে আসছে জানেই ও একটু উড়নচণ্ডী স্বভাবের। সেই ঝিলমিলও অনেকটা বদলে গেছে, ওর মধ্যে বেশ ম্যাচিউর একটা ভাব এসেছে যা কথাবার্তায় কাজেকর্মে বেশ ভালো করেই বোঝা যাচ্ছে। তার মাতৃ হৃদয় শান্ত হয়েছে, পরিপূর্ণ হয়েছে।
রাতে খাওয়া-দাওয়ার পর পুনরায় গল্পের ঝুড়ি খুলে বসল সব। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একে একে সবাই উঠল। তবে ঝিলমিল রয়ে গেল দাদির কাছে। দাদি ওর মাথায় যত্ন করে আদর মেখে হাত বুলিয়ে দিলেন… ওর সংসারের গল্প শুনলেন। ঝিলমিল দাদির সাথেই শুয়ে পড়ল।
সে যখন অনেকক্ষণ বাদেও ঘরে আসছিল না রোদ্দুর তখন তাকে মেসেজ দিল, ‘কোথায় তুই? ঘরে আসবি কখন? ওদের পেয়ে আমাকে ভুলে গেছিস? আজ সারাদিন খোঁজ নিয়েছিস আমার?’

এতগুলো প্রশ্নের জবাব ঝিলমিল একবাক্যে দিল, ‘আমি দাদির সাথে আছি।’

রোদ্দুর লিখল, ‘ঠিক আছে। এখন আমার কাছে আয়।’

‘অনেকদিন পর দাদিকে পেয়েছি। তোর সাথে তো রোজ’ই থাকছি। একদিন না হয় থাকলাম দাদির সাথে।’

রোদ্দুর কপাল চাপড়াল‌। সে ঘুম বাদ দিয়ে এই একটা পর্যন্ত জেগে আছে শুধুমাত্র ঝিলমিলের জন্য। আর সে কী না এইরকম বিশ্বাসঘাতকতা করছে! এই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলা গানের দু’টো লাইন মনে পড়ল। সেটাই আওড়াল। দ্রুত হাতে টাইপিং করল, ‘আমি পৃথিবীর এই বুকে আগুন জ্বালিয়ে দিব, তুমি যদি আমারই না হও… তুমি বিশ্বাসঘাতকতা করো না প্রিয়া, আমি ছাড়া তুমি কারো নও।’

ঝিলমিল মুখে হাত চাপা দিয়ে হেসে ফেলল। লিখল, ‘আজকে আর আমি ওইদিকে যাচ্ছি না, সে তুই যা ইচ্ছে হয় কর। আমার ঘুম ধরেছে, ঘুমাব এখন!’

‘এইভাবে ফাঁকি দিলি? আমার যে বউ ছাড়া ঘুম আসে না। তাকে জড়িয়ে না ধরলে, তার গায়ের ওম না পেলে ঘুম আসবে না। অভ্যাস হয়ে গেছে তো! ভালোভাবে বলছি, চলে আয়। নয়ত আমি গিয়ে তোকে তুলে আনব।’
ঝিলমিল আর পাল্টা রিপ্লাই করল না। রোদ্দুর সত্যি সত্যিই উঠে গেল। ওই ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে তাকে হতাশ হতে হলো। ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ, জানালাগুলোতেও পর্দা দেওয়া। শুধুমাত্র দাদির কথা ভেবে এই রাত্রিবেলা রোদ্দুর আর দরজা ধাক্কাধাক্কি করল না। না হলে ঠিকই ঝিলমিলকে তুলে নিয়ে আসতো। ঠিক আছে, দিন তো তারও আসবে… সে নিজে নিজে সেদিন ঝিলমিল কোথায় গিয়ে পালাবে, রোদ্দুর তা দেখে নিবে!
.
.
.
চলবে….

[কার্টেসি ছাড়া কপি করা নিষেধ]
নোট: গল্প খুব শীঘ্রই শেষ হবে।
শব্দ সংখ্যা— ১৬২২