#তোমার_আমার_প্রেম (কপি নিষিদ্ধ)
#পর্ব_২
#প্রিমা_ফারনাজ_চৌধুরী
(২)
টুসু ভয়ে ভয়ে বিবেকের ঘরের সামনে এসে দাঁড়ালো। ভিতরে থেকে ভেসে আসা খটখট শব্দ ওর পায়ের তলা থেকে মাটি সরিয়ে নিচ্ছিল। বিবেক ভাই টেবিলের নীচ থেকে মাথা তুলে তখন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হাতে ঘড়ি পরছিল। টেবিলের এক কোণে রাখা বেতটা তার ভ্রুকুটি মেলে টুসুর দিকে তাকিয়ে আছে। আয়নার সামনে থেকে সরে বিবেক ওর দিকে চোখ ঘুরিয়ে বলল,
“মেসেজগুলো তোর মা-বাপকে দেখাবো, নাকি ঘরে এসে হাতটা বাড়িয়ে দিবি?”
টুসুর পা দুটো অনিচ্ছা সত্ত্বেও ঘরের ভেতরে ঢুকে গেল। ভয় কাটানোর কোনো চেষ্টা না করেই ও হাতটা এগিয়ে দিল বিবেকের দিকে। বিবেক হাতটা দেখলো। তারপর ধীর পায়ে টেবিলের কাছে গিয়ে বেতটা হাতে নিল। বেতের গায়ে আঙুল বুলিয়ে ভার পরীক্ষা করে কোনো হুঁশজ্ঞান ছাড়াই টুসুর হাতে চারটে বাড়ি বসিয়ে দিল।
প্রথম বাড়িতেই টুসুর মুখ থেকে চাপা একটা আর্তনাদ বেরিয়ে এল। দ্বিতীয় বাড়িতে চোখের জল গড়িয়ে পড়লো। তৃতীয় ও চতুর্থ বাড়ির পর ও আর সহ্য করতে না পেরে হাতটা পেছনে লুকিয়ে ভেউভেউ করে কেঁদে উঠে তার জেম্মাকে ডাকলো।
ঠিক তখনই জেম্মা ছুটে এল। এক ঝটকায় টুসুকে নিজের আড়ালে নিয়ে গিয়ে বলল,
“কি করছিসটা কি তুই বিবেক? তোর কি একটুও মায়াদয়া নেই? ছোট বোন হয় তোর।”
বিবেকের চোখে রক্ত ভেসে উঠলো যেন। ঠোঁট দুটো শক্ত করে টুসুর দিকে আঙুল তুলে বলল,
“সত্যিটা আমি বলব, নাকি তুই বলবি?”
টুসু কেঁদেই চললো। হাতটা পুরো লাল হয়ে ফুলে গেছে। সেই জায়গায় আর কোনো অনুভূতি হচ্ছে না। জেম্মা ওর হাতটা ধরে ফুঁ দিয়ে কিছুটা শান্ত করার চেষ্টা করলো। টুসুকে বলল,”আবার কি করেছিস তুই?”
টুসু কান্না গিলে বলল,”মাকে কিছু বলো না। আমি লজ্জায় মরে যাব।”
বিবেক তাকে কটাক্ষ করে বলল,”কিছু করার আগে লজ্জা হয় না তোর? এত বেশরম কেন তুই? বয়স এখনো চৌদ্দ। চেনা নেই জানা নেই একটা ছেলে তোকে প্রস্তাব দিল আর তুই ধেইধেই করে রাজী হয়ে গেলি? মা কাকাকে বলো ওর ফোনটা যেন নিয়ে নেয়। ওর এখনো ফোন ব্যবহার করার বয়স হয়নি।”
মা বলল,”এমন করিস না তো বিবেক। সবে ফোন হাতে পেয়েছে। ভুল তো হবেই।”
বিবেক বিরক্ত হয়ে বলল,”ওর ফোন কীসের দরকার আমি সেটাই তো বুঝতে পারছিনা। ওর এখন শুধু পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকার সময়।”
“ওর বাপ দিয়েছে সেখানে তুই কি করবি?”
“এরপর উলটপালট কিছু দেখলে ওর হাত পা ভাঙবো আমি। চোখের সামনে থেকে সর। সন্ধ্যায় ঠিক টাইমে পড়তে বসবি।”
টুসু কান্না মুছতে মুছতে ছাদে চলে গেল। রেলিঙে পা ঝুলিয়ে বসে রইলো। মা সেখানে এসে বলল,
“মার খেলি তো। কতবার করে বলি উল্টাপাল্টা কাজ করিস না। ফোন হাতে পেয়েছিস বলে যা ইচ্ছা তাই করবি?”
টুসু চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে। বিবেক ভাই কি তাকে এই প্রথমবার মারছেন? ক্লাস ওয়ান থেকে সে বিবেক ভাইয়ের কাছে পড়ছে। সেই তখন থেকেই তার কাছে যমের আরেক নাম বিবেক ভাই। অথচ আপা একেবারে বিপরীত। ঝগরাটে স্বভাবের আপা বিবেক ভাইয়ের সাথে তর্ক করতে কখনোই পিছপা হয় না।
বিবেক ভাইও আপার প্রতি আলাদা একরকম সহানুভূতি দেখান। আপার সাত খুন মাফ হয়ে যায়, কিন্তু টুসুর একটি খুনও মাফ হয় না। চুন থেকে পান খসলেই পিঠে ধমাধম বাড়ি পড়ে।
তাদের যৌথ পরিবার। জেম্মা, মা আর কাকিয়ার মিলিত সংসার। কিন্তু সব কাজের দায় এসে পড়ে টুসুর ঘাড়ে। জেম্মার কোমর ব্যথা হলে ঔষধ আনতে পাঠানো, মায়ের দোকানে কিছু আনতে হলে, বা কাকিয়ার বাচ্চাকে স্কুল থেকে নিয়ে আসার দরকার পড়লেই টুসুকে ডাক পড়ে।
এতেই শেষ নয়। জেঠুর কপালে মলম মালিশ করা, কাকাইয়ের অফিসে খাবার দিয়ে আসা, বাবার শার্ট থেকে শুরু করে জুতো পর্যন্ত ধুয়ে-পালিশ করা সব কিছুতেই টুসুকেই করতে হয়।
বাড়িতে একটা বুড়ি আছে। মাঝেমধ্যে বিছানায় প্রস্রাব করে ফেলে, তখনও সবাই টুসুকেই ডাকে। সাফসুতরো করার কাজও তারই। অথচ এই টুসুরই কোনো অধিকার নেই, কোনো আহ্লাদ নেই। তার চাওয়া-পাওয়ার কথা কারও মনেই আসে না। এই
বাড়িতে যদি কারও মূল্য না থাকে, তবে সে টুসু। অথচ তাকে ছাড়া সংসারের একদিনও চলে না।
বিবেক ভাইও কি কম? এটা কর, ওটা কর। সারাক্ষণ কাজের উপর রাখে টুসুকে। খুব অত্যাচার করে। পড়া না পারলে খুব মার দেয়। রেজাল্ট খারাপ করলে ওইদিনের শাস্তি অন্যরকম। টুসু খুব ছটফটে হলেও বড়োই সরল। তার চাওয়া পাওয়া নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যথা নেই।
এদিক থেকে টুসুর আপা রাইমা খুব এগিয়ে। সে ঝগরুটে ও রাগী হওয়ায় চাওয়ার আগেই সব হাজির হয়ে যায় তার সামনে।
আপার জেদের কাছে সবাই মাথা নত করে, কিন্তু ব্যতিক্রম শুধু বিবেক ভাই। কারণ তিনি আবেগকে প্রশ্রয় দিতে নারাজ। আপার জেদ আর বিবেক ভাইয়ের যুক্তি একেবারে আগুন আর পানির মতো। এ নিয়ে তাদের মাঝে প্রায়ই তুমুল ঝগড়া বাধে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, ঝগড়ার শেষে তাদের সম্পর্কটা হঠাৎই হাওয়ায় মিঠাইয়ের মতো মিষ্টি হয়ে যায়। এমন কত ঝগড়া আর ভাব হওয়ার মিষ্টি মুহূর্তের সাক্ষী টুসু তার হিসেব করেও কূল পাওয়া মুশকিল।
এইতো সেদিন বিবেক ভাই আপার উপর রাগ করে সারাদিন বাড়ি এল না। রাতে ফিরলো তাও দেরী করে। জেম্মা মা আর কাকিয়া তাকে জোর করে খেতে বসালো। খেতে বসে সে দেখলো টেবিলে ইউনিক ইউনিক রান্নার আইটেম। চুপচাপ খেল। উনার মুখে রান্নার প্রশংসা যেন চাঁদের হাট। সহজেই প্রশংসা করেননা।
কিন্তু সেদিন বিবেক ভাই প্রশংসা করলো। আড়াল থেকে আপা খুব হাসলো। কারণ সব রান্না আপা করেছে। টুসু গিয়ে সত্যিটা ফাঁস করে দিল। বিবেক ভাইয়ের রাগ দেখে কে। ধমকে উঠে বলল,
“এত ধেইধেই করে নাচার কি হলো? তুই তো কোনো কাজবাজ পারিসনা।”
টুসুর মন খারাপ হয়ে গেল। বিবেক ভাই আর খেলেন না। চেয়ার ছেড়ে উঠতে যাবে তখুনি আপা এসে হাত চেপে বলল,
“সব খেয়ে তারপর উঠবেন। আমি অনেক কষ্ট করে রান্না করেছি। মানুষের কষ্টের মূল্য দিতে শিখুন।”
বিবেক ভাই বলল,”মা কাকিয়ারা রেঁধেছিল ভেবে চুপচাপ খাচ্ছিলাম ভালো না হওয়ার পরও। কিন্তু তুই যখন রেঁধেছিস তখন বলতেই পারি, রান্নাটা একদম জঘন্য হয়েছে।”
বলেই আপাকে সরিয়ে দিয়ে চলে গেল বিবেক ভাই। আপা রেগে খুন। চেঁচিয়ে বলল,
“কুত্তার পেরে ঘি সয় না।”
মা আপার মুখ চেপে ধরলো। কিন্তু আপা থামার নয়। মাকে সরিয়ে দিল ধাক্কা দিয়ে। বিবেক ভাই উপর থেকে ফুলটব ছুঁড়ে মারলেন আপার দিকে। গর্জে উঠে বললেন,”তোর সাহস কত কাকিয়াকে ধাক্কা মারলি?”
আপা রাগে দুঃখতে কাঁপতে থাকলো। তারপর চোখে জল নিয়ে ঘরে চলে গেল। আপার রাগ থামাতে বাবার খুব বেগ পেতে হলো। আপার সেইরাতে ঘুমালো না। রাগে কাঁদলো। আর বলতে লাগলো,”হনুমানটাকে আমি এমন উচিত শিক্ষা দেব।”
আপা খুব তেজি। সহজে রাগ কমে না যতক্ষণ না প্রতিশোধ না নিতে পারে।
পরদিন ভোরে শীতের কুয়াশায় মোড়ানো ছাদে দাঁড়িয়ে ফিটনেস সচেতন বিবেক ভাই যোগব্যায়াম শেষে গ্রিনটিতে চুমুক দিচ্ছিলেন।
আপা তাকে দেখেই হনহনিয়ে চলে আসছিল। চোখে তীব্র রাগ তখনো। বিবেক ভাই তাকে দেখে নরম কণ্ঠে ডাক দিলেন,
“এই রাগীরাণী এদিকে আয়।”
আপা থেমে গেলেন। কিন্তু তিক্ত অভিমান তার পা দু’টোকে এগোতে দিল না।
ততক্ষণে টুসু পুরো পরিস্থিতি বুঝে আপার হাত টেনে ধরে টানতে টানতে আপাকে বিবেক ভাইয়ের সামনে নিয়ে এল।
বিবেক ভাই আপার মাথা ধরে ঘুরিয়ে বলল বলল,”কোথায় লেগেছিল কাল?”
আপা রাগে ফোঁসফোঁস করতে করতে বলল,”ফুলটব ছুঁড়ে মেরে জিজ্ঞেস করছেন কোথায় লেগেছিল?”
বিবেক ভাই বলল,”নিজের দোষে মার খেয়েছিস। এভাবে কথা বলা ছাড়। শ্বশুরবাড়ি গেলে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেবে সবাই।”
আপা আরও রেগে গেল। বিবেক ভাই আপার হাত খপ করে ধরে টুসুকে বলল,
“এই গাধারাণী তুই এখানে থেকে ফোট। সকাল সকাল আমার মাথা খেতে চলে এসেছিস দুই বোন?”
টুসু ভ্রু কুঁচকে জানতে চাইলো,”আপার সাথে তুমি কি করবে?”
টুসুর প্রশ্নে শুনে আপা আর বিবেক ভাই দুজনেই ভড়কে গেল। বিবেক ভাই তার মাথায় চাটি মারতেই আপা প্রতিবাদ করে উঠলেন।
“এভাবে মারলে মাথায় সমস্যা হয়ে যাবে ওর।”
বিবেক ভাই,”হোক সমস্যা। এই গাধারাণী তুই যাবি কি যাবি না?”
টুসু চলে গেল। কিন্তু পুরোপুরি গেল না। দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে রইলো।
আড়াল থেকে টুসু দেখলো বিবেক ভাই আর আপা পূর্বমুখী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আগে পিছে নয়, একদম পাশাপাশি। যতক্ষণ না সূর্য মামা কুয়াশা ভেদ করে উঁকি দিল, ততক্ষণ তারা নীরবে দাঁড়িয়ে রইলো।
ওই যে পাশাপাশি নীরবতা ভাগ করে দাঁড়ানো এখন আর টুসুর সেটা বুঝতে দেরি হয় না।
বিবেক ভাই তাকে আদর করে গাধারাণী ডাকলেও আপাকে আদর করে রাগীরাণী ডাকেন না। রাগী রাণী ডাকার পেছনে আরও একটা কারণ আছে ওটা টুসু আজকাল বোঝে। ওটা ভেবে তার খুব আনন্দ হয়।
_____________
টুসু রাগ করে ছাদে বসেছিল দেখে রাইমা এসে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল,”মন খারাপ?”
টুসু তাকে সব খুলে বললো। রাইমা বলল,”গাধী মন খারাপ করতে হয় তার জন্য? বিবেক ভাইকে ব্লক করে দে।”
পরে ভেবে বলল,” না না ব্লকও করা যাবে না। তুই এক কাজ কর তুই আরেকটা আইডি খোল। সেই আইডিতে তুই যা ইচ্ছা পোস্ট কর।”
টসু দুপাশে মাথা নেড়ে বলল,”উহু বিবেক ভাই যদি ফোন নিয়ে চেক করে? তখন কি করবো আমি?”
রাইমা বলল,”আমার অনেকগুলো আইডি ছিল। কিন্তু এখন শুধু দুটো আছে। আচ্ছা শোন, আমার রাগিনী নাম দিয়ে যে আইডিটা ছিল ওটাতে তেমন ফ্রেন্ড নেই। দুমাস মাস হয়েছে খুলেছি। তুই ওটা ইউজ কর।”
টুসু লাফ দিয়ে উঠলো। বলল,
“বিবেক ভাই যদি ফোন দেখেও তাহলে বলতে পারবো সেটা তোমার আইডি।”
রাইমা হেসে বলল,”হ্যাঁ রে পাগলি। ফোন দে আমি আইডিটা লগইন করে দিই।”
টুসু তার নিজের আইডিটার পাশাপাশি রাগিনী আইডিটাতে সময় দিল। আগের আইডিতে সব বন্ধু-বান্ধব রয়েছে। ওই আইডিতে থাকা কয়েকজনকে সে রিকুয়েষ্ট দিল। অনেকেই রিকুয়েষ্ট এক্সেপ্ট করেছে সাথে সাথে।
টুসু ওই আইডি থেকে বিবেক ভাইকে ব্লক করতে গিয়েও করলো না। থাক গে। প্রোফাইল পিকচারে যে হাতটা আছে ওটা তো আপারই।
___
দিন দু’এক হলো বিবেক ট্যুরে গিয়েছে সাজেক দেখতে। সে বরাবরই ট্রাভেল লাভার, নতুন নতুন জায়গা আবিষ্কার করতে তার অদম্য আগ্রহ।
পাহাড়ের কোলে মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সোনালি সূর্যোদয়, গাছের পাতায় ফিসফিস করা বাতাসের মধ্যে হাস্যোজ্জ্বল ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে বন্ধুদের সঙ্গে একটা ছবি পোস্ট করেছিল বিবেক।
নিরিবিলি জায়গায় বসে যখন সে নিউজফিড স্ক্রল করছিল, হঠাৎ একটি নোটিফিকেশন এল। “dube dube valobashi” নামে আইডিটা তার পোস্টে কমেন্ট করা সবার কমেন্টে গিয়ে রিপ্লাই করছে,
“রিকুয়েষ্ট এক্সেপ্ট করুন। ভালোবাসা দিলে ভালোবাসা পাবেন।”
বিবেকের মেজাজ একদম বিগড়ে গেল। সে উত্তেজিত হয়ে উত্তর দিল, “তোর সমস্যা কি?”
টুসু একটুও বিচলিত না হয়ে বেয়াড়া রকম উত্তর দিল, “Pasay takun bhaiya.”
বিবেকের রাগ বাড়লো তরতর করে। সে দেখলো টুসু একেরপর এক কমেন্ট করছে তার পোস্টে। লিখলো।
“অনেক সুন্দর হইছে,
এগিয়ে যান পাশে আছি,
নতুনদেরও পাশে আছি,
আসুন সবাই একসাথে এগিয়ে যায়।
নতুনরা সাড়া দেন আপনার বাড়িতে যুক্ত হয়ে যাবো, আর সময় পাইলে এই ছোট বোনের বাড়িতে একটু ঘুরতে আইসেন প্লিজ।”
বাড়ি বলতে টুসু তার আইডিটাকেই বুঝিয়েছিল। সাথে সাথে মেসেঞ্জারে ভয়েস মেসেজে ভেসে এল এই বলে,
“বাড়ি ফিরে তোর পাশে থাকা বের করছি আমি। বেয়াদব।”
টুসু রিপ্লাই করলো,”সো সুইট ভয়েস।”
তবে তার সেই আইডি নামক বাড়িতে বিবেক আহসানের গর্জন তর্জন ভেসে এলেও “রাগিনী” আইডিটাতে একটা অদ্ভুত মানব অতিথি হয়ে তার বাড়িতে এল।
ওই যে ডুবে ডুবে ভালোবাসি আইডিতেও কমেন্ট করেছিল লোকটা। নাম অভিনব শারাফ। রাগিনী আইডিতে লোকটা এড নেই।
সাজেশন লিস্টে লোকটার আইডি দেখে টুসুর কৌতূহল জেগেছিল। আইডিটা প্রাইভেট করা।
রিকুয়েষ্ট পাঠানোর পর তিনদিন ঝুলিয়ে রেখে তারপর এক্সেপ্ট করেছে। টুসু তার আইডিতে ঘুরলো সারাদিন। কেমন অদ্ভুত অদ্ভুত ছবি পোস্ট করে লোকটা। খুব ভয়ংকর।
টুসু একটা কঙ্কালের মাথাওয়ালা ছবির পোস্টের নীচে কমেন্ট করলো,
“আপনার কি ভূত খুব পছন্দ?”
তার কমেন্টটা পাত্তায় পেল না। এদিকে বিবেক ভাই ফোনে জানালো সে বাড়ি ফিরছে। জেম্মার কোলে মাথা রেখে সে চুপচাপ বিবেক ভাইয়ের কথা শুনছিল ঠিক তখুনি নোটিফিকেশন এল অভিনব শারাফ কমেন্ট করেছে,
“উহু, পেত্নী পছন্দ।”
চলমান….