কাননে ফুটিল ফুল পর্ব-০৬

0
280

কাননে ফুটিল ফুল — ৬ (১৬৯০+ শব্দ)

সারজিম এগিয়ে এলো। অন্তরঙ্গ আলিঙ্গন হলো দুই ভাইয়ের মধ্যে।

সারজিম প্রথমেই সাব্বিরের ফোন থেকে মায়ের সাথে কথা বলল। তারপর দুই ভাই রওয়ানা দিল বাসার উদ্দেশ্যে। সারজিম গাড়িতে উঠে প্রশ্ন করল,
“আন্দালিবের কী খবর? ভালো আছে?”

“আছে বোধহয় ভালোই। সেদিনের পর থেকে আমি আর তেমন কথা বলছি না তার সাথে?”

“এটা কিন্তু ঠিক করিসনি।”
“তুমি একথা বলছ ভাইয়া! নৈশী আপুর প্রতি তোমার অনুভূতির কথা জেনেও সে এমন একটা কাজ করল, তারপরেও তুমি কিছু বলবে না?”

সারজিম জবাব না দিয়ে হাসল শুধু। সাব্বিরের মাঝে মাঝে এজন্যই ভাইয়ের উপর রাগ হয়। এমনিতে সারজিম প্রচন্ড স্ট্রিক্ট, গম্ভীর এবং কখনও অন্যায়ের সমর্থন করে না। কিন্তু কিছু কিছু ব্যাপারে ওর আচরণ এতই নিস্পৃহ যে সেটা মেনে নেওয়া যায় না। আন্দালিবের ব্যাপারে আর তেমন কথা হলো না দুজনের।

ওদের বাসায় পৌঁছাতে রাত হলো বেশ। অসময়ে বৃষ্টিতে ভেজায় নৈশীর শরীরটা একটু খারাপ করেছিল, তাই ও রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়েছিল আগেভাগেই। সবে ঘুমটা আসি আসি করছে, এরমধ্যেই কলিং বেলের শব্দ শুনে তন্দ্রা ছুটে গেল ওর৷ এর খানিকক্ষন পরেই আফরোজা বেগম আর সাব্বিরের কথার শব্দ পাওয়া গেল। আরও যে কন্ঠস্বরটি শোনা গেল সেটি এর আগে শুধু একদিন কয়েকমিনিটের জন্য শুনলেও আজ তা চিনতে অসুবিধা হলো না ওর। নৈশী কেমন একটা মোহগ্রস্ত হয়ে এগিয়ে গেল বসার ঘরের দিকে। কিন্তু ঘরের মধ্যে পা রেখে মনে হলো, এখন না আসলেও হতো।

সারজিমের সাথে ওর প্রথম সাক্ষাৎ হলো খুবই সাধারন। সারজিমই কথা বলল প্রথম,
“আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছো নৈশী?”

“ওয়ালাইকুমুস সালাম। আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি। আপনি?” সবসময় চটপটে স্বরে জবাব দেওয়া নৈশী টের পেল, আজ এই কথাটুকু বলতেই কোথাও একটা আড়ষ্টতা জেঁকে বসেছে জিভের ডগায়।

সারজিমের উত্তর সাবলীল। মনেই হলো না যে এই প্রথমবার নৈশীর সাথে কথা বলছে ও।
“আলহামদুলিল্লাহ, ভালো। তুমি কি অসুস্থ? তোমাকে ক্লান্ত লাগছে খুব। চোখ লাল দেখাচ্ছে।”

নৈশী কী বলবে বুঝে পেল না হঠাৎ। মাত্র মিনিটখানেকের দেখায় লোকটা বুঝে গেল যে নৈশী অসুস্থ। আফরোজা বেগম জবাব দিলেন এবার,
“এত করে বারণ করলাম, তারপরেও বৃষ্টিতে ভিজল। এই মেয়ের যত অদ্ভুত কথা, দেশে আসার পর প্রথম বৃষ্টির পানি নাকি গায়ে লাগাতেই হবে। এখন বোঝো মজা। জ্বর উঠেছে।”

সারজিম মায়ের কথায় অল্প হেসে আবার নৈশীর দিকে তাকাল,
“বোসো, নৈশী।”

আফরোজা বেগম তাড়া দিলেন,
“এখন আর বসতে হবে না। তারচেয়ে ও বরং শুয়ে পড়ুক গিয়ে। আর তোরা এতদূর জার্নি করে এসেছিস। এখন গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খেতে আয়। রাত তো কম হলো না। সকালে কথা হবে আবার।”

নৈশী চলে গেল। রাতে জ্বর বাড়ল খুব। শরীরে প্রচন্ড উত্তাপ নিয়ে নৈশী টের পেল ওর রুমের লাইট জ্বেলেছে কেউ, তার একটু পরে একটা শীতল হাতের স্পর্শ পেল কপালে। সেই স্পর্শটুকু খুব ভালো লাগল নৈশীর৷ অনেক আগে যখন মা বেঁচে ছিল, তখন জ্বর এলে ঠিক এভাবেই রাতে রুমে এসে চেক করে যেত সে। অদ্ভুতভাবে মায়ের শরীরের সেই চেনাপরিচিত ঘ্রাণটা নাকে এসে লাগছিল। হাতটা কপালের উপর থেকে সরে গেল কয়েক সেকেন্ড পরে। কিয়ৎক্ষন পরে কপালে ভেজা কাপরের স্পর্শ পেল ও।

আজ থেকে পাঁচ বছর আগে মা যখন মারা গেল, তারপর থেকে মায়ের সবটুকু দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিল বাবা। তারপর জীবনযুদ্ধে হার মেনে মাসছয়েক আগে বাবাও যখন পরপারে পাড়ি জমালেন, তখন নৈশীর মনে হয়েছিল, যত্ন নেওয়ার আর বুঝি কেউ রইল না। আজ আফরোজা বেগমের এই আদর মেশানো যত্নটুকু পেয়ে নৈশীর সেই ভুল ধারনা ভাঙল। আরাম পেয়ে চক্ষু মুদে রইল ও। তারপর কখন জানি ঘুমিয়ে গেল।

সকালে ঘুম ভেঙে নৈশী দেখল গতকালের সেই বৃষ্টি, মেঘ আজ একেবারে ভ্যানিশ। চমৎকার ঝলমলে রোদ জানালা গলে বিছানায় এসে পড়েছে। জ্বর নেই গায়ে একদম, শরীরটাও ঝরঝরে লাগছে বেশ। দেওয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল বেলা হয়েছে অনেক।

বসার ঘর থেকে কথার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। নৈশী ফ্রেশ হয়ে সেদিকে এগিয়ে গেল৷ সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে আন্দালিবের কথা। নৈশী এগিয়ে গিয়ে দেখলে বসার ঘরে সারজিম, আন্দালিব আর আফরোজা বেগম কথা বলছেন।

নৈশীকে দেখে আফরোজা বেগম উঠে গিয়ে কপালে হাত রাখলেন। তারপর হাঁফ ছেড়ে বললেন, “না, এখন আর জ্বর নেই। ক্ষিধে পেয়েছে নিশ্চই, আয় নাস্তা করবি।”
নৈশী প্রশ্ন করল, “তোমরা?”

“আমরা আরও আগেই খেয়েছি। তুই রাতে ঘুমাতে পারিসনি বলে তোকে আর সকাল সকাল ডাকিনি।”

আন্দালিব থেকে গেল এবং দুপুরে সবার খাওয়াদাওয়া একসাথেই হলো৷ বিকেলে সবাইকে সাথে নিয়ে লাগেজ খুলতে বসল সারজিম। পরিবারের লোকজনের জন্য কিছু কেনাকাটা করেছিল ওখান থেকে। সেগুলো একে একে বের করল। একটা বেশ বড়সর প্যাকেট বের করে সারজিম প্রশ্ন করল,
“জ্যোতি কই মা? সকাল থেকে দেখলাম না যে?”

“আমিও তো সেটাই ভাবছি৷ সারজিম ভাই কবে ফিরবে, জিজ্ঞাসা করতে করতে তো এতদিন মাথা খেয়ে ফেলছিল। থাইল্যান্ড যাওয়ার আগে তোর হাতে সবচেয়ে বড় লিস্টটা তো সেই ধরাল। অথচ এখন কিনা খবর নেই।”

সারজিম সাব্বিরকে বলল, “সাব্বির, যা তো। জ্যোতিকে গিয়ে ডেকে নিয়ে আয়।”

সাব্বির ইতস্তত করে বলল, “আমি?”

ওর কথার ভঙ্গিতেই সন্দেহ প্রবল হলো সারজিমের,
“সত্যি করে বল তো, তুই আবার কোনো ঝামেলা করিসনি তো ওর সাথে? জ্যোতি সকাল থেকে একবারও আসেনি কেন?”

দুনিয়ার সব মানুষের সাথে অত্যন্ত সুন্দরভাবে গুছিয়ে মিথ্যা বলতে পারলেও ভাইয়ের সামনে এসে কেমন জানি মিইয়ে যায় সাব্বির। তীক্ষ্ণ ওই চোখের দিকে তাকালেই কেমন পেটের মধ্যে গুড়গুড় করে। সাব্বিবের আমতা আমতা করা দেখে নৈশী বলল,
“তারচেয়ে আমি গিয়ে ডেকে নিয়ে আসি ওকে।”

জ্যোতিদের বাসা পাশেই, তাই ডাকতে গিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যেই ফিরে এলো নৈশী। তবে এলো ও একা, সাথে জ্যোতি নেই। জ্যোতির শরীরটা নাকি সকাল থেকেই খারাপ করেছে, তাই এখন ও আসবে না।

সারজিম বলল, “ওর গিফটটা তাহলে আমার কাছেই থাক। রাতে চাচার সাথে দেখা করতে যাব তো, তখন নাহয় গিয়ে দিয়ে আসব।”

একে একে সবার জন্য গিফট বের হতে লাগল। সাব্বিরের জন্য লেটেস্ট ডিজাইনের ঘড়ি, আফরোজা বেগমের জায়নামাজ, শাল। আন্দালিবের জন্য দামি পারফিউম। তারপরে বের হলো রঙিন কাগজে মোড়ানো চারকোনা একটা বাক্স। সারজিম সেটা নৈশীর দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,
“নৈশী, এটা তোমার জন্য।”

নৈশী হাত বাড়িয়ে গিফটটা নিল। আন্দালিব বলল, “নৈশী, আমরা কি তোমার গিফটটা দেখতে পারি?”

নৈশী হেসে সবার সামনেই বক্সটা খুলল। প্রথমেই পাওয়া গেল কতগুলো চকলেট, তারপর সমসাময়িক একজন বিখ্যাত আমেরিকান লেখকের দুটো বই। সাথে ছোট্ট একটা লাইট। সেটা বইয়ের সাথে অ্যাটাচ করে চাইলে অন্ধকারে শুয়ে কিংবা বসে বই পড়া যাবে৷ নৈশীকে সবচেয়ে অবাক করল বই দুটো। বছরখানেক আগেই প্রকাশিত হয়েছে বইদুটো। আজ কাল নেবে করে নেওয়া হয়ে উঠছিল না নৈশীর। সেই বই ওকে সারজিম দিয়েছে!

বইয়ের উপরে নৈশীর আলতো করে হাত বোলানো দেখেই বোঝা গেল, উপহার পেয়ে সে সন্তুষ্ট৷ সবকিছু আবার বক্সে গুছিয়ে রেখে সারজিমকে উদ্দেশ্য করে নৈশী বলল,
“থাংকস।”
প্রতুত্তরে সারজিম সামান্য হাসল। আন্দালিবের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি তখন ওদের দুজনের উপরে।

সেদিনটা ভালোই কাটল। পরেরদিন থেকে সারজিম আবার ব্যস্ত হয়ে গেল অফিস নিয়ে। সকালের নাস্তা করে বের হয়ে যায় ও, ফিরতে রাত হয়ে যায় বেশ। সারজিমের অনুপুস্থিতিতে আন্দালিব আসত কয়েকদিন পরপরই। সারজিম ফেরার পর সেটা অনেকটা কমে এলো।

আন্দালিবের সাথে নৈশীর আবার দেখা হলো গুনে গুনে পনের দিন পরে। কিছু বেকিং আইটেম কিনতে পাশের একটা সুপারশপে গিয়েছিল নৈশী। ওখান থেকে বের হতেই দেখল আন্দালিব গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছে। এতদিন আন্দালিব বুঝে গেছে নৈশী ঘুড়িয়ে পেঁচিয়ে কথা বলা পছন্দ করে না। তাই সরাসরিই প্রশ্ন করল ও,
“আমাকে দেওয়ার জন্য তোমার কিছুক্ষন সময় হবে নৈশী? আসলে আমার কয়েকটা ফ্রেন্ড তোমার সাথে দেখা করতে চায়।”

“হঠাৎ আপনার ফ্রেন্ডরা আমার সাথে কেন দেখা করতে চাইবে? আমাদের মধ্যে নিশ্চই বিশেষ কোনো সম্পর্ক নেই যার জন্য স্পেশালি তাদের সাথে দেখা করতে হবে আমার।”

“দেখ নৈশী, তোমার জন্য হয়তো আমি স্পেশাল কেউ নই। কিন্তু আমার জন্য তুমি খুব স্পেশাল। ওরা সেদিন পার্টিতে ছিল না। তাই তোমাকে দেখেনি। শুনেছে যে আমি কাউকে প্রপোজ করেছি, তারপর থেকেই চাইছে দেখা করতে। দ্যাটস ইট। তোমার আপত্তি থাকলে অবশ্য আমি জোর করব না।”

নৈশী ভাবল কয়েক সেকেন্ড। তারপর বলল,
“চলুন।”

নৈশী ভেবেছিল ওখানে কতগুলো মানুষের মধ্যে অস্বস্তিতে গাঁট হয়ে বসে থাকতে হবে ওর। কিন্তু সবাই ওর সাথে বেশ স্বতঃস্ফূর্তভাবেই কথা বলল। একটা মেয়ে আরেকটা মেয়ের চোখের ভাষা বোঝে সহজেই। দুয়েকটা মেয়ে যে নৈশীকে ইর্ষার চোঝে দেখছিল সেটা বোধগম্য হয়ে গেল নৈশীর৷ আন্দালিব অবশ্য আর কারও দিকে ফিরেও তাকাল না। ওর পুরোটা সময় শুধু নৈশীকেই অ্যাটেনশন দিল। কথায় কথায় কয়েকজন নৈশীর ডিসিশন জানতে চাইল আন্দালিবকে বিয়ের ব্যাপারে। নৈশী জানাল, ও এখনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি।

৮.
কলেজ গেট থেকে বের হয়ে রিকশা ডাকতে গেল জ্যোতি, কিন্তু ফাহিমা ওকে থামিয়ে দিল। অপজিটের ফুচকার স্টলটা দেখিয়ে বলল,
“জ্যোতি, অনেকদিন হয়েছে ফুচকা খাই না। চল না আজ যাই।”

“আমার ইচ্ছে করছে না, তুই যেতে হলে যা।”
“আমি বিল দেব। তবুও চল প্লিজ।”
জ্যোতির গলার স্বর চড়ল এবার, “কেন ঘ্যানঘ্যান করছিস। বললাম তো আমার ইচ্ছে করছে না।”

হঠাৎ জ্যোতির এমন আচরণে থম মেরে গেল ফাহিমা। জ্যোতি পরক্ষনে সামলে নিল নিজেকে, “স্যরি, এভাবে বলতে চাইনি আমি।”
“ধুর, বাদ দে।” হেসে উড়িয়ে দিল ফাহিমা। ও জানে, জ্যোতি সত্যিই এমন নয়। হয়তো কোনো ব্যাপার নিয়ে ডিস্টার্বড বলেই কিছুদিন যাবত এমন মনমরা হয়ে আছে। জ্যোতি আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল, তার আগেই ওর হাতে হ্যাঁচকা টান পড়ল। ফাহিমা আর জ্যোতি দুজনেই চমকাল। সাব্বির জ্যোতির হাত ধরে টানাটানি শুরু করেছে ততক্ষনে,
“এই জ্যোতি, জলদি গাড়িতে ওঠ।”

জ্যোতি প্রথমে চমকে গেলেও এবার রাগ হলো ওর।
“আশ্চর্য! এমন টানাহেঁচড়া করছ কেন?”
“তোর সাথে কথা আছে আমার। গাড়িতে ওঠ এক্ষুনি।”
“বললেই হলো? এটা কি মামা বাড়ির আবদার নাকি?”
“মামা বাড়ির আবদার নয়, চাচার ছেলের আবদার। তোকে যা বলছি তাই কর।”
“অসম্ভব, আমি তোমার সাথে যাব না।”
“জ্যোতি, মেজাজ গরম করিস না। গাড়িতে ওঠ জলদি।”

“সাব্বির ভাই, আমার কলেজ ছুটি হয়ে গেছে। সময় মতো বাসায় না গেলে আম্মু টেনশন করবে।”

“এই যে ফাহিমা আছে তো। ও তোর বাসায় বলে দেবে যে এক্সট্রা ক্লাস করার জন্য তোর দেরি হবে যেতে।”
“বাহ! তোমার মাথায় তো অনেক বুদ্ধি।”

“মানে?”
“মানে ফাহিমা আর আমি একই কলেজে একই ক্লাসে পড়ি। ফাহিমা কলেজ শেষে বাসায় চলে যাবে, আর আমি এক্সট্রা ক্লাসের জন্য থেকে যাব? বলি স্যার কি আমার বয়ফ্রেন্ড লাগে যে এক্সট্রা ক্লাস করাবে?”

জ্যোতির কথা শুনে ফাহিমা ফিক করে হেসে দিল।সাব্বির মাথা চুলকাচ্ছে,
“সত্যিই তো, তাহলে কী করা যায়?”

ফাহিমা বলল, “আমার কাছে সমাধান আছে। এখন ফোন করে বাসায় বলে দেই যে আমাদের এক্সট্রা ক্লাস আছে। কাছাকাছিই তো আমাদের ক্লাসমেট রূপার বাসা। আমি ওর বসায় ওয়েট করি। আপনাদের কথাবার্তা শেষ হলে জ্যোতিকে আবার এখানেই নামিয়ে দিয়ে যাবেন। তারপর দুজনে বাসায় যাব।”

সাব্বির বলল, “তোমার মাথায় তো দেখি বুদ্ধিতে ঠাসা।”

“থ্যাংকস ফর দ্য কমপ্লিমেন্ট দুলাভাই, স্যরি, সাব্বির ভাই। আমি তাহলে যাই।”

ফাহিমা চলে যাওয়ার পর জ্যোতি জিজ্ঞাসা করল,
“কার গাড়ি নিয়ে এসেছ?”
সাব্বির আঙুল দিয়ে চুল ব্যাকব্রাশ করে বলল,
“ফ্রেন্ডের।”

“ফ্রেন্ডের গাড়ি তা এত ভাব নিয়ে বলার কী আছে? নিজের তো মুরোদ নেই একটা বাইসাইকেল কেনারও।”

“জ্যোতি, আবারও মেজাজ খারাপ করে দিচ্ছিস। জলদি গাড়িতে ওঠ।”

জ্যোতি থমথমে মুখে গাড়িতে গিয়ে উঠে বসল। সাব্বিরও গাড়িতে উঠে ড্রাইভিং সিটে বসা ও ফ্রেন্ডকে বলল,
“নাবিল, জলদি গাড়ি স্টার্ট দে। কাছাকাছি নিরিবিলি কোনো জায়গায় নিয়ে গাড়ি পার্ক করবি। তারপর আমার চোখের সামনে থেকে দূর হয়ে যাবি।”
বন্ধুটি হেসে বলল, “যথা আজ্ঞা, জনাব।”

এতক্ষনে সাব্বিরের মন শান্ত হয়েছে। সেদিন জ্যোতির সাথে রুড বিহেভ করার পর যখন সাব্বিরের মাথা ঠান্ডা হলো, তখনই ও বুঝতে পেরেছিল অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে।

(চলবে ইনশাআল্লাহ)