কাননে ফুটিল ফুল পর্ব-১৬

0
214

কাননে ফুটিল ফুল — ১৬ (১৬৫০+ শব্দ)

ফাহিমার স্বভাবের সেই চপলতা কিছুটা হলেও ফিকে হয়েছে। আন্দালিবের ব্যাপারে সবটাই ওকে জানিয়েছিল নৈশী। সম্ভবত সেই ট্রমা থেকে এখনও বের হতে পারেনি পুরোপুরি।

সাব্বির বাইরে গিয়েছিল কিছুক্ষনের জন্য। নৈশীর পিছুপিছু সেও রুমে ঢুকল। রুমে ঢুকেই চিৎকার করে উঠল,
“একি! তুই এখনও এসব আটা ময়দা তুলিসনাই মুখ থেকে? তুই কি আজ সারারাত এসব মেখে পেত্নির মতো বসে থাকবার প্লান করছিস? খবরদার বলছি জ্যোতি, এরকম বিশ্রী সাজ নিয়ে থাকলে আমি কিন্তু রাতে আমার পাশে ঘুমাতে দেব না তোকে।”

নৈশী শব্দ করে হাসল। ফাহিমাও তার মন খারাপের কথা কিছুক্ষনের জন্য ভুলে গিয়ে হেসে ফেলল। জ্যোতিও অবশ্য কম যায় না। সে সমানে তেজ জিয়ে জবাব দিল,
“আশ্চর্য! এত তারাতাড়ি মেকাপ কেন তুলব? এখনও কত আত্মীয়স্বজন, পাড়াপ্রতিবেশি আসছে নতুন বউ দেখার জন্য৷ রাতের আগে এই মেকাপ এমনই থাকবে৷ আর শোনো, আমার মনেহয় তোমার চোখের ডাক্তার দেখানো উচিৎ। একমাত্র তুমি বাদে আর সবাই বলেছে, আমার ব্রাইডাল মেকাপটা অসাধারণ হয়েছে।”

“বেয়াদব মেয়ে। স্বামীর মুখে মুখে তর্ক করছিস। দেব ধরে দুইটা চড়, কেঁদে কূল পাবি না”

“শোনো প্রাণের স্বামী, একটা কথা আমি তোমাকে স্পষ্ট করে বলে দেই। আগের দিন শেষ। আজ থেকে পুরুষ শাসিত এই সমাজে মেয়েরা আর নাকে কাঁদবে না। এখন সময় এসেছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর।”
সাব্বির বিড়বিড় করে বলল, “সর্বনাশ, এ কাকে বিয়ে করে আনলাম!” নিজের সর্বনাশ চোখের সামনে দেখতে পেয়ে ওর মাথা চক্কর দিয়ে উঠল। আবারও কিছু বলতে যাচ্ছিল বোধহয় ও জ্যোতির উদ্দেশ্যে। এবার নৈশী থামিয়ে দিল ওদের।

“সাব্বির, আজকের দিনের জন্য অন্তত তোমাদের এই টম অ্যান্ড জেরি বন্ধ রাখো৷ গেস্টরা সবাই যাক, তারপর আবার শুরু কোরো নাহয়।”

সাব্বির সায় দিল নৈশীর কথায়, “ঠিক। আত্মীয়স্বজন সবাইকে যেতে দাও একবার। এই মেয়েকে এমন টাইট দেব আমি তারপর।”

নৈশী ভ্রু নাচিয়ে প্রশ্ন করল, “তাই নাকি?”
“অবশ্যই। যদি আমি এটা না করতে পারি তাহলে তুমি আমার সাব্বির নাম পালটে সবুর মিয়া রেখে দিও।”

“আচ্ছা, মনে রাখলাম কথাটা।”

সারাদিনের কাজের ব্যস্ততার পরে নৈশীর রুমে যেতে অনেকটা রাত হয়ে গেল। সারজিম খাটের একপাশে পা ঝুলিয়ে বসে অপেক্ষা করছিল ওর জন্য। নৈশী এসে দাঁড়াতেই ওকে টেনে কোলের উপরে বসালো সারজিম,
“আজকে এত কাজ করতে কষ্ট হয়েছে খুব, তাই না?”
“তা কিছুটা হয়েছে।”
“এত কাজ না করলেই হতো। বাসায় যারা আছে সবাই হাতে হাতে করত।”

“অদ্ভুত কথা বলো তুমি। বাসার গেস্টদের হাতে কাজ ছেড়ে দিয়ে আমি রুমে এসে বসে থাকতাম? কী বলত সবাই মনে মনে? তাছাড়া আমি এই বাড়ির বড় পুত্রবধূ। আমার একটা দায়িত্ব আছে তো।”

সারজিম মিটিমিটি হেসে তাকিয়ে থাকল নৈশীর দিকে। নৈশী অপ্রস্তুত স্বরে প্রশ্ন করল, “কী দেখছ এভাবে?”
“দেখছি আমার দায়িত্বশীল বউকে। আর ভাবছি।
“কী ভাবছ?”
“ভাবছি এর চমৎকার একটা মেয়েকে কীভাবে খুব সহজেই আল্লাহ আমাকে পাইয়ে দিলেন। অপেক্ষা করতে করতে শেষমেষ মনে হয়েছিল তোমাকে বোধহয় হারিয়েই ফেলছি। ভেবেছিলাম আমার চোখের সামনে থেকেই হয়তো অন্যকারও হয়ে যাবে তুমি৷ তবুও আশা ছাড়িনি। আমি সবসময় আল্লাহর কাছ একটা কথাই বলতাম জানো।”

কথাগুলো বলতে বলতে সারজিম ঘনিষ্ঠ হলো আরও। শরীরের ভার ছেড়ে দিয়ে মোহগ্রস্থ স্বরে প্রশ্ন করল নৈশী, “কী কথা?”

“আমি বলতাম, আল্লাহ এই মেয়েটি যদি আমার তাকদীরে থাকে তাহলে তুমি তাকে পাইয়ে দাও আমাকে, আর যদি সে আমার ভাগ্যে না থাকে তাহলে আমার হৃদয় থেকে মুছে দাও তাকে। এই প্রার্থনার পরেও তোমাকে আমি ভুলতে পারতাম না। অবশেষে দেখ, আমি ঠিক পেয়ে গেলাম তোমাকে।”

এবার আর নৈশী কোনো কথা বলল না। মাথা ঘুরিয়ে চট করে একটা চুমু দিল সারজিমের ঠোঁটে। ঠিক পরের সেকেন্ডে একই কায়দায় পালটা চুমু দিল সারজিম। তারপর বলল,
“তোমার বোধহয় খুব ক্লান্ত লাগছে নৈশী। কয়েকবার দেখলাম বসে নিজের পায়ে হাত দিচ্ছ। পা কি খুব বেশি ব্যাথা করছে? আমি ম্যাসাজ করে দেই?”

নৈশীর সত্যিই বড্ড ক্লান্ত লাগছিল, কিন্তু সংকোচে কিছু বলতে পারছিল না সারজিমকে। ও হেসে বলল, “পা ম্যাসাজ করতে হবে না। কিছুক্ষন ঘুমালেই ঠিক হয়ে যাবে। তুমি শুধু আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দাও, কবিতা পারো?”

“মায়ের কাছে একবার শুনেছিলাম, তুমি কবিতা পছন্দ করো খুব। এরপর মাঝেমধ্যে আমিও পড়তাম দুই একটা। খুব একটা খারাপ লাগত না। তবে তোমার মতো এতটা ভালো আবৃত্তি করতে পারি না আমি।”

“যা পারো তাতেই চলবে। চাইলে তুমি এখন আমাকে একটা কবিতা শোনাতে পারো। তাহলে কিছুটা ফ্রেশ লাগবে আমার।”

সারজিম হেসে আনাড়ি গলায় বলতে শুরু করল,

“তােমায় আমি দেখেছিলাম ব’লে
তুমি আমার পদ্মপাতা হ’লে;
শিশিরকণার মতন শূন্যে ঘুরে
শুনেছিলাম পদ্মপত্র আছে অনেক দূরে
খুঁজে-খুঁজে পেলাম তাকে শেষে।

নদী সাগর কোথায় চলে ব’য়ে…”

সারজিম বলে চলেছে। নৈশী শুনছে মন্ত্রমুগ্ধের মতো। এই কবিতার আবৃতি ইন্টারনেটে আরও বহুবার শুনেছে নৈশী। নিঃসন্দেহে তারা সবাই আবৃতিতে অনেক পটু ছিল। কিন্তু তবুও সারজিমের কন্ঠে কবিতাটা শুনে মনে হলো, এত ভালো আবৃত্তি এর আগে কখনও শোনেনি ও। কবিতার প্রত্যেকটা লাইনেই যেন নিজের মনের কথাগুলো বলে দিচ্ছিল। সেই হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ নৈশীর হৃদয়ে তৃপ্তি এনে দিচ্ছিল। বিছানায় শুয়ে সারজিমের নগ্ন বুকের সাথে লেপ্টে গেল নৈশী৷ পরম নির্ভরতার শান্তিতে একসময় গভীর ঘুমে তলিয়ে গেল ও।

১৯.
জানুয়ারির কনকনে শীত এখন৷ শীত আসলেই প্রবল আলস্য জেঁকে ধরে জ্যোতিকে। সন্ধ্যে নামলেই ইচ্ছে করে লেপের উষ্ণতায় ডুবে গিয়ে একটা লম্বা ঘুম দিতে। আবার সকাল পেরিয়ে দুপুর হয়ে গেলেও বিছানা ছেড়ে উঠতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু এবার শীতে আর আরাম করা হয়ে উঠছে না জ্যোতির। পরীক্ষা কড়া নাড়ছে দরজায়৷ দিনরাত চব্বিশ ঘন্টা তাই বই নিয়ে বসে থাকতে হয়৷ একটু এদিকে সেদিক হলেই শুরু হয়ে যায় মায়ের চিৎকার চ্যাঁচামেচি। এই যে এখন রাতের খাবার খেয়ে লেপের নিচে গভীর ঘুমে তলিয়ে যাওয়ার কথা ছিল ওর, অথচ তার বদলে কিনা বই পড়তে হচ্ছে।

সামনে বই নিয়ে একা একাই কথা বলছিল জ্যোতি,
“ধুর, ছাতার পড়াশোনা। আর ভালো লাগে না৷ বিয়ে হয়ে গেছে, এখন সংসার করব, বাচ্চা পয়দা করব, সময়ে অসময়ে স্বামীর সাথে আদর সোহাগ করব। তা না করে এই বই নিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে। এতই যদি পড়তে হবে, তাহলে বিয়ে করে লাভটা হলো কী?”

“ইশ! খুব ইচ্ছে না আদর সোহাগ পাওয়ার। আয়, আমি তোর মনের আশা পূরণ করে দিই।”

পেছনে সাব্বিরের গলা শুনে জ্যোতি তড়াক করে লাফিয়ে উঠে মাথা ঘুরিয়ে তাকাল। ততক্ষনে সাব্বির দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে দিয়েছে।

জ্যোতি কোনো জবাব না দিয়ে তড়িঘড়ি করে আবার বইয়ের দিকে তাকাল। যেন তার সকল মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু এখন শুধু ওই বইটাই।

সাব্বির এসে ওর মুখোমুখি বসে বইটা ঠাস করে বন্ধ করে দিল। জ্যোতি বুঝে গেল পরবর্তী অনেকটা সময় ওকে পার করতে হবে সাব্বিরের সুখময় অত্যাচা /র সহ্য করে করে। এই ছেলের লজ্জা শরমের বালাই নেই মোটেও। জ্যোতি বারবার বারণ করেছে কয়েকদিন পরপর এমন হুটহাত রাতের বেলা এসে হাজির না হতে। পরে সকালবেলা বাবা, মায়ের সামনে লজ্জায় পড়তে হয়। কিন্তু এই ছেলেকে সেটা কে বোঝাবে। যখন জ্যোতি বুঝতে পারল এভাবে বলে কাজ হবে না, তখন সাব্বিরকে বলেছিল বাসার সামনে এসে কলিংবেল না চেপে যেন জ্যোতিকে কল করে। তাহলে মায়ের সামনে অন্তত বিব্রত হতে হয় না। কিন্তু এই মহাফাজিল ছেলে সেই কথা শুনলে তো। রোজ ইচ্ছে করে এসে কলিংবেল দেবে৷ তারপর মা গিয়ে দরজা খুললে তাকে সুন্দর করে সালাম দিয়ে কুশলাদি জিজ্ঞাসা করে তার সামনে থেকেই জ্যোতির রুমে এসে ঢুকবে।

জ্যোতি দুহাতে কোমরে রেখে ঝগড়ার স্টাইলে বলল, “তোমাকে না চাচি বারণ করেছে, আমার পড়ার সময়ে বিরক্ত না করতে। তারপরেও কথা শুনছ না। দাঁড়াও চাচিকে এক্ষুনি কল করে জানাচ্ছি।”

সাব্বির বিছানায় আয়েশ করে বসে বলল, “দে তো দেখি কল।”

হাতের মোবাইলটা বিছানায় ছুড়ে মারল জ্যোতি। এই ছেলের মাথায় বুদ্ধি ঠাসা। ঠিক বুঝে গেছে যে জ্যোতি কল করবে না৷ আর যাই হোক, শ্বাশুড়িকে তো আর কল করে বলা যায় না যে তার ছেলে রোমান্স করতে এসেছে।

সাব্বির মুখে হাসি ঝুলিয়ে জ্যোতির কাছে এগিয়ে গেল। তারপর আচমকা হ্যাচকা টানে বিছানায় ফেলে দিল ওকে।
“অনেক হয়েছে তোর নাটক। আর সময় নষ্ট করা সম্ভব না আমার পক্ষে।”

সাব্বিরকে থামানোর নতুন কোনো বাহানা শুরু করতে যাচ্ছিল কেবল জ্যোতি। কিন্তু সাব্বির ওকে সেই সুযোগ দিল না আর।

দিনগুলো চলতে লাগল এভাবেই। জ্যোতির হাজার বারণ স্বত্বেও সাব্বিরের আনাগোনা বাড়তে লাগল শ্বশুড়বাড়িতে। এর ফলাফলও মাস দুয়েকের মধ্যেই পাওয়া গেল হাতেনাতে। সেদিন ফজরের নামাজ আদায় করতে ঘুম থেকে উঠেই শরীরটা কেমন একটা লাগছিল জ্যোতির৷ সকালে নাস্তার টেবিলে খেতে বসেও আবার উঠে বেসিনের দিকে ছুটল ও৷ সায়রা বানুর সন্দেহ হল সাথে সাথেই। তিনি জ্যোতিকে সন্দেহের বশে প্রশ্নটা করলেন৷ জ্যোতির বুকের ভেতরটা ধ্বক করে উঠল মায়ের প্রশ্নে। পড়াশোনার চাপে এবার খেয়াল করাই হয়ে ওঠেনি। যেই তারিখ থেকে মাসের ওই বিশেষ দিনগুলো শুরু হয় সেটা তারিখ পার হয়ে গেছে অনেক আগেই।

সায়রা বানু মেয়েকে নিয়ে ছুটলেন টেস্ট করাতে। তারপর ওখান থেকে রিপোর্ট নিয়ে বাসায় না গিয়ে সরাসরি আফরোজা বেগমের কাছে গেলেন। আফরোজা বেগম সব শুনে খুশি হলেন খুব। তার বাউন্ডুলে ছেলেটাও অবশেষে বাবা হতে চলেছে।

বাসার মধ্যে একটা আনন্দের রোল পড়ে গেল জ্যোতিকে নিয়ে। নৈশী সাথে সাথেই সারজিমকে অফিসে ফোন করে খবরটা দিল। শুধু সাব্বিরই কিছু জানল না। সে অন্যান্য দিনের মতোই অফিস থেকে ফিরল রাতে।

নৈশী দরজা খুলে দিয়ে মিটিমিটি হাসল সাব্বিরকে দেখে। সাব্বির ভ্রু উঁচিয়ে প্রশ্ন করল, “ব্যাপারটা কি ভাবি? হাসছ কেন?”

“এমনি।”

ব্যাপারটা সন্দেহজনক মনে হলেও আর কোনো প্রশ্ন করল না সাব্বির। নৈশীকে পাশ কাটিয়ে বাসার মধ্যে ঢুকে সোফায় বসে ও বলল,
“এক গ্লাস পানি দাও তো, খুব ক্লান্ত লাগছে।”

নৈশী পানির সাথে একটা বাটিতে মিষ্টিও নিয়ে এলো। সাব্বির প্রশ্ন করল, “হঠাৎ মিষ্টি কেন?”
“আগে খাও, তারপর বলছি।”
“সাব্বির একটা মিষ্টি তুলে নিল।”

“একটা কেন? আরেকটা নাও।”
“আচ্ছা নিলাম, এবার তো বলো।”
“আমার বলাটা মনেহয় ঠিক হবে না। তুমি বরং জ্যোতির থেকে জেনে নিও।”
“কী যে হেঁয়ালি শুরু করেছ তুমি।”
নিজের রুমে যেতে যেতে জ্যোতিকে কল করল ও,
“এই জ্যোতি, ব্যাপার কী রে? নৈশী ভাবি জোর করে মিষ্টি খাওয়ালো, কারণটা কী?”

“আমি বলতে পারব না।” এতটুকু বলেই জ্যোতি ফট করে লাইন কেটে দিল। সাব্বিরের মেজার গেল চড়ে। এর কিছুক্ষন করেই মেসেঞ্জারের টুংটাং শব্দে ইনবক্স ওপেন করল ও। প্রেগন্যান্সি টেস্টের রিপোর্টের ছবি তুলে পাঠিয়েছে জ্যোতি। সেই রিপোর্ট দেখে সাব্বিরের রাগটা উবে গেল হঠাৎ। আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে গেল মন। ইচ্ছে হলো এক্ষুনি উড়ে উড়ে জ্যোতির কাছে চলে যেতে। সাব্বির ফ্রেশ হয়েই ছুটল শ্বশুড়বাড়ির উদ্দেশ্যে।

সারজিমের সাথে ওর দেখা হলো সিঁড়িতে। ওকে দেখে প্রশ্ন করল সারজিম, “কই যাচ্ছিস।”
“জ্যোতিদের বাসায়।”
“একটু দাঁড়া।”

সাব্বির দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করল, “কিছু বলবে?”
“হ্যাঁ।”
সারজিম এগিয়ে গিয়ে এক হাজার টাকার দুটো নোট গুজে দিল সাব্বিরের বুকপকেটে।
“যাওয়ার সময় মিষ্টি কিনে নিয়ে যাস। এখন যা।”

সাব্বির মিষ্টি কিনে ছুটল জ্যোতিদের বাড়ির উদ্দেশ্যে। বাবা হওয়া স্বপ্নে বিভোর হয়ে আছে তখন ও।

বাবা হওয়ার সুপ্ত বাসনা সব পুরুষদের মনেই থাকে বোধহয়। সারজিমও তার সেই ইচ্ছের কথা প্রকাশ করল নৈশীর কাছে, “তোমার কী মনে হয় নৈশী। আমাদেরও কি এবার কিছু ভাবা উচিৎ?”
“কোন ব্যাপারে বলোতো?”
“এই যে পরিবারে আরও একজন ক্ষুদে সদস্য আনার ব্যাপারে।”

নৈশী হাসল চমৎকার। সারজিমের দিকে এগিয়ে গিয়ে বলল, “আমি একমত তোমার সাথে। চাইলে চেষ্টাটা তুমি এখন থেকেও শুরু করে দিতে পারো।”

সারজিম ওর একটা হাত টেনে ধরল, “তুমি যখন বলছ, হয়ে যাক তাহলে।”

ওদের দিন কাটতে লাগল হাসি আনন্দে। কিন্তু তখনও ওরা জানত না সামনের দিনগুলোতে ওদের জন্য ঠিক কী অপেক্ষা করছে।

(চলবে ইনশাআল্লাহ)