নরপিচাশ ফুফি পর্ব-০৭

0
861

#নরপিচাশ_ফুফি
#পর্ব_৭
#লেখক_আরিয়ান ✍️


।।

আরিয়ান তখন বলল আম্মা কিছু হয় নাই। আমি জানি আরিয়ান তুই কখনো মিথ্যা বলিস না । বৌমা কিছুক্ষণ আগে কি বলছিল একটু বলবি? তামান্না কি করেছে সত্যি করে বলবি?

—আরিয়ান তখন না বলে পারলো না তার মেয়ের এত বড় সর্বনাশটা তার ছোট বোন করেছে।
আমার কিভাবে যে তোমাকে বলি আমি বুঝে উঠতে পারছি না। আমার মনে হয় তোমাকে বলাটা খুবই জরুরী যেহেতু এত বড় একটা সমস্যা আমাদের মেয়ে তনুর সাথে ঘটেছে। অবশ্যই তোমাকে বলা উচিত।
আরিয়ান তখন সবকিছু খুলে বলতে লাগল তার আম্মাকে তুমি হয়তো বা জানো না আম্মা এই ঘটনাটা সাথে জড়িত আর কেউ না আমারই ছোট বোন তামান্না।

” আম্মা আমার এই কথাটা শুনে মনে হলো আকাশ থেকে বিদ্যুৎ চমকানোর মতন চমকে উঠল। কি বলিস আরিয়ান তোর মাথা ঠিক আছে?
আরিয়ান তখন বলল হ্যাঁ আম্মা আমার সবকিছু ঠিক আছে। আমিও প্রথমে বিশ্বাস করতে চাইছিলাম না যখন তোমার নাতনি তনু ওর আম্মুকে বলে।
এবং ওর আম্মু যখন আমাকে বলে আমিও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।

®যে বোন পর্দায় চলে এবং মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতেছে সেই বোন কিভাবে এই ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে। ঠিক তোমার মতন আমিও চমকে উঠেছিলাম।
আচ্ছা আরিয়ান সবকিছু খুলে বলতো আমাকে?
আম্মা তুমি তো ভালোই জানো আমাদের রুম টোটাল তিনটা।

একটা রুমেতে আমরা থাকি একটা রুমে তো তোমরা এবং একটা রুমে তামান্না।
যেহেতু তনুর বয়স ৬ বছর এজন্য আমাদের সাথে তনু কে ঘুমাতে নেই না। তার জন্য তামান্নার সাথে ঘুমাতে যাইতে হয় তনুর।

আর তনু নম্র এবং ভদ্র একটা মেয়ে কারো সাথে কখনো ঝগড়া ফ্যাসাদ করে না এবং আমাদের মেয়ে তো কখনো মিথ্যা কথা বলে না। যা বলে সরাসরি বলে। যখন তামান্না তনুর সাথে এ ধরনের কাজটা করে। কিছুদিন চুপ করে থাকে তনু। এ কথাটা কাউকে বলে না।

যখন তনুর সাথে বেশি হতে লাগলো তখনই ওর আম্মু অন্তরার কাছে সবকিছু খুলে বলল।
আর ওর আম্মু আমাকে সব কিছু বলল। বলার পরে আমিও অন্তরাকে বললাম। আচ্ছা হয়তোবা কোন ভুলক্রমে করতে পারে এটা নিয়ে কাউকে বলিও না। ঠিক অন্তরা কাউকে বলে নাই। আপনারা রিয়েল লেখক এর পেজে ফলো দিয়ে রাখবেন তাহলে গল্প খুঁজতে আপনাদের কষ্ট হবেনা লেখক মিস্টার আরিয়ান এর পেজ 👉@ * নিস্তব্ধ শহর)*আর এরই মধ্যে এত বড় একটা অঘটন ঘটে গেল আমাদের সাথে, আরিয়ান যখন এই কথাগুলো বলছিল নিশ্চুপ হয়ে গেল। একদম শীতল বরফের মতন হইয়ে গেলো।
শুধু এইটুকু বলতে লাগলো আমারই এক পেটে কিভাবে এ ধরনের নর*পিচাশ মেয়ে জন্ম নিল।

‘-কত আদর যত্ন করে বড় করেছি এতটা অভাব হয়েছে কখনো বুঝতে দিস নি তোরা এবং আমি। যখন যেটা চেয়েছে তখন সেটা দিয়েছি। আর আমার মেয়ে তামান্না এ ধরনের ঘটনা কিভাবে ঘটাতে পারে এটা আমি কখনো বিশ্বাস করতে পারছি না আরিয়ান।

সেম কথা আম্মা আমিও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আর তোমরা তো ভালোই জানো আমাদের ছোট্ট মেয়ে কখনো মিথ্যা কথা বলে না।

‘-সেটা ভালো করে জানি আমার নাতনি কখনো মিথ্যা কথা বলতে পারে না। আমার নাতনী তনু ঠিক আমার মতনই হয়েছে সব সময় সত্য কথা বলেন।

আচ্ছা এর বিচার অবশ্যই হবে আমার নাতনি আগে জ্ঞান ফিরুক তারপরে কি করতে হয় সেটা আমি অবশ্যই করবো।

°°আরিয়ান এবং অন্তরা আমার মুখটা দেখে অনেকটা ঘাবড়ে গেল। আর ঘাবড়ে যাওয়ারই কথা যে মেয়ে পর্দা করে এবং মাদ্রাসায় পড়ে সেই মেয়েটা কিভাবে এ কাজটা করতে পারে কেউ বিশ্বাস করতেই পারবে না।

_এই কথাটা শোনার পরে আম্মার চোখ দিয়ে অঝোরে পানি আসছে। আর বলতে লাগলো এমন মেয়ে যেন আর কারো পেটে না হয়।

~ তখন আরিয়ান এবং অন্তরা দুজনে আমাকে বোঝাতে লাগলেন আম্মা তুমি টেনশন করো না। হয়তোবা ভুলও করতে পারে তামান্না। কারণ এখন ডিজিটাল যুগ বিভিন্ন বন্ধুদের সাথে চলাফেরা করে এমন নষ্ট হতে পারে।

‘-আমিও ভালো করে চিনি আমার বোন তামান্না কেমন ছিল। অবশ্যই এর পিছনে কোন না কোন মানুষের হাত আছে। আর অবশ্যই আমরা এটা বের করব। শুধু এইটুকু ভাবো যে তামান্না কখনো ফোন চালাতে চাইতো না। শুধু বলতো ভাইয়া ফোন আমি কি জন্য চালাবো।

আমি জোর করে ফোনটা কিনে দিয়েছিলাম তোমার মনে আছে আম্মা?
আম্মা তখন বললো হ্যাঁ আরিয়ান আমার মনে আছে।

-এসব কথা বলতে বলতে কখন যে সকাল হয়ে গেল আমরা কেউ বুঝতে পারলাম না। আর এই মুহূর্তে কিভাবে ঘুম আসে সেটা তো বুঝতেই পারছেন। আদরের মেয়ে যখন অপারেশন থিয়েটারে থাকে কেউ কি ঘুমাতে পারে।!

ঠিক আমরা কেউ ঘুমাতে পারছিলাম না। সকাল আবার পূর্বে শালিক পাখির কিসির-নীতির শব্দ সরাসরি কানের মধ্যে আসতে লাগল। শুধু মনে মনে ভাবতে লাগলাম আমার মেয়ের জ্ঞানটা কখন ফিরবে।!

এটা বলতে বলতেই নার্স আমাদেরকে ডাক দিলেন।
বলেন তনুর পরিবারের লোকজন আপনারা আসতে পারেন এখন। এটা বলার পরপরই অন্তরা ছুটে চলে গেল তনুর কাছে যাইয়া দেখতে পাই তনু অনেক নার্ভাসের সাথে কথা বলছে আম্মু। আমি এখানে কেন?!

অন্তরা তখন বলল আম্মু কিছু হয় নাই তোমার অনেক ব্যথা পাচ্ছিল এই কারণে হসপিটালে আনা। তুমি খুবই দ্রুতভাবে সুস্থ হয়ে পড়বে। সবাইকে দেখতে পেয়ে তনু অনেক খুশি হল। তার দাদি কেউ বলতে লাগলো দাদি আমি কি ঠিক আছি?



” দাদি কান্না করতে করতে বললেন আমার লক্ষী বোনটা তোর কিচ্ছু হয় নাই। আমরা তো তোর পাশে আছি। দাদিমার কান্না দেখে তনু বলতে লাগলো দাদি তুমি কান্না করো না দেখবে আল্লাহ আমার অতি দ্রুত সুস্থ করে দেবেন।!”

দাদীমা তখন বললেন আমার পা*গলী একটা বোন।

‘-তখনই তনু বলতে লাগলেন দাদীমা ফুপিকে দেখছি না?

‘- ফুফি কোথায় ফুফি কি হসপিটাল আসে নাই?
দাদি বিড়বিড় করে শুধু বলতে লাগলো ঐরকম কুলা*ঙ্গা*র সন্তান না আটাই ভালো এই হসপিটালে।
তনু বললো দাদি তুমি কিছু বলছো না কেন ?
না দিদিভাই এখনো তোমার ফুপি আসে নাই। তবে চলে আসবে।

তখনই তনুর এই কথা শুনে অন্তরা রেগে বললেন তোমার ফুপির নিয়ে এত চিন্তা করতে হবে না। ভুলে গেছো তোমার সাথে কি হয়েছে? আজকে এই যে তুমি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়তেছ কার জন্য?
তোমার গুণ ধর ফুফি তামান্নার জন্য তাই আমি যেন কোন ভাবে তার নামটা না শুনতে পায়।

অন্তরা যখন এ কথাটা বললেন তখন শাশুড়ি আম্মাও রেগে বললেন সত্যিই তো বলেছে তোমার আম্মু দিদি ভাই।

আজকে থেকে মনে করবা তোমার কোন ছবি নাই। অনেক নরম করে এবং কান্নার আওয়াজে বলতে লাগলেন তনুর দাদি।

কারণ একটা সন্তান যত খারাপ কাজে লিপ্ত হোক না কেন মায়ের মন সবসময় কান্না করবে এটাই স্বাভাবিক।।
এসব কথা যখন আমরা বলতেছিলাম তখনই ডক্টর প্রবেশ করলেন। আর বলতে লাগলেন আপনারা কি শুরু করছেন। কিছুক্ষণ আগেই তনুর অপারেশন হয়েছে ভুলে যাবেন না।

এখন পেশেন্টের সাথে বেশি কথা বলবেন না। পেশেন্টের কোনভাবে টেনশন এবং কষ্ট দিয়ে কথা বলবেন না।
এমনিতে এত ছোট বাচ্চা তারপরও এ ধরনের অপারেশন আমি কখনো করি নাই। আজকেই আমি প্রথম করলাম এই ধরনের অপারেশন। অপারেশন করার সময় মেয়েকে অজ্ঞান করে নিয়েছিলাম তবুও যে কান্না করছিল। এর আগে কখনো কোন পেশেন্টকে দেখি নাই। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ করবো পেশেন্টের সাথে বেশি জোরে কথা বলবেন না।
যদি কোনক্রমে আবার অজ্ঞান হয়ে যায় তাহলে পেশেন্টের জ্ঞান ফেরাতে অনেক কষ্ট হয়ে যাবে।

ডক্টরের এসব কথা শুনে আমরা সবাই চুপ হয়ে গেলাম। অন্তরা তখন ডক্টর কে বলতে লাগলেন ম্যাডাম আমার মেয়েকে কবে নিয়ে যেতে পারি আমাদের বাড়িতে?
ডক্টর বললেন।!!

#চলবে?