তোমাকে প্রয়োজন পর্ব-৪+৫

0
1315

তোমাকে_প্রয়োজন
আরোশি_ইসলাম_তিশা
পর্ব : ৪

সবাই আদ্রিয়ান আয়মানের জন্য ওয়েট করছে।

“পর পর পাচঁটি গাড়ি এসে থামলো”। তার মধ্যে থেকে একটি গাড়ি থেকে নেমে এলো ছাব্বিশ বয়েসের সুদর্শন এক যুবক। পরনে নীল সুট, হাত তার ব্যান্ডের ঘড়ি, চুল গুলো জেল দিয়ে সেট করা, কালো সানগ্লাস পড়া।

দূর থেকে ছেলেটাকে দেখে মেয়েরা চোখে যেন গিলে খাচ্ছে।

উষা আর মেঘ ওয়াশরুমে থেকে বের হয়ে এসে দেখল। চিপ গেষ্ট এসে পড়ছেন। নীল এসে তাড়া দিচ্ছিল মেঘকে চিপ গেষ্টকে ফুলের মালা দিয়ে স্বাগত জানাবে।

” উষা বলল চল মেঘ আদ্রিয়ান আয়মান এসে পড়েছে দেখে আসি। হু! কিন্তু মেয়েরা যেভাবে লোকটাকে চারদিক থেকে ঘিরে দরেছে দেখা যাচ্ছে না তো?

চল সামনে গিয়ে দেখে আসি। হুট করে এসে নীল মেঘের হাতে ফুলর মালা দরিয়ে দিয়ে চলে গেল।

প্রিন্সিপাল স্যার আদ্রিয়ান আয়মান কে স্বাগত জানাচ্ছে। ছেলেময়েরা গেষ্টদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছে। আদ্রিয়ান আয়মান ফুল দিয়ে স্বাগত জানার কথা মেঘের। একের পর একজন গেষ্ট আসছে তাদের গলায় ফুলের মালা পরানো হচ্ছে। এবার পালা মেঘের। যেই না মেঘ মালা পড়াবে সামনে থাকা ব্যাক্তির দিগে থ! মেরে দাড়িয়ে রইলো।

কীরে মালাটা পড়িয়ে দে মেঘ? উষা।

“উষার কন্ঠে হুশ আসলো মেঘের ”

তার সামনে দাড়িয়ে আছে স্বয়ং আদ্রিয়ান আয়মান আদ্র।

” মিষ্টার আদি ( প্রিন্সিপাল) আমি কী এখানেই দাড়িয়ে থাকবো?

” মেঘ ফুলের মালাটা পড়িয়ে দেও স্যারকে”

” হুম ”

মেঘ মালাটা আদ্রকে পড়িয়ে দিল।

“আদ্র মেঘকে কানে কানে ফিসফিসিয়ে বললো সেই আমার গলায় তোকে মালা পড়িয়ে দিতে হলো ”

” মেঘের কথাটা স*হ্য করতে পারলোনা মেঘ ”

গেষ্টদের নিয়ে বসানো হলো। অনুষ্ঠান শুরু হলো একে একে সব অথিতিকে কিছু বলার জন্য বলা হলো। খুব সুন্দর করে অনুষ্ঠান শেষ হলো।

” সেদিন উষার আর নীলকে প্রোপজ করা হলো না। ফিরে আসলো উষা ”

” আজ মেঘের মনটা খা*রা*প কিন্তুু কীসের জন্য তার জানা নেই ”

“অনু এসে বলল মেঘ আজ ফুপি আর আদ্র ভাইয়া আসবেন”

কী?

হ্যাঁ।

কখন?

এই একটু পর।

আমি নিচে গেলাম তুই রেডি হয়ে নিচ আয়। মা তোকে ডাকছে।

হু আসছি তুই যা।

আদ্র এই আদ্র তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আয় বাবা। দেড়ি হয়ে যাচ্ছে তো?

আসছি মম।

আজ আদ্র খুব সুন্দর একটা নীল রঙের পান্জাবি পড়েছে। দেখতো খুব সুন্দর লাগছে।

কীরে মেঘ ওখানে দাড়িয়ে থাকবি নাকি এদিকে আয়।

আচ্ছা মা! আদ্র ভাইয়া কেন আসছেন?

এটা কেমন কথা মেঘ। এতোদিন পর আদ্র দেশে ফিরেছে আর ওর মামার বাড়িতে আসবে না?

আমি সেটা বলছি না। ওনি তো কোথাও যাওয়া পছন্দ করেন না।

হুম জানি।

তোর বাবা ফোন করে আসতে বলেছেন। আর আদ্রের
সাথে জানিশ তো তোর বাবা কতোটা ফ্রি? তোর বাবার কথা ফেলতে পারেনি।৷

ওহ্ তাই বলো। আচ্ছা বাবা কোথায়?

তোর বাবা বাজারে আদ্রর জন্য তার পছন্দের মিষ্টি আনতে গেছেন।

“ওহ্”

মেঘ অনুকে বল আজ যেন সে শাড়ি পরে।

কেন? মা

সেটা বলবো তবে পরে

মেঘ চিন্তায় পড়ে গেল । হঠাৎ অনু শাড়ি পড়বে আবার ফুপি আর আদ্র ভাইয়া ও আসছেন।

ব্যাপারটা কী?

চলবে,,,,,,

তোমাকে_প্রয়োজন
আরোশি_ইসলাম_তিশা
পর্ব : ৫

মেঘ অনুকে শাড়ি পড়তে সাহায্য করছিল। হঠাৎ করে কলিংবেলের আওয়াজ শুনে অনু মেঘকে বলল। যা গিয়ে তো মেঘ ফুপিরা হয়তো চলে এসেছেন। দরজাটা খুলে দিয়ে আয়।

মেঘ দরজা খুলতেই বিস্মিত নয়নে তাকিয়ে রইলো। সামনে আদ্র একটা নীল রঙের পাঞ্জাবি পরে দাড়িয়ে আছে। হাতে ব্রান্ডের ঘড়ি মুখে মৃদু হাসি রেখা টেনে বলল এখানেই দাড়িয়ে থাকবো নাকি ভিতরে আসতে বলবেন।

আদ্র কথায় মেঘ একটু ল*জ্জা পেয়ে বলল না ভেতরে আসুন। ফুপি কোথায়?
মা আসছেন কিছু জিনিস পএ নিয়ে। মেঘ আদ্রকে বসিয়ে রেখে মাকে ডাকতে চলল। মা দেখো আদ্র ভাইয়া চলে এসেছেন। মেঘের মা হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে বললেন ও মেঘ ওখানে শরবতের গ্লাস গুলো আছে নিয়ে আয়। আর দেখতো অনু রেডি হয়েছে কীনা বল তাড়াতাড়ি আসতে।

কেমন আছো আদ্র?

জি মামনি ভালো আপনি কেমন আছেন

এইতো তোমাদের দোয়ায় আছি। তা আপা কোথায়?
মা আসছেন বলল কিছু জিনিস পএ নেওয়ার আছে।
নেও বাবা শরবত টা খেয়ে নেও।
ব্যস্ত হবেন না মামনি।

মেঘ অনুকে শাড়ির কুচি ঠিক করে দিতে দিতে বলল আচ্ছা অনু আজ তুই শাড়ি কেন পড়ছিশ আর আদ্র ভাইয়া যে কীনা জীবনেও তাকে পান্জাবি পড়তে দেখলাম না সে আজ পান্জাবি পড়েছে। ব্যাপার টা কী?

আমি জানি না। মাকে জিজ্ঞেস কর। আচ্ছা মা তোকে যেতে বলছে। তুই যা আমি আসছি।

মেঘের মা আদ্র আর তানিশা আয়মানের সাথে কথা বলছিলেন। মেঘ যেতেই তানিশা আয়মান বলে উঠল কীরে মেঘ কোথায় ছিলি এতোক্ষণ ধরে। এইতো ফুপি অনুকে শাড়ি পড়তে সাহায্য করছিলাম। তানিশা আয়মান মেঘের হাত ধরে তার সাথে বসালেন। আদ্র ফোন টিপছিল। আদ্রর মা বলে উঠলো জানিশ মেঘ তুই যদি অনুর থেকে বড় হতি তাহলে তোকেই আমার ছেলের বই বানাতাম। কিন্তু তুই ছোট অনুর আগে তো তোকে তোর মা, বাবা বিয়ে দিবেন না তাই চাইতেও পারলাম না। তানিশা আয়মানের কথায় মেঘ অবাকের চরম পযার্য় পৌঁছে গেল। তার মস্তিকে কথাগুলো যেন ঠিকমতো পৌঁছালোনা। কী বললে ফুপি কিছু বুঝতে পারলাম না। ভাবি আপনি মেঘকে কিছু জানান নি।

আসলে আপা মেঘকে ওর বাবা জানাতে বারণ করছিলেন অনুর বিয়ের কথা শুনলে হয়তো কিছুতেই রাজি হতো না। বোনকে বড্ড ভালোবাসে। আদ্র এতোক্ষণে মোবাইল থেকে মুখ তুলে মেঘের দিকে তাকালো মেঘের মস্তিষ্কের সাথে যেন মনের দ্বন্দ চলছে।
অনু এসে সবাই কে সালাম জানালো। তানিশা আয়মান অনুকে আদ্রর পাশে বসালেন। দেখি তো দুজনকে কেমন লাগছে।বাহ্ বেশ মানিয়েছে।

মেঘের মা বললেন তা তো বটে। মেঘ যেন কিছু তেই আদ্রর সাথে অনুকে স*হ্য করতে পারছেনা। কেন সে কারণ তার জানা নেই।

আদ্র মাকে বলল মা আমার একটা কল এসেছে আমি একটু কথা বলে আসছি।মেঘ আর ওইখানে বসে থাকতে পারলোনা কেন যেন তার বুকের ভিতর অ*স*হ্য যন্ত্রণা হচ্ছে যার কারণ তার জানা নেই।

মেঘ রুমে আসতেই আচমকা একটা হাত এসে হেচকা টানে তার সাথে জড়িয়ে দরলো।

চলবে,,,,,,,,,,