আমার হয়ে যা_পর্ব- ৮
.
বাস থেকে নেমেই আকাশ সাহেবকে পাওয়া গেল। ঢাকার কাছাকাছি এসেই নূপুর কল দিয়ে তাকে লোকেশন জানিয়ে দিয়েছিল। দেখে নিপাট ভদ্রলোক মনে হলো আমার। এসে নূপুরের সঙ্গে কথা বলে আমার সঙ্গে হাত মেলালেন। জুলফির দিকে কিছু পাকা চুল। গায়ের রঙ শ্যামলা। পরনে টি-শার্ট আর জিন্স প্যান্ট। হাতে কালো ঘড়ি। শহুরে, শিক্ষিত, বড়লোকি একটা ভাব চেহারায় প্রকট। কথা বললে ঝকঝকে দাঁতগুলো দেখা যায়। ভালোই লাগে দেখতে। তার সঙ্গে প্রায়ই নূপুর ফোনে কথা বলে ভেবে আমার ঈষৎ হিংসা হচ্ছে। তবুও এই অনুভূতিকে প্রশ্রয় দিলাম না আমি, নূপুর নিশ্চয়ই আমার হবে। তাছাড়া পেশার প্রয়োজনে উনার সঙ্গে কথা বলে। এরকম তুচ্ছ বিষয় নিয়ে হিংসা মোটেও ভালো নয়। তিনি একটা সিএনজি দাঁড় করালেন। নূপুরকে উঠতে বলে একপাশে দিয়ে তিনি বসলেন গিয়ে। আমি বসলাম আরেক পাশে। এবার আর আমার হিংসাকে সামলে রাখা গেল না। উনি নূপুরের পাশে বসলেন কেন? এটা কেমন কথা? হ্যাঁ এটা ঠিক ঢাকার রাস্তায় শুনেছি সামনের সিটে বসলে পুলিশ ঝামেলা করে। তাহলে আমাকে নূপুরের পাশে দিতে পারতেন না? ইচ্ছা করেই না-কি কাকতালীয়? আমি চুপ করে বসে রইলাম। ওরা দু’জন গল্প শুরু করলো। নানান গল্প। আমার মাথা ধরে যাচ্ছে বকবক শুনে। ভদ্রলোক ড্রাইভারকে একটা হোটেলের নাম বলে সেখানে গিয়ে থামাতে বললেন। মিনিট কয়েক পর এসে সিএনজি থামলো সেখানে। আমি ব্যাগ নিয়ে নামলাম। আকাশ সাহেব নূপুরকে বসে থাকতে বলে নেমে বললেন ‘আপনার জন্য এখানে থাকার ব্যবস্থা করেছি। খাবার আমিই পাঠিয়ে দেবো বাসা থেকে’ তারপর খানিক থেমে বললেন ‘লেখিকা আমার বোনের বাসায় থাকবেন। আপনি আমার সাথেও থাকতে পারতেন, কিন্তু মেলার সময় তো, অনেক লেখক আর পরিচিত বন্ধুবান্ধব এসে ভরে গেছে বাসায়।’
আমি ভদ্রলোককে স্বস্তি দিতে বললাম, ‘না, সমস্যা নেই।’
তিনি আমাকে নিয়ে দুই তলায় গেলেন। রিসিপশন থেকে একটি ছেলে আমাদের সাথে এসে দরজা খুলে দিয়ে গেল। আকাশ সাহেব পুনরায় হাত মিলিয়ে মুচকি হেসে বললেন, ‘এখন যাই তাহলে, লেখিকা একা নিচে।’
– ‘হ্যাঁ যান আপনি।’
‘কোনো অসুবিধা হলে জানাবেন’ বলে তিনি চলে গেলেন। আমি ব্যাগটা রাখলাম টেবিলে। আবাসিক হোটেলের বিবেচনায় রুমটা মোটামুটি ভালো মনে হচ্ছে। আমি হাত-মুখ ধুয়ে এসে শুয়ে দোকানে কল দিয়ে খোঁজ-খবর নিলাম। এরপর মোবাইলে গেইম খেলতে খেলতে ঘুম চলে এলো। ঘুম ভাঙলো নূপুরের কল পেয়ে। আমি রিসিভ করে, ‘হ্যালো’ বললাম। ও ওপাশ থেকে বললো, ‘কিরে ঘুমিয়েছিলি না-কি?’
– ‘হ্যাঁ, তুই ঠিক আছিস? কোনো অসুবিধা হচ্ছে না তো?’
– ‘ধ্যাৎ, আমি ভাবছি তোর অসুবিধা হচ্ছে কি-না। আমি ঠিক আছি। তোকে হোয়াটসঅ্যাপ অনেক মেসেজ দিয়েছি, সিন করিসনি দেখে কল দিলাম।’
– ‘ও আচ্ছা, যাক ঘুমের জন্য অন্তত তোর মতো মেসেজ সিন না করে ফেলে রাখতে পারলাম।’
ওপাশ থেকে মিষ্টি হাসি ভেসে এলো ওর। তারপর বললো, ‘সন্ধ্যা হয়ে গেছে। নিচে গিয়ে চা-টা কিছু খেয়ে আয়।’
আমি সত্যিই মোবাইলের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সন্ধ্যা সাতটা বেজে গেছে।
– ‘হ্যাঁ যাব নিচে, তুই খেয়েছিস?’
– ‘হ্যাঁ।’
– ‘আচ্ছা কাল কখন আমাদের দেখা হবে।’
– ‘তিনটার দিকে তোর হোটেলের সামনে আসব। সেখান থেকে একসাথে চলে যাব মেলায়।’
– ‘আচ্ছা ঠিক আছে।’
‘এখন রাখছি’ বলে নূপুর ফোন রেখে দিল। ওর জন্য আমার ভীষণ খারাপ লাগছে। বোকা মেয়েটি চাইলেই কি আমাকে বিয়ে করে নিতে পারে না? বিয়ে করে নিলে কি এভাবে ওর আরেকজনের বাসায় থাকতে হতো? অচেনা মানুষদের সাথে থাকতে নিশ্চয় অসুবিধা হচ্ছে ওর। বিয়ে হয়ে গেলে আমি ওকে নিয়ে ভালো একটা হোটেলে থাকতাম। আগামীকাল তিনটার আগে কোথাও নিয়ে ঘুরতে যেতাম, এরপর বিকেলে মেলায়। ওর কোনো অসুবিধা হতে দিতাম না। আমি নিচে গিয়ে কফি খেয়ে একটা পানির বোতল নিয়ে ওপরে এলাম। রাত দশটার দিকে একটি ছেলে এসে দরজায় নক করলো। আমি খুলে দিতেই সালাম দিয়ে বললো, ‘আকাশ মামা পাঠিয়েছেন। আমি উনার ভাগ্নে। আপনার জন্য খাবার এনেছি।’
ঊনিশ-বিশ বছরের একটি ছেলে হবে। চোখে চশমা। শহরের কমবয়সি ছেলেগুলোরও আজকাল চোখে সমস্যা দেখা দিয়ে দেয়।
– ‘ও আচ্ছা, আসো ভেতরে আসো তুমি।’
– ‘না, আমি আর ভেতরে আসছি না। আপনি খান।’
– ‘টিফিনবক্স নিয়ে যাবে না?’
– ‘না কাল সকালে আরেকটা নিয়ে আসবো আর এটা নিয়ে যাব।’
– ‘বুঝলাম তোমাকে কয়েদিন অনেক কষ্টে ফেলে দিয়েছি।’
সে লাজুক হাসলো। আমি বললাম, ‘তবে ওদের বলবো এই ঝামেলা না করাতে। আমি বাইরেই খেতে পারবো।’
– ‘না না, বাসাও বেশি দূরে না। অসুবিধা নেই। আচ্ছা আমি এখন যাই।’
‘আচ্ছা ঠিক আছে যাও।’ ছেলেটা এরপর চলে গেল।
আমি টিফিন বক্স টেবিলে রেখে দিলাম। পদ্ধতিটা ভালো হয়েছে। যখন ইচ্ছা খেতে পারব। নয়তো ওকে বসিয়ে রেখে খেতে হতো। খানিক পরই নূপুর মেসেজ দিল।
– ‘তোর খাবার নিয়ে গিয়েছে ছেলেটা?’
– ‘হ্যাঁ দিয়ে চলে গেছে।’
– ‘আচ্ছা খেয়ে নে, তুই একা একা বোর হচ্ছিস তাই না?’
আমি রসিকতার ছলে হাসির ইমুজি সমেত বললাম, ‘তোকে ছাড়া তো প্রতিটি মুহূর্তই বোর লাগে আমার।’
ও আমার মেসেজে হা-হা রিয়েক্ট দিয়ে বললো, ‘খুব ফ্ল্যার্টিং শিখেছিস আজকাল।’
আমিও ওর মেসেজে হা-হা দিলাম। অথচ কথাটা আমি হাসির ছলে বললেও মন থেকেই বলেছি। ও পুনরায় বললো, ‘খেয়ে নে, আমি এখন খেতে বসবো।’
– ‘আচ্ছা ঠিক আছে।’
ও চলে গেল অনলাইন থেকে। আমিও খেয়ে নিলাম। খাওয়া-দাওয়া করে রাত সাড়ে বারোটার দিকে শেষবার কেবল ‘শুভ রাত্রি’ বলে মেসেজ দিল সে। আমিও ঘুমিয়ে গেলাম। সকাল নয়টায় ঘুম থেকে উঠে বাইরে গিয়ে নাশতা করলাম। এদিক-ওদিক খানিকক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে ফিরে এলাম হোটেলে। এসে ওকে মেসেজ দিলাম, ‘শুভ সকাল, এখনও ঘুমে?’
সে রিপ্লাই দিল না। অফলাইন দেখাচ্ছে। আমি তবুও মেসেজ দিয়ে রাখলাম, ‘তুই চাইলে কোথাও নিয়ে ঘুরতে যেতে পারি। বিকাল তিনটার দিকে পরে দু’জন মেলায় চলে গেলাম।’
ও মেসের রিপ্লাই দিল দশটার দিকে।
– ‘না থাক, তোর একা ভালো না লাগলে আশেপাশে কোথাও যেতে পারিস। আর না হয় মুভি বা ই-বুক পড়ে সময় কাটা।’
– ‘আচ্ছা ঠিক আছে, কিন্তু আজ তোর এত দেরি হলো কেন ঘুম থেকে উঠতে?’
– ‘রাতে আড্ডা-টাড্ডা দিয়ে দেরি হয়ে গেল।’
– ‘আকাশ সাহেব কি এই বাসায়ই থাকে না-কি?’
– ‘কেন?’
– ‘না এমনিই।’
– ‘উনি ছিল, আরও কয়েকজন এসেছিল। তাই আরকি আড্ডা দেরি হয়ে গেল।’
আমি আর কথা বাড়ালাম না। তবুও কেমন মন খারাপ হয়ে গেল। যতদূর জেনেছি আকাশ সাহেবের স্ত্রী নেই। যদি উনি ওকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে দেয় তার জন্য কি নূপুর ফিরিয়ে দেবে উনাকে? নিশ্চয় দেবে, নূপুর তো বুঝে আমি ওকে কতটা চাই। এগারোটার দিকে ছেলেটি আবার খাবার নিয়ে এলো। রাতের টিফিন বক্স নিয়ে চলে গেল। আমি গোসলটা করে খেয়ে নিলাম। দুইটার দিকে নূপুর মেসেজ দিয়ে রেডি হয়ে থাকতে বললো। আমি তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে গেলাম৷ আড়াইটার সময় কল দিয়ে বললো ‘আমি হোটেলের নিচে আছি তাড়াতাড়ি চলে আয়।’
আমি রেডিই ছিলাম। তাড়াতাড়ি পারফিউম দিয়ে মানিব্যাগ মোবাইল পকেটে পুরে বের হয়ে গেলাম। নিচে এসে দেখি ও মাস্ক পরে রিকশায় বসে আছে। পরনে শাড়ি। চুলগুলো ভীষণ সুন্দর করে বেঁধেছে।
‘আয় বস।’
আমি ওর পাশে উঠে বসলাম। বসতেই আমার মনটা অদ্ভুত রকম ভালো হয়ে গেল। পৃথিবীর রঙ, আলো-বাতাস সবই যেন সুন্দর লাগছে। আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘মাস্ক পরে কেন?’
– ‘খুব বেশি পরিচিতি না থাকলেও লেখক-লেখিকাদের জন্য ঢাকা ভিন্ন ব্যাপার। এখানে কেউ না কেউ চিনে ফেলবেই।’
– ‘তাতে অসুবিধা কি?’
– ‘এমনিই কেমন অস্বস্তি লাগে।’
– ‘তোকে মাস্ক পরা অবস্থায়ও কী সুন্দর লাগে নূপুর।’
ও ফিক করে হেসে বললো, ‘তুই আর আকাশ সাহেব হচ্ছিস পাগল। তোদের কাছে আমার সবই ভালো লাগে।’
কথাটি যেন আমার বুকে একদম তিরের মতো এসে বিঁধলো। আহত নয়নে তাকিয়ে আমি বললাম, ‘উনারও আমার মতো ভালো লাগে?’
– ‘বড়ো অবাক হয়েছিস যে? তারমানে আমি সবার চোখে সুন্দর লাগার মতো না, তাইতো?’
– ‘ধ্যাৎ আমি তা বলিনি।’
– ‘সেটাই, নয়তো অবাক হতি না। উলটো বলতি সুন্দরকে তো সবার চোখে সুন্দর লাগবেই।’
একটু আগের যে মেঘ আমার আকাশে জমেছিল। তা যেন ওর কথায় নিমিষেই উধাও হয়ে গেল। সত্যি কথাই তো। ও সুন্দর যেহেতু, আকাশ সাহেবেরও ভালো লাগতে পারে। এখানে আলাদা কিছু তো নেই। আমার ভয় পাওয়াটাই বরং অযৌক্তিক। রিকশা থেকে নেমে আমি ভাড়া দিতে চাইলে ও ধমক দিল। ভাড়া চুকিয়ে সে হাঁটতে হাঁটতে বললো, ‘বেশি বেশি ছবি আর ভিডিয়ো করবি।’
আমি মাথা নাড়লাম। আমাকে নিয়ে খুঁজে খুঁজে স্টল বের করলো সে। গিয়ে দেখি বেশকিছু পাঠক-পাঠিকা জড়ো হয়ে আছে। অবশ্য নূপুর তিনটায় এখানে আসবে পোস্ট দিয়ে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল। সে আসতেই সবাই ছবি আর অটোগ্রাফের জন্য ব্যস্ত হয়ে গেল। আমি দূর থেকে ‘হা’ করে তাকিয়ে আছি। হঠাৎ মেসেজ টিউন বাজলো, ‘কিরে ‘হা’ করে মাইয়াদের না দেখে ছবি তুলতে শুরু কর।’
আমি ওর এই খোঁচা দেয়া মেসেজের প্রতিবাদ না করে তাড়াতাড়ি ছবি তুলতে শুরু করলাম। দীর্ঘ সময় এসব চলতে থাকলো। ওর সঙ্গে বহু মানুষ দেখা করলো, ছবি তুললো, অটোগ্রাফ নিল, আসলো, গেল। মেলা থেকে আমরা সাড়ে পাঁচটার দিকে বের হলাম। রাস্তায় ফুচকা দেখে ওর জন্য নিয়ে বললাম, ‘এখানে তোকে যেকেউ চিনে ফেলতে পারে। কোনো রেস্তোরাঁয় বসে আমি চা খাব তুই ফুচকা।’
সে সম্মত হলো। আমরা এসে একটা রেস্তোরাঁর সামনে রিকশা ছেড়ে দিলাম। গিয়ে বসলাম মহিলাদের কেবিনে। ওকে ফুচকা দিয়ে দুই কাপ চায়ের কথা বললাম। সে ফুচকায় অল্প ঝোল নিয়ে মুখ নিয়ে খেয়ে বললো ‘অমৃত, খেয়ে দেখ।’
ওর খাওয়া দেখে আমার জিভেই জল চলে এলো। আমিও একটা ফুচকা খেয়ে মন্দ লাগলো না। কিন্তু ওর খোঁচাটা এখন মনে পড়ে গেল।
– ‘এই আমি মেয়েদের দিকে কখন হা করে তাকিয়ে ছিলাম?’
– ‘বুঝিনি।’
– ‘মেসেজ কি দিয়েছিলি।’
– ‘ও হ্যাঁ, তা তো ঠিক বলেছি।’
– ‘কী বলছিস! আমি মেয়েদের দিকে “হা” করে তাকিয়ে ছিলাম?’
– ‘হ্যাঁ।’
‘তুই ওখানে ছিলি। তোকে রেখে আমার অন্য মেয়েদের দিকে চোখ যাবে?’ কথাটা মুখ দিয়ে আলগোছে বের হয়ে গেল আমার।
ও ভ্রু-কুঁচকে তাকিয়ে বললো, ‘মানে কী?’
আমি ইতস্তত করে বললাম, ‘সেরকম কিছু না, মানে তাকাতে হলে আমি তোর দিকেই তো তাকাতাম। অন্য মেয়েদের দিকে তাকাতে যাব কেন?’
– ‘আমার দিকে কেন?’
– ‘অন্য মেয়েদের দিকে তাহলে কেন তাকাবো?’
– ‘সুন্দরী মেয়েদের দিকে তাকাবিই তো।’
– ‘তুইও তো সুন্দরী।’
– ‘আমি বিয়াত্তা মেয়ে।’
‘কিন্তু আমার কাছে তোকেই বেশি সুন্দর লাগে’ নিজের আবেগ আর ধরে রাখতে না পেরে বলে ফেললাম। ও খানিকক্ষণ চুপ থেকে বললো, ‘বাদ দে এসব, আর মেয়েদের দিকে তাকানোর কথা আমি ফান করে বলেছিলাম, রাগ করেছিস?’
‘না, আমার এত রাগ নেই।’
বেয়ারা দুই কাপ চা দিয়ে গেল তখন। আমি কাপ হাতে নিয়ে চুমুক দিলাম। সেও হাতে নিল চায়ের কাপ। চুমুক দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে হঠাৎ হেসে বললো, ‘তুই সত্যিই মেয়েদের দিকে সুযোগ পেলেই “হা” করে তাকিয়ে থাকিস।’
আমি ভ্রু-কুঁচকে জিজ্ঞাসু নয়নে তাকিয়ে বললাম, ‘কখন কার দিকে তাকালাম?’
– ‘আমার দিকে, আমি কী মেয়ে না? “হা” করে তাকিয়ে থাকিস।’
আমি লাজুক হাসলাম। সত্যিই ওর দিক থেকে চোখ সরাতে পারি না। নিশ্চয় তাতে সে বিরক্ত হয়। আমি কী জবাব দেব বুঝে উঠতে পারলাম না। ও পুনরায় হেসে বললো, ‘রাগ করিস না। মানে কেউ এভাবে তাকিয়ে থাকলে কিছু খেতে অস্বস্তি লাগে তাই বলে ফেলেছি।’
আমার লজ্জায় কান কেমন গরম হয়ে গেল। নিশ্চয় নূপুর বিরক্ত হয়ে বলেছে কথাটা। ওর দিকে তাকিয়ে থাকলে কেমন ঘোর লেগে যায়। আমার চোখেরও যেন শান্তি ও। তাই যখন দেখি, ভুলে যাই সবকিছু। আমি চেষ্টা করলাম ওর দিকে আর না তাকাতে। তবুও বারবার অবাধ্য চোখ দু’টো চলে যেতে চায়।
__চলবে…
লেখা: জবরুল ইসলাম