আমার হয়ে যা পর্ব-১৩

0
278

আমার হয়ে যা _পর্ব-১৩
.
এই অন্ধকার নিঝুম রজনীতে জানালার ফাঁক গলে বের হওয়া আবছা আলোয় আমিও ওকে দেখছি। দেখছি একজন প্রেমিক তার প্রিয়সীর সামান্য হাতটাকে নিয়েও কত পাগলামি করতে পারে। এবার আমার হাত নিয়ে নিজের গালে চেপে ধরলো। স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি ওর চোখ ছলছল করছে। আমার বড়ো আদর পায়। আমি আরেক হাত জানালা দিয়ে বের করে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দেই। ওর বোধহয় হাতে চুমু খেতেও মন চাচ্ছে। কিন্তু সাহসে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। ওকে কেন যেন আমার থেকে বয়সে ছোটই মনে হয়, অথচ আমি উলটো অল্প কয়েকদিনে ছোট তার। দীর্ঘ সময় এভাবে কেটে যাবার পর আমি ফিসফিস করে বললাম, ‘এবার তো দেখা হলো তোর? এখন যা।’

নিষাদ ছলছল চোখ তুলে তাকিয়ে বলে, ‘আজকের মুহূর্তটা আমার বিশ্বাস হচ্ছে না নূপুর। আমি তোর হাত ধরেছি, তুই আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিস। এগুলো সত্য নূপুর?’

আমি স্মিত হেসে বললাম, ‘এমন ভাব করছিস যেন আর কখনও স্পর্শ করিসনি। ঢাকা থেকে আসার পথে মাথা টিপে দিলি। সেদিন বৃষ্টিতে ভিজে এসে চুমু-টুমু দিয়ে ফেললি।’

ও লাজুক হেসে বললো, ‘তবুও আজ কেন যেন প্রথম মনে হচ্ছে। তাছাড়া এভাবে তুই ইচ্ছা করে তো কখনও স্পর্শ করতে দিসনি।’

আমি ওর গালে হাত বুলিয়ে দিয়ে আদর করে বললাম, ‘তুই আমার মাঝে কি এমন পেয়েছিস বলতো?’

– ‘জানি না, যৌবনের শুরু থেকেই তোকে ভালো লাগে। সেই সময় থেকে আজ অবধি প্রেমিকা বা স্ত্রীর কথা ভাবলেই আমার চোখের সামনে তোর ছবিই ভেসে উঠে।’

– ‘কিন্তু আমার বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর তো দিব্যি ছিলি। ব্যবসাও শুরু করে দিলি।’

– ‘কিছু তো করার ছিল না। তুই নিজেই ফিরিয়ে দিলি। তাই সহ্য করে নিয়েছিলাম৷ সকল প্রেমিকের হয়তো নিজেকে ধ্বং*স করার সাহস থাকে না। আত্মহ*ত্যা করতে পারে না। হাত কা*টতে পারে না।’

– ‘আজকাল তুই বই পড়ে খুব কথা শিখে গেছিস।’

লাজুক হাসলো নিষাদ। আমি পুনরায় ওকে তাড়া দিয়ে বললাম, ‘এবার যা।’

– ‘কিন্তু আমাদের বিয়ের কি করবি?’

– ‘আমার আব্বা-আম্মাও এখন আকাশ সাহেবের কাছে বিয়ে দিতে চায়। তাও যদি তোর পরিবার রাজি করাতে পারিস। তাহলে আমি এদিক ম্যানেজ করে নিব, এখন তুই যা।’

নিষাদের চেহারায় চিন্তার ছায়া পড়লো। তবুও সে মাথা নেড়ে বললো, ‘আচ্ছা দেখি’ বলে চলে যেতে পা বাড়িয়ে আবার ফিরে এসে বললো, ‘আরেকবার তোর হাতটা ধরে যাই।’

আমি স্মিত হেসে দুই হাত জানালার বাইরে বাড়িয়ে দিলাম। ও দুই হাত নিজের মুঠোয় নিল। তারপর তাকিয়ে বললো, ‘নখ কিছুটা লম্বা রাখলে তোর হাতে অনেক মানায়।’

‘হয়েছে এবার যা, তুই আমার কলঙ্ক লাগিয়ে ছাড়বি।’

ও হাত দু’টো ছেড়ে চলে যায়। আমি জানালা বন্ধ করে দেই। আমার ভেতরে কিছুটা শঙ্কা, কিছুটা ভয় কাজ করে। এভাবে যে ওকে প্রশ্রয় দিচ্ছি পরে যদি বিয়ে করতে না পারি? এই দ্বিধাগুলোর ভেতরেও আবার কেমন ভালো লাগাও অনুভব করি। ওর স্পর্শ যেন আমার হৃদয়ও খানিকটা আর্দ্র করে তুলেছে। আমি বিছানায় গা হেলিয়ে দিয়ে ওর কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে যাই।
এরপর থেকে আমি আকাশ সাহেবের সঙ্গে পেশাগত কাজ ছাড়া তেমন কথা বলি না। আম্মু মাঝে মাঝে এসে বুঝান। আকাশ সাহেবকে বিয়ে করার উপকার, সুবিধা ইত্যাদি বলতে থাকেন। আমি চুপ করে থাকি। যে ছেলে আমাকে হারিয়ে ফেলেছিল। তারপর ডিভোর্স হতেই পিছু নিয়েছে। তাকে রেখে আমি অন্য কাউকে গ্রহণ করার মতো হৃদয়হীন নারী না। বিয়ে করলে এই পাগলটাকেই করতে হবে আমার।
আকাশ সাহেবের বোন ক’দিন পর পর আম্মুর সাথে কথা বলে আমার সাথেও বলতে চান। আমি ভদ্রতা থেকে সৌজন্যের আলাপ করে রেখে দেই। ভেতরে ভেতরে অপেক্ষা করি আমার নিষাদ তার মা-বাবাকে কবে রাজি করাতে পারবে। কিন্তু পারে না সে। একজন বিবাহিত ডিভোর্সি মহিলাকে তারা গ্রহণ করবে না। রোজ রাতে আমাদের মেসেজে কথা হয়। মাঝে মাঝে ও আমার ভয়েজ শুনতে অস্থির হয়ে উঠে। আমি কল দেই। এভাবে প্রায় সপ্তাহ দুয়েক পর একদিন কলে আবার জানালার কাছে এসে দেখে করতে চায় সে। আমি ক্ষীণ সময় চুপ থেকে বলি, আগামীকাল আব্বু-আম্মু ফুপুর বাড়ি যাবে। তুই দুপুরে একবার চলে আসিস। কেউ যেন না দেখে। ওর যেন আনন্দ আর বুকে জায়গা হয় না। আমি ফোনের ওপাশ থেকেও তা টের পাই। ওর আমার প্রতি এত তীব্র আগ্রহ, কাছে পাওয়ার আকাঙ্খা যেন আমাকেও দূর্বল করে তুলে।

পরদিন ঠিক সাড়ে দশটায় সে মেসেজ দেয়, ‘চাচা-চাচি চলে গেছেন দেখলাম।’

ও এগুলো খেয়াল রাখছে ভেবে হাসি আমি। পরে বলি আচ্ছা খেয়াল করে ধীরস্থিরে আয়। ও সাড়ে এগোরটার দিকে এসে মেসেজ দেয়। আমি গিয়ে দরজা খুলে ভেতরে আনি ওকে। পলিথিনের ব্যাগ বাড়িয়ে দেয় সে। তাকিয়ে দেখি চকলেট, আইসক্রিম, আচার এনেছে। আমি সেদিনের মতো তাকে রুমে গিয়ে বসতে বললাম। তারপর চা বসাতে এলাম। দেখি সেও কিচেনে চলে এসেছে।

– ‘আমার জন্য চা বসাতে হবে না।’

– ‘না আমিও খাব, তুই না হয় এখানেই বস।’

সে বসলো। আমি ওর দেয়া সেই শাড়িটা আজও আবার পরেছি৷ হাতেও ওর দেয়া ঘড়ি। ভাবছি সেদিন বৃষ্টিতে ভিজে এসে পাগলটা যেরকম জড়িয়ে ধরেছিল। চুমু খেয়েছিল। আজ এমন করলে ওকে আমিও খানিক আদর করে দেবো। ভীষণ ইচ্ছা হয় আজকাল। একবার না হয় জড়িয়ে ধরতে দেবো। কিন্তু কেন যেন আজ সে খুব শান্ত। কথাও যেন খুঁজে পাচ্ছে না। আমি চায়ে লিকার দিয়ে পিছু না ফিরেই বললাম, ‘দেখার জন্য যে এত উতলা হয়ে যাস, এখন যদি কেউ আমাদের দেখে এসে?’

ও ক্ষীণ সময় কিছু ভেবে বললো, ‘তা ঠিক, কিন্তু আমি তো তোকে বিয়ে করতেই চাই। লোকে কিছু বলাতে তো তাতে তোর কিছু যায় আসে না।’

আমি স্মিত হাসলাম। ওর এমন সহজ-সরল কথাবার্তাও আজকাল আমার কেমন ভালো লাগে। ওকে দেখতেও মন্দ লাগে না, অবশ্য আগেও মন্দ ছিল না। চোখের নিচে কালি পড়ে আছে, তবুও তাকে ভালো লাগছে। একটা কালো টি-শার্ট গায়ে। মুখে খোচা-খোচা দাড়ি। জিন্স প্যান্ট। কালো হাত ঘড়ি। আচ্ছা আজ কি ও আমার উম্মুক্ত পিঠ দেখছে না? তবে কেন সেদিনের মতো কিছু করছে না? ভয়ে না-কি আজ আমায় দেখতে সুন্দর লাগছে না? আমি চা মিলিয়ে নিয়ে বিস্কিট আর চা ট্রেতে তুলে বললাম, ‘রুমে চলে আয়।’

সে পিছু পিছু রুমে চলে এলো। দু’জন বিছানায় উঠে আসন পেতে বসলাম। আমি চায়ে চুমুক দিয়ে বললাম, ‘তোর পরিবারকে এখনও মানাতে পারলি না।’

সে দীর্ঘশ্বাস যেন গোপন করলো। মুখে আত্মবিশ্বাস ফুটিয়ে আমায় বললো, ‘রাজি না হয়ে যাবে কোথায়, কিছু গা মোচড়ামুচড়ি করে নিক ওরা।’

– ‘যদি রাজি না হয়?’

ওর মুখে খানিক ভীতি দেখা যায়। সে চিন্তিত চেহারায় বলে, ‘তাহলে কি আকাশ সাহেবকে বিয়ে করে নিবি?’

আমি প্রথমে ভেবেছিলাম রসিকতা করে ‘হ্যাঁ’ বলবো। কিন্তু কেন যেন ইচ্ছা হলো না। আমি চায়ে চুমুক দিয়ে বললাম, ‘না।’

ওর চোখ-মুখ ঝলমল করে উঠে। আমি পুনরায় বলি, ‘কিন্তু আব্বা-আম্মা ওর কাছেই বিয়ে দিতে চাচ্ছেন।’

ও কি বলবে ভেবে পায় না। কেবল ‘ও আচ্ছা’ বলে চায়ে চুমুক দেয়। চা খাওয়া শেষে আমি বললাম, ‘লুডু খেলবি?’

সে রাজি হয়ে গেল। আমি লুডু নিয়ে এলাম। দু’জন খেলছি, আমি লক্ষ্য করি সে বারবার ভীষণ আগ্রহ নিয়ে মুখের দিকে তাকায়, চুলের দিকে তাকায়, হাত দেখে৷ একবার ছক্কা গুটতে গুটতে লাজুক হেসে বললো, ‘তোর চুলগুলো কি সুন্দর সামনের দিকে এসে পড়ে।’

আমি চুল কানে গুঁজে নিই। তবে ও আজ নিজে গুঁজে দিতে চাইলে সুযোগ দিয়ে দিতাম। আমি ছক্কা হাতে নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘আর কি ভালো লাগে?’

সে নেশাতুর চোখে তাকিয়ে বললো, ‘তোর কাছাকাছি থাকলে একটা ঘ্রাণ পাই সেটা ভালো লাগে। তোর কথা বলা ভালো লাগে। তোর হাসি ভালো লাগে। সবই ভালো লাগে আমার।’

আমি মুচকি হাসি। আবার খেলতে থাকি। আজ ও গেইম খায়। তারপর আমি তাড়া দিয়ে বলি ‘আমাকে অনেক দেখা হয়েছে, এবার বিদায় হ।’

সেও আজ যেন ভীষণ সন্তুষ্ট। এতটুকুও আমার থেকে বেচারা আশা করে না হয়তো। সে বিছানা থেকে নেমে বললো, ‘তাহলে যাই।’

আমি ওর মুখের দিকে তাকাই। বিছানা থেকে নামি। তারপর ওর সামনে দাঁড়িয়ে কেন যেন বলে ফেলি, ‘আজ কি তোর জড়িয়ে ধরতে মন চাচ্ছে না?’

ওর চোখে বিস্ময় ফুটে উঠে। যেন নিজেকে বিশ্বাস করাতে পারছে না। আচমকা সে কিছু বুঝে নিয়ে আমাকে পলকে নিজের বুকের সঙ্গে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। আমার ভীষণ প্রেম প্রেম পায়। শ্বাস ভারী হয়ে উঠে। আমি আস্তে-আস্তে ওকে পিঠের দিকে হাত নিয়ে জড়িয়ে ধরি। ও অবিশ্বাস্য চোখে আমার দিকে মাথা তুলে তাকায়। ওর চোখ ভেজা দেখা যায়। আমার বুক শিরশির করে তাতে। ও আবার আমার কাঁধে মুখ লুকিয়ে বলে, ‘আমাদের মিলন আর কেউ আঁটকে রাখতে পারবে না নূপুর, দেখিস আর কেউইই পারবে না।’

আমার কাছে ওর কথাগুলো কান্নার মতো শোনায়। ও আচমকা আমার গলায় আলতো করে চুমুও দিয়ে দিল। আমি চোখবুজে ওর ঘাড়ের চুলগুলো খামচে ধরে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। কেন যে ভীষণ শান্তি লাগছে জানি না আমি। ওকে বোধহয় ভালো-টালোই বেসে ফেলেছি। আর ও? ও চোখের জলে আমার আজ বোধহয় কাঁধ ভিজে যাবে। মেয়েদের মতো কাঁদে কেন ও? আমাকে কি রোবট মনে করে? আমার কাছ থেকে একটু আদর পাওয়া কি অপ্রত্যাশিত? একটু আদর বা প্রশ্রয় পেলেই কাঁদতে হবে কেন? আমি ওর চুল মুঠো করে ধরে মাথা টেনে তুলি। ভেজা চোখে তাকিয়ে থাকে সে। আমি ক্ষীণ সময় তাকিয়ে থেকে ওর মুখটা আঁজলা করে ধরে দুই হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে চোখ মুছে দিয়ে বললাম, ‘মেয়েদের মতো এত কাঁদিস কেন?’

ও অশ্রমাখা হাসি দিয়ে বললো, ‘আমার বিশ্বাস হয় না এগুলো।’

– ‘কেন? আমি কি খুব কঠিন নারী? আমার কি মায়া-মমতা বলতে কিছু নেই?’

– ‘আমার জন্য আছে তা বিশ্বাস হচ্ছে না।’

– ‘কি করলে বিশ্বাস হবে?’

ও লাজুক হেসে বলে, ‘আমার মুখ যেভাবে ধরেছিস, আমি এভাবে তোর মুখটা একটু ধরে দেখি?’

– ‘কেন?’

– ‘তোর গালদুটো স্পর্শ করতে ইচ্ছা করে।’

ওর কথা আমার হৃদয় স্পর্শ করে ফেলে। ওর আবেগগুলো কেমন কিশোর ছেলেদের মতো। আমি মাথা নেড়ে সম্মতি দেই। ও চোখ ছলছল করে উঠে। আমার মুখ আঁজলা করে ধরে। গালে হাত বুলায়। খানিক টিপেও দেখে। আমার গলা শুকিয়ে আসে ওর স্পর্শে। আমি ওর চোখের দিকে তাকাতে পারি না। এত অসীম প্রেম ওর চোখে। আমি ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘শুধু গাল স্পর্শ করতে মন চায়?’

ও স্মিত হেসে বলে, ‘চুমু খেতেও ইচ্ছা করে।’

– ‘কিন্তু চাসনি তো। সেদিন তো জোর করে দিলি।’

ও লাজুক হেসে বলে ‘সেদিন মাথা ঠিক ছিল না। আমি ভেবেছি তুই আকাশ সাহেবের সাথে বিয়েতে রাজি হয়ে গেছিস’ তারপর খানিক থেমে বলে ‘আমি তোর হাতে আর গালে চুমু খেলে কি রাগ করবি?’

ও এমনভাবে বলেছে। আমার বুকে মমতার যেন ঢেউ খেলতে শুরু করে। আমি মাথা নেড়ে বললাম ‘আচ্ছা।’

ওকে কেমন বিব্রত দেখায়। শুকনো ঢোক গিলে প্রথমে আমার হাত নিয়ে চুমু খায়। নিজের গালের সঙ্গে হাত চেপে ধরে। আমি পাথরের মতো দমবন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছি। আমার পুরো শরীরে প্রেমের উষ্ণতা ছড়িয়ে পড়ছে। ও এবার সোজা দাঁড়িয়ে আমার এক গালে হাত রাখে। আমি চোখ মেলে তাকাই ওর চোখের দিকে। ওর চোখদুটোতে আমার জন্য অসীম মায়া। আমি দেখতে পাই স্পষ্ট। সে ঠোঁট কীভাবে এগিয়ে আনবে যেন বুঝতে পারছে না। বিব্রত দেখায় তাকে। আমি চোখবুজে তাকে সুবিধা করে দেই। তারপর অনুভব করি আমার গালে ওর উষ্ণ চুম্বন। ও চুমু দিয়ে ভালো লাগার আবেশে আবার আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। আমার কানের কাছে ঠোঁট এনে বললো, ‘তোকে আমার বুকের ভেতরে ঢুকিয়ে নিতে মন চাচ্ছে নূপুর, আব্বা-আম্মার রাজি দিয়ে কি করবি বল? আমরা কি বিয়ে করে নিতে পারি না?’

ও চুমু খেয়ে এত শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে। আমিও অসহ্য অনুরাগে ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছি। আমার পা যেন অবশ হয়ে আসছে৷ ওর প্রশ্নের উত্তর দিতে ইচ্ছা করছে না। ওকে একবার মেনে নেয়ার পর যেন আমার প্রেমের সাগরেও ঝড় উঠেছে। আমি দীর্ঘ সময় চুপচাপ ওকে জড়িয়ে ধরে রাখলাম। কোনো পুরুষের বুকে এত শান্তি থাকতে পারে আমি যেন এর আগে কখনও টের পাইনি। ও আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে নিজেই খানিক পর বললো, ‘কি হলো নূপুর।’

আমি নিজেকে সামলে নিয়ে ওকে ছেড়ে দিয়ে বললাম, ‘না কিছু না, যা তুই।’

ও আমার মুখে হাত বুলিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে। আমি পিছু থেকে ডেকে বললাম, ‘ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করিস। আর রাত এত জাগবি না। তোর চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে।’

ও পিছু ফিরে মাথা নেড়ে চলে গেল।
__চলবে….
লেখা: জবরুল ইসলাম