সূচনা পর্ব
#বসরাই_গোলাপের_ঝাড়
কলমে : #ফারহানা_কবীর_মানাল
দু’বছরের ছেলেটা যেদিন পানিতে পড়ে মা’রা গেল। সেদিন তার বড় ননদাই বেশ তাচ্ছিল্যের সুরে বলল, “ছোট শালা নেহাৎ ভেড়া। আমি হলে এমন মেয়ে মানুষ ঘরের চৌকাঠে রাখতাম না। এই মুহূর্তে বের করে দিতাম।”
নববী ভেজা চোখে তাকাল। তার শাশুড়ি বড় জামাইয়ের গলায় সুরে সুর মিলিয়ে বললেন, “হাবিবকে বলে আর বোঝাতে পারলাম কোথায়! সবই আমার কপাল।”
বাড়িতে লোক দাঁড়ানো জায়গা নেই। খানিকক্ষণ আগেও এখানে কেউ ছিল না। অল্প সময়ে ব্যবধানে অনেক মানুষ জড় হয়েছে। দুই বছরের নিষ্পাপ শিশু পানিতে ডুবে মা’রা গেলে কেউই আর ঘরে আসে থাকতে পারে না। যে কখনও আসেনি, সে-ও এক পলক উঁকি দিতে আসে। নববী ঘরের কাজ করছিল। হঠাৎই খেয়াল করল – সোহেলকে আশেপাশে দেখা যাচ্ছে না। সে কয়েকবার ছেলের নাম ধরে ডাকলো। তারপরই নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। চুলায় গরুর দুধ জ্বাল করছে। এই মুহূর্তের জন্য চোখ সরালে স’র্ব’না’শ হয়ে যাবে। তাছাড়া দুপুরে খাবার সময় হয়ে এসেছে। তার শশুর মহিউদ্দিন সাহেব ঠিক একটার সময় খেতে বসেন। আ’গু’ন-গরম ভাতে এক চামচ ঘি ঢেলে খাওয়া শুরু করেন। এক মিনিট দেরি হলে তার চোটপাট সহ্য করা যায় না। জীবনের দীর্ঘ সময় তিনি এই নিয়ম পালন করে এসেছেন। শেষ বয়সে এসে কোন অবস্থায় এই নিয়মের ব্যতিক্রম করতে পারবেন না। শরিফা বেগম নিজের সংসার জীবনে স্বামী এই নিয়ম নিয়ে প্রচন্ড বিরক্তিবোধ করেছেন। এখন অবশ্য ছেলে বউ আসায় তিনিও এই নিয়ম পালনে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বেলা দুইটার দিকে হাবিব বাড়ি ঢুকলো। ঢোকার আগে খানিকক্ষণ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। বাড়ির ভেতর থেকে কান্নার আওয়াজ আসছে। একটা গলা তার মা’য়ের, অন্যটা দুই বোনের। দুই বোনের গলার স্বর হুবহু এক রকম। কিন্তু এরা কাঁদছে কেন? বাবার কিছু হয়নি তো? হাবিবের বুক কেঁপে উঠল। তাকে জানানো হয়েছে বাড়িতে মারাত্মক রকমের জরুরি কাজ পড়ে গেছে। এই মুহুর্তে বাড়ি ফিরতে হবে। সারাপথ তার মাথায় নানান রকমের চিন্তা ঘুরপাক খেয়েছে। বাড়িতে জরুরি কাজ বলতে তেমন কিছু নেই। মা, বাবা, ছোট বোন আর বউ ছেলে নিয়ে সুখের সংসার। বড় বোনের বিয়ে হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। সাত বছরের একটা ছেলেও আছে। এদের কারোর কোন সমস্যা হয়েছে কি-না ঠিক বুঝতে পারেনি। সকালে সবাইকে সুস্থ দেখে এসেছে বিধায় কোন কুচিন্তা মাথায় আসেনি। সে ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলে ঘরের দিকে এগিয়ে যেতে লাগল। তার পা চলছে না। সীসার মতো জমে গেছে।
হাবিবদের দোতলা বাড়ি। বাড়ির সামনে এক পাশে অনেকখানি ফাঁকা জায়গা, অন্য পাশে সিঁড়ি বাঁধানো পুকুর। পুকুরের পানি কাকের চোখের মতো কালো। ফাঁকা জায়গার একপাশে ফুলের বাগান। বাগানের একপাশে বসরাই গোলাপের প্রকাণ্ড ঝাড়, দুটো শিউলি ফুলের গাছ। ছবির মতো সাজানো বাড়ির চারদিকে মলিনতার ছাপ। কয়েকজন বাচ্চা গোলাপ ফুল ছিঁ’ড়ে হাতে নিয়েছে। হাবিব বারান্দায় বসে পড়ল। তার ঘরে ঢুকতে ইচ্ছে করছে না। শরিফা বেগম ছেলে আসার খবর পেয়ে এক প্রকার ছুটে এলেন। বিলাপ করতে করতে বললেন, “বাবা রে, সব শেষ হয়ে গেছে! সোহেল আর নেই। একটু আগে পুকুরে পড়ে!” তিনি কথা শেষ করতে পারলেন না। আঁচলে মুখ ঢাকলেন।
মহিউদ্দিন সাহেব ভরাট গলায় বললেন, “জীবন মৃ’ত্যুতে আমাদের হাত থাকে না। নিজেকে শক্ত এবং শান্ত রাখার চেষ্টা করো। বউমার কাছে যাও। তাকে স্বান্তনা দাও।”
শরিফা বেগম তেঁ তেঁ উঠলেন। কর্কশ গলায় বললেন, “বউমার কাছে গিয়ে স্বান্তনা দিতে হবে কেন? সে কি বাচ্চা নাকি কচি খুকি? একটা ছেলেকে দেখে রাখতে পারে না। কি এমন কাজ সংসারে? অলক্ষী কোথাকার! আপনার আস্কারা পেয়ে পেয়ে মাথায় উঠে গেছে।”
মহিউদ্দিন সাহেব চমকে উঠলেন। তার স্ত্রী কখনও তার সাথে কর্কশ গলায় কথা বলে না। আজই প্রথম! শরিফা বেগম নিজেও অনেকখানি চমকে গেছেন। তবে সে-ই চমককে প্রশ্রয় দিলেন না। ঝাঁঝালো কণ্ঠে বললেন, “সংসারে আসার পর থেকে একটা না একটা বিপদ লেগে আছে। ছেলের পছন্দ বিধায় এতদিন চুপ করে আছি। কিন্তু আজ আর চুপ থাকতে পারছি না।”
নাইমা এগিয়ে গিয়ে মা’য়ের গায়ে হাত রাখলো। কান্না জড়ানো গলায় বলল, “শান্ত হও মা। ধৈর্য ধরো।”
দীর্ঘ সময়ের কথাবার্তায় হাবিব কোন জবাব দিলো না। শূন্য দৃষ্টিতে ঘরের ভেতর তাকিয়ে রইল। মাদুর বিছানো মেঝেতে সাদা কাপড় জড়িয়ে নরম ছোট্ট শরীর রাখা। কয়েকজন মহিলা নি’থ’র দেহ আগলে বসে আছে। যেন একটু সরলেই কেউ ছো’ব’ল দিয়ে নিয়ে যাবে। তাদের একজন হাবিবের বড় বোন কনক। ভালো নাম কনকচাঁপা। বাকি মহিলাদের সে চেনে না। আগে-পরে কখনও দেখছে কি-না মনে করতে পারছে না। সে দৃষ্টি ঘুরিয়ে কাউকে খোঁজার চেষ্টা করল। নাহ! নববীকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। এই মুহূর্তে তাকে খোঁজার শক্তি হাবিবের নেই। শরীর কেমন অচল হয়ে গেছে।
মহিউদ্দিন সাহেব একটু দূরে চেয়ার পেতে বসে আছেন। কয়েকজন লোক মাটি সরিয়ে ক’ব’র তৈরি করছে। বাঁশঝাড় থেকে বাঁশ কে’টে আনা হয়েছে। এলাকাটা জেলা সদরের মধ্যে হলেও এক প্রায় মফস্বল বা গ্রাম বলা চলে। বাঁশ ঝাড় থেকে শুরু করে খাল-বিল সবই আছে।
আনিস বিরক্ত চোখে শশুরে দিকে তাকালো। সরল গলায় বলল, “আব্বা, জানাজার সময় কখন ঠিক করেছেন? আপনার বড় মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে।”
মহিউদ্দিন সাহেব কঠিন মুখে তাকালেন। শান্ত গলায় বললেন, “জোহরের নামাজের পর।” বলেই তিনি একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন। তার চোখ জ্বালা করছে। চোখে পানি আসার আগে যেমন চোখ জ্বালা করে তেমন। সোহেলের সাথে তার ঘনিষ্ঠতা অন্যদের তুলনায় বেশি। সারাদিন হাত ধরে এদিক-ওদিক হেঁটে বেড়ান। বাইরে গেলে কিছু খাবার না নিয়ে ঘরে ফেরেন না। ভোর রাত থেকে জেগে বসে থাকেন কখন ছোট্ট আধফোটা গলায় দাদা ডাক শুনবেন। আজকের পর তার অপেক্ষার সমাপ্তি হয়েছে। ভাবতেই বুকটা খালি হয়ে যায়।
বাড়ির পরিবেশ হঠাৎই কেমন পরিবর্তন হয়ে গেছে। লোকজন যার যার নিজের কাজে চলে গেছে। জানাজায় আসবে। মহিলাদের কান্না থেমে গেছে। কেউ কোন কথা বলছে না। চারদিকে হঠাৎই শুনশান নীরবতা। হাবিব উঠে গিয়ে সোহলের পাশে গিয়ে বসল। ছোট্ট নিষ্পাপ দেহ। মেঝেতে বিছানো সাদা মাদুরটা বিশাল সমুদ্র মনে হচ্ছে। সমুদ্রের মাঝে মুক্তা ভেসে আছে। সোহেলের চেহারা আগের থেকে উজ্জ্বল হয়ে গেছে। সে দু’হাতে ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরল। কপালে গালে চুমু খেলো। কনক ভাইয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল, “বাপের চেহারা চাঁদের মতো হয়ে গেছে। দেখ ভাই।” সাথে আরও কিছু বলল। কান্না কারণে পরিষ্কার বোঝা গেল না। হাবিব বলল, “নববী কোথায়?”
“ওইপাশে আছে। নববীর মা বাবা এসেছে। তাদের কাছে।”
“ওকে এখানে আসতে বলো। বলো- আমি ডাকছি।”
“ওকে এখানে ডাকতে হবে না। এমনিতেই সকাল থেকে দু’বার ফিট হয়েছে। মাঝে উল্টোপাল্টা কথা বলছিল। এখন একটু শান্ত।”
“আপা, যা বলছি করো। কথা বলতে ভালো লাগছে না।”
কনক কথা বাড়ালো না। উঠে গিয়ে নববীকে ডেকে আনলো। নববী হাঁটছে মৃ’ত মানুষের মতো। তার শরীর হাওয়ায় ভাসছে। হাবিব নববীর হাত ধরে বসালো। কোমল গলায় বলল, “কোথায় ছিলে তুমি? আমাদের প্রাণটাকে দেখে রাখতে পারলে না?”
নববী জবাব দিলো না। হাউমাউ করে কাঁদতে লাগল। নববীর মা বললেন, “থাক বাবা। তুমি ওকে কিছু বলো না। আল্লাহর ওপরে মানুষের হাত নেই।”
কনক কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেল। শোকের বাড়ি আর খুশির বাড়িতে ঝগড়া হয় বেশি। কাজেই চুপচাপ থাকা ভালো। খানিকক্ষণ আগে একবার নববীর মায়ের সাথে শরিফা বেগমের ঝগড়া হয়েছে। শরিফা বেগম গলার স্বরে বেশ অনেকখানি ঘৃ’ণা মিশিয়ে বলেছেন, “এখন কেঁদে কি করবেন? মেয়েটাকে ঠিকমতো মানুষ করতে পারলে আজ আর এই দিন দেখতে হতো না। আপনার মেয়েই আমার সোহেলকে মে’রে ফেলেছে।”
এ কথা শোনার পর নববীর মা চুপচাপ থাকেননি। তিনিও ঝাঁঝালো গলায় বললেন, “আমার মেয়ে তো সংসারের কাজ করে। আপনি আর আপনার দুই মেয়ে কি করেছিলেন? বসে বসে কূটনামি করছিলেন নাকি? একটু খেয়াল রাখতে পারলেন না?”
এভাবে এক দুই কথায় বিশাল ঝামেলা হয়ে গেছে। ঝামেলার এক পর্যায়ে আনিস আবারও বলেছে, “ছেলে-মেয়ে দেখে রাখতে না পারলে কিসের সংসার আর কিসের ঘরকন্না। ভাগ্য ভালো হাবিবের মতো ভেড়া বেডার ঘরে পড়েছে। আমার ঘরে আসলে কঞ্চির মতো সোজা করে ফেলতাম।”
অবশ্য কনক দু-বার স্বামীর দিকে তাকিয়ে চোখ গরম করেছে। তাতে বিশেষ লাভ হয়নি। মানুষ ম’রার পর চারপাশে সময় খুব দ্রুত পার হয়ে যায়। জোহরের আজান হতে বেশি সময় লাগল না। আত্নীয় স্বজন যারা ছিল বেশিরভাগই চলে এসেছে। সোহেলকে গোসল করিয়ে খাটলার ওপর শুইয়ে রাখা হয়েছে। সাদা কাপড়ে আপাদমস্তক ঢাকা। একটু পরই এই সুন্দর শরীর মাটির নিচে চাপা পড়ে যাবে। পোকায় খাবে। ব্যাকটেরিয়া গোশত পঁচিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে ফেলবে। তারপর? তারপর কি হবে? দুনিয়ার মানুষ তাকে ভুলতে শুরু করবে। মৃ’ত ব্যক্তি জীবনের হিসেব মেলাতে গিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়বে বোধহয়!
সোহেল মা’রা গেছে দু’দিন হতে চলল। বাড়ির ওপর দিয়ে শোকের ছায়া সরেনি। এখনও কেউ-ই ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করতে পারে না। হঠাৎ হঠাৎ ডুকরে কেঁদে ওঠে। তবুও জীবন থেমে থাকে না। কথাটা সে-ই সুবাদেই উঠল। কথা উঠল খাবার টেবিলে। সকলে রাতের খাবার খেতে বসছে। নববীর মা বাবা তখনও বাড়ি ফিরে যাননি। কথাটা প্রথম তুলল আনিস। বেশ ব্যঙ্গ স্বরে শাশুড়িকে উদ্দেশ্য করে বলল, “মা একটা কথা বলি। সবাই আছেন। কেউ কিছু মনে নিয়েন না। আমি আবার সত্য কথা চেপে রাখতে পারি না। মুখ ফসকে বেরিয়ে যায়।”
মহিউদ্দিন সাহেব বিরক্ত গলায় বললেন, “এত ভনিতা না করে কাজের কথা বলো।”
“আব্বা রেগে যাবেন না। বলছিলাম নববীর কথা। কেমন অলক্ষুণে দেখেছেন? একটা ছেলে তাই দেখে রাখতে পারল না। আমি বলি কি হাবিবকে আর একটা বিয়ে দেন।”
আনিস কথা শেষ করতে পারল না। তার আগেই মহিউদ্দিন সাহেব হুংকার দিয়ে উঠলেন। রাগে কাঁপতে কাঁপতে বললেন, “কনক, এই মুহূর্তে তোর বরকে আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বল। এই মুহূর্তে মানে এই মুহুর্তেই!”
কনক নিচু গলায় বলল, “আব্বা, আপনি একটু শান্ত হন। রাত এগারোটা বাজে।”
“বাজুক এগারোটা। একটা দুইটা যা খুশি বাজুক। ওকে আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বল। ভদ্র কথায় না গেলে লোক ডেকে ঘাড় ধরে বের করে দেব।”
মহিউদ্দিন সাহেব ভীষণ রেগে আছেন। নিঃশ্বাসের শব্দ শোনা যাচ্ছে। কনক মা’য়ের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো। করুণ গলায় বলল, “মা দেখো, বাবা কি বলে!”
শরিফা বেগম কিছু বলতে যাবেন তার আগেই মহিউদ্দিন সাহেব অদ্ভুত কান্ড করে বসলেন। ঘর থেকে আনিসের জামাকাপড় এনে বাইরে ছুঁড়ে ফেললেন। আনিস বলল, “কনক, তোমার বাবা যা করেছে তারপর আর এই বাড়িতে থাকা যায় না। তুমি চাইলে আমার সাথে যেতে পারো অথবা চিরতরে বাবার বাড়িতে থেকে যেত পারো।”
কনক একবার মহিউদ্দিন সাহেবের দিকে তাকালো। তিনি ভাবলেশহীন মুখে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছেন। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন অথবা মেয়ের জামাইকে রাতটুকু থেকে যাবার অনুরোধের কোন নমুনা দেখা যাচ্ছে না। সে ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলল। ছেলেকে উঠিয়ে নিয়ে তৈরি হয়ে স্বামীর হাত ধরে বেরিয়ে গেল। শরিফা বেগম কড়া চোখে নববীর দিকে তাকালেন। যেন এসবের জন্য নববীই দায়ী। নববীর চোখ-মুখ শুকনো। বসে আছে স্তব্ধ ভঙ্গিতে। চারপাশের আওয়াজ তার কানে পৌঁছাচ্ছে না। হাবিব এখানে নেই। অফিসের কাজে গেছে। খুব জরুরি কাজ। শোকের জন্য ঘরে বসে থাকতে পারেনি। দূরে আকাশে এক ফালি চাঁদ দেখা যাচ্ছে। একরাশ কালো মেঘ চাঁদের দিকে ছুটে আসছে। সে-ই চাঁদে নববীর মুখের ছাপ দেখা যায়।
চলবে