বসরাই গোলাপের ঝাড় পর্ব-০৭

0
456

#বসরাই_গোলাপের_ঝাড়
#ফারহানা_কবীর_মানাল

৭.
নববী বাপের বাড়িতে এসেছে দু’দিন হতে চলল। এই দুই দিনে হাবিব তার খোঁজ-খবর করেনি। একবারের জন্য কল দিয়েও কিছু বলেনি। অথচ এই ছেলে তাকে আসতে দিতে রাজি ছিল না। শরিফা বেগম সকালে খাবাব ঝামেলা মিটে যাবার পর বললেন, “নববী, তোমার শশুর বলছিল কিছুদিনের জন্য বাপের বাড়ি থেকে ঘুরে আসতে। মা বাবার কাছে থাকলে মনটা ভালো থাকবে।”

নববী মাথা দোলালো। আজ-কাল খুব একটা কথা বলতে ইচ্ছে করে না তার। চুপচাপ থাকতে বেশি ভালো লাগে। হাবিব বিরক্ত গলায় বলল, “এখানে থাকলে কি সমস্যা? দরকার হলে আম্মু আব্বুকে এখানে এসে থাকতে বলো।”

শরিফা বেগম ফোঁড়ন কাটলেন। বললেন, “তাদের কি এখানে থাকার সময় আছে? দেখলি না মিলাদ শেষ হবার পর কালকেই ফিরে চলে গেল।”

হাবিব বিরক্তির নিঃশ্বাস ফেলে ব্যস্ত ভঙ্গিতে নিজের ঘরে চলে গেল। নববী বলল, “ভাইয়ের সাথে যাব মা? ও আজ বাড়ি ফিরতে চাচ্ছিল।”

“হ্যাঁ হ্যাঁ। সেটাই খুব ভালো হবে। একা যাবার থেকে কারো সাথে যাওয়া ভালো।”

“আমি তাহলে ব্যাগ গুছিয়ে ফেলি। দেরি করলে পৌঁছাতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে।”

“হ্যাঁ, যাও। দেরি করো না।”

নববী ঘরে ঢুকল। হাবিব খাটে হেলান দিয়ে বসে আছে। নববী বলল, “আজকে যাচ্ছি। কয়েকদিন পর চলে আসব।”

“যাও। এমনিতেই সারাদিন মন ম’রা হয়ে থাকো। মা বাবার কাছে থাকলে ভালো থাকবে।”

“তুমি কি রেগে আছো?”

“না। রাগ করব কেন? ব্যাগপত্র গুছিয়ে নাও। বেলা থাকতে না বেরোলে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। বেশি করে গরম কাপড় নিয়ে যাবে।”

নববী সময় নিয়ে ব্যাগ গোছালো। প্রয়োজনীয় সবকিছু আলাদা করে গুছিয়ে রাখল। হঠাৎই তার মনটা খারাপ হয়ে গেছে। ভালো লাগছে না কিছু।

রওনা দেবার সময় হাবিব বাড়ি ছিল না। অফিসে গেছে। নাইমা তাকে বেশ অনেকটা পথ এগিয়ে দিয়ে গেল। নরম গলায় বলল, “নিজের যত্ন নিও। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করবে। ঠিক আছে?”

নববী তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। এ বাড়িতে পৌঁছানোর পর সে হাবিবকে কল দিয়েছিল। হাবিব শান্ত গলায় সাবধানে থাকতে বলেছে। তারপর থেকে তার আর খোঁজ নেই। নববী তার শাশুড়ির কাছে কল দিয়েছিল। তিনি জানালেন হাবিব ঠিক আছে। অফিসের কাজে ব্যস্ত। কি এমন ব্যস্ততা যে এক মিনিট কল দেওয়া যায় না? এমনকি কল রিসিভও করা যায় না? নববীর ভীষণ অস্থির লাগছে। এক্ষুণি ফিরে যেতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু তা সম্ভব না। রেহানা তাকে যেতে দিবে না। সে বিছানায় শুয়ে পড়ল। সন্ধ্যা নেমে। জানালা দিয়ে ঠান্ডা হাওয়া ঢুকছে ঘরে। জানালাটা বন্ধ করে দেওয়া দরকার। উঠতে ইচ্ছে করছে না। ভীষণ রকমের আলস্য লাগছে।
রেহানা বেগম ঘরে ঢুকলেন। বললেন, “অবেলায় শুয়ে আছিস কেন? শরীর খারাপ?”

নববী উঠে বসল। তরল গলায় বলল, “না মা। এমনি ভালো লাগছে না।”

“খিদে পেয়েছে তোর? কিছু খাবি? নুডলস বানিয়ে দেব?”

“না মা। কিছু খাবো না। একটু ঘুমতে ইচ্ছে করছে। তুমি যাও। পারলে জানালাটা বন্ধ করে দিও।”

“চা বানিয়ে দেব?”

নববী মাথা দোলালো। তার চা পান করতে ইচ্ছে করছে না। কিছু কাজ একান্তই প্রিয় মানুষের সাথে করতে ভালো লাগে। রেহানা তার অপ্রিয় কেউ নয়, বরং খুব কাছের আপনজন। তবুও তার হাবিবের কথা মাথায় আসলো। রেহানা ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন। যাবার আগে জানালা বন্ধ করে পর্দা টেনে দিলেন। দরজা ভেজিয়ে দিলেন। নববী বালিশের পাশ থেকে মোবাইলটা হাতে নিয়ে হাবিবকে কল দিলো। নম্বর বন্ধ। সে লম্বা শ্বাস নিলো। বুকের ভেতর ভীষণ য’ন্ত্র’ণা হচ্ছে। যেন কেউ সহস্র কাঁ’টা বিঁ’ধি’য়ে দিয়েছে হৃদয় মাঝে!

হাবিব বারান্দায় বসে আছে। তার চোখে-মুখে বিষন্নতার ছাপ। খানিকটা দূরে মিলি দাঁড়িয়ে আছে। সে গিয়ে হাবিবের পাশে বসল। অসম্ভব কোমল গলায় বলল, “এভাবে বিষন্ন হয়ে থাকবেন না।”

হাবিব মুখ ঘুরিয়ে নিলো। সরু গলায় বলল, “আপনি এখানে কি করছেন?”

“আন্টি সন্ধ্যায় নাস্তার জন্য ডাকতে পাঠিয়েছিল। এসে দেখলাম আপনি আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন। একরাশ কালো মেঘ এসে আপনার মুখশ্রীতে ভীড় জমিয়ে আছে।”

“মা’কে গিয়ে বলুন আমি তাকে ডাকছি।”

“আপনিও চলুন না। সকলের সাথে মজাদার নাস্তা উপভোগ করতে করতে প্রয়োজনীয় কথা সেরে ফেলবেন।”

হাবিব কিছু বলল না। মিলি বলল, “আমি কি আপনার মন খারাপের কারণ জানতে পারি? ওহ! দুঃখিত! খেয়াল ছিল না। সোহেলের জন্য মন খারাপ তাই না? ভেঙে পড়বেন না। সবকিছু আগের থেকে সুন্দর হয়ে যাবে। অনেক বেশি সুন্দর।”

হাবিব কঠিন মুখে তাকাল। শক্ত গলায় বলল, “মিলি, আপনি নিশ্চয়ই জানেন আমি বিবাহিত। আমার বউ আছে। রাতের আঁধারে নিরিবিলি জায়গায় বসে পরনারীর সমবেদনা নেবার কোন ইচ্ছে আমার নেই। আপনি আমাকে ডাকতে এসেছিলেন, কথা শেষ। এখন চলে যেতে পারেন।”

“আমার সাথে এভাবে কথা বলছেন কেন?”

“প্রেম মেশানো কোমল কন্ঠে কথা বলার জন্য নববী আছে। আর কাউকে চাই না।”

“আপনি কেন মনে করছেন আমি আপনাকে প্রেম-নিবেদন করছি? সাধারণ সমবেদনাকে এতদূর টেনে নেবার কিছু নেই।”

হাবিব কঠিন মুখে বলল,“টেনে নিতে চাইছি না বিধায় চলে যেতে বলেছি।”

মিলি উঠে দাঁড়ালো। এই ছেলেকে বশ করা সহজ কাজ নয়। এই পৃথিবীতে হাতেগোনা কয়েকজন পুরুষ থাকে, যাদের পরনারীর সাথে খুচরো আলাপের ইচ্ছে বা আকাঙ্খা নেই। তারা তাদের বউতেই সন্তুষ্ট। হাবিব উঠে দাঁড়ালো। শরিফা বেগম চুলার পাশে দাঁড়িয়ে আ’গু’নে হাত ছেঁকছেন। হাবিব তার কাছে গিয়ে বলল, “এরপর কখনও আমার দরকার পড়লে নাইমা বা কনককে বলবে।”

“ওরা ব্যস্ত ছিল বিধায় মিলিকে বলেছি। সে যাইহোক, কিছু একটু মুখে দিবি আয়।”

“খেতে ইচ্ছে করছে না।”

“চা বানিয়েছি। চা দেব?”

হাবিব চিকন গলায় না বলল। তারপর নিজের ঘরে ঢুকে দরজা আটকে দিলো। কনক তার মায়ের কাছে গিয়ে বলল, “তোমার ছেলেকে রাজি করানো সহজ হবে না।”

“হাবিব রাজি না হলে এসবের দরকার নেই।”

“তুমিও তোমার ছেলের মতো চোখে কাপড় বেঁধে ঘুরো না মা। সে আজ দু’দিন হলো বাড়ির বাড়ি গিয়েছে। একবারও তোমার ছেলের খোঁজ নিয়েছে? আমি একটু আগেই দেখে এসেছি হাবিব বারান্দায় বসে আছে। মুখ শুকনো, চোখের কোণা ভেজা।”

“যে নিজের ভালো বোঝে না, তাকে কিভাবে বোঝাতে পারি?”

“আব্বাকে বলে দেখো। আব্বা বললে হয়তো রাজি হবে। আমি তোমার জামাইকে বলেছি – ওরা সবাই রাজি আছে। এমনিতে তো হাবিব খুব ভালো ছেলে।”

শরিফা বেগম ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেললেন। মহিউদ্দিন সাহেব এ ব্যাপারে রাজি হবেন এ আশা করা যায় না৷ তবুও একবার বলে দেখা যায়।”

রাত নয়টার মতো বাজে। আনিস খেতে বসেছে। সে বেশ আরাম করে মুরগীর হাড় চিবোচ্ছে। শশুর বাড়ি থেকে যাবার কোন ইচ্ছে বা তাড়া দেখা যাচ্ছে না। বিকেলেই কনককে বলেছে, “এ বছরের আর বেশিদিন বাকি নেই। দিন ক’টা শশুরবাড়িতে কাটিয়ে গেলে মন্দ হয় না। তাছাড়া রোহানের পরীক্ষা শেষ। এরপর স্কুল খুলে গেলে তো আর আসতে পারবে না।”

কনক অখুশি হয়নি। স্বামী যে তার ওপর রেগে নেই, এতেই সে অনেক বেশি স্বস্তি পেয়েছে। শরিফা বেগম জামাইয়ের পাতে আর একটু গোশত তুলে দিলেন। আনিস বলল, “আর লাগবে না আম্মা। আপনার মেয়ে যথেষ্ট দিয়েছে। একটা কথা বলার ছিল।”

“কি কথা বাবা?”

“আমার এক বন্ধু বলল- নববীকে নাকি কোন ছেলের সাথে দেখেছে। মার্কেটে ঘুরছে। সে তো হাবিবের বিয়েতে এসেছিল। তাই ওকে চিনতে পারল।”

শরিফা বেগম ভ্রু কুঁচকে ফেললেন। নববীর এমন স্বভাব নেই। সে এ ধরণের কাজ করতে পারে না। নববীকে পছন্দ না করলেও তিনি এমন কথা বিশ্বাস করতে পারলেন না। কঠিন মুখে বললেন, “হয়তো ওর ভাইয়ের সাথে গেছিল। তুমি খাওয়া-দাওয়া করো। এসব ভাবতে হবে না।”

আনিস কনকের দিকে তাকিয়ে ইশারা করল। কনক মা’য়ের পেছনে চলে গেল। মহিউদ্দিন সাহেব এশার নামাজের পর সোহেলের ক’ব’র জিয়ারত করেন। আজ করতে পারেননি। একটা কাজে বাইরে গিয়েছিলেন। ফিরতে দেরি হয়ে গেছে। বাড়ি ঢোকার পরপর সে ক’ব’রের কাছে গেল। খানিকক্ষণ দোয়া কালাম পড়ার পর হঠাৎ খেয়াল করল মাটিতে একটা কিছু পড়ে আছে। আবছা অন্ধকারে জিনিসটা চকচক করছে। তিনি নিচু হয়ে বস্তুটা হাতে তুলে নিলেন। ভালোমতো খেয়াল করে দেখলেন- এটা একটা আংটি। সোনার মাঝে দামী পাথর বসানো। এ ধরনের আংটি তাদের বাড়ির কেউ পরে বলে তার জানা নেই। কিন্তু এখানে বাইরের কে আসতে পারে? সোহলের ক’ব’র বাড়ির ভেতরে। বেশিরভাগ সদর দরজায় তালা মা’রা থাকে। হয়তো কেউ জিয়ারত করতে এসেছিল। তিনি আংটিটা নিজের পকেটে রেখে দিলেন। রাতে শোবার পর শরিফা বেগম বললেন, “আমি একটা কথা ভেবেছি।”

মহিউদ্দিন সাহেব ভাবলেশহীন গলায় বললেন, “কি কথা?”

“নববী মেয়েটার ভাগ্যলক্ষী ভালো না। ছেলেটা পর্যন্ত দেখে রাখতে পারল না। ও-ই মেয়ে দিয়ে আর ঘরসংসার হবে মনে হয় না। আমি বলি কি হাবিবকে আর একটা বিয়ে দেন। সে রকম হলে নববীও থাকল।”

“হাবিবকে কে বিয়ে করবে?”

“কনকের ননদ মিলির কথা ভাবছিলাম। কনক নিজেই বলেছে। বোধহয় আনিসও রাজি আছে।”

মহিউদ্দিন সাহেব শক্ত গলায় বললেন, “আমিও একটা কথা ভাবলাম। তোমাকেও তা’লা’ক দেওয়ার সময় হয়ে এসেছে। স্ত্রী হিসেবে তুমি ভালোই, তবে মা হিসাবে ব্যর্থ। নিজের মেয়েকে ঠিকমতো শিক্ষা দিতে পারোনি। একটা অ’ন্যা’য় প্রস্তাবের প্রতিবাদ না করে তাতে সায় দিয়ে আমার কাছে বলছ? এই চিনেছ আমাকে?”

শরিফা বেগম সত্যিকার অর্থে নিভে গেলেন। ভগ্ন দৃষ্টিতে স্বামীর দিকে তাকিয়ে বললেন, “আপনি এ কথা বলতে পারলেন?”

“না বলার তো কিছু নেই। ছেলের মৃ’ত্যুতে নববী দায়ী হলে মেয়ের বিগড়ে যাবার জন্য কি তুমি দায়ী নও? আর একটা কথা, তোমার মেয়ে জামাইকে বলবে- এ বাড়িতে থাকতে হলে যেন নিজেদের স্বভাব পরিবর্তন করে। আমি কি করতে পারি তা তো আগেই জানো।”

শরিফা বেগম কথার জবাব দিলেন না। তার চোখ জ্বালা করছে। তিনি একটু পাশ ফিরে শুয়ে পড়লেন। চোখের পানি দেখাতে চান না বোধহয়।

নববী দরজা খুলল রাত একটার সময়। হাবিব মাফলার দিয়ে মুখ ঢেকে রেখেছে। দু’হাতে বেশ কয়েকটা কাগজের ব্যাগ। নববী চেঁচিয়ে উঠল, “এতো রাতে তুমি? কোন সমস্যা হয়েছে?”

“তোমাকে দেখতে এসেছি। ঘরে ঢুকতে দেবে না?”

নববী সারা শরীরের হিমশীতল বাতাস বয়ে গেল। গায়ের লোম খাড়া হয়ে গিয়েছে। সে দরজা ছেড়ে দাঁড়ালো। ভেজা গলায় বলল, “ভেতরে আসো।”

হাবিব বলল, “দু-দিন কষ্ট দেবার জন্য ক্ষমা চাইতে আসিনি। যে আমায় রেখে চলে আসতে পারে, সে আমায় ছাড়া থাকতেও পারে। কেমন আছো তুমি?”

“এতক্ষণ ভালো ছিলাম না। তোমাকে দেখার পর ভালো লাগছে।”

“রাত-বিরেতে এভাবে দরজা খোলা ঠিক না। যে কেউ আসতে পারত।”

“সন্ধ্যার দিকে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুম ভেঙে গেছে। বাকিরা ঘুম তাই আমিই দরজা খুললাম। ছিদ্র দিয়ে দেখে নিয়েছি।”

হাবিব নববীর মাথায় টোকা দিলো। হাত ধরে কাছে টেনে নিয়ে বলল, “শুনলাম এখন ভালো আছো। ভালো থাকলে দু’কাপ চা বানাও। ভীষণ চায়ের তেষ্টা পাচ্ছে। দু’দিন ধরে চা পান করা হয়নি।”

নববী অদ্ভুত চোখে তাকালো। পায়ের আঙুলের ওপর ভর করে দাঁড়িয়ে হাবিবের কপাল স্পর্শ করল। ভালোবাসার কোমল স্পর্শ। যার জন্য একটা পুরুষ আজীবন তৃষিত থাকে। নববী বেশ অনেকটা চিনি দিয়ে দুকাপ চা বানালো। এলাচ আর তেজপাতা ছিড়ে দিয়ে পানি ফুটিয়েছে। চা কম পায়েস বেশি মনে হচ্ছে। তবে খেতে ভালো লাগছে। দূর আকাশে চাঁদের প্রথম চতুর্থাংশ দেখা যাচ্ছে। এতটুকু চাঁদের এতো জোছনা হয় কিভাবে? জানালার পাশে বসতে আলাদা আলোর প্রয়োজন পড়ছে না।

নাইমার ঘুম ভাঙলো ভোর রাতে। সে বিছানায় উঠে বসল। আগামীকাল পরীক্ষা আছে, বিশেষ কোন পরীক্ষা নয়। তবুও সে ভীষণ সিরিয়াস। হাত-মুখ ধুয়ে ঘরের বাতি জ্বালালো। ফ্লাক্স থেকে এক মগ চা ঢেলে নিয়ে পড়ার টেবিলে বসল। খানিকক্ষণ পড়ার পর হঠাৎ তার মনে হলো- কেউ একজন সদর দরজা খুলছে। স্পষ্ট শব্দ শুনলো সে পা টিপে ঘর থেকে বের হলো। বেরোবার আগে বাতি নিভিয়ে দিলো। আনিস চোরের মতো সাবধানী পায়ে হেঁটে গোলাপ ঝাড়ের দিকে যাচ্ছে। সে-ও তার পিছনে হাঁটতে শুরু করল। চাঁদের আলোয় সবটা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। হেমন্তের বাতাস বরফ শীতল হয়ে জানান দিচ্ছে শীত এসে গেছে।

চলবে