প্রতিশোধের অঙ্গীকার পর্ব-২৮

0
354

#প্রতিশোধের_অঙ্গীকার
#সাদিয়া_সুলতানা_মনি
#পর্ব_আটাশ
#রহস্যের_সমাধান_০২

–আমি সেইবার পরীক্ষা শেষে কক্সবাজার গিয়েছিলাম আমার ফ্রেন্ডসদের নিয়ে। প্রথমদিন রেস্ট নিয়ে পরের দিন আমরা নেমে পরেছিলাম সমুদ্রের বুকে। সব বন্ধুরা মিলে দাপিয়ে বেড়াচ্ছিলাম সমুদ্রে। হুট করেই পেছন থেকে এক মায়াবিনীর হাসির কলকল আওয়াজে আমি থমকে যাই। ঘাড় ঘুড়িয়ে ডানে বামে খুঁজি। আমাকে আমার মায়াবিনী বেশি কষ্ট দেয় নি,,আমার থেকেই একটু দূরে সে ছিলো। সাথে তার সমবয়সী কয়েকজন মেয়ে ছিলো। কোন একটা কথায় মায়াবিনী ভীষণ হাসছিল। আর তার সেই হাসি কেড়ে নেয় আমার হাসি,,ঘুম,,খাওয়া। তার হাসিটা আমি এতোই বিভোর হয়ে দেখছিলাম যে,,কখন সে ভীরের মধ্যে হারিয়ে যায় আমি টেরও পায় না। যখন হুশ ফিরে তখন পাগলের মতো আশেপাশে তাকে খুঁজি,, কিন্তু আর পাই না তাকে। কক্সবাজারে গিয়েছিলাম আনন্দ করে স্টুডেন্ট লাইফের সমাপ্তি করতে কিন্তু সেই আনন্দ আমার আর করা হয় না। তাকে খুজে না পেয়ে আমি ভীষণই ভেঙে পরি। বলে রাখা ভালো,,আমার এতো ভেঙে পরার কারণ হলো আমি তাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম। হ্যাঁ,,লাভ এট ফার্স্ট সাইট ছিলো। জীবনে প্রথমবারের মতো কোন মেয়ে আমার মন চুরি করে নিয়ে গিয়েছিলো। তো আমায় এতো মন খারাপ করা দেখে আমার ফ্রেন্ডরা আমাকে জিজ্ঞেস করতে থাকে এর কারণ। আমি তাদের কিছু একটা বলে কাটিয়ে দেই। সবাই আমার মিথ্যা অজুহাতে বিশ্বাস করলেও করে না একজন।

–কে সে?

–আমার বেস্টফ্রেন্ড আয়মান। আমি যেমন ওর নাড়িনক্ষত্র সব জানি তেমনি ও আমার সব না বলা কথা কীভাবে করে জেনে যায়। আমার বাকি বন্ধুরা ঘুড়ার জন্য বাহিরে চলে গেলেও আমি যাই না। আমি যাই না বলো আয়মানও যায় না। সবাই চলে যাওয়ার পর আয়মান আমাকে চেপে ধরে। আমার পেট থেকে সব কথা বের করে তারপর ছাড়ে। ওই আমাকে বলে আমার এই অনুভূতির নাম হলো ভালোবাসা। জানিস সেদিন ভীষণ খুশি হয়েছিলাম। পড়ালেখা শেষ,, চাকরিও শুরু করতাম কয়েক মাস পরের থকে,,ভেবেছিলাম ঢাকায় গিয়ে যেভাবেই হোক মায়াবিনীকে খুঁজে বের করে নিজের সঙ্গিনী বানিয়ে নিবো। ঘুরাঘুরি শেষ করে ঢাকায় ফিরে আসলাম। একটা কোম্পানিতে তিনমাসের ট্রেনিংয়ের ডাক পেলাম। অফিসে যাওয়ার পথে একটা গার্লস কলেজ পরত। একদিন বাইক নিয়ে ওই কলেজের ওখান দিয়ে যাচ্ছিলাম হঠাৎ করে চোখ আটকে গেলো কলেজের গেইটে একজনের উপর। ব্যক্তিটি আমার মায়াবিনী ছিলো। নীল কালারের সালওয়ার সুট আর হিজাবে তাঁকে নীলিমা লাগছিলো। সে তার কয়েকজন বান্ধবীদের সাথে কলেজের মধ্যে ঢুকছিলো। বুঝলাম সে ওই কলেজে পড়ে। আমার মায়াবিনী আমার এতো কাছে ছিলো আর আমি জানতামও না। কথাটা আবারও জানালাম আয়মানকে। আয়মান বললো সেও দেখতে চায় আমার মায়াবিনীকে। একদিন দূর থেকে তাকে দেখালাম। সেও বললো ভাবী তার পছন্দ হয়েছে। তারপর থেকে প্রতিদিন সকালে তাড়াতাড়ি করে অফিসের জন্য বের হতাম। কিন্তু অফিসে যাওয়ার আগে প্রায়ই এক ঘন্টার মতো তার কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতাম। তাকে মন ভরে দেখলাম। আমার এই কাজ দুমাস চলে। একসময় মায়াবিনীর চোখে আমি পরি। একদিন তার এক বান্ধবীকে পাঠায় আমার কাছে,,আমি কেন “প্রতিদিন কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে থাকি আর মায়াবিনীকে কেন দেখি?” এই কথা জিজ্ঞেস করতে। তার বান্ধবীকে আমি এই প্রশ্নের উত্তর দেই না,,বরং তাকে বলে দেই মায়াবিনীকে পাঠাতে। উত্তর দিলে তাকেই দিবো আর কাউকে না। আমার কথা সে যেয়ে মায়াবিনীকে বলে। সে আসে। তার চোখেমুখে ছিলো এক প্রকারের ভয়। বুঝলাম কিছুটা ভীতু প্রকৃতির মায়াবিনী আমার।

কথাগুলো বলে থামে ব্যক্তিটি। সামনে রাখা গ্লাস থেকে পানি খেয়ে নেয়। তারপর আবার বলা শুরু
করে —

–সেও ভীতু স্বরে প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করে। আমি কোন রাখ ঢাক না রেখে আমার মনের কথা জানিয়ে দেই। সে প্রচন্ড অবাক হয়। কিছুক্ষণ পরে তাকে ভালো করে খেয়াল করে দেখার পর বুঝলাম যে,,আমার মায়াবিনী লজ্জা পেয়েছে। তার দুধে আলতা গাল গুলো হালকা লাল হয়ে গেছে। তাকে জিজ্ঞেস করলাম–“লজ্জা পাচ্ছেন বুঝি?” সে আমার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে দৌড়ে চলে যায়। আমি তার চলে যাওয়া দেখে একটু অবাক হলেও পরে হেসে দিয়েছিলাম। তারপর থেকে আস্তে আস্তে আমাদের প্রণয় শুরু হয়। সে আমাকে কখনোই ভালোবাসি কথাটা বলেনি,,কিন্তু তার লাজুক চোখের চাহনি আমাকে বুঝিয়ে দিতো সে আমাকে কতটা ভালোবাসে। আমাদের প্রণয়কালের যখন চারমাস তখন একদিন বাবা বলে গ্রামে যাবে। হুট করে গ্রামে যাওয়ার কথায় আমার পরিবারের সকলেই অবাক হয়েছিলো কিন্তু বাবার কথার উপরে কোন কথা বলতে পারতাম না আমরা কেউ-ই। তিনদিনের ছুটি নিলাম অফিস থেকে। মায়াবিনীর থেকে বিদায় নিয়ে রওনা হলাম আমার ভালোবাসার মৃত্যুপুরীতে।

কথাটা বলতে বলতে লোকটির চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পরতে থাকে।

–ততদিনে আমার চাকরি পাকাপোক্ত হয়ে যাওয়ায় ভেবেছিলাম গ্রাম থেকে এসেই মায়াবিনীকে নিজের জীবনসঙ্গিনী বানিয়ে নিবো।কিন্তু সে আশা আমার আশায় থেকে গেলো। বাবা আমায় না জানিয়েই গ্রামে তার বন্ধুর মেয়ের সাথে বিয়ে ঠিক করে ফেলেছিল। আমরা কেউই জানতাম না। গ্রামে যাওয়ার পর জানতে পারি। তখন আমি সাফসাফ মানা করে দেই। বাবা আমার অবাধ্যতা আর নিজের মানসম্মানের ভয়ে হার্ট অ্যাটাক করে বসেন। শেষে মায়ের কসমে বিয়েটা আমি করে ফেলি বাবার ঠিক করা মেয়ের সাথে। সারাজীবনের জন্য হারিয়ে ফেলি আমার মায়াবিনীকে। বিয়ে করে ঢাকায় আসার পর ভাবলাম মায়াবিনী আমায় ডিজার্ভ করে না। তার সাথে এই সম্পর্ক কন্টিনিউ করলে দুজন মেয়েকে ঠকানো হবে। মায়াবিনীর সাথে যোগাযোগ করে তাকে বলি-“আমার তাঁকে আর ভালো লাগে না,,আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে, সে যেনো আমার সাথে আর যোগাযোগ না করে” মানে না আমার মায়াবিনী। সেদিন প্রথমবারের মতো সে আমায় আলিঙ্গন করেছিলো,,জানিয়েছিল তার অব্যক্ত অনুভূতি গুলো। কিন্তু আমি ছিলাম নির্বাক। তাকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে কোন কথা না বলেই চলে এসে ছিলাম। তাকে সকল যোগাযোগ মাধ্যম থেকে ব্লক করে দিয়েছিলাম। অফিসের সামনে এসেও দাড়িয়ে থাকত আমার ভালোবাসা। আমি তাকে অদেখা করে চলে আসতাম। দুদিন পর আয়মান ফোন দিয়ে জানালো মায়াবিনী ভীষণ পাগলামি করছে। আমাকে ফোনে না পেয়ে আয়মানের নাম্বার কীভাবে যেন জোগাড় করে বলেছে-” আমি যদি তার সাথে যোগাযোগ না করি তাহলো সে সুইসাইড করবে” প্রথম ভালোবাসা তো,,তার মরার কথায় ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আয়মানের কাছে গিয়ে তাকে পুরোটা বিষয় খুলে বললাম। বললাম আমার ব্যর্থতার কথা,, অসহায়ত্বের কথা। সে আমায় আইডিয়া দিলো আমার মায়াবিনীকে চূড়ান্ত পর্যায়ে কষ্ট দিতে তাহলেই সে আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় আর নতুন করে জীবন শুরু করে। তার নাম্বার আনব্লক করে তাকে দেখা করতে বললাম। সে আসলো। আমার থেকে চূড়ান্ত পর্যায়ে অপমানিত হয়ে ভগ্ন হৃদয় নিয়ে চলে গেলো। জানিস আমি তাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য কি বলেছিলাম??

–কি বলেছিলে ভাই?

–আমি তাকে বলেছিলাম–আমি আমার ফ্রেন্ডদের সাথে বাজি ধরেছিলাম তাকে প্রেমে ফেলানোর। আমার আগে থেকেই বিয়ে ঠিক করা ছিলো তাই আমি এখন আর তার সম্পর্ক কন্টিনিউ করতে পারব না। সে আমার হাত জোর করে বলেছিলো আমার দ্বিতীয় বউ হতেও রাজি(কথাটা বলতে বলতে আবরার চোখে হাত রেখে কেঁদে ফেলে) কিন্তু আমার মাথায় তখন একটা কথাই আসছিলো যে,,আমি আমার মায়াবিনীর যোগ্য নই। সে আমার থেকে ভালো কাউকে ডিজার্ভ করে। সে আমার কোন কথায় যখন মানছিল না তখন তার বয়স নিয়ে বলি। সে আর আমি প্রায়ই সমবয়সী,,দেড় বা দুই বছরের বয়সের ডিস্টেন্স আমাদের। আমি বললাম আমার পরিবার মানবে না এই বিষয়টা। এই কথা বলার পর মায়াবিনী আর কোন কথা বলেনি,,চুপ করে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলো। তার চাহনি দেখে বুঝতে পেরেছিলাম তার জীবনের সবচেয়ে বড় কষ্টটা হয়ত আমিই দিয়েছি। অনেক লেইম এক্সকিউজ ছিলো তাকে ছাড়ার এটা। জানিস ও খুবই নাজুক প্রকৃতির ছিলো। একটু কিছু হলেই কেঁদে কেটে অস্থির হয়ে যেত। সেদিনও অনেক কষ্ট পেয়ে কাঁদছিলো,, যার কারণে মুখটা রক্তলাল হয়ে গিয়েছিলো। মনটা বলছিলো ওকে একদম বুকের ভেতর লুকিয়ে রাখি কিংবা ওকে নিয়ে দূরে কোথাও চলে যাই। যেখানে আমাদের আপন বলতে আমরা দুজনই থাকব,,আর কাউকে লাগবে না। কিন্তু এটা সম্ভব না। এসে পরেছিলাম তাকে এক আকাশ পরিমাণ কষ্ট আর ধোঁকা দিয়ে। তার কিছুদিন পরেই রাজশাহী চলে গিয়েছিলাম। তারপর আর কোন কথা বা দেখা হয়নি। অনেক উপায় ছিলো তার সাথে যোগাযোগ বা কথা বলার কিন্তু কি লাভ বল? এতে তার আর আমার দুজনের কষ্ট বাড়ত। একজনের থেকে জানতে পেরেছিলাম সে নাকি বিয়ে করে স্বামী নিয়ে দেশের বাহিরে চলে গেছে। খুশি হয়েছিলাম কথাটা শুনে। দূরে থাকুক আমার না হওয়া ভালোবাসা,,সুখে থাকুক যোগ্য ব্যক্তির সাথে।

কথাগুলো শেষ করে গ্লাসে রাখা অবশিষ্ট পানিটুকু পান করে আবরার। হ্যাঁ,,,এতক্ষণ আবরার তার অতীতের কথাই বলছিলো। কীভাবে সে কষ্ট দিয়েছে তার মায়াবিনীকে। আর এখনও প্রতিনিয়ত কষ্ট পাচ্ছে সে।

আবরারের কথা শেষ হওয়া পর হানিয়া বলতে শুরু করে–

–মৃত মানুষও বুঝি বিয়ে করে সুখে সংসার করতে পারে ভাই?

–মানে? কার কথা বলছিস?

–তোমার মায়াবিনী আর আমার ননদ স্পর্শীয়া তালুকদার আভার কথা। যে কিনা আজ থেকে দেড় বছর আগে তোমার ধোঁকা মানতে না পেরে সুইসাইড করেছিলো।

হানিয়ার কথাগুলো শুনে আবরারের পায়ের নিচে থেকে মাটি সরে যায়। তার স্পর্শ হানিয়ার ননদ?? আবরার আগে থেকে জানত জাভিয়ানের একটা বোন ছিলো আর সে এক্সিডেন্ট করে মারা গেছে। কিন্তু সে কখনোই জাভিয়ানের বোনের ছবি দেখেনি আর না নামটা শুনেছিলো জাভিয়ানের বোনের। আর কি বললো হানিয়া,,স্পর্শ সুইসাইড করেছে? এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে আর নেই তার মায়াবিনী? শুধু মাত্র তার জন্য? এতগুলো শকিং কথা নিতে পারে না আবরার। থম মেরে বসে থাকে শূন্য দৃষ্টি নিয়ে। হানিয়া তার হ্যান্ডব্যাগ থেকে ব্রাউন কালারের ডায়েরিটা বের করে আবরারের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে–

–আমি কাউকে কখনো এতটা প্রখরভাবে ভালোবাসতে দেখেনি যতটা প্রখর ভাবে ভালোবেসেছিল স্পর্শ আপু। সে তো তোমার দ্বিতীয় বউও হতে চেয়েছিলো তাও তুমি কেন তাকে ফিরিয়ে দিলে ভাই? ভালোবাসার মানুষটিকে আরেকজনের সাথে ভাগ করত সে তো রাজি ছিলো তাও কেন এমন করলে ভাই? আমার জানো তোমার প্রতি অনেক রাগ হচ্ছে আর স্পর্শ আপুর প্রতি করুণা। (ডায়েরিটা দেখিয়ে বলে হানিয়া) এটা স্পর্শ আপুর। তোমায় নিয়ে তার সকল অনুভূতি গুলো এখানে লিখে রেখেছিলো সে। চাইলে পড়তে পারো কিন্তু উনি দেশে আসার আগে ফিরিয়ে দিও। উনার একমাত্র বোনের শেষ স্মৃতি এটা। খুব যত্ন করে রাখে উনি এটা। আমার মনে হলো তোমার এটা একবার হলেও পড়া উচিত তাই দিলাম।

আবরার নির্বিকার ভাবে ডায়েরিটা হাতে নেয়। কয়েকবার হাত বুলিয়ে দেয় ডায়েরিটাতে। হানিয়া বসা থেকে উঠতে উঠতে বলে–

–আমি আসি। রাজশাহী যাওয়ার আগে এটা দিয়ে যেও।

কথাটা বলে হানিয়া বের হয়ে আসে ক্যাফে থেকে। আবরার তখনও সেখানে বসে থাকে। হানিয়া আবরারকে স্পর্শ মৃত্যুর কথাটা বলে এই কারণে যে,,সে এখনো নিজের চোখে স্পর্শকে দেখেনি। আর তাদের বিয়ের সময় জাভিয়ানের পরিবার তাদের বলেছিলো জাভিয়ানের ছোট বোন এক্সিডেন্ট করে মারা গিয়েছে কিছু বছর আগে। যেখানে তার শ্বশুর বাড়িই বলেছে তাদের মেয়ের মৃত্যুর কথা সেখানে সে কীভাবে পর্যাপ্ত প্রমাণ না পেয়ে একজন মৃত মানুষকে জীবিত বলবে? তাই হানিয়া আবরারকে স্পর্শের বেঁচে থাকার কথাটা বলে না।

হানিয়া আজ বাসার গাড়িতে আসে নি। রিকশা করে এসেছে। তাই বাড়িতে যাওয়ার জন্যও এখন রিকশার খোঁজ করছে। হানিয়া হাঁটতে হাঁটতে রিকশা খুঁজছে তখনই একটা কথা তার মাথায় আসে। রোজি বেগম তাকে বলেছিলো “জাভিয়ান স্পর্শ আপুর প্রেমিকের খোঁজ করেছিলো,,হুট করে তাঁকে খোঁজা বন্ধ করে দেয়। ” তাহলে কি জাভিয়ান আবরারের খোঁজ পেয়েছিল? আর হানিয়ার ভাই যে আবরার এটা জানার পরই কি জাভিয়ান বিয়েটাতে রাজি হয়? তাহলে কি জাভিয়ান তাকে বিয়ে করেছে নিজের বোনের হত্যার প্রতিশোধের জন্য?? তাই কি সে এতদিন হানিয়ার উপর এতো অত্যাচার করতো?? কথাটা ভেবে হানিয়ার বুক ভার হয়ে যায়। হানিয়ার হাটা থেমে যায়। সে কথাগুলো ভাবতে ভাবতে কখন যে মাঝ রাস্তায় চলে এসেছে তার খেয়ালই ছিলো না। জাভিয়ান তাকে প্রতিশোধের জন্য বিয়ে করেছে-এই কথাটাই তার মাথায় ঘুরছে। চোখগুলো অশ্রু কণায় ভরে গেছে। সে খেয়ালই করে না বিপরীতদিক থেকে হাই স্পিডে একটা ট্রাক তার দিকে ধেয়ে আসছে। সে তখনও মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে চোখের পানি ফেলতে থাকে। একসময় ট্রাকটা হানিয়ার খুব কাছে চলে আসে। যখন তার বিষয়টা খেয়ালে আসে তখন সবটাই হাতের বাহিরে চলে গেছে………

শব্দসংখ্যা~১৭১০
~~চলবে?