প্রতিশোধে প্রনয় পর্ব-০৮

0
128

#প্রতিশোধে_প্রনয়
part : 8
writer : Mohona
(do not copy please)

.

মেরিন : দিবে তো?
জন : ম্যাম আপনিও না।
মেরিন : শোনো… জন ডার্লিং, নীড় লুজারের নেশা তেমন করে হয়না। একটু … নো নো বেশি নেশা করিয়ে দাও।
জন : একটু টাফ ম্যাম।
মেরিন : নট অ্যাট অল। লুজার চৌধুরী নিজেই হেল্প করবে আমাদের।
জন : বুঝলামনা ম্যাম।
মেরিন : ড্রাগ থাকবে আইস কিউবে।
জন : এতে তো বাকিরাও মাতাল হয়ে যাবে।
মেরিন : হু কেয়ারস? আকাশে একটি নয় অসংখ্য তারা থাকে। এই পাবে একটি নয় অনেকগুলো মাতাল থাকুক।

জারির : বিয়ার প্লিজ। টু পেগ।
নীড় তাকালো জারিরের দিকে।
নীড় মনেমনে : ইচ্ছা তো করছে একে… আইডিয়া।
নীড় পিটারকে কল করলো।
পিটার : ইয়েস স্যার।
নীড় : ড্রাগস অন জারির হুদা।
পিটার : ওকে স্যার হয়ে যাবে।
নীড় রেখে দিলো।
নীড় মনেমনে : মেরিন বন্যা খানের মানসম্মানে লাগবে এমন এক উটকো মাতালের আচরণে।
রিংকি : আপনি থেকে থেকে কোথায় হারিয়ে যাচ্ছেন?
নীড় : হারাতেই তো চাইছি। হারানোর মতো কাউকে তো পাচ্ছিনা… কেউ…
নীড় চোখ পরলো মেরিনের দিকে।
নীড় : কেউ নেই যে কিনা নীড় আহমেদ চৌধুরীকে আকর্ষিত করে।
রিংকি : চোখটা ঘুরিয়ে দেখুন পেয়ে যাবেন। চারিদিকে কেবল নেশাই নেশা।
নীড় রিংকির দিকে তাকালো। ওর কোমড়ে হাত রেখে কাছে টেনে নিলো।
নীড় : সরাসরি আমি কথা বলতে পছন্দ করি।
নীড় রিংকির কপাল থেকে চিবুক পর্যন্ত আঙ্গুল দিয়ে আকিবুকি করতে করতে
বলল : ইউ ডোন্ট ওয়ান্ট লাভ ফ্রম মি। ইউ জাস্ট ওয়ান্ট দিস নাইট।
রিংকি : যদি বলি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত চাই।
নীড় ছেরে দিলো রিংকিকে।
নীড় : লাইফটাইম ওয়ার্ড ইজ সো বোরিং। ওল্ড ফ্যাশনড। তবে একদিনের ওপর বাকি দিনগুলো নির্ভর করে।

মেরিন : নিজের মনের যন্ত্রণা অন্য মেয়েকে টাচ করলে দূর হয়না তো। ইশ… যদি তোমাকে লেজে খেলাতে পারতাম লুজার চৌধুরী। বাট অমন চিপ কাজ মেরিন বন্যা খান করেনা।
জারির : হেই মেরিন।
মেরিন : শট কোথায়?
তখন একজন ওয়েটার নিয়ে এলো। দুজনের হাতে একটি করে দিলো।
মেরিন দেখলো যে গ্লাসে বরফ আছে। জনের দিকে তাকালো। জন চোখের পলক ফেলে বোঝালো যে এই বরফে নেশালো দ্রব্য নেই। মেরিন বাকা হাসি দিলো।
মেরিন মনেমনে : লুজারকে বিশ্বাস করা যায় না। এক কাজ করি… জারিরের সাথে চেইঞ্জ করে নেই। কিন্তু সেটা এই জারিরকে বুঝতে দেয়া যাবেনা। লুজার কোনো কার্সাজি প্ল্যান করে থাকলে সেটাও ফেইল হয়ে যাবে।
মেরিন খুব কৌশলে জারিরের গ্লাসটার সাথে নিজের গ্লাস পাল্টে নিলো। জারির বুঝতেও পারলোনা। মেরিন জানেও না যে জারিরের গ্লাসটা নিয়েই ও ভুল করেছে। কারন জারিরকে আসক্ত করার জন্য ওর গ্লাসে ড্রাগস মিশিয়েছে।

রিংকি নীড়ের গলা জরিয়ে ধরলো।
রিংকি : ঠিক বলেছো। লাইফটাইম ওয়ার্ডটা আসলেই বোরিং। তাহলে আজকে রাতটাই এন্টারটেইনিং করা যাক।
নীড় : আপাদত মুড নেই রাতের প্রতি। কোলাহলটা ভালো লাগছে।
○ : স্যার আপনার স্পেশাল শট রেডি।
নীড় টোকা দিয়ে সরিয়ে দিলো।
নীড় : ওই গ্লাসটা।
○ : আপনার জন্যই তো এটা বানালাম।
নীড় সেটা ফেলে দিলো।
নীড় : দাম দিয়ে দিবো। ২-৩সেকেন্ডের জন্য আমার দৃষ্টি ঘুরেছিলো। তাই ট্রাস্ট তো করতে পারিনা।
নীড় অন্য গ্লাস নিলো। সেটাতে বরফ নিলো। নীড়ও বুঝতে পারলোনা যে ও মেরিনের ফাঁদে পা দিয়েছে।
জন মনেমনে : নীড় চৌধুরী বরফ নিয়ে নিয়েছে। এখন এটা পাল্টে ফেলি। বাকি সবাইকে মাতাল করার প্রয়োজন নেই।

মেরিন মনেমনে : কিছুক্ষনের মধ্যেই ওই লুজার মাতাল হয়ে যাবে। বেচারা।
নীড় মনেমনে : কিছুক্ষনের মধ্যেই ওই জারির হুদা মাতাল হয়ে যাবে। অপমানিত হবে মেরিন বন্যা খানের হাতে।

.

একটুপর…
নীড় : এমন লাগছে কেনো? চোখে ঝাপসা কেনো লাগছে। এমন অদ্ভুত অনুভূতি কেনো হচ্ছে?
রিংকি : হেই হ্যান্ডসাম… কি হলো?
নীড় : কিছুনা। আসছি আমি।
নীড় ওয়াশরুমে গেলো। চোখেমুখে পানি দেয়ার জন্য। ওটার বরাবরই মেয়েদের ওয়াশরুম। মেরিন আরো একটু আগে থেকেই ওয়াশরুমে।
মেরিন : এমন লাগছে কেনো? সব ধোয়াশা লাগছে। আমি তো অতোটা ড্রিংকসও করিনি যে এমন লাগবে।মনেহচ্ছে নেশা চরছে। মারাত্মক নেশা। কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব? লুজার… ছারবোন ওই লুজারকে।
মেরিন ওয়াশরুম থেকে বের হলো। নীড়কে খুজতে লাগলো। টলমল পায়ে খুজছে। তখন ওর হাতে টান অনুভব করলো। ঘুরে দেখে নীড় ।
মেরিন : ইউ…
নীড় টলমল পায়ে ওকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
মেরিন : ইউ লুজার… লিভ মাই হ্যান্ড… ছারো।
নীড় মেরিনকে দেয়ালে ঠেকালো। এদিকটাতে কেউ নেই। দুজনই একে অপরকে নিভুনিভু চোখে দেখছে।
নীড় : হাউ ডেয়ার ইউ? তুমি আমাকে গ্লাসে কি মিশিয়েছো? কোন সাহসে মিশিয়েছো?
মেরিন : মেরিন বন্যার খানের অনেক সাহস। কিন্তু তুমি কেনো সাহসী হওয়ার নাটক কেনো করছো? তুমি আমার গলা চেপে ধরেছিলো। এখন আমি তোমাকে খুন করে ফেলবো।
নিজের গান বের করলো। এক হাত দিয়ে নীড়ের কলার ধরে ওর গলায় পিস্তল চেপে ধরলো। মেরিনের হাত বেসামাল হয়ে আছে। নীড় মুচকি হাসি দিলো। মেরিনের কোমড় চেপে ধরে কাছে টেনে নিজের পিস্তল বের করে ওর মুখে আঁকিবুকি করতে লাগলো। নীড়ের হাতও বেসামাল। দুজনেরই যথেষ্ট নেশা হয়ে গিয়েছে।
নীড় : পিস্তল কেবল তোমার একারই নেই। আমারও আছে।
বলেই মেরিনকে আরো কাছে টেনে নিলো। আচমকা এমনটা হওয়াতে মেরিনের হাতটা নীড়ের কলারের থেকে ওর কাধে চলে গেলো। ও নীড়ের কাধটা ধরলো। নীড় হাসলো।
নীড় : বড্ড বেসামাল তুমি।
বলতে না বলতে নীড়ও ঢুলে পরে যেতে নিলো। মেরিন নীড়ের বুকে পিস্তল দিয়ে টোকা দিতেদিতে
বলল : তুমি খুব সামাল।
বলেই মেরিন হাসলো। জোরেজোরে হাসছে। নীড় ওর চুলের গুছিটা ধরলো। ধরে মুখটা ওপরে তুলল।
নীড় : আমার ওপর হাসছো তুমি? এতো সাহস?
মেরিন : হাসবো হাসবো। আমি অনেক হাসবো। তোমাকে হারালে বড্ড হাসি পায়। মানসিক প্রশান্তি পাই। হাহা…
নীড় : হেসোনা হেসোনা…
মেরিন : কেনো? হাসবোনা কেনো মিস্টার লুজার?
নীড় : একদম আমাকে লুজার ডাকবেনা। আমি লুজার নই।
মেরিন : লুজার লুজার… লুজার
নীড় মেরিনের গাল চেপে ধরে ওর ঠোঁট জোরা দখল করে নিলো। মেরিন নীড়ের হাত খামছে ধরে সরানোর চেষ্টা করছে। সেটা নীড়ের ওপর প্রভাব ফেলল না। ধীরেধীরে নীড় ওর গলায় মুখ গুজলো। কামড় দিলো গলাতে।
নীড় : আর কখনো লুজার বলবেনা। আমি লুজার নই। তোমার মুখে লুজার শব্দটা আমার জাস্ট সহ্য হয়না। একটুও না।
মেরিন : ক্রাশ বলে… হাহাহাহা।
নীড় : তুমি আমার ক্রাশ নও… ভালোবাসা নও। বুঝেছো?
মেরিন : জানি জানি। তোমরা মানে ছেলেরা ভালোবাসতেই জানোনা। আসলে ভালোবাসা বলতে কিছু হয়ইনা।
নীড় মেরিনের মাথার সাইডে পিস্তল দিয়ে টোকা দিতেদিতে
বলল : বুদ্ধি আছে তাহলে। ভালোবাসা নিয়ে এই মন্তব্যের ক্ষেত্রে আমি একমত। স্মার্ট গার্ল।
মেরিন : থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ।
নীড় : আসলেই ভালোবাসা বলতে কিছু হয়না। ফেইক ফেইক সব ফেইক। এটার সাথে বিয়েও ফেইক।
মেরিন : আমারও তাই মনেহয়। এটাকে আমি ভোট দিলাম। কেবল ভোট না। আরো কিছু দিবো।
নীড় : কি!
মেরিন নীড়কে কিস করতে গিয়েও ফিরে এলো।
নীড় : তুমি কি করতে চাইছিলে? করলেই না বা কেনো?
মেরিন : বলছি।
বলেই নীড়ের গালে কামড় দিলো।
নীড় : কামড় দিলা কেনো?
মেরিন : কারন আমি তোমাকে কিস দিবোনা। গুলি দিবো গুলি। আই উইল কিল ইউ। আমাকে কিস কেনো করলে?
বলেই বেসামাল হাতে এলোপাথারি ভাবে গুলি চালাতে লাগলো।
নীড় : আরে আরে আরে… কি করছো কি? থামো।
মেরিন : মেরে দিবো।
ওর পিস্তলের গুলি শেষ হয়ে গেলো।
নীড় : শেষ গুলি? এখন আমি করবো।
বলেই নীড়ও গুলি করতে লাগলো। ওর হাতও বেসামাল। ওর পিস্তলের গুলিও শেষ হয়ে গেলো। এরপর দুজনে হাহা করে হাসতে লাগলো।
নীড় : পিস্তলে কেনো এক হাজার কোটি বুলেট থাকেনা?
মেরিন নীড়ের বুকে টোকা দিতেদিতে
বলল : তোমার জন্য। সব তোমার জন্য। পৃথিবীর সব অপকর্মের জন্য তুমি দায়ী। তুম…
নীড় মেরিনের হাত ধরলো।
নীড় : আমার বুকের ওপর হামলা করছো কেনো? হামম? মানুষ তো আমি নাকি। অদ্ভুত লাগে আমার।
মেরিন : অদ্ভুত!কেমন অদ্ভুত ! কি অদ্ভুত!
নীড় : এই চেহারাটা আমার দুর্বলতা ছিলো ভেবেই অদ্ভুত লাগছে।
বলেই মেরিনের হাতের ঘ্রাণ নিতে লাগলো।
মেরিন : কি করছো কি? ছারো আমার হাত… অস্বস্তি হচ্ছে আমার।
নীড় মেরিনের হাত নিজের মুঠোয় নিয়ে চুমু দিলো। এরপর হাতেও কামড় দিলো।
নীড় : তুমি যেটা বলো সেটার বিপরীত কাজ করার শান্তিই আলাদা।
মেরিন : ছারো…📢
মেরিন ছারো বলতেই নীড় ওকে কাছে টেনে নিলো। মেরিন নীড়কে থাপ্পর দিতে নিলে নীড় ওর হাত ধরলো। ওকে কাধে তুলে নিলো।
নীড় : নীড়কে আঘাত করার কথা ভাবা বোকামি। আছার মেরে ব্যাঙ বানিয়ে ফেলবো।
মেরিন : তুমি আকাশের ওপর পা কিভাবে রাখলে?আমিও রাখবো।
নীড় : তুমি কে ? কোথায় থেকে কথা বলছো?
মেরিন : জানিনা কোথায় আছি। বুঝতে পারছি যে পায়ের নিচে মাটি নেই।
নীড় : পাগল পাগল।

.

পিটার নীড়কে এবং জন মেরিনকে পাগলের মতো খুজছে। দুজনকে খুজতে খুজতে পিটার-জন একে অপরের মুখোমুখি হলো। একে অপরকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখছে।
পিটার : নীড় স্যার কোথায়?
জন : মেরিন ম্যাম কোথায়? মেরিন ম্যামের কিছু হলে তোমাকে এবং তোমার স্যারকে শ্যুট করে দিবো।
পিটার : তোমাকে আমি অতোদূর পৌছাতেই দিবোনা।
বলেই পিটার পিস্তল বের করে জনের দিকে তাক করলো। জনও পিটারের দিকে পিস্তল তাক করলো। কয়েকমুহূর্তের মধ্যে দুজনই বুঝতে পারলো যে এভাবে একে অপরের দিকে পিস্তল তাক করে লাভ নেই। সময় নষ্ট হবে। দুজনই পিস্তল নামিয়ে নিলো। দুজন মিলে নীড়-মেরিনকে খুজতে লাগলো। অবশেষে পেয়েও গেলো। নীড় এক হাটু উচু করে দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে আছে। ঘুমিয়ে আছে। মেরিন নীড়ের কোলে বসে এক হাত দিয়ে ওর কলার ধরে রেখেছে। নীড় কাধে মুখ দিয়ে ঘুমিয়ে আছে। নীড়-মেরিনকে এভাবে দেখে পিটার-জন অনেক বেশি অবাক হলো। একে অপরের দিকে তাকালো।
জন : কি করেছো তোমরা মেরিন ম্যামের সাথে?
পিটার : করেছো তো তোমরা। কিন্তু এখন তোমাদের পেছনে সময় নষ্ট করার সময় নেই। আমি স্যারকে নিয়ে যাবো।
জন : ম্যামকে নিয়ে যাওয়ার না হলে একটা হাড়ও আস্ত থাকতোনা।
পিটার-জনের চেষ্টায় ওদের দুজনের ঘুম ভেঙে গেলো। নীড়-মেরিনকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে আলাদা আলাদা ভাবে। নীড়-মেরিনের মাতলামো শুরু হয়ে গেলো। নীড় পিটারের হাল নাজেহাল করে দিচ্ছে। মেরিনও জনের হাল নাজেহাল করছে।
নীড় : বাই দোস্ত। বাই বাই।
মেরিন : ওহ মাই বেস্টফ্রেন্ড… আই উইল মিস ইউ।
দুজনের কথায় পিটার-জনের অবাক হওয়ার যেনো শেষ নেই। তবুও কোনোরকমে জোর করে ওদেরকে নিয়ে যাওয়া হলো। তবে কাজটা করতে পিটার-জনকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হলো। খুব কষ্টে সফল হলো।

.

প্রচন্ড মাথাব্যথা নিয়ে মেরিনের ঘুম ভাঙলো।
মেরিন : ওহ গড , এই মাথাব্যথা আমার জীবন নিয়ে নিবে।
মেরিন দুই হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরলো। তখন শমসের খান খাবার এবং মাথাব্যথার ঔষধ নিয়ে এলো।
শমসের : কি অবস্থা দিদিভাই?
মেরিন : জানতে চেওনা দাদুভাই। মাথাব্যথা শেষ করে দিচ্ছে।
শমসের : তাইতো ব্যবস্থা নিয়েই এসেছি।
মেরিন : কিচ্ছু খাবোনা দাদুভাই।
শমসের : কোনো কথা শুনবো না আমি। খেতেই হবে।
মেরিন : উফফ…
শমসের : খেয়ে নাও।
মেরিন : ফ্রেশ তো হতে দিবে।
মেরিন ওয়াশরুমে গেলো। হাতেমুখে, মাথায় পানি দিয়ে আয়নার দিকে তাকালো। চুল গুলো পেছনের দিকে নেয়ার সময় হাতে এবং গলাতে দাগ দেখতে পেলো।
মেরিন : স্পট! এই ২টা স্পট কিসের? এগুলো তো ছিলোনা। উফফ.. এই মাথাব্যথা।
মেরিন মনোযোগ দিয়ে দাগ ২টা দেখছে। কিছুতেই বুঝতে পারছেনা।
শমসের : দিদিভাই…
মেরিন : আসছি। দেখে তো কামড়ের দাগ মনেহচ্ছে। কামড়ের দাগ কিভাবে হতে পারে?
শমসের : দিদিভাই…
মেরিন বেরিয়ে এলো।
শমসের : খেয়ে নাও।
মেরিন : ব্রেকফাস্ট করেছো?
শমসের : হ্যা।
মেরিন : কালকে বাসায় কখন এসেছি?
শমসের : অনেক রাতে। প্রায় ৩টার দিকে জন তোমাকে নিয়ে এসেছে। কি হয়েছিলো কালকে?
মেরিন : কালকে… হার্ডডিস্ক…
শমসের : হার্ডডিস্ক? কিসের হার্ডডিস্ক?
মেরিন : সাউথ এশিয়া ডিলের।জারির দিয়েছিলো।
মেরিন খুজতে লাগলো হার্ডডিস্ক। জনকে কল করলো।
জন : ইয়েস ম্যাম…
মেরিন : হার্ডডিস্কটা কোথায়?
জন : সরি ম্যাম। জানিনা ম্যাম। আপনিতো আমার কাছে দেননি।
মেরিন : ড্যাম ইট।
বলেই মেরিন মোবাইলটা আছার মারলো। বিছানায় লাথি মারলো। গতরাতের ঘটনা একটুএকটু মনে পরতে লাগলো। মেরিন আরো রেগে গেলো।
শমসের : মাথা ঠান্ডা করো দিদিভাই।
মেরিন : একদম সম্ভব নয়। সব হয়েছে ওই লুজারের জন্য।

.

ঘুম থেকে উঠেই নীড় সিগারেট ধরিয়েছে। সাধারনত নীড় এই কাজটা করেনা।তবে মাথাব্যথা এবং গতরাতের ঘটনার জন্য মেজাজটা বিগরে আছে। সিগারেট না ধরালেই নয়। হাতের মধ্যে খামছির দাগ। নীড় একের পর এক সিগারেট ধরিয়েই যাচ্ছে। তার সাথে কল্পনা করছে গতরাতের ঘটনা গুলো। কতোটা কাছাকাছি ছিলো ওরা! অসহ্য লাগছে নীড়ের। হাতের তালু দিয়ে সিগারেট নিভিয়ে ওয়াশরুমে গেলো।।গালে কামড়ের দাগ। ঘুষি দিয়ে আয়না ভেঙে ফেলল।
নীড় : রিংকি জেরিনের কাজটা হলোনা। উফফ… সব হয়েছে ওই মেরিন বন্যা খানের জন্য। ওই হয়তো আমার ড্রিংকে কিছু মিশিয়েছিলো।। গলার কাটা হয়ে যাচ্ছে দিনদিন। গলার কাটা টাকে দ্রুত উপরে ফেলতে হবে। প্রয়োজন হলে জানে মেরে দিতে হবে।
ভেবেই গতরাতে গুলি করার কথাগুলো মাথায় এলো।
নীড় : ফেইস নষ্ট করে দিবো ওই মেয়ের। খুব অহংকার নিজের চেহারা নিয়ে।
নীড় আর সেদিন বাসা থেকে বের হলোনা।

.

পরদিন…
নীলিমা : তুমি প্রানের ডক্টর। তোমার এসব করার প্রয়োজন নেই।
তিথি : সেটা মিস্টার চৌধুরীকে বোঝান। বেকার বেকার আমার সাথে এমন করছে। প্রানতো স্কুলে। তবুও নাইন টু নাইন শিফ্ট করতে হবে আমাকে।
নীলিমা : দারাও আমি কথা বলে দেখছি।
তিথি : কথা বলো কিছু হবেনা। আপনার ছেলে কথা শোনার মানুষ মোটেও নয়। পাগল আস্ত একটা।
নীলিমা : আস্তে। এই বাড়ির দেয়ালও আমার ছেলের সাথে কথা বলে।
তিথি : রাক্ষস নাকি?
বলেই তিথি পেছনে ঘুরলো। দেখে নীড় দারিয়ে আছে। তিথি একটু ভয় পেলো।
নীড় : এটা কি ভয় নাকি ভয় পাওয়ার নাটক?
তিথি : যেটা আপনার মনেহয়। হুহ।
নীড় : আমার সামনে ন্যাকামো করে কিউট সাজার কোনো মানে নেই। সব বেকার। আপনার বায়োগ্রাফি এক্ষনি হাতে চলে আসবে। ভুলেও যদি মেরিন বন্যা খানের সাথে কোনো লিংক পাই তাহল অনুবীক্ষন যন্ত্র দিয়েও শরীরে এক টুকরো মাংস খুজে পাওয়া যাবেনা।
তিথি : কিন্তু অতো ছোট করবেন কিভাবে শুনি?
নীলিমা : এই মেয়ের কি মাথায় সমস্যা নাকি?
নীড় ওর গাল চেপে ধরে ওর মুখে পিস্তলের মাথা ঢুকিয়ে দিলো।
নীড় : বলেছি না , ন্যাকামি না।
নীলিমা : ন্যাকামি কোথায় করলো? ও তো কেবল বলল।
নীড় : তুমি আমাকে মানুষ চেনা শেখাবে? হামম?
নীলিমা চুপ হয়ে গেলো।
নীড় : এন্ড ইউ… দোয়া করো আল্লাহর কাছে।
পিটার এলো একটি ফাইল নিয়ে। সেটাতে তিথির সব রেকর্ড আছে। পুরোটা দেখে ও তিথির দিকে তাকালো।
তিথি : কি হলো? পেলেন কিছু? পুরো শহর জানে আপনার এবং মিস খানের দুশমনি চলছে। সেখানে আমি তার এজেন্ট হয়ে আসবো সেটা ভাবলেন কিভাবে? তারচেয়েও বড় কথা , আমি তো নিজের ইচ্ছায় এখানেই আসিইনি।
নীড় : রিভার্স সাইকোলজি।

.

চলবে…