প্রতিশোধে প্রনয় পর্ব-২৭+২৮+২৯

0
564

#প্রতিশোধে_প্রনয়
part : 27
writer : Mohona
(do not copy please)

.

লিও হাসলো।
লেপার্ড : কি হলো বস?
লিও : শমসের খানকে মেরিনের নাম করে বের করতে হবে।
লেপার্ড : শমসের খানকে এতোটা বোকা ভাবা কি ঠিক হবে?
লিও : অন্ধের যষ্ঠি বোঝো? মেরিন বন্যা খান হলো শমসের খানের অন্ধের যষ্ঠি। একমাত্র অবলম্বন।
লেপার্ড : কিভাবে কাজটা করবেন?
লিও : দেখতে থাকো। লিভ।
লেপার্ড চলে গেলো।

.

■ : মেরিন কি আদৌ নিজের প্রতিশোধে আছে? নাকি দুর্বল হয়ে গিয়েছে নীড়ের প্রতি। যেমন করে নীড় দুর্বল হয়েছে ওর ওপর।
□ : নীড় দুর্বল হতে পারেনা। যা করছে তার সবটাই নাটক।
■ : নীড়ের এমন নাটকের কারনটা কি?
□ : ওদের দুজনের মস্তিষ্ক পড়তে পারলে বুঝতে পারল তো লাভই হতো।
■ : ওদের বিয়ের দু মাস হতে চলল। কোন দিকেই কিছু হলোনা।
□ : আরো একটি মাস আমি দেখবো। কোনো ইমপ্রুভমেন্ট না পেলে সরাসরি মাঠে নামবো।

.

পরদিন…
নীড় : পিটার… লিও কে খুজে বের করতে হবে বাই হুক অর বাই ক্রুক। সেটাই এখন আমাদের মিশন। আমার মনেহচ্ছে লিও খেলছে। বড় কোনো পরিকল্পনা আছে ওর।
পিটার : ঠিক বলেছেন স্যার।
নীড় : শমসের খানের প্রোটেকশনের ব্যবস্থা করো। তার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করো।
পিটার : ম্যাম তাকে যথেষ্ট নিরাপত্তায় রেখেছে।
নীড় : জানি সেটা। কিন্তু আরো এক ধাপ নিরাপত্তা বারালে তো আর অসুবিধা নেই। তাইনা?
পিটার : জী স্যার। বাট হঠাৎ এর কারনটা কি?
নীড় : লিও এই বোম্ব ব্লাস্টিং করেছিলো এর পেছনে ২টা কারন থাকতে পারে। অথবা তিনটা। মেরিন এবং আমার মধ্যে দ্বন্দ সৃষ্টি করা। বোম্ব ব্লাস্টিং এর মাধ্যমে আমাদেরকে উড়িয়ে দেয়া। বিশেষ করে আমাকে উড়িয়ে দেয়া। কারন মেরিনকে তো ইনফর্ম করেই দিয়েছিলো। তৃতীয় অপশনটা হলো আমার হাতে মেরিনকে শেষ করা। তিনটাই হতে হতে রয়ে গিয়েছে। তৃতীয়টা তো প্রায়ই হয়েই গিয়েছিলো। আল্লাহর রহমতে মেরিন সুস্থ আছে। মেরিন জানিনা কেনো চুপ করে আছে। কিন্তু লিও মেরিনের এমন নিষ্ক্রিয় আচরণ মেনে নিবেনা। ও আমাদের দুশমনি বারানোর জন্য অর্থাৎ আগুনে ঘি ঢালার জন্য কিছু না কিছু ঘটাবে। শমসের খান ভিন্ন সবাই আমার চোখের সামনেই আছে। তাই সে একটি দুর্বল গুটি। সে টার্গেট হতে পারে।
পিটার : হামম।।
পিটার বেরিয়ে গেলো।
নীড় : নীলা খানের চরিত্র হয়তো খারাপ ছিলো। কিন্তু যে দাগ আমি লাগিয়েছি সেটা দূর করবো। না না না। এটা টিপিক্যাল হয়ে যাবে। মেরিনকে ভালোবাসি ওর দোষগুন নিয়েই। ওকেও তাই করতে হবে। আজকে যাওয়ার সময় ওর জন্য গিফ্ট নিয়ে যাবো। কিন্তু কি গিফ্ট নিয়ে যাবো? ওর পছন্দঅপছন্দ সম্পর্কে তো কিছুই জানিনা। আমার মনেহয়না কেউ ওর মনের কথা জানে। ওর নিজের মাবাবাও হয়তো জানতো না। ওর মাবাবার সাথে ওর দূরত্ব কেনো? ফুল নিয়ে যাবো? লালগোলাপ নিয়ে যাবো? ও কি পছন্দ করবে? গুন্ডি বউ আমার।

.

নীলিমার পায়ে ব্যথা পেয়েছে। দারাতে পারছেনা।
মেরিন : প্রান… সরো তো দেখি। তোমার এই পায়ে ব্যথা?
নীলিমা : আআ…
মেরিন : ধরলামইতো না
নীলিমা : ধরবেনা ধরবেনা…
মেরিন নীলিমার পা ধরে দিলো মোচর । নীলিমা দিলো জোরে চিৎকার।
প্রান্তিক : দীদু আমার কান।
নীলিমা : এই মেয়ে তুমি কি আমার জান নিয়ে নেবে নাকি?
মেরিন নীলিমার হাত টেনে দারা করালো।
নীলিমা : এ কেমন ডাকাতদের মতো আচরণ? তুম…
মেরিন নীলিমার মুখে টেপ মেরে দিলো।
মেরিন : তুমি নিজের পায়ে দারিয়ে আছো এবং ব্যথাও পাচ্ছোনা।
নীলিমা দেখলো।
নীলিমা : হ্যা তাইতো…
প্রান্তিক : হিহি… দীদু তুমি পুরো টমের মতো হয়ে গিয়েছো। টম যেমন ব্যথা পাওয়ার কিছুক্ষন পর দেখতে পারে। তেমন ব্যথা চলে যাওয়ার কিছুক্ষন পর বুঝতে পারো। হাহা।
নীলিমা : মজা হচ্ছে দীদুকে নিয়ে?
মেরিন : বাচ্চা… দীদু্কে নিয়ে আর মজা করোনা। কান্না করে দিবে।
বলেই মেরিন-প্রান্তিক হেসে দিলো।
নীলিমা : আমি কিন্তু খুব রেগে যাবো।
নীড় : সবাই একসাথে দেখছি। লাভ… বলো তো ব্যাগে কি আছে?
প্রান্তিক : কি আছে?
নীড় একটা খেলনা গাড়ি বের করে দিলো।
প্রান্তিক : ওয়াও রেড কার! থ্যাংক ইউ চাচ্চু।
নীড় প্রান্তিকের গাল টেনে দিয়ে ওয়েলকাম বলল। প্রান্তিক গাড়ি নিয়ে খেলতে চলে গেলো।
নীড় : মামনি… তোমার জন্য বই। তুমি খুজছিলে। আর বাবার জন্য এই ঘড়ি।
নীলিমা : প্রান ঠিক আছে। কিন্তু আমাদের জন্য তুমি নিজে কিছু কিনে নিয়ে এলে? আমি অভিভূত নই আমি অবাক।
নীড় : তোমরা জাস্ট টু মাচ।
মেরিন ম্যাগাজিন নিয়ে বসেছে আর মাছেলের ড্রামা দেখছে।
নীলিমা : উপহার সবার জন্যই আনা উচিত। নয় কি?
নীড় : মেরিন ঘরে এসো।
মেরিন : বারবার ওঠানামা করতে পারবোনা। সরি…
নীড় : ঘরে এসো।
নীলিমা চলে গেলো ওখান থেকে। মেরিন বসে ম্যাগাজিন পড়ছে।
নীড় : কোলে তুলে নিয়ে যাবো? পিঠে ব্যথা পাবে তো।
মেরিন উঠে বাহিরের দিকে পা বারালো। নীড় ওকে কাধে তুলে নিলো। ঘরে নিয়ে গেলো।
মেরিন : এগুলো কেমন অসভ্যতামো?
নীড় : এখনো তো অসভ্যতামী শুরুই করিনি ট্রাস্ট মি।
বলেই ব্যাগ থেকে গাজরার বালা বের করলো। মেরিনের হাত নিজের হাতে নিয়ে পরিয়ে দিলো। মেরিন মুচকি হাসলো।
মেরিন : পাকিস্তানি ড্রামা চলছে কি? হামম?
বলেই ওগুলো হাত থেকে খুলে পা দিয়ে লাথি দিয়ে সরিয়ে দিলো।
মেরিন : ভালোবাসার নাটক আমার সাথে নয়। আমি নীলা খান নই। আমি মেরিন বন্যা খান। গুলি চালিয়েছিলে তুমি। আমার পিঠে। আমি মারবো তোমার বুকের এই জায়গাটাতে।
নীড় ওর মাথার পেছনে ধরে কাছে টেনে ওর চোখে চোখ রাখলো।
নীড় : মেরিন… এতোদিন আমার ঘৃণা দেখেছো।আমার ঘৃণা বড্ড ভয়ংকর। কিন্তু আমার ভালোবাসা আরো ভয়ংকর। যাদেরকে ঘৃণা করি তাদেরকে তো আমি ছেরেও দেই। কিন্তু যাকে ভালোবাসি তাকে ছারিনা। তুমি আমাকে খুন করলেও আমার লাশ থেকে পিছু ছারাতে পারবেনা। তোমার ওপর আমার প্রভাব রয়েই যাবে। সেদিন বলেছিলেনা নারীর স্পর্শ ভয়ংকর… তবে মনে রেখো আমার স্পর্শ আরো ভয়ংকর।
বলেই মেরিনকে ছেরে দিলো।
মেরিন : তোমার কথার সামারি অনুযায়ী তুমি আমাকে ভালোবাসো। এই আষাঢ়ের গল্প আমাকে বিশ্বাস করতে হবে? হামম?
নীড় : বিশ্বাস করা না করা তোমার ব্যাপার। কোনো চাপ নেই।
মেরিন : ভালোবাসার গল্প বলে নিজের ভুলগুলোকে জাস্টিফাই করতে চাইছো?
নীড় : আমার কোনো কাজের জন্য আমার আফসোস নেই একটি ভিন্ন। তবে তোমাকে গুলি করাটা আউসোস নয়। কারন প্রান আমার জীবন এবং আমার ভালোবাসারও ঊর্ধ্বে। তাই তোমাকে গুলি করা নিয়ে আফসোস নেই। কারন আমিও জানি আর তুমিও জানো যে আমার জায়গায় তুমি থাকলেও একই কাজ করতে।
মেরিন : আমার গুলিতে কেউ বাঁচেনা।

.

২দিনপর…
নাবিল এবং সিমলার চোখ বাধা। ওদেরকে যথেষ্ট টর্চার করা হয়েছে। মেরিন এসে বসলো।
মেরিন : জন… চোখ খুলে দাও।
জন ওদের চোখ খুলে দিলো।
সিমলা : মমেরিন!
মেরিন : হাই সিমলা আপু।
সিমলা ভয়ে ঢোক গিলল।
মেরিন : তোমরা দুজন আমার বিশেষ অতিথি। কেমন লেগেছে আমার আপ্যায়ন? আশা করি ভালো। সিমলা আপু… আমার জান আপু। জন… এই নাবিলকে সরাও।আমি আমার আপুর সাথে কথা বলবো। কতো বছর পর দেখা…
জন নাবিলকে নিয়ে গেলো।
সিমলা : আমাকে কেনো বন্দি করে রেখেছিস? কি করেছি আমি?
মেরিন : এটা কি জানো? এটা হলো হ্যামার আর এগুলো হলো নেইল।
সিমলা : পেরেক আর হাতুরি কেনো এনেছিস?
মেরিন : প্রশ্নউত্তর খেলা খেলবো।
সিমলা : প্রশ্নউত্তর?
মেরিন : হামম। মিথ্যা উত্তরের জন্য একেকটা আঙ্গুলের ওপর একটা একটা তারকাটা মারা হবে। লাই ডিটেক্টর সেন্সর লাগানো আছে তোমার হাতে। দেখতেই তো পাচ্ছো। তাই মিথ্যা বললে বুঝবোনা ভাবা ভুল। চৌধুরী পরিবারের সাথে তোমার কি সম্পর্ক?
সিমলা : আমার কোনো সম্পর্ক নেই।
মেরিন মোবাইলের দিকে তাকালো।
মেরিন : মিথ্যা কথা বেবি।
সিমলা : সসত্যি কথা ববলছি।
মেরিন : সত্যি বলার উপহার দিচ্ছি। ওয়েট…
মেরিন সিমলার এক আঙ্গুলেরের ওপর তারকাটা রাখলো। হাতুরি দিয়ে আঘাত করতে নিলে সিমলা
বলল : বলছি বলছি… সত্যিটা বলছি।
মেরিন : বলো।
সিমলা : প্রনয়ের সাথে আমার রিলেশন ছিলো। আমার মাধ্যমে ও নীলার সাথে ফাসায়।
মেরিন : এখনো একটু মিথ্যা আছে।
সিমলা : আমি প্রনয়কে ভালোবাসতাম। প্রনয় না। আমি ওর জন্য পাগল ছিলাম। আমার মাধ্যমেই নীলার সাথে ওর পরিচিতি হয়। পরিচিতি থেকে ওরা একেঅপরের ভালো বন্ধু হয়ে ওঠে। এরপর ভালোবাসে।
মেরিন : আর তাই জেলাসী থেকে তুমি ওদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি তৈরি করো।
সিমলা : না না না… আমার জেলাসী ছিলো সেটা সত্যি। কিন্তু প্রনয় আমাকে ব্যবহার করে নীলাকে জেলাস ফিল করাতো। ওরা হানিমুনে প্যারিস গিয়েছিলো। প্রনয় সেখানে আমাকে যেতে বলে। ও নীলাকে কষ্ট দেয়ার জন্য এমনটা করে।
মেরিন : তোমার সাথে প্রনয় হানিমুন পালন করে? এটা বলতে চাইছো?
সিমলা : না মানে…
মেরিন কোনো কথা না বলো ওর এক আঙ্গুলের ওপর তারকাটা রেখে হাতুরি দিয়ে একটা আঘাত করে।
সিমলা : আহ…
ওর হাত দিয়ে রক্ত বের হয়।
মেরিন : টেল মি দ্যা ফ্যাক্ট। আমার চোখে চোখ রেখে বলো।
সিমলা : প্রনয় নীলাকে ব্যালকনিতে দার করিয়ে রাখতো।
মেরিন : আর রুমে রাখতো তোমাকে…?
সিমলা : না না… আমাকেও রুমে রাখতোনা। কিন্তু নীলাকে বোঝাতো। ওকে জেলাস ফিল করাতো। মানসিকভাবে ভেঙে দেয়ার চেষ্টা ছিলো। আহ… মেরিন আমার হাত…
মেরিন : এরপর থেকে সব সত্য বলবে। ভেজাল ছারা। জন…
জন এসে ব্যান্ডেজ করে দিলো। এরপর চলে গেলো।
মেরিন : প্রনয় আপুকে কেনো বিয়ে করেছিলো?
সিমলা : আমি সত্যি বলছি সেটা আমি জানিনা। ওকে যে মানসিকভাবে ভেঙে দিতে চেয়েছিলো সেটা কেবল আমার আন্দাজ।
মেরিন : ওদের বেডরুমেও তুমি যেতে?
সিমলা : প্রনয় ভয়ভীতি দেখিয়ে যেতে বলতো। কিন্তু… নীলাকে বোঝানো হতো যে ওই রুমে আমি এবং প্রনয় রাত কাটাচ্ছি। কিন্তু সেটা ভুল। আমি একা থাকতাম ঘরে।
মেরিন : যতোদিন আপু বেঁচে ছিলো ততোদিন এভাবে যন্ত্রণা দিয়ে গিয়েছো? ছিঃ…
সিমলা : না না। ৬মাস। কেবল ৬টা মাসই এমন হয়েছে। এর বেশি না।
মেরিন তারকাটা হাতে নিলো।
সিমলা : সত্যি বলছি মেরিন। বিশ্বাস কর আমার কথা।
মেরিন : ওদের মৃত্যুর শেষ সময়ে তোমার সাথে কোনো যোগাযোগ হয়নি?
সিমলা : প্রনয়কে মেরে ফেলার এক সপ্তাহ আগে নীলা আমায় যেতে বলে। জানতে চায় যে প্রনয় কেনো ওকে বিয়ে করেছে?
মেরিন তারকাটা দিয়ে ওর হাতে আঘাত করলো। সিমলা চিৎকার করে উঠলো।
মেরিন : আমার আপুকে খুনী বলা হচ্ছে ? এতো সাহস?
সিমলা : আমি সত্যি বলছি… প্রনয়কে নীলাই হত্যা করেছে। এক হিসেবে ভালোই করেছে। প্রনয়কে এমন ড্রাগ দেয়া হয়েছিলো যে কখনো ও উঠে বসতে পারতোনা। আমৃত্যু জড়বস্তু হয়ে থাকতো। নীলা ওকে মৃত্যু নয় মুক্তি দিয়েছে।
মেরিন সিমলার গলা চেপে ধরলো।
সিমলা : আমি সব সত্যি বলছি… বিশ্বাস কর…
মেরিন : জন…
জন ছুটে এলো।
মেরিন : ওকে বন্দি রাখো।নাবিলকে নিয়ে এসো।
নাবিলকে আনা হলো।
মেরিন : চেনো আমাকে?
নাবিল : মেরিন বন্যা খান। ভয়ংকর সুন্দরী। উফফ… কি রূপ… তোমার বোনের চেয়েও তুমি হট।
মেরিন কোনো কথা না বলে ওর হাতে তারকাটা মেরে দিলো। গলগল করে রক্ত পরছে। নাবিল হাসলো।
নাবিল : উফফ… ওয়াইল্ড… নীড় ইজ টু লাকি।
মেরিন : তোর ফাজলামোর কথা বন্ধ কর। যা প্রশ্ন করবো তার উত্তর দিবি। না হলে…
নাবিল : না হলে মেরে দিবে আমাকে? দাও। তবে তার আগে আমার তৃষ্ণাটা মিটিয়ে দিও। তোমার বোনও আমার তৃষ্ণা মেটাতে পারেনি। মনেহচ্ছে তুমি পারবে।
মেরিন ওর আরেক হাতেও তারকাটা মেরে দিলো। নাবিল এবারও হাসলে।
নাবিল : যে মরতে জানে তাকে মরার ভয় দেখানো যায়না। মৃত্যুর আগে এমন মনোহরা রূপ দেখে মরলে আমার মতো শয়তান তো জান্নাতও পরিত্যাগ করবে।
মেরিন : জন…
জন এলো।
মেরিন : নিয়ে যাও ওকে। উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখো। মাথায় একটি বুদ্ধি আসতে পারো।
নাবিল হাহা করে হাসতে লাগলো।
জন : কিছু জানা গেলো ম্যাম?
মেরিন : জানতে পারলাম কিনা জানিনা তবে বুঝতে পারলাম।
জন : কি?
মেরিন : প্রনয় আহমেদ চৌধুরী আপুকে বিয়ে করেছিলো ঘৃণার জন্য । প্রতিশোধ নিতে বিয়েটা করেছিলো। ভালোবেসে নয়। চলো দাদুর কাছে চলো।
ওরা পৌছালো খান বাড়িতে। শমসের খানকে সবটা বলল।
শমসের : এসব তো বুঝলাম। কিন্তু নীড়কে হারানোর প্ল্যানটা কি? ও তোমাকে গুলি করলো তবুও তুমি চুপ।
মেরিন : দাদুভাই… সিংহ কখনো কখনো এক পা পিছিয়ে যায়। সেটা হার মেনে নেয়ার জন্য পিছিয়ে যাওয়া নয়। দ্বিগুন বেগ এবং বল নিয়ে আক্রমন করার জন্য কাজটা করে। গুলি খাওয়াটা পজিটিভই হয়েছে। লুজারটা আবার লুজারগিরি শুরু করেছে। ভালোবেসে ফেলেছে আমায়। সিঙ্গাপুরে যে প্ল্যানটা হয়েছিলো সেটা প্রায় সাকসেসফুল।

[
সিঙ্গাপুরে…

মেরিন : নিহাল চৌধুরী তোমার ঘরে এসেছিলো?
শমসের : হ্যা। ও চায় তোমার এবং নীড়ের সম্পর্কটা ঠিক হোক। তোমরা যেনো কিছু আলাদা সময় কাটাতে পারো তাই প্ল্যান করে তোমাদের দুজনকে রেখে যেতে চায়।
মেরিন : শ্বশুরবাবার ইচ্ছা তো পূরন করতেই হয়।
শমসের : কি যা তা বলছো? তুমি নীড়ের সাথে একা থাকবে এখানে? কতোটা রিস্কি ভেবে দেখেছো?
মেরিন : নীড় অতোটা বোকা নয় যে এখানে আমার ক্ষতি করবে। কিন্তু তুমি নিহাল চৌধুরীর সঙ্গ না দিলে সে বুঝে যেতে পারে আমাদের আসল উদ্দেশ্য। তোমাকে না জানিয়েও সে প্ল্যানটা কার্যকর করতে পারতো। তোমাকে জানিয়েছে পরীক্ষা করার জন্য। তোমার উদ্দেশ্য জানতে চায়। তার সঙ্গ দিয়ে তুমি ভালো মুরুব্বী হয়ে থাকো। কেবল এটা নয় । আমার এবং নীড়ের সম্পর্ক ভালো করার জন্য নিহাল চৌধুরী যতো পরিকল্পনা তোমাকে নিয়ে করবে সবকটাতে সাকসেসফুল হতে হবে। খেলার নিয়ম পাল্টাবো।
শমসের : তারমানে তুমি একা নীড়ের সাথে এখানে থাকবে?
মেরিন : ইয়েস দাদুভাই। জন… সায়ানকে আনার চেষ্টা করো। ওর বেশি কথা বলার অভ্যাস আছে।
জন : ওকে ম্যাম।

.

জন : ম্যাম… আপনি ঠিক আছেন তো?
মেরিন : একদম ঠিক আছি। নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন এবার ধন্ধে পরে যাবে। হ্যারিকে নিয়ে যে মিথ্যাটা রটানো হয়েছিলো সেটা রদ করা হোক। সত্যিটা সামনে আসবে।
জন : ওকে ম্যাম। কিন্তু এখন এটা কেনো?
মেরিন : কারন এখন খেলা ঘুরে গিয়েছে। এখন হবে ভালোবাসার খেলা।
জন : পিটার ফিনল্যান্ড যাচ্ছে।
মেরিন : ওহ জন… মনটা খুশি করে দিলে। তীর সঠিক জায়গাতে লেগেছে। নীড় সেটা শুনেছে যেটা ওকে শোনাতে চেয়েছি।
]

শমসের : কিন্তু দিদিভাই… এটার কি কোনো গ্যারান্টি আছে যে নীড় সত্যিই তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছে?
মেরিন : ওর ভালোবাসাতে তো ওর নিজেরই ভরসা নেই। আমি কিভাবে করবো? কেনো করবো?
শমসের : তাহলে?
মেরিন : রিমেম্বার দাদুভাই… ওয়ান্স অ্যা লুজার অলওয়েজ অ্যা লুজার। হাহাহা… আমার দৃষ্টিতে তারাই লুজার হয় যারা অন্যায় করে। যারা ভালো তারা অন্যায় করেনা। তাই তারা উইনার হয়।

.

নীড় : মেরিনের নেক্সট মুভ কি হতে পারে ? মেয়েটা তো অভিমানে আছে। নিশ্চয়ই মারাত্মক কিছু পরিকল্পনা করছে। গুলি করেছি আমি। রাগটাতো থাকবেই। ঘৃণা এবং প্রতিশোধের নিচে আমি আমার ভালোবাসা চাপা পরতে দিবোনা। মেরিন আমাকে ভালোবাসুক অথবা ঘৃণা করুক ওকে আমার সাথেই থাকতে হবে। কারন আমি ওকে ভালোবাসি। আজকে বাসা থেকে বের হয়েছে বিভিন্ন প্ল্যানিং প্লটিং করেছে।
নীড়ের ফোনটা বেজে উঠলো।
পিটার : স্যার…
নীড় : বলো।
পিটার : ম্যাম খান বাড়ি এসেছিলো।
নীড় : হামম।
পিটার : বেরিয়েছে অনেকক্ষন।
নীড় : হামম।
পিটার : শমসের খান বিধ্বস্ত অবস্থায় বাসা থেকে বের হলো। পূর্বাচলের দিকে যাচ্ছে।
নীড় : হঠাৎ কেনো বের হলো? সামথিং ইজ রং। ফলো করতে থাকো। আমিও বের হচ্ছি।
নীড় রেখে দিলো। মেরিনকে কল করলো। ফোন বন্ধ বলছে। নীড় বেরিয়ে পরলো। পূর্বাচলের দিকে যাচ্ছে। সর্বোচ্চ বেগে গাড়ি চালাচ্ছে।

.

চলবে…

#প্রতিশোধে_প্রনয়
part : 28
writer : Mohona
(do not copy please)

.

শমসের খানের গাড়ির সামনে একটি গাড়ি দার করানো। গাড়ি পেছানোর চেষ্টা করলে পেছনেও রাস্তা ব্লক করা হলো।
○ : স্যার আপনি নামবেন না। আমরা দেখছি।
৪জন বডিগার্ড গাড়ি থেকে নামতে না নামতেই তাদেরকে গুলি করা হলো।
শমসের : ওহ নো… দিদিভাই কে কল করি।
লেপার্ড : খান সাহেব… ফোন করার চেষ্টা করবেন না। করলেও লাভ নেই। দেখুন নেটওয়ার্ক নেই। চুপচাপ চলে নেমে আসুন। চলুন আমাদের সাথে। ভয় নেই গুলি করবোনা।
শমসের খান ফোনের রেকর্ডার অন করলো।
শমসের : কে তুমি?
লেপার্ড : লেপার্ড ফ্রম লিও গ্যাং।
বলেই নিজের পোশাকের ‘এল’ চিহ্নের ওপর আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করলো।
শমসের : চিনি লিও গ্যাং এর চিহ্ন।
লেপার্ড : আসুন সম্মানীয় খান সাহেব।
শমসের খান বের হলো।
শমসের : আমার দিদিভাই যদি জানতে পারে শেষ করে দিবে।
লেপার্ড : পৌছাক আমাদের পর্যন্ত। চলুন।
শমসের খান লেপার্ডের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। সাবধানে নিজের ফোনটা সামনের বডিগার্ডের সামনে ফেলে গেলো। শমসের খানকে নিয়ে গেলো চোখ বেধে , হাত বেধে।
মেরিন-জন দ্রুত এসে পৌছালো। রক্তাত্ব অবস্থায় পেলো ৪জন বডিগার্ডকে একজনে পায়ে গুলি লেগেছে। সে বলল লিও গ্যাং। মেরিন শমসের ফোন পেলো। দেখে রেকর্ডার অন করা।
মেরিন : চলো জন… বেশি দুর যায়নি। আরমানদের কল করো। ওদেরকে ৪জন হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে।
মেরিন-জন ছুটলো।

লেপার্ডের গাড়ি এগিয়ে যাচ্ছে। একটু সামনেই ব্লাস্ট হলো।
শমসের : এবার তোমার কি হবে লেপার্ড? এসে পরেছে মেরিন বন্যা খান।
লেপার্ড : চুপ থাকো বুড়ো। নাহলে তুই শেষ হয়ে যাবি।
শমসের : অতঃপর বৃদ্ধ বকবক করে।
লেপার্ড : এই তোমরা নেমে দেখো।
ওরা নেমে সামনে কয়েক পা যেতেই ব্লাস্ট হলো।
লেপার্ড : মাইন লাগানো। সামনে যাওয়া যাবেনা। পেছাতে হবে। ড্রাইভিং সিট পর্যন্ত যেতে হবে। শমসের খান কে রেখে আমি এক চুলও নরবোনা। পেছন থেকে কাউকে আসতে বলি। হ্যালো… সামনের গাড়িতে এসো ড্রাইভ করতে হবে।
পেছনের গাড়িটা থেকে এলো একজন। গ্যাং এর সকলের মুখ ঢাকা তাই এটা যে নীড় সেটা লেপার্ড বুঝতে পারলোনা। পিটারও এলো। পিটার পেছনে বসলো।
লেপার্ড : দ্রুত চলো এখান থেকে।
পিটার লেপার্ডের গান ওয়ালা হাত ধরে ফেলল। লেপার্ড অন্য হাত নারাতে নিলে নীড় হাতে গুলি করে দিলো।
লেপার্ড : তোরা কারা?
শমসের : তোমরা আবার কোন পার্টি?
নীড় : তোমার পার্টি খান দাদু।
বলেই নিজের মুখটা খুলল।
লেপার্ড : নীড় আহমেদ চৌধুরী…
নীড় : অটোগ্রাফ দিতে পারবো না।
নীড় লেপার্ডকে টেনে বের করে ওর হাতপা বেধে ডিকিতে রেখে দিলো। নীড় গাড়িতে উঠতে নিলো। তখন নীড়ের হাতে গুলি এসে লাগলো। লিও গ্যাং এর অন্য একজন করেছে।
পিটার : স্যার…
নীড় দ্রুত গাড়ি স্টার্ট দিলো। প্রচন্ড বেগে চালাচ্ছে। ওর গাড়ির পেছনে লিও গ্যাং এর তিনটি গাড়ি।হাত থেকে রক্ত ঝরছে।
পিটার : স্যার আপনার হাত…
নীড় : কিছু করার নেই। গাড়ি থামানো সম্ভব নয়।
পেছন থেকে গুলি করা হচ্ছে।
জন : ম্যাম… লিও গ্যাং এর গাড়িবহর দেখা যাচ্ছে।
মেরিন গাড়ির বেগ আরো বারিয়ে দিলো।
জন : ম্যাম… সামনের গাড়িটার দিকে পেছনের গাড়িগুলো গুলি করছে।
মেরিন : সামনের গাড়িটাতে দাদুভাই আছে সম্ভবত। হেলিকপ্টারের শব্দ আসছে। দেখো তো লিও গ্যাং এর লোগো দেখা যায় কিনা?
জন : ওকে ম্যাম। দেখি দেখা যায় কিনা?
জন দেখার চেস্টা করলো।
জন : ম্যাম… ‘সিজি’ লেখা।
মেরিন : চৌধুরী গ্রুপ!
জন : ইয়েস ম্যাম।
মেরিন : এর মানে লিও গ্যাং এর সাথে হাত মিলিয়ে দাদুভাইকে কিডন্যাপ করিয়ে আমাকে শেষ ক…
মেরিনের কথা শেষ হওয়ার আগেই নীড়ের পেছনে পরে থাকা তিনটি গাড়ির দিকে পরপর আক্রমণ করা হলো। পরপর তিনটা ব্লাস্ট হলো। নীড় আগুনের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য গাড়ি বেগ বারালো। ওদিকে মেরিনের গাড়ির বেগও অনেক। ওর পেছনেও আরো ২টা গাড়ি আছে।
জন : ম্যাম ব্রেক…
মেরিন স্টিয়ারিং বাম দিকে ঘুরিয়ে ব্রেক মারলো আর এদিকে নীড় স্টিয়ারিং ডান দিকে ঘুরিয়ে ব্রেক মারলো। দুটি গাড়ি থেমে গেলো।
শমসের : দিদিভাই…
মেরিন : দাদুভাই…
মেরিন ছুটে বের হলো।
মেরিন : ঠিক আছো তুমি? কিছু করেনি তো ওরা তোমার সাথে?
পিটার : স্যার আপনি ঠিক আছেন তো?
পিটার নীড়ের হাতে রুমাল বেধে দিলো। পিটারের কথায় মেরিনের নীড়ের উপস্থিতি বোধ হলো।
শমসের : আজকে নীড় না থাকলে কিডন্যাপড হয়ে যেতাম।
নীড় : আর দোষ পরতো আমার ঘাড়ে।
মেরিন নীড়ের দিকে তাকালো।
পিটার : স্যার… হসপিটালে চলুন। বিপদ ঘটে যাবে।
নীড় : ঘটবেনা। দাদুভাই তোমাকে আমি একা আর খান বাড়িতে থাকতে দিবোনা।
শমসের : খান বাড়িই আমার জন্য সুরক্ষিত। ভুল ফোনে বের হয়েই বিপদ হয়েছে। তুমি হসপিটালে যাও।
নীড় : আপনাদেরকে না পৌছে দিয়ে আমি যাচ্ছিনা।
পিটার : ম্যাম… দ্রুত উঠে বসুন। স্যারের দিকটা বোঝার চে…
নীড় রেগে পিটারের দিকে তাকালো। পিটার চুপ হয়ে গেলো।
পিটার : সরি ম্যাম।
মেরিন : জন… দাদুভাইকে বাসায় নিয়ে যাও।
জন : ইয়েস ম্যাম।
মেরিন নিজের গাড়ির চাবি দিয়ে দিলো। জন শমসের খানকে নিয়ে চলে গেলো।
মেরিন : আরাফাত… ব্যাকসিট খালি করো। পিটারের জন্য ফ্রন্ট সিট।
আরাফাত : ওকে ম্যাম।
পিটার : এই গাড়িতেই তো যাওয়া যাবে।
মেরিন : ওটা লিওর গাড়ি। কে জানে কখন কি হয়? কি না কি সেন্সর লাগানো। আমার পক্ষের গাড়িতে যেতে সন্দেহ হলে গাড়ি অ্যারেঞ্জ করতে পারো।
পিটার : নো ম্যাম। সরি ম্যাম। চলুন।
নীড় : ডিকিতে কেউ একজন আছে। ওকে নিয়ে এসো।
মেরিন : লেপার্ড?
পিটার : লেপার্ড না প্যান্থার জানিনা ম্যাম।
তখন লিও গ্যাং এর গাড়িটা উড়ে গেলো।
নীড় : পেছনে গাইজ…
নীড় মেরিনের হাত ধরে পেছনে দৌড় দিলো।
আরাফাত : দ্রুত গাড়িতে উঠুন ম্যাম।
ওরা গাড়িতে বসলো। পিটার আরাফাতের সাথে সামনে। নীড় মেরিনের হাতের ওপর হাত রাখলো। মেরিন সরিয়ে নিলো।
মেরিন : আরাফাত… আরো জোরে চালাও। অলরেডি অনেক রক্ত বের হয়েছে।
আরাফাত : জী ম্যাম…
নীড় মেরিনকে দেখছে। মেরিন কালো চশমাটা পরে নিলে। নীড়ে মেরিনের পেছনের দিকে হাত দিয়ে ওর কোমড় জরিয়ে ধরে বসলো। মেরিন নীড়ের দিকে তাকালো। নীড় মুচকি হেসে গাড়িতে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে রইলো। মেরিন নীড়ের হাত সরাতে চাইলে নীড় আর শক্ত করে ধরলো। বড্ড অস্বস্তি হচ্ছে মেরিনের। সামনে পিটার-আরাফাত বসে আছে। সিনক্রিয়েট হতে পারে ভেবে নীড়ের হাত আর সরানোর চেষ্টা করলোনা।

.

নীলিমা : আমার খুব চিন্তা হচ্ছে নিহাল।
নিহাল : তুম…
প্রান্তিক : কেনো চিন্তা হচ্ছে দীদু! কি হয়েছে?
নিহাল-নীলিমা চুপ হয়ে গেলো।
প্রান্তিক : কি হলো?
নিহাল : হয়েছে কি দাদুভাই চ…
প্রান্তিক : চাচ্চু… কি হয়েছে তোমার চাচ্চু? আর্ম স্লিং কেনো পরেছো? হাতে কি হয়েছে?
নীড় : চাচ্চু না অফিসে সিড়িতে পরে গিয়েছি। তাই হাতে ব্যথা পেয়েছি। তাই ডক্টর এটা লাগিয়ে দিলো।
প্রান্তিক : চাচ্চু কি সত্যি বলছে মামমাম?
মেরিন : হামম।
প্রান্তিক : হাতে বেশি ব্যথা করছে না তো চাচ্চু?
নীড় : নাো লাভ।
নীলিমার চোখে পানি ভাসছে।
নীড় : এই ব্যথা নিয়ে বারবার জিজ্ঞেস করাটা কিন্তু ঠিক হবেনা।
নিহাল বুঝতে পারলো যে নীড় কি বোঝাতে চেয়েছে। নীলিমার কাধে হাত রেখে ঠান্ডা হতে বলল।
প্রান্তিক : ঠিক হবেনা কেনো?
নীড় : আরো বেশি ব্যথা করবে তাই।
প্রান্তিক : হিহি…
নিহাল : দাদুভাই… চাচ্চুর এখন রেস্টের প্রয়োজন। নাহলে সত্যিসত্যি ব্যথা বেরে যাবে যে।
প্রান্তিক : হ্যা তাই তাই।
নীড়-মেরিন ঘরে গেলো।
মেরিন : গাড়িতে অমন লোফারদের মতো আচরণ করছিলে কেনো?
নীড় মেরিনের কোমড় জরিয়ে ধরে কাছে টেনে
বলল : এই আচরণের কথা বললে বুঝে? প্রতিটি হাজবেন্ডের অধিকার থাকে স্ত্রীর সাথে লোফারগিরি করার।
মেরিন : কোমড় থেকে হাত সরাও। আমি আহত শত্রুর ওপর আক্রমণ করিনা।
নীড় হাসলো।
নীড় : তুমি নিজেকে আয়নায় দেখেছো? নেশা আছে তোমার মধ্যে।
মেরিন : সেদিন সায়ানের মুখে কথাগুলো শুনে বুঝি ইচ্ছা করছে আমার সাথে রোম্যান্স করার? আমার স্পর্শ তো ঘৃণা ধরায়।
নীড় : স্পর্শ তো এখনো ঘৃণা হয়। স্পর্শ খুব খারাপ। স্পর্শ থেকে কাছে টানার ইচ্ছা জাগে।
মেরিন : নিজের ইচ্ছা নিজের কাছেই রাখো।
মেরিন সরে এলো।

.

পরদিন…
মেরিন : তুমি আমার অনুমতি ছারা বাসা থেকে কেনো বের হয়েছো?
শমসের : দিদিভাই… এটাতে কিন্তু আমি বাধ্য নই।
মেরিন : অফকোর্স তুমি বাধ্য। আমরা এখন যে মোমেন্টে দারিয়ে আছি সেই অনুযায়ী তুমি বাধ্য। ডোন্ট ইউ ডেয়ার টু ডু দিস এগেইন। তুমি এবং প্রান ছারা খান আর কেউ নেই । একে তো তোমার লাইফ রিস্ক ছিলো। তারওপর এই অঘটনার জন্য ওই নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন টন্ট মারার সুযোগ পাবে। ওর বুকে গুলি চালাতে গেলে আমার আত্মা আমাকে বলবে যে ও তোর দাদুভাইয়েপ প্রান বাঁচিয়েছে।
শমসের : কে বলতে পারে এটা ওর প্ল্যান নয়? লিওর সাথে ও মিলিতও থাকতে পারে?
মেরিন : লিও দুই পরিবারেরই শত্রু। আন্ডারওয়ার্ল্ডে খোজ নেয়া হয়েছে। ওর মোটিভই ২টা পরিবারকে ধ্বংস করা।
শমসের : সেটাও নীড়ের প্ল্যান হলে?
মেরিন : আন্ডারওয়ার্ল্ডের সাথে নীড়ের কোনো কানেকশন নেই। আমি বিনাদোষে কাউকে অপরাধী বলিনা সেটা তুমি বেশ ভালোভাবেই জানো।
শমসের : জানি। তবে… নীড়কে নিয়ে কনসার্ন দেখতে পাচ্ছি।
মেরিন : তুমি তোমার ছেলের মতো আচরণ করছো। আসছি আমি। আমাে না জানিয়েয়ে আমার অনুমতি ছারা বের হবেনা। না মানে না। আমি অনেকটা এগিয়ে গিয়েছি। আমার সম্মান , আমার জেদ সবটা বাজি লাগিয়ে আমি এই পর্যন্ত এসেছি। পিছু হটতে পারবোনা।তুমি আমার দুর্বলতা দাদুভাই। আমি চাইনা সেই দুর্বলতার কেউ সুযোগ নিক। তাই তোমাকে সুরক্ষিত থাকতে হবে।
মেরিন বেরিয়ে গেলো।
শমসের : মেরিন তো এখন আমার নিয়ন্ত্রনেও নেই। অবশ্য ও ঠিকই বলছে। আমাকে দিয়ে ওকে ব্ল্যাকমেইল করানো সম্ভব। ওকে না বলে বের হওয়া যাবেনা। আমি চাইলেও বের হতে পারবোনা। গার্ডরা নিশ্চয়ই ওর অর্ডার ভিন্ন আমাকে বের হতে দিবেনা। না না না মেরিনের মাথা আর গরম করা যাবেনা। এমনিতেই এতোএতো টেনশন ওর মাথায়। এর মধ্যে আমার উচিত হবেনা ওকে টেনশন দেয়ার।

.

রাতে…
নীড় : আমাকে কি শার্টটা চেইঞ্জ করতে সাহায্য করা হবে?
মেরিন : তোমার পিটারকে ডেকে নাও।
নীড় : পিটার আমার বউ না যে ওর সাহায্য নিয়ে শার্ট চেইঞ্জ করবো।
মেরিন : সকালে তো করিয়েছো।
নীড় : তখন বউটা বাসায় ছিলোনা। তাই… প্লিজ বেগম। দেখো আমি নিজের ভালো কাজের কথা উল্লেখ করিয়ে কাজটা করাতে চাইনা।
মেরিন : রাবিশ…
মেরিন এগিয়ে এলো। শার্টের বোতামগুলো খুলতে লাগলো।
নীড় : সো রোম্যান্টিক রোম্যান্টিক… তুমি এতো কাছে এলে কিন্তু আরো কাছে টেনে নিতে ইচ্ছা করে।
মেরিন : নিজেকে কিশোর ভাবা বন্ধ করো।
মেরিন অন্য শার্ট পরিয়ে দিলো। নীড় ওকে দেখছে।
নীড় : ভালোবাসি।
মেরিন নীড়ের দিকে তাকালো।
নীড় : এভাবে দেখোনা। ভয়ংকর দৃষ্টি তোমার।
আকাশ-ইমান : সরি সরি সরি।
নীড় : ড্রামাবাজের দল…
ইমান : নক করা উচিত ছিলো। আসলে দরজা খোলা তো তাই এসেছি। সরি।
নীড় : এসেই যখন পরেছিস তখন আর কি করার? বস।
মেরিনের ফোনে জনের কল এলো। ও ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।
মেরিন : বলো…
জন : কমন ফ্রেন্ড আলি আব্বাস।
মেরিন : বন্ধুদের নামই সামনে আসছে একেএকে। সবাই মুখোশ পরে আছে। লিজার্ডের এন্ট্রি হলো?
জন : ইয়েস ম্যাম।
মেরিন : এতো দ্রুত এন্ট্রি নিতে পারলো?
জন : ম্যাম… ২৫দিন কম সময়ও নয়।
মেরিন : ডাউট হচ্ছে জন। সেইফ এক্সিট পাবে তো?
জন : দেখি কি হয়।
মেরিন : রাখছি…
আকাশ : ভাবি…
মেরিন : হামম? নীড় ডাকছে।
ইমান : আমরা আসছি।
মেরিন : মাত্রই তো এলে।
ইমান : আসলে ঘটনাটির কথা জানতে পেরে এসেছি। জরুরী কাজ আছে। আসছি।
ওরা চলে গেলো। মেরিন রুমে ঢুকে দেখে নীড় নিজের কাধে হাত বুলাচ্ছে।
মেরিন : আর ইউ ওকে?
নীড় : নট সো।
মেরিন বেডে উঠে নীড় পেছনে হাটতে ভর করে দারালো।
মেরিন : সোজা হও…
নীড় সোজা হয়ে বসলো। মেরিন নীড়ের কাধের মাসাজ করতে লাগলো। নীড় আয়নার দিকে তাকালো। মেরিনকে দেখা যাচ্ছে।
মেরিন : একটা কথার উত্তর দিবে?
নীড় : জিজ্ঞেস করে দেখো।
মেরিন : হঠাৎ এমন কি ঘটলো যে লিভ ইনে থাকা মেয়ের সাথে ভালোবাসার খেলা খেলতে ইচ্ছা হলো?
নীড় : তোমার প্রশ্নের উত্তর হলো আমার পাল্টা প্রশ্ন। লিভইনে থাকার , ফিওনসের মরে যাওয়ার মিথ্যা কথা কেনো বললে?
মেরিন আয়নার দিকে তাকালো। নীড়ের চোখের দিকে দেখলো।
নীড় : এতো বোকা তুমি নও যে কথাটা অস্বীকার করবে।
মেরিন হাসলো।
মেরিন : আনইউজড ভেবে ইচ্ছা হলো একটু ইউজড করা যাক। রাইট?
নীড় : সরি… আমার শব্দের ওপর আমার নিয়ন্ত্রন ছিলোনা।
মেরিন : তুমি সরি বলছো। কেয়ামতের নিশানা নয়তো! অবাস্তব ঘটনা।
নীড় : আসলেই অবাস্তব ঘটনা। নীড় কখনো নিজের কাজের জন্য সরি বলেনা। বিষয়টা বউ তথা ভালোবাসার জন্য হলে আলাদা। আমি জাস্ট মেনে নিতে পারিনি বিষয়টা। আমার ভালোবাসা কাউকে ভালোবাসতো বা কেউ আমার ভালোবাসার কাছাকাছি এসেছে সেই ভাবনাটা আমার বুকে ছুরি চালাতো। তাই মনের কাছে বাধ্য হয়ে আমি কাজটা করেছি। সরি জান…
মেরিন নিজের মুখটা নীড়ের কানের সামনে নিলো। আয়নাতে দুজন দুজনের চোখের দিকে তাকিয়েই আছে।
মেরিন : আমি ভালোবাসা মানিইনা। কারন ভালোবাসাতে কেউ রূপ নিখুত চায় আবার কেউ গুন , কেউ নিখুত চরিত্র চায়। নশ্বর পৃথিবীতে কোনো কিছুই নিখুত হয়না। তবুও সবাই ভালােবাসায় সবকিছু নিখুত চায়। তাই ভালােবাসা একটা ধোকা। কোনো পুরুষ নেই যে কোনো পতিতালয়ের মেয়েকে সত্যিকারের ভালোবাসতে পারে। কোনো নারী নেই ১০০০জন নারীর জীবন নষ্ট করে ভালো পথে আসা পুরুষকে সত্যিসত্যি ভালোবাসতে পারে। কোনো নারী বা পুরুষ নিজের মাবাবার হত্যাকারীকেও ভালোবাসতে পারেনা। কোনো নারী বা পুুরুষ নিজের সঙ্গী একবার ধোকা দিলে তাকে ভালো হবার দ্বিতীয় সুযোগ দিতে পারেনা। ভালোবেসে কেউ কারো মারাত্মক ভুল ক্ষমা করতে পারেনা । অতঃপর ভালোবাসা বলতে কিছু নেই। সবটাই আকর্ষণ , চোখের নেশা এবং কামনা-বাসনার সংমিশ্রণ।
নিজের কথা শেষ করে মেরিন সরে আসতে নিলে নীড় মেরিনের মাথা ধরলো।
নীড় : না কখনো কখনো কাউক ভালোবেসেছো , না ভালোবাসার সংস্পর্শে এসেছো। তবে ভালোবাসায় কেনো এতো অনীহা? কেনো এতো অরুচি?
মেরিন : খুব কৌতহল তোমার আমাকে নিয়ে। বলেই দিচ্ছি মনে রেখো। ভালােবাসা অপ্রিয়ই ছিলো। কিন্তু ভালোলাগার কারনেই ভালোবাসায় অনীহা চলে এসেছে।
বলেই মেরিন ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। নীড় যথেষ্ট অবাক হলো।
নীড় : কি বলে গেলো মেরিন? এর অর্থ কি হতে পারে? ভালোলাগার কারনেই ভালোবাসায় অনীহা চলে এসেছে! কেউ কি ওর ভালোলাগা ছিলো? যার কোনো আচরণে কষ্ট পেয়ে ভালোবাসার প্রতি অনীহা চলে এসেছে! ভালোবাসার প্রতি আমার ঘৃণা এসেছিলো মেরিনের থেকে কষ্ট পাওয়ার কারনে। ওর সাথেও কি কিছু হয়েছিলো!

.

৩দিনপর…
আলি আব্বাস মেরিনের সামনে বসে আছে।
মেরিন : আংকেল… কি খবর?
আব্বাস : মামনি তুমি!
মেরিন : হ্যা। আমি। ভালো আছেন?
আব্বাস : এসব কি হচ্ছে ? কেনো হচ্ছে ? তুম…
মেরিন : স্টপ ইট। কবির ফয়সাল খান এবং কনিকা খানের গাড়ির ব্রেকফেইল করার পেছনে আপনার হাত ছিলো। আপনি খানদের বন্ধু নন শত্রু।
আব্বাস : কি বলছো কি মামনি? আম…
মেরিন ছুরি দিয়ে আলি আব্বাসের আঙ্গুলে আঘাত করলো।
মেরিন : শত্রুদের চেয়েও গিরগিটিদেরকে আমি বেশি ঘৃণা করি। শত্রুর শত্রুকে বন্ধু বানানোর থিওরিটাও আমি বিশ্বাস করিনা। সাপের গালে এবং ব্যাঙের গালে একসাথে চুমু খাওয়া যায়না। চৌধুরী এবং খান দুই পরিবারের সাথে একসাথে বন্ধুত্ব করা যায়না। একজন বন্ধু হলেও অপরজন শত্রু না হলেও বন্ধু তো হতে পারেনা। এই বন্ধু বন্ধু খেলার উদ্দেশ্যটা কি?
আব্বাস : আআমি কিছু বুঝতে পারছিনা।
মেরিন : নাটক আমার পছন্দ নয়। যা বলার সত্যিসত্যি বলুন। বন্ধু নাকি শত্রু? না বললে মাথাটা আলাদা হয়ে যাবে। না না সরি সরি। এতো সহজ মৃত্যু না। হাত পা চোখ একটা একটা করে কাটা হবে। তিন থেকে এক গুনা পর্যন্ত বলবেন। বন্ধু না শত্রু? তিন… দু…
আব্বাস : শত্রু… আমি দুই পরিবারেরই শত্রু।
মেরিন : ভালো লাগলো।

.

চলবে…

#প্রতিশোধে_প্রনয়
part : 29
writer : Mohona
(do not copy please)

.

মেরিন : ভালো লাগলো। বন্ধু সেজে কেনো ছিলেন? কেনো?
আব্বাস : যেনো দুই পরিবারের গোপন তথ্য জানতে পারি।
মেরিন : এতে আপনার লাভ?
আব্বাস : ওদেরকে আমার পছন্দ নয় তাই।শমসের খান এবং শাহজাহান চৌধুরী… এদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৪৫ বছর আগে আমার বাবা মারা যায়। সেদিন থেকে আমি দুই পরিবারকে অভিশাপ দিতে থাকি।
মেরিন : বন্ধু কিভাবে হয়ে উঠলেন এতো ঘৃণা নিয়ে?
আব্বাস চুপ করে রইলো।
মেরিন : কিভাবে?
আব্বাস : হয়েছি এক ভাবে।
মেরিন তার একটা আঙ্গুল কেটে ফেলল। আব্বাস ছটফট করতে লাগলো।
মেরিন : টেল মি দ্যা ট্রুথ।
আব্বাস : আমাকে কেউ একজন বলেছিলো।
মেরিন : নাম কি তার?
আব্বাস : শচীন নামের একজন।
মেরিন : কে সে?
আব্বাস : জানিনা।
মেরিন : না জেনে তার কথা শুনলেন কিভাবে? আকাশবানী পাঠাতো? হামম?
আব্বাস : তার সাথে এমনি একদিন দেখা হয় প্রায় ১০-১২বছর আগে
মেরিন : কেমন দেখতে?
আব্বাস : দাড়ি ছিলো বড়বড়। আর গোফও।
মেরিন : জন…
জন : ইয়েস ম্যাম?
মেরিন : স্কেচ আর্টিস্ট লাগবে।
জন : ওকে ম্যাম।
মেরিন : শেষ প্রশ্ন… কার চেহারা প্লাস্টিক সার্জারি হয়েছিলো? কে প্রনয় আহমেদ চৌধুরী সেজে ছিলো?
আব্বাস একটু অবাক হয়ে মেরিনের দিকে তাকালো।
আব্বাস : তুমি কিভাবে জানলে যে ওটা প্রনয় ছিলোনা?
মেরিন : সেটা আপনার জানার কথা নয়। প্রশ্ন না উত্তর চাই।
আব্বাস : আমি জানি না কাকে সাজানো হয়েছিলো প্রনয় আহমেদ চৌধুরী। কিন্তু জানতাম যে ওটা ডুপ্লিকেট ছিলো। ডুপ্লিকেট প্রনয়কে একটা ড্রাগ ইনজেক্ট করা হলে ও জড়বস্তুর ন্যায় হয়ে যায়। একদিকে নীলা বুঝতে পেরে যায় যে ওটা প্রনয় নয় অন্যদিকে ডুপ্লিকেট প্রনয়ের সাথে অমন হয়। শচীন রেগে যায়। সন্দেহ করে নীলার ওপর। ওটা যে প্রনয় নয় সেটা নীলা বলে। কিন্তু নীলার কথা কেউ বিশ্বাস করেনা। এরপর কিসব যেনো হয় নীলা নিজের ওপর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ডুপ্লিকেট প্রনয়কে মেরে ফেলে। আমি সঠিক জানিনা। আমি দেশের বাহিরে ছিলাম।
মেরিন : আপু মেরেছিলো ওই ডুপ্লিকেটকে?
আব্বাস : হ্যা। নীলাকে তো চরিত্রহীনা সাজানো হয়েছিলোই। ওই ডুপ্লিকেটকে হত্যা করে খুনীও প্রমান হয়ে যায়।
মেরিন : ওদের বেডরুমে আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট কেনো?
আব্বাস : ডুপ্লিকেট প্রনয়কে দেখতে যাওয়া তো হতো।

.

রাতে…
মেরিন বারান্দায় রকিং চেয়ারে বসে আছে কপালে হাত দিয়ে।
ভাবছে : সিমলা আপুর বর্ণনা শুনে এটা তো স্পষ্ট যে প্রনয় আহমেদ চৌধুরী প্রতিশোধ নেয়ার জন্য আপুকে ভালোবাসার জালে ফাসিয়ে বিয়ে করে। পরবর্তীতে সাধু কেনো হয়ে যায়? ভালোবেসে ফেলে কি? আসল প্রনয় আহমেদ কোথায় তবে? জীবীত নাকি মৃত? জীবীত হলেই বা সে আসবেনা কেনো? এই দুই পরিবারে শত্রুতার সুযোগ অনেকেই নিয়েছে। তৃতীয় , চতুর্থ , পঞ্চম থেকে অগনিত। কিন্তু প্রকৃত শত্রুটা কে? হতে পারে? কি লাভ তার? এই পারিবারিক ঝামেলায় আমার জরানোয় উচিত হয়নি। খানদের সাথেও আমার কোনো লেনাদেনা নেই। তাদের কেবল রক্তটাই আছে শরীরে। প্রানের জন্য কেবল জরিয়ে পরা। এতো গভীর পর্যন্ত চলে এসেছি। সেগুলো সব তুলে ধরে চৌধুরীদের মুখের ওপর প্রমান ছুরে মেরে চলে যাবো প্রানকে নিয়ে। এই অসুস্থ পরিবেশ থেকে প্রানকে দূরে রাখবো।
মাথায় কারো পরশ পেলো। কপালের ওপর থেকে হাত সরিয়ে চোখ মেলে নীড়কে দেখতে পেলো। নীড় ওর কপালে চুমু দিলো।
নীড় : চিন্তিত লাগছে। আমাকে নিয়ে টেনশনে আছো বুঝি?
মেরিন : ইন ইউর ড্রিম।
মেরিন উঠে দারালো। নীড়কে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে নীড় ওই পাশেই দারালো। আবার ডান দিক দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে নীড় সেদিকেই গেলো।
মেরিন : কি হচ্ছে?
নীড় : কথা বলার চেষ্টা।
মেরিন এক পা পিছিয়ে দারালো।
মেরিন : বলো যা কথা বলার আছে।
নীড় এগিয়ে যেতে যেতে
বলল : পার্সোনাল কথা। দূর দারিয়ে বলা যাবেনা।
মেরিন নীড়ের বুকে হাত রেখে ওকে থামিয়ে দিলো।
মেরিন : এক হাত এখনো গলায় ঝুলছে। আরো একটা গলায় ঝুলানোর ইচ্ছা আছে কি?
নীড় : তুমি বুকে হাত দিয়ে আমাকে আটকানোর চেষ্টা করলে নাকি আমাকে আরো কাছে টানার পদ্ধতি অবলম্বন করলে বুঝতে পারলাম না।
নীড় মেরিনের হাতের ওপর হাত রাখলো।
নীড় : আমার এক হাত যথেষ্ট তোমাকে বন্দি করার জন্য।
মেরিন নীড়কে সজোরে ধাক্কা দিয়ে সরে এলো।
নীড় : জান… তুমি আমার সকল রূপ দেখেছো গত কয়েক মাসে। মানে বিয়ের আগ থেকে এই পর্যন্ত সময়ের মধ্যে। আমার ভয়ংকর রূপও কিন্তু দেখেছো। তুম…
মেরিন : সেটাতো তুমিও আমার দেখেছো।
নীড় : আমার কথা শেষ হয়নি জান… আমি ঘৃণা করে যদি ভয়ংকর হতে পারি তাহলে আমার ভালোবাসা আরো বেশি ভয়ংকর। ভালোবেসে মিষ্টি কথাই বলতে হবে সেটার পক্ষে আমি নই। চরিত্র নিয়ে অনেক বাজেবাজে কথা বলেছি বলে আমি আমার সুপ নরম রেখে কথা বলছি। নাহলে…
মেরিন : না হলে? না হলে কি মিস্টার লুজার? বলো…
নীড় : বোঝার চেষ্টা করো কি বলছি।
মেরিন নীড়ের বুকে টোকা দিতে দিতে বলল : তুমি বোঝার চেষ্টা করো। আমি কোনো অবলা নারী নই। হাতপা চালাতে আমিও পরি। মুখ বুজে সহ্য করার মতো মেয়ে আমিও নই।। তুমি পুরুষত্ব দেখাবে আর আমি ভয়ে কাজুমাজু হয়ে থাকবো? নো নেভার। আমার দাদুভাইয়ের জীবন বাঁচিয়েছো। না হলে আরো একটা হাতও ভেঙে দিতাম। যদিও এটাকে এতো বড় ভাবার কিছু নেই। আমাকে শ্যুট করেছো অথচ আমার দাদুভাইকে বাঁচিয়েছো। দারুন গেইম প্ল্যান।
বলেই মেরিন ঘুরে ঘরের দিকে পা বারালো। নীড় মেরিনের জামার গলার পেছনের দিকে ধরে সামনে আনলো।
মেরিন : কি হচ্ছে টা কি ছারো।
নীড় : কয়েকদিন হয়ে গেলো তোমার জামার গলাটা ছেরা হয়না। তাই ভাবলাম…
বলেই নীড় এক টানে ছিরে ফেলল। মেরিন দেয়ালকে ঢাল করে দারালো। নীড় এগিয়ে গিয়ে ওর এক পাশে হাত রাখলো।
নীড় : হাজবেন্ড হয়েছি বলে ওয়াইফের টন্টগুলো শুনছি। ওয়াইফকে রেসপেক্ট করছি। মেয়েদের দৃষ্টিতে এটাকে জেন্টালম্যান বলে। এই ঘরের ভেতরে অপমান , অপদস্ত , ইগো হার্ট যা করার করো। এই ঘরের বাহিরে এগুলো কিছু করোনা। আর আমাকে ছেরে যাওয়ার কথাও ভেবোনা। না হলে পুরুষত্ব দেখাবো কি না জানিনা তবে রোম্যান্স করবো। রোম্যান্সে তোমার বড্ড ভয়। সেটা প্রথমদিন কাছে এসেই বুঝেছিলাম। তখনই আমার বোঝা উচিত ছিলো আমিই তোমার জীবনের প্রথম পুরুষ। যাইহোক , আমি তোমাকে ভালোবাসি। বর্তমানে আমাদের মধ্যে যতোটুকু দূরত্ব আছে সেটা নিয়েও সারাজীবন আমি থাকতে পারবো। তোমাকে প্রতিদিন দেখে আমি সারাজীবন কাটিয়ে দিতে পারবো। কিন্তু এর চেয়ে দূরে অর্থাৎ আমার থেকে দূরে যাওয়ার চিন্তা ভুলেও মাথায় এনোনা। সেটা আমি মেনে নিবোনা। আমি তোমাকে আমার থেকে দূরে যেতে দিবোনা। হিংস্র মোড অন হয়ে যাবে। নিজের স্ত্রীকে তথা ভালোবাসাকে নিজের কাছে নিজের করে রাখার জন্য যতোটা ভয়ংকর হওয়া যায় ততোটা ভয়ংকর হবো আমি। তারচেয়েও বেশি হবো। কারন আমি তোমাকে ভালোবাসি।
নীড় সরে এলো। মেরিন তাকিয়ে আছে নীড়ের দিকে।
নীড় : যে তোমার ভালোলাগাকে নষ্ট করে ভালোবাসার মনোভাবও ধ্বংস করেছে তাকে ছারবোনা। শাস্তি দিবো।
মেরিন হাসলো।
মেরিন : তোমার এই ভালোবাসা ক্ষনিকের। কালকে একজনের সাথে রুমডেটে যাবো সাথেসাথে এই ভালোবাসা উড়ে যাবে।
নীড় : কার সাহস হবে আমার স্ত্রীর সাথে রুমডেটে যাওয়ার? শোনো… তোমার অতীতের ওপর আমার হাত নেই। কিন্তু বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ সুন্দর করার চেষ্টা আমি করতে পারি।

.

পরদিন…
জন : ম্যাম…এই যে শচীনের ছবি।
মেরিন মনোযোগ দিয়ে দেখছে।
মেরিন : সবসময় চশমা পরতো?
জন : হ্যা। কালো চশমা।
মেরিন : চশমা সরানো গেলেও আসল চোখ কেমন হতে পারে সেটাই ভাবার বিষয়। ছবিটার একটা কপি আমাকে দিয়ে রেখো।
জন : ওকে ম্যাম।
মেরিন : ডালিমকে যে লিজার্ড বানিয়ে পাঠানো হলো সেটাকে কতোটুকু কার্যকর বলে তোমার মনে হয়?
জন : জানিনা ম্যাম। প্রেডিক্ট করতে পারছিনা।
মেরিন : প্রেডিক্ট করতে তো আমিও পারছিনা। তবে মাত্র ২৫দিনের চেষ্টায় এমন একটা গ্যাং এ ঢুকে যাওয়া আমাকে একটু ভাবাচ্ছে। ভীসন ধূর্ত ওই লিও। ডালিমের সাথে যোগাযোগ করার কোনো প্রস্তুতি আছে কি?
জন : ওকে বলা হয়েছে যে সুযোগ পেলে যেনো ও যোগাযোগ করে। তবে যোগাযোগটা কোড ল্যাংগুয়েজে করে।

.

নীড়ের আর্ম স্লিং খোলানো হলো। ব্যান্ডেজ খোলা হলো।
নীড় : যন্ত্রণাটা দূর হলো। লিও গ্যাং এ কি নিজেদের লোক ঢোকানো যায় না?
পিটার : অনেক টাফ। সময় সাপেক্ষ।
নীড় : যদি সময় নিয়ে করানো যায় তবুও তো ভালো।
নীড়-পিটারের কথা মেরিন শুনতে পেলো। সরে গিয়ে জনকে কল করলো।
মেরিন : হ্যালো জন…
জন : ইয়েস ম্যাম।
মেরিন : ডালিমের কোনো খোজ পেলে? যোগাযোগ করতে পারলে? মানে ও কি করেছে?
জন : না ম্যাম। কোনো সমস্যা ?
মেরিন : না সমস্যা নেই। তবে নীড়ও কাউকে লিও গ্যাং এ ঢোকানোর পরিকল্পনা করছে।
জন : ওহ।
মেরিন : আচ্ছা রাখছি।
মেরিন রেখে দিলো।
প্রান্তিক : মামমাম…
মেরিন : ইয়েস লাভ?
প্রান্তিক : স্কুল থেকে না আমাদেরকে সামার ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে। আমি যাবো।
মেরিন প্রান্তিককে কোলে নিলো।
মেরিন : সামার ক্যাম্পে যাওয়ার হলে আমরা সবাই মিলে যাবো। স্কুলের সাথে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
প্রান্তিক : কিন্তু কেনো?
নীড় : কারন আমরা তোমাকে মিস করবো। খুব বেশি মিস করবো। তোমাকে না দেখে থাকবো কিভাবে বলো তো?
প্রান্তিক : আমি তো চলেই আসবো।
মেরিন : চলে তো আসবে। কিন্তু ৩-৪দিন থাকবে। তোমাকে না দেখে কিভাবে থাকবো বলো তো? আমি তো কান্নাই করে দিবো।
নীড় : আর আমিও।
প্রান্তিক : না না না। তোমরা না বলো আমি ব্রেইভ বয়।
নীড়-মেরিন : অফকোর্স।
প্রান্তিক : তাহলে আমাকে কেনো যেতে দিবেনা?
নীড় : তোমাকে মিস করবো বলে যেতে দিবোনা লাভ।
প্রান্তিক : কিন্তু আমি যাবো যাবো যাবো। আমার সব ফ্রেন্ডরা যাবে। আমিও যাবো যাবো যাবো।
বলেই প্রান্তিক মেরিনের কোল থেকে নেমে দৌড়ে চলে গেলো।
মেরিন : প্রান… বাচ্চা…
নীড় : লাভ…
নীড়-মেরিন একে অপরের দিকে তাকালো।
মেরিন : তুমি কিন্তু হ্যা বলবেনা বলে দিচ্ছি।
নীড় : আমি তোমার অমতে কোনো কাজ করতে পারি বলো!
মেরিন : অসহ্যকর।
নীড় হাসলো।

.

পরদিন…
মেরিন গাড়িতে উঠলো। দেখে নীড় বসে আছে। মেরিন খেয়াল করে দেখলো যে এটা ওরই গাড়ি।
মেরিন : এটা আমার গাড়ি।
নীড় : জানি আমি সেটা।
মেরিন : তাহলে আমার গাড়িতে কেনো?
নীড় : কারন আমার গাড়িতে উঠতে বললে তুমি উঠবেনা।
মেরিন : আমার গাড়িতে আমি তোমাকে অ্যালাউ করবোনা।
নীড় : করো না করো। আমি জোর করে হলেও যাবো। তোমাকে অফিসে নিয়ে যাবো এবং অফিস থেকে পিক করে আসবো।
মেরিন : আমার লাইফটা নাইন টু ফাইভ বোরিং ডিউটির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
নীড় : জানি। আর সে কারনেই তুমি আমার বউ।
মেরিন : আমার মুভমেন্ট জানার জন্য এসব করছো বুঝি? পরবর্তী পদক্ষেপ জানার চেষ্টা করছো বুঝি?
নীড় : তোমার আল্টিমেট উদ্দেশ্য আমাকে বরবাদ করা। বিজনেস রাইভাল হিসেবে সেটা তোমাকে করতে দিবোনা। ভালোবেসে বাধা দিবো। যাইহোক সেদিকে যাবোনা। আমার শত্রু সংখ্যা অনেক। শত্রু তোমারও আছে। কমন শত্রুও আছে। কমন বন্ধুরূপী শত্রুও আছে। আমি তোমার লাইফ রিস্ক আছে। আছে আমারও। আমার যা হওয়ার হোক আমি পরোয়া করি না। আমার অবর্তমানে তুমি প্রানকে ভালোভাবে সামলাতে পারবে। তাই মৃত্যুতে ভয় নেই। যদিও তোমার সাথে জীবন কাটানোর তীব্র ইচ্ছা রয়েছে। তোমাকে বিপদে আমি দেখতে পারবোনা , তোমাকে হারাতেও পারবোনা।কখন কে হামলা করবে সেই ভয়ে আমি থাকতে পারবোনা। তোমাকে হারানোর ভয় নিয়ে বাঁচা সম্ভব নয়।
মেরিন : ভাসন শেষ হলে নামো।
নীড় : চেষ্টা করে দেখো আমাকে ছারা তুমি যেতে পারো কিনা…
মেরিন : নীড় আমার দেরি হচ্ছে।
নীড় : বসো…
মেরিন : নামো।
নীড় : না।
মেরিন : আমি অন্য গাড়ি নিয়ে বের হবো।
নীড় : আমি সেটাতেও উঠবো। বসো ফ্রন্ট সিটে।
নীড় ড্রাইভিং সিটে বসলো পাশে মেরিন। পিটার ৪-৫জন নিয়ে পেছনের গাড়িতে আছে ওদের পেছনে।
মেরিন : নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করার কারন?
নীড় মেরিনের হাতের ওপর হাত রাখলো।
নীড় : একটু রোম্যান্স করতেকরতে বাসা থেকে বের হওয়া যাবে।
মেরিন নীড়ের হাতে কামড় দিলো। নিজের হাত ছারিয়ে নিলো।
নীড় : কামড় কিন্তু আমিও দিতে পারি।
মেরিন : চুপচাপ ড্রাইভ করো।
নীড় : তোমাকে একটি গুরুত্বপূর্ন কথা বলার আছে মেরিন।
মেরিন : আমার কোনো আগ্রহ নেই।
নীড় : আমাদের উচিত হবেনা আমাদের অর্থাৎ খান-চৌধুরীদের কমন ফ্রেন্ডদেরকে বিশ্বাস করা যাবেনা। আমি চাইনা আমার এবং তোমার মধ্যে কারো মাধ্যমে কোনো ঝামেলা হোক। এই মোমেন্টে আমি কাউকে বিলিভ করিনা। নিজের মামনিকেও না। কারন মামনি তোমাকে অপছন্দ করে।
মেরিন নীড়ের দিকে তাকালো।
মেরিন : মাইন্ড গেইম খেলছো আমার সাথে?
নীড় : আগে খেলতাম সবার সাথে। তোমার সাথেও। এখন সবার নাম থেকে তোমার নামটা বাদ হয়ে গিয়েছে।

.

লিও : কট ইউ…
লিজার্ড চমকে উঠলো।
লিজার্ড : বস আপনি…
লিও : হ্যা আমি। এসেছো থেকে আমার মুখ দেখার চেষ্টাই করছো। এখানে দারিয়েও সেই চেষ্টা করছিলে। তাইনা?
লিজার্ড : না মানে বস… কৌতহল তো থেকেই যায়।
লিও : তা ঠিক। এসো ভেতরে এসো।
লিজার্ড বেশ বুঝতে পারছে যে ও হয়তো ধরা পরে গিয়েছে। ও জনের নাম্বার ডায়াল করে রাখলো।
লিও : বসো…
লিজার্ড বসলো।
লিও : তোমার আমাকে দেখার খুব ইচ্ছা… তাইনা?
লিজার্ড : সরি বস…
লিও : নো নো। ডোন্ট বি। ওয়েট অ্যা মিনিট।
লিও নিজের মুখ থেকে মাস্কটা খুলল।
লিজার্ড : আপনি! আপনি তো…
লিও লিজার্ডের গলা চেপে ধরে জিহ্বা বের করে কেটে ফেলল। ছটফট করতে লাগলো।
লিও : খুব চালাক তুই আর তোর মেরিন ম্যাম তাইনা?
জন : ড্যাম ইট।
লিও : জন… তোর পাঠানো এই লিজার্ডকে আমি জানে মারবোনা। ইউজলেস করে পাঠিয়ে দিবো।
বলেই লিজার্ডের তথা ডালিমের ফোনটা নিয়ে আছার মারলো। নিজের ফোন দিয়ে মেরিনকে কল করলো। অচেনা নাম্বার দেখে মেরিনের কপালে ভাঁজ পরলো।
নীড় : কার কল?
মেরিন : তোমাকে কেনো বলবো?
নীড় : তুমি নিজেই তো জানোনা।
মেরিন : হ্যালো…
লিও : হ্যালো মেরিন বন্যা খান।
মেরিন : কে?
লিও : ভাবো…
মেরিন : লিও?
লিও : ইয়েস ডিয়ার ইয়েস।
মেরিন : ডোন্ট কল মি ডিয়ার লিও।
নীড় গাড়িটা থামালো। মেরিনের ফোনটা স্পিকারে দিলো। মেরিন রেগে তাকালো নীড়ের দিকে। নীড় ইশারা দিয়ে চুপ থাকতে বলল।
লিও : খুব চালাক ভাবো নিজেকে তাইনা? তোমার পাঠানো লিজার্ড মানে ডালিমকে জীবীত পাঠাবো তোমার কাছে। কিন্তু ইউজলেস করে। তোমার হাজবেন্ড পাশে বসে আছে তো। ও যে চেষ্টা করছে আমার গ্যাং এ লোক ঢোকানোর সেটাও সম্ভব হবেনা। বুঝতে পেরেছো? আমার পর্যন্ত পৌছাতে হলে শেষ হয়ে যাবে। আমি তোমাদের থেকে এগিয়েই থাকবো।
বলেই লিও রেখে দিলো।
মেরিন : ড্যাম ইট।
নীড় : কে এই লিও?
মেরিন : প্রনয় আহমেদ চৌধুরী…
নীড় : অন্ধকারে তীর চালানোর চেষ্টা কি আমাকে অপ্রস্তুত করা?
মেরিন : স্টার্ট দ্যা কার।
নীড় গাড়ি স্টার্ট দিলো।

টাইগার : বস…
লিও : বলো।
টাইগার : সিমলা , নাবিল এবং আলি আব্বাস কিডন্যাপড। নীড় অথবা মেরিন করিয়েছে।
লিও : মেরিন করিয়েছে। আলি আব্বাসকে খারাপ ঠিক আছে। কিন্তু ওর বাঁচা মরায় আমার কিছু যায় আসেনা। কিন্তু সিমলা এবং নাবিলকে মরতে হবে। কিন্তু আমি একটা কথা কিছুতেই বুঝতে পারছিনা।
টাইগার : কি বস?
লিও : যেই নাবিলকে আমি কোথাও খুজে পেলাম না তাকে মেরিন কিভাবে পেলো?

.

☆ : নীলা… নীলা নীলা নীলা… আমার আদুরি সোনা…
মানসিক ভারসাম্য হারানো নীলা তাকালো মানুষটির দিকে।
☆ : কেমন আছো সোনামনি…
নীলা : আমি… খুব মজাদার আছি।
☆ : তোমার এই বিকৃত দশা আমাকে খুব শান্তি দেয়। তোমাকে বরবাদ করেছি। তোমার পরিবারও বরবাদ হয়েছে। একটি কোণা রয়ে গিয়েছে কেবল। সেটাও থাকবেনা। নিজের হাতে শেষ করবো।
নীলা : আচ্ছা… হিহিহি।
হাসির জন্য নীলাকে থাপ্পর মারা হলো।
☆ : তোর হাসি আমার সহ্য হয় না। বুঝলি?
নীলা আবারো হাসলো।

.

চলবে…