আমার ললিতা পর্ব-৩৫+৩৬+৩৭

0
265

#আমার_ললিতা
#পর্ব:৩৫
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া

“বেলীর বিয়ের কথা ভাবছেন মানে?মেয়েটা তো এখনও পড়াশোনা করছে।তাছাড়া শশীর বিয়ে হয়নি।সেখানে ছোট মেয়ের বিয়ের কথা চিন্তা করার কারণ কী?”

“সব কথা তোমাকে কৈফিয়ত দেওয়ার ইচ্ছা আমার হয়না রেবেকা।আমার বুদ্ধি তোমার থেকে অনেক বেশী।তাই ছোট মস্তিস্ককে প্রেশার দিয়ে সবকিছুতে কিন্তু,কেন এসব আনবেনা।”

স্বামীর কাছে শুরু থেকে এক ধরণের তাচ্ছিল্য ব্যবহার পেয়ে এসেছে রেবেকা।বিয়ের সময় তার বয়স ছিল কম।দাদী কানে কানে বলে দিয়েছিলো স্বামীর সব কথা মান্য করার জন্য।এজন্য সারাজীবন খুব একটা উচ্চবাচ্য করেনি।তোফাজ্জলের ‘রাবিশ’ শব্দের আড়ালে নিজের সবধরনের যুক্তিমূলক কথা আড়াল করে ফেলেছে।সে শেষবার প্রতিবাদ করেছিলো বেলীকে জন্ম দেওয়ার আগে।যদি সে শক্ত না থাকতো তাহলে মেয়েটা পৃথিবীর মুখ দেখতো না।ভাবলে গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায় রেবেকা।

“আমি বেলীর মা।এখন ওর বিয়ের বয়স হয়নি।”

“বেশী কথা বললে মুখ বন্ধ করে দিবো একেবারে।আমি যা বলছি তাই হবে।ওকে দেখতে আসবে পাত্রপক্ষ।”

“এর ফলে শশীর উপর কী প্রভাব আসবে ভেবে দেখেছেন?মানুষ বলবে মেয়েটার মধ্যে নিশ্চয় কোনো দোষ আছে।এজন্য ছোট বোনের আগে বিয়ে হয়ে গেলো।এতো জেদ ভালো নয় তোফাজ্জল।আমার মেয়ে বেলী।আপনি তো চাননি কখনো পৃথিবীতে আসুক।”

“ভরণপোষণ নিজে করোনি।তাই এসব আজগুবি কথাবার্তা বলবেনা।আমি বাসায় এ নিয়ে কোনো ঝামেলা চাচ্ছি না।বেলীকে বুঝিয়ে দিবে।আর হ্যা আমার মুখে মুখে তর্ক করা বন্ধ করো।এই যোগ্যতা তোমার নেই।”

চোখে চশমাটা লাগিয়ে বের হয়ে গেলো তোফাজ্জল।রেবেকা তার স্ত্রী।কিন্তু সহধর্মিণীকে যে সম্মান দিতে হয় তা কখনো দেয়নি সে।তার কাছে বিয়ের মানে হলো একটা বাড়তি মানুষের জীবনের দায়িত্ব নেওয়া।স্রেফ বংশবৃদ্ধি আর কামনার চাহিদা ছাড়া বিয়ের আর কোনো মানে নেই।জানালা দিয়ে মৃদু রোদ আসছে বিছানার উপর।রেবেকা উদাস হয়ে সেই একফালি রোদ পানে তাঁকিয়ে আছে।জীবনের মানে সত্যই নেই তার কাছে।তবে মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলো বেলীর সঙ্গে খারাপ কিছু সে হতে দিবেনা।মেয়েটা এমনিতে জন্ম নেওয়ার পর থেকে কষ্ট ভোগ করে চলেছে।বাকী জীবন যেন সুখে বসবাস করতে পারে এজন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবে।এজন্য যদি সংসারও ভেঙে যায় তবুও রাজী সে।মাতৃমন কেঁদে উঠে তার।সহসা বেলীর কণ্ঠ শুনতে পেলো। স্বীয় কক্ষ থেকে মা সম্বোধনে ডাকছে তাকে। চোখের কার্ণিশে জমে থাকা অশ্রু কণা মুছে নিয়ে সেদিকে পা বাড়ালো।

হন্তদন্ত হয়ে বেলী সবকিছু গুছিয়ে চলেছে।আজ একটা প্রোগ্রাম আছে ভার্সিটিতে।সেজন্য গোলাপি রঙের শাড়ীকে থিম হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।সকালে উঠতে দেরী হওয়ায় সময় মতো তৈরী হতে পারেনি।সে আজ সেখানে উপস্থাপনা করবে।রেবেকা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের মেয়েকে দেখছে।মেয়েটা প্রথাগত বিচারে সুন্দরী খেতাম হয়তো পাবেনা।বেশ রোগা,গায়ের রঙটা ওতো বেশী উজ্জ্বল না।শুধু মাথার চুলগুলো বেশ সুন্দর।বেলীর সবথেকে সুন্দর জিনিস হলে তার ঠোঁটদুটো।পাবদা মাছের মতোন মনে হয় রেবেকার নিকট।বাঁকানো মসৃণ দুটো মাছ যেন।হাসলে মনে হয় স্বচ্ছ পানিতে মাছেরা নৃত্যে মত্ত্ব।

“এজন্য আমি সকাল থেকে ডেকে চলেছিলাম।আরো ঘুমিয়ে নে।”

“দেরী হয়ে গিয়েছে অনেক।আমাকে কেমন লাগছে?”

“ভালো।”

“শুধু ভালো?”

রেবেকা ভুরু জোড়া কুঞ্চিত করে শুধালো,

“তাহলে কী বলবো আর?”

বেলীর জানে তার মা অনেক কিছু বলতে সক্ষম।কিন্তু সন্তানের প্রশংসাতে সে ছোট ছোট শব্দ বা বাক্য ব্যবহার করে।হাতের মধ্যে সাদা চুড়ি গুলো পরতে গেলে বেলী খেয়াল করলো সেগুলো হাতে ছোট হচ্ছে।হতাশ সুরে বলল,

“এগুলো তো অনেক বেশী ছোট হয়ে গেলো।কাল কেনার সময় বুঝিনি।হাতটা খালি রাখতে হবে এখন।”

“অন্য চুড়ি নেই?শশীর থেকে চেয়ে নে।”

“আপুর গুলো বড় হবে।থাক এভাবে চলে যাবো।আমাকে কিছু টাকা দাও তো।হাত একেবারে খালি হয়ে গিয়েছে।”

“অনলের কাছে চাকরিটাতে কিন্তু বেশ সুবিধা ছিল।”

“হাহ!মা তুমি চিনো না।উনি অনেক শয়তান।”

“চরিত্রে দোষ আছে?”

“নেই।”

নিজের এই জবাবে বেলী অবাক হলো।সে নিজেই তো অনলকে সারাদিন চরিত্রহীন বলে।তাহলে মায়ের সামনে কেন বলতে পারলো না?বেলী ভাবনাটা দ্রুত মাথা থেকে সরিয়ে দিলো।

“শশীর সঙ্গে বিয়েটা হলে ভালো হতো।কিন্তু না করে দিলো।”

“আমি এখন বের হচ্ছি মা।”

“কয়েকটা ছবি তুলে রাখিস নিজের।”

বেলী বের হয়ে গেলো দ্রুত। যদি জ্যাম লাগে রাস্তায় তাহলে অনেক দেরী হয়ে যাবে যেতে।হঠাৎ আজ মনটা বেশ ভালো।সদর দরজায় দাঁড়িয়ে অনলের বাসার পানে তাঁকালো।এটা সে কেন করলো?

(***)

“হাতটা খালি কেন?”

পুরুষালি কণ্ঠে চমকে উঠেছিলো বেলী।সে দ্রুত পিছন ফিরে তাঁকালো।অনল পকেটে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছে।কালো রঙের শার্টটাতে বেশ সুন্দর লাগছে।বেলী মাঝেমধ্যে বিভ্রান্ত হয়।এতো সুন্দর পুরুষটা তাকে কীভাবে ভালোবাসার কথা বলে?

“আপনি এখানে কেন?বহিরাগত প্রবেশ নিষেধ ছিল।”

“তোমার ডিপার্টমেন্টের এক স্যার আমার ঘনিষ্ঠ মানুষ। ওনার সুবাদে এসেছি।ধারণা ছিল তুমি শাড়ী পরবে। দেখার লোভ সামলাতে পারিনি।”

“আপনি ভীষণ ঢং করেন অনল।”

আশেপাশে তাঁকালো বেলী।কাওকে না দেখতে পেয়ে স্বস্তিবোধ করলো।একটু পর প্রোগ্রাম শুরু হবে।ফাঁকা করিডোরে সে নিজেকে একটু প্রস্তুত করে নিচ্ছিলো।চলে যেতে নিবে তখন অনল হাতখানা ধরলো।

“কী চাই?”

“তোমাকে।তবে আপাতত হাতটা দিলে হবে।”

কিছু বোঝার আগে অনল পকেট থেকে একটা বাক্স বের করলো।এক হাতটা ধরে রেখেছে এখনও।কৌতুহলী বেলী সেদিকে তাঁকিয়ে আছে।চমৎকার দুটো চুড়ি বের করলো অনল।সাদা রঙের পাথর বসানো।অতি সন্তপর্ণে অনল হাতখানাতে ঢুকিয়ে দিলো।বেশ সুন্দর দেখাচ্ছে।যেন বেলীর জন্যই বানানো।

“বহুদিন আগে কানাডা থেকে কিনেছিলাম তোমার জন্য।আজ উপলক্ষ পেয়ে গেলাম।সিমিলার মা আর রাহিমার কাছেও আছে।”

হতভম্ব বেলী হাতখানা নেড়েচেড়ে দেখতে লাগলো।

“আমাকে কেন?”

“উত্তর তোমার জানা আমার ললিতা।”

“আমি নিতে পারবো না।”

চুড়ি গুলো খোলার চেষ্টা করলো বেলী।কিন্তু আশ্চর্য সে পারছেনা।হঠাৎ খেয়াল করলো চুড়ি গুলো এক বিশেষ কায়দায় বানানো।ঢুকানো গেলেও বের করতে গেলে হাতে ব্যাথা লাগছে।

“এটা খুলবো কীভাবে?”

অনলের চোখেমুখে কুটিল হাসি ফুটে উঠলো।মেয়েটার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,

“আমি জানি তুমি কতো শয়তান।এজন্য এভাবে তৈরী করা।যাই হোক বেস্ট অফ লাক।কানে ফুল থাকলে বেশী সুন্দর লাগবে।আর অন্য ছেলে তা দেখলে আমার ভীষণ লাগবে।”

“দেখেন আপনি যদি ভেবে থাকেন যে আমি আপনাকে ভালোবাসবো তাহলে সেই চিন্তা বাদ দেন।স্বপ্নেও আপনি আমাকে পাবেন না।”

এতো বড় কথায় অনলের মুখ ভঙ্গিমার কোনো পরিবর্তন হলো না।সে হেসে নিজের মুখটা বেলীর কানের কাছে নিয়ে এলো।এতো সন্নিকটে পুরুষটি আসায় হৃদয়ে মৃদু কম্পনবোধ হলো মেয়েটার।অনল অস্পষ্ট সুরে বলল,

“আমার স্বপ্নই তো তুমি আমার ললিতা।”

চলবে।

#আমার_ললিতা
#পর্ব:৩৬
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া

“ওই লোকটা অনেকক্ষণ ধরে তোর দিকে তাঁকিয়ে আছে বেলী।চেনাজানা আছে নাকী?”

বান্ধুবীর কথায় বেলী কোণা চোখে সামনে তাঁকালো।অনল এক ধ্যানে তার দিকে তাঁকিয়ে আছে।চোখে তার অন্যরকম মুগ্ধতা।বেলীর কেন যেন বিষয়টি অনেক ভালো অনুভব এনে দিচ্ছে মনে।

“আমার প্রতিবেশী।”

“তোকে কী পছন্দ করে?”

“তেমন কিছু না।বেশী কথা বলবি না।”

নূপুর অসহিষ্ণু দৃষ্টিতে স্বীয় বান্ধুবীর মুখের ভাব অনুধাবন করতে ব্যস্ত।জীবনে অনেক পুরুষের সাথে মেলামেশা করার দরুণ এক ধরণের বিশেষ গুণ রপ্ত করেছে সে।যেকোনো পুরুষের চোখের পানে তাঁকিয়ে বলে দিতে পারে সে কোন মেয়ের প্রতি কী অনুভব করে।

“দেখ মিথ্যা বলে লাভ নেই।তোর হালকা লজ্জা পাওয়ার ভঙিমা সব সত্য বলে দিচ্ছে।কিন্তু তোকে নোয়েল অনেক পছন্দ করে।ছেলেটাকে নিরাশ করিস না।”

“নোয়েল এখানে কোথা থেকে এলো?তাছাড়া ডিপার্টমেন্টের সবথেকে মেধাবী ছাত্র কখনো আমাকে ঠিকঠাক নোটিস করেছে কীনা সেই বিষয়ে সন্দেহ আছে।”

“তুই কী অন্ধ বেলী?কারো ভালোবাসা চোখে দেখিস না?”

অবাক হয়ে নূপুর শুধালো।পুনরায় বাক্যের সঙ্গে সংযোগ করে বলল,

“আমি জানতাম মেয়েদের সেন্স এসব বিষয়ে অনেক প্রখর হয়।এদিক থেকে দেখা যাচ্ছে তোর একদম নেই।”

“দেখ আমি কোনো ছেলেকে ওভাবে দেখিনা।আমার জীবনে অতীত আছে একটা।সেখান থেকে এখনও বের হতে পারিনি।”

“আদৌ চেষ্টা করিস?”

“অবশ্যই করি।তবে ঘটনার সবেমাত্র কয়েক বছর।এখুনি যদি আমি অন্য কোনো ছেলেকে পছন্দ করা শুরু করি তাহলে মানুষ আমাকে কী বলবে?”

“তারা সব জানেনা।একদিক থেকে রামীম তোকে চিট করেছিলো।”

“এটাই মূখ্য কারণ।আমি পুনরায় ধোঁকা পেতে ভয় পাই।একটু আগে জিজ্ঞেস করলি না যে ওই ছেলেটাকে আমি চিনি কীনা?জি খুব ভালোভাবে চিনি।আমার প্রেমে মত্ব থাকা একজন পাগল প্রেমিক।কিন্তু ওনার ব্যাপারে আমি অনেক কিছু শুনেছি।ভয় হয় পুনরায় ধোঁকা খাওয়ার জন্য।হারানোর কষ্ট অনেক বেশী ব্যাথা দেয়।”

বেলীর দৃষ্টি অশ্রুপূর্ণ হয়ে উঠলো।যখন শুনেছিলো রামীম বিয়ে করেছে তখনকার বিভৎস অনুভূতিটা মনের ভেতর মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো।নূপুর তার কাঁধে হাত রেখে বলল,

“সেক্ষেত্রে তোকে পরামর্শ দিবো নোয়েলকে একবার সুযোগ দে।ছেলেটা ভদ্র।তাছাড়া এতো পড়াশোনা করা ছেলেরা চিট করেনা।”

“ভুল।চিট করতে মেধাবী অথবা গরু হতে হয়না।অবৈধ কাম বাসনা তৈরী হলেই সে চিট করে।ছেলে বা মেয়ে যেই হোক।আমি অনলের ব্যাপারে এজন্য নির্বিকার।বুঝতে পারি তার ছটফট করা।ললিতা বলে আকুল আবেদন গুলো।তবে আমার মন মানেনা।”

“থাক।এখন কেঁদে দিবি।ওদের পারফরম্যান্স শেষ হয়ে যাবে।স্টেজে উঠতে হবে।গলা পরিষ্কার কর।”

“হুম।”

চোখের কার্ণিশে টিস্যু চেপে ধরে অশ্রুকণা মুছে স্টেজে এসে পুনরায় উপস্থাপনায় মন দিলো বেলী।তার কণ্ঠসুরের পরিবর্তন অন্য কেউ অনুধাবন না করতে পারলেও অনল কিন্তু পারলো।তার মনে প্রশ্ন উত্থাপিত হলো কিছু।

(***)

“তখন কাঁদছিলে কেন?”

অনলের কণ্ঠে খুব ভালোভাবে চিনে গিয়েছে বেলী।ব্যাগের ভেতর কিছু খুঁজতে খুঁজতে বলল,

“আমি কাঁদছিলাম তা বুঝলেন কীভাবে?”

“এটাকে বলে মনের কানেকশন।”

“তেল দিচ্ছেন।”

হতাশ কণ্ঠে অনল বলল,

“তুমি কেমন যেন সত্য বলতে।নাকী রামীম তোমার মধ্যে থাকা সব ভালোবাসা নিয়ে চলে গিয়েছে বুঝিনা।বাই দ্য ওয়ে একটা নিউজ দেওয়ার ছিল তোমাকে।”

“কী?”

“গাড়ীতে বসো।এরপর বলছি।”

“না।বলার হলে বলবেন।তা নয় আমি চলে যাচ্ছি।”

“এখন সন্ধ্যা সাতটা বাজে।আমার সাথে যাওয়া বেশী সেইফ তোমার জন্য।”

“কী বলতে চান জলদি বলুন।”

“গাড়ীতে বসবে না তো?”

“না।”

“তাহলে আমিও বলবো না যে তোমার বাবা আমাকে কী বলেছে।”

থমকে গেলো বেলী।পাশ ফিরে বলল,

“বাবা কী বলেছে মানে?”

“তিনি আমাদের ভালোবাসার কথা জেনে গিয়েছে।”

“ইশ!বলুন আমার।আপনি বাবাকে সব বলে দিয়েছেন?”

“ওইযে গাড়ী।আর তুমি জানো ললিতা আমি যা বলি ঠিক সেটাই করি।”

বিরক্ত অনুভূতি প্রকাশ করে গাড়ীর দিকে এগিয়ে চলল বেলী।দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করলো।আশেপাশে তাঁকিয়ে দেখলো কেউ তাদের খেয়াল করছে কীনা।অনল তৎক্ষনাৎ ড্রাইভিং সীটে এসে বসলো।

“সীট বেল্ট লাগিয়ে নাও বায়রনের কবিতা।ব্যাথা পাবে তা নয়।”

“আপনি কথাটা শেষ করুন।”

গাড়ী চলতে আরম্ভ করলে অনল তোফাজ্জলের সাথে হওয়া ঘটনা গুলো বিস্তারিত বলল।তবে মেয়েটাকে দূর্ঘটনা বলার বিষয়টা আড়াল করে গেলো।বেলীর চোখমুখ দেখে মনে হচ্ছে সে ভীষণ ভয় পাচ্ছে।কাঁপতে কাঁপতে বলল,

“যা হয়েছে ঠিক হয়নি।বাবা আমাকে ছাড়বেনা।আপনার মধ্যে অনেক সমস্যা আছে অনল।”

“ভয় নেই ললিতা।বেশী কিছু হলে আমরা পালিয়ে যাবো।বছর খানেক বাদে ফিরে এলে শয়তান শ্বশুর কিছু করতে পারবেনা।”

“ধ্যাত।”

“রাগ করেনা প্রজাপতি।”

বেলী মুখ ঘুরিয়ে রাস্তার দিকে মনোযোগ দিলো।এটা তাদের বাসার রাস্তা নয় যে ক্ষণবাদে তা অনুধাবন করতে পারলো।কিন্তু সে কোনো প্রশ্ন করেনি।কারণ জানে এই পুরুষ অনেক বেশী জেদি।মিনিট বিশেক বাদে একটি পাঁচ তারকা রেস্ট্রুরেন্টের সামনে এসে গাড়ী থামলো।বেলী দাঁতে দাঁত পিষে বলল,

“আজকেও যদি আয়েশার জন্য আমাকে এখানে আনেন তাহলে এক মুভ করে ঘাঁড় ফেলে দিবো।আমি কিন্তু ক্যারাটেতে অনেক ভালো।জানার কথা তা আপনার।”

“আমরা ডেটে এসেছি।এসো নামো।”

গাড়ীর দরজা খুলে তাঁকে নামতে সাহায্য করলো অনল।ভেতর প্রবেশ করার আগে মেয়েটির হাতখানা শক্ত করে ধরলো সে।বেলীর অন্তকরণ তরঙ্গায়িত হলো।এক ধরণের উষ্ণতা ঘিরে ধরলো তাকে।এই লম্বা চওড়া কান্তিমান পুরুষটাকে সে বিশ্বাস করতে চায়।কিন্তু মাঝখানে বৃহৎ এক অদৃশ্য দেয়াল বাঁধা দিয়ে চলেছে।একজন ওয়েটার এসে তাদের আলাদা বিশেষ একটি জায়গায় নিয়ে গেলো।সবুজ পর্দা দাঁড়া সেখানটা আড়াল করা।ভেতরে ঢুকতে দেখতে পেলো অনেক সুন্দর করে পরিবেশটা সাজানো।ওইযে সিনেমাতে যখন নায়ক প্রপোজ করার জন্য সবকিছু সুন্দর করে সাজিয়ে নায়িকাকে সারপ্রাইজ দেয়।ঠিক তেমন।

“এসো ললিতা।”

একটা চেয়ার টেনে বেলীকে বসালো অনল।ওয়েটার অর্ডার নিয়ে চলে গেলো।

“হঠাৎ এখানে নিয়ে এলেন কেন?”

“তোমার বাবার সাথে সরাসরি আমি একটা যুদ্ধ নেমেছি।এখন জেতা সম্ভব একমাত্র তোমাকে পাওয়ার মাধ্যমে।আমি তোমাকে ভালোবাসি ললিতা।”

“দেখেন অনল।”

“শাট আপ।রাগ ওঠাবে না উল্টোপাল্টা বলে।”

“যান বলবো না কিছু।”

বেলী মুখটা গোমড়া করে রাখলো।অনল খেয়াল করলো প্রথমবারের মতোন মেয়েটা তার সাথে অভিমান করেছে।ক্ষণে ক্ষণে ভেতরে সে পুলকিত বোধ করতে লাগলো এই নিয়ে।আস্তে ধীরে নরম হাতখানা ধরলো।এখানে একবার কী সে চুমো খাবে?হঠাৎ সে বেলীর সামনে হাঁটুগেড়ে বসলো।মুখটা বাড়িয়ে বেলীর পেটের মধ্য বরাবর গুঁজে নিলো।বিষয়টা এতো তাড়াতাড়ি হলো যে বেলীর মুখ দিয়ে অস্পষ্ট একটা কণ্ঠে “অনল” শব্দটা উচ্চারণ হলো।অনল তাকে থামিয়ে বলল,

“নিজের মনে ডুব দিয়ে পেয়ে যাও জীবনের সন্ধান
তুমি যদি আমার না হও,না হও,নিজের তো হও।(ইকবাল)

বেলী শায়েরিটার অর্থ খুব বেশী বুঝতে পারেনি।অনল মুখটা উঁচু করে বলল,

” তুমি নিজের হও আগে মাই ললিতা।তোমার মনকে খালি করো।এরপর সেখানে আমি ফুলের বাগান তৈরী করবো।আমাকে সুযোগ দাও একবার।”

বেলী ঘনঘন শ্বাস নিচ্ছে।প্রিয়তমার এতো নিকটে থেকে মস্তিস্ক শূন্য হয়ে যাচ্ছে অনলের।সে ললিতার বুকে মাথা রেখে হৃদস্পন্দন শুনতে লাগলো।কতোদিনের ইচ্ছে আজ পূর্ণতা পেলো তার?বেলী একবার বাঁধা দিয়ে বলতে চাইলো এ অধিকার তার নেই।কিন্তু ক্রমশ এই আগুনের রাজা প্রেমবাণে তার মনের ভেতর সবকিছু ঝ’ল’সি’ত হচ্ছে।

চলবে।

#আমার_ললিতা
#পর্ব:৩৭
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া

“অনল সরে যান আমার থেকে।আপনার সাহস কীভাবে হলো।”

বেলী নিজের শরীরের সবটুকু শক্তি দিয়ে ছাড়িয়ে নিলো অনলকে।দীর্ঘশ্বাস ফেললো প্রেমিক পুরুষটি।বেলী কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে।হৃদপিন্ডের লাব-ডাব শব্দখানা বোধহয় আশেপাশের সবাই শুনতে পাবে।ঠিক এতোটা জোরে হচ্ছে।অনল মেঝেতে বসেই মলিন হাসলো।এই একটা নারীকে সে আর কীভাবে সবকিছু বললে বিশ্বাস করবে?

“এখন শুধু নিজের মনটা তোমার পায়ে এনে রাখা বাকী বেলী।তখনও সন্দেহ থেকে যায় যে আদৌতে তুমি আমার হবে কীনা।”

“পছন্দ বা ভালোবাসার বিষয় পরে।আপনি আমার এতোটা কাছে আসার অধিকার রাখেন না।এর আগেও এসেছেন।নাকী সবটা শরীরের চাওয়া?”

“ইয়েস।সব শরীরের চাওয়া।ভালো বলেছে আমার ললিতা।”

অনলের ভীষণ কষ্ট অনুভব হচ্ছে।ওয়েটার আসার পূর্বে সে চেয়ারে উঠে বসলো।বেলীকে ইশারা করে বলল,

“বসো।আমি তোমাকে আর স্পর্শ করবো না।”

“না আমি বাড়ী যাবো।”

“খেয়ে যাও।আমি অফিশিয়ালি আজ তোমাকে প্রোপোজ করেছিলাম।এতোটুকু ব্রেইনও যদি তোমার মধ্যে থাকতো।এখানে বসো।আমি তোমাকে কয়েকটা কথা বলি।”

“দেখুন আমার অনেক রাগ উঠেছে।”

“শাট আপ।বসতে বলেছি এখানে।”

প্রথমবারের মতোন অনল যেন বেলীর উপর বিরক্তি প্রকাশ করলো।মেয়েটা আস্তে করে তার সামনের চেয়ারে বসলো।

“তোমার কী মনে হয় যে আমি বেহায়া?এতো অপমানের পরেও তোমাকে ভালোবাসার কথা বলে যাচ্ছি?বলো ললিতা।”

“আমি জানিনা।”

“তোমাকে আমি একদিন দেখেছিলাম রাস্তার মধ্যে একটা মেয়ের সাথে তুমুল ঝগড়া লাগিয়েছিলে।হাতাহাতি হবে দেখে আমিই তোমাকে সরিয়ে দিয়েছিলাম।যদিও কখনো আমাকে খেয়াল অবধি হয়নি তোমার।এতোটা অবহেলা পেয়েছি।অথচ আমার স্বভাব ও রাগ সম্পর্কে আইডিয়া নেই তোমার।ওয়েট একটা জিনিস দেখাবো।”

অনল ডান পা বাহিরের দিকে বাড়িয়ে দিলো।প্যান্ট কিছুটা ওঠালে পায়ের গোড়ালির উপর বেশ কিছুটা জায়গায় কালসিটে হয়ে আছে। স্মরণে হচ্ছে কিছু দ্বারা আ’ঘা’ত করা হয়েছে।ঈষৎ হলদেটে ত্বকের মধ্যে গোলাকার কালসিটে অংশটিকে দ্বীপের পাশে ছোট প্রবালের মতোন লাগছে।

“ব্যাথা পেলেন কীভাবে?”

“তোমাকে আমার প্রচুর থা”প” ড়া”তে মন চায়।কিন্তু তা সম্ভব হয়না দেখে নিজের এই অবস্থা করি।এটা আমি কেন দেখালাম মূখ্য কারণ হলো আমার রাগ সম্পর্কে আইডিয়া নেই।আমি তোমাকে হারাতে চাইনা ললিতা।এজন্য যেকোনো মূল্যতে অর্জন করতে চাচ্ছি।তবে রাগ উঠলে তোমার জন্যই ভালো হবেনা।”

“আপনি তো মেইন পয়েন্টটা খেয়াল করছেন না।এইযে আমি আপনাকে ভালোবাসিনা।”

“মাথামোটা মেয়ে।”

অনল কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলো।ওয়েটার এসে তাদের সামনে খাবার সার্ভ করে রাখলো।চলে গেলে অনল পুনরায় বলল,

“তুমি আমাকে ভালোবাসো ললিতা।এটা চিরন্তন সত্য।যা মানতে নারাজ তুমি।”

“আমি জানিনা আর আপনি জেনে গেলেন?আমি চিরজীবন অবিবাহিত থাকবো না।একদিন না একদিন সমাজ ও পরিবারের নিয়ম অনুসারে বিয়ে করতে হবে।তখন কী আমি বুঝতে পারবো না যে আমি আদৌ অপর মানুষটার প্রতি প্রণয় অনুভব করি কীনা?আপনি ফ্যান্টাসী জগতে বেঁচে আছেন।অথবা অতি সুন্দর,মেধাবী ও যোগ্যতাসম্পন্ন হওয়ায় ধরে নিয়েছেন যেকোনো মেয়ে আপনার সাথে শুয়ে পড়ার জন্য তৈরী।আমি এমন না।স্যরি কিন্তু আমার দ্বারা আপনার সঙ্গে বসে একসাথে খাওয়া সম্ভব না।রামীমকে হয়তো আমি এখনও ভুলিনি।কারণ আমি জীবনে অনেক বড় ধাক্কা পেয়েছিলাম। তাই বলে যাকে তাকে নিজের জীবনে আনার মতোন বোকা নই।ভালো থাকবেন মি.কাশফ।”

বেলী কথাগুলো বলে ব্যাগ হাতে বের হয়ে গেলো।একটিবারও বাঁধা দেয়নি অনল।দীর্ঘ শ্বাস ফেলে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে রইলো।সে ক্লান্ত।ভীষণ ক্লান্ত হয়ে ওঠেছে।যেখানে স্বপ্নেরা এতোক্ষণ ছুটোছুটি করছিলো সেখানে এখন একরাশ বেদনা এসে ভর করেছে।বেলীকে শেষবার কিছু সে বলতে চেয়েছিলো।কিন্তু পারলো না কেন?

(*** নোট:জানি গল্পের ঠিক মধ্যিখানে এভাবে বিরক্ত করা উচিত নয়।কিন্তু বিষয়টা জরুরি।আমার এই পেইজটার নিশ্চয়তা নেই।এজন্য আমি নতুন পেইজ ওপেন করেছি। Samia’s Tales নাম।আপনারা যুক্ত হয়ে যাবেন।আমি কমেন্টে লিংক দিয়ে দিবো***)

শশীকে আজ দেখতে আসবে।ছেলে ব্যবসায়ী।নিজের পারিবারিক ব্যবসাকে দেখাশোনা করছে।দেখতে শুনতে সবকিছু ভালো দেখে বিয়ে অনেকটা ঠিকই হয়ে গিয়েছে।শুধু দিনক্ষণ বাকী।আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিঁখুতভাবে কাজল পরতে ব্যস্ত শশী।মেয়েটা অনেক বেশী সাজতে পছন্দ করে।মাঝে এতো কঠিন ধাক্কায় জীবন থেকে বোধহয় রঙটা হারিয়ে ফেলেছিলো।গুনগুন করে গান গাইতে সে বেলীকে শুধালো,

“এভাবে কী দেখছিস?”

“অনেকদিন পর তোমাকে এমন হাসি খুশি দেখতে পেলাম।এভাবে থেকো।”

“আমি সত্যি বলতে আজ অনেক খুশি।রাহাতের সঙ্গে বিয়েটা আমার স্বপ্নের মতোন মনে হচ্ছে।কখনো যে হবে সেই ধারণা অবধি ছিলনা।”

“আমাদের সাথে অনেক সময় ধারণার বাহিরে অনেক কিছু হয়ে যায়।যাই হোক এতো মেকআপ করো না।সিম্পল থাকো দেখতে ভালো লাগবে।”

“ঠিকই তো।না থাক আর মেকআপ করবো না।”

শশী হালকা করে লিপস্টিক দিয়ে নিজের সাজ সম্পূর্ণ করলো।দেখতে অনেক মিষ্টি লাগছে।বেলী নিজেও আয়নার দিকে তাঁকালো।কতোটা রোগা হয়ে যাচ্ছে সে।আশ্চর্যভাবে তিন মাসেও তাকে বেশ ভালো দেখাতো।কিন্তু এখন আবার সেই পূর্বের মতোন লাগে।বেলী নিজের মনকে শাসালো।এখন নিশ্চয় মনটা আবার ভাববে যে সবটা অনলের জন্য ছিল।পুরুষটি তার সাথে সঙ্গে দূরত্ব তৈরী করার পর থেকে সবকিছু বদলে গেলো।এসব বেলী ভাববে না।দীর্ঘ লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে সামনে থেকে লিপস্টিকটা হাতে তুলে লাগাতো লাগলো।

“এই বেলী।এভাবে শুধু লিপস্টিক দিলে চেহারা আরো ফ্যাকাশে দেখাবে।আয় তো।ভালোভাবে সাজিয়ে দেই।”

“না আপু আমি ঠিক আছি।”

শশীর ফোনটা বেজে উঠলো।স্ক্রিনে অনলের নামটা দৃষ্টিগোচর হলো বেলীর।হৃদয়টা কেমন যেন করে উঠলো।এক শূন্য হাহাকার বেজে উঠলো বুকের ভেতর।সেদিন রাতে রেস্ট্রুরেন্ট দুজনের মধ্যে তর্ক হওয়ার পর থেকে পুরুষটি তার সঙ্গে কথা বলেনা।বেলী ভেবেছিল বিগত সময়ের মতোন এবারও কয়েকদিন পর সব ঠিক হয়ে যাবে।কিন্তু যতোদিন যাচ্ছে ততো যেন আশার প্রদীপের আলোর উজ্জ্বলতা কমে আসছে।এখনও তাদের মাঝেমধ্যে দেখা হয়।কিন্তু কথা হয়না।এক ধরণের কটূ উপেক্ষা তাকে করে চলেছে অনল।শশী কথা বলে ফোনটা রেখে দিলো।বেলী উৎসুক হয়ে শুধালো,

“কী বলল?”

“অভিনন্দন জানালো।রাহাত নাকী ওকে বলেছে আজ একেবারে আঙটি পরিয়ে যাবে।”

“রাহাত ভাইকে সে কীভাবে চিনে?”

“অনলের পরিচিত।বিজনেস পার্টনার।সিকান্দার আঙকেলই তো বিয়ের প্রস্তাবটা এনেছে।”

“ওহ।জানতাম না।”

“উপন্যাস পড়তে পড়তে বাহিরের জগত নিয়ে কিছু জানিস নাকী?আয় সাজিয়ে দেই।”

“না আপু থাক।আমি লিপস্টিকটাও মুছে নিবো।তুমি থাকো আসছি আমি।”

কোনোভাবে পালিয়ে নিজের রুমে চলে এলো বেলী।শরীরটা ঈষৎ তরঙ্গায়িত হচ্ছে তার।বিছানাতে শুয়ে পড়লো।দৃষ্টি সিলিং এর উপর।আচ্ছা সে কী চাচ্ছে সত্য বলতে?অনলকে সে বিশ্বাস করতে পারছেনা।তবে এই খারাপ লাগা কেন?বেলীর অনেক অভিমান হলো হঠাৎ অনলের উপর।নেত্রপল্লব শক্ত করে বন্ধ করে ফেললো।অকস্মাৎ কারো নিশ্বাসের উষ্ণতা টের পেলো।ধীরে ধীরে চোখ খুলতেই চমকে উঠলো।অনল তার উপর আধশোয়া অবস্থাতে আছে।অধরযুগলে চিরপরিচিত হাসি।

“আপনি এখানে কেন?কীভাবে এলেন?”

“মাই ললিতা।চুপ।”

বেলীকে থামিয়ে দিলো অনল।পুরুষটির চাহনি মাদকময়।তীব্র সুগন্ধ এসে ঠেকলো বেলীর নাকে।ধীরে ধীরে বেলীর ঠোঁটের উপর নিজের পুরু ঠোঁট দ্বারা চেপে ধরলো।এযেন মধুর সুরা পান করার সবথেকে সঠিক পন্থা।অনলের হাতখানা অবাধ্য হয়ে বেলীর পেটে ও বুকে বিচরণ করতে লাগলো।অবশ হয়ে মেয়েটা শুয়ে রইলো বিছানায়।আজ সব শেষ করার দিন।নাকী পুরোনো ভেঙে নতুন কিছু তৈরী হবে?হতবিহ্বল বেলী চোখ বন্ধ করতেই এক ফোঁটা অশ্রু চোখের কার্ণিশ ছুঁয়ে গড়িয়ে পড়লো।সে তৎক্ষনাৎ সম্বিত ফিরে পেলো।উঠে বসলো তড়িৎ গতিতে।রুমের আশেপাশে তাঁকিয়ে অনলকে খোঁজার চেষ্টা করলো।কিন্তু কোথায় সেই পুরুষ?যুবতীকে পাগল করা কোথায় সেই অনন্য কৌশল?সব তাহলে মরিচীকা ছিল।নিজের করুণ কল্পনা ছিল।বেলী হাত দিয়ে নিজের মুখটা লুকিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লো।সে নিজের মনকে বুঝবে কীভাবে?

চলবে।