#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ১৪
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
পানির টর্নেডোর ফলে আমার সামনের সমস্ত দেওয়াল গুলো ভেঙে গেলো। পুরো গোল একটা রাস্তা হয়ে গেছে। বেশ কয়েকটা দেওয়াল ভেঙেছে সেটা আমি বুঝতে পারলাম। আমি আর দেরী করলাম না। আমার শরীর কাপড়ের থেকে অনেক বেড়ে গেছে, প্রথমত আমাকে নতুন জামাকাপড় পড়তে হবে। এভাবে শহরে ঘুরলে সেটা ঠিক হবে না। তাই আমি হাটতে লাগলাম। আমি জানি আমি যদি ভিতরের রাস্তা দিয়ে হাটতে থাকি, তাহলে এই জায়গা থেকে কখনো বের হতে পারবো না। এখান থেকে বের হতে হলে আমাকে সব দেওয়াল ভেঙে বের হতে হবে। আমি আশা করছি যে আমি মাটির নিচে না এখন। যদি মাটির নিচে থাকি তাহলে দেওয়াল ভাঙা অনেক ক্ষতিকর হবে। কারন সমস্ত গুহার পাথর,মাটি আমার উপরেই পরতে পারে। আর সেটার জন্য আমাকে সতর্ক হতে হবে। আমি আগাতে লাগলাম। যে জিনিসটা আমাকে এখন ভাবাচ্ছে সেটা হলো আমি আদৌও কি আমার সময়ে আছি কিনা। কারন পাঁচ বছরের বেশী সময় ছিলাম আমি রুইনস অফ ড্রিমে। আর আমার মনে হচ্ছে এখানেও পাঁচ বছর কেটে গেছে। পাঁচ বছরে রাজ্যের সব কিছু বদলে গেছে হয়তো। কিন্তু তারপরও আমাকে সতর্ক থাকতে হবে। কারন শহরের কেউ আমাকে এখন চিনবে না হয়তো। আবার আমার কাপড় দেখে যতদূর মনে হচ্ছে আমার এখানের সময় এবং রুইনস অফ ড্রিমের সময় অনেক আলাদা। কারন আমার জামাকাপড় থেকে আমার শরীর বড় হয়ে গেছে। বৃদ্ধ লুসেফার আমার জামাকাপড়ের খেয়াল রেখেছে, তার স্পেলে জামাকাপড় আবার নতুনের মতো হয়ে যায় এবং শরীরের সাইজমতো বড় হয়। যাইহোক আমি এখন দুটো কনক্লুশনে এসেছি। প্রথমত হলো হয়তো আমার ব্যাগ এবং তলোয়ারের মতো আমার সাথে আমার আসল জামাকাপড় যায় নি সেখানে। দ্বিতীয়ত হয়তো আমি সেই সময়ের সাথে এই সময়ের তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। আমি আর ভাবলাম না। আমি আমার রাস্তা আমার তলোয়ারের টর্নেডো এর সাহায্যে বানিয়ে নিলাম। এবং শেষমেষ গুহার মধ্য থেকে আমি বের হওয়ার রাস্তা বানিয়ে ফেললাম। এখন সময়ের সাথে কি সমস্যা হয়েছে সেটা ক্যাপিটালে ফেরত যাওয়ার পরই আমি বুঝতে পারবো। আমি রাস্তার শেষ প্রান্তে এসে দারালাম। নিজেকে বিশাল একটা পাহাড়ের উপরে আবিষ্কার করলাম। পাহাড়ের ঠিক মাঝ বরাবর একটা বড় গর্ত হয়ে গেছে। আমি দাড়িয়ে থাকলাম না আর। সোজা লাভ দিলাম। আমার জন্য অনেক উচু হয়ে গেছে লাফটা। কিন্তু এছাড়া কোনো উপায় দেখছি না।
.
–তুমি তো আসলেই পাগল। এতো উপর থেকে কেউ লাফ দেই?(ভ্যালি)
.
–এর থেকেও অনেক উচু থেকে লাফ দিয়েছি তোমাকে পাওয়ার জন্য। তাই এটা আমার জন্য হয়তো কিছুই না।(আমি)
.
–তারপরও। তখন তো পানিতে, আর এখন তো সোজা আকাশ থেকে পরছো।(ভ্যালি)
.
–তো কি? মাথায় বুদ্ধি থাকলে সবই করা যায়। যেহেতু আমার কাছে দুটো তলোয়ার আছে, আর বৃদ্ধ লুসেফারের দেওয়া ট্রেনিং চেক করা এর থেকে ভালো সময় আর হয় না(আমি)
।।।
।।।
আমি আমার পিঠ থেকে ভিরুদাকে বের করলাম। দুইহাতে দুটো তলোয়ার আমার কাছে। এবং দুটোই আমি পাহাড়ের গায়ে গেথে দিলাম। এবং সেটা পাথরের গায়ে ঢুকে গেলো। কিন্তু আমার পরার স্পিড অনেক বেশী বলে তলোয়ার দুটোও আমার পুরো স্পিড আটকাতে পারছে না। একদম মাটিতে পরার আগেই আমার পরার পুরো স্পিড কমে গেলো। আমি মাটির থেকে এক হাত উপরে রইছি। আমার তলোয়ার দুটো একদম শক্ত হয়ে পাথরের গায়ে গেথে গেছে। আমি টান দিয়ে সেগুলো বের করলাম। এবং দুটোই আমার ব্যাগের মধ্যে রেখে দিলাম।
.
–ওয়াও অনেক ক্লোজ ছিলো সেটা। একটু হলেই তো সব শেষ হয়ে যেতো।(আমি)
.
–এটাকে আবালামী বলে। এভাবে জীবনকে ঝুকিতে রাখে কেউ?(ভ্যালি)
.
–এটা কোনো কথা। জীবনকে ঝুকিতে না রাখলে শক্তিশালী হবো কিভাবে।(আমি)
.
–তুমি একদম কর্ডিলার মতো।(ভ্যালি)
.
–কর্ডিলা কে?(আমি)
.
–যে আমাকে মুক্ত করেছিলে, সেই প্রথম ছিলো যে আমার তলোয়ার ফর্মকে প্রথম উঠিয়েছিলো। এবং তারপর তুমি।(ভ্যালি)
.
–ওয়াও। আচ্ছা ভ্যালি ক্যাপিটালে যাচ্ছি আমি এখন আমি চাচ্ছি তুমি কোনো কথা বইলো না সেখানে।(আমি)
.
–হ্যা সেটা আমি জানি। দুটো ড্রাগনকে নিজের শরীরে নিয়ে কেউ ঘুরলে অবশ্যই পুরো রাজ্য ভয়ে থাকবে।(ভ্যালি)
.
–হ্যা।(আমি)
।।।।
।।।।
আমি কোনোরকম আমার ব্যাগে থাকা কিছু আলাদা কাপড় দিয়ে আমার দুই হাত ভালো করে পেচিয়ে রাখলাম। মুখের মধ্যে মাস্কটাও কোনোরকম পেচিয়ে রাখলাম। আমি এবার শহরের মধ্যে প্রবেশ করতে যাবো, কিন্তু গেইটের সামনে আমাকে থামিয়ে দিলো। আমি এখান থেকেই সব বুঝে গেলাম অনেক সময় কেটে গেছে। কারন আমি গেইটের সামনে এবং ভিতরে অনেক পরিবর্তন দেখতে পেলাম। শহরের ঢুকার গেইটে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এখন সিকিউরিটি অনেক উন্নত হয়েছে সেই সাথে শহরও। আর আমাকে দেখলে তো যেকেউ সন্দেহ করবে। কারন আমার সাইজের থেকে আমার জামাকাপড় অনেক ছোট। আর এছাড়াও অনেক সময় পার হয়েছে এখানেও। এর মধ্যে আমাকে কেউ চিনবেও না এখানে। তারপরও ভিতরে যাওয়ার একটাই সুযোগ আমার। আমি আমার চেকআপের সময় আর্কাইবের আইডি কার্ড দেখিয়ে দিলাম। যেটা অনেকটা কাজে দিয়েছে। কিন্তু সকলে আমার দিকে সন্দেহের নজরে দেখছিলো। আমাকে তারা কিছু না বলেই ঢুকতে দিয়েছে ভিতরে। যাইহোক আমি এদিকে আর নজর দিলাম না। আমার ব্যাগে কিছু অর্থ রয়েছে আমি সেগুলো নিয়ে সোজা জামা কাপড় কিনতে চলে গেলাম। আসলেই আমার এখন লজ্জা লাগছে ছোট জামা কাপড় পরে এভাবে শহরে ঘুরতে। শুধু সেটা নয় মাস্ক এবং হাতের ব্যান্ডেজ কাপড় গুলোও আমার শরীরে আজব লাগছে এখন। কারন আমার শরীর অনুযায়ী আমার জামা হয় নি। আমি আর সময় দেরী না করে সোজা চলে গেলাম নিজের জামা কিনতে। জামা কেনার পর একটা ডয়ারফস এর দোকানের দিকে পা দিলাম। অবশ্য ভিরুদার জন্য তার কাভার রয়েছে, কিন্তু ভ্যালির জন্যও একটা সুন্দর একটা কাভার কিনতে হবে।
।।।
।।।
আপাতোতো শহরে ঠিকমতো থাকার মতো গেটআপ আমার হয়ে গেছে। কিন্তু অসুবিধা হলো আমার থাকা নিয়ে। আমি তো আগে ছিলাম প্যালেসে। কিন্তু প্যালেসে কি আমাকে মেনে নিবে। আর আমি এমনিতেও সেই জেনারেলের কাছে আর ফিরে যেতে চাই না। একজন সৈনিক হওয়ার ইচ্ছা আমার অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। সৈনিক মানেই আমাকে অন্যের গোলামী করতে হবে সারাজীবন। আর আমি সেটা সব সময় মেনে নিতে পারবো না। আমি থাকবো কোথায় এটা ভাবতে ভাবতে আমি হারিয়ে গেলাম। এতোক্ষন আমার নজর ছিলো না আমি কোথায় যাচ্ছিলাম। তাই আমি কোথায় চলে এসেছি সেটা বুঝতেই পারছি না। যায়হোক এখানে তেমন লোকজন দেখতে পাচ্ছি না। হঠাৎ আমি লক্ষ করলাম কারো চিল্লানোর শব্দ। চিল্লানোর শব্দটা সামনে একটা গলি থেকে এসেছে। আমি কোনো কিছু না ভেবেই দৌড় দিলাম। একটা মেয়ের চিল্লানোর শব্দ শুনেছি আমি। জানি না কি হচ্ছিলো। কিন্তু যাওয়ার পর আমি দেখে অবাক। সেখানে দাড়িয়ে আছে হ্যারি, লুসি এবং লুসানা। লুসির শরীর দিয়ে ব্লাড বের হচ্ছে, আর লুসানা তাকে হিল করছে। হ্যারি দুজনকে রক্ষা করার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমি কাউকে সেখানে দেখতে পেলাম না। হঠাৎ মাথার উপরের উপর থেকে আমি কিছু ছুড়ি ওদের দিকে যেতে খেয়াল করলাম। হ্যারির সেদিকে নজর নাই। আমি বুঝতে পারলাম তারা সেটাই আহত হবে। তাই আমি ভিরুদাকে সেদিকে ছুরে মারলাম। লুসেফারের দেওয়া ট্রেনিং এর মধ্যে এটাও একটা। আমি আমার তলোয়ার দিয়ে যেকোনো জিনিসকে আটকাতে পারি, তবে সেটার আকার আমার তলোয়ারের ব্লেডের প্রস্থ্যের থেকে ছোট হতে হবে। বড় হলে একটার বেশী সম্ভব না। ভিরুদা একদম ঠিক জায়গা মতো পৌছে গেলো। আর ছোট ছোট সবগুলো ছুড়ি ভিরুদার ব্লেডের সাথে লেগে হ্যারিদের পাশ দিয়ে চলে গেলো। আর ভিরুদা একদম দেওয়ালে গেথে গেলো। আমি এবার সামনে এগিয়ে গেলাম। এবং ভিরুদাকে দেওয়াল থেকে বের করলাম। আমি ওদের তিনজনের সামনে দাড়ানোর পর হ্যারি আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। হয়তো আমার জামাকাপড়ের স্টাইল দেখে চিনতে পেরেছে আমি কে। কারন আমি আবারো মাস্ক পরে আমার নাক পর্যন্ত ঢেকে রেখেছি। এবং দুইহাতে ব্যান্ডেজ কাপড় দিয়ে পেচিয়ে রেখেছি। আর আমার তলোয়ারটাও হ্যারি আগে দেখেছে। তাই চিনতে ভুল করলো না।
.
–জ্যাক। সত্যি তুমি জ্যাক। এতো কাল পর তাহলে তুমি নিজের দেখা দিলে, কেমন বন্ধু তুমি?(হ্যারি)
.
–অনেক কিছু হয়ে গেছে এর মাঝে। পরে সেগুলো বলবো। কিন্তু এখানে এখন কি হচ্ছে?(আমি)
.
–আমাদের সাথেও অনেক কিছু হয়েছে, পরে আমিও সময় মতো বলবো। কিন্তু আসল কথা হলো ঔ লোকটা আমাদের তিনজনকে মারতে এসেছে সোজা জেনারেলের আদেশে।(হ্যারি)
.
–কি??? জেনারেলের আদেশে?(আমি)
.
–হ্যা। অবশ্য এটা ঠিক সময় না সব কিছু বলার কিন্তু….(হ্যারি)
.
–আর কিছু বলতে হবে না হ্যারি। আমি সব কিছু বুঝে গেছি। জেনারেল আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। যায়হোক আসল কথায় আসা যাক। কে আপনি? নিজের মুখ দেখাতে পারেন এখন।(আমি)
।।।
।।।
আমার কথা বলার পর লোকটা উপর থেকে নিচে নেমে গেলো। আজব একটা লোক। পুরো মুখই মাস্কের মাধ্যমে ঢাকা। লোকটা বলতে লাগলো,
.
–আমাদের ইউনিটের সবাই কোড নাম ব্যবহার করে। আমার নাম এবি২৯। আমি একজন গুপ্তঘাতক। জেনারেলের আদেশে আমি এসেছি হ্যারি, লুসি এবং লুসানা এর জীবন শেষ করতে। আমার রাস্তা মধ্যে তুমি আসলে তোমার নামও লিস্টে যোগ হবে।(লোকটা)
.
–সেটা দেখা যাবে। আমার বন্ধুদের স্পর্শ করার আগে প্রথমে আমার থেকে যেতে হবে।(আমি)
.
–তলোয়ের একটা দুটো টেকনিক শিখে নিজেকে খুব বড় মনে করো না। কারন একটু আগেই বুঝতে পারবে তোমার জায়গা ঠিক আমার পায়ের নিচে।(লোকটা)
।।।
।।।
লোকটার কথায় আমার মাথা গরম হয়ে গেলো। আমি ভ্যালিকে ব্যবহার করলাম না। কারন আমি চাইনা এটার কোনো পাওয়ার এখানে দেখাতে। ভিরুদা এখনো ঘুমে আছে, মানে ওর দ্বারা আমার কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু ভিরুদাও ভ্যালির মতো জাগলে আমাকে সাধারন একটা তলোয়ারও সাথে রাখতে হবে। কারন আমি জানি ড্রাগনের পাওয়ার কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে। আমাকে শুধু ট্রেনিং করতে হবে সেগুলো মাস্টার করতে।
।।।
।।।
লোকটা কোনো সময় নষ্ট করলো না। হাত দিয়ে ম্যাজিকাল ছুড়ি বানিয়ে ফেললো। আমি বুঝলাম না এতো সহজেই ধারালো ছুড়ি কিভাবে বানাচ্ছে। আর একটা দুটো না। একসাথে দশ-বিশটা বানাচ্ছে। এবং সেটা আমার দিকে ছুড়ে মারছে। আমি সবগুলোই এক একটা স্লাইস দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছি। তবে আমার ডান হাতের জন্য এটা বেশী হয়ে যাচ্ছে। কারন লোকটা থামার নামই নিচ্ছে না। আমাকে একন একটা জিনিসই করতে হবে। লোকটার একদম কাছে যেতে হবে, এবং এক স্লাইস দিয়ে কাজ শেষ করতে হবে। কিন্তু সেটার জন্য এই ছুড়ি গুলোর কিছু করতে হবে। আমি ভ্যালিকে ব্যবহার করলে এটা খুব সহজেই শেষ করতে পারতাম। কারন ভ্যালিকে দিয়ে দূরের কাউকে আক্রমন করা যাবে। কিন্তু ভিরুদা যেহেতু ঘুমে, তাই ওর কোনো ক্ষমতা আমি ব্যবহার করতে পারবো না। আপাতোতো আমাকে আমার টেকনিক এর উপরে নজর রাখতে হবে। লুসেফার এমন সময়ে খুব ভালো একটা স্পেল ব্যবহার করতো। আমি যখনি তাকে কর্নারে ফেলে দিতাম তখনি সে সোর্ড সামান স্পেল ব্যবহার করতে। এতে মাটির নিচ থেকে লোহার ধারালো হাজার হাজার তলোয়ার আমার দিকে বের হয়ে আসতো। অবশ্য সেটা আমাকে আক্রমন করার জন্য ব্যবহার করতো না। কিন্তু যেকাউকে এটা দিয়ে হত্যা করা ব্যাপার না। এখন আমি স্পেল ব্যবহার করতে পারলে অবশ্যই এটা ব্যবহার করতাম। কিন্তু আপাতোতো আমাকে শুধু আমার টেকনিকের সাহায্যই নিতে হবে। আমি আমার ডান হাতের তলেয়ারটা হঠাৎ একদম উপরের দিকে তুলে ধরলাম। এবং আমার চোখ সোজা লোকটার চোখের দিকে দিলাম। সাথে সাথে আশে পাশের সব কিছু থেমে গেলো। এটা মাত্র দুই সেকেন্ডের জন্য কাছ করে। এটা একটা গোপন টেকনিক। বৃদ্ধ লুসেফার তার সারাজীবনের ট্রেনিং এর মাধ্যমে মাত্র পাঁচ সেকেন্ড সময় আটকাতে পারতো। কিন্তু আমি পাঁচ বছরে মাত্র দুই সেকেন্ডই আটকাতে সক্ষম হয়েছি। এই টেকনিক আশে আমার শত্রুকে কিছু সেকেন্ডের জন্য স্টপ করে দেই একদম। তাই এটাকে টাইম স্টপ টেকনিকও বলা হয়ে থাকে। মূলত এটা সময়কে আটকায় না। বরং নিজের বিরুদ্ধে যে দাড়াবে তার পুরো শরীর এবং আক্রমনকে আটকাবে। যদিও সে কোনো কিছু নিক্ষেপ করে থাকে সে জিনিসটাও এই দুই সেকেন্ডের জন্য থেমে যাবে। আমি সময় নষ্ট করলাম না আর। কারন আমার মুভমেন্ট স্পিডও এখন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই আমি আমার সামনে থাকা সব গুলো ছুড়িগুলোকে আঘাত করে দুইপাশে পাঠিয়ে দিলাম। সেগুলো অনেকটা হাওয়ায় ভাসছিলো। এবং সোজা ভিরুদা দিয়ে লোকটার পেট বরাবর একটা স্লাইস দিয়ে পিছনে চলে গেলাম। আর এই দিয়ে দুই সেকেন্ড সময় শেষ হয়ে গেলো। লোকটা সহ হ্যারি, লুসি এবং লুসানা সবাই অবাক হয়ে গেলো। কারন এই টেকনিক শুধু লোকটাকে নয় বরং তাদেরকেও আটকে দিয়েছিলো দুই সেকেন্ডের জন্য। অবশ্য এটা একটা ছোট এরিয়ার মধ্যে কাজ করে। আর ওরা তিনজন সেই এরিয়ার মধ্যেই ছিলো। এই টেকনিকটার জন্য শরীর থেকে ম্যাজিক পাওয়ার বের হয় এবং সেগুলো আশে পাশের সামান্য এরিয়ার সবকিছু আটকে ধরে। মূলত এটার জন্য অনেক পরিমান ম্যাজিক পাওয়ার শেষ হয়। কিন্তু এতোদিনের ট্রেনিং এর ফলে আমি এই টেকনিক দিনে পাঁচ বারের বেশী ব্যবহার করতে পারি না। কিন্তু বেশী ট্রেনিং এর ফলে হয়তো সেই সংখ্যা অনেক বারবে। অবশ্য আমার শরীর এখন দ্রুত না হলে আমি এই টেকনিক কখনো শিখতে পারতাম না। অবশ্য দুই সেকেন্ড কাউকে হারানোর জন্য যথেষ্ট কিন্তু শরীর যদি স্পিডের সাথে না কুলাতে পারে তাহলে দুই সেকেন্ডেও কিছুই হয় না। লোকটা নিচে পরে গেলো। কিছু আর বললো না। আমার মনে হচ্ছে বেহুস হয়ে গেছে কিংবা মারা গেছে। যাইহোক আমি হ্যারিদের কাছে চলে গেলাম। ওরা একদম অবাক হয়ে রয়েছে।
.
–ঔটা কি ছিলো? একদম মুহুর্তের মধ্যে তুমি এখানে ছিলে আর সাথে সাথে তুমি ঔখানে চলে গেলে আর লোকটাও পরে গেলো।(লুসি)
.
–বেশী কিছু না। ঔটা একটা তলোয়ার টেকনিক ছিলো।(আমি)
.
–অনেক দারুন ছিলো ঔটা।(হ্যারি)
.
–জ্যাককক্।(লুসানা জোরে চিল্লিয়ে উঠলো)
।।।
।।।
আমি প্রথমে বুঝলাম না ও কেনো চিল্লিয়ে উঠলো কিন্তু আমার পিঠ থেকে সাদা হাত বের হওয়াটা অনুভব করে আমি বুঝতে পারলাম কিছু একটা খারাপের দিকে। আমার পিঠ থেকে এবার বারোটা হাত বের হয়েছে শুধু। আর এগুলো আমাদের চারিদিকে একটা ঢালের মতো করে ধরলো। আর সেটায় কয়েকশত ছুড়ি এসে গেথে গেলো। মুহুর্তের মধ্যেই এই মিস্ট্রিয়াস হাত গুলো আমাদের বাচিয়ে ফেললো। ছুড়ি গুলো ও লোকটা মেরেছিলো। আমি ভেবেছিলাম হয়তো মারা কিংবা বেহুস হয়ে গেছে। কিন্তু সেটার সুযোগ নিয়ে পিছন থেকে হামলা করেছে আমাদের উপর। আমাকে দেখে এবার সত্যিই ভয় পেয়ে গেলো। শুধু একটা জিনিসই বললো, সেটা হলো “মনস্টার”।
।।
।।
এবার সত্যি সত্যি মারা গেছে। কারন তার ছুড়ি গুলো আমার হাত গুলো তার শরীরেই ঢুকিয়ে দিয়েছে। আমি চাই নি মারতে তাকে। কিন্তু আমার এই হাতগুলোকে আমি কন্ট্রোল করতে পারি না। হ্যারি আমাকে বলতে লাগলো।
.
–তোমাকে তিন বছর পর দেখে কতটা খুশি আমরা সেটা বলতে পারবো না। কিন্তু আবারে আগের মতো আমাদের জীবন বাচানোর জন্য ধন্যবাদ তোমাকে।(হ্যারি)
.
–কি বললা? তিন বছর! তাহলে আমি তিন বছর যাবৎ গায়েব ছিলাম?(আমি)
.
–হ্যা কেনো তোমার মনে নেই?(হ্যারি)
.
–হয়তো সময় ঠিক রাখি নি আমি৷ যায়হোক শুধু তিনবছর হয়েছে এজন্য আমি খুশি।(আমি)
।।।
।।।
আমি একজনকে হত্যা করলাম, এজন্য আমার তেমন খারাপ লাগছে না। একটু মায়া আসার দরকার ছিলো। কিন্তু কেনো জানি হত্যা করাটা ভালোই লেগেছে, আর আমি বুঝতে পারলাম রুইনস অফ ড্রিম এবং এখানের সময় একটু আলাদা। সেখানে একটু তারাতারি চলে সময় এখান থেকে। এজন্য সেখানে পাঁচবছর সময় গেছে, কিন্তু এখানে মাত্র তিনবছর। যাইহোক, অনেক রহস্য বাকি যেগুলো আমাকে বের করতে হবে।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ১৫
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
প্রথমত আমি বুঝতে পারছি না জেনারেল কেনো হ্যারিদের উপরে হামলা করার আদেশ করেছে। হ্যারি আমাকে সাথে করে একটা সিক্রেট জায়গায় চলে গেলো। মূলত জায়গাটা এই গলির শেষের দিকে। একটা বাসার দেওয়ালের গায়ে হ্যারি হাত দিলো আর সাথে সাথে বাসার নিচে একটা সিড়ি চলে গেলো। আমরা সেটার ভিতরে চলে গেলাম। ভিতরে একটা বাসার মতো জায়গা।
.
–আপাতোতো এক বছর যাবৎ আমরা এখানেই আছি।(হ্যারি)
.
–এখানে? এক বছর যাবৎ পালিয়ে আছো?(আমি)
.
–হ্যা। জেনারেল আমাদেরকে রাজ্যের বিদ্রুোহী ঘোষনা করেছেন। এমনকি আমাদের মাথায় বাউন্টিও দিয়ে দিয়েছে।(লুসি)
.
–বাউন্টি?(আমি)
.
–হ্যা। আমাদের তিনজনের মাথার উপরে দশ হাজার স্বর্ন মুদ্রার বাউন্টি রয়েছে। এজন্য আমাদের এভাবে পালিয়ে থাকতে হচ্ছে। কিন্তু খাবারের জন্য তো আমাদের বের হতেই হয়। আর তখনি ঔ লোকটা আমাদের উপরে আক্রমন করে।(লুসানা)
.
–এলির কি হয়েছে?(আমি)
.
–সব কিছু এলিকে নিয়েই ঘটেছে।(হ্যারি)
.
–এটা বইলো না যে এলি মারা গেছে?(আমি)
.
–না আগে সব কাহিনী শুনো। তিনবছর আগে আমাদের মিশন ছিলো যে দুই বছর আমাদের ক্যাপিটালে থাকতে হবে, এবং সেটার জন্য আমাদের ক্যাপিটালে থাকার ব্যবস্থা করবে। তোমাদের খবর আমি জানি না। কিন্তু লুসি, লুসানা এবং আমাকে একটা কারখানায় নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে আধুনিক সব রকম অস্ত্র বানানো হয়। আমাদের তো প্রথমেই বলা হয়েছিলো আমাদের সুন্দর একটা জীবন দেওয়া হবে দুই বছরের জন্য। কিন্তু আমাদের তিনজনকে পাঠানো হয়েছিলো কাজ করার জন্য। সেই কারখানাটা উচ্চলেভেল মিলিটারী অফিসারদের নিয়ন্ত্রনে ছিলো, তাদের নিয়মকানুন অনেক কড়া ছিলো, আমরা তাদের জিজ্ঞেস করেছিলাম আমাদের এখানে কেনো আনা হয়েছে, তখন তারা শুধু বলেছিলো সে আমাদের জন্য জেনারেল এটাই নতুন মিশন ঠিক করেছিলো। আমরা দুই বছর সেখানেই কাজ করেছি। কিন্তু এরমাঝে তোমার এবং এলির থেকে কোনো খোজই পাই নি আমরা। অফিসারদের বললেও তারা কোনো কিছু বলতো না।(হ্যারি)
.
–তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা সেই জায়গা থেকে পালাবো, এবং তোমাদের খোজ করবো। তাই আমরা তিনজন সেটাই করি। আমরা শত চেষ্টা করেও তোমাকে এবং এলিকে ক্যাপিটালের কোথাও খুজে পাই নি। তখনি একদিন আমাদের দেখা হয় এলির সাথে। ওকে দেখে আমরা প্রথমে চিনতেই পারি নি। বিশ ত্রিশটা গার্ড সাথে নিয়ে শহরের একটা দুঘর্টনার জায়গায় দাড়িয়ে ছিলো ও। আমরা দুইজন সাহস পাইনি ওর সাথে কথা বলার, কিন্তু হ্যারি গিয়েছিলো ওর সাথে কথা বলতে।(লুসি)
.
–আমার এলিকে দেখে ওর সাথে কথা বলতে চলে গেলাম। কিন্তু সাথে থাকা সমস্ত গার্ডগুলো আমার উপরে আক্রমন করলো ওর সাথে সোজা কথা বলতে চাওয়ার জন্য। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো কোনো বড় অফিসার হয়ে গেছে এলিহা। কিন্তু পরে আমি অবাক হয়ে গেছি। ওর সাথে থাকা সকল গার্ড এলিকে প্রিন্সেস বলে সম্বোধন করছিলো। আমাদের তিনজনের মাথায়ই তখন বাজ পরেছিলো যে ও প্রিন্সেস এ জন্য। এলি তখন ওর গার্ড গুলোকে থামতে বলে আমাকে দেখে। আমাদের তিনজনের কাছেই অনেক প্রশ্ন ছিলো এলিহার জন্য তখন। কিন্তু কোনো প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে পারি নি আমরা। আমরা ক্ষমা চেয়ে সেখান থেকে চলে যাচ্ছিলাম। আর তখনি একদল গুপ্ত ঘাতক এলিহার উপরে আক্রমন করে। যেহেতু আমরা ঔখানে সন্দেহজনক ছিলাম তাই আমাদের আটক করতে চাইছিলো তারা, কিন্তু আমরা জানতাম সেখানে আমাদের কোনো কথা কাজে দিবে না। রাজ্যের সবচেয়ে বড় অন্যায় হলো রাজা কিংবা তার বংশের কারো উপরে আক্রমন করা। কোনো কথা ছাড়ায় মৃত্যু হবে। আমরা তিনজনই ভয়ে সেখান থেকে পালিয়ে আসি। আর তার পরের দিনই পুরো শহরে আমাদের পোস্টার ছড়িয়ে যায়। আমাদের মাথায় বাউন্টিও দিয়ে দেই। এর পর থেকে বিভিন্ন বাউন্টি হান্টার, মিলিটারী এবং আর্কাইবের সদস্য আমাদের খুজে বেরাচ্ছে।(হ্যারি)
.
–ওওও বুঝতে পেরেছি। তাহলে আমাদের এলি একজন প্রিন্সেস। আমি প্যালেসে থাকার সময়ে তো কখনো ওকে দেখি নি।(আমি)
.
–কি তুমি প্যালেসে ছিলে?(লুসি)
.
–হ্যা। আমার জায়গা প্যালেসে করে দিয়েছিলো জেনারেল। আর তিনি আমার বাবা বলে দাবি করেছিলেন।(আমি)
.
–কি???? জেনারেল তোমার বাবা?(আমি)
.
–এটা সে দাবী করেছিলো। কিন্তু আমি এটা মানি না। আমার আগের কোনো স্মৃতি নেই তাতে কি? আমার এটুকু মনে হচ্ছে আমি কখনো আমার বাবার চেহারা দেখি নি। যাকে আমি কখনো দেখি নি তাকে হঠাৎ বাবা বলে স্বিকার করাটা অস্বাভাবিক।(আমি)
.
–তারপরও তুমি জেনারেলের সাথে কথা বলতে পারবে না? যদি আমাদের শাস্তিটা মাপ করে দিতো। আমরা তে কিছুই করি নি।(লুসি)
.
–না সেটা হবে না এখন, আমরা বের হলেই আমাদের মেরে ফেলবে, আমরা হার মেনে নিলেও আমাদের গ্রেফতার করবে না তারা।(হ্যারি)
.
–দেখো আমার কাছে ভালো একটা প্লান আছে।(আমি)
.
–কি প্লান?(লুসানা)
.
–আমাদের স্বাভাবিক টিম পুরো হয়ে গেছে। এলি না থাকলেও এলির জায়গা আমি পূরন করতে পারবো।(আমি)
.
–তুমি কি মিলিটারিতে যোগ দেওয়ার কথা বলছো? কিন্তু সেটা কিভাবে? আমরা পুরো রাজ্যের জন্য এখন সন্ত্রাসী।(লুসি)
.
–আগে ওর কথা পুরো শুনি আমরা। আমি জানি জ্যাক কোনো ভালো প্লান বের করবে এখন।(হ্যারি)
.
–আমাদের তো একটা টিমের জন্য সিলেক্ট করা হয়েছিলো। সেজন্য একটা টিমের মতোই থাকবো আমরা। তবে সেটা মিলিটারির ব্যবহারের জন্য না। আমি প্যালেসে প্রায় বেশ কিছু দিনের মতো ছিলাম। এবং সেখানে থেকে আমি রাজ্যের অনেক খবর জানতে পেরেছি। মূলত আমাদের রাজ্য বাকি দুটো রাজ্যের থেকে বেশী শক্তিশালী থাকতে সব সময়। বাকি দুই রাজ্য সব সময় একে অপরের সাথে যুদ্ধে মেতে থাকে। কিন্তু তারা দুটোই আমাদের রাজ্যের মিলিটারি পাওয়ারকে অনেক ভয় পায়। আর বর্তমানে বাকি দুই রাজ্যও শক্তিশালী হচ্ছে, আর সেটার ফলে আমাদের রাজ্য আরো ক্ষমতা অর্জন করতে চাচ্ছে। এজন্য বিভিন্ন শহরের বিভিন্ন ধরনের গবেষনা করা হয়। মূলত গবেষনা গুলো একটা লোককে কিভাবে বেশী শক্তিশালী করা যায়। এই গবেষনার ফলে তারা ছোট ছোট বাচ্চাদের মাঝে বড়দের মতো পাওয়ার ট্রান্সফার করতে সক্ষম হয়েছে। আর যার ফলে আমরা অনেক কমবয়সী শক্তিশালী অফিসার দেখতে পেয়েছি। এছাড়াও অনেক গোপন ইউনিট রয়েছে যারা অনেক দিক দিয়ে শক্তিশালী। এখানে আমরা মানছি একটা রাজাই সব কিছু রাজ্যের জন্য। কিন্তু আমাদের রাজ্যের জন্য সেটা না। আমাদের রাজা সারাদিন যুবতী মেয়েদের সাথে রসমজ্জায় ব্যস্ত থাকে। আর রাজ্যের সকল কাজ করে থাকে আমাদের জেনারেল।(আমি)
.
–এখন আমরা কি করবো?(হ্যারি)
.
–যেহেতু আমাদের বিদ্রোহী ঘোষনা করা হয়েছে তাই আমরা বিদ্রোহীই হবো।(আমি)
.
–কিন্তু তোমাকে তো বিদ্রোহী ঘোষনা করা হয় নি। তুমি তো এসবের মধ্যে ছিলেই না।(লুসি)
.
–হ্যা ছিলাম না। কিন্তু আমার বন্ধুরা যখন এর মাঝে ঢুকে গেছে ঠিক সেই মুহুর্তেই আমিও হয়ে গেছি।(আমি)
.
–আমি তোমার প্লান ঠিক মতো বুঝতে পারছি না।(হ্যারি)
.
–দেখো আমরা আপাতোতো চারজন আছি। আমরা চারজন এখন একটা বিদ্রোহী টিম বানাবো। যার মূল কাজ থাকবে রাজা এবং জেনারেলের বিরুদ্ধে কাজ করা। রাজা নিজের রাজ্যের জনসংখ্যা ঠিক রাখার জন্য অনেক সময় পুরো একটা শহরকে শেষ করে দেই। আর সেরকম একটা মিশন আমরা প্রথমেই পেয়েছিলাম। আমাদেরকে বলা হয়েছিলো তারা রাজ্যের শত্রু। রাজ্যের বিরুদ্ধে যাচ্ছে। কিন্তু তারা একদম নিষ্পাপ ছিলো। রাজার আদেশেই এভাবে একটা একটা করে শহরের জনসংখ্যা কমিয়ে ফেলা হয়।(আমি)
.
–এতোকিছু তুমি জানলে কিভাবে?(লুসি)
.
–কিছুদিন প্যালেসে থাকার ফলে অনেক তথ্যই আমি পেয়েছি।(আমি)
.
–ও তুমি এখন এটার বিরুদ্ধে কিছু করতে চাচ্ছো?(হ্যারি)
.
–হ্যা। শুধু তাই না। রাজা মূলত তার সকল প্রজাকেই লুট করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। মিলিটারি আইন সব জেনারেলের কাছে থাকলেও, অর্থের সব দিকটাই রাজা নিজে দেখে থাকেন। পুরো রাজ্যের মধ্যে ট্যাক্স সমান করে দেওয়া হয়েছে। ক্যাপিটালের যে ট্যাক্স সেটা পুরো রাজ্যের শহরগুলোকে দিতে হয়। আর এর ফলে অনেক শহর না খেয়ে মরছে।(আমি)
.
–তো তুমি চাইছো এটার বিরুদ্ধে কিছু করতে?(হ্যারি)
.
–হ্যা। প্রতিবারের মতো এটা করতেও আমি দুইটা রাস্তা দেখছি। প্রথমত হয়তো আমাদের বর্তমান রাজাকে তার আসন থেকে সরাতে হবে যেটা অসম্ভব। আর দ্বিতীয়ত, আমাদের চতুর্থ রাজ্য বানাতে হবে যেখানে এসব লোকদের আমরা আশ্রয় দিবো যেটা আরো অসম্ভব।(আমি)
.
–তাহলে কি করবো আমরা?(হ্যারি)
.
–দুটো ছাড়া কোনো রাস্তা আমি দেখছি না। আর কোনটা সিলেক্ট করবো সেটাও ভাবতে পারছি না। তাই ভেবে ফেলছি দুটোই করবো।(আমি)
.
–রাজাকে সিংহাসন থেকে সরানো এবং নতুন আরেকটা রাজ্য তৈরী এটা তো আমাদের চারজনের দ্বারা কখনো সম্ভব না।(লুসি)
.
–হ্যা। সেটার চিন্তা করতে হবে না। চিন্তা ভাবনার কাজ সব আমার উপরে ছেড়ে দাও।(আমি)
.
–তো এটাই কি তুমি গত তিন বছর যাবৎ চিন্তা করছো?(লুসানা)
.
–আসলে সত্য বলতে, তোমাদের সাথে দেখার পরই আমি এটা ভাবলাম।(আমি)
.
–কি??? তাহলে কখনো হবে। আমাদের মতো টিম দ্বারা রাজার সামনে যাওয়ায় তো সম্ভব না। আর তো তাকে সিংহাসনচ্যুৎ করা, সেটা অম্ভব।(লুসি)
.
–আমি জ্যাককে বিশ্বাস করি। কারন ওর প্লানই আমাকে অনেকবার বাচিয়েছে। তাই আমি আমার জীবন জ্যাকের নাম করে দিলাম। ও যা বলবে আমি তাই করবো।(হ্যারি)
.
–কিন্তু হ্যারি।(লুসানা)
.
–তো তুমি কি তোমার শহরের প্রতিশোধ নিবে না? নাকি রাজা এবং জেনারেলকে এভাবেই তাদের শাসন করতে দিবে?(হ্যারি)
.
–প্রতিশোধ?(আমি)
.
–তোমাকে তো বলা হয়নি। আমাদের খোজার জন্য আমাদের শহরেও মিলিটারি গিয়েছিলো, যারা আমাদের এবং লুসিদের পুরো শহরকে হত্যা করে ফেলে, তাদের মধ্যে আমাদের পরিবার, আত্মীয়- স্বজন সবাইকে।(হ্যারি)
.
–দেখো আমি তোমাদের কাউকে প্রতিশোধ নেওয়ার কথা বলছি না। আমরা প্রতিশোধ নিবো না। বরং এরকম অন্য কারো সাথে না হয়, সেটা আমরা ঠিক করবো।(আমি)
.
–হ্যা আমরা দুই বোনও রাজি। আমরাও রাজা এবং জেনারেলের পতন দেখতে চাই।(লুসি)
।।।
।।।
তিনজনের মধ্যেই আমি একটা রাগের আগুন দেখতে পেলাম। তাদের শহরের সাথে যা হয়েছে সেটা শুনে আমি নিজে অনেকটা দুঃখ পেলাম। আমি প্যালেসে থাকতেই রাজা এবং জেনারেলের অনেক কালোকর্ম সম্পর্কে জেনেছিলাম। কিন্তু তখন আমি সেগুলো সম্পর্কে কোনো মনযোগ দেই নি। কিন্তু এখন ব্যাপারটা আলাদা। তারা তাদের সীমা ছাড়িয়ে ফেলছে। আমি এটাকে বেশীদিন চলতে দিতে পারবো না। যদিও আমার কাছে দুটো ড্রাগন রয়েছে, এটা দিয়ে একটা রাজ্যের বিরুদ্ধে যাওয়া কখনো সম্ভব না। কারন ড্রাগনগুলো তাদের আসল ফর্মে নেই এখন। মূলত আমার মনের মধ্যে এখন গুপ্ত যুদ্ধের প্লান আসছে শুধু। আমার মাথা অনেক তারাতারি চলে, যেকোনো একটা পরিস্থিতিতেই আমি খুব সহজে প্লান বানিয়ে ফেলতে পারি। আর আমাকে শক্তিশালী হতে হলে মূলত আসল যুদ্ধে যেতে হবে যেখানে লক্ষ লক্ষ সৈন্যের যুদ্ধ হয়। এটা অবশ্য লুসেফারের কথা ছিলো। যত শত্রু আমার ব্লেড দিয়ে হত্যা হবে ততই আমার ব্লেড শক্তিশালী হবে। অবশ্য সেটার জন্য আমার কাছে দুটো রাস্তা। এক হচ্ছে মিলিটারিতে যোগ দিয়ে রাজ্যের শত্রু হত্যা করা। আর সেটা করলে আমি আমার বন্ধুদের বিশ্বাসঘাতকতা করবো। আর আমার স্মৃতি অনুযায়ী এই তিনজনই আমার প্রথম বন্ধু। অবশ্য এলিও ছিলো, কিন্তু কে জানে ও একজন প্রিন্সেস। অবশ্য প্যালেসে ওকে আমি কখনো দেখি নি। লাইব্রেরীতে সব সময় কাটানোর ফলে হয়তো নজরে পরে নি। কিন্তু আমি কখনো আশা করি নি ও প্রিন্সেস হবে। আমি শুনেছি মোট তিনটা প্রিন্সেস ছিলো রাজ্যের। আর প্রথমটা এবং দ্বিতীয়টা আমি দেখেছিলাম। হয়তো এলি তৃতীয় প্রিন্সেস হবে। যাইহোক আমার দ্বিতীয় রাস্তা হলো অন্য কোনো রাজ্যে যোগ দেওয়া। যেটার ফলে আমি এই রাজ্যে বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারবো। যেটাও আমার কাছে সঠিক মনে হচ্ছে না। কিন্তু আমি যদি একদম নতুন একটা রাজ্য নিজেই বানিয়ে ফেলি তাহলে একদম ভালো হয়। আমি সেটা থেকে যুদ্ধ করতে পারবো। অবশ্য আমার রাজ্য চালানোর কোনো ইচ্ছা নাই। আমি শুধু শক্তিশালী হওয়ার উপরে কৌতহল। আমার ইচ্ছা আমি এই দুনিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী লেজেন্ড হবো। আর সেটার জন্য কিছু তো আমাকে করতেই হবে। আর সেটার জন্য আমি আমার সমস্ত প্লান ঠিক করে ফেলেছি।
.
–তো আজ থেকে আমাদের টিম রাজা এবং জেনারেলের বিরুদ্ধে কাজ করবে।(আমি)
.
–কিন্তু আমাদের টিমের নাম কি হবে?(হ্যারি)
.
–নাম? হ্যা ব্লাক ড্রাগন।(হঠাৎ ড্রাগনের নাম মনে পরে আমি এই নামটা সিলেক্ট করলাম)
.
–ওকে তাহলে আজ থেকে আমরা ব্লাক ড্রাগন।(লুসি)
.
–তাহলে আমাদের প্রথম মিশন কি হবে?(হ্যারি)
.
–মিশনের আগে প্রথমে আমাদের আরেকটা কাজ করতে হবে। সেটা হলো তোমাদের তিনজনের চেহারা পাল্টাতে হবে। এভাবে শহরে আমরা ঘুরতে পারবো না। আর শহরে ভালো মতো ঘুরতে না পারলে আমাদের কোনো প্লানই কাজ হবে না।(আমি)
.
–চেহারা কিভাবে পাল্টাবো?(হ্যারি)
.
–আমাকে একজন একটা স্পেল শেয়ার করেছিলো। অবশ্য আমি সেটা ব্যবহার করতে পারি না। সেটা দিয়ে যে কোনো ব্যাক্তির চেহারা নকল করা যায়। আমি ব্যবহার করতে পারি না। আশা করি তোমরা তিনজন ঠিকই ব্যবহার করতে পারবে।(আমি)
.
–স্পেল দিয়ে চেহারা চেন্জ করা যায়?(লুসানা)
.
–হ্যা। বৃদ্ধ লুসেফার তো আমাকে সেটাই বলেছিলো।(আমি)
.
–লুসেফার? সে কে?(হ্যারি)
.
–আমার গুরু।(আমি)
।।।।
।।।।
আমি স্পেলটা ওদের বুঝিয়ে দিলাম। অনেক চেষ্টার পর লুসানা স্পেলটা ব্যবহার করতে পারলো। তবে এই স্পেল দিয়ে সে মাত্র একটা চেহারাই চেন্জ করতে পারবে একজনের জন্য। মানে হচ্ছে হ্যারি, লুসি এবং সে নিজে মাত্র একটাই চেহারা নিতে পারবে। বৃদ্ধ লুসেফার আমাকে বলেছিলো সে মাত্র ৯ টা চেহারা বদলাতে পারতো। যে কোনো ব্যক্তি এবং তার নিজের। আর লুসানা মাত্র একটা পারে। মানে লুসানা, হ্যারি এবং লুসিকে এক চেহারার হতে হবে। মনে হচ্ছে মাস্ক ওদের জন্যও লাগবে। নাহলে তিনজনকে ভাইবোন বলে পরিচয় নিতে হবে।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ১৬
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমাদের নতুন টিম এখন প্রস্তুত। আমি রাতে শুয়ে আছি। সবাই ঘুমিয়ে পরেছে। তখন ভ্যালি আমার সাথে কথা বলতে লাগলো,
.
–তো তুমি রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চাও?(ভ্যালি)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–শুধু আমার কিংবা ইগড্রাসিলের সাহায্যে তুমি পুরো একটা রাজ্যের সাথে লড়তে পারবে না?(ভ্যালি)
.
–হ্যা আমি জানি। ছয়টা ড্রাগন অস্ত্র দিয়েও আমরা একটা রাজ্যের বিরুদ্ধে লড়তে পারবো না। কারন সকল ড্রাগনই তাদের হোস্টের শরীর থেকে ম্যাজিক পাওয়ার এবজোর্ব করে। আর বেশী ম্যাজিক পাওয়ার এবজোর্ব করলে হোস্ট মারা যেতেও পারে।(আমি)
.
–তাহলে কি করতে চাচ্ছো? চারজনে তো পুরো একটা রাজ্যের বিরুদ্ধে যেতে পারবে না।(ভ্যালি)
.
–হ্যা সেটা ঠিক। তবে আমি রাজ্যের বিরুদ্ধে যেতে চাচ্ছি না। আমার করার মধ্যে দুটো জিনিস আছে, প্রথমত হয়তো আমি রাজাকে জোর করবো সিংহাসন ছাড়ার জন্য, যেটা হয়তো সম্ভব না। কিন্তু দ্বিতীয়টা হলো গোপনে রাজাকে হত্যা করা। যেটা আমার কাছে ঠিক মনে হচ্ছে।(আমি)
.
–তো রাজাকে গুপ্তঘাতকের মতো হত্যা করবে? এটা কিন্তু সহজ না। প্যালেসে যে গার্ড থাকে।(ভ্যালি)
.
–হ্যা কোনো কিছু কাজে লাগিয়ে সেটা শেষ করতে হবে।(আমি)
.
–তোমার মাথায় কি চলছে এটা আমি কখনো বুঝতে পারছি না। অবশ্য এরকম লোকদের ভালোই লাগে, যারা মিস্ট্রিয়াস চিন্তা ভাবনা করে।(ভ্যালি)
.
–হ্যা। হ্যা। তোমার ভাবনায় তো শুধু ইগড্রাসিলই।(আমি)
.
–তোমাকে বলছি না এই কথা কাউকে না বলতে।(ভ্যালি)
.
–কাউকে তো বলি নাই।(আমি)
.
–এইযে আমাকে বলছো। যদি কেউ শুনে ফেলে।(লজ্জা পেয়ে বললো)
.
–হয়ছে হয়ছে লজ্জা পেতে হবে না। আমি শুধু ভাবছি ইগড্রাসিল উঠলে কি করবে?(আমি)
।।।
।।।
আমি ভ্যালির সাথে কথা শেষ করে ঘুমিয়ে পরলাম। সকালে উঠে হালকা নাস্তা করলাম। তারপর হ্যারিদের সাথে কথা বলতে লাগলাম।
.
–তো জ্যাক আমরা এখন কি করবো?(হ্যারি)
.
–দেখো আমরা যে কাজ করছি সেটার জন্য আমাদের অনেক তথ্যের প্রয়োজন হয়। আর সেটার জোগাড় না করা পর্যন্ত কোনো কিছু করা যাবে না।(আমি)
.
–কিসের তথ্য?(লুসি)
.
–রাজা এবং জেনারেলের সকল কালো কর্ম কোথায় আছে, কি হচ্ছে, কিভাবে হচ্ছে। তার সকল তথ্যই জোগাড় করতে হবে। এবং সেটা আমাকেই করতে হবে।(আমি)
.
–কি? তুমি করবে কিভাবে?(হ্যারি)
.
–জেনারেল আমার বাবা হওয়ার দাবী করেছিলো। যদি আসলেই আমার বাবা হয়ে থাকেন, তাহলে আমি এখন তার কাছে গেলে অবশ্যই প্যালেসে থাকার একটা ব্যবস্থা করবেন। অবশ্য এবার প্যালেসে আমার জায়গা লাগবে না। কিন্তু প্যালেসে যাওয়া আসার অনুমতিটা আমার দরকার।(আমি)
.
–ও আমি বুঝতে পেরেছি। তুমি প্যালেস থেকে সকল তথ্য বের করবে।(হ্যারি)
.
–হ্যা। দেখি আমি এখনি বেরিয়ে পরবো। তোমাদের সাথে সন্ধার একটু পরে উপরের গলিতেই দেখা হবে।(আমি)
.
–হ্যা ঠিক আছে। সাবধানে যেয়ো।(লুসি)
।।।
।।।
আমি বের হয়ে গেলাম ওদের গোপন জায়গা থেকে। পিঠে দুটো তলোয়ার রয়েছে। মুখের মাস্কের কারনে আমাকে কেউ চিনছে না। অবশ্য অনেকে সন্দেহ করছে আমাকে দেখে। সন্দেহ করারই কথা। এখন ক্যাপিটালে অনেক সন্ত্রাসী ঘুরে বেরাচ্ছে। আমি সোজা প্যালেসের দিকে চলে গেলাম। এই কয়েক বছরে প্যালেসে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আমার নিজেরও অনেক পরিবর্তন হয়েছে। যদিও এই জায়গায় তিনবছর সময় কেটেছে, কিন্তু আমার শরীর পাঁচবছর সময় কাটিয়েছে রুইনস অফ ড্রিমে। তাই শরীরটা একটু বেশী বৃদ্ধি পেয়েছে। চেহারাও অনেকটা উজ্জল হয়েছে। জানি না আমাকে তিনবছর পর দেখে জেনারেল কি বলবে। কিন্তু আমার যতদূর মনে হয় জেনারেল কিছু বলবে না। তার সাথে দেখা হলেই বোঝা যাবে কি হয়। আপাতোতো আমি একদম প্যালেসের গেইটের সামনে দাড়িয়ে আছি। যেখানে অনেকগুলো গার্ড আমার উপরে আধুনিক অস্ত্র তাক করে দাড়িয়ে আছে। অস্ত্র গুলোকে বলে বন্ধুক। এটার মধ্য থেকে ম্যাজিকাল বুলেট বের হয়, যেটা শরীরকে ফুটো করে দিতে পারে। একজন গার্ড আমাকে জিজ্ঞেস করতে লাগলো,
.
–কে তুমি? আর প্যালেসের দিকে আসছো কেনো?(গার্ড)
.
–আমি এখানে আসছি জেনারেলের সাথে কথা বলতে।(আমি)
.
–জেনারেলের অনুমতি ছাড়া কেউ তার সাথে কথা বলতে পারবে না।(গার্ড)
।।।
।।।
আমি পরিচয় দিতে পারলাম না। অনশ্য এখানে আমাকে বলতে হতো আমি জেনারেলের ছেলে। কিন্তু সেটা আমি বলতে চাই না। আমাকে আরেকটা প্লান করতে হবে। আমি পিছনের দিকে ফিরলাম। কিন্তু গেইটের মধ্য থেকে ডাক শোনা গেলো। গার্ডদেরকে অর্ডার করা হলো আমাকে ভিতরে যেতে দেওয়ার জন্য। আমিও ভিতরে চলে গেলাম। ভিতর থেকে প্রিন্সেস এলিনা আমাকে ডাক দিয়েছে। আমি প্রিন্সেস এর সামনে গেলাম। পা নিচু করে কুর্নিশ করলাম।
.
–জ্বী প্রিন্সেস।(আমি)
.
–জ্যাক তুমি তাইনা?(প্রিন্সেস)
.
–আমাকে চিনলেন কিভাবে?(আমি)
.
–বাদ দাও সেটা। আগে বলো এতোদিন কোথায় ছিলে? আমরা তো শেষ খবর পেয়েছিলাম যে তুমি একটা গুহার ভিতরে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছিলে, আর পাওয়া যায় নি তোমাক।(প্রিন্সেস)
.
–জ্বী। আর্কাইব থেকে সেই মিশনে যাওয়ার পর আমি গুহার মধ্যে আটকা পরেছিলাম। তবে কিভাবে এতোদিন বেঁচে ছিলাম সেটা আমি নিজেও জানি না। অবশ্য ভিতরে কি হয়েছে আমি কিছুই জানি না। পুরো তিন বছর সময় আমার ঘুমের মধ্যেই কেটেছে। যখন ঘুম ভাঙলো তখন আমি গুহার মুখের কাছে ছিলাম।(আমি)
.
–ওওও। তোমার মুখ ঢাকা ছিলো, তাই প্রথমে চিনতে পারি নি। কিন্তু তোমার চোখ দুটো দেখে দূর থেকেই চিনে ফেলেছি যে তুমিই জ্যাক।(প্রিন্সেস)
.
–আমি অনেক আনন্দিত যে আপনি আমাকে দূর থেকে দেখেই চিনতে পেরেছেন।(আমি)
।।।
।।।
প্রিন্সেস এর প্রধান গার্ড চলে এসেছে এই জায়গায় তাই আমি আর কোনো কথা বললাম না প্রিন্সেস এর সাথে। এমনিতেই আমার প্রিন্সেসদের সাথে কথা বলতে অনেক বিরক্ত লাগে। শুধু প্রিন্সেস না। সকল বড়লোকের মেয়েদেরকেই আমার বিরক্ত লাগে, যারা তাদের পরিবারের ক্ষমতায় ক্ষমতাসীন থাকে। অবশ্য এখানে বিরক্ত হওয়ার ভাব নেওয়া যাবে না। নাহলে আমার মাথা যাবে।
.
–প্রিন্সেস। আপনি কার সাথে কথা বলছেন?(আখিল)
.
–ও আখিল। দেখো জ্যাক ফেরত এসেছে।(প্রিন্সেস)
.
–কি জ্যাক?(আখিল)
.
–হ্যা।(প্রিন্সেস)
.
–এটা হয়তো নকল জ্যাক হবে। জ্যাক যে গুহার মধ্যে ঢুকেছিলো সেটার মধ্যে আজ পর্যন্ত যে ঢুকেছে কেউই ফেরত আসে নি।(আখিল)
.
–কিন্তু ও সত্যিই জ্যাক। আমি বলছি।(প্রিন্সেস)
.
–ঠিক আছে জ্যাক তোমার মুখ খুলো তাহলে, আগে চেক করতে হবে।(আখিল)
।।।
।।।
।।।
আমি আর কোনো কথা বলছি না। যদিও আখিল আমাকে দেখে রেগে গেছে। তারপরও আমি আমার মুখের মাস্ক খুললাম। আর আমার চেহারা আগের মতোই আছে, শুধু বয়সের সাথে সাথে রূপের বলদ হয়েছে কিছুটা। আগে বাচ্চা বাচ্চা লাগতো, এখন প্রাপ্ত বয়স্ক লাগে। যাইহোক জেনারেলের কাছে খবরটা মুহুর্তেই চলে যায়, এবং সে সোজা চলে আসে আমার সাথে দেখা করতে। আমি বুঝতে পারলাম হয়তো জেনারেল সত্যিই আমার বাবা হতে পারে। কিন্তু তাই বলে আমি তাকে মেনে নিতে পারি না। জেনারেল আমার সাথে কথা বললো। তার কথা মতে সে আমাকে আর আর্কাইবে কাজ করতে দিবে না। সে জানে আমি শক্তিশালী হতে চাই, এজন্য সে রয়েল মিলিটারিতে একটা পদে আমাকে দিয়ে দিবে। শুধু পদটা আমাকে চেয়ে নিতে হবে। অবশ্য আমার সাথে কি হয়েছে সেটাও শুনেছে সে। আমি প্রিন্সেসকে যা বলেছি তাকেও সেটা বলে দিয়েছি। জেনারেল আমাকে পেয়ে অনেকটা খুশি হলো। কিন্তু সেটা প্রকাশ করতে পারে নি আমার সামনে।
।।।।
।।।।
আমি এবার আর লাইব্রেরীতে জায়গা নিলাম না। আমি সোজা জেনারেলের কক্ষে চলে গেলাম। এবং জেনারেলের সাথে কথা বলতে লাগলাম।
.
–স্যার।(আমি)
.
–এখানে বাবা ডাকতে পারো আমাকে।(জেনারেল)
.
–না স্যারই ঠিক আছে আমার কাছে।(আমি)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে। কিছু লাগবে? কোন পদে যোগ দিবা সেটা ভেবেছো?(জেনারেল)
.
–না স্যার। আমার মিলিটারিতে যোগ দেওয়ার কোনো ইচ্ছা নাই। আমি প্যালেসের এলিট গার্ড হতে চাই।(আমি)
.
–আমি দুঃখিত জ্যাক। কিন্তু এলিট গার্ড মূলত রাজা নিজে সিলেক্ট করে থাকেন। আর সেটার জন্য তোমাকে প্রথমে গার্ড হতে হবে। এবং কমপক্ষে রয়েল গার্ডের চারটা ব্যাজ পেতে হবে এলিট গার্ডের অ্যাপলিকেশন করতে। আমি তোমাকে রয়েল গার্ড বানিয়ে দিতে পারবো। কিন্তু সেটার জন্যও তোমার ক্ষমতা দেখাতে হবে রাজাকে। আমার কাছে শুধু মিলিটারী ক্ষমতাই রয়েছে। তাছাড়া বাকিটুকু রাজা নিজেই করে থাকেন।(জেনারেল)
.
–ওওও। আচ্ছা তাহলে আমি রয়েল গার্ডই হতে চাই।(আমি)
.
–আচ্ছা। তাহলে বিকালে আমি তোমার এক্সিবেশন ম্যাচ এর ব্যবস্থা করে দিবো। সেখানে অনেক বড় বড় লোকেরা থাকবে। সেখানে যদি কিছুটা ভালো করতে পারো, তাহলে রাজা নিশ্চয় তোমাকে রয়েল গার্ডে নিবেন। তাছাড়া আমি রাজাকে বলেও দিবো।(জেনারেল)
.
–আচ্ছা।(আমি)
।।
।।
আমি জেনারেল এর রুম থেকে বের হয়ে গেলাম। মূলত এলিট গার্ড হলো রাজার নিজের বডিগার্ড। যারা সবসময় রাজার নিরাপত্তার কাজ করে। তারা এক একজন রাজ্যের সবচেয়ে শক্তিশালীদের একজন হয়। আমি যদি এলিট গার্ড হতে পারি, তাহলে রাজাকে হত্যা করা আমার পক্ষে একদম সহজ। আমার মূল উদ্দেশ্য এখানে রাজাকে হত্যা করা। তাছাড়া আমি রাজাকে সিংহাসন থেকে নামাতে পারবো না। সৈনিকদের সবচেয়ে বড় পদই হলো জেনারেল। কিন্তু গার্ডদের সবচেয়ে বড় পদ হলো এলিট গার্ড। ধরা হয় এক একজন এলিট গার্ড জেনারেল এবং রাজার থেকেও শক্তিশালী। এলিট গার্ডের নিচে রয়েছে রয়েল গার্ড। যারা রাজার পরিবার এবং বংশের লোকদের নিরপত্তা, শিক্ষার কাজ করে থাকে। আর সবচেয়ে নিচে রয়েছে গার্ড। যারা প্যালেসের নিরাপত্তা করে থাকে। আমার শুধু গার্ড হওয়াতে কোনো লাভ হবে না। কিন্তু রয়েল গার্ডে কিছুটা সুবিধা হবে। যদি প্যালেসের মধ্যে আমার কারো জন্য কাজের ভার পরে তাহলে সবচেয়ে বেশী ভালো হবে। মূলত আমি চাচ্ছি প্যালেসের ভিতরেই থাকতে। তাতে আমাদের কাজে সুবিধা হবে। আমি কিছুটা রেস্ট নিয়ে নিলাম। কারন বিকালেই আমার এক্সিবিশন হবে। মূলত আমাকে একজনের সাথে লড়তে হবে। হার কিংবা জেতার কোনো চিন্তা নেই আমার। কারন হার কিংবা জেতার ফলে কাউকে রয়েল গার্ডে নেওয়া হয় না। যদি রাজার বংশের কেউ নিজ থেকে কাউকে পছন্দ করে এবং তাকে নিজের রয়েল গার্ড বানাতে চাই তাহলেই একজন সিলেক্ট হয়। এখানেও অনেকেই আসবে আমার লড়াই দেখতে। যদি আমাকে কারো ভালো লাগে, তাহলেই আমাকে তার রয়েল গার্ড বানাবে।
।।।
।।।
বিকালের দিক আমাকে যেতে হলো প্যালেসের পিছনের দিকে। শুধু প্যালেসের রাজার পরিবার না। বরং বাইরে থেকেও রাজার বংশের লোকেরা এসেছে। আমি জানি না আমি কার সাথে লড়বো। কিন্তু আমার ভয় হচ্ছে অনেক। ভ্যালি আমার ভয় অনেকটা দূর করে দিলো আমার সাথে কথা বলে।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।