ভ্যাম্পায়ার কুইন ২ পর্ব-৩৫+৩৬

0
17

#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ৩৫
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমাকে ফাইটিং এরিনার মধ্যে যেতে হলো। লড়তে হবে জেনারেল লুকের সাথে। যদিও আমি এতো তারাতারি প্রস্তুত নই। আর আমি এখানে একটু অসুবিধার মধ্যেই আছি আমার তলোয়ার ছাড়া। তারপরও দেখা যাবে কি হয়। আজকে ফাইটিং এরিনা পুরো ভরে গেছে। মনে হচ্ছে পুরো এ্যারসাকে এই খবর ছরিয়েছে। আর তার ফলেই এতো এন্জেল দেখতে এসেছে। যাই হোক জেনারেল লুক অনেক শক্তিশালী। তাকে হারাতে চাইলে আমাকে বুদ্ধি দিয়ে কাজ করতে হবে। মাঝখানে আমি এবং লুক হেটে আসলাম। লুকের শরীরে প্রচন্ড শক্তি রয়েছে যেটা যে কাউকে এক আঘাতে মেরে ফেলতে পারবে। আমি এটুকু শিওর যে প্রথম লড়াই এ তেমন শক্তি ব্যবহার করে নি সে। কিন্তু এবার পুরোটাই ব্যবহার করবে। যদি ম্যাজিকাল কোনো স্পেল ব্যবহার করে, তাহলে আমি সেটা বিরুদ্ধে তাকে আঘাত করতে পারবো আমার পিঠের হাতগুলো দিয়ে। কিন্তু আমাকে সোজাসোজা লড়াই এর জন্য একটা অস্ত্র ভাবতে হবে। আপাতোতো আমি গ্রাভিটি কন্ট্রোল ব্যবহার করতে চাই না। সেটা শেষের দিকে ব্যবহার করতে পারবো। আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই লুক আল্ট্রা স্পিডে আমার দিকে আসতে লাগলো যেটাকে আমি দেখতেই পেলাম না। এক দম কাছে এসে আমাকে ঘুষি মারতে যাবে, তখনি আমি আমার পিঠ থেকে তিনটা হাত বের করলাম। এবং আমার ডান হাত সহ তিনটা হাত দিয়ে লুকের ঘুষিটা থামিয়ে ফেললাম। ঘুষিটা এতো শক্তিশালী হবে, সেটা বুঝতে পারি নি। গডহ্যান্ডের তিনটা হাত এবং আমার নিজের হাতের জোরও ওর ঘুষিকে থামিয়ে রাখতে পারলাম না বেশীক্ষন। ঘুষির ফোর্সের ফলে আমি অনেকটা দূরে কয়েক পল্টি খেতে খেতে চলে আসলাম। মুখে লাগে নি এখনো ঘুষি। তবে ডান হাতের কব্জিতে হালকা ব্যথা করা শুরু হয়েছে। এটা আগের ঘুষিগুলোর থেকে দ্বিগুন শক্তিশালী। আমি ভাবতে শুরু করলাম কি করা যায় এমন পরিস্থিতিতে। আর তখনি লুক দূর থেকে আল্ট্রা স্পিডে আমার কাছে চলে আসলো। এবং আমার মাথা ধরে সোজা ফ্লোরে যাতা দিলো। এবার ওর স্পিডও দ্বিগুন ছিলো। যেটা আমি দেখতেই পারি নি। একদম নিমিষেই আমার কাছে চলে আসলো ও। সামনের দিক দিয়ে আসায় আমার মাথার পিছনের সাইড ফ্লোরে যাতা দিয়েছে। এজন্য মুখ বেচে গেলেও। মাথার পিছন দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। মাথা অনেকটা কেটে গেছে। কিন্তু সেটা আস্তে আস্তে হিল হচ্ছে। আমি উঠতে পারছিলাম না। মাথায় ব্যথায় ঘুরছিলো। লুক কিছুটা পিছিয়ে গেলো। আমাকেও আক্রমন করার সময় দিলো। আমি উঠে দাড়িয়ে সয়মকে আটকিয়ে দিলাম। অবশ্য বেশীক্ষন আটকিয়ে রাখতে পারি না। তারপরও আধা সেকেন্ড আমার জন্য যথেষ্ঠ আঘাত করার জন্য। আমি সময়কে আটকানোর পর সোজা আমার ডান হাতে আগুন বানিয়ে ফেললাম। এবং পুরো ডান হাটতে আগুনে ঢেকে দিলাম। এরপর আল্ট্রা স্পিডে আমি লুকের কাছে গেলাম। যদিও আমার আল্ট্রা স্পিড ওর কাছে কিছুই না। কিন্তু সময় আটকে থাকার কারনে এখন আমার এডভান্টেজই বেশী। আমি আমার ডান হাত দিয়ে সোজা ওর নাক বরাবর একটা ঘুষি মারতে গেলাম। কিন্তু লুক সেটা আটকে ফেললো।
.
–টাইম স্পেল খারাপ না। কিন্তু এটা এন্জেলরাও পারে।(লুক)
।।
।।
লুক আমার ডান হাত ধরে পিছনের দিকে আমাকে উচু করে ফেলে দিলো। আমি ফ্লোরে পরে গেলাম উপুর হয়ে। পুরো ফ্লোর ভেঙে নিচু হয়ে গেলো। আমার বুকের পাজরের হাড় ও মনে হলো ভেঙে গেলো। প্রচন্ড ব্যথা শুরু হলো বুকের মধ্যে। আমি আগের দুনিয়াতে এতো ব্যথা কখনো অনুভব করেনি যেটা এখন করছি। সব কিছু নিয়ে বলা যাচ্ছে আমি অনেক দুর্বল। তারপরও আমাকে চেষ্টা করতে হবে। আমি এখনো আমার ক্ষমতা গুলো ব্যবহার করা শুরু করি নি। আমি আমার পিঠের হাত বের করলাম একটা। এবং সেটা দিয়ে একটা তলোয়ার বানালাম। আমি মাত্র কয়েকটা হাতের সঠিক যে কোনো রূপ দিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রন করতে পারি। অবশ্য কথা ছিলো বাইরের কোনো অস্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। ম্যাজিক দিয়ে বানালে সেটা অন্য কথা। লুকের লড়াই এর স্টাইল হলো ক্লোজে। আমি যদি ক্লোজে না গিয়ে দূর থেকে ওকে মারতে পারি তাহলে কিছু একটা করতে পারবো। আর সেটার জন্য তলোয়ার হয়তো ভালো চয়েজ হবে না। তারপরও আমাকে চেষ্টা করতে হবে। আমি লুসেফারের থেকে শেখা কয়েকটা টেকনিক ব্যবহার করতে লাগলাম৷ প্রথমেই তলোয়ার দিয়ে আমি মাটিতে আঘাত করলাম। যেটা মাটি থেকে অনেক লোহার তলোয়ার বের করছে। এটা মূলত লোহা নয়। বরং হালকা সময়ের জন্য আমার শরীর থেকে তলোয়ারের রূপ নিয়ে ম্যাজিক পাওয়ার অনেকগুলো তলোয়ার তৈরী করে। আর সেটা মাটির উপরে কাটা বিছানোর মতো যেতে থাকে সামনে। আমি অনেকটা দূর থেকেই এক টেকনিক ব্যবহার করলাম। যদিও এটা লুকের পায়ে সামান্য পরিমান ক্ষত করতে পেরেছে। এইটুকুতে আমি লুককে কখনো হারাতে পারবো না। লুক কিছুটা হেসে উঠলো। এবং আবারো আমার দিকে এগিয়ে আমাকে ঘুষি মারলো দুটো। আমি এবার আর আমার ক্ষমতা রেখে দিলাম না। আমি পুরো দশটা হাত বের করলাম পিঠ থেকে। এবং লুকের দুটো হাতের ঘুষি আমি ছয়টা ছয়টা হাত দিয়ে থামিয়ে ফেললাম। যদিও আমাদের শক্তি এখন সমান সমান হয়েছে, তারপরও এটাও যথেষ্ঠ না। আমি আমার পুরো ক্ষমতা এখনি ব্যবহার করতে চাই। কারন যত তারাতারি তাকে হারাতে পারবো ততই ভালো হবে আমার জন্য। তাছাড়া বুকের হাড় ভাঙার ব্যথা নিয়ে আমাকে এভাবেই লড়তে হবে অনেকক্ষন। আবার এর থেকেও খারাপ পরিস্থিতি হতে পারে এভাবে বেশীক্ষন লড়তে থাকলে। আমি আমার ডান হাতে কিছুটা আগুন জ্বালালাম। পুরো ডান হাত আমি আগুনে ঢেকে ফেললাম। এবং আমি লুকের কাছে গিয়ে ঘুষি মারতে লাগলাম। শুধু আমার ডান হাত নয়, ডান হাতের সাথে দশটা হাত বের হয়েছে পিঠ থেকে। সেগুলোও একসাথে ঘুষি মারছে লুককে। লুক তার হাত দিয়ে আমার ছয় সাতটা ঘুষি থামাতে পারলেও বাকি কয়েকটা ঠিকই শরীরে লাগছে। তেমন শক্তিশালী ঘুষি না হলেও আমি ঠিক একটা পয়েন্ট করে সবগুলো ঘুষি মারছি। এক মিনিটের মধ্যে আল্ট্রা স্পিডে আমি পুরো দুইশোর বেশী ঘুষি মেরেছি এক একটা হাত দিয়ে। ঘুষি গুলোর পর লুক হেসে আমার দিকে বলতে লাগলো,
.
–এটাই আশা করেছিলাম আপনার থেকে। যতই গডহ্যান্ড থাকুক না কেনো? একজন মানুষ তো মানুষই থাকে। শারিরীক দিক দিয়ে তারা দুর্বলই হয়।(লুক)
।।
।।
লুক হেসে আমাকে বলতে লাগলো। তার কথা সত্য। মানুষ শারিরীক দিক দিয়ে বাকি গোত্র থেকে অনেক দুর্বল। আমার কাছে হিলিং ক্ষমতা থাকার ফলে আমি এতোদিন বেচে আছি, নাহলে অনেক আগেই মারা যেতাম। লুকের এই কথা আমি অমান্য করতে পারলাম না। হ্যা আমরা মানুষেরা অনেক দুর্বল। শারিরীক ভাবে আমরা ঠিকই দুর্বল। যারা অন্য গোত্রের সাথে কিছু করতে পারবো না। তবে লুক হয়তো জানে না মানুষেরা তাদের নিজেদের দিক দিয়ে আলাদা। একটা জিনিস আমি ভুলেই গিয়েছিলাম। মানুষের কাছে যে জ্ঞান ছিলো সেটা অন্য কোনো গোত্রের কাছে ছিলো না আগের দুনিয়াতে। আর এবারো সেটাই হবে। যদিও মানুষ এই দুনিয়ায় তেমন সুবিধা পায় না জ্ঞান অর্জনের। কিন্তু মানুষের জ্ঞান অর্জনের অনেক আগ্রহ আছে। ঠিক আমার মতই। ড্রাকুলার প্যালেস থেকে আমি অনেক গুরুত্বপূর্ন জিনিস জানতে পেরেছি যেটা এই দুনিয়ার মানুষদের অনেক উন্নতির পথে নিয়ে যাবে। কিন্তু সেটার জন্য অনেক কষ্ট করতে হবে। যাইহোক আমি আশেপাশের অক্সিজেন আমার আগুনের মধ্যে নিয়ে আসলাম। এরজন্য আমার আগুন অনেকগুন বেরে গেলো। এবং পুরো ডান পাশ আগুনে জ্বলতে লাগলো। আগুন আকাশের দিকে অনেকটা উপরে উঠছে। আর চারিদিকে মারাত্মক তাপ দিচ্ছে। আমার তাপ বেড়ে গেলেও শরীরে আমি তেমন ফিল করছি না তাপ। সেটা স্বাভাবিকই রয়েছে। আমি আপাতোতো শুধু অক্সিজেনই ব্যবহার করছি। এছাড়া আরো অনেক পদার্থ রয়েছে যেগুলো আমাকে ব্যবহার করতে হবে। আমার ম্যাজিক পাওয়ার দেখার ক্ষমতা এখানে অনেক কাজে দেই। কারন আমি বায়ুতে প্রতিটা পদার্থকে আলাদা ভাবে এটার সাহায্যে দেখতে পাই। যাইহোক আমি অক্সিজেনের পরিমান আরো বাড়িয়ে দিলাম। আগুন আরো মারাত্মক ভাবে জ্বলতে লাগলো। এই অবস্থায় আমি অ্যামোনিয়া গ্যাস এবং এখানে নাইট্রোজেন কিংবা হাইড্রোজেন যোগ করলে এই জায়গায় পুরো বিশাল একটা ডিসট্রাকসন হবে। অনেকটা নাইট্রোজেন এবং হাইড্রোজেন বোমার মতো কাজ করবে। যাইহোক আপাতোতো আমার আগুন অনেক বেড়ে গেছে। আমি আল্ট্রা স্পিডে আগাতে লাগলাম। তাছাড়া ছয়টা হাত বের করেছি পিঠ থেকে। পিঠের হাতগুলোকে আমি আমার স্পিড বারানোর জন্য ভালো একটা বুদ্ধি পেয়েছি্ ছয়টা হাত ফ্লোরে ভর করে সামনের দিকে আমাকে ঢেলে পাঠিয়ে দিচ্ছে। অনেকটা একটা মাকড়া যেভাবে তার অনেকগুলো পা দিয়ে দ্রুত চলাচল করে, ঠিক সেভাবে কিন্তু আমি হাতগুলো আমার শরীরকে আরো দূরে ব্যবহার করছি। অনেকটা রাবারের মাধ্যমে পাথর ছোড়ার মতো। আমার স্পিডের কারনে লুক এবার আমাকে দেখতেই পারলো না। আসলেই অনেক স্পিড বেরে গেছে গডহ্যান্ডকে এভাবে ব্যবহারের জন্য। ডানা থাকলে হয়তো আরো স্পিড হতো, তবে আপাতোতো এইটুকুই যথেষ্ঠ। আমি দ্রুত এগিয়ে লুকের মুখে ডান হাত দিয়ে একটা ঘুষি দিলাম। লুক এটা আমার থেকে আশা করে নি। আমার ঘুষিতে এমনিতেই অনেক পাওয়ার ছিলো, এবং যে স্পিড ছিলো তাতে লুক পল্টি খেতে খেতে একদম দূরে গিয়ে এরিনার দেওয়ালের মধ্যে ঢুকে গেলো। ঘুষিটা ওর দেওয়া ঘুষির থেকেও অনেকটা শক্তিশালী হয়েছে। লুক ভাঙা দেওয়ালের মধ্য থেকে হাটতে হাটতে বের হয়ে আসলো। ওর বাম পাশের গাল অনেকটা কেটে গেছে। এবং একটা দাঁত ভেঙে পরে গেছে। যেটা দূর থেকে ওর থুতু মারার ফলে দেখতে পেরেছি। এন্জেলদের দাঁত অনেক সাদা হওয়ার ফলে দূর থেকেই সেটা জ্বলজ্বল করে জ্বলে। আর থুথুর মধ্যে সেটা ভালো করেই দেখা যাচ্ছিলো। লুকের চেহারা দেখে ঠিকই বুঝতে পারছিলাম ও রেগে গেছে। লুক এবার কাছে এসে আমাকে আঘাত করলো না। রাগে দূর থেকেই অনেক শক্তিশালী একটা লাইট বল বানিয়ে সেটা আমার দিকে ছুড়ে মারলো। আমার জন্য এটাই সুযোগ। আমি চাচ্ছিলাম লুক আমার উপরে ম্যাজিকাল আঘাত করুক। তার স্পেল যতটাই শক্তিশালী হোক না কেনো আমার এই হাতগুলো সেটার জন্য পারফেক্ট। আমি সুরক্ষার জন্য পঞ্চাশ টা হাত বের করলাম।
।।।
।।।
লুকের লাইট বল আমার গডহ্যান্ডের সাথে সংঘর্ষ করলো। এবং সাথে সাথে সকল লাইট বলের সকল ম্যাজিক পাওয়ার এবজোর্ব করে নিলো। আমি একটা বাদে বাকি হাতগুলোকে আবার ভিতরে নিয়ে গেলাম। একটা জিনিস আমি বুঝি না, এ হাতগুলো কোথায় থাকে? হয়তো শরীরের হাড়গুলোই হাতের রূপ নেই। কিংবা অন্য কিছুও হতে পারে। যাইহোক বাকি হাতগুলো ভিতরে রাখার কারন হলো, এই একটা একটা লাইট বল আমার পঞ্চাশটা হাতই এবজোর্ব করেছে কিছুটা কিছুটা করে। এবং সবাই যদি দ্বিগুন ক্ষমতায় আবার সেটা লুকের দিকে ফেলে তাহলে সেটা অনেক শক্তিশালী হবে। আপাতোতো লুকের লাইট স্পেলটা আমার একটা হাতে রয়েছে। এবং সেটার দ্বিগুন শক্তিতে এটা তার দিকেই নিক্ষেপ করবে। দুই সেকেন্ড সময় পর লাইট বলটা লুকের দিকে ছুড়ে মারলাম। লুক তার চারদিকে একটা ব্যারিয়ার বানিয়ে ফেললো। কিন্তু লাইট বলটা ব্যারিয়ারকে ভেঙে ফেলে। লুক তার হাত দিয়ে লাইট বল থামানোর চেষ্টা করলো। আর সেটা থেমে গেলো। লুকের হাতে অনেক ক্ষত হয়েছে, তবে সেটা আস্তে আস্তে হিল হওয়া শুরু করেছে। লুক রাগে কি করবে বুঝতে পারছে না। কারন ম্যাজিক পাওয়ার আমার উপরে কাজ করবে না। তাই লুক সাথে সাথে আবার আমার কাছে চলে আসলো হাতে হাতে লড়তে। আমিও এবার প্রস্তুত। আমার ডানপাশের আগুন আমি আবারো বারিয়ে নিলাম। এটা অনেকটা পাওয়ার বুস্ট এর মতো। আগুন আমার ডান অংশে এসে আমার ডান অংশের ক্ষমতা বারিয়ে দেই। অবশ্য পানির এট্রিবিউট থাকলে আমি দুই অংশকে সমান ভাবে ব্যবহার করতে পারতাম। লুক আমার কাছে আসার আগে ওর উপরে একটা ম্যাজিক স্পেল ব্যবহার করলো। যেটা ওর শরীরের বডি অনেকটা বাড়িয়ে দিলো। ওর সমস্ত পেশী ফুলে গেলো। বুঝতে পারলাম ও নিজেও একটা পাওয়ার বুস্ট স্পেল ব্যবহার করেছে। আগের থেকে অনেকটা ক্ষমতা ওর ও বেরে যাবে। তাই আমিও আমার পুরো ক্ষমতা দিয়ে ঘুষি মারতে গেলাম। দুজনের ঘুষিতে পুরো এরিনার মধ্যে ভূমিকম্প হয়ে গেলো। ফ্লোর গর্ত হয়ে গেলো অনেকটা আমাদের আশে পাশের। যদিও দুজনের ক্ষমতা এখন সমান একদম। তারপরও ঘুষির কম্পনে আমার ডান হাতের জামার হাতা পুরো ছিড়ে গেছে। যেটা দিয়ে ইগড্রাসিলের ছবি পুরো ক্লিয়ার দেখা যাচ্ছে। ইগড্রাসিল এতোক্ষন ঘুমে ছিলো, কিন্তু আমাদের লড়াইয়ের ফলে সে নিজেও জেগে উঠেছে। আমার আগুন এতোক্ষন এমনিতেই মারাত্মক ভাবে জ্বলছিলো। কিন্তু হঠাৎ ইগড্রাসিল চিল্লিয়ে উঠলো, আর আমার ডান অংশের আগুন আরো দ্বিগুন ভাবে জ্বলতে লাগলো। এবার পুরো এরিনা উত্তপ্ত হয়ে গেলো। আমার ডান চোখ পুরো লাল হয়ে গেলো। আমি সব কিছু লাল লাল দেখতে লাগলাম। হঠাৎ ইগড্রাসিল বলতে লাগলে,
.
–জ্যাক, তুমি আমাদের ম্যাজিক পাওয়ার দেখার ক্ষমতা পুরো পুরি মাস্টার করে ফেলেছো?(ভিরুদা)
.
–ঠিক জায়গায় তো তাহলে হয়েছে।(আমি)
.
–হ্যা, এখন তুমি আরো ক্লিয়ার ভাবে ম্যাজিক পাওয়ার দেখতে পারবে। শত্রুর শরীরের কোথা দিয়ে ম্যাজিক পাওয়ার বের হচ্ছে সেটা দেখে সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিতে পারবে।(ভিরুদা)
.
–এটা তো সু সংবাদ।(আমি)
।।।
।।।
লাল চোখে কেমন দেখাচ্ছে সেটা আমার দেখার ইচ্ছা এখন। কিন্তু সেটা না হয় আমি পরে দেখবো। আপাতোতো আমার শরীরের আগুনে লুকের শরীরের ডানার পালক পুড়ে যাচ্ছে যেগুলো ওর ডানা থেকে পরে গেছে। যাক এবার নাহয় লুককে আমার তাপে কুক করা যাবে।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ৩৬
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
এই রিয়েলিটিতে আমার একটা ক্ষমতা রয়েছে ছোট থেকেই। আমি যেকোনো ধরনের ম্যাজিক পাওয়ার দেখতে পারতাম। এই ম্যাজিক পাওয়ার গুলো দেখার ক্ষমতা শুধু ড্রাগনদের ছিলো। যেটা তারা ছাড়া অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারতো না। ড্রাগনরা সাধারন চোখে কিছু দেখতে পারে না। তাদের এই ক্ষমতার নাম ম্যাজিক সেন্স। তারা এটার মাধ্যমে তাদের আশেপাশের সকল ম্যাজিক পাওয়ার দেখতে পাই। অনেকটা আলোর মতো। আলো যেভাবে একটা জিনিসের উপরে পতিত হয়ে সেটা থেকে প্রতিফলিত হয়ে আমাদের চোখে আসে, আর আমরা সেটা দেখতে পাই। ঠিক তেমনিই আশেপাশের ম্যাজিক পাওয়ার বিভিন্ন জিনিস থেকে প্রতিফলিত হয়ে ড্রাগনদের চোখে আশায় ড্রাগনরা সব কিছু দেখতে পাই। অবশ্য সেই একই ক্ষমতা আমার জন্যও। যদিও আমি এতোদিন দুই চোখ দিয়ে হালকা পাতলা ম্যাজিক পাওয়ার দেখতে পারতাম। কিন্তু আজ লুকের সাথে লড়তে লড়তে আমি সেটার উন্নত লেভেলে চলে গেছি। আপাতোতো আমি বাম চোখ দিয়ে কোনো ম্যাজিক পাওয়ার দেখতে পারছি না। শুধু ডান চোখ যেটা কিনা লাল হয়ে গেছে। আমার ডান সাইডের আগুন অনেক তীব্র হয়ে গেছে। আর সেই আগুনেই আমি আমার মুখের প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি। আগুন অনেক বেশী তাপমাত্রায় আসার ফলে সেটা ভাঙা ফ্লোরে অনেক ইটের টুকরোকে গলিয়ে বাষ্প করে দিচ্ছে। সেটার মধ্যে সিলিকন ও রয়েছে। যেটা আগুনের মধ্যে কিছুটা তরল আকার গ্রহন করেছে। আর তার ফলে আগুন অনেকটা আয়নার মতো কাজ করছে, যদিও প্রতিফলন সামান্য তারপরও কিছুটা হলেও নিজের চেহারা দেখা যাচ্ছে। তাতে আমি আমার ডান সাইডের লাল চোখ স্পষ্ট দেখতে পেয়েছি। যাইহোক ড্রাকুলার লাইব্রেরী আমাকে অনেক সাহায্য করছে বিভিন্ন জিনিস বের করতে। সাধারনত বালুর মধ্যে সিলিকন ডাই অক্সাইড থাকে। যেটাকে ১৭০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় তাপ দিলে সেটা গলে তরল হয়। তারপর এটা স্বচ্ছ আকার ধারন করে, যেটাকে কঠিন করলে স্বচ্ছ গ্লাস পাওয়া যায়। এবং সেই গ্লাসের একপাশে জিংক, কপার কিংবা অন্যান্য কিছু পদার্থ তরল করে প্রলেপ লাগিয়ে দিলে সেটা আয়না হয়ে যায়। এরকম ভাবে আয়না কেউ ব্যবহার করে না এই রিয়েলিটিতে। এই দুনিয়া ম্যাজিকের। তাই সাইন্সের কোনো জিনিস এখানে আর বেঁচে নেই। এখানের আয়না বানানো হয় পানি দিয়ে। পানির উপরেও প্রতিফলন দেখা যায়। তবে সেটা স্পষ্ট হয় না। এর জন্য পানিকে ম্যাজিক দিয়ে বরফ বানিয়ে সেটাকে একটা স্বচ্ছ কাচের রূপ দেওয়া হয়। এবং সেটার পিছনে ডার্ক ম্যাজিকের মাধ্যমে কালো প্রলেপ দেওয়া হয়। এভাবেই এখানের আয়না তৈরী হয়। আগুনের মধ্যে আমার প্রতিফলন দেখে আমার অসাধারন একটা বুদ্ধি চলে আসলো। আমি নতুন আয়না ব্যবসায়ী হতে পারবো যদি ম্যাজিক ছাড়া আমি আয়না তৈরী করতে পারি। অবশ্য সত্যিকারের প্রাকৃতিক আয়না অনেক বেশী স্পষ্ট হয় ম্যাজিকাল আয়নার থেকে। যাইহোক আয়নার চিন্তা পরে করা যাবে আমি আপাতোতো লুকের চিন্তা করি।
।।
।।
লুক নিজেও নিজের শরীরের শক্তি দ্বিগুন করে নিয়েছে। এবার হবে হাড্ডা হাড্ডি লড়াই। যদিও আমি হাতে হাতে লড়াইয়ে তেমন কিছু করতে পারছি না। তারপরও আমি আমার এন্জেল ম্যাজিক গুলো ব্যবহার করতে শুরু করলাম। একজন এন্জেল আরেকটা এন্জেল এর সাথে লড়লে দুজন দুজনের আক্রমন স্পেল সবকিছু সম্পর্কে আগে থেকেই ধারনা পাবে। আমি যেহেতু কোনো এন্জেল না, তাই সেটার ভয় নেই। কিন্তু আমি টাইম স্পেল ব্যবহার করতে চাই না। টাইম স্পেল অনেক ভয়ানক একটা স্পেল। যদি কোনো কিছু না বুঝেই সময়কে নিয়ে খেলা করি তাহলে সেটা আমার জন্য খারাপ হবে। আমি সময়কে কয়েক মুহূর্ত পিছাতে পারি। এতে করে আমি আমার শত্রুর আঘাত খেয়ে বুঝতে পারবো সে কি করবে, আর সময়কে পিছিয়ে আমি সেটার বিরুদ্ধে কাজ করতে পারবো। তবে এটা অনেক মারাত্মক স্পেল। এটা আমি এক বার ব্যবহার করেছিলাম। অবশ্য জিনিসটা পেচালো। কিন্তু ড্রাকুলার লাইব্রেরীতে একটা বই ছিলো শুধু সময় নিয়ে। সেটা থেকে অনেক কিছু জানতে পেরেছি আমি। যদিও আগের দুনিয়ায় মানুষেরা কোনো ম্যাজিক ব্যবহার করতে পারতো না, কিন্তু তাদের ব্রেইনই ছিলো আসল ম্যাজিক।
।।।
।।।
আমি যে টাইম লুপ স্পেল ব্যবহার করে ডেভিল কিং এর সেই আঘাত কে এক মিনিট পিছিয়ে দিয়েছিলাম সেটার কারনে নতুন একটা সময়ের ডাইমেনশন তৈরী হয়েছে। বিষয়টা এরকম যদি আমি এখন মারা যায়, এবং কেউ সময় পিছিয়ে দিয়ে আমাকে জীবিত করে, তাহলে এখানে দুটো সময় ডাইমেনশন তৈরী হবে। একটার মধ্যে আমি জীবিত থাকবো। আর একটায় আমি মৃত। জিনিসটা পেচালো হলেও আজ পর্যন্ত এই দুনিয়ার কেউ সেটা বের করতে পারে নি। কিন্তু এরকম হাজার হাজার থিওরী আগের দুনিয়ার পৃথিবীর মানুষেরা দিয়েছে, যেটা সত্য। আমি সিওর না যে টাইম লুপের কারনে আরেকটা ডাইমেনশন তৈরী হয়েছে কিনা, কারন এক মিনিট সময় তেমন কোনো ব্যাপার না। তারপরও এটা ভয়ানক। যদিও আমি টাইম রিভার্স স্পেলও জানি। যেটা এক দিন সময় পিছিয়ে দিতে পারবে। কিন্তু এসব স্পেল কোনো দিক দিয়েই ব্যবহার করা যাবে না। আমি সময়ের ব্যাপারে ড্রাকুলার লাইব্রেরী থেকে এতো কিছু না জানলে হয়তো এগুলো ব্যবহার করতে পিছুপা হতাম না। কিন্তু সময়কে এভাবে ব্যবহার করা মোটেও ঠিক হবে না। টাইম স্পেল মূলত এন্জেলদের স্পেল। যদিও এন্জেলরা শুধু সময়কে আটকাতেই পারে এই দুনিয়াতে। কিন্তু আগের দুনিয়াতে আমার কাছে এন্জেল রাজার থেকেও বেশী ক্ষমতা ছিলো, যেটার কিছুই আমি ব্যবহার করতে পারি নি৷ আগের দুনিয়ার এন্জেলদের অনেক কিছুই এরা জানে না। তবে কিছুটা হলেও আমি জানি। যদিও সেটা খুবই সামান্য। আমি আমার আগুন দিয়ে আমার শরীরের ডান অংশে শক্ত আর্মার বানিয়ে নিয়েছি। এবং লুককে ঘুষির উপরে ঘুষি দিচ্ছি। যদিও ওর ডান হাতের ঘুষি আমি আমার ডান হাত দিয়ে আটকাচ্ছি, এবং তাতে ওর অনেক ক্ষত হচ্ছে, তারপরও আমার বাম হাত অনেক দুর্বল। ওর বাম হাত দিয়ে যখন আমাকে ঘুষি মারে, তখন আমার জন্য সেটা কষ্ট হয়ে যায়। আমি একসাথে আমার গডহ্যান্ড এবং নিজের শরীরের আগুন কন্ট্রোলে রাখতে পারছি না। কারন বায়ুর অক্সিজেন কন্ট্রোল করা অনেক কষ্টের বিষয়। আশে পাশে অনেক লোক হওয়ায় কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমান অক্সিজেনের থেকে বেশী হওয়ায় আমার আগুনের নিয়ন্ত্রন রাখাও কষ্ট হচ্ছে। আমি বেশী চিন্তার মধ্যে থাকার ফলে লুক আমার গালে একটা ঘুষি দিয়ে সোজা উপরে পাঠিয়ে দিলো। ঘুষিটার পাওয়ার আগের গুলো থেকে বেশী ছিলো। আমার ডান চোখ দিয়ে আমি ওর ম্যাজিক পাওয়ার দেখে বুঝতে পারলাম সেটা আবারো দ্বিগুন বেড়ে গেছে। লুক ওর উপরে যে স্পেল ব্যবহার করেছে সেটা দুই মিনিট পর পর ওর ক্ষমতাকে দ্বিগুন করে দেই। মানে দুই মিনিট পর পর ওর ক্ষমতা বারতেই থাকবে। আমি উপরে উঠায় আমি এখানে সঠিক ভাবে উড়তে পারবো না। তাই একদম নিচের দিকে পরতে লাগলাম। হঠাৎ লুকের ডান হাত দিয়ে বরফ বের হতে লাগলো। আমি বুঝতে পারলাম ওর এট্রিবিউট পানির। পানিকে দুই তাপমাত্রায় ব্যবহার করা যায়। এক হচ্ছে শূন্যের উপরে, আর এক হচ্ছে শূন্যের নিচে। অবশ্য জন্ম থেকেই একজন এর কাছে একটা ক্ষমতায় থাকে, আবার অনেকে দুটো একসাথেও পায় এট্রিবিউটের মতো। বেশীর ভাগই পানি ব্যবহার করলো বরফ ব্যবহার করতে পারে না। আবার বরফ ব্যবহার করলে পানি ব্যবহার করতে পারে না। আবার যারা দুটোই ব্যবহার করতে পারে তারা দুটোই পারে।
।।।
।।।
যাইহোক লুক বরফ আমার দিকে মারলে সেটা বেশী তাপমাত্রা ছাড়া জ্বলবে না। আর আমি এখন হাওয়ার মধ্যে। আমি নিচে নামার চিন্তা করবো নাকি আমার তাপমাত্রা সেটা বুঝতে পারছি না। আর লুক যদি আমার বাম দিকে আঘাতে করে তাহলে আমি অনেকটা আহত হবো। যাইহোক আমি খারাপ একটা পজিশনে এখন। লুক আমার উপরে আঘাত না করে, ফ্লোরে যেখানে আমি পরবো ঠিক সেখানে তলোয়ার খাড়া করে তৈরী করে দিলো, যেগুলো বরফের তৈরী। বরফ অনেক শক্তিশালী একটা পদার্থ যদি এটা একদম কঠিন হয়। আর যাদের ম্যাজিক পাওয়ার অনেক শক্তিশালী তাদের বানানো বরফ সাধারন একটা তলোয়ারের মতো শক্তিশালী হয়। সেগুলোকে তলোয়ারের আঘাতেও সহজে ভাঙা যায় না। এখন আমি যদি নিচে পরি তাহলে ঠিকই আমার কাজ শেষ। এখন আমার তাপমাত্রাও কাজে দিবে না। কারন আমি একদম নিচে চলে এসেছি। আমার রিয়েকসন দেওয়ারও সময় নেই এখন। সময়ের স্পেল আমি ব্যবহার করে সময়কে আটকাতে পারবো, কিন্তু নিজেকে না। আমি নিচে পরবোই সব হলে। সময়কে পিছাতে পারবো না আমি। সেটা সময়ের নিয়মের বাইরে চলে যাবে। তাই এখন একটাই কাজ আমি গ্রাভিটি স্পেল ব্যবহার করবো এখানি। নিজের গ্রাভিটি কন্ট্রোল করতে পারেই আমি এখন এই অবস্থা থেকে বের হতে পারবো। আমি আমার গ্রাভিটি জিরো করে নিলাম। এবং উপরেই ভাসতে লাগলাম। অবশ্য আমরা এখন আছি আকাশে তাই এখানের গ্রাভিটি মাটি থেকে অনেক কম। আমার জিরো গ্রাভিটি এখানের জন্য একদম ঠিক হলো না। বরং আমি আকাশে ভেসে যাচ্ছি উপরে। লুক আমার এভাবে ভাসা দেখে রেগে গেলো। অবশ্য গ্রাভিটি কন্ট্রোল করতে পারে সেরকম এই দুনিয়াতে খুব কমই আছে, তারপরও তারা সেরকম কোনো শক্তিশালী না। জিরো গ্রাভিটি পর্যন্তই তাদের ক্ষমতা। কিন্তু আমি ড্রাকুলাকে যেভাবে গ্রাভিটি কন্ট্রোল করতে দেখছিলাম সেটা অন্য লেভেলের। সেটা ডানা ছাড়া শুধু গ্রাভিটির মাধ্যমেই আকাশে উড়ে। জিনিসটা আমাকে অনেক ইন্সপায়ার করেছে৷ কিন্তু লিম্বোতে কয়েকবার চেষ্টা করেও আমি পারি নি। যাইহোক এবার আমি আরো ভালো একটা বুদ্ধি পেয়েছি। আমি আমার ডান এবং বাম পা দুটো একসাথে রাখলাম। এবং ডান পায়ের তালু দিয়ে আমি আগুন নিচের দিকে নিক্ষেপ করতে লাগলাম। এতে করে আমি অনেকটা স্পিডে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। জিরো গ্রাভিটিতে বেশীক্ষন থাকলে সবারই বমি চলে আসে, কিন্তু সেটা আমার জন্য হচ্ছে না। কারন ড্রাকুলার সেই হার্ট বের করা ট্রেনিং আমার কাজে দিচ্ছে সেটার জন্য। গ্রাভিটি কন্ট্রোলের জন্য নিজের শরীরের রক্ত চলাচল একদম পারফেক্ট থাকতে হবে। শরীরের রক্ত চলাচল কন্ট্রোল করতে পারলে গ্রাভিটি কন্ট্রোল কোনো ব্যাপারই না। অবশ্য এটা শুধু ভ্যাম্পায়ারদের ক্ষমতা। কিছু ভ্যাম্পায়ারই আছে যারা শুধু এটা কোনো রকম ব্যবহার করতে পারে। যেহেতু আগের দুনিয়ার মতো নয় এই দুনিয়া, তাই এখানে আপাতোতো সময়ের জন্য বলা যায় ড্রাকুলায় এই গ্রাভিটি কন্ট্রোলে সবার থেকে একদম উচ্চ লেভেলে। আমার গোল এখন সেই উচ্চতায় পৌছানো। আর সেটার জন্য আমাকে নিজের মতো করে সাজাতে হবে সব কিছু। আর সেটা করতে হলে এটা অবশ্যই কাজে দিবে।
।।।
।।।
আমি আমার ডান পা এবং হাতের তালু দিয়ে সেই স্পিডে আগুন বের করতে লাগলাম। বিশেষ করে আমি কিছুটা অক্সিজেন এর সাহায্যে হালকা আগুন আমার হাত এবং পায়ের তালুতে ধরিয়েছি। এবং সেটাতে কিছুটা অক্সিজেন এর সাথে অসংখ্যা পরিমান কার্বন ডাই অক্সাইড একসাথে ছুড়ে মেরেছি। কার্বন ডাই অক্সাইড আগুন নিভালেও, অক্সিজেন এর সাথে সেটা আগুনের শিখাকে সরু করে একদম নিচের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আগুনের উত্তাপও অনেক বেড়ে গেছে। আমার হাত এবং পা এখানে রকেটের জ্বালানি হিসাবে কাজ করছে। আর এটা আশেপাশের কার্বন ডাই অক্সাইডের সাহায্যেই সম্ভব হচ্ছে। যদিও আমি এখন অনেকটা প্লেন এর মতোই চারদিক দিয়ে উড়ছি। হালকা সমস্যা হলেও কিছুক্ষনের মধ্যে আমার আয়ত্বে চলে আসলো। নিজ থেকে লুক বরফের তীর এবং লাইট বল আমার দিকে ছুরতে লাগলো, কিন্তু আমি সেগুলো থেকে সরে সরে উড়তে লাগলাম। উড়তে যে এতোতা মজা হবে সেটা আমি বুঝতে পারি নি। আমার শরীর জিরো গ্রাভিটিতে আছে, আর আমার হাত এবং পায়ের আগুন আমাকে সামনের দিকে পাঠিয়ে দিচ্ছে, বাম হাত পা দিয়ে আমি আমার শরীরকে বিভিন্ন দিকে মোচড় দিয়ে দিক ঠিক রাখছি। অনেকক্ষন লুকের আক্রমনগুলো থেকে সরে সরে যাওয়ার মাধ্যমে আমার স্পিডও বেড়ে গেলো। আর সেটা বারাতে আমার সাহায্য করলো ইগড্রাসিল। ওর আগুন এতো তাপে সরু হয়ে নিচের দিকে যাচ্ছে যে আমার স্পিড এখন একটা জেট প্লেন এর মতো হয়ে গেলো। অবশ্য সেটা আমি মনে করি। কিন্তু জেট প্লেন এর তেমন কাছাকাছি যায় নি আমি, অবশ্য কিছুটা চেষ্টা করলে চলে যাবো।
।।।।
।।।।
আমি আর নিচে নামছিলাম না। কারন উড়ার মজা পাচ্ছিলাম আমি। ডানা দিয়ে উড়ার ফিলিংস আমার এখনো মনে আছে, সেটা অনেক সহজ এবং মজাদার। কিন্তু এটা অনেক কঠিন এবং কষ্টদায়ক। তারপরও এটাই আমার ভালো লাগছে। এটার মাধ্যমে অনেকটা সুপারম্যান ফিল আসছে আমার মধ্যে। যদিও আগের দুনিয়াতে টিভিতে দেখেছিলাম সুপারম্যান। যাইহোক লুক রাগে ওর ডানা মিলে অনেক স্পিডে আমার কাছে চলে আসলো। আমিও উড়তে লাগলাম। আপাতোতো কোনো মারামারি হচ্ছে না। কে কার থেকে দ্রুত সেটা বের করা হচ্ছে। আমি সামনে আমার আগুনের সাহায্যে জিরো গ্রাভিটিতে উড়ছি। পুরো এরিনা ঘুরছি শুধু আমি। আর আমার পিছনেই লুক রাগে আমাকে ধরার জন্য ওর ডানা দিয়ে উড়ে আমার দিকে আসছে। কিছুক্ষন উড়ার পর আমার ভিতর আরেকটা বুদ্ধি আসলো। আমার যে আগুন গুলো আমার পা এবং হাতের থেকে সরু হয়ে নিচে দিকে যাচ্ছে আমি সেগুলোর মধ্যে কিছুটা নাইট্রোজেন এবং হাইড্রোজেন ছেড়ে দিলাম। বায়ুতে দুটোই পাওয়া যায় গ্যাস আকারে। আর এগুলো আমার লাল চোখ দিয়ে দেখা কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আমি বায়ুতে সব ধরনের গ্যাসকেই স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। শুধু তাই নয় আশে পাশের যা কিছু আছে সব কিছুর ম্যাজিক পাওয়ার স্পষ্ট আমার চোখের সামনে ভাসছে। এই ম্যাজিক পাওয়ার দেখার ক্ষমতা এটা অনেক স্পেশাল একটা পাওয়ার। আমার মনে হচ্ছে আমি ম্যাজিক পাওয়ারের দুনিয়ায় চলে আসছি। যাইহোক কিছু নাইট্রোজেন এবং হাইড্রোজেন কার্বন ডাইঅক্সাইডের এর সাথে মিশে নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড এবং হাইড্রোজেন ডাই অক্সাইড তৈরী করবে তাপে। আর সেটা এই প্রচন্ড তাপ এবং নিম্নচাপের ফলে ফেটে যাবে, যেটা অনেক বড় একটা বিস্ফোরণ এর সৃষ্টি করবে। এক কথায় এখানে ছোট খাটো একটা নাইট্রোজেন এবং হাইড্রোজেন বোমা দেখা যাবে। যদিও আসলের থেকে পুরো ভিন্ন হবে। তারপরও চেষ্টা করে দেখা যাক।
।।।।
।।।।
হঠাৎ বিস্ফোরন হলো বিশাল একটা। যদিও এটা আসল জিনিসের মতে অনেক ছোট। তারপরও ভয়ঙ্কর কাছে থাকার জন্য। আমার পায়ের নিচেই ফেটেছে তাই আমি একদম গ্যালারিতে গিয়ে পরেছি। এবং লুকের মুখের সামনে ফেটেছে, তাই ও ফ্লোরে অনেক গর্ত করে নিচে পরে গেছে। আমি ওর অবস্থা জানি না। কিন্তু আমার ডান পা আগুনের আর্মারে ঢাকা থাকার ফলে ঠিক আছে। কিন্তু বাম পা পুড়ে গেছে। অনেকটা সময় লাগবে হিল হওয়ার জন্য। যদিও আমি যতটা সম্ভব নিচে বিস্ফোরন এর ব্যবস্থা করেছিলাম। তারপরও আমি আপাতোতো সময়ের জন্য বাম পা ফিল করতে পারছি না। অনেক গুরুতর আঘাত সেটা বুঝতে পারছি।
।।।।
।।।।
আমি কোনো রকম ডান পায়ে ভর করে গ্যালারি থেকে এরিনার মধ্যে লাফ দিলাম। গ্যালারি উচু করে বানানো হয়েছে। তাই অনেকটা উপর থেকে ঝাপ দিলাম এক পায়ে। যদিও জিরো গ্রাভিটি করে আমি ঠিক রেখেছিলাম। আমার হিলিং ক্ষমতাও আস্তে আস্তে কাজ করছে। পোড়া বাম পা হিল হয়ে যাচ্ছে আস্তে আস্তে। অবশ্য এটার জন্য সময় লাগবে। আমার শরীরের অনেকটা অংশে ক্ষত রয়েছে। বাম পায়ের অবস্থা বেশী খারাপ। পায়ের মাংস বেড়িয়ে গেছে অবশ্য সেটাও পুড়ে গেছে। আমি আগুন নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারলেও প্রাকৃতিক জিনিস সেরকম ভাবে নিয়ন্ত্রন করতে পারবো না। যদিও সকল পদার্থকে আমি নিজের মতো নারাতে পারি ম্যাজিক পাওয়ার দিয়ে, কিন্তু কোনো বিস্ফেরনকে তো আর আমি নিয়ন্ত্রন করতে পারবো না। আমি ডান পায়ে ভর করে এগিয়ে গেলাম লুক যেখানে পরে গেছে সেখানে। গর্তের নিচে ভালো করে দেখা যাচ্ছে না। অনেক বড় গর্ত হয়েছে, হঠাৎ লুক সেখান থেকে বের হয়ে আসলো। ওর মুখের পুরোটা পুড়ে গেছে, শুধু তাই না ওর শরীরের উপরের অংশও পুড়ে গেছে। সাদা মাংস বের হয়ে গেছে যেটাও পুড়ে গেছে। শুধু এন্জেল বলে এতোক্ষন জীবিত আছে। তারপরও আমি যে বিস্ফোরন বানিয়েছি সেটাকে একটা ছোট গ্রেনেট এর মতো বলা যায়। আমি অনেকটা উপরে থাকলেও সেটা ঠিক লুকের মুখের সামনে ছিলো। ওর শরীর শক্তিশালী হওয়ায় বেঁচে গেছে। আমি ভাবতেও পারি নি এতোটা শক্তিশালী হবে। হঠাৎ গর্ত থেকে উপরে উঠলো লুক। আর সাথে সাথে পরে গেলো নিচে। বাইরে থেকে অনেকগুলো এন্জেল উড়ে আসলো। এবং এখানেই হিল করা শুরু করলো। আমার পাও অনেকটা হিল হয়ে গেছে এতোক্ষনে।
।।।
।।।
লুক হয়তো বুঝতে পারবে মানুষেরা কখনো দুর্বল ছিলো না। কারন তাদের কাছে যেটা ছিলো সেটা অন্য কারো কাছে ছিলো না। সেটা হলো তাদের মেধা। তাদের কাছে ম্যাজিক না থাকলেও, এরকম জিনিস ছিলো যেটা পুরো একটা বিশাল দেশকে ধ্বংস করে দিতে পারতো। যদিও মানুষের কাছে সেরকম জ্ঞান অর্জনের সুবিধা নেই আর কারন ম্যাজিক এসে সেটা তাদের থেকে কেড়ে নিয়েছে এই দুনিয়া থেকে। তা না হলে এই পুরো দুনিয়ায় এখন মানুষের দখলে থাকতো।
।।।।
।।।।
হঠাৎ এরিনার মধ্যে ড্রাকুলা প্রবেশ করলো। উড়তে উড়তে আমার উপরেই হাওয়ার মধ্যে দাড়ালো সে। সকল এন্জেলরা মিলে প্রথমে তার উপরে হামলা করতে গেলো। কিন্তু সে শুধু বললো,
.
–সবাই হাটুতে বসে যাও।(ড্রাকুলা)
।।।
।।।
ড্রাকুলার এটা বলার সাথে সাথে পুরো এরিনার মধ্যে গ্রাভিটি এতো শক্তিশালী হয়ে গেলো যে সেটা সকল এন্জেল সহ আমাকেও হাটুতে বসিয়ে দিলো। এটাকে গ্রাভিটি কন্ট্রোল বলা যাবে না শুধু। এটা অনেকটা জোর করে হুকুম মানানোর মতো। ড্রাকুলা যেটা বললো ঠিক সেটাই করতে হলো এখানে আমাকে।
.
–আমি এখানে লড়তে আসি নি কারো সাথে। অবশ্য ভালো ভাবেই আদেশ নিয়ে প্রবেশ করতাম এখানে, কিন্তু একজনকে নিয়ে যাওয়ার অনেক প্রয়োজন ছিলো, যার জন্য অপেক্ষা করতে পারি নি। দুঃখিত এভাবে আশার জন্য।(ড্রাকুলা)
.
–ড্রাকুলা আপনি?(আমি)
.
–ওওও জ্যাক, তুমি এখানে তাহলে।(ড্রাকুলা)
.
–আপনি এখানে কেনো?(আমি)
.
–আমি এসেছিলাম তাকে নিতে যে আমার প্যালেসকে নিয়ন্ত্রন করবে।(ড্রাকুলা)
.
–ও মানে আপনি চুজ করেছেন কে আপনার রাজ্যের রাজা হবে?(আমি)
.
–হ্যা জ্যাক। আমি এখানে এসেছি প্রিন্সেস এলিনাকে নিয়ে যেতে। সেই হবে আমার রাজ্য এবং আমার প্যালেসের রানী।(ড্রাকুলা)
।।।।
।।।
৷।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।