অশ্রুজলে বোন বিয়ে পর্ব-৩+৪+৫

0
71

#অশ্রুজলে_বোনা_বিয়ে(সিজন ২)
#3rd_Part
#ইয়াসমিন_খন্দকার

নির্ঝর রক্তিম চোখে তাকিয়ে ছিল জাঈদের দিকে। তার দুচোখ দিয়ে যেন আগুনের ফুলকি বের হচ্ছে। এদিকে জাঈদ রাস্তায় পড়ে পেটে হাত চেপে লুটোপুটি খাচ্ছে। নির্ঝর আরিশা ও আফিফার দিকে ক্রোধিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে,”যাও, গাড়িতে উঠে বসো।”

আফিফা ও আরিশা চুপচাপ গাড়িতে উঠে বসে। এদিকে জাঈদের কিছু বন্ধু তাকে টেনে তোলে। জাঈদ নির্ঝরের দিকে তাকিয়ে রাগী স্বরে বলে,”কে তুই? তোর এত বড় সাহস যে তুই আমায় লাথি মারলি। জানিস আমি কে?”

নির্ঝর নিজের শার্টের হাতা ফোল্ট করতে করতে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে,”হবি কোন বড়লোক বাবার বিগড়ে যাওয়া ছেলে। হু কেয়ারস? আমাদের বাড়ির মেয়েদের দিকে হাত বাড়ানোর চেষ্টা করলে তোর ঐ হাত আমি ভেঙে গুড়িয়ে দেব। কথাটা মাথায় রাখিস।”

জাঈদ যেন নির্ঝরের কথা শুনে ফুঁসে ওঠে। কোন প্রতিক্রিয়া দেখাবে তার আগেই পেছন থেকে একজন বলে ওঠে,”স্যার, দ্রুত চলুন এখান থেকে। আপনার বাবা আপনাকে জরুরি ভিত্তিতে তলব করেছেন।”

জাঈদ ঘাড় ঘুরিয়ে একটা ডেভিল এক্সপ্রেশন দিয়ে নির্ঝরকে বলে,”আজকের মতো তোকে ছেড়ে দিচ্ছি। তবে এইটা আমি ভুলব না। জাঈদ শেখের সাথে পাঙ্গা নেয়ার ফল কি হতে পারে সেটা তুই খুব শীঘ্রই টের পাবি।”

বলেই জাঈদ নিজের বাইকে উঠে পড়ে হেটলেট মাথায় দিয়ে চলে যায়৷ তার পেছনে তার সাঙ্গপাঙ্গরাও যায়। নির্ঝর একটা স্বস্তির শ্বাস ফেলে আরিশা ও আফিফাকে বলে,”এখন গাড়ি থেকে নামতে পারো।”

দুজনেই গাড়ি থেকে নামে। নির্ঝর তাদেরকে জিজ্ঞেস করে,”ঐ ছেলেটা কে ছিল?”

আরিশা বলে,”ওর নাম জাঈদ শেখ। আমাদের এখানকার কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর শেখের ছেলে। কাউন্সিলরের ছেলে হওয়ায় এলাকায় একটু বেশি পাওয়ার দেখায়। আমাদের গাড়িটা হঠাৎ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় রাস্তায় একটু দাঁড়াই সেই সময় হঠাৎ এসে আপুকে বিরক্ত করতে থাকে। অনেক অশালীন কথা বলছিল। আমার মাথা তো গরম হয়ে যায় এসব শুনে আর তাই আমি..”

আফিফা আরিশাকে থামিয়ে বলে,”তোর ওভাবে ওদের মুখে মুখে তর্ক করা ঠিক হয়নি বোনু। ঐ জাঈদ শেখ ভীষণ ভয়ানক একজন লোক। আর নির্ঝর ভাইয়া আমার তো এবার আপনার জন্যেও চিন্তা হচ্ছে। ও যেভাবে আপনাকে থ্রেট দিয়ে গেল। যদি আপনার কোন ক্ষতি করে দেয়!”

নির্ঝর স্মিত হেসে বলে,”তোমাকে এটা নিয়ে ভাবতে হবে না। আমাকে কাবু করা এত সহজ না। যাইহোক, তোমাদের গাড়ির সমস্যা কি ঠিক হলো?”

ড্রাইভার বলে উঠলেন,”না, গাড়িতে বেশ ভালোই সমস্যা হয়েছে। মেকানিকের কাছে নিয়ে যেতে হবে অনেক সময় লাগবে ঠিক হতে।”

আফিফা চিন্তিত স্বরে বলে,”তাহলে এখন কি হবে? আমায় যে দ্রুত মেডিকেলে যেতে হবে। আইটেমটা সঠিক সময় জমা দিতে না পারলে যে সর্বনাশ হয়ে যাবে।”

আরিশা অবশ্য খুশিই হয়। সে এমনিতেও কলেজ যেতে আগ্রহী নয়। তাই বলে,”আমি তাহলে একটা রিকশা বাসায় ফিরে যাই।”

এমন সময় নির্ঝর বলে ওঠে,”তার কোন প্রয়োজন নেই। আমি একটা ক্যাব বুক করে রেখেছি। চলো তোমাদের দুইজনকে ক্যাবে করে তোমাদের গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে আসি।”

আফিফা স্বস্তি পায় নির্ঝরের কথায়। তবে আরিশার মনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। একদিকে সে কলেজ যেতে হবে এটা ভেবে কষ্ট পাচ্ছে কারণ আজ রসায়ন ক্লাসে স্যার সবাইকে পড়া ধরবে এবং পড়া না পারলে ভীষণ বকবে। অপরদিকে নির্ঝরের সাথে যেতে পারবে এটা ভেবে ভীষণ ভালো লাগছে।

ক্যাবে উঠে নির্ঝর ড্রাইভারের পাশের সিটে বসেছে এবং আফিফা ও আরিশা পেছনের সিটে। পুরোটা সময় আরিশা আড়চোখে নির্ঝরকেই দেখে গেছে। অন্যদিকে, নির্ঝর লুকিং মিরর থেকে আফিফাকে দেখেছে। আফিফাও ব্যাপার‍টা খেয়াল করে খানিক লজ্জা পেয়েছে। একটু পরেই আরিশার কলেজের সামনে আসতেই আরিশা ক্যাব থেকে নামে। আফিফাকে বিদায় জানিয়ে অতঃপর আবেশের সাথে নির্ঝরের দিকে তাকায়। নির্ঝর স্নেহসূচকভাবে আরিশার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় এবং তার হাতে একটা চকলেট দিয়ে বলে,”যাও, মন দিয়ে ক্লাস করো।”

অতঃপর ক্যাবটা আবার চলতে শুরু করে। আরিশা নির্ঝরের দেওয়া চকলেটটার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছিল৷ মনে মনে বলছিল,”নির্ঝর ভাইয়া কতোটা কেয়ার করে আমার জন্য!”

আরিশাকে নামিয়ে দেয়ার কিছু সময় পর আফিফাকেও তার মেডিকেল কলেজের সামনে নামিয়ে দেয় নির্ঝর। আফিফা তাড়াহুড়ো করে ক্যাব থেকে নামতে গিয়ে হঠাৎ করে তার ওড়না আটকে যায় গাড়ির দরজায়। নির্ঝর ক্যাব থেকে নেমে ব্যাপারটা খেয়াল করে সযত্নে ওড়নাটা বের করে আনে এবং আফিফাকে বলে,”সাবধানে চলাফেরা করো।”

আফিফা হালকা হাসে। অতঃপর নির্ঝরকে বিদায় জানিয়ে যেই না সামনের দিকে পা বাড়াতে যাবে এমন সময় নির্ঝর বলে ওঠে,”তোমার কলেজ ছুটি দেবে কখন?”

আফিফা পিছনে ফিরে তাকিয়ে একটা সুন্দর হাসি দিয়ে বলে,”১২ টার দিকে।”

“ঠিক আছে, আমি তাহলে এই সময় তোমায় নিতে আসব।”

আফিফার ভীষণ ভালো লাগে নির্ঝরের এই ছোট ছোট কেয়ারগুলো। তার হাসি আরো চওড়া হয় এবং সে মাথা নাড়িয়ে মেডিকেলের ভেতরে প্রবেশ করে।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আরিশার কলেজে এখন টিফিন পিরিয়ড চলছে। আরিশার পাশেই গাল ফুলিয়ে বসে আছে তার বেস্ট ফ্রেন্ড হিয়া। একটু আগেই রসায়ন ক্লাসে স্যার হিয়া ও আরিশা দুজনকেই ভীষণ অপমান করেছে কারণ তারা কেউই পড়া দিতে পারে নি। হিয়ার মনটা এই নিয়ে ভীষণ খারাপ থাকলেও হিয়া লক্ষ্য করছে আরিশা আজ সকাল থেকেই ভীষণ খুশি। এমনকি স্যারের বকুনিরও কোন প্রভাব পড়েনি তার উপর এমনকি সে যেন আজ নিজের মধ্যেই কোন ভাবনায় মগ্ন। হিয়া ব্যাপারটা খেয়াল করে আরিশার হাতের কনুইতে একটা টোকা দিয়ে বলে,”কি ব্যাপার আরু? তোকে আজ এমন লাগছে কেন?”

আরিশা হুশ ফিরে পেয়ে বলে,”এমন মানে?”

“কেমন যেন একটু বেশিই খুশি লাগছে। স্যার এত বকুনি দিল আমার তো কান্না পাচ্ছে অথচ তোর উপর কোন প্রভাবই পড়ছে না।”

আরিশা হাসিমুখে বলে,”তা তো আমি খুশিই।”

“কেন? এত খুশির রহস্য কি?”

আরিশা নির্ঝরের মুখটা মনে করে। তার দেয়া চকলেটটা সে সযত্নে ব্যাগে রেখে দিয়েছিল। চকলেটটা বের করে বলে,”আমার খুব কাছের একজন মানুষের ভালোবাসা আমি উপলব্ধি করতে পারছি।”

রিয়া কিছু একটা বুঝতে পেরে বলে,”এটা কি তোর সেই লন্ডনী কাজিনটা নাকি? যার কথা তুই সবসময় আমায় বলতি?”

“হ্যাঁ, রে। আমার নির্ঝর ভাইয়া। জানিস, কাল নির্ঝর ভাই দীর্ঘ ৫ বছর পর দেশে ফিরেছে। আমার জন্য একটা আইফোনও এনেছে।”

“ওয়াও, সেই তো।”

” শুধু তাই নয় আজ সকালে..”

এরপর সে সব ঘটনা বর্ণনা করে। অতঃপর বলে,”আমার মনে হয় নির্ঝর ভাইয়াও আমাকে ভালোবাসে। নাহলে যখন ঐ জাঈদ শেখ আমার দিকে হাত বাড়ালো তখন ওকে এমন ভাবে মারত না। তাছাড়া আমাকে এত এত গিফট দেওয়া..আমার মাথায় হাত বোলানো এসব তো সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। তাই না বল?”

হিয়া একটু ভেবে বলে,”হতে পারে। তবে তুই এতোটাও নিশ্চিত হতে পারিস না এসব নিয়ে। এমনো হতে পারে তোকে উনি বোনের চোখে দেখেন তাই..”

আরিশার মনটা এবার একটু খারাপ হয়। সত্যিই কি নির্ঝর তাকে শুধুই বোনের চোখে দেখে?
~~~~~~~~~~
ঠিক ১২ টার সময় নির্ঝর এসে দাঁড়িয়ে আছে সিলেট মেডিকেল কলেজের সামনে। কিছু সময় পর সেই কাঙ্খিত মুখের দেখা পেলো। আফিফা হাফাতে হাফাতে এসে বললো,”ভাইয়া..আসলে আমাকে এখন কিছু এক্সট্রা ক্লাস করতে হবে। এখন আমি যেতে পারব না। এটা বলতেও আসা।”

“আচ্ছা, ব্যাপার না। আমি নাহয় আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে নেব।”

“আমাকে তো ৩ ঘন্টা ক্লাস করতে হবে। আপনাকে এত অপেক্ষা করতে হবে না। তারচেয়ে বরং একটা কাজ করুন, আরিশার কলেজের ছুটির সময় হয়ে এসেছে। ওকে বাসায় নিয়ে যান আপাতত। আমাকে নাহয় পরে এসে নিয়ে গেলেন।”

“বেশ।”

বলেই নির্ঝর গাড়িটা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে।

এদিকে হিয়ার কথা শুনে আরিশার মনে সন্দেহ ঢুকে যায়। সে ভাবছিল,”তাহলে কি আমি সত্যিই নির্ঝর ভাইয়ের কাছে একজন কাজিন মাত্র?”

এমন সময় হঠাৎ কলেজের গেইটে এসে দাঁড়াতেই সে দেখতে পায় নির্ঝরকে। নির্ঝর তারমানে তাকে নিতে এসেছে। আরিশা খুশি হয়ে বলে,”তারমানে উনি সত্যিই আমাকে নিয়ে কেয়ার করেন।আমাকে কাজিনের থেকেও বেশি কিছু ভাবেন!”

to be continue…….

#অশ্রুজলে_বোনা_বিয়ে(সিজন ২)
#Part_4
#ইয়াসমিন_খন্দকার

নির্ঝর আরিশাকে দেখামাত্রই নিজের বাইক থেকে নামে। অতঃপর স্মিত হেসে আরিশার দিকে এগিয়ে যায়৷ নির্ঝরকে নিজের দিকে এগিয়ে আসতে দেখে যেন আরিশার হৃদস্পন্দন কয়েকগুণ বেড়ে যায়৷ সে ভাবতে থাকে, তাহলে কি নির্ঝর তার প্রতি একই অনুভূতি রাখে যেমনটা সে রাখে? আরিশা এ নিয়েই ভাবছিল এমন সময় নির্ঝর তার সামনে এসে তার দিকে হেলমেট বাড়িয়ে দিয়ে বলে,”এটা পড়ে নাও। আমি তোমায় নিতে এসেছি।”

আরিশা খুশিমনে হেলমেটটা পড়ে নেয়। অতঃপর নির্ঝরের বাইকে বসে৷ নির্ঝর বাইক স্টার্ট দিয়ে আরিশাকে নিয়ে তার বাড়িতে পৌঁছে দেয়। অতঃপর তাকে নামিয়ে দিয়ে বলে,”তুমি ভেতরে যাও।”

আরিশা বাইক থেকে নেমে বলে,”তুমি আসবে না ভাইয়া?”

“নাহ, আমার আসলে জরুরি কিছু আজ আছে।”

“ওহ।”

আরিশা আর কথা বাড়িয়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতে থাকে। যাওয়ার আগে একবার ঘুরে তাকিয়ে দেখে নির্ঝরের দিকে। নির্ঝর ততক্ষণে বাইকটা ঘুরিয়ে নিয়েছে৷ এখন তার উদ্দ্যেশ্য আফিফাকে নিয়ে আসা। আরিশা নির্ঝরের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বলে,”তোমাকে কি তাহলে সত্যিই আমি নিজের করে পাব নির্ঝর ভাইয়া? ভাগ্য কি তাহলে আমায় সেই সংকেতই দিচ্ছে?”

নির্ঝর বাইক চালিয়ে আফিফার মেডিকেলের দিকে রওনা দেয়। ৩০ মিনিটের মধ্যেই সে সিলেট মেডিকেলের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। অতঃপর অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকে। কিছু সময়ের মধ্যেই আফিফা হাফাতে হাফাতে মেডিকেল থেকে বের হয়। নির্ঝরকে বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সে বলে,”আপনি কি এতক্ষণ ধরে এখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন ভাইয়া?!”

“নাহ, আমি তো আরিশাকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে তারপর এখানে এলাম।”

“ওহ।”

“উঠে পড়ো।”

আফিফার দিকে হেলমেটটা বাড়িয়ে দিয়ে বলে নির্ঝর। আফিফাও বেশি কথা না বাড়িয়ে উঠে বসে। নির্ঝর আফিফার উদ্দ্যেশ্যে বলে,”শক্ত করে ধরে বসো। আমি কিন্তু জোরে বাইক চালাবো।”

নির্ঝরের কথা শুনে আফিফা তাকে ধরে বসে। অতঃপর নির্ঝর বাইকটা স্টার্ট দেয়। আফিফা নির্ঝরকে ধরে তাকায় তার মনে বিশেষ অনুভূতি কাজ করছিল৷ কিছুদূর যাওয়ার পর নির্ঝর একটা রাস্তায় বাক নিতেই আফিফা বলে,”এদিকে কোথায় যাচ্ছেন? এটা তো আমাদের বাড়ির অপোজিট সাইড।”

আফিফার কথা শুনে নির্ঝর বলল,”আমরা এখন বাড়িতে যাব না৷”

“তাহলে কোথায় যাব?”

“শুনলাম পাশেই একটা মেলা হচ্ছে। আমরা সেখানেই ঘুরতে যাব।”

আফিফার কথাটা শুনে ভীষণ ভালো লাগল। একটু পরেই নির্ঝর আফিফাকে নিয়ে সেই মেলার স্থলে উপস্থিত হলো৷ নির্ঝর বাইকটা গ্যারেজে রেখেই আফিফাকে নিয়ে মেলায় ঘুরতে লাগল। ফাঁক বুঝে একটা গোলাপ ফুল কিনে আফিফার কানে গুঁজে দিয়ে বলল,”সুন্দর লাগছে।”

আফিফার মুখে হাসি চওড়া হয়। এই মেলায় ঘুরতে পেরে তার অনেক ভালো লাগছে। নির্ঝর আফিফার খুশি লক্ষ্য করে বলল,”বলো, তুমি কি নাগরদোলায় উঠবে?”

আফিফা বলে,”নাহ, আসলে আমার…”

“ওহ বুঝেছি৷ ঠিক আছে, তাহলে চলো আমরা ওদিকটায় একটু ঘুরে আসি।”

বলেই আফিফার হাত ধরে নির্ঝর পুরো মেলার প্রাঙ্গনটা ঘুরতে থাকে। পুরো সময়টা আফিফার এত ভালো লাগছিল যে সে বলেই বোঝাতে পারবে না। কিছু সময় পর বিকেলের আধার ঘনিয়ে এলে আফিফা বললো,”এখন অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে। আমাদের এখন ফেরা উচিৎ।”

“ঠিক আছে৷ চলো।”

নির্ঝর আফিফাকে নিয়ে রওনা দেয়। কিছু সময় পর বাড়ির কাছাকাছি আসতেই হঠাৎ করে কোথা থেকে যেন গাড়ি এসে তাদের বাইকটাতে ধাক্কা দেয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই নির্ঝর কন্ট্রোল হারিয়ে বাইক নিয়ে রাস্তায় আছড়ে পড়ে। আফিফা ধাক্কা খেয়ে একটু আগেই বাইক থেকে পড়ে গেছিল তাই হাতে সামান্য আঘাত পেলেও সে খুব বেশি আহত হয় না। কিন্তু নির্ঝর মারাত্মক আহত হয় এবং তার হেলমেটটাও মাথা থেকে সরে যাওয়ায় মাথায় চরম আঘাত লাগে। আফিফা নির্ঝরের এই অবস্থা দেখে চিৎকার করে বলে ওঠে,”নির্ঝর ভাইয়া…”

আশেপাশের কিছু লোক দ্রুত ছুটে আসে এই দূর্ঘটনা ঘটতে দেখে। এদিকে গাড়ির চালক দ্রুত সেই স্থান থেকে সরে যায় এবং একটু দূরে গিয়েই কাউকে একটা কল করে বলে,”মিশন ডান, বস।”

জাঈদ নিজের সোফায় বসে হুইস্কির বোতলে একটা চুমুক দিয়ে বলে,”এবার তুমি বুঝবে নির্ঝর, জাঈদ শেখের সাথে পাঙ্গা নেয়ার ফল কি হতে পারে।”

~~~~~~~~~~~~~~~~
নির্ঝরের দূর্ঘটনার কথা শুনে বাড়িসুদ্ধ সবাই অস্থির হয়ে ওঠে। ছবি বেগম তো আহাজারি শুরু করে দেন। এত বছর পর ছেলেটা দেশে এসে এ কোন সমস্যার মুখোমুখি হলো। এখন তিনি আবরাজ আর নিঝুমকে কি জবাব দেবেন? আনিকা খান ছবি বেগমকে সামলে বলেন,”আপনি শান্ত হন, আম্মা। সব ঠিক হয়ে যাবে। আফিফা হাসপাতালেই আছে আমিও এখন যাচ্ছি। যতদূর শুনলাম মাথায় একটু আঘাত পেলেও ব্যাপারটা খুব একটা সিরিয়াস না। আপনি এত উদ্বিগ্ন হবেন না।”

ছবি বেগম তবুও শান্ত হতে পারেন না। আনিকা খান বাড়ি থেকে বের হতে নেবেন এমন সময় আরিশা দৌড়ে এসে বলল,”আম্মু দাঁড়াও, আমিও যাব তোমার সাথে।”

ছবি বেগম বিরক্ত স্বরে বললেন,”তুই আবার গিয়ে কি করবি?”

আরিশা কাঁদো কাঁদো স্বরে বলে,”আমার নির্ঝর ভাইয়ের জন্য অনেক চিন্তা হচ্ছে। প্লিজ আম্মু আমায় নিয়ে চলো।”

আনিকা খান বলে ওঠেন,”ঠিক আছে। এসো।”

আরিশা আনিকা খানের সাথে রওনা দেয়।

হাসপাতালে পৌঁছেই তারা জানতে পারে ইতিমধ্যে নির্ঝরের জ্ঞান ফিরেছে এবং আফিফা তার সাথে দেখা করতে গেছে। আনিকা খান ডাক্তারের সাথে কথা বলতে থাকেন নির্ঝরের শারীরিক অবস্থার ব্যাপারে। এদিকে আরিশা দুই হাত তুলে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে বলে,”তোমাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আল্লাহ৷ তুমি আমার নির্ঝর ভাইকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে দাও। তার কিছু হলে যে আমার ভীষণ কষ্ট হয়। বুকটা ছিড়ে যায়। নির্ঝর ভাইয়ের দূর্ঘটনার কথা শুনে যেন আমার হৃদস্পন্দন থেমে যাচ্ছিল৷ এখন একটু স্বস্তি পাচ্ছি। আমার ভালোবাসার মানুষকে হারাতে পারব না আমি। খুব শীঘ্রই আমার মনের কথা জানিয়ে দেব নির্ঝর ভাইকে। এখন আপাতত গিয়ে তাকে দেখে আসি।”

এই বলেই আরিশা নির্ঝর এর কেবিনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। তবে কেবিনের দরজায় গিয়ে সে থমকে যায় যখন দেখে আফিফা অশ্রুসজল চোখে নির্ঝরের সাথে কথা বলছিল। আফিফা বলছিল,
“আপনি ঠিক হয়ে যাবেন ভাইয়া, একদম ঠিক হয়ে যাবেন।”

নির্ঝর সামান্য হেসে আফিফার উদ্দ্যেশ্যে বলে,”কাঁদছ কেন পাগলী মেয়ে? আমি তো ঠিক আছি তাইনা?”

“আমি ভীষণ ভয় পেয়ে গেছিলাম নির্ঝর ভাইয়া এক মুহুর্তের জন্য মনে হচ্ছিল আপনাকে চিরজীবনের জন্য হারিয়ে ফেলব।”

নির্ঝর ভীষণ কষ্টে নিজের হাতটা দিয়ে আফিফার হাত জড়িয়ে ধরে বলে,”ভরসা রাখো, আমি কখনো তোমার থেকে দূরে যাব না। তোমাকে নিয়েই যে কয়েক সহস্র বসন্ত পার করার স্বপ্ন দেখেছি আমি।”

আফিফা অবাক হয়। নির্ঝর আর দেরি না করে বলে,”আমি তোমাকে ভালোবাসি আফিফা..জানি না কবে থেকে এবং কেন..তবে আমি শুধু এটুকু জানি যে আমি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি। এত ভালোবাসি যে..পৃথিবীর সবার সাথে লড়াই করে হলেও তোমাকে নিজের করে পেতে চাই।”

দরজায় দাঁড়িয়ে এসমস্ত কথা শুনে ফেলে আরিশা। তার দুইচোখ জলে টইটুম্বুর হয়ে যায়। তার ছোট্ট হৃদয় ভেঙে কয়েক টুকরো হয়ে যায়। সে আহাজারি করে বলতে থাকে,”তাহলে নির্ঝর ভাইয়া আমায় নয় আপ্পিকে ভালোবাসে!”
to be continue…….

#অশ্রুজলে_বোনা_বিয়ে(সিজন ২)
#Part_5
#ইয়াসমিন_খন্দকার

নির্ঝর ও আফিফাকে একসাথে দেখে সেই দৃশ্য আর বেশি সময় সহ্য করতে পারল না আরিশা। কাঁদতে কাঁদতে এবং চোখের জল মুছতে মুছতে ছুটতে লাগল সে৷ একটু দূরে গিয়েই বসে পড়ল কেবিনের বাইরে রাখা টুলে। অতঃপর বলতে লাগল,”কেন? কেন আমার সাথে এমন হলো আল্লাহ? আমার তো যখন থেকে জ্ঞান হয়েছে তখন থেকে আমি শুধু ঐ একটা মানুষকেই ভালোবেসে গেছি৷ তাকে নিয়েই হাজার স্বপ্ন সাজিয়েছি৷ তাহলে তুমি কেন তাকে আমার ভাগ্যে রাখলে না? এতটা নিষ্ঠুরতা কেন করল আমার সাথে আমার ভাগ্য?”

বলেই সে কাঁদতে লাগল।

ওদিকে কেবিনের ভেতর নির্ঝর আফিফার উত্তর শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আফিফা কিছু সময় লজ্জায় স্মিত থেকে একটা স্বস্তির শ্বাস ফেলে। তার লাজে রাঙা গাল এবং মুখে বিরাজমান কিঞ্চিৎ হাসিই বুঝিয়ে দিচ্ছে তার উত্তর। আফিফাও যে তাকে পছন্দ করে এই ব্যাপারটা নিশ্চিন্ত হতেই নির্ঝর খুশিতে ফেটে পড়ে এত শারীরিক আঘাতের মাঝেও তার মুখে ফুটে ওঠে হাসি। সে আফিফার উদ্দ্যেশ্যে বলে,”তোমার টানেই আমি লন্ডন থেকে সিলেটে ছুটে এসেছিলাম। এখন যখন নিশ্চিত হতে পেরেছি যে তুমিও আমাকে পছন্দ করো তাহলে এবার আমি আমাদের এই সম্পর্কটাকে পূর্ণতা দেয়ার ব্যাপারে ভাবব। তুমি আমাকে বিয়ে করবে তো আফিফা?”

আফিফা এবার যেন লজ্জায় মিলিয়ে গেল৷ তাই একটু গম্ভীর স্বরে বলল,”এসব ব্যাপারে পরে কথা বলি। বাড়ির লোকের অনুমতিরও তো দরকার।”

“এসব তুমি আমার উপর ছেড়ে দাও। তুমি রাজি এটাই আমার জন্য যথেষ্ট। বাকি সবাইকে মানানোর দায়িত্ব আমার।”

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
চোখের পলকে সপ্তাহ খানেক পেরিয়ে গেল। নির্ঝর এখন অনেকটাই সুস্থ হয়ে খান ভিলায় ফিরে এসেছে। বর্তমানে সে খান ভিলার ডাইনিং রুমে ডিনার করার জন্য বসে আছে এবং তার সামনেই বসা আফিফার দিকে মাঝে মাঝে আড়চোখে তাকিয়ে হাসল।

ছবি বেগম সবার মধ্যমনি হয়ে বসে ছিলেন। তিনি নির্ঝরের উদ্দ্যেশ্যে বলেন,”তোমায় এত দিন পর সুস্থ অবস্থায় দেখে আমার ভীষণ ভালো লাগছে দাদুভাই। এই ক’দিন আমার উপর দিয়ে কি ঝড় বয়ে গেছে সেটা আমি বলে বোঝাতে পারব না। আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া যে তোমার বেশি কোন ক্ষতি হয়নি। নাহলে যে আমি তোমার মা-বাবাকে নিজের মুখও দেখাতে পারতাম না।”

নির্ঝর বলে,”তুমি শুধু শুধুই এত চিন্তা করছ গ্রানি। আমার দূর্ঘটনা ঘটেছে এতে তোমার কি দোষ? দূর্ঘটনা তো আর বলে কয়ে হয় না। তাই না?”

“সেটা জানি কিন্তু তবুও মনে একটা খচখচানি তো থেকেই যায়।”

আনিকা খান ছবি বেগমের পাতে ভাত তুলে দিতে দিতে বলেন,”আপনি আর এই নিয়ে চিন্তা করবেন না আম্মা। নির্ঝর তো এখন সুস্থ হয়ে উঠেছে৷ এটাই অনেক।”

ছবি বেগম ডাইনিং টেবিলে ভালো করে লক্ষ্য করে বলেন,”আচ্ছা, আরিশা কোথায়? ও ডিনার করতে আসেনি কেন?”

আনিকা খান বলেন,”ও বলছিল ওর নাকি মাথাব্যথা করছে তাই ওর ঘরে খাবার দিয়ে আসতে, পরে খেয়ে নেবে।”

“ওর আবার কি হলো? কিছুদিন থেকেই লক্ষ্য করছি ওর ব্যবহার গুলো।”

আফিফা বলে,”হ্যাঁ, আম্মু। বোনু কিছুদিন থেকে চুপসে আছে ভীষণ। আমি কয়েকবার ওকে এর কারণও জিজ্ঞেস করেছি কিন্তু ও কিছুই বলছে না তেমন। আমার ওকে নিয়ে ভীষণ চিন্তা হচ্ছে। তাই ঠিক করেছি কালই ওকে নিয়ে সাইক্রিয়াটিস্টের কাছে যাব। আমার চঞ্চল বোনটা হঠাৎ এভাবে শান্ত হয়ে গেছে এটা দেখে আমার ভালো লাগছে না।”

আনিকা খান হতবাক স্বরে বলেন,”কি বলছ এটা তুমি আফিফা? আমি তো খেয়ালই করি নি।”

ছবি বেগম এবার বেশ রাগী ও গম্ভীর স্বরে বলেন,”তুমি কবে আরিশার দিকে নজর দিয়েছ শুনি? তুমি তো নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে এত ব্যস্ত যে নিজের মেয়ের ভালো,খারাপ কোন কিছুই তোমার চোখে পড়ে না। আমি কিন্তু তোমার জব নিয়ে কিছু বলছি না৷ ডাক্তারি অবশ্যই একটা মহান পেশা। কিন্তু নিজের মেয়েদের প্রতিও তো একটু দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন তাই না?”

আনিকা খান মাথা নত করে বলেন,”আমি ভীষণ লজ্জিত আম্মা। আমি আরিশার সাথে কথা বলে দেখছি ওর কি সমস্যা।”

সবাই খাওয়া শেষ করে যে যার নিজের রুমের দিকে যায়। আফিফা নিজের রুমের দিকে যেতে নেবে এমন সময় নির্ঝর তাকে নিজের কাছে টেনে নেয়। আফিফা কিছুটা ভীত হয়ে আশেপাশে তাকিয়ে বলে,”কি করছেন ভাইয়া? কেউ দেখে ফেলবে তো।”

নির্ঝর হালকা হেসে বলে,”এই সময় কেউ নেই এখানে আমাদের উপর নজর রাখার জন্য। সবাই নিজেদের ঘরে চলে গেছে৷ তাছাড়া দেখলেও বা কি? আমার মনে হয়, এবার আমাদের সবার সামনে আমাদের অনুভূতিটা ব্যক্ত করা উচিৎ।”

আফিফা কিছুটা নম্র স্বরে বলে,”আমার একটু ভয় করছে। জানি না, এসব জানার পর সবাই কেমন রিয়্যাক্ট করবে।”

আফিফার একটা চুল তার চোখের কাছে এসে পড়েছিল। নির্ঝর সেই চুলটা আফিফার কানে গুজে দিয়ে বলে,”চিন্তা করো না, আমি সবকিছু সামলে নেব।”

একটু দূরে দাঁড়িয়ে আফিফা আর নির্ঝরকে একসাথে দেখছিল আরিশা। তার বুকের বাঁ-পাশটা ব্যাথায় ছিড়ে যাচ্ছিল। চোখ পরিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছিল অশ্রুজলে। তবুও সে এত কষ্টের মধ্যেও বলে,”নির্ঝর ভাইকে অন্য কারো পাশে মেনে নিতে হবে এটা আমি কখনোই ভাবি নি। কিন্তু সেটা যদি আমার আপ্পি হয় তাহলে আমি আমার আপ্পির জন্য খুশি। তোমরা একসাথে সুখী হও। আমার ভালোবাসাটা নাহয় একতরফা আর অপ্রকাশিতই থেকে যায়।”

~~~~~
পরদিন দুপুরে খান ভিলায় সবাইকে ড্রয়িংরুমে জড়ো করে নির্ঝর। আবির খান হুইলচেয়ারে করে এগিয়ে আসতে আসতে বলেন,”হঠাৎ করে আমাদের সবাই কে এভাবে ডেকে পাঠালে কেন নির্ঝর? কোন কি সমস্যা হয়েছে?”

আনিকা খানও বলেন,”হ্যাঁ, কেন ডাকলে আমাদের?”

ছবি বেগম নির্ঝরের দিকে চেয়ে ছিলেন। একটু দূরে দাঁড়িয়ে ছিল আরিশা। সে বুঝতে পারছিল নির্ঝর কি নিয়ে কথা বলবে৷ আফিফা নির্ঝরের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল। নির্ঝর হঠাৎ করে আফিফার হাত শক্ত করে ধরে বলে,”আমরা তোমাদের সবাইকে একটা কথা জানাতে চাই যে, আমি এবং আফিফা একে অপরকে ভালোবাসি। আমরা আমাদের এই সম্পর্কটা গোপন রাখতে চাই না তাই তোমাদের সামনে প্রকাশ করলাম। এখন তোমরা ভেবে দেখ কি সিদ্ধান্ত নেবে?”

সবাই অবাক হয়ে যায়। তবে ছবি বেগম অবাকের পাশাপাশি খুশিও হন। এদিকে আফিফা ভীষণ চিন্তিত ছিল যে সবাই কেমন রিয়্যাক্ট করবে। ছবি বেগম ধীরে পায়ে এগিয়ে এসে নির্ঝর ও আফিফার মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন,”তোমরা যে আমার কত বড় চিন্তার সমাধান করে দিলে সেটা তোমরাও জানো না। আমি তো অনেক আগেই ভেবে রেখেছিলাম যে তোমাদের দুজনের চার হাত এক করব। তোমরা না জানালে তো এবার আমিই এই কথাটা তুলতাম। আফিফা ও নির্ঝর যে এক হবে এটা আমার অনেক দিনের পুরাতন আশা। যাক, এবার ভালোয় ভালোয় তোমাদের সম্পর্কটা এগোক। আবির, আনিকা তোমাদের কোন সমস্যা আছে?”

আবির খান বলেন,”আমার তো কোন সমস্যা নেই। নির্ঝর তো একদম হিরের টুকরো ছেলে। ওকে মেয়ের জামাই হিসেবে পাওয়া তো সৌভাগ্য। কি বলো আনিকা?”

“হ্যাঁ, তা ঠিক। তবে আবরাজ ভাইজান আর নিঝুম আপুরও মতামত জানাটা প্রয়োজন।”

ছবি বেগম বলেন,”এই নিয়ে কিছু ভাবতে হবে না। আবরাজ আমায় জানিয়েছে ওরা এই কালকেই আসবে৷ নির্ঝর দাদুভাইয়ের এক্সিডেন্টের খবর জানার পরই ওরা আসতে চেয়েছিল কিন্তু ভিসা জটিলতায় আসতে পারেনি। ওরা এলে এবার আমি আফিফা আর নিঝুমের বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করবো।”

আরিশার চোখ জলে টইটুম্বুর করছিল। তবুও আফিফার হাসিমুখের দিকে তাকিয়ে বলে,”তোমার খুশিতেই আমি খুশি আপ্পি। তুমি সুখী হও এটাই কামনা করি।”

to be continue…….