#পরাণ_বধূয়া —১৩
#প্রানেশা_আহসান_শীতল
[সতর্কতা — কপি নিষিদ্ধ]
সময় গড়ায় অনেক দিন৷ সব কিছুই যেনো সময়ের সাথে তার বহমান ধারায় গড়াচ্ছে। অদ্রিজা আর সাইফানের সম্পর্ক আগে থেকে এখন অনেকটা নরম হয়ে এসেছে। অদ্রিজা চায় সাইফান নিজে থেকে অদ্রিজাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিক। সাইফান এখনো একটা গন্ডির মাঝে আবদ্ধ হয়তো তার সময় লাগবে। সকালের আলো বিছানার চাদরে মেখে আছে। সানাফ মায়ের কোল ঘেঁষে ঘুমাচ্ছে। পাশের চেয়ারটায় মাথা কাত করে বসে ঘুমোচ্ছে সাইফান। অদ্রিজা ধীরে উঠে বসে। চুলগুলো এলোমেলো। সানাফকে না জাগিয়ে উঠে এসে সাইফানের সামনে দাঁড়ায়। কোনো শব্দ না করে কিছুক্ষণ তাকিয়ে তাকে। এর মাঝেই নড়েচড়ে উঠে সাইফান তাই অদ্রিজা এক গ্লাস পানি এগিয়ে দেয়। চোখ মেলে তাকায় সাইফান। হালকা ক্লান্তি, তবে চোখে একটা প্রশান্তি।
“আপনি এখানে ঘুমালেন কেনো?”
“আপনাদের পাহারা দিতে।” — ঠান্ডা স্বরে বলে, হাসে না।
“ডাক দিলে আসতেন। দরকার ছিলো না পাহারা দেওয়ার।”
“কিন্তু আমি চাইলে?”
“তাহলে… ভালোবাসার মতো শোনায়!” — মুচকি হাসে অদ্রিজা।
————
সানাফকে নিয়ে পার্কে এসেছে অদ্রিজা আর সাইফান। অদ্রিজা একটা বেঞ্চে বসে, আর সাইফান ছেলেকে দোলনায় দিচ্ছে। চারপাশে শিশুর হাসি, সবুজ, একটা শান্ত নিরবতা।
“ডক্টর সাহেব…” — একটু থেমে বলে অদ্রিজা,
“আপনার কি এতিমখানা বানানোর কোনো ইচ্ছে আছে?”
সাইফান চমকে তাকায়। — “এই প্রশ্নটা কেনো করলেন?”
“কারণ আমি চাই। নিজের মতো একটা আশ্রয়, বাচ্চাদের জন্য। যখন আমি এতিমখানায় ছিলাম তখন থেকেই এই ইচ্ছে; কিন্তু আমি একা পেরে উঠবো না। আপনি থাকলে হয়তো সাহস পাবো।”
সাইফান কিছু বলে না। শুধু মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়, হয়তো তাদের জীবনে একটুখানি আলো এসে পড়ে।
ঠিক তখনই——
একটা গাড়ি এসে দাঁড়ায় রাস্তার একদম কিনারায়। হাই হিল, ওয়েভি চুল, ঠোঁটে লাল লিপস্টিক, উতরানো পোশাকে নামলো রামিশা।
সাইফান তাকিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। অদ্রিজা যে চোখে রামিশারর দিকে তাকায়— এক অচেনা ঘৃণা জমে ওঠে। সাথে মনে হয় সেই প্রথম দিনের মতো কয়েকটা থাপ্পড় গালে বসায়। মেয়েটা এতো বেহায়া কেনো? তার থাপ্পড়ের কথা কি ভুলে গেছে? হয়তো ভুলে গেছে তাই তো এখানে আসতে পেরেছে। রামিশা এগিয়ে আসে। ঠোঁটে শীতল হাসি।
“তোমার পছন্দের স্ত্রীর সাথে দেখছি নতুন সংসার সুন্দরই চলছে!” — সরাসরি বলে ওঠে।
“তুমি এখানে কী করছো, রামিশা?” — সাইফানের গলায় রাগ নেই, শুধু ক্লান্তি।
“তুমি আমার সঙ্গে এভাবে করেছো বলেই এসেছি। আমি হারতে আসিনি সাইফান। তোমাকে ভুলতে পারিনি, জানো তো? এখনো তুমি আমার মধ্যে বেঁচে আছো!”
— গলা কেঁপে ওঠে। অদ্রিজা এবার উঠে দাঁড়ায়।
“তবে তো আপনি অনেক দিন আগেই হেরে গেছেন। কারণ একজন পুরুষকে ধরে রাখতে হলে তাকে সম্মান করতে হয়, বিশ্বাস করতে হয়। আপনি সেগুলো করেননি! উল্টো কি করেছে তা নিশ্চয়ই মনে করিয়ে দিতে হবে না? কেনো এসেছেন?”
রামিশা একটু ভীত হয় সেই প্রথম দিনের চড় গুলোর কথা মনে করে, তবুও দৃঢ় গলায় বলে—
“আমি সাইফানের সাথে কথা বলছি। তুমি আমার আর সাইফানের মাঝে কথা বলার কে?”
শীতল চোখে তাকায় অদ্রিজা। তার হাত উশখুশ করছে। তবুও নিজেকে দমাতে চাইছে৷ সাইফান হয়তো অদ্রিজার অবস্থাটা বুঝলো তবুও কিছু বললো না। অদ্রিজা রামিশার প্রশ্ন শুনে শক্ত গলায় বলে—
“আমি তার বর্তমান। আপনি তার অতীত— যার পাতা বন্ধ হয়ে গেছে, আমি নিজের হাতে করেছি!”
সানাফ ততক্ষণে দোলনা থেকে নেমে এসে অদ্রিজার পিছনে লুকায় তারপর মিনমিন কন্ঠে বলে—–
“মাম্মা, ওতে তলে দেতে বলো।”
রামিশা থমকে যায়। অদ্রিজা এই কথার বিপরীতে কিছু বলতে পারে না। সাইফান ছেলের কথা শুনে রামিশার সামনে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে শান্ত গলায় বলে—
“রামিশা, এবার চলে যাও। আমি চাই না, আমার ছেলের সামনে তোমার কোনো অপমান হোক।”
রামিশা কাঁপা গলায় ছলছল চোখে বলে—
“তুমি আমার ভালোবাসাকে অপমান করলে, সাইফান! আমি ফিরে আসবো। সব নষ্ট করে দেবো!”
“তুমি যা নষ্ট করেছিলে, সেটা আমরা গড়ে নিচ্ছি। এবার শান্তি দিয়ে যাও।”
রামিশা গর্জে উঠে ফিরে যায়। পেছনে পড়ে থাকে তার জলভেজা অভিমান। আর একটা নতুন সম্পর্কের অনড় ভিত্তি।
————-
রাতে অদ্রিজা ছাদে দাঁড়িয়ে। বাতাসে তার ওড়না উড়ছে। অদ্রিজা চোখ বন্ধ করে বাতাস অনুভব করে। সাইফান এসে পাশে দাঁড়ায় তারপর শুধায়–
“আপনি কি ভয় পাচ্ছেন বধূয়া?”
“না। বরং আরেকটু শক্ত হচ্ছি। জানেন, আপনাকে এখন ভয় পাই না। বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয়।”
সাইফান পাশে দাঁড়িয়ে অদ্রিজার ওড়না ঠিক করে দেয়।
“ভয় পাওয়ার মানুষ আমি নই, অদ্রিজা। আমি আপনার হওয়া মানুষ।”
তারপর ধীরে অদ্রিজার কপালে ঠোঁট রাখে। নিঃশব্দ এক চুক্তির মতো।
———–
মিষ্টি রোদ এসে পড়েছে জানালায়। সানাফ এখনো ঘুমিয়ে। অদ্রিজা ধীরে উঠে নরম তুলতুলে শাড়ি গায়ে জড়ায়। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়ায়। পেছন থেকে একজোড়া হাত এসে কোমলে জড়িয়ে ধরে তাকে।
“ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার ঘরে এতো সুন্দরী একজন মেয়ে!” — বলে সাইফান।
অদ্রিজা হেসে ফেলে।
“এই ‘মেয়ে’টা আপনার বধূয়া মনে আছে তো?”
“স্মৃতি ঝকঝকে। প্রতিটা সকালে আপনাকে দেখে ঘুম ভাঙলে মনে হয় — জীবনটা এখন ধন্য।”
অদ্রিজা এবার সাইফানের দিকে মুখ ফিরিয়ে তাকায় তারপর ঘাড়ের ওপর দুই হাত গলিয়ে দিয়ে ফিসফিস করে বলে,
” আপনার মুখে এমন কথা মানায় না ডক্টর সাহেব, তবে ভালো লাগে।”
সাইফান ঠোঁটের কোণে হালকা চুমু এঁকে দেয় অদ্রিজার।তারপর সহজ গলায় বলে–
“ভালো লাগার মধ্যে ভালোবাসাও থাকে, জানেন?”
দুজনের চোখে এক ধরনের নরম ঝিলিক খেলে যায়। অনুভূতি চাপা থাকলেও গভীর, নিঃশব্দে তা প্রবল।
———–
বেশ কিছুদিন পর, আজকে সাইফান ফ্রী হতে পেরেছে তাই প্ল্যাণ করে সন্ধ্যার দিকে সাইফান আর অদ্রিজা একটা শান্ত, লাইট মিউজিক ওয়ালা রেস্টুরেন্টে এসেছে। সানাফ তখনো বাসায়, বিশ্বস্ত কাজের লোকে নাসিমার তত্ত্বাবধানে।
“আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করি?।”
— বলে অদ্রিজা।
“বলেন।”
“আপনার প্রিয় গানটা কি?”
সাইফান একটু চমকে যায়। তারপর বাহিরের দিকে তাকিয়ে বলে,,
“একটা পুরনো হিন্দি গান— ‘ আভি না যাও ছোড় কে, কে দিল আভি ভারা নেহি…’”
অদ্রিজা হেসে ফেলে।
“রেট্রো! রোমান্টিকতাও রেট্রো!”
“আপনার প্রিয় গান?”
“‘তুমি রবে নীরবে, হৃদয়ে মম।’”
এই কথা শুনে চুপচাপ বসে থাকে সাইফান। চোখে জল চিকচিক করে।
“কেনো কাঁদছেন?”
” আপনার মুখে এমন গান শুনলে মনে হয়… আপনি আমার ‘হারানো সময়’ ফিরে পাওয়ার একটা সুযোগ, আরো আগে কেনো এলেন না?!”
” আল্লাহ যখন মনে করেছে এখন সঠিক সময় তখনই আমাকে আপনার জীবনে পাঠিয়েছে।”
—————
অদ্রিজা ও সাইফান এখন এক নতুন জীবনে প্রবেশ করেছে। তাদের সম্পর্কের ভিত আরও দৃঢ় হয়েছে। রামিশা, তার সমস্ত অভিমান ও প্রতিহিংসা নিয়ে ফিরে গিয়েছে, কিন্তু কিছুটা ভেঙে। তার কল্পনা থেকে সাইফান আর অদ্রিজার সম্পর্ক ভাঙা যাবে না। নতুন সম্পর্কের শক্তি, যা তারা একসঙ্গে তৈরি করেছে, রামিশার সমস্ত হুমকিকে পরাজিত করেছে। সাইফান ও অদ্রিজা বসে আছেন পার্কের এক কোণে, সানাফ খেলছে তার পাশে। সেই শান্ত পরিবেশে, সাইফান অদ্রিজাকে বলে—
“আজকের দিনটা আমাদের জন্য বিশেষ।”
অদ্রিজা তার দিকে মিষ্টি হাসে, “হ্যাঁ, প্রতিটি দিনই আমাদের জন্য বিশেষ হয়ে উঠছে।”
তাদের কথায় যখন শান্তি ছড়িয়ে পড়ছিল, তখনই একটা ফোন আসে সাইফানের। ফোনের ওপাশে রামিশা, যে এবার আরও এক ধাপ বাড়িয়ে নিয়েছে তার চক্রান্ত। রামিশা সাইফানকে হুমকি সরূপ বলে—
“তোমাদের শান্তির দিনগুলো আর বেশি দিন থাকবে না। আমি তোমার জীবন থেকে অদ্রিজাকে সরিয়ে দেবো।”
সাইফান আর কোনো কথা না বলে ফোন রেখে দেয়। তার চোখে এবার এক ভয়ংকর সিদ্ধান্তের ছাপ স্পষ্ট। সাইফান, অদ্রিজার পাশে গিয়ে, তাকে বলল—
“আরেকটি পাপের শাস্তি এড়ানো যাবে না। রামিশাকে আজকের মতো শিক্ষা দিতে হবে।”
অদ্রিজা শান্ত চোখে তাকায় তারপর বলে—-
” রামিশা কল দিয়েছিলো?”
” হু!”
অদ্রিজা প্রতিক্রিয়া করলো না। শান্ত ভাবে বসে রইলো। তারপর ওরা সিদ্ধান্ত নেয়, রামিশার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবার যাতে, রামিশা সাইফান ও অদ্রিজার জীবন থেকে সরে আসে। সাইফান তার প্রভাবশালী অবস্থান ব্যবহার করে, রামিশাকে আইনের আওতায় এনে তার অতীতের অবিচারের জন্য যথাযথ শাস্তি দেবার চিন্তা করেছে সাথে প্রমাণ তো আছেই। রামিশার বিরুদ্ধে আগেই মামলা করা হয়েছিলো, এখন শুধু পরবর্তী চালের পালা।
——————
রামিশা একদিন গোপনে চেম্বারে ঢোকে সাইফানের। কিন্তু এবার সে একা না। সাথে পুলিশ। ডাক্তার হিসেবে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ এনেছে এক প্রভাবশালী রোগীর নামে, যার সাথে রামিশার ষড়যন্ত্র। কিন্তু পুলিশ এসে তার পেছনের সব কাজের ডেটা তুলে ফেলে। জালিয়াতি, ব্ল্যাকমেইল, মানহানিকর অপপ্রচার, শিশু হুমকি— সব প্রমাণিত!
রামিশা চেঁচিয়ে ওঠে— “সাইফান! আমি তোমায় ভালোবাসতাম!”
সাইফান একটুও গলা না তোলে শান্তভাবে বলে—
“ভালোবাসা মানে কাউকে ধ্বংস করা নয়, রামিশা। তুমি যেটা করেছো, সেটা ‘আবেগ নয়’, সেটা ‘অপরাধ’।”
রামিশাকে হাতকড়া পড়ানো হয়।
চোখে জল, ঠোঁটে ব্যর্থ এক উন্মাদনা—
রামিশা জানে, এবার তার পতন সম্পূর্ণ।
এই অপমানজনক শাস্তির পর, রামিশা চুপ হয়ে যায়। তার সমস্ত অহঙ্কার, সমস্ত অহেতুক ভালোবাসার দাবি একেবারে ভেঙে পড়ে। জেলের মাঝে বসে আছে রামিশা। তারপর কিছু সময় পর সেখানে অদ্রিজা উপস্থিত হয়। তা টের পেতেই রামিশা চোখ তুলে তাকায়। অদ্রিজা হাসলো; তা দেখে আরেকটু মিয়িয়ে গেলো রামিশা৷ সব হতাশা, ভঙ্গুরতা, অহঙ্কার, সব যেনো এলোমেলো হয়ে আছে রামিশার। আগের মতো শক্ত অবস্থাও রামিশার নেই। অদ্রিজা ছোট গলায় ডাকে–
” রামিশা?”
রামিশা তাকায়। তা দেখে আবারো হাসে তারপর শান্ত গলায় শুধায়– ” ভালো আছো?”
জবাব করে না রামিশা। থম মেরে বসে রয়। তা দেখে আবারো বলে—
“তেমার সাথে কিছু কথা বলতে এসেছি রামিশা!”
” বলো”— অদ্ভুত গলায় জবাব করে রামিশা।
অদ্রিজা একটা লম্বা শ্বাস ফেলে তারপর বলে–
” আমি সরি। প্রথমদিন ওভাবে আচারণ করা আমার ঠিক হয় নি৷ তাই বলে আবার ভেবো না, আমাকে সাইফান এখানে পাঠিয়েছে। আমি নিজেই এখানে এসেছি। তোমার সাথে দেখা করতে!”
রামিশা কপাল কুঁচকায় তারপর বলে– ” কেনো এসেছো?”
“কেনো দেখা করা যায় না?”
কথাটা বলে হাসলো অদ্রিজা। তা দেখে রামিশা মুখ কুঁচকে বলে—
” তোমার সাথে নিশ্চয়ই আমার দেখা করার মতো সম্পর্ক না?”
” ঠিক বলেছো রামিশা!” – এবার কথাটা বলে হাসলো অদ্রিজা। রামিশা দেখলো। আজকে অদ্রিজার জায়গায় সে থাকলেও পারতো! কি হতো যদি লোভ না করতো? লোভ যে মানুষকে ধ্বংস করে সেটা রামিশা ভুলেই গিয়েছিলো৷ তাই এতো এতো অহংকার তাকে মাটিতে এনে ফেলেছে। এবার ধুলোয়ও গুরিয়ে দেবে। রামিশা কিছু বলে না আমারো মাথা নিচু করে থাকে। তা দেখে অদ্রিজা বলে—
“জীবনে ঠিক কতগুলো পাপ করেছো রামিশা?”
অদ্রিজার কথা না বুঝে প্রশ্নবিদ্ধ চোখে তাকালো রামিশা।অদ্ভুত প্রশ্ন। সে ঠিক কি কি ভুল করেছে? তার জন্য পাপ হয়েছে? বলতে পারলো না রামিশা। চুপ করে রইলো। অদ্ভুত পীড়া দিচ্ছিল মনের মধ্যে। অদ্রিজা আবারো সফল, সে রামিশাকে বাগে আনতে পেরেছে৷ রামিশা আগে থেকে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছে। আর এই ভাঙ্গনটাই অদ্রিজার ম্যানিউপুলেট করার মূল অস্ত্র। তাই মুখটা দুঃখী দুঃখী করে বলে,
” বলো তো কি কি ভুল করেছো?”
রামিশা চুপ করে মনে করতে থাকে সে কি কি ভুল করেছে। সাইফানকে ঠকিয়েছে। ভিন্ন পুরুষের সাথে মেলামেশা করেছে। সাইফানের কলিগের সাথে সম্পর্কস্থাপন করেছে। সেখানে লোকটা শুধু লোভ দেখিয়েছে। এমন একটা সময় এসে লোকটা রামিশাকে রেখে অন্যত্র বিয়ে করে নিয়েছে। সাথে রামিশা নিজেও টের পেয়েছে সে কোনো দিন আর মা হতে পারবে না। অন্য মানুষদের সাথেও কথা বলার চেষ্টা করেছে কেউ বলেনি। তাই তো রামিশা ভেবেছিল সাইফানের কাছে আবারো ফেরতে আসবে। তবে সে ভুলে গিয়েছিলো সাইফানের এখন অদ্রিজা নামের একটা ঢাল আছে। রামিশা এখন নিঃস্ব; নিজের বলতে কেউ নেই, কিচ্ছু নেই।
সব কথা ভেবে একটা দ্বীর্ঘশ্বাস ফেলে তারপর মুখ কালো আঁধারে ডুবিয়ে নেয় তা দেখে অদ্রিজা মনে মনে হাসলো তারপর বলে,
” লোভ মানুষকে ধ্বংস করে জানো?”
” জানি।” – মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় সাথে সাথে জবাব এলো।
” তুমি কি করেছো?”
” সাইফানেকে ঠকিয়েছি। লোভ করেছি!”
” লোভের একমাত্র শাস্তি কি জানো?”
” মৃত্যু!”
” তোমার এখন কি করা উচিত? ”
” ম-রে যাওয়া!”
এই পর্যন্ত এসে থামে অদ্রিজা, ব্যস! তার কাজ হয়ে গেছে৷ সে তার মায়ে মতো সংসার সংসার করে নিজের জীবন দেবে না! সংসারের জন্য জীবন নেবে তবে কৌশলে। এই যে সে কৌশলে এখন যা করেছে তাতেই তার হবে। তাই ফিসফিস করে অদ্রিজা রামিশাকে বলে,
“বেস্ট ওফ লাক ফর ইয়োর নিউ জার্নি রামিশা!
—
চলবে—!