#অপ্রিয়_তুমি
#পর্ব১১
#আফিয়া_আফরোজ_আহি
কলেজের পাশের রাস্তায় ভীড় জমে গেছে। আশেপাশে প্রচুর মানুষের আনাগোনা। সবাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সামনের দৃশ্য উপভোগ করছে। কেউ এগিয়ে যাচ্ছে না। তাদের উৎসুক মনোভাবে মনে হচ্ছে এখানে সিনেমার শুটিং চলছে, আর তারা মন দিয়ে দেখছে সেই দৃশ্য, সবার মাঝে টান টান উত্তেজনা। হিরো ভিলেন কে ইচ্ছে মতো মারছে আর তারা দাঁড়িয়ে আছে তালি দেওয়ার জন্য।
মেহরাব বেধড়ক ভাবে মারছে একটা ছেলেকে। উৎসা ভিড়ের এক কোণে চুপটি করে দাঁড়িয়ে আছে। তানজিলা ওকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। কান্না করতে করতে হেঁচকি উঠে গেছে বেচারির। এখনো একটু পর পর হেঁচকি উঠছে। ভয়ে কেঁপে কেঁপে উঠছে। তানজিলা উৎসাকে রেখে যেতেও পারছে না। মেহরাবকে কেউ থামাচ্ছে না। পরিস্থিতি নাগালের বাহিরে চলে যাচ্ছে। তানজিলা কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না। মেহরাব দিগ্বিদিক শুন্য হয়ে এক নাগাড়ে মে*রেই চলেছে। ছেলেটার অবস্থা বেশি ভালো না। নাক মুখ দিয়ে র*ক্ত ছুটে গেছে। ঠোঁটের পাশটা কেটে রক্ত বের হচ্ছে। ছেলেটার সাথে আরো দুটো ছেলে ছিলো তারা ভয়ে আগেই পালিয়েছে। তানজিলা উৎসাকে শান্ত করছে এর মাঝেই তিয়াস এলো সেখানে। এসেই মেহরাব কে ধরে টানতে শুরু করলো। মেহরাব ওর কথাও শুনছে না।
“মেহরাব কি করছিস? ছাড় ওকে বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে ইয়ার। ছাড়!”
“তু্ই আমায় ছাড় কু*ত্তার বাচ্চাকে আমি আজ মে*রেই ফেলবো। ওর সাহস কতো? ও আমার বউয়ের হিজাব ধরে টান দেয়। তাকে বাজে কথা শোনায়। ওর জিভ আমি টেনে ছিঁড়ে ফেলবো, তারপর রাস্তার কুকুর দের খাওয়াবো”
উন্মাদের ন্যায় আচরণ করছে মেহরাব। তিয়াসের হাতের বাঁধন মুক্ত করে তেড়ে গিয়ে ছেলেটার হাতে পা দিয়ে পাড়া দিয়ে ধরলো। সাইকোদের মতো করে বলে উঠলো,
“কোন হাত দিয়ে তু্ই ওর ওড়না ধরেছিস? ডান হাত নাকি বা হাত? কোনটা? তাড়াতাড়ি বল নাহয় তোর দুটো হাতই আমি ভেঙ্গে গুঁড়ো গুঁড়ো করে দিবো। হা*রা*মির বাচ্চা বল”
কথা গুলো শেষ করেই এক লাত্থি দিলো। ছেলেটা গড়িয়ে যেয়ে পড়লো একটু দূরেই। আধ মরা অবস্থা হয়ে গেছে। মেহরাবের রাগ তবুও কমেনি। তিয়াস ওকে টেনে এনে গাড়িতে বসালো। মেহরাব জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। কপালের রগ ফুলে উঠেছে, হাতের শিরা উপশিরা দৃশ্যমান, রাগে ফোঁস ফোঁস করছে। ছেলেটাকে একেবারে জানে মারতে পারলে হয়তো শান্তি পেত। তিয়াস পানি এনে দিলো। ধক ধক করে পানি খেয়ে আশেপাশে তাকালো। ঘটনার পরিপেক্ষিতে উৎসার কথা ও এতক্ষন বেমালুম ভুলেই বসেছিলো। চারপাশে তাকালো প্রিয়সীর সন্ধানে, লক্ষ্য করলো উৎসা এক কোণে তানজিলার বুকে মুখ গুঁজে রয়েছে। কান্না করতে করতে মেয়েটা চোখ মুখ ফুলিয়ে ফেলেছে। এখনো খানিক পর পর হেঁচকি তুলছে। হাতের কব্জি রক্তিম বর্ণ ধারণ করেছে। এটা দেখেই মেহরাবের রাগ পুনরায় মাথা চারা দিয়ে উঠলো। তবে নিজেকে যথাসাধ্য শান্ত রাখার চেষ্টা করলো। উঠে উৎসার দিকে এগিয়ে যেতে নিলে উৎসা আরো সিটিয়ে গেল। উৎসা ছোটবেলা থেকেই মা*রা*মা*রি, কা*টা*কা*টি, ঝগড়া এসব দেখতে পারে না। একদিকে নিজের সাথে সদ্য ঘটে যাওয়া ঘটনা আর মেহরাবের সাইকো আচরণে ভয় পেয়ে গেছে বেচারি। মেহরাব বিষয়টা বুঝতে পেরে আর এগুলো নাকি। তিয়াস কে বলল উৎসা কে নিয়ে আসতে।
গাড়ি চলছে তার আপন গতিতে। তিয়াস ড্রাইভ করছে, পাশে মেহরাব। পিছনের সিটে তানজিলা আর উৎসা বসেছে। মেহরাব কিছুক্ষণ পর পর উৎসার দিকে তাকাচ্ছে। কিন্তু মেয়েটা ভুলেও একবার ওর দিকে তাকাচ্ছে না। মেহরাবের বুক চিঁড়ে দীর্ঘশ্বাস বের হলো।
উৎসা জানালা দিয়ে বাহিরের দৃশ্য দেখছে। আর ভাবছে কতক্ষনের ব্যাবধানে কি হয়ে গেল। এইতো ঘন্টা খানেক আগের কথা,
উৎসা মনে মনে ফন্দি আটছিলো কিভাবে মেহরাবের মান ভাঙাবে, অতঃপর শাস্তি দিবে বজ্জাত বেটা কে। কতো বড় সাহস ওকে ইগনোর করে? ইগনোর করার মজা হারে হারে টের পাওয়া বে। সেই মতে তানজিলা কে নিয়ে বের হলো কলেজ গেট দিয়ে। আশেপাশে তাকিয়ে গাড়ি খুজলো। আগে মেহরাব নিতে আসলেও সেদিনের পর ড্রাইভার নিতে আসতো। তবুও মেহরাব ওকে একা ছাড়েনি কখনো। আশেপাশে খুঁজেও গাড়ি না পেয়ে ভাবলো একটু সামনে এগিয়ে দাঁড়াবে। যেই ভাবা সেই কাজ। দুই বান্ধবী এগিয়ে যেতে নিলে পিছন থেকে হিজাবে ধরে কেউ টান দিলো। সাথে সাথে উৎসা থমকে দাঁড়ালো। পিছন তাকিয়ে দেখলো হেংলা পাতলা একটা ছেলে। উৎসা কপাল কুঁচকে ঝাড়ি দিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“কি সমস্যা? হিজাব ধরে টান দিয়েছেন কেন?”
“এতো খেপছেন কেন ম্যাডাম? বেশি কিছু তো করিনি একটু হিজাব ধরেই টান দিয়েছি”
ছেলেটা উৎসার পা থেকে মাথা অবধি একবার নজর বুলিয়ে বিশ্রী কণ্ঠে বলে উঠলো,
“এখনো তো অনেক কিছুই বাকি”
পাশে থাকা তানজিলা বলল,
“ওর হিজাব ছাড়ুন আর আমাদের যেতে দিন। আমরা আপনাদের কিছু বলেছি? বলিনি তো তাই না? তাহলে যেতে দিন আমাদের”
ছেলেটার পাশে দাঁড়ানো একজন বলল,
“রনি ভাই মাইয়া তো পুরাই আগুন”
“তোর হিজাব ধরেছি? তু্ই এতো কথা বলছিস কেন? জ্ঞান নিজের কাছে রাখ, আর এখন চুপ থাক”
ছেলেটা উৎসার হিজাব ছেড়ে হাত ধরলো। উৎসা হাত ছুটানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু পারছে না। ছেলেটা শক্ত হাতে ধরেছে। তানজিলা এগোতে নিলে আরেকজন এসে ওর পথ আঁকড়ে ধরলো। ছেলেটা উৎসার দিকে কু নজরে তাকিয়ে আছে। উৎসার গাঁ ঘৃনায় গুলিয়ে এলো।
“জা*নো*য়া*র আমার হাত ছাড়। নাহয় এর পরিনাম ভালো হবে না, ছাড় বলছি”
“ছাড়বো না কি করবি করে নে”
উৎসা আশেপাশে কিছু খুজলো। না পেয়ে পাড়া দিলো ছেলেটার পায়ে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হলো না। রনি উৎসার হাত আরো শক্ত করে ধরলো। “তোর ঘরে কি মা বোন নেই?”
কথার পৃষ্ঠে ছেলেটা এমন কিছু কথা বলল উৎসার কান্না পেয়ে গেল। এতো বাজে বাজে কথা কখনো শুনতে হবে ও ভাবেনি। উৎসা বারবার বলছে ছেড়ে দিতে। রনি ছেড়ে দেওয়া তো দূর আরো উল্টোপাল্টা কথা বলছে। এক পর্যায়ে ভয় পেয়ে উৎসা কান্না করে দিলো। এরপরও রনি নামের ছেলেটা হাত ছাড়লো না। রাস্তায় দিয়ে যাওয়ার সময় এক ছেলের নজরে এলো ঘটনাটা। ছেলেটা এগিয়ে এসে এক ঝকটকায় উৎসার হাত ছাড়িয়ে নিলো। উৎসার হাত ধরে রাখা রনির কলার ধরে বলল,
“কি সমস্যা? রাস্তায় মেয়েদের বিরক্ত না করলে হয় না তোদের?”
রনি উল্টে বলল,
“মেয়েটা তোর কে হয়? কেউ না। তোকে কেউ নাক গলাতে বলেছে? তু্ই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলি যা না। হিরো গিরি দেখাতে এসেছিস কেন?”
“মেয়েটা আমার কি হয় সেটা পরের বিষয়। তোর ঘরে কি মা বোন নেই? মেয়েদের সম্মান করতে জানিস নাকি রাস্কেল”
“এই একদম ইংরেজি গালি দিবি না। আমি তোর বোনের হাত ধরিনি যে তু্ই এতো জ্ঞান দিবি। যা ফট”
উৎসা হাত ছাড়া পেতেই তানজিলার কাছে ছুটলো। ছেলেটা উৎসাদের দিকে তাকিয়ে বলল,
“আপনারা যান, এই জা*নো*য়ার টাকে আমি দেখে নিচ্ছি”
একটু থেমে পুনরায় তানজিলার উদ্দেশ্যে বলল,
“ওনাকে কান্না থামান, উনি হয়তো ভয় পেয়েছে”
তানজিলা উৎসাকে আগলে নিলো। ছেলেটাকে ধন্যবাদ জানিয়ে উৎসাকে ধীর কণ্ঠে বলল,
“চল”
দুজন কয়েক পা এগোতেই একটা গাড়ি এসে থামলো ওদের সামনে। উৎসা ফিরেও তাকালো না সেদিকে, পাশ কাটিয়ে যেতে নিলে মেহরাব ফটাফট সামনে এসে দাঁড়ালো। কন্দন রত প্রেয়সীকে দেখে সেখানেই থমকে দাঁড়ালো। বুকের মাঝে ধক করে উঠলো। উৎসা সামনে কেউ আশায় চোখ তুলে তাকালো। মেহরাবকে দেখে কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করলো না। একাধারে কান্না করতেই থাকলো। মেহরাব বিচলিত হলো। মেয়েটা কান্না করছে কেন? কি হয়েছে? প্রেয়সীর চোখের পানি বুকে তীরের ন্যায় বিধতে লাগলো। কন্দন রত প্রিয়সীকে দেখে এক নিমিষে সকল অভিমান ভুলে বসলো। দু হাতে আগলে নিলো প্রেয়সীর মুখ খানা। উত্তেজিত কণ্ঠে সুধালো,
“কি হয়েছে উৎসা? কান্না করছো কেন? কেউ কিছু বলেছে? কি হয়েছে আমায় বলো মেয়ে”
উৎসা মুখ খুলল না। মেহরাব বার বার জিজ্ঞেস করছে কিন্তু উৎসার পক্ষ থেকে কোনো জবাব নেই। কান্নার ফলে উৎসা কিছু বলতে পারছে না। মেহরাব উৎসাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো। এতক্ষনের চোখ পড়লো তানজিলার দিকে।
“তানজিলা উৎসার কি হয়েছে? এভাবেই কান্না করছে কেন?”
তানজিলা ঘুরে পিছনে তাকালো। ইশারায় দেখালো ছেলে গুলোকে।
“কি হয়েছে আমায় খুলে বলো। না বললে বুঝবো কি করে? তোমার বান্ধবী কেঁদে চলেছে আর তুমি ইশার করছো। হয়েছে কি?”
তানজিলা রনিকে দেখিয়ে মিন মিনে কণ্ঠে বলল,
“ওই ছেলে টা উৎসার হিজাব টনে ধরেছে, অনেক বাজে বাজে কথাও শুনিয়েছে”
এক মুহূর্তের ব্যাবধানে মেহরাবের বিচলিত সত্ত্বা রাগে ফেটে পড়লো। নিজের থেকে উৎসাকে ছাড়িয়ে তানজিলার কাছে দিয়ে বলল,
“তুমি ওকে একটু দেখো আমি আসছি”
উৎসাদের চলে যেতে বলা ছেলেটা ওদের সাথে তর্কাতর্কি করছে। মেহরাব যেয়ে সোজা রনির বুক বরাবর লাথি দিলো। রনি বাইকে বসে ছিলো। ছিটকে যেয়ে পিছনের দেওয়ালের সাথে বাড়ি খেল। মেহরাব এগিয়ে গিয়ে ওকে টেনে তুলে উত্তম মাধ্যমে দেওয়া শুরু করলো। রনির সাথে থাকা ছেলে দুটো মেহরাবকে আটকাতে এলে দুটোকে লাথি দিয়ে ফেলে দিলো। ছেলে দুটো উঠে দৌড় কাকে বলে। এক দৌড়ে সীমানার বাহিরে। মেহরাব দিগ্বিদিক শুন্য হয়ে মা*রতে লাগলো। ছেলেটা এসে আটকাতে গেলে তাকেও ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো। কয়েক সেকেন্ডের ব্যাবধানে জায়গায় ভীড় জমে গেল।
উৎসার চোখে এখনো সেই সময়ের দৃশ্য ভেসে উঠছে। মেহরাবের অমন আচরণ ও মেনে নিতে পারছে না। ছেলেটাকে কিভাবে নির্দোয়ের মতো মারছিলো। আর একটু হলে তো ম*রেই যেত।
উৎসার ভাবনার মাঝে গাড়ি এসে থামলো মেহরাবদের বাড়ির সামনে। মেহরাব গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ালো। উৎসা এক ভাবেই বসে আছে। তিয়াস এসে বোনকে নামতে বলল। উৎসা আচমকা ভাইকে জড়িয়ে ধরলো। মিন মিন কণ্ঠে বলল,
“ভাইয়া আমি তোমার সাথে যাবো। আমায় নিয়ে চলো। আমি তোমার এই সাইকো বন্ধুর সাথে থাকবো না। উনি একটা সাইকো। দেখেছো ছেলেটা কে কিভাবে মেরেছে? আমি ওনার সাথে থাকবো না”
তিয়াস বোনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। আদুরে কণ্ঠে বলল,
“এসব বলে না বনু। এখন বাড়িতে যা রেস্ট নে দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে”
“আমি বাড়ি যাবো। আমায় তোমার সাথে বাড়ি নিয়ে চলো”
“পা*গ*লামি করে না বনু। এখন এটাই তোর বাড়ি। তু্ই এখন ভিতরে যা আমি কাল এসে তোকে নিয়ে যাবো”
তিয়াস অনেক বুঝিয়ে সুজিয়ে উৎসাকে ভিতরে নিয়ে এলো। সামনে পড়লো রিনি। রিনিকে বুঝিয়ে বলে উৎসাকে ওর কাছে রেখে তানজিলা কে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।
————
এসে থেকে উৎসা রিনির পিছু ছাড়েনি। রিনি যেদিকে যাচ্ছে সেদিকেই যাচ্ছে। মেহরাব রুমে এসে অপেক্ষা করছে অনেক ক্ষণ হলো। দুপুর গড়িয়ে রাত হয়েছে এখনো উৎসার দেখা নেই। উৎসার আসার লক্ষন না দেখে রুম থেকে বের হলো। পুরো বাড়ি খুঁজে বউকে পেল ভাবির রুমে। দরজায় নক করে বলল,
“উৎসা রুমে এসো”
উৎসার মাঝে কোনো হেলদোল নেই। মেহরাব আবার ও একই কথা বলল। উৎসা রিনির গাঁ ঘেঁষে বসলো। মাহিন সোফায় বসে মুখ ভার করে মেহরাবের দিকে তাকালো। উৎসা ওকে বলেছে মেহরাবের সাথে ঘুমাতে। মাহিন যেতে নারাজ। উৎসার সাথে মিলে রিনিও সেটাই বলছে। মাহিন না পারছে কিছু বলতে আর না পারছে সইতে। ভাইকে চোখের ইশারায় বোঝালো,
“তু্ই তোর বউকে নিয়ে যা, আমাকে এমএফ বউ নিয়ে থাকতে দে”
মেহরাবের আরো দুবার ডাকলো। উৎসার জবাব নেই। বেচারার আর ধৈর্যে কুলালো না। এগিয়ে গিয়ে উৎসাকে টেনে রিনির থেকে সরিয়ে এক ঝটকায় কোলে তুলে নিলো। উৎসা নড়াচড়া করছে।
“ব্যাঙের মতো লাফাচ্ছ কেন? কি সমস্যা?”
“আমায় ছাড়ুন। আমি আপনার সাথে যাবো না”
“তুমি যাবে তোমার ঘাড় সহ যাবে। আর একটু নড়াচড়া করলে ফেলে দিবো বলে দিলাম”
বলে হাত একটু আলগা করলো। উৎসা ভয়ে মেহরাবের গলা জড়িয়ে ধরলো, ভয়ে আর নড়লো না। উৎসাকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে দরজা আটকে দিলো। কাছে এসে একদম সামনাসামনি দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“কি সমস্যা? এতদিন দূরে থেকেও শান্তি হয়নি? এখনো দূরে থাকতে চাইছো?”
উৎসা মিহি কণ্ঠে বলল,
“আপনি একটা সাইকো। আপনার সাথে থাকা যায় না”
মেহরাব এক ঝটকায় উৎসাকে দাঁড় করিয়ে নিজের সাথে শক্ত করে চেপে ধরলো,
“হ্যাঁ আমি সাইকো। আমার ভালোবাসার মানুষেদের আগলে রাখার জন্য যদি সাইকো হতে হয় আমি তাই হবো। আমি সাইকো হই, গু*ন্ডা হই, লুচু হই যাই হই না কেন তোমায় সারাজীবন আমার সাথেই থাকতে হবে। আমার কাছ থেকে তোমার নিস্তার নেই মিসেস”
#চলবে?