মন ফাগুন পর্ব-৩০+৩১

0
49

#মন_ফাগুন
#লেখনীকে_তাইয়্যেবা_বিনতে_কেয়া
#পর্ব_৩০ ( তুমি দূরে যাও চলে)

নিহান মিহির হাত ছেড়ে দেয় মিহিকে আর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে চলে যায় ওয়াশরুম থেকে। মিহি কি করবে সেটা বুঝতে পারে না তবে এখানে আর কতোখন দাঁড়িয়ে থাকবে তাই চলে যায় আবার রেস্টুরেন্টে। ইয়াসিন বসে রয়েছে মিহিকে আসতে দেখে বলে –

“- মিহি এখন আপনার শরীর কি সুস্থ লাগছে? কোনো সমস্যা হচ্ছে কি তাহলে বলুন ডক্টরের কাছে যাওয়া যাক?

মিহি টেবিলে বসে যায় এখন তার মাথায় কোনো কিছু আসতে না কি বলবে সে ইয়াসিনকে সত্যিটা কি বলে দিবে। যদি ইয়াসিন গিয়ে তার আব্বুকে বলে দেয় তাহলে কি হবে মিহি একটু হালকা নিশ্বাস নিয়ে বলে –

“- ইয়াসিন আপনার আমাকে কেমন লেগেছে? মানে বিয়ের বিষয়ে আপনার কি মনে হয় আমার মতো মেয়ের সাথে কি আপনি থাকতে পারবেন। আমি হয়তো আপনার জন্য যোগ্য না তাই এই বিয়েটা করা মনে হয় ঠিক হবে না ইয়াসিন “।

মিহি এইরকম কোনো বলছে সেটা ইয়ামিন বুঝতে পারছে না কারণ মিহির সাথে কথা বলে তার ভালো লাগলো। তার এই বিয়েতে কোনো সমস্যা নাই ইয়াসিন বলে –

-” মিহি আপনি এমন করে কোনো বলছেন এই বিয়েতে আমার কোনো অসুবিধা নাই আর আপনি যথেষ্ট ভালো একজন মেয়ে।আমার আপনাকে পছন্দ হয়েছে এই বিয়েতে আমি রাজি মিহি আই লাইক ইউ মিহি।কিন্তু আপনার কি পছন্দ হয়েছে আমাকে?

ইয়াসিনের কথাটা মিহি ভালো করে শুনতে পায় নাই সে নিহানের দিকে তাকিয়ে ছিলো কিন্তু নিহান ওর মিটিং নিয়ে বিজি। একটা বার মিহির দিকে দেখো না তাই মিহির মন সেইদিকে ছিলো ইয়াসিনের কথায় মনোযোগ দেয় নাই। মিহি আবার যাতে শুনতে পায় সেইজন্য বলে –

“- জি “।

মিহি জি কথাটা বলে আর কোনো কথা বলতে পারে না ইয়াসিন বুঝতে পারে মিহি রাজি তাকে বিয়ে করতে। ইয়ামিন মিহির হাত ধরে বলে –

“- মিহি আমি বুঝতে পেরেছিলাম আপনার আমাকে পছন্দ হয়েছে মিহি। আপনি আর আমি দুইজনে যখন এই বিয়েতে রাজি তাহলে আর সমস্যা কি তাড়াতাড়ি বিয়ে করে ফেলা যাক। এখুনি আমি দুইজনের পরিবারকে বিয়ের বিষয়ে বলে দিবো “।

মিহি বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে সে রাজি হয় নাই শুধু তখন শুনতে পাই নাই বলে জিজ্ঞেস করেছে কিন্তু এইটা কি হলো। ইয়াসিন নিজের ফোন বের করে কল দেয় তার পরিবারকে মিহি তখন থেকে ইয়াসিনকে বলে যাচ্ছে সে কোনো কথা বলতে চাই কিন্তু ইয়াসিন শুনছে না। ইয়াসিন কল দিয়ে বলে –

-” মা মিহি রাজি হয়ে গেছে এই বিয়েতে তোমরা বিয়ের ডেইট ঠিক করো। খুব তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে চাই আমরা “।

মিহি বুঝতে পারে সব শেষ হয়ে গেছে এখন ইচ্ছে করছে নিজেকে কি যে করতে বুঝতে পারছে না। একদিকে নিহান তার উপর রাগ করে বসে রয়েছে অন্যদিকে এই ইয়াসিন তাকে বিয়ে করার জন্য মাথা খারাপ করে দিয়েছে। নিহান খুব মনোযোগ দিয়ে মিটিং করছে কিন্তু আসলে তার মনের মধ্যে কি চলছে সেটা শুধু নিহান যানে। নিহান মিটিং শেষ করে মিহির দিকে তাকায়।

নিহান যখন মিহির দিকে তাকিয়ে ছিলো তখন মিহির হাতে ইয়াসিন একটা চুমো খায় এবং তখনই নিহানের চোখ যায় মিহির উপর। মিহি নিজে ও ভাবতে পারে নাই ইয়াসিন এমন কিছু করবে তাই সে নিজের হাত সরিয়ে ফেলে আর বলে –

“- কি করছেন ইয়াসিন হাতে এইরকম চুমো কোনো খাচ্ছেন। এইটা রেস্টুরেন্টে আর আমাদের বিয়ে এখনো হয় নাই আমি এইসব একদম পছন্দ করি না। তাই আর কোনোদিন আমাকে টার্চ করবেন না ইয়াসিন আমার কাছে বিরক্ত লাগে বিষয়টা “।

-” ওকে মিহি বুঝতে পেরেছি আর কখনো আপনার অনুমতি ছাড়া টার্চ করব না আপনাকে। সরি মিহি “।

ইয়াসিন কথাটা বলে নিজের হাত সরিয়ে নিয়ে রাখে কিন্তু নিহানের দৃষ্টি একটু ও সরে না মিহি আর ইয়াসিনের উপর থেকে। মিহির হাত ধরে চুমো খাওয়ার বিষয়টা পুরো নিহানের চোখে পড়েছে।নিহান চুপ করে দেখে যাচ্ছে মিহি কোনো কথা বলে না সে বসে থাকে। অনেক সময় পর নিহানের মিটিং শেষ হয় ইয়াসিন কথা বলছে কিন্তু মিহির মাথায় এইসব নাই সে এখন কি করবে সেটা ভাবছে। ইয়াসিন একটু কথা বলা শেষ করে নিহান তার মিটিং শেষ করে মিহির দিকে তাকায় পরে সানভিকে বলে –

-” সানভি চলে যাওয়া যাক পরিষদে আমার কাজ রয়েছে। এখানে থেকে আর কি করব “।

নিহান কথাটা বেশ জোরে বলেছে তাই মিহির কান অবধি পৌঁছে যায় মিহি এতোখন ভাবনার মধ্যে বিভোর ছিলো কিন্তু হঠাৎ নিহানের কথাটা কানে আসে। মিহি ওইদিকে তাকায় তবে নিহান তার দৃষ্টি সানভির দিকে রেখে কথাটা বলে। মিহি দিকে না তাকিয়ে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে যায় ইয়াসিন অনেক সময় ধরে মিহির সাথে কথা বলে তারা রেস্টুরেন্টে থেকে বেরিয়ে পরে।

মিহির জন্য গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিলো সেটা করে সে বাড়িতে পৌঁছে যায় সেখানে গিয়ে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে যায়। দুপুর গড়িয়ে বিকাল হয়ে যায় পরে রাত হয় কিন্তু নিহান কোনো মেসেজ বা কল কিছু দেয় না। মিহি অনেকবার নিহানকে কল করে কিন্তু নিহান সেটা রিসিভ করে না তাই মিহি বসে থাকে রুমে।

রাত এখন প্রায় বারোটা নিহান এখনো বাড়ি ফিরে নাই অন্য সময় হলে মিহিকে ফোন করে বলে দেয় নিহানের আসতে দেরি হবে কিন্তু আজকে তা ও করে না। মিহি অনেক সময় ধরে নিহানের জন্য অপেক্ষা করে কিন্তু কেউ আসছে না দেখে মিহি বেডে শুয়ে পড়ে। নিহানের গাড়ি এসে পৌঁছোয় শিকদার বাড়িতে নিহান নেমে নিজের বাড়িতে ঢুকে।

নিহান রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে বাহিরে বের হয় মিহি তখন ঘুমিয়ে রয়েছে নিহানের চোখ যায় ঘুমন্ত মিহির দিকে। নিহান এগিয়ে গিয়ে মিহির বেডের কাছে গিয়ে বসে ওর মুখের ওপর চলে আসা চুলগুলো হাত দিয়ে সরিয়ে দেয় এরপর বলে –

-” মিহি আপনি শুধু কি আমার রাগ করাটা দেখেন একবার ও বুঝতে পারেন না কতটা কষ্ট হয় আমার। যখন আপনাকে অন্য কারো সাথে দেখি রেস্টুরেন্টে যখন ওই ছেলেটা আপনার হাত ধরেছিলো তখন বুকের মধ্যে কতটা কষ্ট হয়েছে সেটা শুধু আমি জানি মিহি। আপনাকে ভালোবাসার টার্চ করার অধিকার শুধু এই নিহানের অন্য কারোর নয় “।

নিহান কথাটা বলে মিহির দিকে মায়া ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে নিহানের চোখ যায় মিহির হাতের দিকে। দুপুরে যেখানে অনেক শক্ত করে ধরেছিলো যার জন্য এখনো জায়গাটা লাল হয়ে গেছে। নিহান একটা মলম নিয়ে এসে লাগিয়ে দেয় মিহির হাতে। ঘুমের মধ্যে হঠাৎ হাতে করো টার্চ পেয়ে মিহির ঘুম ভেঙে যায় সামনে নিহানকে দেখে মিহি বলে –

-” নিহান আপনি কখন আসলেন? আমাকে ডাক দিলেন না কোনো রাতে কি কিছু খেয়েছেন? আমি কি খাবার গরম করে দিবো?

নিহান মিহির কথায় কোনো জবাব দেয় না শুধু হাতে মলম লাগাতে থাকে। মিহি কোনো উত্তর না পেয়ে আবার বলে –

-” কি হলো বলেন খাবার কি খেয়েছেন? আর কি করছেন হাতে মলম দিচ্ছেন কোনো?

“- কোনো মলম লাগিয়ে দেওয়ার অধিকার কি এখন আর আমার নাই। ওহ ভুলে গিয়েছিলাম আপনাকে টার্চ করার কোনো রাইট এখন আমার নাই। সব অধিকার আপনার হবু জামাইয়ের আছে আচ্ছা আজকে রেস্টুরেন্টে কি হলো মানে বিয়ের ডেট কবে ঠিক হলো “।

মিহি নিহানের দিকে তাকিয়ে দেখে কিন্তু তাতে নিহানের কিছু যায় আসে না। নিহান এইরকম ব্যবহার মিহির সাথে আর কখনো করে নাই হয় রাগ করেছে না হলে অভিমান করেছে কিন্তু এখন মনে হচ্ছে নিহানের কোনো যায় আসে না মিহির বিয়ে নিয়ে। মিহি বলে –

-” না মানে আসলে বিয়ের ডেট ঠিক করা হয় নাই কিন্তু ইয়াসিন বিয়ের জন্য রাজি হয়েছে সেটা ওর পরিবারকে জানানো হয়েছে।ওনারা বলেছে খুব তাড়াতাড়ি বিয়ের দিন ঠিক করবে “।

নিহানের মলম লাগানো শেষ হয়ে যায় মিহির কথাটা ও শুনতে পায় সেটা শুনে একটা হাসি দেয় আর বলে –

“- ওহ আচ্ছা তাহলে বিয়ের দিন যেহেতু তাড়াতাড়ি ঠিক করা হয়েছে তাহলে আমাদের ডিভোর্স তাড়াতাড়ি করতে হবে। আজকে যেহেতু রাত হয়ে গেছে তাহলে কালকে সকালে উঁকিলের সাথে কথা বলে ডিভোর্সের কাগজ রেডি করতে বলবো। কাগজ রেডি হয়ে গেলে আপনি সাইন করে দিয়েন আর কাবিনের টাকা দিয়ে দিবো কোনো সমস্যা নাই ”

নিহানের ডিভোর্সের কথাটা মিহির কানে পৌঁছাতে মিহি বলে

“- ডিভোর্স মানে “।

“- হুম আমাকে ডিভোর্স দেওয়া ছাড়া আপনি অন্য কাউকে বিয়ে কি করে করবেন। আর যেহেতু আমাদের বিয়ের সময় তেমন কোনো আইনের কাজ ছিলো না তাহলে নিশ্চয়ই খুব বেশি সময় লাগবে না ডিভোর্সের জন্য। টেনশন করবেন না মিহি ডিভোর্সের সবকিছু আমি সামলে নিবো আপনার বিয়েতে কোনো সমস্যা হবে না “।

নিহানের এইরকম ব্যবহার মিহির মনে কাঁটার মতো বিঁধছে নিহান ওর উপর রাগ করতো বকা দিতো সব ঠিক ছিলো কিন্তু এইরকম অপরিচিত মানুষের মতো আচরণ করতো না। মিহির কোনো জানি খুব কষ্ট হচ্ছে না পারছে ওর বাবাকে বিয়ের কথা বলতে না পারছে নিহানের এইরকম ব্যবহার সয্য করছে। মিহি বলে –

-” নিহান আমার বিয়ে হয়ে গেলে কি আপনার কোনো সমস্যা হবে না? কষ্ট হবে না আপনার?

“- আমার কষ্ট আপনার কাছে কোনো মূল্য নাই মিহি আর এমনিতে আজকাল অনেক মানুষের ডিভোর্স হচ্ছে বিয়ে হচ্ছে এতে নতুন কি? আর ইয়াসিনের মতো ভালো কাউকে পেতে হলে এই নিহানের মতো কাউকে ছেড়ে দিতেই হবে আপনার মিহি “।

#চলবে

#মন_ফাগুন
#লেখনীকে_তাইয়্যেবা_বিনতে_কেয়া
#পর্ব_৩১ (রাগে অনুরাগে)

মিহি রুমে বসে থাকে নিহান তার স্টাডি রুমে রয়েছে সেখানে সে তার রাজনীতির বিষয়ে কাজ করছে। মিহির সাথে খুব একটা কথা বলে নাই সেইজন্য মিহির মন খুব খারাপ। রাত যখন প্রায় অনেকটা তখন মিহি যায় নিহানের রুমে গিয়ে দেখে এখনো লাইট জ্বালিয়ে কাজ করছে নিহান। মিহি বলে –

-” নিহান আপনার সাথে আমার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা ছিলো। আপনি কি অনেক বিজি?

মিহির কথায় নিহান তার ল্যাপটপ থেকে মুখ তুলে দরজার সামনে তাকিয়ে দেখে মিহি দাঁড়িয়ে রয়েছে। নিহান বলে –

-” হুম আমি অনেক বিজি কাজ করছি এখন সামনে নিবার্চন রয়েছে সেটাতো আপনি জানেন মিহি। পরে সকালে কথা বলব আর আমার আর আপনার মধ্যে কথা বলার বা কি আছে “।

“- আপনি কি ঘুমাতে আসবেন না নিহান?

-” না এখন ঘুমাতে ইচ্ছে করছে না আর আজকে থেকে এই রুমে থাকবো আমি।এখন আপনি যান মিহি আমার কাজে বিরক্ত করবেন না “।

নিহানের কথাটা এইবার মিহিকে বেশ কষ্ট দেয় আগে কখনো নিহান মিহির সাথে এইরকম করে কথা বলে নাই তবে আজকে কোনো বলছে৷ আর নিহান এই রুমে থাকলে মিহি ঘুম কি করে আসবে নিহানকে না দেখলে মিহির ঘুম আসে না এখন। তাই মিহি এইবার রুমের ভিতরে গিয়ে নিহানের সামনে দাঁড়ায় আর ওর হাত থেকে ল্যাপটপটা নিয়ে নেয় আর বলে –

-” নিহান আপনার সাথে আমার কথা আছে সেটা কি আপনি বুঝতে পারছেন না সমস্যা কি আপনার। আর এই মিহিকে ইগনোর করার চেষ্টা একদম করবেন না চুপচাপ আমার কথা শুনবেন আর পরে গিয়ে ওই রুমে ঘুমাবেন “।

মিহির এইরকম কাজের নিহান একটু অবাক হলে ও বেশি কথা বলে না সে মিহির দিকে না তাকিয়ে বসা থেকে উঠে যেতে থাকে৷ তখন মিহি নিহানের হাত ধরে ফেলে আর ওর কোলে বসে যায় নিহান বলে –

“- কি করছেন এইসব মিহি উঠুন। কেউ দেখে ফেলবে আর আপনার সাথে আমার দুইদিন পর ডিভোর্স হয়ে যাবে তাই এখন এতো কাছে আসা ঠিক নয় “।

নিহানের কোনো কথা মিহি শুনে না সে বলে –

-” মিস্টার নিহান এতো ভয় কোনো করেন আপনি আর যদি কেউ দেখে ফেলে তাহলে কি হবে আপনি আমার জামাই তাই আপনার কাছে আসার অধিকার আমার আছে। আর এইসব কোনো ডিভোর্স হবে না আমাদের মধ্যে বুঝতে পারলেন।মিহি শুধু এই নিহান শিকদারের বউ অন্য কারো নয় “.

মিহির কথা শুনে নিহান একটু হাসে সে যানতো মিহি ও তাকে ভালোবাসে তাকে ছাড়া থাকতে পারবে না মিহি। নিহান এইবার মিহির কমোড় জড়িয়ে ধরে ওকে কাছে নিয়ে আসে আর সুন্দর করে ওর দুই গালে হাত রেখে বলে –

“- সত্যি কি এই মিহির উপর শুধু আমার অধিকার রয়েছে? তাহলে মিহি কোনো অন্য ছেলেকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছে?

“- আরে ওই ইয়াসিনের সাথে শুধু দেখা করতে গিয়েছি বিয়ে করে ফেলি নাই তো। ওই ইয়াসিনকে আমি ভালোাসি না আমি আপনাকে পছন্দ করি নিহান “।

“- কিন্তু এই কথাটা আমার বিশ্বাস হচ্ছে মিহি। আজকে যেমন আপনার আব্বুর ভয়ে ওই ইয়াসিনের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন হতে পারে একদিন আপনার আব্বুর ভয়ে ওকে বিয়ে করে ফেলবেন।

নিহানের কথা শুনে মিহি ভাবে সত্যি কথা বলেছে নিহান তার আব্বুর ভয়ে যদি সত্যি তাকে বিয়ে করতে হয় তখন।এখন সময় হয়ে গেছে তার পরিবারকে আসল ঘটনা জানানো দরকার পরে আরো দেরি হয়ে যেতে পারে। মিহি বলে –

-” হুম নিহান আপনার কথা ঠিক তাই কালকে আমি আর আপনি আমার বাবার বাড়িতে যাবো। সেখানে গিয়ে আব্বুর সামনে আপনার হাত ধরে বলবো এই হলো নিহান শিকদার আমার জামাই। আমি নিহানকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করব না “।

মিহির কথা শুনে নিহান হাসে আর বলে –

“- সত্যি বলতে পারবেন এই কথা আপনার আব্বুর সামনে?

“- হুম অবশ্যই পারব কিন্তু নিহান সামনে নিবার্চন তাই আপনি অনেক বিজি থাকবেন৷ তাহলে কি যেতে পারবেন কালকে আপনি?

“- এই নিহান সবসময় তার মিহির জন্য ফ্রি থাকে। আর নিবার্চনের এখনো যথেষ্ট দেরি রয়েছে তাই কালকে যেতে পারব সমস্যা হবে না। আর নিহান শিকদার তার বউয়ের জন্য সবকিছু করতে পারে “।

মিহি খুশি হয়ে নিহানকে জড়িয়ে ধরে মিহি জানে না নিহানের জন্য তার মনে কি ফিলিংস রয়েছে তবে নিহানকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারবে না সে। নিহান তার জীবনে প্রথম আর শেষ পুরুষ হয়ে থাকবে নিহান আর মিহি তাদের রুমে চলে যায় সেখানে গিয়ে শুয়ে পড়ে। মিহি যখন শুয়ে পড়ে তখন নিহান ওকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে। আর বলে –

“- আচ্ছা মিহি যদি আপনার আব্বু আমাদে বিয়ে মেনে নেয় তাহলে আমরা আবার বিয়ে করব। পুরো শহর যানবে আজকে নিহান নেহাল শিকদারের বিয়ে আর তার বউ হবে এই চুন্নি মিহি “।

“- নিহান একদম আমাকে চুন্নি বলবেন না। সেইদিন যদি বিয়ে বাড়িতে চুরি করে খাবার খেতে না আসতাম তাহলে আজকে আপনার বউ হয়ে থেকে যেতাম না বুঝতে পারলেন?

“- হুম বুঝতে পেরেছি চুন্নি বউ “।

মিহি একটু রাগী দৃষ্টিতে নিহানের দিকে দেখে নিহান ওকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। সকাল হয়ে যায় মিহি গোসল করে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করতে থাকে আর নিহান ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে বাহিরে আসে। নিহান এসে মিহিকে জড়িয়ে ধরে আর বলে –

“- মিহি শুনন না আমরা বরং কয়েকদিন এখানে থেকে পরে আপনার বাবার বাড়িতে যায়। এতোদিন পর আপনি আমার কাছে এসেছেন একটু সময় কাটাতে চাই আপনার সাথে “।

“- একদন না নিহান একসাথে সময় কাটানোর জন্য বাকি জীবন পড়ে রয়েছে কিন্তু এখন বাসায় যেতে হবে। না হলে দেখা যাবে আব্বু ইয়াসিনের সাথে আমার বিয়ে সব ঠিক করে দিবে।

“- আচ্ছা আপনার আব্বুকে দেখে এতো ভয় কোনো পান আপনি মিহি। আমার শশুড় কি এতো খারাপ না কি যেহেতু আমার বউ এতো মিষ্টি তাহলে শশুড় নিশ্চয়ই খুব ভালো হবে”।

নিহানের কথা শুনে মিহি হাসে নিহান যদি জানতো মিহির বাবা কেমন তাহলে এই কথা বলতো না। একবার শুধু মিহির বাবার সাথে দেখা হোক সব বুঝতে পারবে কত ধানে কতো চাল মিহি বলে –

“- নিহান আপনার শশুড় কেমন সেটা আপনি ওখানে গেলে দেখতে পারবেন। একবার আমার বাপের রাগ দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন আসলে আমার বাপ কেমন? আপনাকে সেটা দেখাতে নিয়ে যাচ্ছি আমি চলুন শশুড় না অশুড় বাড়ি সামনে থেকে যম দেখবেন “।

#চলবে