গল্প – সে আমার অর্ধাঙ্গিনী
পর্ব :১
লেখক : রিহান অরণ্য
আমার বউ পালিয়ে গেছে ৫ বছর হলো , তার মামাতো ভাইয়ের সাথে, সম্পূর্ণ সহযোগিতা ছিলো আমার পরিবার আর আমার বউয়ের পরিবার,, কারণ বিয়েটা কারো মতামতে হয়নি আর আমার বউ আমার থেকে ৬ বছরের বড়, সে জন্য আমার পরিবার ও বিয়েটা মানে নাই, বিয়েটা হয়েছে একটা অঘটন ভাবে কিন্তু কালেমা পরে কবুল বলা হয়েছে, এইটা অস্বীকার করা আমার পক্ষে সম্ভব না, তখন কিছু বলতে পারিনি কারণ তখন নাবালক ছিলাম, আর এখন আমার বিয়ের বয়স হয়েছে, তাইলে আমার কবুল বলা বউ কই, তারে আমি ডিভোর্স দেইনি আর আমাকে ও সে ডিভোর্স দেয়নি,,
______________________________________
একটি সত্যি ঘটনা নিয়ে গল্পটি লেখা, আমার নাম সানি আহমেদ, বাসা নেত্রকোনা মোহনগঞ্জ,
বাবা ছোট বেলা মারা যায়, আমরা ১ ভাই ১ বোন, আব্বু মারা যাবার পর আমাদের সম্প্রতি নিয়ে বাড়িতে একটু ঝামেলা হয়, চাচাদের সাথে, এই জন্য আমার আম্মুর মনে ভয় ছিলো যে চাচা রা যদি আমাদের কোন ক্ষতি করে তাই আম্মু আমাদের নিয়ে চলে আসে নারায়ণগঞ্জ জেলা রুপ গঞ্জ থানার ভুলতা ( গাউছিয়া ), ভুলতা হাই স্কুল এন্ড কলেজ আমাকে ক্লাস ৮ ভর্তি করে দেয়, আমার মামা ও থাকতো গাউছিয়া মার্কেটে ব্যবসা ছিলো,
আমাদের পাশের বাসায় থাকতো একটি পরিবার ওদের বাড়ি ছিলো হবিগঞ্জ, ওনারা স্বামী স্ত্রী ২ জনে জব করতেন
ওনার ২ টা মেয়ে একজন লুবনা আরেক জন রুপা
রুপার বয়স আমার ছোট বোনের বয়সী তাই ওরা সব সময় এক সাথে খেলাধুলা করতো,, আর লুবনা Murapara Government College প্রথম বর্ষে লেখাপড়া করতো,
লুবনা কে আমি আপু ডাকতাম কারণ সে আমার বড় কিন্তুু লাম্বায় আমি ওর সমান সমান ছিলাম, আমার বোন আর ওর বোন যখন খেলা নিয়ে ঝগড়া করতে আমারা ওদের ঝগড়া থামাতাম, তখন এমন একটা বয়স ছিলো আমি গেমস প্রতি আসক্ত ছিলাম, স্কুল থেকে বাসায় এসেই গেমস নিয়ে পরে থাকতাম , বেশির ভাগ সময় ছাদে বসে খেলতাম, তখন লুবনা ও দেখতো আমি খেলতাম আর সে শিখার জন্য আগ্রহী ও ছিলো মাঝেমধ্যে আমাকে বলতো সানি আমাকে দাও আমি খেলি,
একটু খেলেই দৌড় দিয়ে নিচে নেমে যেতো, আবার একটু পর আসতো আবার চলে যেতো, প্রথমে বুঝতে পারি নি রাস্তায় কিছু ছেলে ছাদের দিকে তাকিয়ে লুবনা কে বিরক্ত করছিলো,
লুবনা এই বিষটা তার বাবা কে ও জানিয়েছে যে কলেজে যাবার সময় ছেলে গুলো তার সাথে কলেজে গেইট পর্যন্ত যায় অনেক বার নাকি ফোন নাম্বার ও চাইছে, এই সব নিয়ে তারা একটু ঝামেলা ও করছে ওই ছেলেদের সাথে,
ওই ছেলেরা নাকি লুবনার বাবার কাছে টাকা ও চাইছে, ওরা নাকি অনেক বার লুবনার বাবা কে হুমকি ও দিছে,
তার পর থেকে লুবনা তেমন একটা ছাদে আসতো না,, তাদের এই সমস্যা জন্য ২০১৮ সালে ৫ মে আমার জীবনে অঘটন ঘটে গেলে, বিকাল বেলা আমি যখন গেমস খেলছিলাম, তখন লুবনা আমাকে ডাক দিয়ে বলে সানি তোমার ফোন থেকে আমাকে একটা গেমস দাও শেয়ার দিয়ে, আমি বললাম ঠিক আছে শেয়ার অন করেন লুবনা শেয়ার অন করছে কিন্তু কানেক্টেড হয়নি তাই আমি ওর রুমে গিয়ে ওর ফোনটা হাতে নিয়ে ওরে শিখাতে গেলাম ঠিক সেই মূহুর্তে এলাকার কিছু ছেলেরা এসে আমাদের রুমের দরজা লাগিয়ে দিয়ে লোক জন নিয়ে এসে বললো আমরা নাকি ২ জনে রুমে আ।কাম করছি, লুবনার বাবা নাকি মেয়ে দিয়ে ব্যবসা করে, আমারা ২ জনে রুমে ভয়ে কান্না শুরু করে দিছি কিন্তু রুমের দরজা খুলেনি, ভয়ে +চিন্তায় পরে ২ জনই ঘেমে গেছি ৩০ মিনিট পর দরজা খুলছে,, দরজা খুলেই ২ জন মুরুব্বি লোক আর সাথে আমার আম্মু বাড়িওয়ালা সবাই ঢুকলো রুমে, ওনারা জিজ্ঞেস করছে তোমরা এইখানে কি করছিলা আমি আর লুবনা কারো মুখ থেকে কথা বের হচ্ছে না, বাহির থেকে ছেলেরা বলতে লাগলো দেখেন না আপনারা মেয়ের কাপড় ভিজা তার পর ও জিজ্ঞেস করেন কি হয়েছে, আমার আম্মু কে বললো আপনার ছেলে এই মেয়েকে নিয়ে এসব কতোদিন ধরে চালাচ্ছে, আমার আম্মু ও চুপচাপ কারণ সত্যি টা তো এখনো কেউ জানলো না,,
আমাদের কে আটকিয়ে রাখছে বাহিরে বের হতে দিচ্ছে না,
সবাই বলাবলি করতেছে এই বয়সে এতো কিছু মেয়ের মা বাবা কই মেয়ে কে দিয়ে এসব করায়, কেউ মেয়ের বাবা কে খবর দে,, আর ওদের কে আটকিয়ে রাখ কাজি এনে ওদের বিয়ে পরিয়ে দে, এসব শুনে আমরা সবার সামনে কান্না শুরু করেছি, এক জন এসে আমাকে আমার গালে থা* প্পড় মারছে আর বলতে লাগলো ধ* ন কাটাইছে বেশিদিন হয় নি আর এখনই এসব, একটু পর লুবনার বাবা আর ও আম্মু এসেছে,,
বাড়িওয়ালা কাছে জিজ্ঞেস করলো আমার মেয়ে বাসায় কি করে না করে এই গুলা বাহিরের মানুষ কেমনে জানলো, আর ওরা কেন আমার মেয়ের উপরে নজর রাখে,এই ছেলে আমাদের পাশের রুমে থাকে এমন তো না যে এই ছেলে নতুন এসেছে এর আগে ও অনেক বার এসেছে আমাদের রুমে,,
বাড়িওয়ালা কোন জবাব দিলো না কারণ বাড়িওয়ালা এখানে জায়গা কিনে বাড়ি করছে তাই এলাকায় লোকজনের উপরে কথা বলে না, এলাকায় সব পোলাপান এক সাথে হয়ে বলাবলি করতে লাগলো ২ জন কে বার করে দেন পিটিয়ে নষ্টামিকে দূর করে দিবো,, এসব কথা শুনে, আমার আম্মু লুবনার বাবা বাড়িওয়ালা সবাই এক সাথে সিদ্ধান্ত নিলো আমাদের বিয়ে দিবে আর ওরা ৩০ হাজার টাকা দাবি করছে, বাড়িওয়ালা সেটা কে কমিয়ে ১০ হাজার নিয়ে আসলো, রাতেই বিয়ে, আমার আম্মু ৫০০০ টাকা দিছে আর লুবনার আব্বু ৫০০০ টাকা দিছে,, রাতে কাজি আনা হলো, উপস্থিত সবার সামনে আমাদের বিয়ে, অনেকই বলছে ছেলেটা ছোট এখন ও বিয়ের বয়স হয়নি তারা যেহুতো টাকা দিছে এটা মিটমাট করে দিলেই হয় কিন্তু এলাকায় ছেলেরা সেটা মানে না
( মূলত মেইন কারণ হলো ওরা লুবনা কে অনেক বার পেটানোর চেষ্টা করছে আর কে জানি লুবনার বাবার কাছে বিষয়ের পস্তাব ও দিছিলো লুবনার বাবা না করে দিছে সেই জন্য তারা এমন করতেছে )
কোন কিছুেই কাজ হলো না, কাজি এনে ৫ লাক টাকা দেনমোহর নির্ধারণ করে কালিমা পরিয়ে আমাদের বিয়ে দিয়ে দেয়, বিয়ের পর সবাই কে মিষ্টি বিতরণ করছে বাড়িওয়ালা,
রাত ১ টা বেজে গেছে, বিয়ের কাজ শেষ এখন সবাই চলে গেছে, আমি আমার রুমে চলে এসেছি, মা লুবনার বাবার সাথে কথা বলতেছে,
আমি একটু একটু শুনছি যে ওরা বলতে লাগলো যে যা হয়ছে এখানে আমাদের আত্মীয় স্বজনরা কেউ জানে না সময় মতো ডিভোর্স করিয়ে দিবো এখন যে যেভাবে আছে সেই ভাবে থাকুক,, পরের দিন আর রুম থেকে বার হইনি সারা দিন রুমে, জীবনে এমন একটা ঝর গেলো কোন দিন ভুলতে পারবো না, জানালা দিয়ে বাহিরে দিকে তাকিয়ে আছি এমনি লুবনার চোখে চোখ পরতেই লুবনা রুমে চলে গেলো, এখন কেমন জানি একটা মায়া কাজ করছে,
পরের দিন স্কুলে গেলাম সবাই আমাকে নিয়ে মজা করতে লাগলো যে আমি নাকি নষ্টামি করে বিয়ে করছি স্যার রা ও আমাকে নিয়ে কথা বলতে লাগলো সবাই বলতে লাগলো বিয়ে করছো এখন লেখা পড়া বাদ দিয়ে কামে লেগে পরতে,এসব শুনে আমি বাসায় এসে মারে বললাম আমি এই স্কুলে যাবো না,আম্মু বললো ২/৩ মাসের মধ্যে আমরা চলে যাবো দলিল গুলো হাতে আসলেই,,
এই দিকে আমি মনে মনে লুবনা কে খুঁজি, আগে কখনো এমন টা হয়নি, এখন কেন যানি এমন কিছু একটা মায়া কাজে লাগতে শুরু করলো, স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দিছি, রুমে সারাদিন শুয়ে বসে থাকি, এই ভাবে ৫ দিন চলে গেলো কিন্তুু লুবনা কে দেখছি না,, লুবনার আব্বু এই মাসেই এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে, এটা শুনে মনটা একটু খারাপ হয়ে গেলো, মনে মনে লুবনা কে খুজতে লাগলাম কিন্তু ওরে পাইনা,
মারে জিজ্ঞেস করলাম ওনারা কি এই বাসা ছেড়ে চলে যাবে মা বললো হা আমরা ও এর পরের মাসে বাড়ি চলে যাবো, জিডি করা শেষ এখন দলিল টা হাতে আসলেই হবে, আমি বললাম লুবনা আপু কি কলেজে যায় না,আমার কথা শুনে মা বললো লুবনা তো আরো ৩ দিন আগেই ওর মামতো ভাইয়ের সাথে চলে গেছে, কথা টা শুনে কেমন জানি একটা কষ্ট কাজ কলো, মা কে সেটা বুঝতে দেইনি,,
বাহিরে দোকানে গেলে সবাই কথা শুনাইতো বলতো আইছে জামাই কিন্তুু বউ আরেক জনের সাথে চলে গেছে,
সবার সব কথা শুনতে শুনতে এখন আর গায়ে লাগে না, এই দিকে লুবনার বাবা ওরা চলে গেছে, এখন এই বাসায় আমার ও দম বন্ধ হয়ে যায়, আম্মু কে বললাম আম্মু বললো সামনের মাসে আমরা চলে যাবো মামা ও বললো এক মাস পর চলে যেতে,,
আমার বিয়ের বয়স ১ মাস পার হয়ে গেছে, আমি একদিন যে কাজি আমাদের বিয়ে দিছে ওনার কাছে বিয়ের কাগজ চাইছি, ওনি বললো ৫০০ টাকা জোগার করো তার পর কাগজ নিয়ে যাও, আমি ৫০০ টাকা কই পাবো আম্মু কে বললে তো আমাকে মাইর দিবে আর এখন স্কুলে ও যাইনা কেমনে কি করবো, তাই আমি আমার ৩ টা গাইট বিক্রি করে দিছি, ৪৫০ টাকা, এই ৪৫০ টাকা নিয়ে কাগজ আনতে গেছি, ওনি ৪০০ টাকা রেখে আরো ৫০ টা,কা আমাকে ফেরত দিছে,
বউ চলে গেছে আর কাগজ দিয়ে কি করবো তার পর ও সৃতি হিসেবে রেখে দিলাম,
চলবে।
___________________________________________