সে আমার অর্ধাঙ্গিনী পর্ব-০৮

0
44

সে-আমার -অর্ধাঙ্গিনী
পর্ব ৮
লেখক রিহান অরণ্য

লুবনার আব্বু মা-রা যাবার পর এখন তার ছোট্ট বোন কে নিয়ে বাসায় থাকতে সমস্যা হচ্ছে, তার মামা রা চাইতেছে টাকা দিয়ে ফ্লাট টা নিয়ে নিতে, কিন্তুু লুবনা তার মার সৃতি টুকো হারাতে চায় না, তার মামা কে সরাসরি বলে দিছে তারা এই বাসা বিক্রি করবে না,
কিছু দিন ওই ওখানে থাকার পর ফ্লাট ভাড়া দিয়ে তারা শায়েস্তাগঞ্জ চলে যায়, নিজের জন্মস্থানে এসে ও লুবনা তার ছোট্ট বোন কে লেখাপড়ার করানোর জন্য ওরে বাহিরে রাখতে হবে,তাই লুবনা সিদ্ধান্ত নিলো তার বোন কে নিয়ে অন্য কোথাও চলে যাবে,

লুবনা তার বোন কে নিয়ে সাভার ভাইপেল চলে আসে, ওর বোন কে savar cantonment public school and college ভর্তি করে দেন, আর লুবনা সাভার জিরানি বাজার একটা পাইভেট হসপিটালে জব নিছে, তার ছোট বোনের জন্য এখন সে আগের সব কিছু পরিবর্তন করে ফেলছে,

এই দিকে আমার বউ চলে যাবার পর আত্মসন্মান নিয়ে বাহিরে ও বের হতে পারছি না, ছোট বোন কে সবাই খুচা দিয়ে কথা বলে, তাই ভাবলাম আমি কিছু দিনের জন্য মামার বাসায় বেড়াতে যাবো,( গাউসিয়া ) বর্তমানে মামা রা বাড়ি করছে জায়গায় নাম (গোলাকান্দাইল) ওখানে গিয়ে প্রথম ওই জায়গায় গেছি যে জায়গায় আমরা প্রথম থাকতাম,
অনেক কষ্ট লাগছে পুরোনো সৃতি মনে পরলো,, লুবনার কথা অনেক মনে পরছে আজ, কিছু করার ছিলো না, শুধু আকাশের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ নিশ্বাস নিলাম আর বললাম ওয় যেখানেই থাকে সব সময় যেন ভালো থাকে,বাড়িওয়ালার সাথে দেখা করতে গেছিলাম ওনি বাসায় নেই,, তাই চলে আসলাম,

১০ দিন হয়ে গেছে এইখানে আছি ভাবছি কাল চলে যাবো, তাই বিকাল বেলা গেলাম আগের বাড়িওয়ালার সাথে দেখা করতে,
ওনার সাথে দেখা করার কারন ওনি আমার বিয়ের উকিল ছিলেন,তাই এতো কাছে এসে ওনাকে না দেখে কেমনে চলে যাই, বিকালে গেলাম দেখা করতে ওনি আমাকে দেখে বললো সানি তোমাদের মতো কতো ভাড়াটিয়া গেলো আসলো কেউ মনে রাখেনি তোমরা মনে রাখছো, আসো বাবা তোমার জন্য একটা খবর আছে, আমি বললাম কি খবর ওনি বললো লুবনা এসেছিলো গত শুক্রবারে আমাকে খুজে বার করছে,
আমি বললাম কি বলেন এই জায়গায় কেমনে আসবে সে তো চিটাগং, তখন বললো না সে এখন ঢাকায় কোন জায়গায় জানি থাকে, সে এসেছিলো তোমার সাথে যে বিয়ে হয়েছে সেইটা ডিভোর্স জন্য, , আমি বললাম ওয় কি ডিভোর্স দিয়ে গেছে, বাড়িওয়ালা বললো না দেয়নি সামনের মাসে আসবে ওর বোনের বন্ধ পরলে, তোমার সম্পর্কে সব বললো তুমি চিটাগং গেছো কি হয়েছে সব, তুমি বিয়ে করছো সব কিছু বললো, মেয়েটার জন্য আসফোস হলো ২ মাসের মধ্যে ওর বাবা মা মা-রা গেছে, এখন আমি মনে হয় কারেন্ট শক খেলাম, এতো কিছু হয়ে গেলো কিছুই জানতে পারলাম না,
ওর বিয়ে হয়েছে কি না সেইটা কি জানেন আঙ্কেল, বাড়িওয়ালা বললো না এই সব কিছু বলে নাই, তবে মনে হয় হয়নি,যদি হইতো তাইলে এখানে আসতোনা আর তোমাকে ডিভোর্স দিতে চাইতো না, আমি বললাম ওর নাম্বার রাখেন নাই, বাড়িওয়ালা বললো না, নাম্বার তো রাখি নাই, ওকে আঙ্কেল আমার নাম্বার টা রেখে দিন ওয় আসলে বলবেন আমাকে কল দিতে, এই বলে চলে আসলাম, ভাবছি কাল চলে যাবো কিন্তুু যাবো না, ওর জন্য চিটাগাং এতো কষ্ট করছি এখন ঢাকায় কোন জায়গায় থাকে কষ্ট করে এটা খুজে বার করতে হবে, লেপটব অন করে ফেসবুকে ডুকলাম দেখি ১৩ ঘন্টা আগেও আমার আইডিতে ডুকছে,

এখন ভাবলাম তার সাথে যে ভাবেই হোক কথা বলা লাগবে,

কিন্তুু কেমনে কি করবো, কই পাবো ওরে এই চিন্তায় মাথা ব্যথা উঠে গেছে, কোন কুল কিনারা পাচ্ছি না,
অবশেষে একটা উপায় খুঁজে বের কারলাম, যেহেতু আমার ফেসবুক আইডি টা লগিং করে তাইলে একটা পোস্ট, অনলি মি, করে রাখবো, তার আগে প্রোফাইল পিক পরিবর্তন করবো তাইলে কমেন্ট দেখতে গিয়ে পোস্ট টা ও দেখবে,

প্রথমে পিক পরিবর্তন করে, তার পর লুবনা কে উদ্দেশ্য করে পোস্ট করলাম only me করে, যাতে আর কেউ না দেখে,

পোষ্টি ছিলো,

প্রিয় অর্ধাঙ্গিনী 💔

তোমার জন্য আমার এই মেসেজ,,,,,,,

আমি জানি আমার লেপটব তোমার কাছে, তুমি আমার আইডিটা লগিং করো, অনেক দিন ধরে করছো আমি ফলো করছি কিন্তুু পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করি নাই কারণ যার কাছে আমার জীবনের পাসওয়ার্ড, তার কাছে আমার ফেসবুক আইডি টা কিছুই না, তবুও আমার অনেক ভালো লাগলো তুমি আমাকে ফলো করছো, কিন্তু অর্ধাঙ্গিনী আমি অনেক কষ্ট পেয়েছি তোমার ফেমিলির কথা শুনে, ওনারা আমাকে কষ্ট দিয়েছে, কিন্তুু তোমার তো মা বাবা, আমি এখনো মানতে পারছি না ওনারা চলে গেছে তোমাকে এতিম করে, অনেক কষ্ট পেয়েছো তাইনা, অনেক কান্না করেছো হয়তো, আমি তো জানি তুমি কান্না করলে কেউ তোমাকে থামাতে পারে না,যে দিন তোমার আমার বিয়ে হয় সেই দিন যখন তোমাকে আর আমাকে আটকিয়ে রাখছে ওই দিন আমি তোমার কান্না দেখেছি, তোমাকে শান্তনা দিবার কোন ভাষা আমার নাই, ওই অর্ধাঙ্গিনী তুমি কি জানো তোমার জন্য আমার চোখের পানি শুকিয়ে গেছে, কান্না করার মতো আর কোন পানি নাই, তোমার জন্য আমি জীবন মরণের মাঝামাঝি অবস্থান করেও বেঁচে গেছি, তবে আজকে মনে হলো ওই দিন আমাকে মে-রে ফেললে ভালো হইতো তাইলে আমাকে ডিভোর্স দিবার চেষ্টা করতে পারতে না, আচ্ছা অর্ধাঙ্গিনী কবুল তো আমি একা বলিনি তাইলে আমি একা কেন জ্বলছি, ওই অর্ধাঙ্গিনী শুনছো তুমি, তোমার জন্য আমি কতো অপমানিত ও হয়েছি নিজের ফেমিলি কাছে, তুমি আমার চাইতে বয়সে বড় সে জন্য, তার পরও আমি তোমাকে চাই, শুধু তোমাকে চাই, তুমি কি পারোনা সব কিছু পিছনে ফেলে আমার কাছে আসতে, আমি অপেক্ষা করে আছি তোমার জন্য তুমি একবার আমার সাথে কথা বলো,
এই যে আমার নাম্বার ০১৭২৩-

অপেক্ষায় রইলাম আমার অর্ধাঙ্গিনীর জন্য 💔

____________________________

পোস্ট করে অপেক্ষায় ছিলাম সে কখন ফোন দিবে, কিন্তুু এই ভাবে অনেক দিন হয়ে গেলো, আমার ফেসবুক আইডি লগিং হয়েছে কিন্তুু কোন ফোন আসে না
আমি চলে আসলাম গাউছিয়া থেকে, বাড়ি এসে ও অনেক দিন অপেক্ষা করলাম কিন্তুু কোন ফোন দেয়নি,

অবশেষে অপেক্ষা ছেরে দিলাম, বাসা থেকে বাইক কিনে দিছে, আমার বিয়েতে যে টাকা খরচ হয়েতে ওরা মনে হয় টাকা দিছে আম্মু কে কতো দিছে জানি না,

মাঝে একবার বাড়িওয়ালা কে ফোন দিছিলাম বললো লুবনা পরে আর আসেনি, আমি বললাম আমার সব চেষ্টা ব্যর্থ আঙ্কেল ওরে পাইনি, ঢাকা শহরে কোন জায়গায় ওরে খুজবো বলেন,

যদি লুবনা আসে আর যদি ডিভোর্স দেয় আমার ঠিকানায় পাঠিয়ে দিতে বইলেন,
কথা গুলা অনেক কষ্টে বলে ফোন রেখে দিয়ে বাসার ছাদে গেলাম বৃষ্টি হচ্ছে, চোখে পানি টা বৃষ্টির পানি দিয়ে আড়াল করে দিলাম,

এই ভাবে কেটে গেলো ২ মাস কারো কোন ফোন আসে না, ভেবেই নিছি এই জীবনে আমার আর আমার অর্ধাঙ্গিনী কে পাবো না,

এক দিন বিকালে ফোন আসলো আমাদের একটা সাইডে কাজ চলছিলো,ওখানে লেবারের টাকা দিতে হবে, বাইক নিয়ে বের হয়ে বেংক থেকে টাকা তুলে দিয়ে আসার সময় আমার বোন ফোন দিলো ভাইয়া তোমার ডিভোর্স লেটার এসেছে, তুমি কই বাসায় আসো,আমি বলালম আসতেছি, এটা বলে ফোন কেটে দিলাম, খবর টা শুনে মাথা ঘুরতে লাগলো লুবনা তাইলে আমাকে ডিভোর্স দিলো, বাইক নিয়ে রওনা দিলাম , লুবলানার কথা ভাবতে ভাবতে আমি কখন যে এক্সিডেন্টে করলাম কিছুই বুঝলাম না শুধু এইটুকু মনে আছে কোন কিছু একটার সাথে আমি ধাক্কা খেয়েছি,তার পর আর কিছু মনে নাই,

___________________________

সবাই অপেক্ষা করে গল্প টার জন্য কিন্তু আমি জব করি লিখার সময় কম পাই তাই দুঃখিত দেরি করে দিবার জন্য এর পরের পর্ব বড় করে দিবো , সবাই কমেনট করবেন, কমেন্ট রিপলে করা হবে,