বড়োজা পর্ব-২৩

0
457

#বড়োজা
#Nadia_Afrin

২৩
অতীত নিয়ে আর ভাবতে চাইনা আমি।যা হওয়ার হয়েছে।নিয়তি বলে মেনে নিয়েছি সবটাই।
তবুও বারবার কেন অতীত এসেই আমার সামনে দাড়ায়?
আসলে যেখান থেকে আমরা পালিয়ে বাঁচতে চাই সেখানেই ঘুরে ফিরে আটকে পড়ি।
আমার হয়েছে সেই জো।

পুরো আমি টাই বিষন্ন হয়ে গেছি।
এভাবে কী আদৌ জীবন চলে?
বেঁচে থাকা যায়?
সম্পূর্ণ গল্পটি আমার পেইজে দেওয়া আছে।নাদিয়া আফরিন ইংরেজিতে লিখে সার্চ দিলেই পেয়ে যাবেন আমার পেইজ।
ফলো দিয়ে সম্পূর্ণ গল্পটি পড়ুন।
ফলো না করলে হারিয়ে ফেলতে পারেন।

বাচ্চা পড়াতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে গেছি আমি।সবকাজ সবার দ্বারা হয়না।ধৈয‍্য আছে আমার।তবে শুধু ধৈর্য্য এখানে কাজ করছেনা।এখানকার অস্বস্তিকর পরিবেশ আমায় নাড়িয়ে তুলেছে।
কোনো বাচ্চাই কথা শোনেনা।
একটা আমি বললে তিনটে বলে।হাসি-তামাশা করে আমায় নিয়েই।
চরম ভাবে বিরক্ত আমি এসবে।
সেদিন সহ‍্য করতে না পেরে কান্না করেছিলাম ক্লাসের মাঝেই।

ছেলেকে সেদিন কে যেন বলে দিয়েছে,ওর বাবা বড়োলোক।ওখানে থাকলে ভালো খাবার পাবে।
আমার কাছে থাকলে নাকি এসবই অর্থাৎ ডাল-ভর্তা খেয়ে থাকতে হবে।
মানুষ কতো বিবেকছাড়া হতে পারে!

সেই থেকে ছেলের বায়না বাবার কাছে যাব।বাবার কাছে থাকবো।মা ভালো না।মা শুধু মা*রে।

মা কী কম দুঃখে মা*রে!
এই ছেলে তা বোঝেনা।
বোঝালাম কাজ হলোনা।বাবার কাছেই যাবে সে।রাগে বললাম, যা পারিস কর।একা একা বাবার কাছে চলে যা।ঝাটা মে*রে তাড়িয়ে দেবে।একবার ঘার ধাক্কা দিয়েছে শিক্ষা হয়নি।
আবার বাবা বাবা করছে।

ও জেদ দেখিয়ে নিজে নিজেই বস্তির বাইরে গেছে।
এক পরিচিত মহিলাকে নাকি বলেছে বাবার কাছে যাবে।সেই মহিলা আবার চেনে সবাইকেই।
ভেবেছে হারিয়ে গেছে আলিফ।
মহিলা হাত ধরে নিয়ে বাড়িতে নিয়ে ‘বড়োজার’ হাতে ছেলেকে দিয়েছে।এরপর চলে গেছে।
বাড়িতে নাকি কেউ ছিল না ।
তটিনী চেকআপে গেছে মায়ের সঙ্গে।আকাশ কাজে।বাড়িতে ওরা দু-বোনই ছিল।
রিঙ্কি ছেলেটাকে থাপ্পর দিয়েছে গালে।
গাল চেপে ধরে দাগ করে দিয়েছে।
ছেলে ভয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি চলে এসেছে একাই।
এসেই আমায় সব বলেছে।রাগে আমি আরো দুটো বসিয়েছি গালে।
গেল কেন ও?
কিছুই কী বোঝেনা এই ছেলে?
এদের পেলে লাভ টা কী আমার?

এক অশান্তির মাঝে ফোন আসে একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে।
রিসিভ করতেই শুনি রাশেদ স‍্যারের কন্ঠস্বর।
কল কেঁটে দিলাম ততক্ষণাৎ।
লোকটা আবার কল দেয়।বারবার কল দেয়।
বিরক্তি নিয়ে রিসিভ করি ছয়বারের বেলা।
ঝাঝালো কন্ঠে বলি,”সমস‍্যা কী আপনার?কল কেন দিচ্ছেন বারবার?”

উনি বলে,”প্লিজ রাগ করবেন না।কল না রেখে আমার কথাটি শুনুন।
আপনার উপকারেই কল দিয়েছি আমি।
আপনি আমার অফিসে কাজ করেছেন।যদিও পুরো মাস করেননি।কয়দিন আগে কাজ ছেড়েছেন।
কিন্তু আপনি যে কদিনই ছিলেন কাজের প্রতি নিষ্ঠা,সততা ছিল আপনার মাঝে।
নিজ কাজের পাশাপাশি চেষ্টা করেছেন ওপরকে হেল্প করার।
অফিসের মিটিং এ আপনায় নিয়ে কথা উঠেছিল।বেশ কজন আপনার ব‍্যাপারে পজেটিভ রিভিউ দিয়েছে।
সবাই আপনার চাকরি ছাড়ার কারণ জানতে চাইলে আমি বলেছি ছোট বাচ্চা নিয়ে কাজ করা আপনার জন্য চাপের হয়ে যাচ্ছে।এজন‍্য ছেড়েছেন।আসলে আমি চাইনি কর্মক্ষেত্রে এ বিষয় ছড়িয়ে আমার বা আপনার সম্মান নষ্ট হোক।কারণ আমি ভুল করেছি স্বীকার করছি।

তোহ যাই হোক।
কাল অফিসে বেতন দেওয়া হবে।মিটিং এ আপনার পুরো মাসের বেতন দেওয়ার জন্য আমি আবেদন করছিলাম।সেটা গৃহীত হয়েছে।
আমায় দায়িত্ব দিয়েছে বেতনের।
আপনি এসে আপনার টাকাটা নিয়ে যাবেন।”

উনার কথা এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি তার আগেই আমি তীব্র স্বরে বলি,”কোনো টাকা-পয়সার প্রয়োজন নেই।আমি আপনার মুখো হতে চাইনা কোনোমতেই।”

কল রেখে দেই।মেয়েকে কোলে নিয়ে বিছানায় বসি।
স‍্যারের কথাটি আমার মনে ভাসে।চারপাশের পরিস্থিতি নিয়ে ভাবি আমি।
এই বাচ্চা পড়িয়ে হবেনা আমার।আর কিছুদিন এদের পড়ালে পাগল হয়ে বনে বাদারে ঘুরতে হবে।
সবাই তো আর সবটা পারেনা।
চলার মতো টাকাটা অব্দি নেই আমার কাছে।পড়ানোর টাকাটা কেউ ঠিক মতো দেয়না।কেউ বলে মাস শেষে দেব,কেউ বলে পরের সপ্তাহে।এভাবে কখনো সংসার চালানো যায়?
ছোট বাচ্চা আছে দুটো আমার।নিজে না খেয়ে এক বেলা চলে যায়।বাচ্চাদের না খাইয়ে রাখি কীভাবে!
টাকা গুলো পেলে আমার ভালোই হয়।ছোট খাটো কিছু একটা করতে পারবো।
এই টাকা আমার ন‍‍্যায‍্য টাকা।আমার পরিশ্রমের পারিশ্রমিক।পুরো মাসেরটা নেব না।যে কদিন কাজ করেছি তার বাবদে টাকা আমি নিতেই পারি।আমার হক এটা।
পুরো গল্পটি নাদিয়া আফরিন পেইজে দেওয়া আছে।ফলো দিয়ে পড়েনিন।
নাহলে হারিয়ে ফেলতে পারেন।
এছাড়াও আমার লেখা সব গল্প পাবেন আমার পেইজে।

আমার ভাবনার মাঝেই আবারো কল বেজে ওঠে।
রাশেদ স‍্যারই কল করেছে।
রিসিভ করতেই তিনি বলেন,”আমার পুরো কথাটা কেন শুনছেন না তন্নি।টাকাটা আপনার প্রাপ‍্য।আমি কোনোভাবে আপনায় দয়া বা করুণা করছিনা।কাজ করেছেন মূল্য নেবেন না?
আপনার ভালোর জন্যই কিন্তু প্রস্তাব টা দিচ্ছি আমি।মূলত আমি আমার পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে চাই।
আমি জানি আমি অন‍্যায় করেছি।আপনাকে বিরক্ত করেছি।
এর জন‍্য অনুতপ্ত আমি।
সত‍্যিই তো,অসম্ভব কিছু ভেবেছি আমি।আবেকে ভুল করতে চেয়েছিলাম।
আপনি একজন ডিভোর্সী নারী,দু-বাচ্চার মা।আমি অবিবাহিত একটা ছেলে।কীভাবে হতো আমাদের মিল?
হলেও বা মেনে নিত কী এই সমাজ?
সবই ছিল আবেগ।আবেগে ভেসেছি সেসময়।বাস্তবতা বুঝছি এখন।
ভাগ‍্যিস তখন আপনি আমার সঙ্গে তাল মেলান নি।না’হলে আমার পুরো ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যেত।
আবেগ একদিন চলে যেত।বাস্তবতার সামনে দাড়ালে আমার মত বদলে যেত।জীবন নষ্ট হতো দুজনের।আমার পরিবারের সম্মান নষ্ট হতো।লোকে আমায় ধিক্কার করতো।”

“আপনার কথা শুনে ভালো লাগলো।আবেগ দিয়ে জীবন চলেনা।
বুঝতে পারলেই ভালো।দুনিয়া এতো সহজ না।বিয়ে পুতুল খেলা নয়।”

“জ্বী।তা আমি ভালো করেই বুঝে গেছি।আপনাকে বলা হয়নি।আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে আমার কাজিনের সঙ্গে।
সামনের মাসেই বিয়ে আমাদের।দোয়া করবেন।
তবে আপনার থেকে ক্ষমা না পাওয়া পর্যন্ত আমার ঠিক শান্তি হচ্ছেনা।
যদি মন থেকে আমায় ক্ষমা করেন তো টাকাটা নিয়ে আমায় শুভেচ্ছা জানিয়ে যাবেন।”

আমি বললাম,”ঠিক আছে।কাল অফিসে আসবো আমি।”

উনি ততক্ষণাৎ বলে,”না নাহ।অফিস আসতে হবেনা।
আসলে আপনার ভালো যেমন বলেছে লোকে,তেমন শত্রুও কিন্তু আছে।অফিসের মাঝেই আপনার অনেক শত্রু আছে।
এবার আপনি যদি অফিসে এসে টাকা নেন অন‍্যসবার সঙ্গে অথবা একাই।কেউ যদি দেখে তো আবার বাজে কথা বলবে।
বলবে পুরো মাস কাজ না করে কীভাবে আপনি বেতন পাচ্ছেন।সাধারণত এমন সুযোগ সবাই পায়না।
আমার জন্য আপনার ভীষণ সমস্যা হয়েছে এজন্য।
এবং আপনার কাজের প্রতি সততা দেখে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।লোকে তো আর এটা বুঝবেনা।মুখদিয়ে বাজে একটা বললে ঠেকানো যাবেনা।
আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে।আমি চাইনা এখন কোনো ঝামেলা হয়ে আমার ব‍্যক্তিগত জীবনে কোনো সমস্যা আসুক।
আপনি বরং বিকেলে অফিসের পেছনে যে একটা পুরাতন বাড়ি আছে,সেখানে এসে দাড়াবেন।
আমি টাকা দিয়ে চলে আসবো।
এবং কালকের পর থেকে আপনার সঙ্গে আমার আর কোনো কথা থাকবেনা।আমি এবার আমার নিজের জীবন গুছিয়ে নেব।”

একটু ভেবে রাজি হই আমি।
কল রেখে নিশ্চিন্ত মন নিয়ে রাধতে বসি।
মনমানসিকতা ভালো ছিল না আমার।ছেলের কান্ডে ভীষণ বিরক্ত।
তাই আর একথা কাউকে বলিনি।
রাত পার হয়ে সকাল হয়।ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়েছে আমার।দৌড়ে লতা আপার ওদিকে গেলাম।কিন্তু তাকে পেলাম না।সে কাজে চলে গেছে।ভেবেছিলাম লতা আপাকে বিষয়টি জানাবো।উনাকে সঙ্গে নিয়েই যাব।
একা যেতে ভয় হয় আমার।

কী আর করার!
অপেক্ষাই করি বরং।

চাচিকে জানিয়েছি।তিনি যেতে বললেন।
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলো।
আমি তৈরি হয়ে ছেলে-মেয়ে নিয়ে লতা আপার ঘরের সামনে দাড়িয়ে রইলাম।
কিন্তু তার আসার নাম নেই।
সন্ধ‍্যা হয়ে যাচ্ছে।আধার ঘনিয়ে আসছে।
স‍্যার কল করেছে কবার।আমি শুধু আসছি আসছি বলে ঠেকিয়ে রেখেছি।
এরই মাঝে এলো লতা আপার স্বামী।
আমায় দাড়িয়ে থাকতে দেখে সুধায় তিনি।বলি তাকে বিষয়টি।
উনি বলেন,”তোমার আপা যে বাড়ি কাজ করে সেই বাড়ি আজ অনুষ্ঠান।ছেলের বিয়ে।কাজের চাপ মেলা।
ফিরতে অনেক রাতে।
এরচেয়ে বরং রিক্সা করে যেয়ে টাকাটা নিয়ে এসো।
আমার রিক্সা করে নিয়ে যেতে পারতাম কিন্তু রিক্সাটা সবে চার্জে দিয়ে এসেছি ওস্তাদ বাড়ি।”
পুরো গল্পটি নাদিয়া আফরিন পেজে দেওয়া আছে।ফলো দিয়ে পড়েনিন।
নাহলে হারিয়ে ফেলতে পারেন।
অন‍্য কোনো গ্রুপে বা পেইজে আর গল্পটি পাবেন না।সুতরাং সম্পূর্ণ গল্প পড়তে এবং আপডেট পেতে মূল লেখিকাকে ফলো দিয়ে রাখুন।

বাধ‍্য হয়ে আমি নিজেই গেলাম।টাকাটা প্রয়োজন আমার।
রিক্সা করে সোজা সেই পুরোনো বাড়ির সামনে গেলাম।ভারা দিয়ে নেমে ভেতরে ঢুকলাম।স‍্যার দাড়িয়ে আছে দেখলাম।
আমি একহাতে মেয়েকে নিয়ে হাঁটছি।ছেলে পেছন পেছন আসছে।
স‍্যারের সামনে দাড়িয়ে বললাম,”যা বলার দ্রুত বলুন।হাতে বেশি সময় নেই আমার।রাত হয়ে আসছে।”

স‍্যার মুচকি মুচকি হাসে আর বলে,”কেমন আছেন?”

“জ্বী ভালো।”
আর কোনো কথা বলিনা আমি।চেহারায় স্পষ্ট রাগ আমার।

স‍্যার সবে পকেটে হাত দিয়েছে এরই মধ্যে কজন লোক-মহিলা বেড়িয়ে এলো আড়াল থেকে।
অফিসেরই মানুষ এগুলো।কিন্তু এরা এখানে কী করছে?

সবাই ফিসফিস শুরু করলো।
আমি হতভম্বের মতো তাকিয়ে আছি। কিছুই বুঝছিনা।
স‍্যার ও দেখলাম চুপ।

ঐ মহিলাকেও দেখলাম।চম্পা নাম যে।
উনি চড়া গলায় বলেন,”হাতেনাতে আজ ধরা পড়েছে।
আমি আগেই বলেছিলাম এই মেয়ের চরিত্র খারাপ।স‍্যারের পেছনে শুধু ঘুরঘুর করেছে কাজ বাদে।বড়োলোকের ছেলে দেখে গলায় ঝুলে পড়ার চেষ্টা।এখানে এসেছে লুকিয়ে দেখা করতে।কাজ ও ছেড়েছে এজন্য।ফ‍্যাক্টারিতে আমরা দেখলে সমস্যা হবে এজন্য গোপনে এসেছে দেখা করতে।”

আমি চিৎকার করে বলি,”এসব কী বলছেন আপনি?না জেনে কেন কথা বলছেন?আমি টাকা নিতে এসেছি।”

“এইতো বের হলো আসল চেহারা।টাকার জন্য স‍্যারকে ফাঁসাচ্ছে এই মেয়ে।”

উনার সঙ্গে সঙ্গে অন্যরাও তাল মেলালো। মূহুর্ত্তের মাঝে গোলযোগ তৈরি হলো।ধীরে ধীরে লোক বাড়তে শুরু করলো।নানান জনে নানান কথা বলছে।
আমি বোঝানোর চেষ্টা করলাম। এমন কিছুই না।আমার কথা কেউ শোনেনা।
সবার কথা,বেতন নেওয়ার হলে দিনে আসতাম আমি।রাতে কেন এলাম।

স‍্যার ও বোঝাতে চাইলো।কিন্তু কাজ হলোনা।
আশেপাশের ইয়াং ছেলেরা এসে ভির করলো।
উপায়ন্ত না পেয়ে আমি কাঁদতে আরম্ভ করলাম।
কী করবো কিচ্ছু বুঝছিনা।

স‍্যার আমার সামনে এসে বলছে,উনি কিছুই জানেনা এ বিষয়ে।উনাকে ফাঁসানো হচ্ছে।

আমি জবাব দেইনা কোনো।
মহিলা কজন আমায় বিশ্রি ভাষায় গা*লী দিতে লাগে।নষ্টা থেকে শুরু করে দে*হ ব‍্যবসায়ী পর্যন্ত বলছে।এসব সহ‍্য করতে না পেরে চিৎকার করি আমি।পুলিশ ডাকতে চাই।

ওরা বলে,”তোমরা পুরোনো বাড়িতে নষ্টা*মি করবে আর আমরা বললেই দোষ।ডাকো পুলিশ।আমরাও বলবো এদের নোংরামো।”

ছেলে আমার ভয় পাচ্ছে এতো মানুষ ও চিৎকার দেখে।ভয়ে কাঁদছে।আমায় জড়িয়ে ধরে আছে।
ছেলে নিয়ে সরে আসতে চাইলাম আমি।ওরা যেতে দিল না।কজন মহিলা বাজে ভাবে আমায় টেনে ধরে।হাত ঝাংটা দিয়ে তাদের সরিয়ে দেই আমি।ভিরের মাঝখান থেকে একজন থাপ্পড় বসায় আমার গালে।সুযোগে সৎব‍্যবহার আর কী!
এবার যেন আমি আরো ঘাবড়ে গেলাম।
থরথর করে কাপতে লাগলাম।এখানে কেউ পরিচিত নয় আমার।
কে শুনবে আমার কথা?কে বুঝবে আমায়?
সব যেন আগে থেকেই পরিকল্পনা করা ছিল।নাহলে এরা আসলো কোথা থেকে হঠাৎ?লুকিয়ে ছিল হয়ত।
বেশি ঝামেলা বাধিয়েছে চম্পা।উনি তিল কে তাল বানিয়ে লোক সম্মুখে প্রকাশ করছে।
সম্পূর্ণ দোষ দিচ্ছে আমার ওপর।কিসের এতো শত্রুতা উনার আমার সঙ্গে?নাকি সবটাই চাল!

যুবক ছেলেগুলো এসে স‍্যারকে ঘিরে ধরে।স‍্যারকে দেখলাম কাকে যেন কল দিচ্ছে বারবার।
হইচই শুরু হয় ভীষণ।
এক ছেলে স‍্যারের কলার চেপে ধরে।স‍্যার নিজেই নিজেকে ছাড়িয়ে পরিবেশ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে।
জোর গলায় বলছে আমাদের কোনো দোষ নেই।

কিন্তু কেউ শোনেনা আমাদের কথা।আরো গা*লা*গা*লী করে দ্বিগুণ।
এক বয়স্ক মতো লোক বলে এদের বিয়ে দেওয়া হোক।
সঙ্গে বিশ হাজার জরিমানা।

এবার আমি মাথায় হাত দিয়ে নিচে বসে পড়ি।
স‍্যার দৌড়ে আসে আমার কাছে।
ব‍্যতিব‍্যস্ত হয়ে বলে,”আপনি ভয় পাবেন না তন্নি।আমি দেখছি কী করা যায়।আমরা নির্দোষ।”

আমি চেচিয়ে উঠে বলি,”সব আপনার জন্য হয়েছে।আপনি প্রথম থেকেই আমার ক্ষতি করতে চেয়েছেন।”

স‍্যার কোনো জবাব না দিয়ে ভিরের মাঝে যায়।টাকা দিয়ে ম‍্যানেজ করার চেষ্টা করছে দেখলাম।
তবে কাজ হলোনা।সবার একটাই কথা,ধরা যেহেতু পড়েছে বিয়ে করতেই হবে।সঙ্গে জরিমানাও দিতে হবে।

স‍্যার অনেক চেষ্টা করলো।কিন্তু পরিবেশ আরো হাতের বাইরে যেতে লাগলো।
মানুষ বাড়তে লাগে আরো।
আমি একপাশে নিশ্চুপ বসেছিলাম।নিঃশব্দে চোখের পানি মুছতে ছিলাম।
মেয়ে কোলে তখনও।ছেলে পাশেই বসে আছে।ভয়ে তটস্থ।
এরই মাঝে কল দেয় লতা আপা।এক টুকরো আশার আলো খুঁজে পাই আমি।
দ্রুত রিসিভ করি কল।লতা আপা প্রশ্ন করে,”কোথায় তুমি তন্নি?এতো দেরি হচ্ছে কেন আসতে?
মাত্র ফিরলাম আমি।তোমার ভাই বললো তুমি নাকি আমার জন্য অপেক্ষা করে করে অনেকক্ষণ হলো বেড়িয়েছো।
কী হয়েছে?আশেপাশ থেকে এতো শব্দ কিসের?ঠিক আছো তো তুমি?”

আমি ঢুকরে কেঁদে উঠে বলি,”আপা গো আমার সব শেষ।
আমার সব সম্মান শেষ।”

এইটুকু বলতে পারিনি এক মহিলা আমার ফোন কেড়ে নিয়েছে।স‍্যারের টাও কেড়ে নিয়েছে।
বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা।

আপা কলে ছিল তখনো।
মহিলা ফোন কানে নিয়ে বলে,”আপনার বোন লা*ঙ নিয়ে ধরা পরেছে।”

আপা কিছুই বোঝেনা।মহিলা আপাকেও গা*লী দেয়।ভেবেছে আপা আমার নিজের বোন।
আমার শিক্ষা নিয়ে তাকে কটুক্তি করে।
আপা কোনোমতে এ‍্যাড্রেস নিয়ে কল কেঁটে দেয়।

বিয়ের জন্য হইচই করে সকলে।
আমি ছেলেকে বুকে চেপে বসে আছি।
স‍্যার এসে বলে,”কী করবেন তন্নি?পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেছে।
আমি শত চেষ্টা করেও পারছিনা।কিছু বড়োভাইদের জানাতে চাচ্ছি কিন্তু ফোনটাও দিচ্ছেনা এরা।
ধীরে ধীরে মানুষ বাড়ছে আরো।
কী হবে এবার?”

আমি জবাব দিলাম না কোনো।ছেলেকে নিয়ে শুধু কাঁদছি।
এর মাঝে লতা আপা আসে।
আপাকে দেখেই এতো শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছি যেন দম বেড়িয়ে যাবে।চিৎকার দিয়ে কান্না শুরু করেছি।আপার স্বামী আমার মেয়েকে ও ছেলেকে নিজের কাছে নেয়।
আপাকে দেখে যেন লোকে এবার আরো শুরু করেছে চিৎকার।
আপা আমায় থামিয়ে সকলের উদ্দেশ্যে বলেন,”কী হয়েছে আমাদের খুলে বলুন।”

চারপাশ থেকে ঘিরে ধরে ওমনি।একেক জন একেক কথা বলে।
আমি শুধু আপার হাত দুটো ধরে অশ্রুসিক্ত নয়নে বলি,”বিশ্বাস করূন আপা।আমি কিচ্ছু জানিনা এসবের।”

আপা আমায় আশ্বাস দিয়ে বলেন,”আপনারা যে এতো কথা বলছেন তার কোনো প্রমাণ আছে?”

“প্রমাণ আমরা হাতেনাতে পেয়েছি।এক ছেলে-মেয়ে এই ভর সন্ধ‍্যায় এখানে দেখা করতে আসে কোন যুক্তিতে?
যদি প্রয়োজন থাকতো সোজা অফিসে আসতে পারতো।তা না করে এই শুনশান জায়গায় আসার মানে কী?”

আমি বলি,”উনি আমায় ডেকেছিলেন টাকা নিতে কাজের।আমি যে উনার ফ‍্যাক্টারিতে কাজ করেছি এটা তো এখানের অনেকে জানে।
সেই টাকাটাই নিতে এসেছি আমি”

চম্পা বলেন,”সবই মিথ‍্যা।ধরা পড়লে সবাই এসবই বলে।কাজ করেছে ফ‍্যাক্টারিতে,টাকা নেবে ফ‍্যাক্টারি এসে।ফাঁকা জায়গায় এসে কিসের লেনদেন?
এছাড়াও এই মেয়ের সমস্যা প্রথম থেকেই।স‍্যারকে দেখে কেমন ছুকছুক করতো।
স‍্যারকে দেখতাম ডাবল ডাবল বিরিয়ানি দেয়।গাড়িতে করে অফিস নিয়ে আসে।
আরো কতো কী!
তখনই আমার সন্দেহ হয়েছিল।
এবার তার প্রমাণ পেলাম।”

সকলকেই দেখলাম উনার কথায় তাল দিচ্ছে।
বিয়ে দেওয়ার হিরিক ওঠে এবার।
আমি ভয়ে আপার পেছন দাড়াই।আড়াল হই।
উনার স্বামী বোঝানোর চেষ্টা করে।কিন্তু কিচ্ছু হয়না তাতে।

লতা আপা বলেন,”বিয়ে দেবেন বললেই কী বিয়ে হয়?
ওর দুটো ছেলে-মেয়ে আছে।সব কিছু এতো সহজ নয়।
বিয়ে কোনো ছেলেখেলা হয়।ওর সঙ্গে ওর বাচ্চার ভবিষ্যৎ জড়িয়ে আছে।আপনারা হুট করে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।
প্রয়োজনে বিচার ডাকুন।বড়োরা যে বিচার দেবে সেটাতেই রাজি আছি আমরা।যদি তন্নির কোনো ভুল থাকে তাহলে ও শাস্তি পাবে।কিন্তু এভাবে হুট করে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবেনা।
ওর ও জীবন আছে।আপনারা এভাবে কিছু চাপিয়ে দিতে পারেন না।”

এবার সবাইকে চুপ দেখলাম।
আপা আমার হাত ধরে বলল,”তন্নিকে আমরা নিয়ে যাচ্ছি।কাল বিচার বসিয়ে আমাদের ডাকবেন।
সঙ্গে উপযুক্ত প্রমাণ আনবেন।”

আপা আমায় নিয়ে বেড়িয়ে এলো।স‍্যারও গাড়ি নিয়ে চলে গেল।
আমার ফোনটা লতা আপার স্বামী নিল।

কিছুক্ষণের মাঝে কী হয়ে গেল!

বাড়ি ফিরে এসেছি।পুরো পথ কেঁদেছি আমি।চোখের পানি বাধ ভেঙেছে।
নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করছে আমার।

বাড়ি এসে কাঁদলাম চিৎকার করে।
আমার কান্না শুনে সকলে এগিয়ে আসে।লতা আপা কোনো মতে আমায় ঘরে নিয়ে যায়।সবাইকে বুঝিয়ে বাড়ি পাঠায়।চাচি দৌড়ে আসে।আপা তাকে সবটাই বলে।উনারা আমায় ধৈর্য্য ধরতে বলে।পাশে আছে বলে সাহস দেয়।
প্রায় রাত এগারোটার দিকে লতা আপা চলে যান।
খাইনি আমি।উনারা আমায় খাওয়ানোর চেষ্টা করেছে।কাঁদতে কাঁদতে খাওয়ার রুচি নেই।
চাচি আমার ঘরেই থাকতে চায়।বসে থাকে পাশে।
রাত যতো বাড়তে লাগে,গা কাপিয়ে জ্বর আসে।এতো চাপ আর নিতে পারছিনা আমি।
শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।জ্বর মাথায় উঠে চোখ লাল টকটকে হয়ে যায়।
চাচি আমার বুকে পিঠে তেল মালিশ করে শান্ত করে।
ঘরে বাতলি ভর্তি পানি এনে মাথার নিচে প্লাষ্টিক কাগজ দিয়ে পানি ঢালে।কেমন যেন হয়ে যাই আমি।কোনো কথা বলতে পারছিনা।
চাচি পানি ঢালে মাথায়।গা হাত-পা মুছে দেয়।অনেকক্ষণ পর স্বাভাবিক হই আমি।জ্বর একটু কমে আসে।ছেলেটা আমার পায়ে তেল ঘসছে আর কাঁদছে।
মেয়ে ঘুমিয়েছে।
আমি চাচির হাত ধরে কেঁদে উঠি আবারো।
ভাঙা গলায় বলি,”চাচি আমার সঙ্গে কেন এটা হলো?আমি নির্দোষ কিন্তু কলঙ্কিত হলাম।
এই এতিমের দুঃখ কেউ বুঝলোনা চাচি।
আপনি আমায় গলা টি*পে মে*রে ফেলুন।
অথবা দড়ি দিন।ফাঁ*সি দিয়ে ম*রি আমি।
এ জীবনের কোনো আর মূল্য নেই আমার।”

চাচিও কাঁদছে আমার দুঃখে।কোনো জবাব দিতে পারেনা সে।
রাত দুটো অব্দি থাকে সে।এরপর নাতনির জন্য চলে যায়।মেয়েটা ঘরে একা ছিল।
সারাটারাত নির্ঘুম যায় আমার।থেমে থেমে কেঁদে উঠি।
সারা শরীরে অজস্র যন্ত্রণা।
মেয়েটা খাওয়ার জন্য কাঁদছে।আমার কোনো অনুভূতি নেই এতেও।
ঝিম মেরে বসে থাকি।মেয়েটা কাঁদতে কাঁদতে আপনাতেই ঘুমিয়ে যায়।

ধীরে ধীরে উঠে বসি।শিত করছে ভীষণ।অথচ তখন গরমকাল।
বিছানা থেকে নামি আস্তে আস্তে।পা টা মাটিতে ফেলতেই মনে হলো বরফে পা দিলাম।ঠান্ডা মাটি।মৃদু কেঁপে উঠি আমি।

পা ফেলার শক্তি অব্দি নেই।তবুও কোনো মতে এটা ওটা ধরে ধরে বাইরে আসি।দরজাটা চাপিয়ে দিয়ে খোলা আকাশের দিকে তাকাই।

আজ আকাশে অজস্র তারার মেলা।
বিরাট এক সূর্য দেখা যাচ্ছে।ঐ আকাশের দিকে তাকাই।
চোখে শত অভিযোগ।

শান্ত গলায় বলি,”পৃথিবী কতো বড়ো।কতো সুন্দর,রঙিন।কিন্তু আমার এই জীবনটা কেন এতো বেরঙিন?
এতো দুঃখ-দূর্দশা নিয়ে বাঁচা যায়?
পৃথিবীর সব কষ্ট যেন আমায় এসে ধরে।সকল বিপদ যেন আমার চারপাশেই ঘোরে।
শৈশব গিয়েছে দুঃখে দুঃখে।কিশোর ও গেল তাই।
বিয়ে হলো।সংসার হলো।সুখ হলোনা।
সুখ আসে জীবনে বাতাস হয়ে।গায়ে লাগিয়ে চলে যায়।যেই দুঃখ সেটাই রয়ে যায়।
দিন শেষে কখনোই স্থায়ী হয় না কিছু।
মোদ্দাকথা দুঃখ আমার চিরসঙ্গি।
ইদানিং ভীষণ ক্লান্ত আমি। স্বার্থপর এই পৃথিবীতে মানুষ হয়ে জন্ম নিলাম কেন?
জন্ম নিলেও কেন বড়ো ঘরের শিক্ষিত,সুন্দরী হয়ে এলাম না?
পাখি হয়ে কেন জন্ম নিলাম না আমি?
ছোট্ট একটা পাখি হতাম।নীল আকাশে উড়ে বেড়াতাম।অথবা হতাম একটা সুন্দর প্রজাপতি।
ফুলে ফুলে উড়ে বেড়াতাম।
দুনিয়ার এই বিষাক্ত পরিবেশ আমায় ছুতে পারতো না।
আমি মুক্ত,স্বাধীন হয়ে থাকতাম।মন চাইলে দূরে কোথাও চলে যেতাম।কোনো পিছুটান থাকতোনা।
কোনো চিন্তা আমায় গ্রাস করতে পারতোনা।

বসে পড়ি মাটিতে।
দু-হাতে মাটি মাখি।ছুয়ে দেই।
শুয়ে পড়ি খালি মাটিতেই।সোজা হই।আকাশ পানে তাকাই।খোলা চুল আমার।
চারপাশে ছিটিয়ে পড়েছে।
মুচকি মুচকি হাসি আমি।চোখ বুজি।লম্বা শ্বাস নেই।বাতাসে মিষ্টি ফুলের সুঘ্রাণ ভেসে আসে।
সম্ভবত রজনীগন্ধার ঘ্রাণ এটা।

আচ্ছা আমার কী ম*রে যাওয়া উচিৎ?
বেঁচে থেকে কোনো লাভ নেই।জীবনের কোনো ছন্দ নেই।কোন আশায়,কোন লক্ষ‍্যে বাঁচবো আমি?
প্রতিটি মানুষের বেঁচে থাকার একটা ছন্দ থাকে।
আমার ছন্দ হারিয়ে গেছে অতলে, গভীরে।

উঠে বসি।হাটুতে মাথা মুড়ে শুয়ে থাকি।কতো বিষাক্ত স্মৃতি ভাসে চোখে।
কতো অবহেলা,কতো অনাচার এই আমাকে ঘিরে।
আচ্ছা আমি চলে গেলেই কী সব শান্ত হবে?
পৃথিবী মুক্তি পাবে?
হয়তো তাই!

উঠে দাড়াই।
ধীরে ধীরে হেটে আম গাছের বাগানে যাই।
অসংখ্য জোঁনাকি পোকা আমায় ঘিরে ধরে।

একটা বড়ো গাছের সামনে দাড়াই।মাথা উচিয়ে গাছটা দেখি সম্পূর্ণ।এইতো আমার শান্তি।আমার মুক্তির পথ আমার সামনে দাড়িয়ে আছে।

একটা ডাল পাই নিচু।গা থেকে ওরনা খুলে সেই ডালে ছুড়ে দেই।
চারপাশে তাকিয়ে একটা উচু মাটির ঢিবি পাই।সেখানে দাড়িয়ে ওরনাটি প্রস্তুত করি।

চোখ বন্ধ করে লম্বা শ্বাস নেই।যেইনা গলায় দিতে যাব ওমনি ছেলের ডাক ভেসে আসে।
ছেলে ‘আম্মু আম্মু’ বলে কাঁদছে আর ডাকছে।এদিকেই আসছে।
দ্রুত ওরনা খুলি আমি।বাড়ির দিকে দৌড় লাগাই।ছেলে আমায় জড়িয়ে ধরে বলে,”কোথাও যেও না আম্মু।বাবা চলে গেছে,তুমি যেও না।আমি ভয় পাই।”

মায়া হয় বড্ড।
এ কী করতে যাচ্ছিলাম আমি?
বাচ্চাদুটোর কথা একবারো ভাবলাম না?
আমার কিছু হলে ওদের কী হবে?
আমিও না আকাশের মতো স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছিলাম।নিজের চিন্তা করছিলাম শুধু।

ঘরে আসি ছেলে নিয়ে।শুয়ে পড়ি বিছানায়।
প্রচন্ড ক্লান্ত থাকায় চোখটা লেগে আসে।
স্বপ্নে দেখি এক ফুলের বাগানে বসে আছি আমি।পরণে কী সুন্দর পোষাক।চারপাশে কতো পাখি,প্রজাপতি ও ফরিং।
আমি হাসছি মনের আনন্দে।
সবকিছু নতুন লাগছে।
আকাশ থেকে ফুলের বৃষ্টি হচ্ছে।আমি ঘুরছি।
এক গায়েবি ,’নতুন জীবনে স্বাগতম।শুরু হচ্ছে তোমার জীবনের এক নতুন অধ‍্যায়।সুখ বিলাসে প্রস্তুত হও তন্নি।’

চলবে।