#মম_হৃদয়_বিহারিনী
#ঐশী_রানী_রক্তিমা
২৫.
“আমাকে একটু একা থাকতে দাও,নির্বানী।দয়া করে!”
রাইয়ের কথা শুনে আমি দরজা থেকে সরে আসলাম।পরক্ষণেই সামনে হাঁটা ধরলাম।রাই কখনো এমন স্বরে কথা বলেনি আমার সাথে।তাই আজ তার কথা এমন কথাতে আমি মনে মনে একটু কষ্ট পেলাম বৈকি।সেখানে আর না দাঁড়িয়ে আমি দ্রুত নিজের কক্ষে চলে আসলাম।ধ্রুব আমাকে ধুপধাপভাবে কক্ষে প্রবেশ করতে দেখে ফিরে তাকালেন।প্রশ্ন করলেন,
“রাই দির সাথে কথা হয়েছিলো?
আমি চোখ তুলে তাকালাম ওনার দিকে।কিছু না বলে দুপাশে মাথা নাড়লাম।ধ্রুব এগিয়ে এসে গালে হাত রেখে বললেন,
” কিছু বলেছে তোমায়? এমন দেখাচ্ছে কেন?”
আমি ফের মাথা নেড়ে বোঝালাম কিছু বলেনি।সাথে সাথে একটা মেকি হাসি টেনে নিলাম মুখে।ধ্রুব তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে পর্যবেক্ষণ করলেন আমাকে।আমি দৃষ্টি নত করে নিলাম।বললাম,
“রাইদির নাকি মাথা ব্যথা করছে। তাই বললেন একা থাকতে চান।”
আমাদের কথার মাঝেই দরজার ঠকঠক আওয়াজ হলো।দরজার ওপাশ থেকে একটা পুরুষালি কন্ঠ ভেসে আসলো,
“ভেতরে আসতে পারি?”
ধ্রুব আসার অনুমতি দিলে ভেতরে প্রবেশ করে পূর্ণ।আমার দিকে তাকিয়ে দুহাত জড়ো করে নমস্কার জানায়।প্রতিত্তোরে আমিও হাত জড়ো করে নমস্কার জানাই তাকে।ধ্রুবকে নমস্কার জানানোর পর পূর্ণ বলে উঠে,
“দাদা আপনার সাথে কিছু কথা ছিলো।”
.
দুপুরের পর এবার অপরাহ্নের শুরু।রাই দুপুরের খাবারটাও নিজের কক্ষেই খেয়েছে।আমি পুনরায় সিদ্ধান্ত নিলাম রাইয়ের কক্ষে যাওয়ার।মাথার উম্মুক্ত কেশ বেনি করে নিয়ে আমি দর্পনের সামনে থেকে উঠে দাড়ালাম।ধ্রুব সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে বাইরে গিয়েছিলেন।এখনো ফেরেন নি।আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কক্ষে থেকে বেরিয়ে পরলাম।দোতলায় নামতেই একজন পরিচারিকা বলে উঠলেন,
“ধ্রুব বাবু বলে গেছেন তিনি না আসা অবধি আপনি যেন কক্ষেই থাকেন।”
আমি আবার দীর্ঘশ্বাস ফেললাম।এখনি ওনার এত নিষেধাজ্ঞা!আমি পরিচারিকার উদ্দেশ্যে মৃদুস্বরে বলে উঠলাম,
“আমি একটু রাইদির সাথে দেখা করতে যাচ্ছি।এ ব্যাপারে উনি কিছুই বলবেন না।”
আমি কথা শেষ করে সেই দোতলার বারান্দায় হাঁটা শুরু করতে যাবো ওমনি পরিচারিকা বলে উঠলেন,
“রাই দিদি মনি তো কক্ষে নেই।”
আমি ভ্রু কুঁচকে পেছন ফিরে তাকালাম।জিজ্ঞেস করলাম,
“কক্ষে নেই মানে?”
“একটু আগে ছাদে গিয়েছেন।”
আমি স্বস্তির শ্বাস ফেলে বললাম,
“তাই বলো!”
কথাটা পরে আমি ছাদের উদ্দেশ্যে হাঁটা চালু করলাম।অন্যসময় যদিও বেশ দ্রুতটার সাথে আমি চলাচল করি তবে আজ বেশ ধীরে ধীরে সাবধানে পদক্ষেপ ফেলছিলাম।ছাঁদে পৌঁছেই সাদা শাড়ি পরিহিতা রাই অক্ষিকোটরে ভেসে উঠলো আমার।আমি ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলাম তার দিকে।আমার নুপুরের আওয়াজ আমার উপস্থিতি জানান দিলো।রাই খানিক পেছন ফিরে তাকালো।মুখশ্রী মলিন তবে হাসি টেনে নিলো সে।আমি তার পাশাপাশি একটু দুরত্বে দাড়ালাম।রাই আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
“সকালে জন্য আমি দুঃখিত নির্বানী।ক্ষমা করো আমায়।তুমি কষ্ট পাওনি তো?”
আমি বললাম,
“পাইনি।কিন্তু আমার কেন মনে হচ্ছে তুমি আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছো?”
তীক্ষ্ণ স্বরে প্রশ্ন করে উঠলাম আমি।রাই বলে উঠলো,
“কারণ তুমি এটা ভেবে নিচ্ছো।”
“উঁহু!কারণ এটাই সত্য।”
রাই কিছু বললো না প্রতিত্তোরে।আমি এবার প্রশ্ন ছুঁড়লাম,
“সমাজের নিয়ম অগ্রাহ্য করে তুমি যে জীবনযাপন ত্যাগ করেছো,তা পুনরায় গ্রহণ করার মানে কি রাইদি?”
আমার প্রশ্নে রাই গম্ভীর চোখে তাকালো।ওষ্ঠকোণে সদার ন্যায় থাকা হাসির রেশ লুপ্ত।রাই কিছুক্ষণ আমার প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো।তার দৃষ্টি অনুসরণ করে আমিও সম্মুখ পানে তাকালাম।সূর্য অস্ত যেতে কয়েক মুহুর্ত বাকি।পরিবেশ এখন শান্ত,নির্মল।মৃদুভাবে বাতাস বইছে।ছুঁয়ে চলে যাচ্ছে কায়া।সেই বাতাসেই আমার মাথায় তুলে রাখা ঘোমটা গড়িয়ে পড়লো শব্দহীন।সেটা টের পেয়েও পুনরায় মাথায় তুলে দেওয়ার তাগাদা অনুভব করলাম না আমি।তেজ কমে নির্মল হয়ে আসা সূর্যের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে এবার রাইয়ের দিকে তাকালাম আমি।আজ ব্যতিক্রম মাথায় ঘোমটা তুলে রাখা। উম্মুক্ত দীর্ঘ কেশ যদিও দৃশ্যমান।সেটা সুক্ষ্মভাবে উড়ছে পবনের তোড়ে।সময় কাটলো মিনিটেরও বেশি।আমি রাইয়ের উত্তরের আশা ছেড়ে দিলাম।কিন্তুু তখনই আমাকে আশ্চর্য করে সে বলে উঠলো,
“মাঝে মাঝে জীবন এসে এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়ায় যেই রীতিনীতির বিরুদ্ধে আমরা সংগ্রাম করি তাকেই আপন করে নিতে হয়।”
“এর তাৎপর্য কী?”
আমার কথার প্রতিত্তোরে মলিন হেসে রাই বলে উঠলো,
“তোমার কি মনে হয় নির্বানী?যে আমি সকলের তীর্যক দৃষ্টি,কটু কথা সহ্য করে বৈধব্য ত্যাগ করেছিলাম,সেই আমার পুনরায় তা স্বীকার করার কারণটা সামান্য?”
আমি রাইয়ের ব্যথাতুর চোখে তাকালাম।মেয়েটা চাহনি বদলালো তৎক্ষনাৎ।আমি দৃষ্টি নত করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম।ফের রাইয়ের দিকে তাকিয়ে দৃঢ় কন্ঠে বলে উঠলাম,
“সেই গুরুতর কারনটা কি পূর্ণ অর্থাৎ মাস্টার মশাই?”
রাই চমকে তাকালো আমার দিকে।আমার সন্দেহ এবার বিশ্বাসে পরিনত হলো।রাইয়ের এমন আচরণ আর পূর্ণের উদাসীনতাতে কারো ভ্রূক্ষেপ না হলেও আমার মনে সন্দেহ জেগেছিলো।ব্যপারটা কি এমন যে পূর্ণ রাইকে পছন্দ করে আর রাই করে না।তাই নিজের বিধবা হওয়াটা প্রমাণ করে পূর্ণকে দুরে সরাতে চাইছে সে।কিন্তু রাইয়ের চোখ যেন ভিন্ন বাক্য বলে উঠে।
রাইয়ের চুপ করে থাকা দেখে আমি ফের বলে উঠলাম,
“আমি কি উত্তর হ্যা ধরে নিবো?”
“না,একদমই না।এটা শুধুই তোমার ভুল ধারণা।”
আমি রাইয়ের চোখে চোখ রাখলাম।বললাম,
“কিন্তু তোমার চোখ তো ভিন্ন কথা বলছে রাই।আর আমাদের চোখ কখনো মিথ্যে বলে না।”
রাই যেন হার মানলো আমার কথার পরে।সম্মুখে তাকিয়ে করুনভাবে গাঢ় শ্বাস ফেললো সে।বললো,
“হ্যা কারণটা উনিই।”
“উনি ভালোবাসে তোমায়?”
রাই তাকালো না আমার দিকে তবে তাকে ঢোক গিলতে দেখলাম আমি।বাঁকা হাসলাম আমি।রাইয়ের খানিক নিকটে এসে দাঁড়ালাম।রাইয়ের থমথমে মুখশ্রীতে বারবার ঢোক গিলছে।এতটা বিচলিত হতে তাকে কখনোই দেখিনি আমি।আমি তার কাঁধে হাত রেখে বলে উঠলাম,
“তুমি জানো সে তোমাকে ভালোবাসে।আর আমি তোমাকে অনুরোধ করেছিলাম কেউ যদি তোমাকে ভালোবেসে ভালোরাখতে চায় তাকে একটা সুযোগ দিতে।”
“আমার জীবনে এমনিতেই অনেকের ঘৃণা সহ্য করেছি আমি।যদি আমি ওকে সুযোগ দেই তবে সেই ব্যাপারটা কি সমাজ ভালো চোখে দেখবে?একজন বিপত্নীক পুরুষের দ্বিতীয়বার বিয়ে করার অনুমতি দেয় সমাজ কিন্তু একজন বিধবা নারী যদি একটা পুরুষের সাথে দাড়িয়ে মন খুলে হাসেও তবুও সেটাকে নোংরামি বলে আখ্যায়িত করা হয়।”
কথাগুলো বলতে বলতে রাইয়ের নেত্রদ্বয় অশ্রুতে ছলছল করে উঠলো।আমি ওর হাতটা নিজের মুঠোয় নিলাম।এই স্নিগ্ধময়ী রমনী একটুকরো হাসির আড়ালে পাহাড় সমান কষ্ট লুকিয়ে রাখে।
রাই ভেজা ঢোক গিলে বলে উঠে,
“পূর্ণ কে জানো নির্বানী?”
আমি কিছু না বলে রাইয়ের কথার অপেক্ষায়।রাই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,
“আমার বাল্যকালের খেলার সঙ্গী!”
আমি ভ্রু কুঁচকে তাকালাম।রাই বলতে লাগলো,
“বাবা মারা যাওয়ার আগে আমার জীবনটাও অন্যরকম ছিল।অন্যসব ছোট মেয়েদের মতো।বাড়িতে সারাদিন ছুটে বেড়ানো,খেলাধুলায় মেতে থাকাই ছিলো আমার কাজ।কিন্তু বাড়িতে আমার খেলার সঙ্গী কেউ ছিলো না।একদিন বাবার এক বন্ধুর ছেলে আসলো বাড়িতে।মাথায় ঈষৎ ঝাঁকড়া চুল,ফর্সা চেহারা।আমার থেকে দুবছরের বড় ছেলেটা দেখতে বেশ হাবাগোবা।আমি তাকে ডেকে নিয়ে গেলাম খেলার জন্য।ছেলেটা ছিল বেশ লাজুক।আমার সাথে খেলতে চাইলো না।চলে গেল সেদিন তার বাবার সাথে।কয়েকদিন পর সেই ছেলেটাই আবার আসলো আমাদের বাড়িতে আমি তখন আমার পুতুলদের বিয়ে দিচ্ছি।সেদিন জানলাম ছেলেটার নাম পূর্ণ।
এভাবে কয়েকদিন পরে পরেই সে আসতো আমাদের বাড়িতে। ওর সাথে ভালো বন্ধুত্ব হলো আমার।সম্মোধন হলো সবচেয়ে কাছের ডাকে,তুই!
কিন্তু একদিন হঠাৎ বাবা আর ঘুম থেকে উঠলেন না।মা যেদিন কি যে কান্না করলেন।আমিও কাঁদলাম।বাবা কেন উঠছে না,আর মা বা কেন এমন করে কাঁদছে ঠিকমতো বোধগম্যই হলো না।সেদিন পূর্ণও এলো।আমি ফুঁপিয়ে কাঁদছিলাম এককোণে।মা ছিলো না আমাকে সামলানোর জন্য।পূর্ণ সেদিন আমার নিকটে এসে বসলো।একটা ভাঁজ করা টাকার নোট এগিয়ে দিলো আমার দিকে।বললো,
‘একদম কাঁদিস না রাই।তোকে খুব বাজে দেখায় কাঁদলে।নে ধর এই টাকাটা দিয়ে কিছু কিনে খাস।তবুও কাঁদিস না তুই।’
কিন্তু আমার কান্না থামলো না।পূর্ণ রেগে আমার নাক টিপে দিলো।আমি আরো কেঁদে উঠলাম।ওর বাবা এসে নিয়ে গেল ওকে।ও যেতে যেতে বলে উঠলো,
‘তুই কান্না না থামালে আমাকে করা তোর অনুরোধ মানবো না কিন্তু আমি।’
এতটুকু বলে থেমে গেল রাই।রাই বললো না সে কি অনুরোধ করেছিলো।আমিও প্রশ্ন করলাম না।তবে আমি আরো কিছুটা শোনার জন্য তৃষ্ণার্থ ছিলাম।রাই দম নিয়ে বললো,
“যখন প্রথম প্রথম পূর্ণ এ বাড়িতে আসলো আমি চিনিনি তাকে।কিন্তু সেদিন টাকা ফেরত দেওয়ার সময় তার ভেতরে দেওয়া শুকনো বকুল আমাকে বলে দিলো তার পরিচয়।অবশ্য এটা তার পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত ছিলো।”
আমি শুনে অভিভূত হলাম।বাল্যকালের বন্ধু রাইয়ের খোঁজে এ বাড়িতে এসে গেছে।অথচ রাই কি করছে?
“উনি তোমাকে সত্যিই ভালোবাসে রাইদি।ভেবে দেখো!নয়ত উনি তোমাকে খুঁজতে এবাড়িতে আসতেন না।উনি তোমাকে সত্যিই ভালোবাসে।”
বাল্যকালের সঙ্গী রাইকে পাওয়ার জন্য এখানে এসে উপস্থিত হয়েছে জেনে আমি মনে মনে আশ্চর্য হচ্ছিলাম।সাথে অন্যরকম এক অনুভূতিও হচ্ছিলো।আমি প্রাণপণে চাইছিলাম রাই যেন পূর্ণর প্রতি তার প্রেম স্বীকার করে নেয়।লোকটা অবশ্যই তাকে ভালো রাখবে।
আমি বলে উঠলাম,
“তুমি কিসের ভয় পাচ্ছো রাইদি?উনি তোমাকে সত্যি ভালোবাসে।আর আমি এটাও শিউর যে তুমি তাকে ভালো..”
“বাসি না।”
“মিথ্যে বলছো!”
করুন চোখে তাকালো রাই।বললো,
“আমি চাই না সমাজ দ্বিতীয়বার আমার চরিত্রে আঙুল তুলুক।”
“যে সমাজ সত্যতা না জেনে দোষারোপ করে তুমি সেই সমাজের পরোয়া কেন করছো?”
রাই চিন্তিতভাবে ঠোঁট কামড়ে ধরলো।আমি ওর কাঁধে হাত রেখে উঠলাম,
“তুমি তোমার ভাইকে চেনো তো?উনি তোমার চরিত্রে মিথ্যে অপবাদ হানতে দেবে না।”
“আমার ভয় আমাকে নিয়ে না নির্বানী।আমার ভয় পূর্ণকে নিয়ে।লোক ওনার দিকে আঙুল তুলবে।ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিধবা বিবাহের প্রচলন করলেও এখনো সমাজ তাকে স্বীকৃতি দেয়নি ভালোভাবে।লোকের তীর্যক দৃষ্টি শুধু আমার উপর না পূর্ণর উপরেও পরবে।আর আমি চাই না কেউ আমার ভালোবাসার দিকে অহেতুক অপবাদ…”
বলতে বলতে থেমে গেল রাই।কি বলেছে অনুধাবন করতেই আড়চোখে আমার দিকে তাকালো সে।আমার ওষ্ঠজুড়ে তখন হাসির রেশ।
রাই আরো চমকে উঠলো যখন পুরুষালি গলা ছাড়ার আওয়াজ কানে আসলো।চমকে পেছন ফিরে তাকালো রাই।মাথার ঘোমটা পরে গেল তাতে।আমাদের পেছনে স্বয়ং পূর্ণ দাড়িয়ে।উনি আমার দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞতা স্বরুপ হাসি উপহার দিলেন।আমি রাইয়ের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলাম,
“আমাড অনুরোধটা রাখো।তোমার এখনো সুখভোগ বাকি। অনেক তো দুঃখ সয়েছো।আরেকটু দুঃখ না হয় সইলে।যাকে ভালোবাসো তাকে আপন করে নেওয়ার সাহস দেখাও।অনুরোধ করছি তোমায়।”
এতটুকু বলে আমি চলে আসলাম ছাদ থেকে।একবার পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখলাম রাই আমার দিকে একবার অবিশ্বাস্য চোখে চাইছে তো আরেকবার পূর্ণের দিকে।
আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে এলাম।
রাই পূর্ণের দিকে খানিক রাগ নিয়ে তাকালো এবার।রুষ্টস্বরে বলে উঠলো,
“জানেন না অন্যের কথা লুকিয়ে শুনতে নেই।”
পূর্ণ কিছু বললো না।তার ঠোঁট মিটিমিটি হাসির রেশ।রাই সেটা লক্ষ্য করে চলে আসতে চাইলে পথ আগলে দাঁড়ালো পূর্ণ।খানিক নিকটে এসে বলে উঠলো,
“তুই একবার বলেছিলি না ‘বড় হয়ে আমাকে বিয়ে করবি পূর্ণ?’তার উত্তর আজকে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আমি।”
রাই ঢোক গিলে তাকালো পূর্ণ দিকে।কোন ছোটবেলা খেলার ছলে একথা পূর্ণকে বলেছিলো সে।এটা এখনো পূর্ণ মনে রেখেছে।আর আপনি থেকে তাকে সোজা তুই সম্মোধন করছে!
পূর্ণ রাইয়ের হাত দিকে হাত বাড়াতে চেয়েও বাড়ালো না।বললো,
“ভালোই করেছিস এমন বেরঙিন সেজে।এবার তোকে নাহয় আমিই রঙিন করে তুলবো।আমি তোকে বিয়ে করবো রাই।শুধু তুই একবার হ্যা বল।শুধু একবার!”
চলবে….