শ্যামাবতী প্রেয়সী পর্ব-১২

0
32

#শ্যামাবতী_প্রেয়সী
#পর্ব ১২
#জেসমিন_জেমি

এহতিশামের পিছুপিছু রুমে গিয়ে দাঁড়ালো পরী।এহতিশাম রুমে ঢুকে গায়ের শার্ট খুলতে খুলতে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো পর পর শার্ট খুলে বিছানায় ছুঁড়লো। পরী চোখ বড় বড় করে তাকালো। কি অসভ্য এই সাদা বিলাই পরীর সামনে এভাবে শার্ট খুলছে লোকটা সব লাজলজ্জা পানির সাথে গুলে খেয়েছে নাকি? পরী সাথে সাথে ঘুরে দাঁড়ালো। এহতিশাম আয়নায় অন্যপাঁশ ফেরা পরীকে দেখে ভ্রু কুচকালো বাঁকা হেঁসে দু পা এগিয়ে এসে পরীর সামনে দাঁড়ালো। পরী অপ্রস্তুত হয়ে থতমত খেয়ে বসলো এহতিশাম ভ্রু নাড়িয়ে বললো,

– এ্যনি প্রবলেম?

পরী চিবুক গিলে তুতলানোকন্ঠে বললো,
আপনি এভাবে ,,,

এহতিশাম ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো
– তো? বউয়ের সামনেই তো অন্য কেউ না তো,,,

পরী অবিশ্বাস্য চোখে এহতিশামের দিকে তাকালো এই কি সেই লোক? পরী কি ভূল দেখছে? এহতিশাম পরীর অবিশ্বাস্য নজরে তাকানো দেখে বাঁকা হাসলো। পরীর ফুলোফুলো গাল দুটো লাল হয়ে উঠেছে। গোলগোল চোখ দুটো বার বার ঝাপটে এহতিশামের দিকেই তাকাচ্ছে। এহতিশাম দু পা এগিয়ে পরীর একদম কাছে এসে দাঁড়ালো। পরীর চোখ পড়লো সামনে দাড়ানো পুরুষটার ফর্সা উন্মুক্ত সুঠাম বুকের মাঝখানটায় সাথে সাথে কেঁপে উঠলো মেয়েটা , গলা শুকিয়ে উঠলো চিবুক গিলে মুখ ঘুরালো অন্যদিকে। এহতিশাম একহাতে জড়িয়ে নিলো পরীর কোমর দুজনের মাঝের বিন্দুপরিমান দূরত্ব রইলো না। কোমরে পুরুষালি হাতের স্পর্শে সবার্ঙ্গ মৃদু কেপে উঠলো পরীর। একপ্রকার হাসফাস করতে লাগলো। এহতিশাম এবার পরীর গলায় মুখ গুঁজলো। এইবার পরীর জান যায় যায় অবস্থা। ছোট খাটো দেহের পরী মিউয়ে গেলো। এহতিশাম পরীর অবস্থা দেখে বাঁকা হেসে বললো,
– স্বামীর সামান্য স্পর্শেই এমন অবস্থা ?

পরীর কান দুটো ঝা ঝা করে উঠলো। ঠোঁট কামড়ে ধরলো দুহাতে ধাক্কা দিলো এহতিশামকে এ লোক কি পরীকে মারা প্লান করেছে নাকি? আজব তো?

তখনি দরজায় শব্দ করলো আলিশা এহতিশাম ফিসফিসিয়ে বললো,
মিসেস আয়াশ এটুকুতেই এমন হাল হলে চলবে?

পরী তড়িঘড়ি করে সরে গেলো এহতিশাম ঠোট কামড়ে হেসে ওয়াশরুমে ঢুকলো । পরী লম্বা করে শ্বাস নিলো অপাঁশ থেকে আলিশা বললো,
পরী ভাবি, এহতিশাম ভাই খেতে আসুন।

পরী দরজা খোলে আলিশার সাথে নিচে চলে গেলো।

——-

মেহতাব থমথমে মুখে ল্যাবটব নিয়ে বসে আছে।এখানে বসে অফিসের কাজ ধরিয়ে দিয়েছে এহতিশাম এটা বলে নতুন নতুন বিয়ে করেছি এখন পুরোটা সময় বউয়ের জন্য। মেহতাব বুঝে পায় না এমন একটা ছেলে কি করে বস হতে পারে? মেহতাব সবগুলো মেইল চেক করে এহতিশামকে টেক্সট পাঠালো,
বস অল ওকে, কাইন্ডলি মেইলবক্স চেক করবেন।

সাথে সাথে মেসেজ এলো,
ওকে।

মেহতাব সাথে কল করলো এহতিশামের নাম্বারে এহতিশাম টিশার্ট গােয়ে জড়াতে জড়াতে ফোন রিসিভ করে বললো,
এ্যনি প্রবলেম মিস্টার শিকদার?

মেহতাব ভ্রু কুচকালো, দাতে দাতে পিষে বললো,
শালা বসগিরি বের করবো দেখা হোক।

এহতিশাম ঠোঁট চেপে হাসলো, থমথমেকন্ঠে বললো,
বিহেব ইউর সেল্ফ মিস্টার সিকদার। নাও আ’ম ইউর বস।

মেহতাবের ইচ্ছে করছে এহতিশামকে চাপড়ে গাল লাল করে দিতে কিন্তু এই মুহুর্তে তা সম্ভব না। মেহতাব থমথমে কন্ঠে বললো,
– স্যরি বস৷

এহতিশাম এবার বললো,
এ্যনি প্রবলেম? কিছু বলবি?

মেহতাব – বস আপনার ফ্লাইটের যাবতীয় সব রেডি আপনি চাইলে,,

এহতিশাম মাঝ পথে থামিয়ে দিলো মেহতাবকে, বললো,
এতো ফর্মাল হওয়ার প্রয়োজন নেই।

মেহতাবে এই মুহুর্তে ইচ্ছে করছে মোবাইলেই এহতিশামকে চড় বসানোর এই সয়তান ছেলে এমন হুটহাট ওকে দ্বিধায় ফেলে কখনো বস, কখনো বন্ধু ইত্যাদি ইত্যাদি। কোন দুঃখে যে বসের সাথে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয়েছিলো কে জানে। এহতিশাম মেহতাবকে জ্বালিয়ে বাঁকা হাসলো। এহতিশাম বললো,
হুম তারপর বল,,

মেহতাব থমথমেকন্ঠে বললো,
পরীর ভিসা প্রসেসিং এ সময় লাগবে এহতিশাম।

কতদিন?

এহতিশামের কন্ঠস্বর থমথমে মেহতাব বললো,
– দুমাস তার আগেও হতে পারে ।

এহতিশাম দীর্ঘশ্বাস ফেলল, মেহতাব ডাকলো,
এহতিশাম তোর ফ্লাইট কাল সন্ধ্যায়।

এহতিশাম ‘হুম’ বলে কল কাটলো। মেহতাব দীর্ঘশ্বাস ফেললো শত চেষ্টা করেও পরীর ভিসার কাজ সম্পন্ন হলো না পাসপোর্ট আগে থেকেই ছিলো তবে ভিসা প্রসেসিং হতে সময় লাগবেে । পরীর ভিসা পেতে দুমাস অথবা তার বেশি সময় ও লাগতে পারে অথচ এহতিশামকে ফিরতে হবে কাল সন্ধ্যায়। নিজের অফিস, নিজের পরিবার ফেলে বাংলাদেশে ছুটে এসেছে এহতিশাম শুধুমাত্র পরীর জন্য।

চলবে,,,,,