যে থাকে আঁখি পল্লবে পর্ব-০৩

0
233

#যে_থাকে_আঁখি_পল্লবে
#পর্ব-৩

সেঁজুতি কেয়াদের কামরাটা দেখলো। ওর কামরার মতো সাজানো গোছান না হলেও একেবারে খারাপ না। একটা পড়ার টেবিল দু’টো চেয়ার দু’টো আলমারি আর বড়সড় একটা খাট। বিছানাটা বেশ বড় তিনজন একসাথে শুতে খুব একটা সমস্যা হবে না। কিন্তু সমস্যা আসলে সেঁজুতির। সবসময় একা শুয়ে অভ্যস্ত বলে কারো সাথে বেড শেয়ার করতে পারে না। তাছাড়া একা থাকার অভ্যাস হয়ে গেছে। নীরব পরিবেশ না পেলে তার পড়ালেখা ঘুম কোনটাই হয় না। মন খারাপ করে শুয়ে পড়লো সেঁজুতি। নীলা আর কেয়া উৎসুক দৃষ্টিতে সেঁজুতিকে দেখলো। তাদের দুই বোনের খুব মজা লাগছে সেঁজুতি কে দেখে। সেঁজুতি সবার থেকে আলাদা। বোনদের মধ্যে একটু কম সুন্দর হলেও পড়ালেখায় ভালো। একা আর নিজের মতো থেকে অভ্যস্ত। কারো সাথে পাছে থাকে না তবে অন্যায় দেখলে ছাড়ে না। মুখের উপর ঠুসঠাস কথা বলে দেয়। অমন স্বভাবের কারনে সবাই ওকে মুডি ভাবে। সেই সেঁজুতির এখন ওদের সাথে থাকতে হবে ভেবে দুই বোন আনন্দে আটখানা। ওরা দু’জন দু’জনকে খোঁচা দিলো, চোখের ইশারায় ভাব বিনিময় করলো। কেয়া মানা করার ভঙ্গি করতেই নীলা মুখ ভেংচায়। সেঁজুতি পুরো দৃশ্য দেখলো কিন্তু রা করলোনা। ও জানে দুইজন মিলে এখন সুযোগ পেয়ে ওকে হেনস্তা করতে চাইছে। ও চোখ বুঁজে ঘুমের ভান করতেই কেয়া ডাকলো-“বুবু, তাই বইলা তুমি এতো সহজে নিজের ঘর ছাইড়া দিলা?”
সেঁজুতি ঠোঁট কামড়ে ধরলো। ঠিক এই ভয়টাই এতোক্ষণ পাচ্ছিলো। কিছু বলবে না বলবে না ভেবেও অবশেষে মুখ খুললো-“ওই গুন্ডা কুংফু পান্ডারে দেখছিস তোরা?”
“দেখছি তো।” দুই বোন সমস্বরে চিৎকার দিলো।
“আমি রুম না ছাড়লে যদি আব্বাকে কিছু কয় তখন?”
“তুমি ভয় পাইছো বুবু? ওই বেডারে ভয় পাইছো তুমি?”
নীলা অবাক হলো। সেঁজুতি অসস্তি নিয়ে নজর লুকিয়ে মাথা নাড়ে-“ওই বেডারে ভয় পাই নাই। ভয় আমার আব্বাকে নিয়া। তার লগে উল্টা পাল্টা কিছু করলে আমি সইতে পারুম না।”
কেয়া ফিক করে হাসলো-“বুবু, মিছা কতা কও কা? তুমি ভয় পাইছো বেডারে। যদি তোমারে তুইলা আছার দেয় এই ডরে তুমি তাড়াতাড়ি ঘর ছাড়ছো। এমনই হয় বুবু। ওই ঘর নিয়া তোমার বড়ই দেমাগ আছিল। এহন দেখো, আমাগো ঘরে থাকা লাগতেছে তোমার।”
সেঁজুতি মেজাজ খারাপ করে চেচিয়ে উঠলো-“কি দেমাগ দেখাইছি আমি? তোগো বইতে দেই নাই? আমার ঘরে তোরা থাকোস নাই? আমি হিংসা করছি কোনদিন? এমুন কতা কইলি কেমনে?”
দুই বোন মুখ কাচুমাচু করলো। সেঁজুতির রাগকে তারা বড্ড ভয় পায়। রেগে গেলো এই মেয়ে বাড়ি মাথায় তোলে। পরিস্থিতি সামলাতে নীলা মিনমিন করলো-“কেয়ার কথা বাদ দাও বুবু। ও সবসময় ওলটপালট বকে। রাগ কইরো না আর।”
সেঁজুতির মেজাজ তাতে ঠান্ডা হলো না মোটেও। বিক্ষিপ্ত মনে বসে রইলো চুপচাপ। কেয়াও হাল ছাড়লো না সেঁজুতির সাথে কথা বলতে-“বুবু, যাই কও না কেন বেডা কিন্তু স্মাট আছে। কাপড় চোপড় দেখছো? তারে পুরাই সাহেব সাহেব লাগতেছিল।”
সেঁজুতি এবার রাগত্ব নয়নে তাকালো-“পছন্দ হইছে তো? যা তাইলে বেডার লগে পেরেম কর।”
নীলা মুখ কুঁচকে বললো-“করা যায় খারাপ হইবো না বুবু।”
“তুই তো তাই কবি। পড়ালেখা তো তোর মগজে ঢুকে না। দিনরাইত খালি সাজোন গোজন। বড়আব্বাকে কমু তোরে যেন বিয়া দিয়া দেয়।”
সেঁজুতি কাটাকাটা স্বরে কথাগুলো বলতেই নীলা চুপসে গেলো-“আমার সাথে তোমার কিসের শত্রুতা বুবু? সবসময় এমুন কতা কও কা? যেই কাম আমি পারি না সেইডার খোঁটা দাও কা? পড়ালেখা ভালো লাগে না আমার তো আমি কি করুম? সবাই কি তোমার মতো বিদ্যান হইবো?”
সেঁজুতি জবাব না দিয়ে উঠে বারান্দায় এসে দাঁড়ালো। বুকের ভেতর জ্বালা করছে তার। এই জ্বালা কমবে কিভাবে? আনমনে সামনের দোতলায় দৃষ্টিপাত করলো। নিজের কামরাটা ভীষন মিস করছে। ওদের পুরো বাড়িতে আলো জ্বলছে। বাতি জ্বলছে তার রুমেও। ওই তো তার প্রিয় কামরাটা দেখা যাচ্ছে। আবছায়া ভাবে উইন্ডচাইমটাকে দুলতে দেখলো। চোখ বুঁজে সুরেলা আওয়াজ অনুভব করার চেষ্টা করে আবার তাকালো। তাকিয়ে থাকতে থাকতে ঠোঁটের কোনে হাসি চলে এলো সেঁজুতির। কুংফু পান্ডা কি সুস্থ আছে? গা চুলকাচ্ছে না তার? বেডা আছে কই এখন?

★★★

জাহাঙ্গীর ঘরে আসতেই খুকু তাকে ধরলো-“শুনছেন, একটা কথা কইতাম।”
“কও।” বিক্ষিপ্ত মেজাজে উত্তর দিলো জাহাঙ্গীর।
“ভাইজান উপরের দিকে বাড়ি বানায়া থাকবে এতে আপনার কি মত?”
জাহাঙ্গীর চকিতে চাইলো-“মানে? কি কইতে চাও ঝাইরা কাশো। মিনমিনা কথা পছন্দ না আমার।”
খুকু আমতা আমতা করে ঢোক গিললো-“আব্বা বলছিল ডানদিকের দোতলা বড়ভাইয়ের, বামদিকেরটা মেঝভাইয়ের আর মাঝেরটা আমাগো। এখন বড়ভাইয়ের টা আব্বা ওই পক্ষরে দিলে সেইটা কার দোষ? তাতে আমরা কেন কষ্ট করমু? তাছাড়া ধরেন আগে বড়ভাই ইস্কুল চালাইতো, মেঝভাই ইটের ভাটা দেখতো আর আপনে জমিজমা দেখতেন। এখন বড়ভাই এর ইস্কুলও আব্বা তাগো দিয়া গেছে। তাইলে হে এখন চলবে কেমনে? আর আমাগো বাড়িতে হেয় কেন বাড়ি করবো? আমাগো পোলাপাইনদের ভবিষ্যত নাই? এমনিতেই আপনের দালান একতলা তারপর এখন বড় ভাইজান থাকবে আমি কিছু বুঝতেছিনা কি হইতেছে? ভবিষ্যতে ভাগজোগ কেমনে হইবে?”
খুকুর কথায় জাহাঙ্গীরের কপালে চিন্তার ভাজ দেখা দিলো। সত্যিই তো, বাসাবাড়ি ভাগ হবে কিভাবে? বহু আগে তাদের বাবা তমিজউদদীন মুখে মুখে বলেছিল, ডানেরটা বড়ভাইয়ের, বামেরটা মেঝভাইয়ের আর এই নতুন একতলা তার। মেনে নিয়েছিল জাহাঙ্গীর। এবছরই ইটের ভাটার লাভ থেকে তার বাড়ির কাজ ধরার কথা ছিলো। এখন তো সব ভেস্তে গেলো। কিভাবে কি হবে এখন? খুকু এসে স্বামীর কাছাকাছি বসলো-“শোনেন, সবকিছু নতুন কইরা ভাগ হইলে হোক আপনে কিন্তু এই বাড়ির একক মালিকানা ছাড়বেন না। আমাগোর দুইটা পোলা একটা মাইয়া সম্পদ বেশি প্রয়োজন। তাছাড়া আব্বা সবসময় আপনেরে ঠকাইছে। জমিজাতি দেখাশোনা কইরা কতটাকা কামাইছেন? তাও তো আব্বা সব নিজে হিসাব নিতো।”
জাহাঙ্গীর বিরক্ত হলো-“উল্টা পাল্টা কইস নাতো। হিসাব বড়ভাই মেঝভাইও দিতো। তাছাড়া সংসার বড়ভাইই চালাইছে এতোদিন। আব্বা তারে ভরসা করতো দেইখাই সব দায়িত্ব তারেই দিছে।”
“স্কুলে কত সাহায্য আসতো বড়ভাই কয়টার হিসাব দিছে? সে বাড়ির কাজ ধরতে চায় টাকা পাবে কই ভাবছেন একবারও? তারে তো আপনেরা অন্ধের মতো বিশ্বাস করেন।”
খুকু স্বামীকে পাঠ পড়িয়ে যায়। যেভাবেই হোক এ বাড়িতে কোন অংশীদার উঠতে দেবে না সে। এটা তার একার বাড়ি হবে। এমনিতেই বউ হিসেবে দু আনা মুল্য তার। মুল্য সে চায়ও না। খালি এই সাধের বাড়িটা নিজের থাক। সে ফিসফিস করলো-“বড়ভাই একবার বাড়ি কইরে উঠে গেলে আর তারে নামানো যাইতো না। আপনে তার লগে কথা কন তাড়াতাড়ি। সে অন্য কোন খানে বাড়ি করুক। জমি তো কম নাই আব্বার।”
জাহাঙ্গীর অবাক হয়ে খুকুকে দেখলো-“কই বাড়ি করবো? আমরা তিনভাই এক সীমানায় থাকছি সারাজীবন। এখন বাড়ি করতে হইলে তো সীমানার বাইরে যাওয়া লাগবে। এইটা কেমন দেখাইবে? এলাকায় আমরা মান্যগন্য মানুষ। বড়ভাই স্কুলের হেডমাস্টার, তার একটা সন্মান আছে না? তাছাড়া আব্বা চেয়ারম্যান আছিল তার তিন পোলা আমরা। একসাথে মিলা মিশা থাকুম এইটাই স্বাভাবিক। যা খুশি তা কবি না কইলাম।”
ভয় পেলেও দমে গেলো না খুকু। সে নিজের কথায় অটল রইলো-“এতো কিছু জানি না আমি। যা খুশি করেন খালি এই বাড়ির কোন ভাগ হইতে দিয়েন না। নিজে শখ কইরা বাড়ি বানাইছেন এখন অন্য কাউরে এর ভাগ দিয়েন না। আমার লাইগা না করলেন অন্তত নিজের পোলা মাইরার লাইগা চিন্তা করেন।”
রাগতে যেয়েও রাগলো না জাহাঙ্গীর। খুকুর কথা ফেলে দেওয়ার মতো না তাই প্রতিবাদ করলো না। কিন্তু বড়ভাইকে মানা করবে কি করে? সে তো কাল থেকেই মিস্ত্রি লাগানোর কথা বললো। অন্যমনস্ক জাহাঙ্গীর রুম থেকে বেরুতে গিয়ে চমকে গেলো। মাজেদুর আর শ্যামলী দাঁড়িয়ে আছে সামনে। দু’জনকেই হতবিহ্বল দেখাচ্ছে। তিনজন মানুষই অপ্রস্তুত হয়ে একে অপরকে দেখে যায় কারো মুখে কথা আসে না।

★★★

“একি অবস্থা তোর? ভিজে গেছিস কি করে? আর এগুলো কি করে হলো?”
ফজিলাতুন্নেছা আর্তনাদ করে উঠলো। রুজাইফ দাঁত মুখ খিঁচে বললো-“তুমি কি ভেবেছিলে ওরা আমাদের সাদরে বরন করবে? ফুলের বিছানা করে রাখবে? এতো বছর বনবাসে কাটিয়েও বোঝনি ওরা কেমন? শোন দিদা, ওদের আমি কঠিন শিক্ষা দেব। তুমি কিন্তু দয়া করে কোন বাঁধা দেবে না। ওরা যে পাপ করেছিলো সেই পাপের সাজা দিতে আমি এবার ন্যায় অন্যায় দেখবো না বলে দিচ্ছি আগেই।”
নাতিকে শান্ত করতেই মাথা দুলালো সে-“আচ্ছা ঠিক আছে, সেসব পরে দেখা যাবে আগে ভেজা কাপড়টা চেঞ্জ কর। না হলে জ্বরে পড়ে যাবি। তোর লাগেজ কোথায় বল কাপড় বের করে দেই।”
“গাড়িতেই আছে মনেহয়। দেখি আমি নামিয়ে নিয়ে আসি।”
ফজিলাতুন্নেছা বাঁধা দিলো-“এই অবস্থায় বাইরে যাবি নাকি? ড্রাইভারকে বল দিয়ে যাবে।”
নিজের বোকামিতে বিরক্ত হলো রুজাইফ। আসলেই তো, ড্রাইভারকে ফোন করলেই হতো। এতোক্ষণ ধরে ভেজা কাপড়ে দাঁড়িয়ে আছে খামোখাই। সে তাড়াহুড়ো করে রুমে ফিরে গেলো।

আধাঘন্টা পরে হাফ হাতা গেন্জি আর ট্রাউজার পরে পরিপাটি হয়ে নিচে নেমে এলো রুজাইফ।ফজিলাতুন্নেছা ততক্ষণে টেবিলে খাবার গুছিয়ে ফেলেছে। রুজাইফকে দেখে হাসলো-“এখানকার ইউএনও তোর বন্ধু নাকি? অনেক খাবার পাঠিয়েছে।”
রুজাইফ চেয়ার টেনে বসলো। ফজিলাতুন্নেছা প্লেট এগিয়ে দিয়ে নিজেও বসলো। রুজাইফ প্লেটে ভাত তুলে নিতে নিতে বললো-“বন্ধু না কলিগ। আমিও এখানে কাজ করবো তাই সুসম্পর্ক রাখা জরুরি। এগুলো অফিসিয়াল কার্টেসী দিদা।”
“নিমার সাথে কথা হয়েছে?”
“হয়নি। একটু বিছানায় গড়িয়েছিলাম তাতেই যা হলো। বাসাটা ওয়াশ করতে হবে। বিছানার চাদর পাল্টাতে পারলে ভালো হতো না হলে ঘুমানো যাবে না। ওরা বিছানায় কিছু একটা দিয়ে রেখেছে। দেখো আমার শরীরের কি অবস্থা।”
ফজিলাতুন্নেছা আঁতকে উঠলো রুজাইফের ঘাড় আর গলা দেখে-“কিসে এ অবস্থা হলো?”
“জানিনা। খেয়ে উঠে ফুপু মার সাথে কথা বলবো। ওরা না হয় ক’দিন পরে আসুক। এদিকটা গুছিয়ে নিতে হবে তো। কাজের লোক ম্যানেজ করা, নাদিয়া নাহিয়ানের স্কুল।”
ফজিলাতুন্নেছা মাথা নাড়ে-“আমি বলি কি ওরা ওখানেই থাক রুজাইফ। মাঝে মাঝে এসে বেড়িয়ে যাবে না হয়। কি দরকার এতো টানাটানি করার?”
“ওখানে একা একা কেন থাকবে ফুপু মা? ফুপা আলাভোলা মানুষ কখন কি করে কে জানে। আর এখানে এতো বড় বাড়ি ফাঁকা পড়ে থাকবে। আমি অফিসে গেলে তুমিও তো একা। তাছাড়া সারাজীবন ফুপু মা কষ্ট করেছে এবার বাবার বাড়িতে একটু আরাম করুক না হয়। আমার চিন্তা শুধু নাদিয়া নাহিয়ানের স্কুল নিয়ে।”
ফজিলাতুন্নেছার খাওয়া থেমে গেলো। তার হাতটা কাঁপছে মৃদু। সেদিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ। আজকাল হাতের এই অসুখটা বেশ ভোগাচ্ছে তাকে। রুজাইফ খেতে খেতে থেমে গেলো। দিদা কিছু একটা ভাবছে। তার চেহারায় বিষন্নতা ভর করেছে। রুজাইফ চিন্তিত হয়ে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ। দিদার বাম কাঁধে হাত রেখে ডাকলো-“কি ভাবছো দিদা?”
ফজিলাতুন্নেছা চমকে উঠলো। নিশ্চুপ মাথা নাড়লো। রুজাইফ তীক্ষ্ণ নজরে তাকিয়ে থেকে ফিসফিস করলো-“তুমি কি ভয় পাচ্ছ দিদা? বিশ বছর আগে যা হয়েছিল তা আবার রিপিট হবো এমন কিছুর ভয় পাচ্ছ?”
ফজিলাতুন্নেছা যেন কারেন্ট শক খেলো এমন তীব্রতায় কেঁপে উঠলো। ফ্যাকাশে রক্তশুন্য চেহারা নিয়ে তাকিয়ে রইলো নিষ্পলক। রুজাইফ দিদার বা হাতের উপর হাত রাখলো। শক্ত করে ধরে আশ্বাস দিলো-“দিদা, সেই দিন আর কখনো ফেরত আসবে না আমাদের জীবনে। যতদিন আমি বেঁচে আছি তোমাদের উপর আঁচ আসতে দেবোনা আর। এই রুজাইফ সব অন্যায়ের ফয়সালা করবে দিদা। তুমি একটুও ভয় পেয়ো না। যে আগুনে আমরা জ্বলছি প্রতিনিয়ত সেই আগুলে জ্বলে পুড়ে মরবে ওরা। রক্তের সম্পর্কের মান ওরা রাখেনি আমিও রাখবো না।”
ফজিলাতুন্নেছা ভীত গলায় অস্ফুটে উচ্চারণ করলো-“দাদাভাই, প্রতিশোধ মারাত্মক নেশা। সব বিনাশ করে দেয়। তুমি ও পথে হেঁটো না।”
রুজাইফ হাসলো-“আমি না হাঁটলে ওরা হাটবে দিদা। এখন আর ফিরে আসার পথ নেই যে। হয় মরবো না হয় মারবো।”

চলবে—
©Farhana_Yesmin