#নৈঃশব্দ্যের_প্রেমালাপ
#পর্ব১০
#মহুয়া_আমরিন_বিন্দু
রাতের আকাশের নিচে বসে গল্পে মেতে উঠেছে সবাই,শুধু একজন ছাড়া,তৃধা গল্প করার এক ফাঁকে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে টেরই পায়নি,তৃধার মাথা আদাভানের কোলে,গুটিসুটি মে’রে শুয়ে আছে মেয়েটা,গায়ের ওড়নাটা সুন্দর করে পেঁচিয়ে দিয়েছে আদাভান।তৃধা কে কোলে নিয়ে সাচ্ছন্দ্যে ভাই বোন দের সাথে গল্প করছে সে।
বাকিরা তো বেশ খুশি সাথে মাঝেমধ্যে নিজেরা বলা বলি করছে,ভাইয়া যে আবার কোনো দিন কোনো মেয়ে কে নিজের জীবনে জায়গা দিবে এতোটা আগলে রাখবে কেউ ভাবতেই পারেনি।
ভাই বোনদের কথার মাঝেই আলিজা বললো–,,ভাইয়া আমাদের কিউট ভাবির জন্য একটা গান হয়ে যাক!
আদাভান সরু চোখে একবার তাকালো ঘুমিয়ে থাকা তৃধার দিকে,আরাফাত শি’স বাজিয়ে বললো–,,আহা কি প্রেম কি প্রেম!
আদাভান চোখ রাঙিয়ে বললো–,,ও এখন ঘুমাচ্ছে গান গাইলে কি শুনতে পাবে?যা তো রাত হয়েছে গিয়ে সব কটা ঘুমা।
নাজিয়া বলে উঠলো–,,প্লিজ ভাইয়া একটা গানই তো, এই আরাফাইত্তা মোবাইল চালাস কোন দুঃখে যদি একটা ভিডিও বানাতে না পারিস!
আরাফাত রেগে নাজিয়ার চুল টেনে দিলো,আলিজা বললো–,,থামবি তোরা?
নাজিয়া বললো–,,ভাইয়া তুমি গান গাও,আমরা ভাবি কে পরে ভিডিও দেখিয়ে দিবো,এটা কিন্তু একটা সারপ্রাইজ হবে ভাবির জন্য।
আদাভান তপ্ত শ্বাস ছাড়লো,এই মহিলা পরে বলে বসবে–,,ছি!এই কাকের মতো গলায় আমাকে গান ডেডি”কেট করতে আপনার কলি”জায় লাগলো না প্রফেসর?আমি যদি এখন কিডনি অ্যাটা’ক করে ম’রে যেতাম!
আলিজা বললো–,,ভাইয়া গাও তো গাও ভাবি তো ইমপ্রেস হয়ে যাবে, খুশি তে তোমাকে,,,!
আদাভান ধম’ক দিয়ে বললো–,,হয়েছে হয়েছে,আর বলতে হবে না,ইমপ্রেস হবে নাকি ছাই তা আমার ভালো জানা আছে।
ইলমা যে এতোক্ষণ চুপ করে বসে ছিলো সে এবার বললো–,,কেনো ভাইয়া তোমাদের মধ্যে কি এখনো বনিবনা হয়নি?
ইলমার কথাটা বেশ আমলে নিলো আলিজা,সে জানে ইলমা মনে মনে আদাভান কে পছন্দ করতো, কিন্তু তা প্রকাশ করেনি কোনো দিন,যথেষ্ট সম্মান ও করে কিন্তু এরকম প্রশ্ন করা মানায় না,যতই হোক আদাভান ওদের বড় ভাই!
আলিজা হেসে বললো–,,ইলমা তুমি ও না,আমাদের বাসায় তো যাওনি গেলে দেখতে পেতে ভাইয়া আর ভাবির কম্বিনেশন কি জোস একদম দইয়ের সাথে কালোজাম!
আদাভান আলিজার দিকে তাকালো ভাইয়ের সম্মান বাঁচাতে বানিয়ে মিথ্যা বলে দিলো!
আলিজা আবার বললো–,,ভাইয়া শুরু করো তো কতো দিন গান শোনা হয় না।
রাতের জোছনা ভরা আকাশ,সাথে মৃদু মন্দ বাতাস, পরিবেশ টা বেশ মনোমুগ্ধকর, আদাভান পেছনে দু হাত ভর দিয়ে কিছুটা হেলে গেলো,তৃধা নড়েচড়ে উঠলো সহসাই জড়িয়ে ধরলো আদাভানের কোমড়ের এক অংশ,অন্য হাতে খামচে ধরলো শার্ট।
আদাভান বেশ টের পেলো,কেনো যেনো আজ সে বিরক্ত হয়নি এই মেয়েটার কাছে আসায়,তার কোলে এতোটা সময় শুয়ে থাকায়,আদাভানের কেবল খুশি লাগছে,তার মন বলছে এই সময় টা এখানেই থেমে গেলো হতো না?
আদাভান গান ধরলো….
শুধু তোমাকেই ভালো লেগেছে
তাই তোমার দালান জুড়ে
আঁকলাম এক নতুন
প্রেমের গান!
……………………
ঘড়িতে সময় চলছে আপন গতিতে,বাকিরা রুমে চলে গেছে ইতিমধ্যে, আদাভান আনমনে তাকিয়ে আছে তৃধার মুখপানে,কি স্নিগ্ধ মায়ায় ভরপুর মুখশ্রী, কিন্তু যখন কথা বলে তখন কোনো ভাবেই বুঝার উপায় নেই এটা এই মেয়ের মুখ থেকে বের হয়েছে।
আদাভান কিছুটা ঝুঁকে তৃধার কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বললো–,,এই যে মেডা’ম আপনি কি ছাদেই থাকার প্ল্যান করেছেন নাকি?আমি কোলে করে নিয়ে যেতে পারবো না, এতোটাও ভদ্রলোক নই!
তৃধা নড়েচড়ে উঠলো, আরো কিছুটা চেপে গেলো আদাভানের সাথে,আদাভান এবার ভ্রু কুঁচকে তাকালো –,,কোলবালিশ মনে করেছে নাকি এই মেয়ে?এর এতো আরামের ঘুম একদম সহ্য হচ্ছে না আর!
আদাভান তৃধার কানের কাছে গিয়ে জোরে ডেকে বললো–,,হ্যালো মিসেস তৃধা!
তৃধা ধরফ”রিয়ে উঠলো,আশেপাশে তাকিয়ে বললো–,, কি,,,,কি হয়েছে?
আদাভান তাকিয়ে আছে তৃধার আত’ঙ্কিত মুখের দিকে,তৃধা আদাভানের দিকে তাকাতেই আদাভান হো হো করে হেসে উঠলো।তৃধা চোখ মুখ কচলে আশেপাশে তাকিয়ে বললো–,,কয়টা বাজে?আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম বুঝতে পারিনি!
তৃধা এখনো খেয়াল করেনি নিজের অবস্থান, সে যে নিজ ইচ্ছেতে আদাভানের এতোটা কাছে টের পেলে নিশ্চিত লজ্জায় শেষ হয়ে যেতো এতোক্ষণে।
আদাভান দুষ্টুমি মাখা সুরে বললো–,,বাহ্ বউ দেখছি বরের কোলে বেশ আরামেই ঘুমিয়েছে সে ভুলেই গেছে কখন ঘুমিয়েছে!
তৃধা চোখ বড় বড় করে তাকালো,নিজের হাত এখনো আদাভানের পায়ের উপর,তৃধা চট করে সরে পড়লো,বেশ লজ্জা লাগছে ওর, কি ভেবেছে সবাই!তৃধা হাস”ফাস করে বললো–,,ওই আসলে…!
আদাভান গালে হাত দিয়ে বললো–,,হুম হুম বলুন আমি শুনছি!
তৃধার লজ্জায় ম’রি ম’রি অবস্থা, আদাভান পা উঠিয়ে বলে উঠলো –,,ইশ্! আমার নিরিহ পা একবারে ভেঙ্গে দিলো বেয়া’দব মহিলা।
তৃধা বলে উঠলো–,,আমি মোটেও এতো বেশি ভারি না।
আদাভান ভাব নিয়ে বললো–,,তা তো বুঝতেই পারছি,আমার মতো একটা সুন্দর পুরুষের কোলে মাথা রেখে ঘুমাতে চাওয়াটা দোষের কিছু নয়!
তৃধা রেগে মেগে আদাভানের কলার চেপে ধরে বললো–,,ভুল বসত হয়েছে, স্বজ্ঞানে আপনার কাছে আসার নূন্যতম রুচি আমার নেই।
আদাভান ভ্রু নাচিয়ে তৃধার দিকে দেখালো, যার মানে তৃধা এখন ইচ্ছাকৃত ভাবেই কাছে তৃধা এলো’পাথাড়ি লাগালো কয়েকটা আদাভান কে, আদাভান হেসেই শেষ আদাভান হাসছে তৃধার রাগ ততো বাড়ছে।
মধ্যে রাতের তারারা স্বাক্ষী হলো তাদের মিষ্টি খুনসুটির!
———–
আজাদ তালুকদার ঘর তছ’নছ করে কিছু একটা খুঁজছে, না পেয়ে তার মেজাজ আরও খারা’প হলো,চেঁচিয়ে ডাকলো—-,,মা,ওই মা এদিকে আসবে তুমি।
বৃদ্ধ বয়সে দোতলায় ওঠাটা মোটেও সহজ কথা নয়,তার উপরে এতো বড় ছেলের এসব বাচ্চাদের মতো কান্ডকারখানা ও সহ্য হয় না জোছনা বেগমের। কয়েক দিন পর নানা হয়ে যাবে ছেলের বুদ্ধি এখনো হাঁটুতে।বউয়ের সাথে ঝগ’ড়া করে তাকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে, তাও কোনো অনুসূচনা নেই।নিজের একটা কাজ তো ঠিক মতো করতে পারে না,তাও বউ কে গিয়ে আনবে না।বু”ড়ো মা টা কে জ্বা’লিয়ে মার’বে!
জোছনা বেগম বিরক্তি নিয়ে বললো–,,কি সমস্যা আজাদ?ঘরের কি অবস্থা করেছিস।
আজাদ তালুকদার রেগে বললো–,, তোমার বউ মা কে ফোন করে জিজ্ঞেস করো আমার অফিসের ওই ফাইল টা কোথায় রেখেছে,আমার আজকেই দরকার খুঁজে পাচ্ছি না।
জোছনা বেগম গা ছাড়া ভাব নিয়ে বললো–,,আমাকে কেনো বলছিস,ঘর যার তাকে জিজ্ঞেস কর,আমি এসবে নেই,বুড়ো বয়সে তোর এসব নাটক দেখতে পারবো না আমি।বউ মায়ের পা ধরে হলেও গিয়ে নিয়ে আয়,আমি আর তোর কোনো কাজ করতে পারবো না।
আজাদা চেঁচিয়ে বললো–,,মা। রাজিয়া নিজ ইচ্ছেতে গেছে।
জোছনা বেগম কাঠকাঠ কন্ঠে বললো–,,একদম ওর উপর দোষ দিবি না,তোর মতো একটা গোঁ’য়ার পেটে ধরেছি আমি হয়েছিস বাপটার মতো,সে তো ম’রে খালা’স ওই বুড়ো আমায় জ্বালি”য়েছে এখন তুই রাজিয়াকে।বউমার সাথে কবে ভালো ব্যবাহার করেছিস তুই?তোর সাথে যদি কেউ সব সময় এমন করতো তুই তার সাথে থাকতি?তোর সংসারের মায়ায় এতোদিন কিছু বলেনি,এবার বুঝ এতো বছর পর কতোটা কষ্ট পেলে মানুষ টা তোকে ছেড়ে চলে গেছে!এবার তুই ভেবে দেখ তোর কোনো দিন রাজিয়ার প্রতি কোনো টান ছিলো কিনা।নিজের ঘরের বিষয়ে একটু মাথা নত করলে কোনো দিক দিয়া কমে যাইবো না তোর,সংসারে সুখ শান্তি চাইলে যা গিয়ে বুঝিয়ে নিয়ে আয়!
আজাদা তালুকদার শান্ত হলেন,তার পর মায়ের উদ্দেশ্যে বললো–,,এতোগুলো বছর পর আবার আমাকে নাসিরউদ্দিনের মুখোমুখি হতে বলছো মা!
জোছনা বেগম কঠিন কন্ঠে বললো–,,যেটা তোমার আগেই করা উচিত ছিলো,তা তুমি এতো বছর পর করছো,যদি মন থেকে করতে পারো তবেই যাবে। কারন আমি যদি নাসির ভাইয়ের জায়গায় থাকতাম তখন কোনো দিনই তোমায় মেনে নিতাম না।যেমন তুমি সেদিন মেনে নাও নি মৃধা কে।
বাবা মা হিসেবে আমাদের কাছে যা সঠিক মনে হয়,সন্তানদের ক্ষেত্রে তা ভুল বলার অধিকার আমাদের নেই,তুমি যে রাজিয়ার দোষ দিলে এতোগুলো বছর,তুমি নিজের অতীত কি করে এতো সহজে ভুল গেলে আজাদ।
সেদিন মৃধা আর ওই ছেলেটা যা করেছিলো ত্রিশ বছর পূর্বে সেই একই ভুল তুমি ও করেছিলে,যদি বাবা হিসেবে তুমি মৃধা আর তার স্বামীকে মেনে নিতে না পারো,তবে বুঝে নাও নাসির ভাই কি করে তোমাকে মেনে নিবে!
জোছনা বেগম সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে গেলেন, ঘরে একা করে রেখে গেলেন চিন্তায় মগ্ন বি”ধ্বস্ত আজাদ কে।
সে তো ঠিক ভুল বিচার করতেই ভুলে বসেছিলো,নিজের মেয়েকে নিজের আদরের সন্তান কে সে কিনা শুধু অনুমতি বিহীন নিজের পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করায় তাড়িয়ে দিয়েছিলো,মেয়েটার মুখ ও দেখে নি এতোগুলো বছর,আজ তার মা তাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো সত্যিটা!
আজাদ তালুকদার মাথা চেপে ধরে বসে পড়লেন ফ্লোরে!
কি করে ঠিক করবেন তিনি এতোকিছু?
———
মাহিরের সামনে বসে আছে পিহু,বাচ্চা মেয়েটা জানেই না তার সামনে বসে থাকা মানুষ টা কতোটা দূর্ত!
পিহু নিজ মনে খেলা করছে,মাহির পিহুর উদ্দেশ্য বললো–,,বাবা কে চিনিস তো ভালো করে?ছবি দেখলে বলতে পারবি?
পিহু চোখ তুলে তাকালো হেসে মাথা দুলালো, আদো আদো গলায় বললো–,,পাববো!
সোনালী হাতে খাবারের বাটি নিয়ে হাজির,পিহু মা কে দেখেই তার কাছে ছুটে গেলো,সোনালীর মুখে নামলো অন্ধকার,শেষে কিনা একটা বাচ্চা সামলাতে হচ্ছে তাকে?নিজ মনকে বুঝ দিলো ও কিছুদিনেরই বিষয় তার পর এরিশ কে বিয়ে করতে পারলেই এই বাচ্চাকে তার আসল ঠিকানায় পৌঁছে দিবে সোনালী।
পিহুর মাথায় সোনালী হাত বুলিয়ে বললো–,, নে খেয়ে নে!
বাচ্চা মেয়েটি প্লেটের দিক তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ ,সোনালীর দিকেও দেখলো অপলক , সোনালী পাত্তা দিলো না বাচ্চাটির গভীর দৃষ্টির দিকে,দেখলো না কতোটা আকুতি নিয়ে বাচ্চাটা চাইছিলো,আমাকে একটু খাইয়ে দিবে মা!
মাহির সোনালীর দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্য করে বললো–,, তুই যে একটা ন”ষ্টা তার প্রমান কি ভালো করে দিচ্ছিস দেখ একবার!
সোনালী রেগে বললো–,,একদম বা’জে কথা বলবে না মাহির।
মাহির গা ছাড়া ভাব নিয়ে বললো–,,একজনের বউ হয়ে এখনো প্রেমিকের কাছে ফিরতে চাস?প্রেমিককে ছেড়ে একটা ছেলের সাথে রাত কাটা’তে পারিস, কি বলতে চাচ্ছিস তুই স’তী সাবি’ত্রী!
সোনালী মাহির কে তাচ্ছিল্যে করে বললো–,, আমি ভুল ছিলাম,তোর মতো একটা শ”য়তানের কথা শোনা উচিত হয়নি আমার,তোর জন্য আমি এরিশ কে হারিয়েছি!
মাহির গা জ্বা’লানো হাসি দিয়ে বললো–,,সিরিয়াসলি?তুই ফিটা’র খাওয়া বাচ্চা ছিলি না সোনালী,যে আমার কথায় নিজের ভালোবাসার মানুষ কে ছেড়ে চলে আসবি।তুই একটা লো’ভী যখনই তোর স্বার্থে টান পড়েছে তুই সুর সুর করে আমার সাথে চলে আসলি,যতই এরিশ আমার শ’ত্রু হোক আমি ও মানি ও তোকে সত্যি সত্যি অনেক ভালোবাসতো!তুই তোর রূপ নিয়ে বড়াই করতি না?আমার সহ্য হতো না,তোকে আর এরিশ কে তাই তোদের মধ্যে ফা’টল ধরিয়ে দিলাম আর তুই?
হো হো করে হাসলো মাহির,সোনালী বলে উঠলো–,,এরিশ আবার আমার হবে,দেখে নিস!
মাহির বলে উঠলো–,,এই ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাহায্য তোকে করবো আমি।
সোনালী ভ্রু বাকিয়ে বললো–,, নিজের বউ কে নিজের শ”ত্রুর হতে দিবি মতলব কি তোর?
মাহির সোনালীর গাল চেপে ধরে বললো–,,তোর মতো ন”ষ্টা কে বউ হিসেবে কোনো দিনও মানি না আমি,তোর মতো মেয়ে কে বেড পার্টনা”র বানানো যায় স্ত্রীর মর্যা’দা দেওয়া যায় না!তুই নিজেকে আমার বউ দাবি করিস কোন হিসাবে?যখনই এরিশের কথা শুনলি পা’গলা কু”ত্তার মতো ওর কাছে যাওয়ার জন্য ছ’টফ’ট শুরু করলি!
সোনালী রেগে বললো–,,তোর বউ হিসেবে স্বীকৃতি দে কথা দিচ্ছি অন্য কেনো পুরুষের নাম ও মুখে নিবো।আমাকে দোষ দেওয়ার আগে নিজের দিকে তাকা তুই কি?তোর জন্য কম কিছু করেছি আমি?তবুও তোর মন পাইনি,তুই ঠিকই ঘরে বউ রেখে বাহিরে মেয়েদের সাথে যা নয় তাই করে বেড়াস, তোর কাছে আসার পর একবারও তো এরিশের নাম নেইনি আমি,আমি মানছি এরিশ কে আমি ভালোবাসি ওর জন্য মনে এখনো একটা সফট্ কর্নার আছে, কিন্তু কোনো মেয়েই চায় না দ্বিতীয় কেনো পুরুষের কাছে যেতে।আমিও চাই না তুই দে আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা সারা জীবন তোর হয়েই থাকবো!
মাহির সোনালীকে ধাক্কা মে’রে সরিয়ে দিয়ে বললো–,,তুই আর স্ত্রী? জোর করে বিয়ে করলেই বউ হওয়া যায় না।তুই চাস তো আমি তোকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহন করি,তাহলে আমি যা যা করতে বলবো তা তোকে করতে হবে,যদি পারিস তো আমি আর কোনো খারা’প কাজ করবো না তুই ব্যতিত অন্য নারীর দিক তাকাবোও না!বল রাজি?
সোনালী ছলছল চোখে তাকালো,এ ছাড়া তার কোনো উপায় ও নেই,মুখ চেপে ধরে কেঁদে উঠলো, নিজের সুন্দর জীবন টা সে নিজ হাতে শেষ করেছে!
————-
স্নিগ্ধা?
আদিবের কন্ঠস্বরে কেঁ”পে উঠলো স্নিগ্ধা ও তো টু শব্দ টুকুও করেনি আর সিম টাও নতুন আদিব কি করে বুঝলো এটা স্নিগ্ধা!
আদিব তপ্ত শ্বাস ছেড়ে গম্ভীর কন্ঠে বললো– কেনো ফোন করেছিস?রাত কয়টা বাজে খেয়াল আছে?আমি আসার পর চোখের নিজে কালি পড়তে যেনো না দেখি!
স্নিগ্ধা মৌনতা আর পালন করতে পারলো না বলে উঠলো–,,কবে আসবেন আদিব ভাইয়া?
আদিব নিঃশব্দে হাসলো রসিকতা করে বললো–,, ভাইয়া ডাকছিস আবার রাত বিরাতে ফোন ও করছিস কাহিনি কি?ভাইদের কাজ কি জানিস, বোনদের কানের নিচে একটা করে মা”রা যাতে তারা তাদের লিমিট ক্র’স করতে না পারে!
স্নিগ্ধা মুখ বাঁকা”লো বির বির করে বললো–,,তি’তা করলা একটা!
আদিব গাম্ভীর্যতা বজায় রেখেই বললো–,, আমাকে গা’লি দেওয়া শেষ হলে ঘুমা।রাত জাগবি না আর,সামনে তোর পরীক্ষা না?সিম কোথায় পেয়েছিস?পাখা গজি”য়েছে দেখছি,পরীক্ষার আগে এরকম হেয়ালি, ছোট আব্বুকে বলবো ফোন করে?
স্নিগ্ধা শুকনো ঢোক গিলে বললো–,,স্যরি!আর হবে না।
আদিব কঠিন কন্ঠে বললো–,, ফোন কেনো দিয়েছিস?
স্নিগ্ধা মুখ ফসকে বলে উঠলো–,,আপনার কন্ঠস্বর শোনার জন্য!
আদিব বলে উঠলো–,,আবেগ পাশে রেখে পড়তে বস,এখন পড়াশোনা করার বয়স।আর ফোন দিতে যেনো না দেখি!
স্নিগ্ধা আবার জিজ্ঞেস করলো–,, কবে আসবেন?
–,,তোর যখন বিয়ে হবে ওইদিন, ভাইয়ের দায়িত্ব পালন করতে!
ফট করে ফোন কে’টে দিলো আদিব।স্নিগ্ধার তনু মন হু হু করে উঠলো,মানুষ টা এমন কেন?সে কি কোনো দিন বুঝবে না স্নিগ্ধা কে?হৃদয়ে চিনচিনে ব্যাথা অনুভব হলো স্নিগ্ধার,কেনো লোকটা তার বিয়ের কথা বলবে, সে কি জানে না স্নিগ্ধা বিয়ে করলে শুধু আদিব কেই করবে অন্য কাউকে না!এতোটা নিষ্ঠু”র না হলেও তো পারেন আদিব ভাই,আমি তো আপনাকে সত্যি সত্যি ভালোবাসি,বিশ্বাস করুন একফোঁটা ও আবেগ নেই পুরোটাই ভালোবাসা!
স্নিগ্ধা বালিশে মুখ গুঁজে কেঁদে উঠলো, সত্যি আদিব টা ভীষণ খারা”প মানুষ একটুও দয়া মায়া নেই!
ফোনে ম্যাসেজ আসলো শব্দ করে,স্নিগ্ধা চোখ মুছে হাতে মোবাইল নিলো,ফোনের স্ক্রিনে ঝলঝল করছে লিখাটি
“তোকে মে’রেছি আমি?কাঁদছিস কেনো?কান্না করতে যেনো আর না দেখি লাইট অফ করে সুন্দর মতো ঘুমা”
স্নিগ্ধা মুখে ফুটলো বিশ্ব জয়ের হাসি, খুশিতে আটখানা হয়ে ঘুমের রাজ্যে পারি জমালো!
—————–
কে’টে গেছে বসন্ত,গ্রীষ্মের ছাতি ফাটা রোদ কে প্রশমিত করতে হাজির হলো বৈশাখের মেঘেরা,আকাশে হা”না দিলো তোড়জোড় নিয়ে,অন্ধকার হয়ে আসলো চারপাশ,আর ছয়দিন পর ভার্সিটি বন্ধ দিবে,বাড়ি যাবে না তৃধা তার ইচ্ছে নেই ওই বাড়িতে যাওয়ার সেখানে কে আছে তার?মা ই তো নেই,কার জন্য থাকবে ওই বাড়িতে!
তৃধার মন খারা’প হয়ে গেলো মুহুর্তেই,ভার্সিটির নিরিবিলি অংশে এসে বসে আছে তৃধা,ক্লাস এখন নেই বারোটার দিকে এক টা ক্লাস আছে আর।আজকাল কারো সাথেই তেমন হাসি”ঠাট্টায় মেতে উঠতে ইচ্ছে করে না ওর,এ কেমন যেনো মনের দশা হয়েছে তার।কতোদিন হয়ে গেলো আদাভানের সাথেও ঝগ’ড়া হয়নি,তৃধাও চায় আর না হোক, মানুষের নিজের জীবন নিয়ে ব্যস্ত থাকাই ভালো,এই টুকু অধিকার সবারই আছে।তৃধা কেনো আপ’দ হয়ে কারো জীবনের সুখ শান্তি নষ্ট করবে?
তৃধা শুধু এইটুকুই বলেছিলো আদাভান কে–,, আপনার জীবনে থাকতে চাই না আমি,আমার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করতে হবে না আপনার,নিজের মতো থাকুন,আপনি আমাকে বিরক্ত করবেন না আমিও আপনাকে করবো না!পুরুষদের ঘৃ”ণা করি আমি!
আদাভান সেদিন থেকেই আগ বাড়িয়ে একটা কথাও বলেনি তৃধার সাথে,ক্লাসে পড়াশোনার বাহিরেও কিছু ঘটেনি।তৃধা নিজেকে প্রশ্ন করে মাঝেমধ্যে আদাভানের জন্যই কি তার এই মন খারা’প?নাকি অযথাই নাটক করছে তার হৃদয়!
নাদিমের কন্ঠে ধ্যান ভাঙ্গলো তৃধার,নোভা নাদিম ঝগ”ড়া করছে।
নাদিম বলছে–,,ওই ছেলের সাহস কি করে হয় তোকে প্রোপোজ করার সবচেয়ে বড় কথা তুই ওর দেওয়া ফুল কেনো নিবি?তোর ফুল লাগবে আমাদের বলতে পারতি,ওর থেকে কেনো নিবি!
নোভা রেগে বললো–,, তোর কি সমস্যা? প্রোপোজ করলে,আমি তো রাজি হয়ে যাইনি শুধু ফুল নেওয়ায় এতো কিসের সমস্যা!
তৃধা বলে উঠলো–,,তাই তো তোর কি সমস্যা নাদিম?
নাদিম রেগে বললো–,,তৃধা তুই জানিস না কি সমস্যা? ঠিক আছে থাক নিজেদের মতো চলে গেলাম আমি!
নাদিম হাঁটা ধরলো, নোভা তৃধার দিক তাকিয়ে বললো–,, কি জানিস বল তো,পা’গলটা অয’থা মাথা খারা’প করে দিচ্ছিলো আমার।
তৃধা হেসে বললো–,, কারন?তোরা শা’লা শান্তিতে থাকতে চাস না ঘুরে ফিরে ওই লাভ জ”ন্ডিসে আঁটকে পড়িস সব গুলাতে!
নোভা প্রশ্না”ত্মক চোখে তাকিয়ে, তৃধা দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো দূরে থাকা ডোবার দিকে তার পরে নোভা কে বললো–,, ধর তুই কাউকে পছন্দ করিস,মানে ভীষণ রকম ভালোবাসিস, তখন তাকে যদি অন্য কেউ প্রোপজ করে বা ফুল দেয় তোর কেমন লাগবে?নাদিমের ক্ষেত্রে ও এরকম কিছু ঘটেছে বুঝেছিস!
নোভা প্রথমে বলতে নিয়েছিলো পছন্দ,,,!তার পরই থেমে গেলো,নাদিম ওকে পছন্দ করে?নোভার চোখ আপনা আপনি বড় হয়ে গেলো,এতোদিনের ফ্রেন্ডশিপ ওদের,এখন কিনা!
তৃধা নোভার মাথায় টোকা মে’রে বললো–,, বেশি ভাবলে তুই টাকলা হয়ে যাবি।চল ক্লাস করতে যাই
নোভার হাত টেনে ধরে ক্লাসের উদ্দেশ্যে হাঁটা ধরলো তৃধা।
———–
ক্লাস শেষ আদাভান দাড়িয়ে দাঁড়িয়ে এতোক্ষণ তৃধা কে দেখছিলো,ভাবছিলো চঞ্চল মেয়েটা হঠাৎ করে এতো চুপচাপ হয়ে গেলো কেনো?ওকে তো হাসতে দেখলেই বেশি সুন্দর লাগে,সারাদিন ঝ’গড়া করা মানায়।ওর তো উচিত উড়ে বেড়ানো ঠিক যেমন উড়ে বেড়ায় প্রজাপ্রতিরা!
নাদিম পেছন থেকে ডাকলো–,,ভাইয়া!
আদাভান চমকে পেছনে তাকালো,এই প্রথম নাদিম তাকে ভাইয়া সম্বোধন করেছে।
আদাভান নাদিমের দিকে তাকিয়ে বললো–,, তুমি?
নাদিমের মুখে মুচকি হাসি,আদাভানের দিকে তাকিয়ে বললো–,,ভাইয়া ডাকায় অবাক হচ্ছেন?আসলে এতোদিন আপনাকে বোনের জামাই হিসেবে পছন্দ হয়নি তাই ডাকিনি,এখন মনে হচ্ছে আপনি ততোটাও খারা”প না!
আদাভান মৃদু হাসলো,তার পর পকেটে দু হাত রেখে জিজ্ঞেস করলো–,,এখন ভালো মনে হওয়ার কারন?
নাদিম দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বললো–,, আপনার মনে প্রশ্ন জাগে নিশ্চয়ই তৃধা কেনো এমন?এই ভালো তো এই খারা’প,আমরাই বা তৃধা কে কেনো সব কিছুতে সাপোর্ট করি।আরো অনেক প্রশ্নই থাকতে পারে।আপনি যদি আমাকে কথা দেন আপনি সারাজীবন আমার বোনের পাশে থাকবেন তাহলে আমিও আপনাকে তৃধার ছোটবেলা থেকে এই অব্দি সকল গল্প আপনাকে বলবো।যদি আপনার আগ্রহ থাকে তো!
আদাভান বেশ চিন্তিত হলো,ও সত্যিই পারবে তো তৃধার পাশে থাকতে?তার পরও মেয়েটাকে জানার প্রবল আগ্রহ যেনো তাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খা”চ্ছে।
আদাভান বলে উঠলো–,,আমি রাজি,তুমি শর্ত না দিলেও ওর পাশে থাকতাম আমি,কিন্তু আমার মনে হয় তোমার বোন আমার সাথে থাকতে চায় না!
নাদিম দূ্র আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো–,,ওর জায়গায় আপনি থাকলে আপনিও এমনটা করতেন!
আদাভান চমকে তাকালো,নাদিম বলতে শুরু করলো তৃধার এরকম হয়ে উঠার পেছনের গল্প!
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
ধরনী কাঁপিয়ে বৃষ্টি আসলো বিকেলে,রাস্তাঘাট ভিজে একাকার অবস্থা, এখনই যেনো সন্ধ্যা হয়ে এসেছে।
হোস্টেল রুমে বসে খিচুড়ি খাওয়ার প্ল্যান তৈরি করছে নিশি।কিন্তু রান্না করবে কে?
নোভা বলে উঠলো –,,আভা আর তৃধা মিলে রান্না করবে।আমি আর তুই খাবো।
আভা নাক ফুলিয়ে বললো–,, কেনো ভাই আমাদের কি চাক’র মনে হয়?পারবো না এসব করতে, নিজেরা গিয়ে রান্না কর।
তৃধা বলে উঠলো–,,আয় লু’ডু খেলতে বসি বেশ মজা হবে।
নিশি বলে উঠলো –,,আগে বল তোর কি হয়েছে সারাদিন মুখ ফুলিয়ে রেখেছিলি কেনো?
বাহিরে বৃষ্টির দাপট কমে এসেছে,বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো তৃধা সন্ধ্যা নামবে নামবে এমন,তৃধা চোখ বন্ধ করে শ্বাস টানলো,মুহুর্তেই মেজাজ ফুরফুরে হয়ে গেলো,প্রকৃতির কি অগাধ ক্ষমতা এক সেকেন্ডে মন ভালো করতে পারে।
নিশি তৃধার ফোন হাতে নিয়ে ভিতরে ঢুকলো,ফোনের স্ক্রিনে শাশুড়ী মা দিয়ে সেইভ করা নাম্বার টা দেখে ওর ভ্রু আপনা আপনি কুঁচকে উঠলো।সচারাচর মহিলা ফোন করে না তাকে।
তৃধা সময় ব্যয় না করে ফোন রিসিভ করলো ওপাশ থেকে ব্যস্ত কন্ঠে আমিনা বেগম বললো–,,তৃধা মা তুমি কোথায়?আদাভানের কাছে মোবাইল টা দাও তো,একবার ফোন রিসিভ করেছিলো,বললো–,,বৃষ্টিতে ভিজেছে।তার পর কল কেটে গেলো।আমার তো টেনশন হচ্ছে,আদাভানের জ্বর অনেক খারা’প সেন্স লেস হয়ে পড়ে থাকে ছেলেটা।ওখানে তুমি ছাড়া কেউ নেই,দেখো তো মা জ্বর টর আসলো কিনা!
তৃধা বেশ মসিবতে পড়লো লাউডস্পিকারে থাকায় কথা গুলো বাকিরা ও শুনতে পেলো।
তৃধার হাত পা কাঁপছে, কি জবাব দিবে এখন।নোভা তৃধার পরিস্থিতি বুঝতে পারলো,মিউট করে দিয়ে তৃধা কে বললো–,,তুই বল তুই একটু বাহিরে এসেছিস,এখনি বাসায় গিয়ে ফোন করবি!
তৃধা হতাশ নয়নে তাকালো,অগত্যা নোভার কথা মতো সব করলো।আমিনা বেগম বলে উঠলো–,,তারাতাড়ি যা মা বাড়িতে, কিছুক্ষণ হলো ফোন টা কা’টলো সত্যি আমার ভীষণ চিন্তা হচ্ছে।
তৃধা আমিনা বেগম কে শান্ত করে বললো–,,মা চিন্তা করবেন না আমি বাসার কাছেই আছি,রুমে গিয়েই আপনাকে কল করবো মনে হয় নেটওয়ার্কের কারনে ফোন কে’টে গেছে!
আমিনা বেগম কিছুটা শান্ত হলেন,তৃধা ফোন কেটে বের হতে নিলো বাসা থেকে আভা বলে উঠলো–,,সন্ধ্যা হয়ে গেছে এমন সময় একা যাবি?বাহিরের পরিবেশ ও তো ভালো না বৃষ্টি আসবে যে কোনো সময়!
তৃধার ও চিন্তা হচ্ছে রেগে তো একবার বললো–,এতো বড় মানুষ হয়ে বৃষ্টি তে কেনো ভিজতে হবে যত্তসব আদিখ্যেতা!
নোভা মুচকি হাসলো,নিশি নোভা কে খোঁচা মে’রে বললো–,, তুই হাসছিস কেনো?
নোভা নিশি কে বললো–,,কয়েকদিন পর বলবো।
নিশি বিরক্ত হয়ে বললো–,,তোরা সব কয়টায় অসহ্য। এই তৃধা যাওয়ার হলে জলদি যা,বৃষ্টি নামার আগে।
তৃধা কোনো রকম ওড়না পেচিয়ে বাসা থেকে বের হলো।
ভাগ্য ক্রমে রিকশা ও পেয়ে গেলো,কি একটা অবস্থা এই লোকটার জন্য এখন এতো কিছু করতে হচ্ছে ওর।
তৃধা বাসায় ঢুকলো দ্রুত রাস্তায়ই বৃষ্টি নেমেছে প্রায় অর্ধেক ভিজে গেছে তৃধা।
আদাভানের রুমের বাহিরে গিয়ে প্রায় দশ বার কলিং বেল চাপলো দরজা খুলছে না!তৃধা এবার সত্যি সত্যি ভয় পাচ্ছে,কিছু হয়নি তো আবার,তৃধার কাছে তো চাবি নেই,বৃষ্টি না আসতেই কারেন্ট আর নেটওয়ার্ক দুইটাই উদাও হয়ে যায় বিরক্তিকর!
তৃধা আবারও বেল চাপলো,এবার দরজা খুললো কেউ তৃধা দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে পড়লো, আদাভান নিভু নিভু চোখে তৃধার দিকে তাকিয়ে, তৃধা কিছু বলতে যাবে তার আগেই আদাভান ঢলে পড়ে যেতে নিলো,তৃধার অবস্থা সূচনীয়, আদাভান কে কোনো মতে ধরেছে সে পা দিয়ে ধাক্কা মে’রে দরজা আটকে দিলো,তৃধার মতো হেংলা পাতলা একজন মানুষ আদাভানের মতো একটা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী পুরুষ কে একা রুম অব্দি নেওয়াটা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার।তৃধা নিজের সব টুকু শক্তি দিয়ে সোফা পর্যন্ত গেলো আদাভান কে কোনো রকম সোফায় রেখে বলে উঠলো–,,শা’লা মটু কোথাকার!
চলবে…..